স্নিগ্ধ_অনুভব #পার্ট:৯

0
515

#স্নিগ্ধ_অনুভব
#পার্ট:৯
#পিচ্চি_লেখিকা

মুখ ফুলিয়ে বসে আছি। ঠিক করেছি আজ আর ওই এনাকন্ডার সাথে কথা বলবো না। ওর জন্যই এত কথা শুনতে হলো খচ্চর বেডা। নিজে নিজে বলতে শুরু করলাম,,
“এতই যখন তোর সমস্যা তাইলে বিয়ে করলি কেন হ্যাঁ? আমারে বউ বলে পরিচয় দিতে না পারলে বিয়ে করার কি দরকার হ্যাঁ? ঢং দেখায় ঢং। রাগ, জিদ, ইগো আর এটিটিউডের ডিব্বা একদম। থাকবো না এই বাড়িতে। কেন থাকবো হ্যাঁ?”

মনে মনে তো অনুভবের ১৫ গুষ্ঠি উদ্ধার করে ফেলছি এখনো বাকি আছে। তখন থেকে রুমে এসে বসে আছি। ভার্সিটিও যায় নি। অনুভব তখন থেকে রুমে আসেনি। জানেই রুমে আসলে সিডর হবে আজ। একটু পরই কাচুমাচু হয়ে রুমে ঢুকলো অনুভব। উনাকে দেখেই চোখ গরম দিয়ে অন্য দিক ফিরে বসলাম।
“আমার বউ মনে হয় রাগ করছে!”
এই সময় এমন গা জ্বালানো কথা শুনে তেলে বেগুনে জ্বলে উঠলাম। ইচ্ছা তো করছে নাক মুখ ঘুষি মেরে ভেঙে দেয় কিন্তু কিছু না বলে চুপ করে রইলাম। আমাকে চুপ দেখে অনুভব আবার বললো,,
“বউ ও বউ চকলেট আনছি খাবা?”
উনার মুখে বউ শব্দ শুনে শিহরণ বয়ে গেলো। তার উপর তুমি করে বললো!এটাও সম্ভব?
“দেখ না বউ আমি তুমি বলতেই পারি না। সেই ছোট থেকে তুই বলে অভ্যাস তাই তুমি বলতে পারি না। চকলেট আনছি খাবি?”
“আপনি যান মিরার কাছে। খাবো না আমি কিছু।”
“এই রে বউ আমার দারুণ ক্ষেপছে। বউ রে আইসক্রিম খাবি?”
“খাবো না আমি যান এখান থেকে।”
অনুভব আমার কাছে এসে বসে বললো,,
“আমি কি করছি? আমার উপর রাগ করে আছিস কেন? তো….
উনি কিছু বলতে গিয়েও থেমে গিয়ে সুক্ষ্ম ভাবে আমার দিকে তাকালো। উনার চাহনি আমার ঠোঁটের দিকে। উনি হুট করে আমাকে এক ঝটকায় কাছে টেনে নিয়ে বললো,,
” তোর ঠোঁট কাটলো কিভাবে? মিরা তোকে মেরেছে?”
আমি কিছু না বলে মাথা নিচু করে রইলাম।
“বুঝেছি। ওর এত বড় সাহস! হাতই রাখবো না আমি ওর।”
অনুভবের চোখে মুখে স্পষ্ট রাগের ছাপ। উনি উঠে যেতে লাগলে আমিই হাত টেনে ধরে টেনে বেডে বসিয়ে দিলাম।
“আপনি এর থেকেও বেশি ক্ষত বিক্ষত করেন সেইটা চোখে পড়ে না? আর মিরা মেরেছে তাতেই এত রাগ!”
“শোন তুই আমার বউ। তোর উপর সব অধিকার আমার। তোকে মারবো আদর করবো বকবো ভালোবাসবো সব টাই আমি করবো। অন্য কেউ কোন সাহসে তোকে টাচ্ করবে?”
“হয়ছে। সব দোষ আপনার। আপনার যখন এতই বাদে আমাকে বউ বলে পরিচয় দিতে তাহলে বিয়ে করছেন কেন?”
