সেদিন_বর্ষায় #পর্বঃ১৭_শেষপর্ব #আয়েশা_আক্তা

0
930

#সেদিন_বর্ষায়
#পর্বঃ১৭_শেষপর্ব
#আয়েশা_আক্তার

🍁

বাসায় এসে সব রিচওয়াল শেষ করে আবির তিথি কে রুমে পাঠানো হলো। আবির রুমের দরজা লাগিয়ে তিথির সামনে গিয়ে দাঁড়াতেই তিথি মাথা নুইয়ে আবিরের পায়ে সালাম করার চেষ্টা করলো।আবির বাধা দিয়ে কপালে ছোট্ট চুমু একে দিয়ে জরিয়ে ধরলো প্রেয়সীকে। তিথি ও জরিয়ে ধরে রাখলো কিছুক্ষন। এরপর আবির তিথি কে সামনে দাড় করিয়ে খুব যত্ন করে সন্ব গহনা গুলো আস্তে আস্তে খুলে রাখলো। এরপর তেলের বোতল হাতে নিয়ে তিথি কে বিছানায় বসালো। পার্লার থেকে সাজার ফলে তিথির চুলে জট লেগে গেছে। আবির সেগুলো আস্তে আস্তে খুলে দিলো।চুলের জট ছাড়িয়ে আবির তিথিকে উদ্দেশ্য করে বললো,

যাও ফ্রেশ হয়ে আসো।

তিথি হ্যাঁ সূচক মাথা নাড়িয়ে আলমারি থেকে একটি সুতি শাড়ি নিয়ে ওয়াশরুম চলে গেলো। তিথি ফ্রেশ হয়ে এসে আবির কে বললো,

আপনিও গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আসুন।

আবির মাথা নাড়িয়ে মুচকি হেসে চলে গেলো ওয়াশরুমে ফ্রেশ হতে। ততক্ষণে তিথি চুলগুলো চিরুনি করে নিলো। এরপর জানালার সামনে দাড়িয়ে আকাশ দেখতে লাগলো। আবির ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে পেছন থেকে তিথিকে জড়িয়ে ধরলো। তিথি প্রথমে ভয় পেয়ে গেলেও পরে আর বুঝতে বাকি রইলো না, এটাই তার কাঙ্ক্ষিত মানুষ। আবির তিথির গলায় একটি চুমু দিয়ে বলছ,

ছাঁদে যাবে চাঁদ দেখতে?

হুম চলুন। ( তিথি যেনো মনে মনে এটাই চাইছিলো)

ছাঁদে গিয়ে আবির সোজা দোলনায় বসে গেলো। তিথি পাশে বসার জন্য প্রস্তুত হলে আবির হেঁচকা টানে কুলে বসিয়ে দিলো। তিথি লজ্জা পেয়ে মাথা নিচু করে নিলো। আবির মুখে দুষ্ট হাসি দিয়ে,

ছাঁদে আসলে জোস্না বিলাশ করতে এখন নিচের দিকে তাকিয়ে আছো?

তিথি মাথা তুলে আকাশের দিকে তাকালো। তিথি চাঁদ দেখছে তারা গুনছে আর আবির ওর সাথে দুষ্টুমি করতে ব্যস্ত। কিন্তু হঠাৎ করেই আকাশ কালো হয়ে মেঘেরা গর্জন করে উঠে। আবির সাথে সাথে তিথিকে জিজ্ঞেস করে,

তোমার মনে আছে আমাদের প্রথম কবে দেখা হয়েছিলো?

হুম আছে তো, সেদিন বর্ষায়।

বৃষ্টি পড়তে শুরু হলে দু’জন কিছুক্ষণ বৃষ্টি বিলাশ করে।তাররপর নিজেদের রুমে এসে ফ্রেশ হয়ে ঘুমিয়ে যায়।

