সেদিন_বর্ষায় #পর্বঃ০২ #আয়েশা_আক্তার

0
1099

#সেদিন_বর্ষায়
#পর্বঃ০২
#আয়েশা_আক্তার

🍁

রাফসান সাহেব অতি নরম কন্ঠে বললেন,

আবির আমার মা টাকে একটা রিকশা ডেকে দেও তো। আর মা আার না ভিজে সোজা বাসায় চলে যাও। কেমন?

আমি মাথা নাড়িয়ে হ্যা বুঝালাম।

আবির ছাতা মাথায় দিয়ে আমার দিকে ঘুরে,

চলো যাওয়া যাক।

হুম…,আসসালামু আলাইকুম ভালো চাচ্চু ভালো থাকবেন, আসছি ।

ওয়ালাইকুম আসসালাম, মা।তুমিও ভালো থেকো।

আবির ভাইয়া আর আমি অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকেও রিকশা পেলাম না। তাই একটু হেটে সামনে যেতেই একটা রিকশা পেয়ে গেলাম। আমির রিকশায় উঠে ছাতাটা বন্ধ করে এগিয়ে দিয়ে বললাম,

ভাইয়া ছাতা টা নিয়ে যান।

একি ছাতা বন্ধ করলে কেন? তোমার ভালো চাচ্চু এটা তোমায় দিয়েছে তুমি ই না হয় পরে কখনো ছাতা টা তোমার ভালো চাচ্চু কেই ফিরিয়ে দিও।আর শুনো সাবধানে যাবা কেমন??

ভাইয়া আপনি খুব সুন্দর। তবে….

এইটুকু বলেই মাথা নিচু করে নিলাম।

আবির মিষ্টি হেসে,

তুমি ও খুব সুন্দর। খুব খুব সুন্দর তোমার বাচ্চামি গুলো। আর তখন ধমক দেওয়ার জন্য সরি।তুমি জানো কতটা মিষ্টি তুমি। আর মিষ্টি মেয়েদের মন খারাপ করতে নেই। আচ্ছা তোমার নামটাই তো জানা হলো না।নাম কি তোমার??

আমি মিষ্ট হেসে জবাব দিলাম,

তিথি রহমান নাম।

বাহ!! খুব মিষ্টি নাম।ভালো থেকো।

জি আপনি ও ভালো থাকবেন।

আবির রিকশার ভাড়া মিটিয়ে ওখানেই দাড়িয়ে রইলো, যতক্ষণ তিথি কে দেখা যায়। রিকশা চোখের আড়াল হতেই আবির চলে আসে। বাসায় গিয়ে ভেজা কাপড়চুপড় চেন্জ করে লম্বা এক ঘুম দিলাম। ভাইয়ার চেচামেচি তে ঘুম ভাঙলো। ধড়ফড়িয়ে উঠে বসতেই ভাইয়া একহাতে আমার মুখ দুইপাশ ধরে মুখে ভাত পুরে দিল।কি হলো এটা কিছুই বুঝে উঠতে পারলাম সেকেন্ড দুই ভেবে বুঝতে পেরে মুখের খাবার টুকু কোনো রকম গিলে,

এটা কি হলো ভাইয়া আমি ঘুমুচ্ছিলাম তো।তুমি আমার এতো সাধের ঘুম টা নষ্ট করে দিলে কেন??

ভাইয়া ধমক দিয়ে,

কানের নিচে দুইটা খেতে না চাইলে চুপচাপ খা।

নিমিষেই মন টা আবারও খারাপ হয়ে গেলো।কি করলাম আমি যে ভাইয়া আমায় শুধু শুধু বকলো।কথাই বলবো না আর।ভাইয়া খাইয়ে দিয়ে পানির গ্লাস সামনে ধরে বললো,

নে পানি খা।

আমি ভদ্রভাবে পানি টুকু খেয়ে মুখ টা অন্য দিকে ঘুরিয়ে নিলাম।

ভাইয়া আমার সামনে এসে আমার গালে হাত দিয়ে,

কি বুড়ী টার কি অভিমান হয়েছে ভাইয়ার উপর??

আমি কথা বললাম না।তাই ভাইয়া আবার ও বললো,

ভাবছিলাম বুড়ী টাকে নিয়ে ফুচকা খেতে বেরোবো। কিন্তু বুড়ী টা তো কথাই বলছে না।থাক আমি বরং একাই যাই।

ভাইয়া চলে যেতে নিলেই পেছন থেকে ভাইয়াকে হালকা জড়িয়ে ধরে হেসে ,

ভাইয়া তুমি এতো ভালো কেন?? দুই মিনিট ওয়েট করো আমি আসছি। তিথি চট করে রেডি হয়ে বেরিয়ে এসে দেখে তানভীর বাইকে বসে ওর জন্য ওয়েট করছে। মুখে হাসি ফুটিয়ে সেও উঠে বসে।
______________________________________

রাত দশটা,,
তিথি আর তানভীর দই পাশে ভাতের প্লেট নিয়ে বসে আছে। মাঝখানে তাদের বাবা তৌহিদ রাহমান। তৌহিদ রাহমান বেশ কিছুক্ষণ ধরেই খেয়াল করছে, তার ছেলে মেয়েদের মধ্যে কেউ ই খাবার খাচ্ছে না। এর মানে তিনি খুব ভালো করেই বুঝতে পেরেছেন। এর মানে হলো, এখন তাকেই ওদেরকে খাইয়ে দিতে হবে। নয়তো দু’জনের একজনও খাবে না। তৌহিদ রাহমান দুজনের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে,

“কে আগে ভাত মুখে নিবে?”

তিথি, তানভীর দু’জন দু’জনের দিকে তাকিয়ে হেসে ফেলে।তারপর তিথি বলে,

“আগে ভাইয়াকে খাইয়ে দাও। আমি তো এখনো ছোট। ভাইয়া বড় হয়ে গেছে, কিছুদিন পর বিয়ে করে ফেললে তো আর বউয়ের সামনে তোমার হাতে খেতে পারবে না।”

বলেই হিহি করে হেসে উঠে তিথি। তানভীর তিথির কান মলে দিয়ে,

“তবে রে? বেশি পাকা হয়ে গেছিস? পরে দেখবি তোকেই ধরে বেঁধে বিয়ে দিয়ে দিবো।”

চলবে…..

🍁

আসসালামু আলাইকুম। ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন এবং গঠন মূলক মন্তব্য করবেন। হেপি রিডিং 🖤

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here