#সেই_রাতে,পর্ব_15,16
#ইসরাত_জাহান_তানজিলা
#পর্ব_15
.
-” নিঝুম এক মগ কফি হবে? আসলে তোমার হাতের কফি যে একবার খাবে সে সারা জীবন কফি খেয়ে জীবন টা কাটিয়ে দিতে দিতে চাইবে।”
নিঝুম মুচকি হেসে বলল,
-” আর যে পরোটা খাবে?”
-” সে আধাঘন্টা হেসে হার্ট ফ্রেশ করবে।”
নিঝুম ভেংচি কেটে বলল,
-” ইস! আপনি খুব পারেন।বসেন আমি কফি নিয়ে আসছি।”
নিঝুম কফি বানাতে গেল। প্রিতম বেলকুনিতে বসে আনমনে ভাবছে। ভালোই যাচ্ছে সময় টা। মেয়েটা কে যত দেখি তত ভালো লাগে।
নিঝুম প্রিতমের সামনে কফি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। সে দিকে ওর কোন খেয়ালই নেই,গভীর ভাবনায় মগ্ন ।
-” এই যে কি ভাবছেন এত? এত ভাবলে কবি সাহিত্যিক হয়ে যাবেন তো।”
নিঝুমের ডাকে প্রিতমের হুঁস ফিরে।
-” কবি সাহিত্যিক কিছুই হওয়ার শখ নেই। আপাতত কফি খেতে পারলেই চলবে।”
দুইজনেই ফিক করে হেসে দিলো।
প্রিতম কফিতে এক চুমুক দিয়ে বলল,
-” বাহ! দিন দিন স্বাদ বাড়ছে মনে হয়।”
-” হয়েছে প্রশংসা করতে হবে না। আমি কারো নাকে ঘুষি দিতে চাই না।”
-” দেও ঘুষি। তোমার ওই নরম হাতের ঘুষিতে নাকটা বিসার্জন দিবো।”
প্রিতম একথা বলে সাথে সাথে জিহ্বায় কামড় দিলো। ইস! কি বলতে কি বলে ফেল্লাম!
নিঝুমের খুব অস্বস্তি লাগছে। লোকটার আমায় অস্বস্তিতে না ফেললে মনে হয় ভালো লাগে না।
দুই জনের মাঝেই নিরাবতা বিরাজ করছে। নিঝুম প্রিতমের দিকে চেয়ে আছে। কত তৃপ্তি সহকারে প্রতি টা চুমুক দিচ্ছে। এত তৃপ্তি নিয়ে কফি খাওয়ার কি আছে কে জানে!
প্রিতম নিরাবতা ভেঙে বলল,
-” নিঝুম গান করতে পারো।”
-” পারি একটু একটু। ”
-” একটা গান শুনাবে?”
নিঝুম মুখ বাঁকিয়ে বলল,
-” ফ্রি তে গান শুনাই না।”
-” আইসক্রীম খাওয়াবো যদি গান শুনাও।”
-” পারি না গান করতে মজা করে বলছি।”
-” মোটেও মজা না। তোমার ভয়েস শুনলেই যে কেউ বলতে পারবে তুমি গান করতে পারে।”
নিঝুমের ওর সামনে গান করতে মোটেও ইচ্ছা করছে না । কেমন যেন লজ্জা লাগছে । প্রিতম বারবার অনুরোধ করছে। কি করবে নিরুপয় হয়ে রাজি হলো।
নিঝুম চোখ বন্ধ করে বলতে লাগল,
Mere kismat ke har ak punne pe,mere jite ji bad marne ke,mere har ikkal har ak lamhe main,tu likhde mera uceh.
Har kahani ki sare hisso main dil ki duniya ke sachche rishto main,jindeganike sare hisso main tu likhde mera uce.
Ya khuda ya khuda jab bana uckahi bana.
Ya khuda ya khuda jab bana uckahi bana.
Mere his ke hasi kushi ko tu chahe adha kar,chahe le leh tu meri jindegi par ye mujce wada kar.
Ucke isqe pe gamho pe
Dukhho pe har uske jakhmo per hak mera hi rahe har jaga har ghari har umro bhar.
Ab fataq ho yahi bo rahe mujmehi usci bo jo haci gunje jo mera ghar .
ya khuda ya khuda jab bana uskahi bana.