——————————————-

বিয়ের এক সপ্তাহ পড়েই তিথি আর আবির ঢাকায় চলে আসলো। সকালে দু’জন একসাথে ঘুম থেকে উঠে ঝগড়া ও খুনসুটির মাধ্যমে সকস রান্না বান্ন আর বাকি কাজগুলো শেষ করে। বিয়ের পর থেকেই আবির তিথিকে খাইয়ে দেয়। শুধু ভার্সিটি তে থাকা কালীন সময়ে নিজ হাতে খায় তিথি। আবির তো ভার্সিটি এসেও তিথির সাথে রোমান্স করে। কাজের ফাঁকে ফাঁকে তিথির দিকে উড়ো চুমু ইশারা করে। কখনো আবার চোখ টিপ ও দেয়। তিথি বেচারি পারে না মাটি ফেরে ঢুকে যায় লজ্জায়। ভার্সিটি শেষে টিএসসিতে বসে আইসক্রিম, কফি খেতে খেতে প্রেম ও করে দু’জন। কেউ দেখলে মনে করবে যেনো নব প্রেমিক প্রেমিকা। প্রতিদিন ঘোরাঘুরি করে খুনসুটি করতে করতে বাসায় আসে দুজন।বাসায় এসেই রুটিন মাফিক ভাইয়া- ভাবি, শশুর – শাশুড়ীর সাথে ভিডিও কলে কথা বলে তিথি আবির। তারপর দুজনেই রেস্ট নিয়ে খুনসুটি করে করে রাতের খাবার রান্না করে। একসাথে এক প্লেটে খায়। তিথি অনেক সুখী আবিরকে পেয়ে আর আবিরও। তিথি প্রতিদিন একেকটা বায়না করে আর আবির সেই বায়না গুলো পূরণ করে। তেমনি আজও তিথি বায়না ধরেছে বাইরে গিয়ে ফুচকা খাবে। আবির উপায় না পেয়ে তিথিকে নিয়ে আসলো ফুচকা খাওয়াতে। ফুচকা খাওয়া শেষ করে দু’জন হাতে হাত রেখে রাস্তা দিয়ে হাটছে। হঠাৎ করেই তিথি দাড়িয়ে গেলো। আবির জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকাতেই তিথি বলে উঠলো,

একটা কথা বলি।

আবির তিথির কাঁধের উপর হাত রেখে একটা নয় হাজার টা বলো জান পাখি।

তিথি মুখে হাসি ফুটিয়ে, আমি যে আপনাকে এতো জালাই আপনার বিরক্ত লাগে না? আই মিন এতো এতো বায়না করি আমি।

আবির তিথিকে হালকা জড়িয়ে ধরে, একটুও না। তুমি আমাকে কই জালাও। জালাই তো আমি তোমাকে। রোমাঞ্চকর জালানো যাকে বলে।

তিথিও এবার হেসে আবিরকে জড়িয়ে ধরে, আমি আমার বজ্জাতটার সব যন্ত্রণা সহ্য করতে রাজি আছি।

আবির আরও শক্ত করে জরিয়ে ধরে, আমিও আমার পাগলিটার সব বায়না গুলো হাসি মুখে পূরণ করতে রাজি আছি। তুমি যে আমার প্রথম প্রেম, আমার ভালোবাসা।

তিথি মুখে হাসি ফুটিয়ে বলে, আপনি মোটেও ভালোবাসা টাসা কিছু নয় আমার। আপনি একটা বজ্জাত ছেলে আর এই বজ্জাত ছেলের হাজারো পাগলামি আমি মাথা পেতে নিতে রাজি।

তাই নাকি? বলেই আবির তিথির মুখের দিকে এগোতে নিলেই তিথি বাধা দিয়ে বলে,

এই রাস্তায় অসভ্যতামি করবেন?

ওকে করবো না। তার আগে বলো, আমিই তোমার কে?

ওকে প্রিয় আপনিই আমার প্রথম প্রেম আমার ভালোবাসা। আপনিই আমার এক গুচ্ছ কদম।

ভাগ্যিস সেদিন বর্ষায় এসেছিলে তুমি। তা নাহলে, এমন পাগলামীতে মোড়ানো ভালোবাসা কোথায় পেতাম আমি।”

🍁

সমাপ্ত

বিদ্র.. ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টি তে দেখবেন সবাই এবং গল্পটি কেমন হয়েছে তা বলে যাবেন সবাই। হেপি রিডিং🖤

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here