সে_আদরের_অন্য_নাম ? ৩য় পর্ব

0
887

? #সে_আদরের_অন্য_নাম ?
৩য় পর্ব

এভাবে হাজারটা খুনসুটির মধ্যে দিয়ে হিয়াদের সেকেন্ড ইয়ার টা প্রায় শেষের পথে এসে যায়,টেস্ট পরীক্ষাও কম্পিলিট এখন শুধু তিন মাস বাদে বোর্ড পরীক্ষা শুরু হওয়া বাকি__এই কটা মাসে উজান আর হিয়ার প্রায়ই দেখা হয় দু একটা দূর্ঘটনাও ঘটে কিন্তু গভীরভাবে কিছু শুরু হওয়ার মতো এখনো কিছু হয়নি,কিন্তু যা হতো তাতেই ওদের হয়ে যেতো

জানুয়ারির মাঝামাঝি এই সময়টা তীব্র শীতের আমেজ আর হিমেল হাওয়ার টানটান শিহরণের নেশায় মত্ত__সেই নেশায় কাটা দিয়ে উঠে শরীরের প্রত্যেকটা লোমকূপ,সিগারেট না খেয়েও মুখ দিয়ে বেড়িয়ে আসে সিগারেট নামক নকল ধোয়া__প্রকৃতির সব গাছ এখন নির্জীব,সবুজ পাতা গুলো যেনো করুন ভাবে অপেক্ষায় আছে বসন্তের আগমনের কিন্তু বসন্তের পথ যে এখনো অনেক মাইলের

হিয়াদের কলেজের মাঠ টা অনেক বড়ো হওয়ার প্রতিবছর বানিজ্য মেলা টা ওদের কলেজেই হয়__আর হিয়া কলেজ হোস্টেল এ থাকায় বলা চলে মেলা চলাকালিন রোজ হোস্টেলের কারো না কারো সাথে তার একবার হলেও মেলার মাঠে আসা চাই__কিন্তু আজ হিয়া এসেছে অবন্তীদের সাথে,অবন্তীদের বাসার সবাই এসেছে আজ তাই অবন্তীর এক প্রকার জোড়ে হিয়া না চাইতেও আসতে বাধ্য হয়

অবন্তীঃ ওরে ভাইয়ারা যে

বাসবিঃ কোথায় তোর ভাইয়াকে দেখিস

অবন্তীঃ ঔ দেখো নাগরদোলার সামনে

বাসবিঃ ওটা তোর ভাইয়া না__

অবন্তীঃ ভাইয়া না মানে আরে ওটা তোমার বড় ছেলেই__থামো, হিয়া আয় তো আমার সাথে

হিয়াঃ কোথায়

অবন্তীঃআয় না

হিয়াঃ আরে কোথায় যাচ্ছিস__অবোওও থাম__আচ্ছা মুশকিল তো

অবন্তী টানতে টানতে হিয়াকে নাগরদোলার কাছে নিয়ে যায়__ওখানে উজান রুপম সন্ধি রাইসা সহ আরো অনেক ফ্রেন্ডসার্কেল আড্ডা দিচ্ছিলো,একটু আগে ওদের ফ্রেন্ডরা সবাই মিলে নাগরদোলায় চড়ে সব মাএ নামলো,রুপম নাগরদোলায় চড়তে পারে না তার হাইটে ফোবিয়া আছে কিন্তু উজানদের পুরো গ্যাং মিলে একপ্রকার জোড় করে রুপম কে উঠিয়ে এখন রুপমের মরামরা অবস্থা দেখে মজা নিচ্ছে,হুট করে সামনে তাকাতে অবন্তী আর হিয়ার দিকে চোখ পড়তেই উজান আর রুপম দুজনেরি হাসি থেমে যায়__অবন্তী একটা টপস আর জিংকস পড়ে,গায়ে মাল্টি কালারের জ্যাকেট জড়িয়ে নিয়েছে দেখতে যেনো মেলায় ঘুরতে আসা কোনো বিদেশি নারীর মতো লাগছে তাকে__এদিকে হিয়া একটা সাদা শিফনের চুড়িদার দেওয়া জামা পড়ে গায়ে একটা পাতলা চাদর জড়িয়ে নিয়েছে__চুল গুলো খোলা কিন্তু চাদরের ভেতর গুঁজে আছে আর সামনে উড়ে চলছে কিছু কাটা চুল__অবন্তী যখন হিয়াকে ফোন করে মেলার মাঠে আসার জন্য ডাকে, তখন সবে কেবল কম্বল টা জড়িয়ে হিয়া ঘুমোচ্ছিলো তাই কোনোরকম ঘুম ঘুম চোখে চাদর টা জড়িয়েই,পাশে রাখা অক্সিডের চুড়ি গুলো দু হাত ভর্তি করে পড়ে নিয়েই,কপালে একটা টিপ আলতো করে চিপকে দিয়ে মাঠের দিকে দৌড় শুরু করে,আর এই ঘুমে মাখা মায়াভরা মুখটার কাছে মেলার বাকিসব মেয়েদের মুখ অতি তুচ্ছ বলে গণ্য হয় উজানের চোখে

উজানঃ মেয়েটার মুখে এতো মায়া কেনো!!