Ya khuda ya khuda jab bana uskahi bana.
.
গান করতে করতে নিঝুমের চোখ দিয়ে কখন যে টপটপ করে জল পড়া শুরু করছে নিঝুমের খেয়ালই নেই।
নিঝুমের গানের কন্ঠ শুনে প্রিতম অবাক! এত্ত সুন্দর গান করে মেয়েটা।
মনে হয় গান টা একদম হৃদয়ের গহীন থেকে বলছে। গানের ভেতর প্রিতম নিজেকে হারিয়ে ফেলছে।
-” নিঝুম কাঁদছো কেন?”
নিঝুম চোখ মেলে বলল,
-” এমনি।”
-” তুমি চোখ বুজে গান করো কেন?”
-” আপনার সামনে গান করতে লজ্জা করছিলো তাই।”
প্রিতম হেসে বলল,
-” অনেক সুন্দর গান করো তুমি। সত্যি খুব বেশী সুন্দর। কার জন্য এত প্রার্থনা করলে?”
-” গান তো গানই। ইচ্ছা হলো তাই এটা গাইছি। কার জন্য আর প্রার্থনা করব!
-” তো কান্না করলে যে?”
-” গান করলে এমনিই আমার চোখে পানি এসে যায়।”
এই বলে নিঝুম রুমে চলে গেল। কেন জানি মন টা ভীষন খারাপ লাগছে ।
প্রিতমের বার বার চোখে ভেসে উঠছে নিঝুমের গান গাওয়ার মুহূর্তটা। চোখ বুজে ছিল,চুল গুলো খোলা। আর চোখ থেকে জল পড়ছিলো। ওর গাওয়া গানের মাঝে নিজেকে হারিয়ে ফেলছে প্রিতম ।
.
-” নিঝুম তোমার জন্য বাসা ঠিক করে ফেলছি।”
-” কোথায়? কোন অসুবিধা হবে না তো আবার?”
-” আরে পাগলি কিসের অসুবিধা আমি আছি তো ।”
নিঝুম মন খারাপ করে বলল,
-” সবাই যদি আপনার মত ভালো হত। তাহলে কোন টেনশন হত না।”
-” প্রসংশা? ”
-” এই আবার ঘুষি মেরেন না।”
প্রিতম হেসে দিল।
-” কোথায় বাসা ঠিক করছি তা জানাবে না?”
-” আপনার উপর আমার আস্থা আছে। এটা নিয়ে আমার না ভাবলেও চলবে।”
প্রিতম অবাক হওয়ার ভঙ্গিতে বলল,
-” এত আস্থা?”
-” জ্বী অনেক।”
-” ওই যে পাশের বাসায় থাকবা কাল থেকে। যাতে প্রতিদিন সকালে তোমার হাতের মিষ্টি কফি খেতে পারি তাই এই ব্যবস্থা।”
-” বিল্ডিং দুটি একদম এক সাথে।”
-” হুম। এই বিল্ডিং ছাদ থেকে লাফ দিয়ে ওই বিল্ডিং এর ছাদে যাওয়া যায়।”
-” তাহলে তো আমি প্রতিদিন সকালে ওই বিল্ডিং এর ছাদ থেকে লাফ দিয়ে আপনাদের ছাদে এসে ফুল গুলো দেখে যাবো ।”
প্রিতম হাসতে হাসতে বলল,
-” আপনাদের ছাদ?”
-” ধুর!”
-” কালকে বাবা-মা চলে আসবে। তোমার জন্য বাসাও ঠিক হয়ে গেছে। আল্লাহ রক্ষা করছে।”
-” আসলেই। কিন্তুু আমার লুকোচুরি খেলাটা ভালোই লাগত। আপনার আম্মুর সামনে আপনার মুখ টা দেখার মত ছিল।”
-” আমার প্রান নিয়ে টানাটানি আর তুমি মজা নেও।”
দুইজনই ওসব মনে করে হেসে দিলো।
-” শুনো বাবা আসলে তো তুমি আমার সাথে অফিসে যেতে পারবে না,যেদিন বাবা অফিসে না যাবে ওই দিন কিন্তুু আমার সাথে যাবে।”
-“আরে প্রোবলেম নেই আমি একা যেতে পারব।”
-” তোমার মত সুন্দরী মেয়ে একা ছাড়া যাবে না। বাবা কে বলল ,”তোমার আর অফিসে যেতে হবে না আমিই এখন থেকে অফিস সামলাবো।”
-” কত দিন আর আমায় এমন পাহারা দিয়ে রাখবেন? ”
প্রিতম মুচকি হেসে বলল,
-” যতদিন সুযোগ হয়।”
.
