সেদিন_ছিল_শরৎের_এক_সন্ধ্যা পর্ব_০২

0
3987

সেদিন_ছিল_শরৎের_এক_সন্ধ্যা পর্ব_০২
#লামিয়া_রহমান_মেঘলা

আমান ভাই এর কথা শুনে চুপচাপ বসে রইলাম।
উনি আমার দিকে এগিয়ে আসছে তা দেখে আমি আরেক দফা কারেন্ট সক্ট খাইলাম। আল্লাহ উনি কি করতে চাইছে।
আমার দিকে এক দম এগিয়ে এসে ঠাস করে শুয়ে পঠলেন।
তার পর অন্য হাতে আমাকে টেনে তার বুকের উপর ফেললেন,
–ঘুমাও জলদি কাল বের হতে হবে।
কাল বের হতে হবে কথাটা শুনে আমার ত ক্রমশ চিন্তা বাড়ছে আল্লাহ কাল বাসায় গেলে কি হবে আমি কাকে কি বলব।
আল্লাহ কিছু ভাবতে পারছি না।
–মেঘ ঘুমাও।
আমানের কথায় চোখ বন্ধ করে নিলাম।
খুব জলদি ঘুম চলে এলো,
সকলে,
,ঘুম থেকে উঠে নিজেকে একটা অন্য বাসায় আবিষ্কার করলাম।
কাল ত এখানে ছিলাম না তবে এখানে কেন আর এটা কোথায়।
থতমত খেয়ে ঘুম থেকে উঠে শাড়ি ঠিক করে দরজা খুলতে দেখি বাড়ি ভরতি মানুষ।
ও মা এ কি।
ও আল্লাহ এটা আমি কই?
দুই কদম ভয়ে ভয়ে এগোতে আমান ভাই এর মা আমাকে ডাক দিলেন,
–ছোট বৌ মা এদিকে এসো।
ও মা ছোট বৌ মা মানে উনি এতো ভালো ব্যাবহার করছে কেন?
কিছুই ত বুঝতেছি না আমি।
আমি আন্টির কথায় নিচে গেলাম।
সেখানে দেখি আপু।
আমার চোখ কপালে।
এগুলা হচ্ছে টা কি।
–এদিকে এসো বৌ মা।
আন্টি আমাকে আপুর পাশে বসালেন।
–কিরে বিয়ে করবি আমার দেবর কে তা বলে করবি না এভাবে পালিয়ে করার কি ছিল (ফিসফিসিয়ে আপু)
ও আল্লাহ আমি ত সপ্তম আসমান থেকে নিচে পড়লাম মাজা টা মনে হয় গেল আমার।
কি বলে কি এটা আপুর দেবর কিন্তু এটা কি করে হলো।
আমার মাথায় কোন কাজ করছে না।
কিছু সময় পর দেখলাম ওরা দু ভাই এসে আমাদের দু জনের পাশে বসল।
দু ভাই দেখতে এক রকম মানে এরা জমজ ভাই।
মাথা ঘুরাচ্ছে আমার।
হচ্ছে টা কি এগুলা।
কিছু সময় পর আমাদের ছেড়ে দিলেন আন্টি।
আমান ভাই আমাকে ধরে ঘরে নিয়ে এলেন,
–কি হচ্ছে কি এগুলা আমার মাথা ঘুরাচ্ছে।
–কি মাথা ঘুরাচ্ছে ত।
আমি জানতাম কিন্তু আমি এখনো কিছু করলাম না তবে মাথা কেন ঘুরায় তোমার?
–দেখেন মোটেও মজা করবেন না আমার ভিশন রাগ হচ্ছে।
–ওহ বৌ এর আবার রাগ ও হয় ।
–আমি মজা করছি না।
–আচ্ছা ওকে,
আমি আর আমার ভাই জমজ।
তোমায় আমার খুব কাছে রাখতে মন চাই তাই তোমার সাথে গেমটা খেলে নিলাম ।
–মানে কি মানে আমি এতো বোকা কেমনে।
আল্লাহ আপনি কে আমার বিয়ে হয়ে গেল?
আমি এভবে বোকা হলাম।
আল্লাহ কি চলে।
–তুমি ডিপ্রেশনে যেও না আমি সবার কপালে থাকি না।
মাথায় হাত দিয়ে বসে আছি।
মানে হলো টা কি আমার সাথে আমি নিজেও জনি না।
বাহ ওয়াউ।
ওয়াউ কেউ তালি দেও আমি বেবদ বিয়ে হয়ে গেল আমার বেবোদি পনার জন্য।
আল্লাহ আমার বিয়ে হয়ে গেল।
–ওরে বলদ রে এখন খেয়ে ফ্রেশ হয়ে নেও।
–হ্যাঁ আমি সত্যি একটা বলদ আপনি না বললে জানতাম না আমি এতো বড়ো বলদ।
–ও মা তাই।
–১০ হাত দুরে থাকুন আপনি কেন বৌ নেই এখানে আপনার।
আমি কারোর বৌ না।
আমি একটা ভালো মানুষ যেমম ছিলাম তেমি আমি আজপ সিঙ্গেল।
কথাটা বলেই একটা শাড়ি নিয়ে বাথরুমে এলাম।
