স্ত্রীর অধিকার,১৫ অন্তিম পর্ব
লেখিকাঃফারহানা ইসলাম
আমি আর নীলিমা নিজেদের মধ্যে কথা বলছিলাম।তখন হঠাৎ করে একটা লোক এসে নীলিমাকে বললো ম্যাম আপনাকে স্যার ডাকছে।
তখন নীলিমা বললো আচ্ছা আমি আসছি।
লোকটি চলে গেলো।।
,
,
লোকটি চলে যাওয়ার পর নীলিমা আমাকে বললো অনু আমি আসছি।আমাকে ও ডাকছে।
আমি বললাম ও মানে।তোমার স্বামী।তোমার বিয়ে হয়ে গেছে।
আমার কথা শোনে নীলিমা বললো হুম।আমার বর ডাঃ সাগর চৌধুরী।ভাগ্যক্রমে ওর পেশাটা ও ডাক্তার ই হয়েছে।কথাগুলো বলে নীলিমা চলে গেলো।
,
,
নীলিমার চেম্বারে অভ্র র ট্রিটমেন্ট চলে গেলো।আমি বসে বসে শুধু অভ্র র কথা ভাবছি।আর চোখের পানি ফেলছি।অভ্র র যদি কিছু হয়ে যায় তাহলে আমি আর বাঁচবো না।আমি ওকে ই ভালোবেসেছি।
,
,
টানা সতেরো দিন চিকিৎসার পর অভ্র সুস্থ হয়ে উঠলো।অভ্র আবার হাঁটতে পারছে এর চেয়ে আনন্দের সংবাদ আর কী হতে পারে।আম্মা,বাবা,অধরা,রিয়া,অর্নব,অরূপ,মিমি সহ সকলে হসপিটালে এসে উপস্থিত।সকলে তো অভ্র র কেবিনটা ভীড় করে রেখেছি।আমার আর অভ্র র কাছে যাওয়া ই হলো না।
হঠাৎ করে নীলিমা আমার হাত ধরে আমাকে একটা রুমে নিয়ে গেলো।আর আমাকে বললো অনু আমার তোমাকে কিছু কথা বলার ছিলো।
আমি বললাম কী নীলিমা তুমি নিঃসন্দেহে বলতে পারো।
তখন নীলিমা আমার হাত দুটো ধরে বললো অনু তুমি আমার অভ্রকে ভালো রেখো।এইটা তোমার কাছে আমার চাওয়া।
নীলিমার কথা শোনে আমি বেশ অবাক হইছি।আমার দিকে তাকিয়ে নীলিমা বললো জানি তুমি অবাক ই হবে।
আমি অভ্রকে খুব ভালোবাসতাম ছোটবেলা থেকে।কিন্তু অভ্র র সমস্যার কারনে আমার ফ্যামিলি আমাকে আমেরিকা নিয়ে গেলো।আর বিয়ে দিয়ে দিলো।
কিন্তু অনু তুমি জানো আজ আমি অনেক খুশি।কারন আমি আমার অভ্রকে আগের মতো সুস্থ করতে পেরেছি।আমার চাওয়া আজ পূর্ন হলো।
অনু তুমি আমার অভ্রকে ভালো রাখবা আমাকে কথা দাও।
নীলিমার কথা শোনে আমার চোখ থেকে পানি বেরিয়ে গেলো।নীলিমা ও খুব কাঁদছে।তাও আমি নীলিমার হাতে হাত রেখে বললাম নীলিমা আমি তোমার অভ্রকে ভালো রাখবো।কথা দিলাম।
নীলিমা আমার দিকে তাকিয়ে হেসে চলে গেলো।
আমি বুঝতে পারলাম নীলিমার এই হাসির পেছনে লুকিয়ে আছে শত কষ্ট আর না পাওয়ার যন্ত্রণা।
,
,
অভ্রকে বাড়ি নিয়ে যাওয়া হলো।আর কী বাড়িতে তো উৎসবের ধুম পড়ে গেলো।সবাই অনেক খুশি।
আজ আমাদের বাসরঘর হলো।বাসরঘরে আমি বসে আছি।আর মনে মনে অভ্রকে গালি দিচ্ছি।ছেঁচড়া আসতে কত দেরী করছে।ইচ্ছা করছে ধরে এনে মেরে নাক ফাটিয়ে দিই।
একটুপর দরজা খোলার শব্দ হলো।বুঝতে পারলাম অভ্র এসেছে।তাই আমি বড় করে একটা ঘোমটা দিয়ে বসে আছি।অভ্র এসে আমার হাত ধরলো।আর আমিও চমকে যাওয়ার ভান করে ওর দিকে তাকিয়ে রইলাম।অভ্র ও আমার দিকে তাকিয়ে রইলো।তারপর অভ্র আমার কপালে একটা কিস দিলো।আমি তো লজ্জায় শেষ।এরপর অভ্র আমাকে কোলে তুলে নিলো।
তখন আমি বললাম এই কী করছো পাঠকরা দেখছে তো।
অভ্র বললো দেখুক না পাঠকরা।তাদেরও জানা দরকার স্ত্রীকে প্রাপ্য অধিকার দিতে হবে।আর হ্যাঁ সকল স্ত্রীর ও জানা উচিত তারা যেনো অনুর মতো সবকিছু সামলে নেয়।আর যেকোনো পরিস্থিতিতে নিজেকে ঠিক রাখে।কারন আল্লাহ যা করে সবকিছু ভালোর জন্য ই করে।
আপনারা সবাই ভালো থাকবেন।আমাদের জন্যে অবশ্যই দোয়া করবেন।আমরা যেনো ভালো থাকতে পারি।আল্লাহ হাফেজ।
সমাপ্ত