সেই_মেয়েটি❤,পার্টঃ2
লেখক_সাব্বির আহাম্মেদ
মেহেদি এদিক সেদিক তাকিয়ে মাধুরিকে কোথাও পাচ্ছে না দেখে, বিরক্ত হচ্ছে । মাধুরির মা এসে তাকে বললো কি হয়েছে মেহেদি কেনো দরকার ছিলো কি ??
-মেহেদির বাসায় পাশের এলাকায় হওয়ায় সবাই তাকে চিনতো, আর একটু নাম ডাক আছে দেখে সবাই সম্মান করে তাদের..
মেহেদিঃ- না আন্টি, এমনি এসেছি !! কুশল বিনিময় করে মেহেদি চলে আসলো । ওইদিন
দিন যত যাচ্ছে মেহেদির মনে মাধুরির জায়গায় পাকা হচ্ছে,মেয়েটাকে তেমন ভালো করে দেখা হয় নি তবে কেনো জানি সারাক্ষণ ওই মেয়েটাকে নিয়ে কল্পনার জগতে হারিয়ে যায় সে, কি আছে মেয়েটার কাছে,
একদিন রাস্তা দিয়ে হেটে আসছে মেহেদি, দূর থেকে দেখা যাচ্ছে কয়েকটা মেয়ে হেটে আসছে, হঠাৎই সেখান থেকে একজন মেয়ে বলে উঠলো এইইই মাধুরি চল ফুচকা খাই ।
মাধুরি নামটা শুনতে মেহেদি চমকে গেলো, মাধুরি মানে ওই মেয়েটা এইখানে আছে তাহলে, মুখটা মূহর্তে তার উজ্জ্বল হয়ে গেলো । সে দ্রুত তাদের দিকে হাটা দিলো
মাধুরি দূর থেকে মেহেদিকে দেখে বললো, দোস্ত আমার না কাজ আছে এখনিই যেতে হবে কিছু মনে করিস না তুইইই খা আমি চলি
বান্ধবীঃ- আরে আরে কই যাস, মাত্রই তো এলি এখনিই চলে যেতে হবে ??
মাধুরিঃ- হুম বায়!! দ্রুত পা চালিয়ে সেখান থেকে চলে গেলো, তবে এতো দ্রুত কোথাও যেতে পারবে না দেখে সে মেহেদির থেকে নিজেকে আড়াল করে নিলো । একটা জায়গায় লুকিয়ে গেলো ।
মেহেদি এসে মাধুরিকে খুজে না পেয়ে তার বান্ধবিকে জিজ্ঞাসা করলো এই যে একটু আগে এখানে একজন মেয়ে ছিলো সে কোথায় ।
বান্ধবিঃ- সে তো একটু আগেই চলে গেছে, কি কাজ যেনো আছে তার কিন্তু কেনো আপনি তার খোজ করছেন কেনো ??
মেহেদিঃ- আপনি কি তার নাম্বারটা দিতে পারবেন ।
বান্ধবিঃ- সে ফোন চালায় না, আর তার নাম্বার দিয়ে কি হবে ।
মেহেদিঃ- তা কিছু না ।
বান্ধবিঃ- কিছু না মানে কি বলেন, কি মতলব !!
মেহেদি বিরক্ত হয়ে বলছে উহ এই মেয়েটা তো পুরা বেজাল আর কিছু না বলে সেখান থেকে চলে এলো ।
– মাধুরি এতোক্ষণ মেহেদিকে দেখছে আর মুচকি মুচকি হাসছে, মেহেদির কর্মকান্ডে দেখে,
মেহেদি চলে যাওয়াতে সে তার বান্ধবির কাছে আসে,
কিরে তুই কই চলে গেছত, আর একটা ছেলে এসে তর নাম্বার চায়ছে তুই কি তাকে চিনছ নাকি ।
মাধুরিঃ- না তো আমি চিনবো কিভাবে, আমাকে আর কে খুজবে!
আচ্ছা চল বাসায় যেতে হবে দেরি হয়ে যাচ্ছে, বাসায় গেলে বকা খেতে হবে নিঘার্ত ।
– মাধুরি বাসায় ডুকে একগাধা বকা শুনতে হলো তার মার কাছ থেকে , অভ্যাস হয়ে গেছে এই আর নতুন কি ??
