#সেদিন_বর্ষায়
#পর্বঃ৯
#আয়েশা_আক্তার
🍁
একসপ্তাহ হয়ে গেলো আবির আমেরিকাতে আছে। প্রতিদিন ভার্সিটি শেষ করে অফিস করতে হয়।বিদেশের মাটিতে টিকে থাকতে হলে প্রচুর অর্থের প্রয়োজন। তাই পড়াশোনার পাশাপাশি জবটাও কন্টিনিউ করছে আবির।সারাদিন ভার্সিটি জব শেষ করে রাতে মা-বাব আর তানভীরের সাথে কথা বলে মনটা একটু সস্তি পায়।কিন্তু তারপর ও কোথাও একটা মন খারাপ থেকেই যায়।প্রেয়সীর সাথে একটু কথা বলার জন্য মনটা কেমন আনচান করে। তানভীরের কাছে তিথির সকল খবর আবির ঠিকই পায়।কিন্তু তানভীর কে সাহস করে বলতে পারে না তিথির সাথে কথা বলার কথা। শত হোক তানভীর তিথির বড় ভাই।
🍁
এদিকে তিথি ও আবিরকে ভালোবেসে ফেলছে। কিন্তু কাউকে বলতে পারে না। আজকেই মাত্র ওর ইয়ার চেঞ্জ পরীক্ষা শেষ হয়েছে। রেজাল্টের জন্য চিন্তা হচ্ছে। কিন্তু সামনের এইচএসসি পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করতে হবে। ভাইয়ার স্বপ্ন পূরণ করতে হবে। ঢাকা ভার্সিটিতে চান্স পেতে হবে। তাই সে এখন পড়ালেখা নিয়ে অনেক ব্যস্ত। তিথির ক্লাসমেট শুভ তিথি কে পছন্দ করে। কিন্তু সামনে কিছু বলে না যদি তিথি ভুল বুঝে তাই। কলেজে একটা প্রজেক্ট এ ওদের দুজনকেই অ্যাটেন্ড করতে হবে। তাই দুজনেই মন দিয়ে কাজ করছে। যতই শুভ ক্লাস এ ফাস্ট বয় হোক এবার তিথিই ফার্স্ট হবে। আজকে প্রজেক্ট সাকসেসফুল হওয়ার রেজাল্ট দিবে। তাই তিথি ভীষণ চিন্তায় করিডরে হাটাহাটি করছে।এমন শুভ আসলো।
হাই তিথি।কেমন আছে??
তিথিঃ আলহামদুলিল্লাহ তুমি?
শুভঃ আলহামদুলিল্লাহ। তোমাকে এমন দেখাচ্ছে কেন? তুমি কি কিছু নিয়ে চিন্তা করছো?
তিথিঃনা তেমন কিছু না। প্রজেক্ট নিয়েই একটু চিন্তা হচ্ছে আরকি।
শুভঃ আরে এতো চিন্তা করো না।তুমি ই জিতবে দেখো।
তিথিঃ তুমি কলেজের ফার্স্ট বয় আর জিতবো আমি? হাও ফানি ইয়ার??
শুভঃ আমি ফার্স্ট বয় ঠিকই বাট তুমি ও তো ফার্স্ট গার্ল সো জিততে পারবে না কেন??
তিথিঃ যদি না জিতি?
শুভঃ তাহলে তুমি যা বলবে তাই। আর যদি জিতে যাও??
তিথিঃ ট্রিট দিব যাও।
শুভঃ ওকে ডান।
এমন সময় প্রিন্সিপাল এসে মাইকে এনাউন্স করতে লাগলো। ভয়ে তিথির হাত পা জমে যাবার উপক্রম। আর শুভ ও একটু চিন্তা করছে তবে বেশি না।কারণ ও চায় তিথি ই প্রজেক্ট টা জিতুক। তিথির মুখের হাসি ওর জন্য অনেক দামি।
প্রিন্সিপালঃ আজকের প্রজেক্ট এ প্রথম হয়েছে…..
