স্ত্রীর অধিকার,পর্বঃ০৪
লেখিকাঃফারহানা ইসলাম
৩য় পর্বের পর থেকে,,,,,,,,,,
একটু পেছন ফিরে তাকিয়ে দেখলাম অভ্র গান গাইছে।অভ্র এতো সুন্দর করে গান গাইতে পারে।অভ্রের দিকে এগিয়ে গিয়ে বললাম সত্যি অভ্র আপনার গানের গলা অপূর্ব।
হঠাৎ কারো কণ্ঠস্বর শোনে অভ্র অনেকটা চমকে গেলো।চমকে গিয়ে পেছন তাকাতে ই আমাকে দেখে বলে ধন্যবাদ অনু।
আমি বললাম আজকে রাতে মনে হয় আমাদের দুজনের না খেয়ে থাকতে হবে।আসলে এইটা হচ্ছে আমাদের দুজনের শাস্তি।
আমার কথা শোনে অভ্র একটু মুচকি হাসি দিয়ে বললো অনু আমার খুব খারাপ লাগছে আমার কারনে আপনাকেও শাস্তি দেওয়া হচ্ছে।কিন্তু আমি আপনাকে শাস্তি পেতে দিবো না।আমি আমাদের দুজনের জন্যে হোটেল থেকে খাবারের অর্ডার করেছি।একটু অর্নব নিয়ে আসবে।
অভ্রের কথা শোনে আমি হতবাক হয়ে অভ্রের দিকে তাকিয়ে রইলাম।সত্যি ই নিজে হাঁটা-চলা করতে না পারলেও কিন্তু নিজের দায়িত্বটা ঠিক পালন করার চেষ্টা করছে।
,
,
পরেরদিন ভোরবেলা আমি ঘুম থেকে উঠে নামাজ পড়ে নিচে আসলাম।হঠাৎ আমার শ্বাশুড়ি আর রিয়া(আমার জা)দুজনে আমার সামনে অনকগুলো জামা-কাপড় ছুঁড়ে মারলো।এই কান্ড দেখে আমি অবাক হয়ে ওদের দিকে তাকিয়ে আছি।আমি ওদের কাহিনীটা বুঝতে পারছি না।
হঠাৎ রিয়া বললো অনু এই জামা-কাপড়গুলো কেচে নিয়ে আসো তো।অনেক ময়লা হয়েছে।ভালো করে পরিষ্কার করবে কিন্তু।
রিয়ার কথা শোনে আমি বললাম এই বাড়িতে দুই দুটো কাজের লোক থাকতে আমি তোমাদের জামা-কাপড় পরিষ্কার করতে যাবো কোন দুঃখে বলো তো।
পাশ থেকে আমার শ্বাশুড়ি বললো এই মেয়ে শোন তুমি এই বাড়ির কাজের লোক থেকে আর কোনো অংশে কম নয়।বস্তির মেয়ে একটা।
তখন আমি বললাম শোনেন আপনারা আমাকে যা ই বলেন না কেনো আমি এইসব কাজ করতে পারবো না।না করতেও পারি যদি রিয়াও আমার সাথে করে কারন আমি তো আর একা বাড়ির বউ না।রিয়া ও তো এই বাড়ির বউ।
আমার কথা শোনে ওরা আমাকে কিছু বলতে যাবে এর আগে আমি অভ্রের রুমে চলে আসলাম।রুমে এসে দেখি অভ্র তখনও ঘুমের দেশে ই আছে।
আমি অভ্রের মাথায় হাত দিয়ে অভ্রকে জাগিয়ে তোলার চেষ্টা করলাম।কিন্তু তার এখনো উঠার নাম ই নেই।অনেকক্ষণ ডাকাডাকি করার পর অভ্র উঠলো।আমি ওকে ওর চেয়ারে বসিয়ে ওয়াশরুমে নিয়ে গেলাম।
কিছুক্ষণ পর সুমি নাস্তা নিয়ে আসলো।আমি আর অভ্র দুজনে বসে নাস্তা করে নিলাম।অভ্রের সাথে একটু গল্প করতে শুরু করে দিলাম।
,
,
ভাবী আসবো??হঠাৎ এমন কারো কণ্ঠস্বর শোনে পেছনে তাকাতে ই দেখি অধরা দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে আছে।।তখন আমি অধরাকে বলি অবশ্যই আসো।প্লীজ অধরা।।
অধরা ভেতরে এসে বললো ভাবী আমাকে তোমার কাছে দাদী পাঠিয়েছেন।দাদী বলছে আজ তোমাকে একটু ভালো করে শাড়ি পরতে আর গয়নাগুলো ও পরে নিতে।।
অধরার কথা শোনে আমি হেসে বললাম কেনো অধরা?হঠাৎ দাদী এই কথা কেনো বলেছে??