রাতে সব কাজ সেরে সবার শেষে সে ঘুমাতে গেলো, কারেন্টটা একটু আগেই চলে গেলো, জানালাটা খুলে দিতেই চাদের আলো ঘরে এসে পড়ছে ,
মাধুরি চাদের দিকে তাকিয়ে রয়েছে, চাদঁটা কত সুন্দর তাই না, সবাই তাকে পছন্দ করে , আর রাতের আকাশটা অন্ধকার দেখাচ্ছে ঠিক তেমনিই কালোর মাঝে সুন্দর চাদটা কেমন ফুটে রয়েছে ,
আজ সেও যদি ওই চাদের মতো সুন্দর থাকতো তাহলে চাদের মতো সবাই তাকে পছন্দ করতো । আজ একটু কালো বলে সবার কাছে অবহেলার পাত্র হয়ে গেছে ।
আচ্ছা এই পৃথিবীতে কি তাকে কেনো ভালোবাসার মানুষ নেই, একটু ভালোবাসা দিবে তাকে , কালো বলে কেউ দূরে ঠেলে দিবে না । চোখের জল গড়িয়ে পড়লো তার চোখ থেকে ,
পরের দিন বিকালে ছাদে আসলো কাপড় গুলো নিয়ে যেতে, এমন সময় বাসায় কলিং বেল বেজে উঠলো সে চিৎকার করে বলে দরজা খুলা আছে চলে আসেন এই বলে সে সিড়ি বেয়ে ছাদে আসলো , কে আসলো না আসলো সেটা দেখার প্রয়োজন মনে করলো না ।
– মেহেদি দরজা খুলা পেয়ে এদিক ওদিক তাকিয়ে কাউকে দেখতে পেলো না । উপরে তাকিয়ে দেখলো ছাদের দরজা খুলা সে ভাবলো আগে ছাদে যাই দেখি সেখানে আছে কিনা ।
মাধুরি কাপড় গুলো নিয়ে ঘুরতেই মেহেদিকে দেখে থমকে দাড়ালো, মেহেদিও মাধুরিকে দেখে যেনো হাতে চাদ পেয়ে গেছে এমন খুশি হলো । মাধুরি আড়াল হওয়ার চেষ্টা করলো কিন্তু মেহেদি তো তাকে দেখে ফেললো , সে কি করবে বুজে উঠতে পারছে না । চলে যেতে পা বাড়ায় মেহেদি তার হাত ধরে একটান দিয়ে তার কাছে নিয়ে আসলো !!
মাধুরি ভয়ে এবং লজ্জায় চোখ বুজে নিলো , না পারছে কিছু বলতে না পারছে সইতে, সাহস নিয়ে সে বলে উঠলো ,
– এই কেমন অসভ্যতামি , আপনি আমাদের বাসায় এসে আমার হাত ধরেছেন এই সাহস আপনাকে কে দিয়েছ.
মেহেদিঃ- কেউ দেই নি তো , তবে তুমি বাধ্য করছো আমায়!!
মাধুরিঃ- আমি, আমি কিভাবে বাধ্য করেছি আপনাকে
মেহেদিঃ- কেনো তুমার ওই ডাগর ডাগর চোখ, আর চোখের চাহনি আমাকে বাধ্য করেছে তার থেকে বড় কথা আমি যখনই আসি তুমি লুকিয়ে যাও কেনো, তাই আজকে কাউকে কিছু না বলে সোজা ছাঁদে চলে আসলাম ।
মাধুরি মনে মনে ভাবছে এই লোকটা পাগল নাকি, আসলেই মনে হয় পাগল, পাগল না হলে তার মতো মেয়েকে কেউ পছন্দ করে নাকি ।
উহ আপনি হাতটা ছাড়ুন ব্যাথা লাগছে ”
মেহেদি মাধুরির হাতঁটা ছেড়ে দিলো, চলো তুমার সাথে কথা আছে জরুরি !!
মাধুরিঃ- না আপনার সাথে কেনো কথা নেই, আর আমার সাথেও নেই. আর আমার এখন অনেক কাজ আছে আম্মু দেখে ফেললে কেলেংকারি হয়ে যাবে প্লিজ আপনি এখান থেকে যান !!
মেহেদিঃ- না যাবো না , আমার কথা না শুনা পযন্ত যাবো না আমি. .
মাধুরিঃ- প্লিজ যান..
মেহেদিঃ- আচ্ছা ঠিক আছে যাবো । তবে তার আগে একটা শর্ত আছে সেটা মানতে হবে …
মাধুরিঃ- আমি কেনো শর্ত-টর্ত মানতে পারবো না
মেহেদিঃ- না মানলে আমিও যাবো না । এই আমি এখানে দাড়ালাম দেখি তুমি কিভাবে যাও…
মাধুরি আর উপায় না পেয়ে বললো কি শর্ত বলেন জলদি ..
মেহেদিঃ- কালকে বিকালে আমার সাথে দেখা করতে হবে, রাজি থাকলে বলো
মাধুরিঃ- অসম্ভব আমি কেনো আপনার সাথে দেখা করবো, আমি পারবো না .
মেহেদিঃ- না পারলে আর কি ( ভিলেন মার্কা একখানা হাসি দিলো..)
আচ্ছা ঠিক যাবো, এখান আপতত এখান থেকে যান, আর হুটহাট করে বাসায় আসবেন না ! মেহেদি আর কিছু না বলে চলে গেলো আর বললো কাল দেখা হবে তাহলে বায় ।
– মেহেদি চলে যাওয়াতে মাধুরি হাফ ছেড়ে বাচঁলো যাক বাবা আপদ গেছে । রাতে শুয়ে শুয়ে মাধুরি ভাবে এমনতো হওয়ার কথা নয়, তার দিকে কেনো ছেলে ভালো করে তাকায় নি আর এই ছেলে তো পুরা তাকাচ্ছে না । আরো একদাপ এগিয়ে গেছে,
কালকে কি করবে সে যাবে নাকি যাবে না সেই দ্বিধায় আছে । মনের দ্বিধা বড় বাধা এই মনে হচ্ছে একটু ভালোবাসা উকি দিচ্ছে তার জন্য । আবার সে তার সৌন্দর্যের দিকে তাকিয়ে হতাশ হয়ে থাকে, তার জিবনে কি কখনো কেউ আসবে না এই ভেবে…
– ঘুমিয় যায় সে…
চলবে.