রুপমঃ কার হিয়ার

উজানঃ হ্যা__মেয়েটাকে কখনো ভারী সাজে দেখলাম না তবু কিরকম অদ্ভুত সুন্দর লাগে দেখবি

রুপমঃ এই তুই আবার কোনোভাবে হিয়ার প্রেমে টেমে পড়িসনি তো__হিয়ার দিকে কিন্তু আগে আমি নজর দিয়েছি বুঝ মামা তাই তুই এখন চাইলেও আমি তোকে হিয়াকে দেবো না

উজানঃ আমার লাগবেও না

অবন্তীঃ ভাইয়াআআ

উজানঃ তোরা এখানে

অবন্তীঃ হ্যা মা রা সবাই এসেছে,আমি তোমাকে দেখতে পেয়ে মাকে বললাম,মা দেখো ভাইয়া তা মা বলে ওটা নাকি তুমি না তাই আমি হিয়াকে নিয়ে পরক্ষ করতে আসলাম যে আমি ভুল না মা ভুল

উজানঃ হয়েছে এখন যা মার কাছে

অবন্তীঃ হুম যাই কিন্তু তোমার যে আমাকে মেলায় নিয়ে এসে ফুচকা খাবার কথা ছিলো সেটা__এখন তো এসে গেছি এখন খাইয়ে দেও প্লিজজজজজ

উজানঃ আহ অবো জেদ করিস না__আমি পরে খাইয়ে দেবো এখন না

অবন্তীঃ এখন মানে এক্ষনি আর এখন না খাওয়াতে পারলে আমাকে আর হিয়াকে নাগরদোলার টিকিট কাটিয়ে দেও আমরা নাগরদোলায় চড়বো

হিয়াঃ মোটেই না__তোর ইচ্ছে হলে তুই চড় আমি মরে গেলেও চড়কিতে চড়বো না__তুই জানিস না আমি চড়কি চড়তে কি রকম ভয় পাই

অবন্তীঃ আমি আছি না কিচ্ছু হবে না__প্লিজজজ হিয়া দেখ এই সুযোগ টা হাত ছাড়া হতে দিস না

হিয়াঃ আরে পাগল হয়ে গেলি নাকি তুই__আমি পারবো না

রুপমঃ এই হিয়া বলছে না ওহ উঠবে না তুই তারপরো কেনো ওকে জোড় করছিস হ্যা

অবন্তীঃ তোমার কি__এটা বলো না কেনো ছেলে হয়ে তুমি নিজে চড়কি চড়তে ভয় করো__ছিঃ তোমার জন্য না পুরো পুরুষ জাতির সাহসিকতা মাটিতে মিশে ধুলো হয়ে আছে

অবন্তীর কথা শুনে সবাই হেসে ফেলে

রুপমঃ অব দেখ ভালো হবে না কিন্তু তুই হিয়ার সামনে আমাকে ইনসাল্ট করছিস

অবন্তীঃ গায়ে লাগছে বুঝি

হিয়াঃ দেখ অবো অনেক হয়েছে আর না_তোর ওঠার ইচ্ছে হলে তুই ভাইয়াকে নিয়ে উঠ আমি রুপম ভাইয়া সহ নিচে দাঁড়িয়ে আছি__যা

অবন্তীঃ মোটেই না__আজ তোর এই ভয় তুরি মেড়ে কর্পূরের মতো কি করে উড়িয়ে দিতে হয় আমি তাই দেখাবো__ভাইয়া তুমি টিকিট কাটো তো__আমিও দেখবো মহারানীর ভয় না পালিয়ে কই যায় আজ হু

হিয়াঃ অব প্লিজজজ শোন আমার কথা টা অববব না অবব__ভাইয়া প্লিজ আপনি টিকিট কাটবেন না প্লিজ ভাইয়া ওহ একটা পাগলি ভাইয়া ওর কথা শুনবেন না

অবন্তীঃ ভাইয়া টা কার শুনি আমার না তোর__ভাইয়া প্লিজজজজ টিকিটটটটট

অবন্তী হিয়ার প্রত্যেকটা কথা মাটিতে ফেলে দিয়ে হিয়াকে শেষমেশ রাজি করায় চড়কিতে ওঠার জন্য__হিয়া ওর পা মাটির সাথে শক্ত করে ফেবিকলের মতো চেপে ধরলেও আটকে থাকতে পারে না অবন্তী টেনে হিঁচড়ে হিয়াকে নাগরদোলায় বসিয়ে দেয়__আর রুপমকে জ্বালানোর এই সুযোগ উজান কোনোভাবে মিস করতে চায় না

উজানঃ তুই দাঁড়িয়েই থাক__তোকে দিয়ে কিচ্ছু হবে না

রুপমঃ ইচ্ছে করে এমন করলি তো,আমার ফোবিয়ার সুযোগ নিলি তো বুঝি বুঝি সব বুঝি __তুই হিয়াকে নিয়ে গিয়ে চড়কিতে ইমপ্রেস কর আমি হিয়াকে নিচে নিয়ে এসে তোর থেকেও চার ডবল ইমপ্রেস করিয়ে তবেই ছাড়বো দেখে নিস

উজানঃ হা হা হা তোর হিয়ার প্রতি আমার কোনো ইন্টারেস্ট নেই__তুই গিয়ে আদাজল খেয়ে ওকে ইমপ্রেস কর আমি তো শুধু তোর জ্বলে যাওয়া মুখ টা দেখে মজা নেবো বন্ধু হুহহ আজ অনেকদিন পর তোকে জ্বালাবো(কথাটা বলেই উজান ওর জিংকসের জ্যাকেট টা সামনে টান দিয়ে,কপাল থেকে চুল গুলো পেছনে টেনে নিয়ে, একটা হিরো হিরো ভাব করে নাগরদোলায় উঠে পড়ে)