আজকে নিঝুম পাশের বিল্ডিং এ চলে যাবে। এই বাসা টার উপর কেমন যেন মায়া পরে গেছে। লোক টার উপর তার চেয়ে বেশী মায়া কাজ করে। আমার লাইফে দেখা সব চেয়ে ভালো মানুষ। কত উপকার করল উনি। আমি তো কিছুই দিতে পারলাম না।
প্রিতমের সাথে থাকলে মন ভালো হয়ে যেত ওর। উনার সাপোর্টেই নতুন করে বাঁচতে শিখছে।
প্রিতম খাটের এক কোনায় বসে আনমনে কি যেন ভাবছে। বার বার চোখের কোনে জল এসে যাচ্ছে । এত টা মায়ায় পরে যাবে বুঝতে পারে নি।
-” নিঝুম কোন রকম অসুবিধা হলে জানাবে। প্রতিদিন সকালে ছাদে এসো কিন্তুু । অবশ্যই আমার জন্য কফি নিয়ে।”
-” তা না হয় আনবো। আমায় ঘুম থেকে জাগাবে কে?”
প্রিতম হেসে বলল,
-” সুড়সুড়ি থেরাপি ছাড়া তো তোমার ঘুম ভাঙে না। ফোনে এলার্ম দিয়ে রেখো। এলার্ম দিয়ে আবার সাইলেন্ট করে রেখো না।”
চলবে…
#সেই_রাতে
#ইসরাত_জাহান_তানজিলা
#পর্ব_16
.
নিঝুম চলে গেছে। পুরো বাসা জুড়ে শূন্যতা বিরাজ করছে। প্রিতমের বুকের ভেতর টা ফাঁকা ফাঁকা লাগছে। মেয়েটা এতটা মায়ায় জড়িয়ে যাবে ভাবতে পারে নি। নিঝুম ওর অভ্যাসে পরিনত হয়েছে। সব কিছুতে নিঝুমের শূন্যতা অনুভূত হয়। বারান্দায় চেয়ারে বসে বসে এসব ভাবছে প্রিতম । চোখের কোনে একটু একটু জল জমছে। গেটের দিকে চোখ পড়ে প্রিতমের । বাবা-মা চলে আসছে। প্রিতম উনাদের এগিয়ে আনতে যায়।
-” এত দিনে বাড়ি আসার কথা মনে হলো?”
প্রিতমের মা মুখ বাঁকিয়ে বলল,
-” হয়েছে আর ঢং করতে হবে না! আমাদের ছাড়া তো ভালোই ছিলি। তোর খালাকে দেখতে একবার কোন রকম গিয়েছিস। তোর খালা সারাক্ষন তোর কথা বলে । ফোন দিলে ঠিক মত ধরিস না।”
-” উফ আম্মুর! জানো অফিসে কত কাজ? বাবার কাছে জিঙ্গেস করে দেখো। দম নেওয়ার টাইম নেই। এই কয়টা দিন কত বিজি ছিলাম ।”
প্রিতমের বাবা বলল,
-” ছেলে তো দেখছি কাজের ব্যাপারে খুব যত্নশীল হয়ে গেছে।”
-” দেখো বাবা আমায় নিয়ে একটুও ঠাট্টা করবে না। তোমাদের বয়স হয়েছে। এই বয়সে ঘুরবা-ফিরবা তাই তোমাদের বাসার আসতে বলি নি। আর খালামনি অসুস্থ । তাঁকে রেখে বা কিভাবে আসবে।”
প্রিতমের মা ওর বাবাকে উদ্দেশ্য করে বলল,
-” ছেলে তো দেখছি খুব বুঝবান হয়ে গেছে।”
-” তোমাদের সমস্যা টা কি বলো? সব কিছুতে আমায় নিয়ে মজা কর বাদ দেও এসব। বলো খালামনির অবস্থা কি?”
