সেই_মেয়েটি❤,পার্টঃ5

0
1065

সেই_মেয়েটি❤,পার্টঃ5
লেখক_সাব্বির আহাম্মেদ

এইইইই কেরে পানি দিলো, দূর ঘুমটা ভেঙ্গে দিলো ।

এই যে আর কতক্ষণ ঘুমাবে উঠো এইবার । কথাগুলো শুনে

মেহেদি চোখ মেলে তাকিয়ে দেখলো, তার আম্মুর বান্ধবির মেয়ে ঐশি । এই মেয়েটাকে একদম ভালো লাগে না মেহেদির উচ্চবিলাসি, আর উচ্চংঙ্খা, আর রুপের অহংকার তো আছেই সব মিলিয়ে মেহেদির কাছে তেমন ভালো না লাগারিই কথা ।

কি হলো এইভাবে তাকিয়ে আছো কেনো উঠো ।

আপনি আমায় পানি দিলেন কেনো, আর আমার ঘরে এসেছেন যে আনুমতি নিয়েছেন । কারো ঘরে ডুকার আগে আনুমতি নিতে হয় জানেন না ।

ঐশিঃ- না জানি না আর তুমার ঘরে ডুকার পারমিশন নিতে হবে নাকি ।

এতো কথা বলার সময় নেই আমার সরেন সামনের থেকে এই বলে মেহেদি ওয়াসরুমে চলে গেলো ।

ঐশি চোখ রাঙ্গিয়ে বললো এতো তেজ বাবু তোমার ওয়েট কয়েকদিন পর যে আমার সাথে বিয়ে হবে তখন বুজবে ।

নিচে নামতেই মেহেদির বাবা তাকে ডাক দিলো ।.

– শুন বাবা আজকে তো মনে হয় যাওয়া যাবে না । তর আম্মুর সেই বিখ্যাত বান্ধবি এসেছে, আর আম্মুকে বলতে হবে একা নির্জন ভাবে ।

বাবা যাইইই হক আমি এই মেয়েটাকে বিয়ে করবো না, আর মেয়েটা ভালো না । এই মেয়েটা শুধু আম্মুর চোখে ভালো সাজে ।

আচ্ছা ঠিক আছে । আজকে তো মনে হয় না তাদের বাসায় যাওয়া হবে।

মেহেদিকে দেখে তার আম্মু ডাক দিলো,

এই মেহেদি এইদিকে আয়,

আসসালামু আলাইকুম আন্টি, কেমন আছেন

আন্টিঃ- ওয়ালাইকুম আসসালাম ভালো ।

তুইইই কি বলিস আমার ছেলের সাথে তর মেয়েটার বিয়ে হলে খুব মানাবে । আমি চিন্তা করছি কি সামনের মাসে তাদের বিয়ে দিয়ে দেই ।

– মেহেদির তার মার কথাগুলো ভালো লাগছে না, খুব বিরক্তকর লাগছে । মা এখনো এই মেয়েটাকে চিনে না মেয়েটা কেমন বাজে আর অহংকারি, তার সাথে বিয়ে হলে তো আমার জিবনটা শেষ । মাকে যে এখন কে বুজাবে । তবে যেভাবেই হক এই মেয়েকে বিয়ে করবে না সে,

ওইদিকে সকাল থেকে উঠে মাধুরির কাজের কেনো শেষ নেই, ঘর ঝাড়ু থেকে রান্না বান্না সব একাই করছে সে, আর ওইদিকে তার মা আর বোন মিলে সাজছে ।

একটা ড্রেসটা বার বার পড়ে আয়নার সামনে যাচ্ছে আর দেখছে কেমন লাগছে ,

মাধুরি মনে মনে বলে, একটা তো হাতুমের দেখাচ্ছে আরেকটা তো ভূতের রাণী মনে হচ্ছে । এতো মেকাপ, ময়দা মুখে মাখে কেউ । আল্লাহ যেমন দিয়েছে তেমনি থাকলে কত সুন্দর দেখা যায় তা না মুখে এই সেই‌ মেখে ভূত সাজে, …

মন চাচ্ছে দুইটাকে ধরে পাতিলের নিচে যে কালি আছে তা মেখে দিতে । তবে দিতে পারলে মনটা অনেক শান্তি হবে ।

সব কাজ শেষ মাধুরির এমন সময় তানহা শাকচুন্নির আগমন ঘটলো ।

তানহা এসে আম্মুকে বললো ।

আন্টি মাধুরিকে একটু আমাদের বাসায় নিয়ে যাই, প্লিজ আবার চলে আসবো ।

মাধুরির মা তানহার দিকে একটু বিরক্তি নিয়ে তাকিয়ে মাধুরিকে বললো সময় মতো চলে আসিস ঘরের কাজ কিন্তু পরে আছে ।

আজকে আর মেহমান আসবে না ।

মাধুরিঃ কিরে কি কাজ আছে, আমাকে বললি না তো তুই !!!