রুপমঃ তোকে তো আমি পরে দেখে নিচ্ছি নাম আগে

নাদরদোলার চারটে সিটের মধ্যে প্রথম দুটোয় হিয়া আর অবন্তী বসে আছে আর সামনের দুটোর একটায় মাঝবয়সী এক বাচ্চা আর একটা ফাঁকা,উজান গিয়ে অবন্তীকে ইশারা করে বলে সামনে গিয়ে পাশের বাচ্চাটার সাথে বসতে ওহ হিয়ার সাথে বসবে__অবন্তী বোকার মতো কিছুক্ষণ উজানের দিকে তাকিয়ে থাকে,হঠাৎ করে উজানের আবার হিয়ার পাশে বসার ইচ্ছে হওয়ার কারণ টা আসলে কি?উজানের চোখ রাঙানিতে অবন্তী কিছু না বলে বাধ্য বোনের মতো সামনে গিয়ে বসে পড়ে আর উজান টুক করে হিয়ার পাশে বসে যায়__কি হলো এটা!!হিয়া কিছুক্ষণ থ মেরে বসে থাকে এমনিতে চড়কিতে ওঠার জন্য হিয়ার বুক ধরফর করছে তার উপর উজান এভাবে অবন্তীকে সরিয়ে দিয়ে নিজে ওর জায়গায় কেনো,চড়কি টা তোতোক্ষনে এক বারে উপরে উঠে যায়

হিয়াঃ আমি অবন্তীর পাশে বসবো__অবো এদিকে আয় না__আমার ভীষণ ভয় করছে__আমি নামবো

উজানঃ আর একটা কথা বললে ধাক্কা দিয়ে নিচে ফেলায় দেবো,ইডিয়ট__ঔ বাচ্চা টাকে দেখো তো কি রকম একায় একায় উঠেছে ওর কি ভয় করছে

হিয়াঃ দেখুন বাচ্চাটার অভ্যাস আছে হয়তো আমার নেই,প্লিজজ ভাইয়া আপনি একটু আপনার বোনকে বোঝান

উজানঃ আবার কথা,বলছি না আমি আছি কিচ্ছু হবে না

হিয়াঃ না আমি পারবো না

উজানঃ আজবব,উঠে গেছো এখন আর নামানো যাবে না

হিয়াঃ অবন্তীইইইই প্লিজজজ

উজানকে ওরকম করে হিয়াকে সামলাতে দেখে অবন্তী ফিক করে হেসে দেয়__চড়কি তোতোক্ষনে আধা পাক ঘুরে নিচে নামচ্ছিলো আর নিচে নামা মাএই হিয়ার বুক কুট করে উঠে আর হিয়া চোখমুখ খিচে সপাটে ওর একটা হাত উজানের একটা হাটুর উপর রেখে খামচে ধরে__হিয়ার আচমকা এরকম কান্ডে উজান প্রথমে একটু বিব্রত হলেও পরে হিয়ার খিচে যাওয়া মুখ টা দেখে মুচকি হেসে ফেলে

চরকি যতো জোরে পাক খেতে শুরু করে হিয়ার বুক তোতোই কাঁপতে থাকে এই বুঝি নিচে নামতে গিয়ে হার্ট টা খুলে হাতে চলে আসলো,হিয়া উজানের হাটুর কাছের জিংকস টা এতোক্ষণ ছিড়ে খাচ্ছিলো কিন্তু চড়কির তাল দ্রুত হওয়াতে এবার আচমকাই হিয়া উজানকে জাপ্টে ধরলে অবন্তী চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে উঠে

শীতের ঠান্ডা আমেজ,কুয়াশা আচ্ছন্ন চারপাশ তার উপর নাগরদোলার এরকম ছন্দ,পাশ থেকে ভেসে আসছে সাউন্ড সিস্টেমের মাটি কাঁপানো বিট দেওয়া হৃদয় খানের সেই মন মাতানো গান (তুমি যদি আমাকে কাছে এসে ভালোবাসো কি জানি হয় হৃদয় এ কি করে তোমায় বোঝাবো)এরকম একটা সময় পাশে থাকা একটা মেয়ে আচমকা জড়িয়ে ধরলে একটা ছেলের সারা শরীর জুড়ে কি রকম শিহরণ বয়ে যেতে পারে সেটা এই মুহুর্তে হাড়ে হাড়ে থুক্কু পুরো শরীরের দাড়িয়ে যাওয়া লোপকূপের আলোড়নে ভালোই টের পাচ্ছে উজান__হিয়া ভয়ে উজানের খোলা জ্যাকেটের ভেতর দিয়ে ভেতরের গেঞ্জি চেপে খুব শক্ত করে উজানের বা পাশের বুক বরাবর মাথা রেখে চোখ বন্ধ করে জোড়ে জোড়ে নিশ্বাস ছাড়ছে সেই নিশ্বাসের উওাপ গিয়ে উজানের বুকে পড়াতে উজানের সারা শরীর জুড়ে একটা বিদ্যুৎ তরঙ্গ খেলে উঠছে

অবন্তীঃ বাহ হিয়ার বলে রুপম ভাইয়া চার মারলেও আমার ভাইয়া তো দেখছি সেই বলে পুরো ছক্কা হাঁকিয়ে দিলো,তারমানে আমার বেস্টি হবে আমার বড় ভাবী আমি হবো ওর ছোট ননদ__ইসস খুশিতে তো মনে হচ্ছে আমি হার্টঅ্যাটাক ই করে বসবো উফফ__হিয়া ডার্লিং এতোদিন আমাকে যতো জ্বালাইয়াছ না তুমি এর পর বুঝবা ননদ নামক টর্চার টা কি জিনিস হা হা হা হা