প্রিতমের মা বলল,
-” এখন একটু সুস্থ ।”
প্রিতম রুমে বসে আছে। পুরো রুমটা জুড়ে ওর স্মৃতি। নিঝুম কে দেখতে ইচ্ছা করছে খুব।প্রিতম ছাদে গেল । নিঝুমের রুমের জানালা আটকানো। ইস! জানালা খোলা থাকলেই ওকে দেখা যেত।
ওকে একটু ফোন দিয়ে ছাদে আসতে বললে কি কিছু মনে করবে? নানা দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ভুগছে প্রিতম ।কিছুতেই সংকোচ কাটিয়ে উঠতে পারছে না। নিজের ইচ্ছা টা কে দমিয়ে রুমে চলে গেল প্রিতম ।
.
নিঝুমের এখানে মোটেও ভালো লাগছে। পুরানো তিক্ত স্মৃতি গুলো একাকিত্ব অবস্থায় বাজে ভাবে উঁকি দিচ্ছে। যেসব নিঝুম একদম মনে রাখতে চায় না সেগুলোই বেশী মাথায় আসছে। প্রিতমের সাথে থাকলে এমন টা হয় না,তখন মনটা খুব ফ্রেশ থাকে। যখন প্রিতমের সাথে ছিল ভালোই ছিল,এসব একদম মনে আসত না। এখন যদি উনায় ফোন দিয়ে ছাদে আসতে বলি উনি কি কিছু মনে করবে? কেমন যেন দ্বিধায় ভুগছে নিঝুম ।
সব রকম দ্বিধা- দ্বন্দ্ব কাটিয়ে প্রিতমের নম্বরে ফোন দিল । প্রিতম যেন এই ফোন টার জন্যই অধীর অপেক্ষায় ছিল ।
-” একটু ছাদে আসবেন?”
-” আসতেছি এক্ষুনি।”
প্রিতমের খুশি যেন ধরে না। ছাদে গিয়ে দেখে নিঝুম দাঁড়িয়ে আছে।
-” নিঝুম আমি ওই ছাদে আসি? ”
-” এই না দরকার নেই।”
-” কেন?”
-” যদি পড়ে যান?”
প্রিতম ফিক করে হেসে দিলো,
-” এর থেকে কত ডিসটান্সে লাফ দিছি।”
-” না,না দরকার নেই। ওখানেই থাকেন।”
প্রিতম কিছু না বলে এক লাফে ওই ছাদে চলে গেল।নিঝুমের চোখে মুখে ভয়ের ছাপ।
-” কি ভয় পেয়েছো?”
মুখ ঘোমড়া করে বলল,
-” হুম অনেক । আমি ছাদ থেকে নিচের দিকে তাকালেও খুব ভয় পাই ।”
প্রিতম হেসে বলল,
-” ভিতু!”
নিঝুম মুখ ভেংচিয়ে বলল,
-” ইস! দেখছে।”
-” দেখিনি তুমি বলছো। তুমি তো খুব সুন্দর মুখ ভেংচি দিতে জানো।”
-” প্রশংসা করলে একদম নাকের উপর ঘুষি দিব।”
-” পেত্নি বলে কি!”
নিঝুম নিঃসংকোচে বলল,
-” আমার মন টা একটুও ভালো নেই। মন ভালো করে দেন।”
প্রিতম অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। কথাটা কেন যেন ওর খুব ভালো লেগেছে। বুকের ভেতর ঝড় তুলছে।
প্রিতমের কাছ থেকে কোন উত্তর না পেয়ে নিঝুম আবার বলল,
-” কি বলছি কানে যায় নি?”
প্রিতমের ধ্যান ভাঙে।
-” হুম কানে মনে সব খানেই গেছে। তা তোমার মন কি করলে ভালো হবে?”
-” আপনার সাথে থাকলেই মন ভালো হয়। একা থাকলে তিক্ত স্মৃতি বার বার আমায় অতিষ্ট করে দেয়।”
-” এই তো আছি তোমার সাথে ।”
-” আপনি যদি একটা কাজ করেন তাহলে আমার মন টা খুব বেশী ভালো হয়ে যাবে।”
প্রিতম ভ্রুককুঁচকে বলল,
-” কি কাজ?”
