#সেদিন_বর্ষায়
#পর্বঃ৫
#আয়েশা_আক্তার
🍁
কি থেকে কি হয়ে গেলো। সেই ছোট্ট বেলায় মাকে হারিয়ে বাবাই ছিল সব আবদারের অফুরন্ত ভান্ডার। আজকে সেই বাবা ও মায়ের সাথে সাথেই আকাশের তারা হয়ে গেলো। আকাশে কি সুন্দর দুটো তারা জলজল করছে। ছোট আকাশের সবচেয়ে উজ্জ্বল তারাটাকেই মা বলে জেনে আসছি। বাবা আর ভাইয়া কে যখনই মায়ের কথা জিজ্ঞেস করেছি তারা বলেছে ঐ উজ্জ্বল তারকা টাই আমার মা।আজ সেখানে দুটো তারকা।তারমানে বাবা ও তারা হয় গেছে। হাসপাতাল থেকে ফিরে বাবার কবরে গিয়ে দুই ভাইবোন মিলে জিয়ারত করেছি। সারাদিন কিছু টি মুখে দেইনি।শরীর টা টলছে। মনে হচ্ছে এখনই পরে যাবো ঠিক তখনই খুব আদুরে হাতে ধরে নিল।হাতটা আমার চেনা। সেই ছোট থেকে এই হাত দুটো আমাকে আগলে রেখেছে। ভাইয়ার বুকে ঝাপিয়ে পড়ে কাঁদতে লাগলাম। ভাইয়া ও কাদছে।আবির তার প্রেয়সীর এতো কষ্ট মেনে নিতে পারছে না। আবার প্রিয় বন্ধুর কষ্ট গুলো সহ্য করতে পারছে না আবির। তানভীরের পিঠে হেলান দিয়ে,
তানভীর তুই অন্তত শক্ত কর নিজেকে। কিছু দিন পর তিথির ইয়ার চেঞ্জ পরীক্ষা। এখন তুই এভাবে ভেঙে পড়লে তিথি কে সামলাবে বল??
_____________________
চল নিচে মা এসেছে তোদর জন্য খাবার নিয়ে এসেছে অনেক রাত হয়েছে খেয়ে নিবি চল।
তানভীর নিজের চোখ মুছে খুব যত্নে বোনকে নামিয়ে নি আসলো।
আবির তার মাকে উদ্দেশ্য করে,
মা ওদের খেতে দাও।কিছুই খায়নি ওরা সারাদিন।
রাহেলা বেগম প্লেটে ভাত মেখে,
আয় তোরা আমি খাইয়ে দিচ্ছি।
প্রথমে তিথির সামনে ভাতের লোকমা তুলে ধরলেন তিথি চোখের পানি মুছে খাবার টুকু মুখে নিলেন।
রাহেলা বেগম আদুরে কন্ঠে,
ভাত খাওয়ার সময় কান্না করলে আল্লাহ অসন্তুষ্ট হয় মা খেয়ে নে।আর কখনো নিজেকে একা মনে করবি না আমরা আছি তো।তোদের পাশে যখন যা লাগবে আমাদের বলবি।ঘুরতে যেতে ইচ্ছে করলে আবির কে বলবি।আর আবির শোন,
কালকে ওদের কে নিয় কোথাও ঘুরে আসিস এমনিতেই আর কিছু দিন পর চলে যাবি।তোর ও ভালো লাগবে।
রাহেলা বেগম একে একে তিথি তানভীর আর আবির কে খাইয়ে দিয়ে বাসায় চলে গেলেন। আবির এখানেই থাকবে এ কদিন। তিনজনই আলাদা আলাদা রুমে শুয়ে শুয়ে ছটফট করছে। কারো চখেই ঘুম নেই। তিথি তানভীরের রুমের সামনে এসেই ডেকে উঠলো,
ভাইয়া জেগে আছো??
তানভীর দরজা খুলে দিয়ে,
কি হলো এখনো জেগে আছিস পেট ব্যাথা করছে?? মাথা ব্যাথা করছে??
আমি মাথা নেড়ে না বুঝালাম, ছাঁদে চলো মা বাবার তারাকে দেখবো।
ওকে চল।
আবিরের ঘুম আসছিলো না তাই রুম বের হতেই তানভীর আর তিথি কে দেখতে পেলো।
আরে তোরা এতো রাতে ঘুমুসনি কেন??
তানভীর জবাব দিল,
তিথি কে নিয়ে ছাদে যাচ্ছি। ওর নাকি ঘুম আসছে না।
আবির মুখ প্রশস্ত করে জবাব দিল,
চল আমিও যাবো। একা একা বোর লাগছে।
ওরা তিনজন মিলে ছাঁদে উঠে। তিথি ভাইয়ের হাত ধরে বড় তারকা দুটোর দিকে নিরবে তাকিয়ে থাকে। আর আবির একটু দূরে দাঁড়িয়ে চাঁদের আবছা আলোয় প্রেয়সীকে দেখে চলে।
🍁
চলবে….
আসসালামু আলাইকুম। ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন অথবা সম্ভব হলে ধরিয়ে দিবেন। হেপি রিডিং 🖤