একপর্যায়ে নাগরদোলার তাল থেমে যায় আস্তে আস্তে করে,নিচ থেকে সবাইকে নামাতে গিয়ে অবন্তী দের সিট টা একদম মাথায় আপাতত__হিয়া নিজেকে সামলিয়ে আলতো করে মুখ টা তুলে চোখ টা খুলতেই ঝাপসা চোখে দেখতে পারে ওহ এইটুকু সময়ের মাঝে উজানের কতোটা কাছে চলে এসেছে__উজান হিয়ার চোখের দিকে তাকিয়ে দেখতে পায় হিয়ার দুচোখ লোনাজলের সাগরের মতো টলমল করছে আর চোখর পাতা টা এক পলক ফেলতেই সেই সাগর থেকে গড়িয়ে পড়লো মূল্যবান কিছু হ্যা হিয়ার চোখের মূল্যবান পানি__উজান বিস্মিত চোখে হিয়ার দিকে তাকিয়ে থেকে নিজমনে নিজেকে বলে উঠে

উজানঃ এমনিতেই তো তোমার মাঝে মায়া দিয়ে ভর্তি তার উপর এমন করে কাঁদছে কেনো তুমি__কান্না করলেও কাউকে এতো কেনো সুন্দর লাগে __তুমি কাঁদলে যে আমার কষ্ট হয় এটা কি তুমি বোঝো না??

উজানের ভাবনার ছেদ ঘটে পাশে থাকা বাচ্চাটার কন্ঠ শুনে,বাচ্চাটা মুখ ভর্তি হাসি নিয়ে বলে উঠে আমি এতো ছোট্ট হয়েও ভয় পেলাম না আর আন্টিটা কি না কেঁদেই ফেললো__নাগরদোলা থেকে নেমেই উজান অবন্তী কে অনেকগুলো ঝারি দিয়ে উঠলো, হিয়া এতোটা ভয় পায় জানলে ও কখনো অবন্তীর কথায় রাজি হতো না__হিয়া তখনো পাশে দাঁড়িয়ে হাঁপাচ্ছে

অবন্তীঃ সরি রে আমি সত্যি বুঝিনি তুই এভাবে ভয় পেয়ে কেঁদে ফেলবি

উজানঃ ভুল টা আমারি ছিলো যখন হিয়া বললো ওর অভ্যাস নেই এসবে ওঠার আমিই বা কেনো তোর কথা শুনে

অবন্তীঃ বললাম তো সরি

হিয়াঃ ইটস ওকে

রুপমঃ হে ম্যাজিক কুইন রিলাক্স,এই নেও পানি টা খাও,দেখবে শরীর টা একটু বেটার লাগছে

হিয়াঃ থ্যাংকস ভাইয়া

রুপমঃ কি মিল দেখলে তো আমাদের,তুমি ও নাগরদোলায় চড়তে পারো না আমিও পারি না ইটস ম্যাজিক না,Coincidence ওয়ালা ম্যাজিক

হিয়াঃ হুমম ম্যাজিক

হিয়া আর রুপম সহ বাকি সবাই হেসে দিয়ে পাশে থাকা একটা ফুচকার স্টোলে বসে পড়ে__অবন্তী ওর ফ্যামিলির সাথে আসলেও এখন যেভাবে রুপমের কথা মতো উজান দের গ্যাং টার সাথে লেপ্টে আছে বলা চলে আপাতত এই গ্যাং টাই ওর ফ্যামিলি__ফুচকার স্টোলে রুপম আর হিয়া পাশাপাশি বসেছে যদিও অবন্তী কে হিয়ার পাশের সিট টা ছেড়ে দেবার জন্য রুপমকে একটা মোটা অংকের নোট গুনতে হয়েছে,তাতে কি একটা মেয়েকে পটাবে আর পকেট থেকে টাকা খসবে না তা কি হয় নাকি__উজান রুপম আর হিয়ার সামনে, উজানের পাশে অবন্তী আর চারদিক দিয়ে সন্ধি রাইসা সহ ভার্সিটির বাকি সব ফ্রেন্ড

রুপমঃ তা হিয়া বাড়িতে সবাই ভালো

হিয়াঃ জ্বি আলহামদুলিল্লাহ ভালো আপনার

রুপমঃ আলহামদুলিল্লাহ__কে কে আছে তোমার বাসায়,আই মিন তোমার ভাই বোন

হিয়াঃ আমরা তিন ভাইবোন,প্রথমে আমার বড় ভাইয়া তারপর আমার বড় আপু আর সব শেষে আমি

সন্ধিঃ বাহ তাহলে তো তুমি অনেক আদরের ফ্যামিলির ছোট মেয়ে বলে কথা

হিয়াঃ হুমম অনেকটা

রুপমঃ বাড়িতে আর কেউ নেই তোমার

হিয়াঃ আছে আমার ভাবী আর তাদের ছেলে ইভান

রুপমঃ ওহ তোমার ভাইয়া তাহলে ম্যারিড

হিয়াঃ হুমম আমার বড় আপুও ম্যারিড এক বছর হয়েছে বিয়ে হয়েছে তার

রুপমঃ গুড তা এরপর নিশ্চয়ই তোমার পালা

হিয়াঃ (একটা হাসি দিয়ে) সে তো বাবাই ভালো বলতে পারবে

রুপমঃ কেনো তোমার কোনো পছন্দ নেই

সন্ধিঃ (হেসে দিয়ে) সোজাসুজি জিঙ্গেস করলেই তো পারিস হিয়া single না engaged

রুপমঃ হ্যা ঔ আরকি__কি হলো হাসছো যে প্লিজ বলো না engaged

হিয়াঃ না engaged না single

রুপম আর কিছু বলতে যাবে তার আগে অবন্তী দুম করে উজানের পাশ থেকে উঠে এসে রুপমের সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে

