স্ত্রীর অধিকার,পর্বঃ১০,১১

0
2689

স্ত্রীর অধিকার,পর্বঃ১০,১১
লেখিকাঃফারহানা ইসলাম

আমি বললাম কী অধরা এখনো বাড়ি ফিরে নি।রাত এগারোটা বাজলো।তখন আমার শ্বাশুড়ি বললো হ্যাঁ আমার মেয়েটা এখনো বাড়ি ফিরে নি।আর ওর মোবাইলটা ও বন্ধ আছে।এখন কী হবে??
আমার শ্বাশুড়ি খুব কাঁদতে শুরু করলো।তখন আমি উনার হাত ধরে বললাম আম্মা প্লীজ শান্ত হন।আমি দেখছি কী করা যায়।আমি অধরার কিছু হতে দিবো না।
আমি অর্নবকে বললাম অর্নব তুমি কী অধরার কোনো বন্ধুকে চিনো বা কারো মোবাইল নাম্বার তোমার জানা আছে।
অর্নব বললো অধরার কোনো বন্ধুকে ই আমি চিনি না।কিন্তু মেজো ভাবি হয়তো চিনবে।
তখন রিয়া বললো না আমিও কাউকে চিনি না।
,

,
অনেকক্ষণ ভাবার পর আমি অর্নবকে বললাম অর্নব চলো আমি আর তুমি দুজনে গিয়ে অধরাকে খুঁজি।আর না হয় আমরা থানায় গিয়ে একটা মিসিং ডাইরী লিখে আসি।আমাদের এইভাবে হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকলে চলবে না।

আমার কথা শোনে অরূপ বললো তুমি কেনো যাবে।তোমার এতো মাথা-ব্যাথা কী নিয়ে??অধরা আমার বোন।আর আমার বোনের ব্যাপারে তোমার এতো না ভাবলে ও চলবে।কথাটা মাথায় রেখো।।

অরূপের কথা শোনে আমি হতবাক হয়ে গেলাম।আমি অধরার জন্যে ই এইসব করছি আর সে কি না আমার দিকে ই আঙ্গুল তুলছে।
আমি অরূপকে বললাম দেখো অরূপ আমি তোমার সাথে এখন কোনো তর্কে যেতে চাই না।
তখন আমার শ্বাশুড়ি বললো অরূপ তোরা এইবার চুপ করবি।প্লীজ চুপ কর।
,

,
অরূপ কিছু বলার আগে আমি আর অর্নব থানায় যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম।রাত তখন প্রায় একটা বাজে।আমি আর অর্নব যেই না বাড়ি থেকে বের হওয়ার জন্যে বাড়ির দরজা খুললাম ঠিক তখন দেখলাম অধরা বাড়ির বাইরে দাঁড়িয়ে আছে।আমি আর অর্নব দুজনে অধরাকে দেখে চমকে গেলাম।তখন অর্নব ওকে জিজ্ঞেস করলো,,,,,,,,,,,

অধরা এতো রাত অবধি তুই কই ছিলি?(অর্নব)

অর্নবের কথা শোনে বাড়ির বাকি সবাই যেনো হতবাক হয়ে গেলো।আমার শ্বাশুড়ি,রিয়া,অরূপ আর দাদী তাড়াতাড়ি করে দরজার সামনে এসে হাজির হলো।বলে রাখা ভালো আমার শ্বশুর সেইদিন বাড়িতে ছিলো না।

আমার শ্বাশুড়ি অধরাকে জিজ্ঞেস করলো অধরা এতো রাত অবধি তুই কই ছিলি????

মায়ের কথা শোনে অধরা বললো
আ,,আ,,,আমি তো বন্ধুদের সা,,সাথে পার্টি করতে গিয়েছিলাম।আমার এক বন্ধু আমেরিকা থেকে এসেছে।
অধরার কথা শোনে বাড়ির বাকি সবাই তো অবাক।কারো আর বুঝতে বাকি রইলো না যে অধরা ড্রিংক করে বাড়ি ফিরেছে।

অধরার কথা শোনে অর্নব অধরাকে কয়েকটা থাপ্পর লাগিয়ে দিলো।অধরা তখন মাথা ঘুরে ফ্লোরে পড়ে গেলো।আমি আর রিয়া মিলে অধরাকে ওর রুমে নিয়ে শুইয়ে দিলাম।
,

,
রাত তখন দেড়টা বেজে গেলো।আমি রুমে গিয়ে দেখি অভ্র এখনো ঘুমায় নি।আমি অভ্রকে বললাম
কী ব্যাপার অভ্র তুমি এখনো ঘুমাও নি কেনো??