তখন অধরা বললো আজ তোমাকে পাড়ার চাচী,আন্টি,ভাবীরা সবাই দেখতে আসবে তাই।
আমি বললাম আচ্ছা ঠিক আছে।
,
,
সকাল দশটা কী এগারোটা হবে তখন আমি গোসল করে একটা সুন্দর শাড়ি পরেছি সাথে বিয়েতে অভ্রদের দেওয়া সব গহনা।গহনাগুলো পরে আমি নিচে আসলাম।বলে রাখা ভালো অভ্রকে অর্নব আগে ই নিচে নিয়ে গেলো।
আমি যখন নিচতলায় গেলাম তখন দেখলাম কয়েকজন মধ্যবয়সী মহিলা সোফায় বসে আছেন।আমি গিয়ে তাদের পাশে দাঁড়ালাম।তখন দাদী আমার কাছে এসে বললো অনু ওরা তোমার সম্পর্কে বড়।তাই ওদের সালাম করো।আমি গিয়ে মহিলাগুলোকে পা ছুঁয়ে সালাম করলাম।
তখন দাদী আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললো এই হলো অনু।আমার অভ্রের বউ।
পাশ থেকে একটা মহিলা বললো মেয়েটি অভ্রের বউ কী জন্যে অভ্রের মতো এমন একটা ছেলেকে বিয়ে করেছে?কোন স্বার্থে??
পাশ থেকে অন্যজন বললো বা রে কেনো আবার সম্পত্তির লোভে পড়ে।জানিস না এই বাড়ির সব সম্পত্তি তো অর্ধেক অভ্রের নামে।আর বাকি অর্ধেক ঐ তিনজনের নামে।।
কথাগুলো শোনে আমার খুব রাগ হলো।কিন্তু আমি মুখে কিছু ই বললাম না।সোজা ওপরের রুমে চলে গেলাম।।
,
,
রুমে গিয়ে বসে বসে কাঁদছি।হঠাৎ মোবাইলটা বেজে উঠলো।মোবাইলটা হাতে নিয়ে দেখলাম মা কল করেছে।মায়ের কল দেখে আমার রাগ অারো বেড়ে গেলো।মায়ের কলটা কোনোমতে রিসিভ করলো,,,,,,,,,
হ্যালো!!(আমি)
অনু রে মা তুই কেমন আছিস??(মা)
ভালো থাকার জন্যে কী তোমরা আমাকে দিয়েছো!!(আমি)
কেনো কী হয়েছে??(মা)
কী হয়েছে আবার জিজ্ঞেস করছো।তোমরা সবাই মিলে আমার জীবনটা নষ্ট করে দিয়েছো।আমাকে সমাজের কাছে ছোট করেছো।।(আমি)
অনু মা শোন।হ্যালো!!হ্যালো!!মা কিছু বলার আগে ই আমি কল কেটে দিলাম।সবাই মিলে আমার সাথে এমন,,,,,,,,,,,,,
চলবে