অবন্তীঃ হয়েছে না তোমার দশমিনিট এখন উঠো আমি হিয়ার পাশে বসবো

রুপমঃ অবো প্লিজজ,বুঝ না ব্যাপারটা

সন্ধিঃ অবন্তী যা না একটু মজা নিতে দে না বোন

অবন্তী সন্ধির রিকুয়েষ্টে আবার গিয়ে উজানের পাশে বসে পড়ে এতোক্ষণে একটা ছেলে এসে সবার সামনে ফুচকার প্লেট এনে রেখে চলে যায়,উজান প্লেট থেকে দুটো ফুচক খেয়েই পুরো প্লেট টা অবন্তীর দিকে বাড়িয়ে দেয় ওর এসব ফুচকা চটপটি খুব একটা ভালো লাগে না,এদিকে তো অবন্তী আরো এক প্লেট ফুচকা পেয়ে লাফিয়ে উঠে,যদিও দুটো কম!!

রুপমঃ তা হিয়া কি রকম ছেলে পছন্দ বললে না তো

অবন্তীঃ উফফ ভাইয়া এবার একটু ওফ যাও তো তখন থেকে আমার বেস্টি টাকে মেয়ে দেখার মতো একটার পর একটা প্রশ্ন করেই যাচ্ছ থামাথামির নাম নেই__আমি বলছি ওর কি রকম ছেলে পছন্দ

রুপমঃ কি রকম

অবন্তীঃ ভাইয়ার মতো

অবন্তীর মুখে দুম করে ভাইয়ার মতো কথা টা শুনেই উজান ভ্রূকুঁচকায় হিয়ার দিকে তাকিয়ে উঠে এটা কি বলে দিলো অবন্তী!!ওদিকে হিয়ার চোখটাও উজানের উপর পড়াতে হিয়া টপাটপ ওর চোখ টা উজানের থেকে নামিয়ে নেয়

রুপমঃ মানে

অবন্তীঃ (জিহ্বে কামড় দিয়ে)ইয়ে মানে,না মানে সেদিন আমি আর হিয়া একটা মুভি দেখচ্ছিলাম,তো মুভি দেখার সময় হিয়া বলে উঠলো ওর নাকি এই নায়ক টাকে ভালো লেগেছে আর সেই নায়ক টা না হুবহু ভাইয়ার মতো দেখতে উঁচা লম্বা দুধে আলতা গায়ের রঙ,ভাইয়ার মতো পিংক পিংক ঠোঁট,টিকালো নাক,ভাইয়ার মতো এরকম চার্মিং লুক ওয়ালা বডি,তাই তো আমি বললাম ভাইয়ার মতো

হিয়াঃ আমি অবন্তীকে কবে কোন নায়ক দেখে বললাম আমার এই নায়ককে ভালো লাগে, আমরা একসাথে মুভিই বা কবে দেখলাম,কি সব বলছে এই মেয়েটা পাগল কুকুর টুকুর কামড়ে দিলো নাকি একে

অবন্তী হিয়ার দিকে তাকিয়ে একটা চোখ টিপে দেয়,হিয়া বুঝতে পারে অবন্তীর পেটে এখন শয়তানি চলছে তাই সে এরকম আবলতাবল বকছে

রাইসাঃ শেষে কি না ঝড় টা পাশে থাকা মানুষ টার উপর বইতে গিয়ে সামনে আছড়ে পড়লো হা হা হা

হিয়া এবার লজ্জা পেয়ে গেলো,কেনো অবন্তী বানিয়ে বানিয়ে বলতে গেলো যে ওর উজানের মতো ছেলে পছন্দ__উফফ এই মেয়ে টা না সবসময় আমাকে একটা উইয়ার্ড সিচুয়েশনে ফেলে দেয়,অসহ্য

সন্ধিঃ আচ্ছা ঝড় কবে কোথায় গিয়ে হামলা দিবে সেটা পড়ে দেখা যাবে এখন মেইন কথায় আসি পরশু যে নীলগিরির উদ্দেশ্য এ ট্যুর প্লানিং করলাম সেটার কি হলো,আমরা যাবো না

রাইসাঃ আরে হ্যা রে রুপম কি হলো আমরা যাবো না,আমি কিন্তু রেডি

রুপমঃ হ্যা ভাইয়াকে তো বলাই হয়েছে এখন তোরা সব গুলো ঠিক মতো ঠিক সময় এলেই আমরা রওনা দেবো

সন্ধিঃ আমি ভাবছি হিয়া আর অবন্তীকেও আমাদের সাথে নিয়ে গেলে কি হয়_যতো দূর শুনলাম অবন্তী আমাদের সাথেই যাচ্ছে যদি হিয়ার ইচ্ছে থাকে তাহলে হিয়াও আমাদের সাথে

অবন্তীঃ আরে ব্যাচ এই কথা টা তো আমার মাথাই আসেনি__উফফ সন্ধি আপু তোমাকে একশো একটা চুমু আপুউউউ,আমি ভাবছিলাম শুধু শুধু তোমাদের বড়দের মাঝে গিয়ে আমি কি করবো কিন্তু হিয়া আমার পাশে থাকলে তো আমি বান্দরবান কেনো আফ্রিকার গহীন জঙ্গলেও গিয়ে রাত কাটাতে পারবো

অবন্তী করুন চাহনি নিয়ে হিয়ার দিকে তাকিয়ে হিয়া বলে মিষ্টি করে ডাকলে হিয়া একটা হাসি দিয়ে বলে তার পক্ষে যাওয়া সম্ভব না