-” না থাক। বললে আপনি রাগ করবেন।”
-” তুমি দেখছো তোমার উপর কখনো রাগ করতে? নির্ভয়ে বলো তো।”
নিঝুম হাসি চেপে বলল,
-” একটু ডান্স করে দেখান না।”
প্রিতম হেসে দিল ।
-“আচ্ছা তুমি যখন বলছো একটু দেখাই।”
প্রিতমের ডান্স দেখে নিঝুম হাসতে হাসতে খুন। ও কখনো বুঝতে পারে নি প্রিতম সত্যি ওর কথায় নাচবে। প্রিতম নিঝুমকে হাসানোর জন্যই মজার ভঙ্গিতে ডান্স করছে।
নিঝুম কোন রকম হাসি থামিয়ে বলল,
-” এই থামুন।আমি আর হাসতে পারছি না।”
প্রিতম নিজেও হাসতে হাসতে শেষ।
-” কি মন ভালো হয়ছে?”
নিঝুম হাসির জন্য কথাই বলতে পারছে না।
-” এই নিঝুম আমি কি খুব খারাপ ডান্স করি? এস হাসছো কেন? একটু হাতে তালিও দিলা না।”
প্রিতম খেয়াল করে দেখলো নিঝুমের একটা বাঁকা দাঁত আছে। না হাসলে বুঝা যায় না। ওর হাসির শব্দে প্রিতম হারিয়ে যাচ্ছে ।নিঝুম হাসি থামিয়ে বলল,
-“আমি আর হাসতে পারছি না! আমার পেট ব্যাথা হয়ে যাচ্ছে । হাসিই থামছে না।”
-“মন ভালো হয়েছে?”
-” হুম খুব খুব খুব।”
-” একটু থ্যাংক্সও বললা না।”
-” এত ফরমালিটি আমার পছন্দ না। আপনার এই অপরূপ ড্যান্সের বদলে থ্যাংক্স দিলে কম হয়ে যাবে।”
-” ড্যান্স আবার অপরূপ হয়?”
-” হয় মাজে মাজে।”
-” নিঝুম অফিসের টাইম হয়ে গেছে। তুমি খেয়ে রেডি হও। নিচে ওয়েট করো আমি না আসা পর্যন্ত যাবে না কিন্তুু ।”
-” না,না আমি একা যেতে পারব।”
-” বেশী বুঝো না তো।”
প্রিতম ওর রুমে চলে গেলো। নিঝুমের খুব হাসি পাচ্ছে ।হাসি থামাতে পারছে না।
প্রিতম রুমে বসে বসে একা একা হাসছে,নিঝুমের হাসির শব্দটা বার বার কানে বাজছে।
প্রিতমের মায়ের ডাকে ওর ভাবনার ছেদ হয়। প্রিতম চেয়ে দেখে ওর আম্মু রুমের দরজার সামনে দাড়ানো।
-” কি ভাবছিস এত? খেতে আয়?
-” আসছি আম্মু।”
প্রিতম আজকাল বেখায়ালি হয়ে যাচ্ছে । কেউ সামনে এসে দাঁড়িয়ে থাকলেও টের পায় না,নিঝুমের ভাবনায় এত মগ্ন থাকে ।
প্রিতম খেতে গেল।ওর বাবা বলল,
-“তাড়াতাড়ি আয়। কতক্ষন ধরে ওয়েট করছি তোর জন্য। ডাকলেও কোন সাড়া নাই।”
-” শুনি নি আব্বু। আজকে তুমি অফিসে যাবা?”
-” হ্যাঁ ,কেন?”
-” আমিই যাবো তোমার যেতে হবে না। বাসায় বসে রেস্ট নেও।”
প্রিতমের বাবা অবাক হয়ে বলল,
-” এত পরিবর্তন!!”
প্রিতমের মা বলল,
-” বলছিলাম না অফিসে যেতে যেতে কাজের প্রতি মনোযোগ এসে যাবে ।”
প্রিতমের বাবা বলল,
-” হুম তোমার ভবিষ্যৎ বানী তাহলে সত্যি হয়েছে। কিন্তুু তুই একা সব কাজ সামলাতে পারবি না। দুই জনেই যাবো ।”
-“না আব্বু । তোমার যাওয়া দরকার নেই। আমি সামলাতে পারব।”
প্রিতমের বলব আর কথা বাড়ালো না। ছেলের পরিবর্তন দেখে খুব খুশি। প্রিতম দ্রুত রেডি হয়ে বাসা থেকে বের হলো । নিঝুম ওর জন্য অপেক্ষা করছে।
চলবে..