সবাই একবার তিথি তো একবার শুভর দিকে তাকাচ্ছে। আর কৌতুহলী হয়ে প্রিন্সিপালের এনাউন্সমেন্ট শুনছে।
প্রিন্সিপাল আবারও মাইকে মুখ দিয়ে,
আজকের প্রজেক্ট এ প্রথম হয়েছে তিথি রহমান।
তিথি খুশিতে মুখে হাত দিয়ে বসে পড়লো। ওর বান্ধবীরা ওকে ধরে উঠালো।একে একে সবাই ওকে কংগ্রেস করলো।ও সবাইকে ট্রিট দিয়ে বাসার দিকে রওনা দিলো।বাসায় গিয়ে সোজা তানভীরের রুমের দিকে পা বাড়ালো।কারণ আজকে তানভীর বাসায়।তানভীর আবিরের সাথে ভিডিও কলে কথা বলছিলো।তিথি গিয়ে পেছন থেকেই ভাইকে জড়িয়ে ধরে। তানভীর ঘুরে কল না কেটেই বোনের মাথায় হাত রেখে জিজ্ঞেস করে, প্রজেক্ট এ জিতেছো নিশ্চয়ই??
হুম ভাইয়া, আজকে আমি ভীষণ ভীষণ খুশি।
আবির চোখ ভরে দেখছে তার প্রেয়সীকে।কতদিন দেখে না। সেই তৃস্নাই মিটাচ্ছে যেনো। তানভীর ও বোন কে পেয়ে বোনের খুশি দেখে আবিরের কথা ভুলেই গেলো। আবির অভিমানী সুরে,
হুম বোন কে পেয়ে ভুলেই গেলি আমার কথা? বলেই বাচ্চাদের মতো ঠোঁট উল্টালো আবির।
তানভীর একটু হেসে নারে দোস্ত। তুই বরং তিথির সাথে একটু কথা বল। আমি তিথির জন্য কফি বানিয়ে নিয়ে আসছি। বলেই তানভীর চলে গেল।
তিথি লেপ্টপের সামনে গিয়ে মাথা নিচু করে রাখলো।
আবির বুঝলো তিথি রাগ করেছে। তাই ওই কথা বললো,
তিথি
তিথি চুপ করে আগের ন্যায় দাঁড়িয়ে আছে।
আবির আবারও নরম কন্ঠে জিজ্ঞেস করলো, রাগ করেছো??
এবার তিথি মুখ খুললো, উহু। তিথি রহমান এতো সহজে রাগ করে না।তবে অভিমান খুব অভীমান। ঠোঁট উল্টালো তিথি।
আবির আদুরে কন্ঠে, তো আমি আমাদের আদুরে তিথির অভিমান কমাতে কি করতে পারি।
তিথি ফিক করে হেসে দিল আবিরের দিকে তাকিয়ে। আপনাকে পুরাই বাচ্চা বাচ্চা লাগছে। হিহিহি… এই না আপনি তো আমার অভিমান ভাঙান নি। আমি হাসবো না।এই বলে আবার ও মুখ ভার করে নিল।
হুম বলো,কি করলে অভিমান কমবে??
তিথি মুখ আরো খানিকটা কালো করে বললো, কানে ধরে সরি বলুন। তাহলেই কমে যাবে।
আবির সাথে সাথেই কানে ধরে বললো,সরি।তুমি বললে আমি কানে ধরে ওঠবস ও করতে রাজি আছি।
তিথি হাসি মুখে, না উঠবস করতে হবে না। অভিমান কমে গেছে। তবে আপনি ভীষণ খারাপ।
কেন আমি আবার কি করলাম??
একটু ও মিস করেন না আামাকে।ভুলেই গিয়েছেন।
এভাবে বলো না তিথি আমার অস্তিত্ব জুড়ে যার বসবাস।তাকে কি করে ভুলে যাবো।( মনেমনে) না তিথি আমি তোমাকে ভুলি নি।
এরমধ্যেই তানভীর চলে আসলো। কিরে আবির এতোক্ষণ আমাকে দেখিয়ে দেখিয়ে কফি খেয়েছিলি না? এখন আমরা দুই ভাইবোন মিলে তোকে দেখিয়ে দেখিয়ে কফি খাবো। তাই নারে বনু??
হুম ভাইয়া বলেই তিথি তানভীরের হাত থেকে কফির কাপটা হাতে নিল।
🍁
চলবে…..
বিদ্র. ভুল ত্রুটি মাফ করবে। হেপি রিডিং🖤