অবন্তীঃ প্লিজজজজ

হিয়াঃ তুই জানিস আমার হোস্টেল থেকে এসব এলাও করবে না আমি যদি বাড়ির জন্যেও ছুটি নিয়ে যাই মা কখনোই পারমিশন দেবে না তাই প্লিজ এরকম করে আমার দিকে না তাকিয়ে চুপচাপ ফুচকা গুলো শেষ কর

রুপমঃ হিয়া প্লিজ না করো না__দেখো আমার বড় ভাইয়ার ট্রাভেল এ্যান্জেসির বিজনেস তো ভাইয়ার এ বছর দিগুণ প্রোফিট হওয়ার ভাইয়া আমাকে ট্রিট স্বরুপ বান্দরবান ট্যুরের ওফার টা দিয়েছে আমরা সব ফ্রেন্ডরা যাচ্ছে সন্ধি,রাইসা তো আছে ওদিক নীলিমা,হেমা এমনকি রাসেলের ছোট বোন তোমার চাইতেও অনেক ছোট ক্লাস টেনে পড়ে সে ও যাচ্ছে প্লিজ তুমি না করো না তুমি গেলে আমরা সবাই খুব খুশি হবো

হিয়াঃ আমি বুঝতে পারছি ভাইয়া কিন্তু আমাকে বাড়ি থেকে কেউ কখনো এলাও করবো না।আমি মিথ্যে বলে ছুটি নিয়ে যেতে পারবো কিন্তু আমি মিথ্যে বলে এতো বড় একটা কাজ__না ভাইয়া আমাকে অন্তত এ বিষয়ে জোড় করবেন না

অবন্তীঃ হিয়া প্লিজ না বোনু আমি নাহয় মাকে বলবো আন্টির সাথে কথা বলতে

হিয়াঃ না অবন্তী জোড় করিস না প্লিজ

অবন্তীঃ তুই চুপ থাক আমি আজি মাকে গিয়ে বলবো আন্টির সাথে কথা বলতে__তুই যাবি মানে যাবি

হিয়াঃ মার নাম্বার তোর কাছে থাকলে তো

অবন্তীঃ সে ম্যানেজ করতে আমার দু মিনিটো লাগাবে না হুহ

হিয়াঃ আচ্ছা সেটা পরে দেখা যাবে এখন মুখ টা বন্ধ করে তাড়াতাড়ি খা,আযানের আগে আমাকে হোস্টেল এ ফিরতে হবেএএএএ

অবন্তীঃ খাচ্ছি খাচ্ছি

রুপমঃ তাহলে ম্যাজিজ কুইক আমি ধরে নিচ্ছি তুমি যাচ্ছ আমাদের সাথে

অবন্তীঃ না ভাইয়া বাড়ি থেকে কখনো এলাও করবে না

সন্ধিঃ প্লিজ হিয়া

হিয়াঃ আচ্ছা আপু আমি কথা বলবো বাসায় মার সাথে তারপর দেখছি

রুপমঃহুমম

এদিকে বাসবি আন্টি ফোন করে উজানকে সামনে ডাকলে উজান গল্পের মাঝপথ থেকে উঠে একটু সামনে হাটা দেয়,উজান উঠে যাবার কিছুক্ষণ পর হিয়ার বাড়ি থেকে ওর মায়ের ফোন আসলে হিয়া ফোন টা নিয়ে ফুচকার স্টোল থেকে বেড়িয়ে একটু সামনে হেটে ওর মায়ের সাথে কথা বলতে শুরু করে__কথা বলা শেষ হলে সামনের একটা ওরনামেন্টসের স্টোলে একটা চুড়ির উপর হিয়ার নজর পড়লে হিয়া দেখতে পায় এটা সেই চুড়ির সেট যেটা সে হোস্টেলের এক বড় আপুর হাতে কদিন আগে দেখেছিলো আর এক দেখাতেই চুড়ি গুলো হিয়ার মন কেড়ে নিতে সক্ষম হয়েছিলো,এমনিতে হিয়া চুড়ি প্রেমী একটা মেয়ে,কপালে কালো টিপ আর হাতে ড্রেসের সাথে ম্যাচিং করে যেকোনো চুড়ি সাজগোজের মূল অস্ত বলে হিয়ার কাছে বিবেচিত,হিয়া ঠিক করেছিলো কখনো এরকম চুড়ি সামনে পড়লে ওহ কিনে নিবে তাই সে দৌড়ে স্টোল টার সামনে গিয়ে চুড়িগুলো হাতে নিয়ে দামদর শুরু করে

কিন্তু দামদর করেও লাভ হয় না হিয়ার ব্যাগে আছে মোটে পাঁচশ টাকার একটা নোট__যা দিয়ে আরো একটা সপ্তাহ ওকে চালাতে হবে আর দোকানদার চুড়ি গুলোর দাম চেয়ে বসলো ৬০০ আর বলে দিলো কমালেও বিশ টাকার বেশি কমানো যাবে না__তাই হিয়া নিরুপায় হয়ে পাশে থাকা একটা টেবিলের সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে পড়লো

হিয়াঃ ধুর এতো দাম কেনো,পছন্দ করেছি বলে এতো চাইলো না ওগুলোর দামই ওরকম, কি জানি হবে হয়তো____ওহ হ্যা আমার তো কালো টিপের পাতাটায় আর টিপো নেই বেশি আমি বরং একটা টিপের পাতা কিনে নেই__বিরিয়ানি কিনতে পারলাম না খিচুড়ি দিয়েই মনের খুদাটা মিটাই আরকি করার,আমাদের মতো মেয়েদের কি শখ আহ্লাদ বলে কিছু থাকতে নেই আল্লাহ সামান্য একটা চুড়ি কিনা এতো দাম উফফ অসহ্য