অভ্র বললো আরে অনু আমার কেমন জানি ঘুম আসছে না।
আমি বললাম ও আচ্ছা।তাই বুঝি!!

অভ্র তখন আমাকে জিজ্ঞেস করলো নিচে কী হয়েছে।ছোটো মা এত চিৎকার করছিলো কেনো???

তখন অামি অভ্রকে সব কথা খুলে বললাম।সব শোনে অভ্র তো অবাক হয়ে গেলো।আমি ওকে বললাম তুমি চিন্তা করিও না।অধরা একদম ঠিক আছে।
অভ্রকে ঘুমুতে বলে আমি নিজে ও বিছানার ওপাশ ফিরে শুয়ে পড়লাম।তারপর কখন যে ঘুমের দেশে হারিয়ে গেছি নিজেও টের পাই নি।
,

,
সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে দেখি আটটা বেজে গেছে।আমি তাড়াতাড়ি করে নিচে চলে গেলাম।নিচে গিয়ে দেখলাম,,,,,,,,,,,,,,,,

চলবে

স্ত্রীর অধিকার
লেখিকাঃফারহানা ইসলাম
পর্বঃ১১

সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে দেখি অাটটা বেজে গেছে।আমি তাড়াতাড়ি করে নিচে চলে গেলাম।নিচে গিয়ে দেখলাম সবাই বসে আছে।আর পাড়ার কিছু মহিলা ও আছে।হঠাৎ আমার মনে হলো আজ তো অর্নবের গায় হলুদ।
,

,
আমি নিচে নামতে ই আমার শ্বাশুড়ি আমাকে বললো অনু আমি চাই অর্নবের বিয়ের সব দায়িত্ব আজ থেকে তুমি আর রিয়া দুজনে ই সামলাও।
আবার উনি রিয়াকে ও বললেন রিয়া আশা করি তোমার আর কোনো আপত্তি ই থাকবে না।

আমার শ্বাশুড়ির কথা শোনে তো আমি অবাক।উনি কী করে আজ আমার সাথে এত ভালো করে কথা বলছেন।যে মহিলা আমাকে সহ্য ই করতে পারতো না;;সে কী না আজ আমাকে ই নিজের ছেলের বিয়ের সব দায়িত্ব দিলেন।জানি না উনার মনের এত বড় পরিবর্তনের কারন কী!!হয়তো আল্লাহ সব সময় মানুষকে এক রকম রাখেন না।কখনো কখনো মানুষের দিলে রহমত দান করেন।যাতে সেই মানুষ নিজের ভুল বুঝতে পারে আর নিজেকে শুধরাতে পারে।এইটা হয়তো তার ই প্রমাণ।

আমি উনাকে বললাম আম্মা আপনি কোনো চিন্তা করবেন না।আমি আর রিয়া সবকিছু সামলে নিবো।
আমার কথা শোনে উনি বললেন আমি তোমাদের ওপর ভরসা করলাম।আশা করি তোমরা আমাকে হতাশ করবা না।

অর্নবের গায় হলুদের সকল দায়িত্ব আমি আর রিয়া নিজ হাতে সামলেছি।
,

,
এইদিকে সন্ধ্যার পর আমি যখন অভ্র র কাছে গেলাম।তখন দেখলাম অভ্র বিছানায় ওদিক করে শুয়ে আছে।অনেক বার ডাকাডাকি করলাম।কিন্তু কোনো সাড়া দিচ্ছে না।আমার মনের ভেতর কেমন জানি করে উঠলো অভ্র র কী হয়েছে।
তারপর আস্তে আস্তে করে অভ্রকে ধরে জাগানোর চেষ্টা করলাম।তখন অভ্র উঠলো।আমি অভ্রকে বললাম,,,,,,,,,,,,,

তুমি তো আমাকে ভয় পাইয়ে দিয়েছিলে!!!(আমি)

কেনো অনু??আমি আবার কী করলাম??(অভ্র)

তোমাকে এত ডাকার পরও তুমি উঠছো না কেনো??(আমি)

