সেদিন_বর্ষায় #পর্বঃ১৩ #আয়েশা_আক্তার

0
500

#সেদিন_বর্ষায়
#পর্বঃ১৩
#আয়েশা_আক্তার

🍁

পরীক্ষা শেষ করে তিথি টিএসসিতে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিচ্ছে। হঠাৎ করেই তার মনে হলো, তার দিকে কেউ একজন এগিয়ে আসছে। ভালো করে দেখার জন্য তাকাতেই দেখলো দুর থেকে তানভীর বোনের দিকে এগিয়ে আসছে। তিথি মুখে হাসি ফুটিয়ে দিলো এক দৌড়। ভাইয়ের সামনে গিয়ে হাঁপাতে হাঁপাতে বললো,

তুমি আসবে বললে না তো? আর বিকেলে তো আমি ই যেতাম। শুধু শুধু কষ্ট করে আসতে গেলে।

তানভীর সারেপ্রাইজ আছে তোর জন্য।

কি সারপ্রাইজ??

চোখ বন্ধ কর।

ওকে। তিথি খুশি মনে চোখ বন্ধ করলো।

তিথি চোখ বন্ধ করতেই আবির এসে ওর সামনে দাড়ালো। আবির পলকহীন তাকিয়ে দেখছে তার প্রেয়সীকে। সে যেনো ভুলেই গেছে তিথি চোখ বন্ধ করে দাড়িয়ে আছে। আর তানভীর যে এখানে তাও ভুলে গেছে। তিথির কন্ঠ কানে যেতেই আবিরের ধ্যান ভাঙলো।

তিথিঃ আর কতক্ষণ ভাইয়া??

আবির কিছু বললো না। তানভীর বোন কে উদ্দেশ্য করে বলছে, খোল এবার।

তিথি চোখ খুলে আবির কে দেখে যত টা না সারপ্রাইজ হয়েছে তার থেকে ও বেশি অভিমানী হয়ে উঠেছে ওর ভেতরটা। সেটা আবিরের চোখ এড়ালো না।সে বুঝলো তার প্রেয়সী অভিমান করেছে। কিন্ত মুখে কিছুই বললো না। তিথি ও ভেতরের অভিমান ভেতরে রেখেই মুখে কৃত্রিম হাসি ফুটিয়ে,

আপনি!!!!

আবির মুচকি হেসে, হুম আমি।কেমন দিলাম সারপ্রাইজ? ( মনে মনে) জানি জানপাখি তুমি ভালো নেই। জানো আমিও ভালো নেই। কতগুলো দিন দেখি নি তোমায়। ইচ্ছে করছে তোমাকে খুব শক্ত করে জরিয়ে ধরে বুকের ভেতর ঢুকিয়ে রেখে দেই। কি অদ্ভুত তাই না তিথি? ভেতর থেকে আমরা দু’জন ই পুড়ছি।আর বাইরে থেকে তা আড়াল করার প্রচন্ড প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছি।

তিথি মলিন হাসি ফুটিয়ে, হুম আমি অনেক সারপ্রাইজ। ইভেন দু দুটো ভাইয়া আমার সামনে।

তিথির মুখে ভাইয়া শব্দ টা শুনে আবিরের ভেতর টা যেনো আরো খানিকটা দগ্ধ হলো। তানভীর কথার মাঝখানেই বললো,

জানিস তিথি ও তোদের ভার্সিটিতে তোদের ডিপার্টমেন্টর নতুন ইংরেজি প্রফেসর হিসেবে জয়েন করেছে।

তিথিঃ বাহ ভালোই তো। এখন তো আপনি আমার স্যার ভাইয়া হয়ে গেলেন।

আবারও ভাইয়া শুনে আবির করুন দৃষ্টিতে তাকালো।তিথিও আবিরের দিকে তাকালো। দু’জন যেন দুজনের চোখের ভাষা পড়তে পারছে। আবিরের চোখ যেন তিথি কে বলছে, প্লিজ আর ভাইয়ার ডেকো না কষ্ট হচ্ছে আমার। আর তিথি ও যনো জবাবে বলছে, হোক তাতে আমার কি। আমি যখন কষ্ট পাই তার বেলা। তখন তো আপনি আমার অভিমান ভাঙান না।

তোরা কি এখানেই দাড়িয়ে থাকবি নাকি কোথাও যাবি??( তানভীর)

তানভীরের কথায় দুজনের ঘোর কাটলো। আবির মুচকি হেসে,

হুম চল,খিদে পেয়েছে। কোনো রেস্টুরেন্টে গিয়ে সবাই লাঞ্চ করে নেই।

ওর কথা মতো সবাই একটা রেস্টুরেন্টে গিয়ে খাবার খেয়ে নিলো। এরপর সারাদিন তিনজন মিলে এদিক ওদিক ঘুরে বেড়ালো। সবশেষে তিনজন মিলে একটা পার্কে গেলো। আবির তিনজনের জন্য কিছু খাবার আনতে গেলো। তিথি বিভিন্ন দৃশ্যাবলী ক্যামেরা বন্দী করতে ব্যস্ত। আর তানভীর বোনকে পাহাড়া দিচ্ছে। সে যেন পড়ে না যায়।তার পায়ের নিচে যেনো ইটের টুকরো বা পাথর না পড়ে সেদিক খেয়াল রাখছে। কিন্ত হঠাৎ করেই তানভীরের ফোন টা বেজে উঠলো। ওর অফিস থেকে কল দিয়েছে। তাই ও রিসিভ করে কথা বলছে। তিথি ছবি তুলতে তুলতে সামনে এগিয়ে গেলো।কিছু টা দুরে যেতেই তিনজন ছেলে ওর পিছু নিল। ও ছবি তুলতে এতোটাই ব্যস্ত যে কি হচ্ছে কিছুই খেয়াল করছে না। ছেলে গুলো তিথির একেবারেই কাছে চলে এসেছে। কি বিশ্রী দৃষ্টিতে তাকাচ্ছে বলার বাইরে। হঠাৎ করেই তিথির কারো হাসির শব্দ কানে এলো। তিথি পাশ ফিরে তাকাতেই ছেলেগুলো কে দেখলো।ওদের দেখা মাত্রই তিথির বুকের ভেতর টা ধক করে উঠলো। আশেপাশে তাকিয়ে ভাইয়া বা আবিরকে কোথাও দেখতে পেলো না।এতে যেনো ওর ভয়টা কয়েকগুণ বেড়ে। ছেলেগুলো কি বিশ্রী ভাবে তাকাচ্ছে। তা ভাবতেই আরও ভরকে যাচ্ছে তিথি। ভয়ে গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে যাচ্ছে। ওর ভয়টাকে আরো খানিকটা বাড়িয়ে দিয়ে একটা ছেলে যখন ওর গালের দিকে হাত বাড়াচ্ছে তখন মনে হচ্ছে এখনই হয়তো মরে যাবে ও।ভয়ে চোখ বন্ধ করে নিলো। হৃদপিণ্ড টা এবার বেড়িয়েই যাবে মনে হচ্ছে। কিন্তু একি আশেপাশে কারো দৌড়ে পালিয়ে যাবার শব্দ কেন আসছে? তিথি চোখ খুলতেই দেখলো……..

🍁

চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here