হিয়াঃ মামা এই টিপের পাতা গুলো কতো ১০না আমাকে দুটো দেও

হিয়া পাতা দুটো নিয়ে ৫০০টাকার নোট টা বের করে দিলে ছেলেটা বলে উঠে ৫০০টাকা খুচরা নেই অন্য কোথাও থেকে নিতে__হিয়া বললো ওহ ৩০টাকা দিয়ে একটা মেহেদী নিচ্ছে সাথে কিন্তু তাও ছেলে টা বলে উঠলো খুচরো নেই অন্য কোথাও থেকে নিতে__এবার তো হিয়ার মেজাজ পুরো বিগড়ে গেলো,ধুর জ্বালা আর কিছু কিনবোই না এরকম করে খুচরো নেই বলে অন্য দোকানে পাঠিয়ে দিলে জীবনে আর ব্যবসা করতে হবে না,যতোসব আনপ্রফেশনাল দোকানদার!!বুঝছি আল্লাহ তুমি হয়তো চাইছো না আমি টাকা টা খরচ করি তাই এতো বাধা দিচ্ছো,ঠিক আছে আমিও আজ আর খরচ করবো না হুহ

কথাটা বলেই হিয়া গটগট করে অবন্তীদের ওখানে গিয়ে ধপ করে বসে পড়লো এদিকে তখনো অবন্তী ফুচকা গিলেই চলছে দেখে হিয়ার মেজাজ আরো খারাপ হয়ে উঠলো,স্বস্তি এতটুকুই যে উজান আর ওখানে নেই নাহলে অবন্তীর ঔ বোকা মার্কা কথাটার পর হিয়া তো উজানের দিকে তাকাতেই পারছিলো না,ছিঃ কি একটা লজ্জা

অবন্তীর খাওয়া শেষ হলে হিয়া অবন্তী দুজনে পাশে বসে থাকা সন্ধি রুপম সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে স্টোল থেকে বেড়িয়ে পড়ে,যাওয়ার আগে যদিও রুপম অনেক রিকুয়েষ্ট করে হিয়া যেনো এই ট্যাুরে ওদের সাথে যায়__স্টোল থেকে বেড়ুতেই হিয়া অবন্তীর পিঠে দুম দুম দুটো কিল বসিয়ে দেয়

হিয়াঃ এই বেয়াদব মাইয়া তোকে আজকে আমি পানাপুকুরে চুববাবো,তোকে আমি কখন বললাম যে আমার উজান ভাইয়ার মতো ছেলেকে পছন্দ হারামি

অবন্তীঃ তোর সত্যি ভাইয়াকে পছন্দ না আমি তো ভাবলাম তুই আমার বড় ভাবী হবি আর আমি হবো তোর জল্লাদ ননদ__তোর লাইফে এন্ট্রি নিয়ে তোর জীবনটা নরক বানিয়ে দিয়ে ত্যানাত্যানা করে দেবো তখন তুই বুঝবি হিয়ারানী অবন্তী কি জিনিস উফফফ ভাবতেই যা হচ্ছে না আমার হা হা হা হা

হিয়াঃ তবে রে মীরজাফর এর বাচ্চা তোকে তো দেখাচ্ছি এবার

হিয়া অবন্তী কে ধরতে গেলে অবন্তী দৌড় শুরু করে,হিয়া পিছে পিছে আসলে অবন্তী সামনে একটা ছেলের সাথে দুম করে ধাক্কা খায়,আর ছেলেটা কেউ না ছেলেটা হলো সৈকত,উজানদের ব্যাচমেট এবার উজানদের সাথে মাস্টার্স দিবে কিন্তু সে একদম উজান কে সহ্য করতে পারে না উজানো সৈকত কে দু চোখে দেখতে পারে না বলা চলে দা কুমড়ো টাইপ সম্পর্ক দুই পক্ষের

সৈকতঃআরে মামা এটা আমাদের হিরোর বোন না___টপ টু বটম পুরাই তো মাল একটা

হিয়াঃএই ঠিক করে কথা বলুন,আপনি কাকে কি বলছেন

সৈকতঃ এটা আবার কে মামা নতুন নাকি,তা মামুনি তুমিও কি উজানের বোন নাকিইইইই বউ

পাশে থাকা একজন বলে উঠে বোন না অবন্তীর বান্ধবী,মাঝেমধ্যে উজানদের বাড়িতে যায় একদিন তো উজানের সাথে বাইকেও একসাথে দেখা গেছে

হিয়াঃ আপনারা কিন্তু মেলায় এসে মেয়েদের সাথে অসভ্যতামি করছেন

সৈকতঃ আরে মামুনি বলে কি, আমরা অসভ্যতামি করছি__কিছু না করেই অসভ্যতামির ভাগীদার হবার চাইতে কিছু করেই না হয় ভাগীদার হই

এই বলে সৈকত হিয়ার হাতের কব্জি ধরে কাছে আনতেই কোথা থেকে জানি দুম করে উজান সামনে এসে দাঁড়িয়ে সৈকতের হাতটা ধরে ফেলে

উজানঃ সৈকত হিয়ার হাত টা ছাড়

সৈকতঃ আরে মামা নন্দিনী কে বাঁচাতে নবাব এসে পড়েছে যে,তা উজান ব্রাদার রুমের মধ্যে কয়দিন

প্রথমে স্বাভাবিক ভাবে কথাটা বললেও সৈকতের কথা শুনে উজান এবার প্রচন্ড ক্ষেপে উঠে,উজানের দু চোখ রক্তবর্ণ ধারণ করে মুহুর্তে,হিয়া এতোক্ষণ ওর কব্জির দিকে তাকিয়ে থাকলেও এই মুহুর্তে তার দুচোখ সম্পূর্ণ উজানের উপর

