স্ত্রীর অধিকার,পর্বঃ০২
লেখিকাঃফারহানা ইসলাম
১ম পর্বের পর থেকে,,,,,,,,,,,,,
আমার শ্বাশুড়ির কথা শোনে আমার চোখ বেয়ে পানি পড়তে লাগলো।হঠাৎ কেউ আমার কাঁধে হাত রাখলো।চমকে গিয়ে পেছনে তাকাতে ই দেখি দাদী।দাদী আমার চোখের পানি মুছে দিয়ে বললো তোকে আরো শক্ত হতে হবে।শুধু শক্ত নয়;কঠোর থেকে কঠোর হতে হবে।কারন ওরা তোকে অনেক অপমান-অসম্মান করবে।ওরা চাইবে তুই চলে যাস।আর ওরা একাই এই বাড়িতে রাজত্ব করবে।তুই কখনো ওদের কথায় কান দিবি না।কথাগুলো বলে ই দাদী চলে গেলো।
,
,
দাদী চলে যাওয়ার পর আমি একা একা বসে বসে ভাবছি কালকেও তো আমার জীবন সম্পূর্ন ঠিক ছিলো।কিন্তু আজ ক্ষণিকের মধ্যে কী হয়ে গেলো।ক্ষণিকের মধ্যে কী আমি বিবাহিতা হয়ে গেলাম।শুধু কবুল বললে বা একটা কাগজে সাইন করলে কী বিবাহিতা হয়ে যায়।মনের মতামত বা ইচ্ছার বিরুদ্ধে কী একটা কাগজে সাইন করলে ই বিবাহিতা হয়ে যায়।কী অদ্ভূত সমাজ!কী অদ্ভূত বিচার।কথাগুলো ভাবছি আর নিজের ভাগ্যকে ই দোষ দিচ্ছি।হঠাৎ আমার মোবাইলটা বেজে উঠলো।মোবাইলটা হাতে নিয়ে দেখি রাহুল কল করেছে।রাহুল আমার কলেজ ফ্রেন্ড।অনেকবার আমাকে প্রপোজ ও করেছিলো।আমি এক্সপেক্ট করি নি।কিন্তু আজ রাহুল কেনো কল করেছে?এইসব ভাবতে ভাবতে কলটা রিসিভ করলাম।কল রিসিভ করার,,,,,,,,,
হ্যালো!(আমি)
কী রে অনু শোনলাম তোর নাকি বিয়ে হয়ে গেছে।কথাটা কী সত্যি??(রাহুল)
হ্যাঁ সত্যি।।(আমি)
তো তোর বর কী করে??(রাহুল)
ব্যবসা করে।ব্যবসায়ী।।(আমি)
মিথ্যে কেনো বলছিস অনু।তোর বর তো হুইল চেয়ারে বসে চলাফেরা করে।হাঁটতে পারে না।(রাহুল)
?????(আমি)
শোন অনু এখনো সময় আছে।ছেলেটাকে ডিভোর্স দিয়ে আমার কাছে চলে আস।তোর জন্যে আমার দরজা সারাজীবনের জন্যে খোলা থাকবে।।(রাহুল)
সেটা আর কোনোভাবে ই সম্ভব ময়।কারন আমার বিয়ে হয়ে গেছে।আমি এখন অন্যজনের বিবাহিতা স্ত্রী।তোর কাছে যাওয়া আমার পক্ষে সম্ভব নয়।রাখছি।(আমি)
কথাটা বলে আমি কল রেখে দিলাম। কে কল করেছে?বয়ফ্রেন্ড তাই না!!হঠাৎ কারো এমন কথা শোনে আমি বেশ ভয় পেয়ে যাই।পেছনে তাকাতে ই দেখি অভ্র।তার মানে অভ্র এতক্ষণ আমার আর রাহুলের কথাগুলো লুকিয়ে লুকিয়ে শুনছিলো।
,
,
অভ্র আমাকে বললো আপনার বয়ফ্রেন্ডের সাথে কথা বলছিলেন বুঝি!!অভ্রের কথা শোনে আমি হেসে বললাম জ্বী না।আমার এক কলেজ ফ্রেন্ড কল করেছিলো ওর সাথে কথা বলছিলাম।
আমার কথা শোনে অভ্র বললো প্লীজ অনু মিথ্যে বলবেন না।আমি জানি ফ্যামিলির চাপে পড়ে আপনি আমাকে বিয়ে করেছেন।কিন্তু আপনি কখনো আমাকে স্বামী হিসেবে মেনে নিতে পারবেন না।আসলে আমি তো আপনার নয় কারোর ই স্বামী হওয়ার যোগ্য নই।আর তাছাড়া হয়তো আমি আপনাকে কোনোদিন ও স্ত্রীর অধিকার দিতে পারবো না।
,
,
অভ্রের কথা শোনে আমি মনে মনে বললাম স্ত্রীর অধিকার যেহেতু দিতে পারবেন না সেটা আপনি জানেন ই তাহলে বিয়েটা করলেন কেনো??কেনো একটা মেয়ের জীবন এইভাবে নষ্ট করলেন??
অনু আপনি কী ভাবছেন??হঠাৎ অভ্রের ডাকে ভাবনার ঘোর কাটলো।।কই কিছু ই ভাবছি না আমি বললাম।আমার কথা শোনে অভ্র একটু মুচকি হেসে বললো আমি জানি আপনি কী ভাবছেন!!আপনি হয়তো এইটা ভাবছেন আমার সমস্যা থাকা স্বত্ত্বেও কেনো আমি আপনাকে বিয়ে করেছি।আসলে আমি আপনাকে নয় শুধু কোনো মেয়েকে ই বিয়ে করতে ইচ্ছুক ছিলাম না।কারন আমি কাউকে ঠকাতে চায় নি।কিন্তু বাবা বললো আপনার ফ্যামিলি নাকি সব জানে।তাই বাবার কথায় বাধ্য হয়ে বিয়েটা করলাম।যেমনটা আপনি আপনার মায়ের কথায় বাধ্য হয়ে করেছিলেন।
,
,
অভ্রের কথা শোনে আমি অবাক না হয়ে পারলাম না।কারন অভ্র কীভাবে জানলো যে আমি মায়ের কথায় বাধ্য হয়ে ওকে বিয়ে করেছি।হঠাৎ শোনতে পেলাম কেউ পুরুষ কন্ঠে বললো ভাবী আসবো!!পেছন ফিরে তাকিয়ে দেখি অধরা আর একটা ছেলে দাঁড়িয়ে আছে।আমি বললাম জ্বী আসেন।ছেলেটি আমার কাছে এসে বললো আমি অর্নব।অভ্র ভাইয়ের ছোট ভাই।মানে তোমার ছোটো দেবর।তখন আমি একটু হেসে বললাম প্লীজ আপনারা বসুন।আমার কথা শোনে অর্নব একটু চোখ রাঙ্গিয়ে বলে আপনি নয় আমাদের সবাই কে তুমি করে বলবে।তুমি এই বাড়ির বড় বউ।আমি হেসে বললাম আচ্ছা ঠিক আছে।
,
,
তখন আমাকে অভ্র বলতে শুরু করে আসলে ভাইয়া আমাদের সবার বড়।কিন্তু ভাইয়ার,,,,,,,,,,
চলবে