ঠান্ডা পানি মাথার উপর ছেড়ে বসে আছি।
–ও মা কি বলদ।
আল্লাহ আমার মতো বলদ কোথাও আছে না মানে হলো টা কি এগুলা।
,
মেঘ গোসল করে বের হতে আমান তার দিকে তাকায়।
আমানের দৃষ্টি আটকে গেছে,
একটা নীল রঙা শাড়ি
চুল গুলো কোমড়ে নেমেছে।
এ জেন কোন হুর নেমেছে।
কোন এক শরৎের সন্ধ্যায় মেঘকে প্রথম দেখেছিল আমান।
সত্যি ভাবতে পারে নি এভাবে সে মেঘকে আটকে ফেলবে।
সত্যি খুবই সুন্দর তার প্রিয়।
নিজের কাছে আটকে রাখতে পেরে খুব বেশি খুশি সে।
কিন্তু মেঘ ত রেগে আছে।
আমানের মাথায় একটা দুষ্টু বুদ্ধি এলো।
সে গিয়ে মেঘকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে চুলে নাক ডোবালো।,
হটাৎ এভাবে পেছন থেকে ধরায় বেশ কিছুটা ভয় পেয়ে গেছি আমি।
–কি করছেন আপনি ছাড়ুন।
–না ছাড়বো না কি করবা।
–ছাড়ুন বলছি।
–মুহুম না।
–সমস্যা কি আপনার?
–তোমায় দেখলে রোমান্টিক হয়ে যাই আমি।
–আপনাকে দেখলে আমার খালি পিটাতে মন চাই।
–ওহ বৌ এর এই মিষ্টি হাতে মার খেলে কিছু হবে না।
–খুব বেশি সখ না।
–হ্যাঁ খুব সখ।
হাজার হোক একটা তো বৌ।
–আমি মানি না বিয়েটা।
–আমি ত মানি।
–আপনার মানায় কিছু আসে যায় না।
–যায় সব আসেও সব যায় ও।
–ছাড়ুন।
–মুহুম ছাড়বো না ইটস রোমান্স টাইম।
–আমাকে ছোবেন মা আমার আপনার ছোয়া সহ্য হচ্ছে না।
–আমার ত ভালো লাগছে।
–ও মা আপনি ত বেশ মসাই।
–তোমারি ত।
–আপনার সাথে এতো কথা খরচ করে লাভ নাই।
–সেটাই ত বলছি কোন লাভ নাই খরচ করো না আমাকে আমার কাজ করতে দেও।
–স্টে এওয়ে ফ্রম মি।
দুরে থাকুন।
–উহু কাছে থাকুন বলো।
–ছাড়ুন (নিজেকে ছাড়াবার যতো চেষ্টা করছি তিনি তত আটকে ধরছে)
–লাভ নেই নিজেকে ছাড়াতে পারবা না তুমি।
–আপনি কে আমাকে কি ভাবে চিনেন।
–কি ভাবে চিনি তা বড়ো কথা নয় এখন তুমি আমার স্ত্রী এটা বড়ে কথা।
–আপনি একটা অসহ্য মানুষ।
–আর তুমি একটা কিউট বৌ। চকলেটের এর মতো খাইয়া ফেলতে মন চাই।
–ও মা আপনি ছাড়ুন।
–না বলো আরো জড়িয়ে ধরুন।
–আমার কষ্ট হয়ে যাচ্ছে কথা বলতে বলতে।
–কেন আমার ত শুনতে ভালোই লাগছে।
–ও মা আমি কই যাবো।
–ধুর করছি রোমান্স উনি মাকে ডাকছেন।
–এই ছাড়ুন।
–উহু না।
–আমি আর কিছু বলব না।
–সেটাই ত বলছি কিছু বলো না শুধু ফিল করো আই লাভ উ মেঘ।
কথাটা বুকের ভেতরে কেমন টর্নেডো এনে দিলো।
ওনাকে ত ভালোবাসি মা তবে ওনার ভালোবাসি কথা শুনে এমন কেন লাগছে আমার।
আয়নার দিকে তাকালাম।
লোকটা আমার থেকে লম্বা।
স্যামলা ফর্সা।
সব দিক দিয়ে দেখলে যে কেউ ক্রাশ খাইবে।
এমন একটা হাসবেন্ড এর স্বপ্ন দেখেছিলাম কিন্তু এভাবে পুরোন হবে ভাবি নি।
সত্যি কেমন অদ্ভুত তার চাহনি তার কথা।
কথার মাঝে লুকিয়ে থাকা প্রেম আবেগ সব কেমন একটা আজব চরিত্রের অধিকারি।
এই চরিত্র টা আমার কাছে পরিষ্কার না হলেও মানুষ টাকে কিন্তু বেশ লেগেছে।
সত্যি তিনি অসাধারণ।
চলবে,
(বানান ভুল ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন ধন্যবাদ ❤️)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here