আরে কুত্তী, মেহেদি ভাই বলেছে তোকে আজকে বিকালে দেখা করতে ।

– উফফ এই লোকটা কি দেখে আমার পিছে পড়ে আছে, না আছে রুপ না আছে সৌন্দর্য আমার ।

তানহা বললো, তুই দেখতে একটু কালো তবে তাতে সমস্যা কী??
আর তর ভিতরে অনেক ভালো গুণ আছে । দেখ মাধুরি জিবনে অনেক সমস্যা মানুষের থাকে তাই বলে সে পিছিয়ে পড়বে তা তো হয় না । তার উচিত এই সব সমস্যা দূরে ঠেলে দিয়ে তাকে সামনে এগিয়ে যাওয়া । তুই ছাত্রী হিসাবে অনেক ভালো, পড়ালেখাটা চালিয়ে গেলে ভবিষৎতে অনেক দূর পযন্ত যেতে পারবি ।

এইভাবে ভেঙ্গে পড়িস না তুই, আর কেউ তর সাথে না থাকলে আমি তর সাথে আছি । তর পাশে সব সময় আমাকে পাবি তুইইইইই। আর আমার মনে হয় আমাকে তো পাবি তার সাথে আরেকজন স্টোং ভালো মানুষ পাবি ??

মাধুরি বিস্মিত হয়ে বললো সেটা কে ??

আরে তর মজনু মেহেদি ভাই ।

মাধুরি বললো দূর কি যে বলিস তুইইই, ওনি আমার সাথে থাকবে কেনো এই দু-তিন চলবে এমন তারপর দেখিস শেষ ।

তানহাঃ- বাজি ধর যদি মেহেদি ভাই তোকে বিয়ে করে তাহলে তুই আমাকে ট্টিট দিবি কিন্তু ??

মাধুরিঃ- হুম আচ্ছা ঠিক আছে বাজি, দিবো আর যদি না হয় তুই আমাকে দিবি !!

তানহাঃ- ওহ ওকে ঠিক আছে দেখিস আমিইই জিতবো

তারা দুজন কথা বলতে বলতে পার্কে চলে আসলো ।

. এইদিকে মেহেদি খুব জোর ঐশির থেকে কেনোমতে পালিয়ে এসেছে, মেয়েটা তাকে পাগল করে দিচ্ছে । আরেকটু বাসায় থাকলে তো সে এখন পাগলা গারদে থাকলে হইলে !! যাক একটু অজুহাত দেখিয়ে চলে এসেছে সে!

মাধুরি আর তানহা মেহেদির পিছনে গিয়ে দাড়ালো,

এই যে ভাইয়ায়য়য়য়য়য়য়য়য়য়য়য়য়য়য়য়, এত বড় ডাকে

মেহেদি লাফিয়ে উঠে কে কে বলে খুব জোরে চিৎকার করে পিছন ফিরে তাকিয়ে দেখলো মাধুরি আর তানহা ।

মাধুরি মেহেদির এমন অবস্থা দেখে খুব হাসতে থাকলো । মেহেদির সাথে তার বন্ধু সাকিবও এসেছে সে এসে সবার সাথে পরিচিয় হয়ে নিলো ।

– তানহা সাকিবের দিকে তাকিয়ে বললো মেহেদি ভাই এই হনুমানটা কে ????

তানহার এমন কথা শুনে মেহেদি মাধুরি সাকিব তো অবাক প্রথম কথায় এমন বলে কেউ.?? ( মাধুরি তানহাকে খোচা মেরে বলে )

মেহেদি একটু ভাব নিয়ে বললো, সে আমার বন্ধু বাবার অনেক টাকা তবে অব্যশই সে ফকিন্নী, সারাদিন টো টো করে ঘুরে আর সে সিঙ্গেল অবশ্যই‌ 5/6 টা এক্স আছে, বিড়ি সিগারেট খায় না …

কিন্তু মানুষ যে গুলো ফেলে দেয় সে গুলো নিয়ে টানে মাঝে মধ্যে‌…

থামুন বলে মেহেদিকে তানহা থামিয়ে দিলো, আপনাকে সে কে তাই জিজ্ঞাসা করছি আর আপনি তার সব বলছেন আগা গোড়া.