ঘুমের জগতে হারিয়ে গিয়েছিলাম।আর এতে এতো ভয় পাওয়ার কী আছে!!(অভ্র)

অভ্রের কথা শোনে আমার খুব রাগ হলো।আমি আর অভ্রকে কিছু ই বললাম না।মুখ গোমড়া করে বসে রইলাম।
আমাকে এইভাবে বসে থাকতে দেখে অভ্র জিজ্ঞেস করলো অনুতোমার কী হয়েছে??এইভাবে বসে আছো কেনো??
অভ্রের কথা শোনে আমি বললাম শোন আমার এইভাবে বসে থাকার কারন তোমাকে জানতে হবে না।আমি তেমার কেউ না!!
এই কথা শোনে অভ্র আমার হাতে হাত রেখে বললো অভিমান করেছো বুঝি!!
আমি তখন ভ্যাংচি কেটে বললাম সেটা আপনার না জানলে ও হবে!!আমি তো আপনার কেউ ই না।।
অভ্র একটু হেসে বললো আচ্ছা আমার ভুল হয়েছে।এই আমি কান ধরছি।তুমি দেখো!!

আমি অভ্রের দিকে তাকাচ্ছি না।আমি অন্য দিকে তাকিয়ে মুচকি মুচকি হাসছি।
অভ্র আমাকে আবার বললো এই অনু কী হলো।এই দিকে তাকাও না।বলছি তো আমার ভুল হয়েছে।আর আমি কানও ধরেছি।প্লীজ লক্ষী বউ আমার।একবার আমার দিকে তাকাও।

অভ্র র কথা শোনে অভ্র র দিকে তাকাতে দেখি সত্যি ই অভ্র কান ধরে বসে আছে।এইটা দেখে আমি হা!হা! করে হাসতে শুরু করলাম।

আমাকে এইভাবে হাসতে দেখে অভ্র বললো এখন মজা লাগছে না।এই বলে কান ছেড়ে দিয়ে আমার হাত জোড়া শক্ত করে ধরে ফেললো।আর বললো আমার যদি আজ পায়ের ক্ষমতা থাকতো তাহলে দেখতে আমি কী করতাম।

অভ্র র কথা শোনে আমার খুব খারাপ লাগলো।কিন্তু ওকে বললাম প্লীজ তুমি এই রকম করো না।আমি তো তোমার পাশে আছি।
শোন কয়েকদিনের মধ্যে আমেরিকা থেকে ডাক্তার নীলিমা চৌধুরী যুথি আসছে।আমি ভাবছি উনাকে দিয়ে ই তোমার চিকিৎসা করবো।

আমার কথা শোনে অভ্র বললো কী নাম বললে তুমি??

আমি বললাম নীলিমা চৌধুরী যুথি।কেনো কী হয়েছে??

তখন অভ্র বললো নামটা কেমন জানি চেনা চেনা লাগছে।কিন্তু নিশ্চত ভাবে বলতে পারছি না।ইশঃ মনে ই পড়ছে না।

তখন আমি বললাম যেহেতু মনে পড়ছে না।তাহলে আর জোর করে মনে করো না।দেখবে এমনিতে ই মনে পড়ে যাবে।
অভ্র বললো আচ্ছা ঠিক আছে।

তখন আমি অভ্রকে বললাম অভ্র আমি এখন যাচ্ছি।আমার অনেক কাজ আছে।
অভ্র বললো কী কাজ??

তখন আমি অভ্রকে বললাম জানো অভ্র আজ আম্মা আমাকে আর রিয়াকে অর্নবের বিয়ের সব দায়িত্ব দিয়েছেন।

আমার কথা শোনে অভ্র হেসে বললো কী বলছো ছোটো মা দিয়েছেন তোমাকে সব দায়িত্ব।ভাবতে ই অবাক লাগছে।।

তখন আমি বললাম অবাক লাগলে ও এটাই সত্যি।আচ্ছা এখন যাই।পরে দেখা হবে।আল্লাহ হাফেজ।
,

,

অভ্রের সাথে কথা বলে আমি রুম থেকে বেরিয়ে গেলাম।তখন রিয়া আমাকে ইশারা দিয়ে ডাকলো।আমি কিছু না বুঝে ই ওর দিকে গেলাম।তখন আমাকে রিয়া,,,,,,,,,,

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here