উজানঃ সৈকত হিয়ার হাত টা ছাড়

সৈকতঃ ছাড়বো না কি করবি

উজানঃ সৈকত হিয়ার হাত টা ছাড়

সৈকতঃ (হিয়ার হাত টা আরো জোরে লেপ্টে ধরে)ছাড়বো না দেখি তুই কি করিস

উজান একঝাটকায় হিয়ার হাত টা ছাড়িয়ে নিয়ে ঔ একি টানে হিয়াকে ওর বুকের কাছে নিয়ে এসে জাপ্টে ধরে আর অন্য হাতে সপাটে সৈকতের গালে একটা চড় বসিয়ে দেয়,এদিকে অবন্তী তো ওর ভাইয়ার এরকম নতুন নতুন রুপ দেখে থ মেরে যায় ওখানে

উজানঃ আর কখনো হিয়ার দিকে চোখ তুলে তাকিয়েছিস তো আমি তোর চোখ তুলে নেবো সৈকত,ভুলে যাস না তোর ঘরেও একটা বোন আছে আর আমি তার সাথে ঠিক কি কি করতে পারি তার কোনো ধারণা তোর নেই,নেহাত আমি তোর মতো জানোয়ার না আমার চরিত্র টা এখনো সুস্থই আছে

সৈকতঃ বেশ____ভার্সিটিতে তোর রেপুটেশন নিয়ে তোর খুব গর্ব না রে এবার আমিও দেখবো ভার্সিটি ছাড়ার আগে তুই কি করে তোর এই রেপুটেশন নিয়ে বের হোস__আজ আমার গায়ে হাত তুললি তো, যা ছেড়ে দিলাম তোকে,কিন্তু এরপর তুই দেখবি শুধু,ভার্সিটি ছাড়ার আগে আমি কি করে তোর হাতে তোরি ক্যারেক্টার সার্টিফিকেট দেই আর এটা না করতে পারলে আমার নামো সৈকত না

সৈকত উজানকে এক প্রকার হুমকি দিয়ে নিজের শার্টের কলার ঠিক করতে করতে ওখান থেকে চলে যায়,সৈকত চলে গেলে উজান হিয়াকে আলতো করে ছেড়ে দিয়ে অবন্তীকে একটা ঝারি দিয়ে উঠলে অবন্তী হালকা ক্ষেপে উঠে এতে ওর কি দোষ আজব!!উজান অবন্তী কে নিয়ে হিয়াকে ওর হোস্টেলের গেট অবধি পৌঁছে দেবার জন্য হাটা শুরু করলে অবন্তী একটু পেছনে হাটা দিয়ে হিয়ার হাত ধরে টেনে হিয়াকে গুঁতো দিতে দিতে মজা নিতে শুরু করে,এদিকে হিয়া উজানকে যে একটা থ্যাংকস
দিবে তারো কোনো সুযোগ নেই যেই ভাবছে থ্যাংকস টা বলে দেই ওমনি গলার কাছে ভয় আর কোথাকার কোন লজ্জা এসে আঁটকে দিচ্ছে সব কথা

অবন্তীঃ কিইইই রেএএ,কি চলছে হ্যা তোর আর ভাইয়ার মাঝে,আমাকে লুকিয়ে লুকিয়ে চালাচ্ছিস তো সব

হিয়াঃ কি যা তা বলছিস,চুপ কর ভাইয়া শুনে ফেলবে

অবন্তীঃ এ্যাএএএ ন্যাকা ভাইয়া শুনে ফেলবে__তখন নাগরদোলায় ভাইয়ার বুকে চড়ে দোলু দোলু খেলি এখন আবার ভাইয়া তোকে সিনেমার হিরোদের মতো এন্ট্রি নিয়ে ঔ বদজ্জাত ছেলেটার হাত থেকে বাচিয়ে বুকে টেনে নিলোওও কি চক্কর চলে হ্যা

হিয়াঃ তুই কি মুখটা বন্ধ করবি না আমি তোকে এখানে মেরে ভর্তা বানিয়ে সবাই কে খেতে ডাকবো

অবন্তীঃ আচ্ছা ওসব ছাড়,আমি আম্মুকে বলে তোর মার সাথে কথা বলার চেষ্টা করবো কেমন,তুই রেডি থাকিস কিন্তু

হিয়াঃ পা-রবো-না

অবন্তীঃ যা তাহলে,ভাইয়া চলো

উজান কিছু না বলে হিয়াকে একবার দেখে চোখ বুলে নিয়ে অবন্তীর হাত ধরে ওখান থেকে আবার মেলার গেটের দিকে হাঁটা শুরু করে

__________________?_______________

#Next_Part

সন্ধিঃ কি মামা কি চলে তখন টিপ এখন চাদর,তুমি তো দেখছি এ যুগের মীরজাফর ম্যাক্স প্রো,এভাবে পারলে নিজের বেস্ট ফ্রেন্ডের সাথে বিশ্বাস ঘাতকতা করতে
__________

অবন্তীঃ বাহ বা মেয়ের কথা বলার ধরন দেখো কি না আবার মিটমিট করে হাসছেও তো দেখছি,তলে তলে তাহলে ট্যাম্পু বাস রিক্সা সবই চলে দেখছি,শোনো মেয়ে আমার নজর কিন্তু কিচ্ছু এড়ায় না,আমার ভাবি হবার জন্য না তোমাকেও আমাকে ইমপ্রেস করতে হবে বুঝলা

?আশা করছি এই গরমেও শীতের আমেজে দিতে পারলাম হালকা?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here