মেহেদি বললো, আগে থেকে সব জেনে রাখা ভালো ।

তানহা সাকিবের দিকে তাকিয়ে বললো এই যে হনুমান আপনি আমার সাথে আসুন আপনার সাথে কথা আছে ?? এই বলে তানহা আর সাকিব চলে গেলো ।

তারা দুজন চলে যাওয়াতে মেহেদি খুব খুশি যাক আপতত কিছুটা সময় তার ভালোবাসার মানুষটার সাথে কাটানো যাবে !!

নিরবতা ভেঙ্গে মেহেদি বললো তুমার কেনো আপত্তি না থাকলে চলো আমরা ওইদিকটা বসি ।

বিকালের এই সুন্দর দৃশ্য বসে বসে উপভোগ করা আর তার সাথে জমিয়ে গল্প করা বেশ খারাপ না ।

মেহেদির সাথে বেশ সময় ধরে কথা হলো মাধুরি, ছেলে হিসাবে মেহেদি ভালো, আর তাকে বুজার মতো মেহেদির যথেষ্ট জ্ঞান আছে । আস্তে আস্তে মাধুরিরও মেহেদিকে ভালো লাগা শুরু হয়ে গেছে ।

– বেশ কয়েকবার চোখে চোখ পড়লো, খুব লজ্জা লাগছে । সময় হয়ে গেছে তার । সে উঠে তানহাকে খুজতে লাগলো,

তানহার দিকে চোখ যেতেই সে অবাক, এরিই মধ্যে তানহা সাকিব খুব ক্লোজ হয়ে গেছে । আয় আল্লাহ তবে দুজনকে খুব মানিয়েছে যদি একসাথে থাকতে পারে তাহলে তো কথাই নেই ।

মাধুরি তানহাকে ডাক দিলো, এই তানহার বাচ্ছা সময় হয়ে গেছে যাবি না বাসায়

তানহা মাধুরির দিকে রাগী স্বরে তাকিয়ে বললো, কি হয়েছে তর এতো জোড়ে চিল্লাস কেনো আচ্ছা ওয়েট আসছি ।

আচ্ছা এই নেও আমার নাম্বার রাতে কল দিবা কিন্তু না দিলে খবর আছে ???

বাব্বাহ অনেক দূর পযন্ত চলে গেছিস দেখি এখন বাসায় চললল

মাধুরি মেহেদির থেকে বিদায় নিয়ে খুশি মনে রাস্তা দিয়ে হেটে আসছে ।

জানিস তানহা আজকে আমার মনটা অনেক খুশি,

তো মেম খুশিতে আপনার কি করতে ইচ্ছে করছে,

– ধর তুইই যেটা বলতে বলবি এখন সেটা করবো

তানহাঃ- সত্যি তাই নাকি !! রাস্তার পাশে একটা ছেলে দাড়িয়ে প্রসাব করছে দেখ… আর তার পাশে একটা ডোবা আছে দেখ

হুম দেখলাম তো কি হয়েছে,

তানহা হাসি চেপে বললো তর কাজটা সিম্পল, তুই সোজা গিয়ে তার পাছা বরাবর একটা কিক দিবি এটাই তর কাজ.??

মাধুরি অবাক হয়ে কি বলিস, এটা তো অসম্ভব

এটা অসম্ভবের কিছু না, তুই চেষ্টা করলে পারবি ।

মাধুরি আর উপায় না পেয়ে, আস্তে আস্তে ছেলেটার পিছনে গিয়ে তার পাশ্চদেশ বরাবর এক লাথি মারলো খুব জোরে তারপর পরের সিন আর না দেখে দুজনে সেখান থেকে ভৌ দৌড় দিলো ……. ধরা পড়লে অবস্থা খারাপ হয়ে যাবে

ছেলেটা হঠাৎ এমন লাথি খেয়ে ভাবলো ভৃমিকম্প হয়েছে কোথাও পরে না সে দেখে পচা ময়লা নোংরা পানিতে পড়ে আছে…

দুজনে দৌড়ে কিছুটা আড়াল হয়ে খুব হাসছে তারা….
তানহাঃ কিরে তর গায়ে তো প্রচুর শক্তি কি জোড়ে লাথি মারলি ।
মাধুরি মনে মনে ভাবছে সে যে এতো জোরে লাথি মারতে পারে আগে জানতো না তো । তাহলে তো এখন থেকে যাকে লাথি দিতে মন চায়বে সাথে সাথে কেনো দ্বিধা ছাড়া দিয়ে দিবে . হা হা হা

চলবে‌..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here