“ওরে বইন রে বিশ্বাস কর মিরা জানে তুই আমার বউ। ইচ্ছা করে তোকে অপমান করছে।”
“মিথ্যা কথা।”
“এই দেখ বউ তোর মাথা ছুঁয়ে বলছি ও জানতো তুই আমার বউ!”
“এই এই হাত সরান। একদম আমার মাথায় হাত রেখে মিথ্যা বলবেন না।”
“আচ্ছা আমার মাথায় হাত রেখে বলছি দেখ।”
“ধুরু সরেন!”
অনুভবকে সরিয়ে দিয়ে উঠে আসতে যাবো তখনই উনি পেছন থেকে বললেন,,
“একটা কথা বলে যা স্নিগ্ধু।”
“আবার কি?”
“তোর সাথে এত অন্যায় করার পরও তুই এই বাড়িতে কেন আসলি? আমার সাথে সম্পর্ক আগের মতো কেন করছিস?”
উনার কথা গুলো শুনে কেমন যেন হাসি পাচ্ছিলো।
“যদি কথা হয় কেন এই বাড়িতে আসলাম? তাহলে উত্তর হচ্ছে,,আমি চায়নি মেঘলার বাড়িতে কোনো সমস্যা হোক। আর ওর বাড়িতে কতদিনই বা থাকতাম? তাই চলে এসেছি। আর দ্বিতীয়ত আমি সম্পর্ক আগের মতো কখন করলাম? আপনার সাথে আছি মানেই সংসার হয়ে যাচ্ছে! একটা সংসারে দুজনের দুজনের প্রতি সম্মান, শ্রদ্ধা, আন্ডারস্ট্যান্ডিং, ভালোবাসা সবটাই থাকা দরকার যা আপনার আর আমার মাঝে নেই। আর হ্যাঁ এতো কিছুর পরও আমি আপনার কাছে আছি কারণ…
” কারণ কি?”
“আপনি অমানুষ হলেও আমি আমার ভালোবাসাকে সম্মান করি আর যদি আসে আপনার শাস্তির কথা তাহলে বলবো রিভেঞ্জ অফ ন্যাচার বলে কথাটা আছে না! সেটাই হবে। আপনি নিজেই শাস্তি পেয়ে যাবেন আমাকে দিতে হবে না।”
এটুকু বলেই বারান্দায় গিয়ে দাঁড়ালাম। এমনটা না আমি উনাকে শাস্তি দিতে পারতাম না! অবশ্যই পারতাম কিন্তু আমি তো উনার মতো না। আমি পারি ক্ষমা করতে আর নিজের ভালোবাসাকে কি ই বা শাস্তি দিবো? আমি তো নিজেই এই স্নিগ্ধ অনুভবে আবদ্ধ। এই অনুভবকে আমি ৫ টা বছর স্বযত্নে ভালোবেসে গেছি। যখন বুঝতে শিখেছি ভালো লাগা কি? তখন তার প্রথম নাম টাও অনুভবেরই ছিলো। যখন বুঝতে শিখেছি ভালোবাসা কি? তখনও অনুভবের অনুপস্থিতি আমাকে বুঝিয়ে দিয়েছে এই অনুভবকে কতটা ভালোবাসি! যাকে ৫ বছর কাছ থেকে দেখার জন্য ছটফট করেছি তাকে কি করে শাস্তি দিবো? যার জন্য অন্যের পা ধরতেও দ্বিধাবোধ করিনি তাকে কি করে শাস্তি দিবো? অনুভব আমার সাথে যাই করুক ভালোবাসে এটা আমিও জানি। তবে ওর এই কষ্টদায়ক ভালোবাসা তো কখনোই আমি চায়নি তবে? তবে কেন পেলাম এমন পরিস্থিতি?

অনুভব হসপিটালে গেছে তাই একা একা রুমে বসে আছি এমন সময় তিশা আপু ঝড়ের গতিতে আমার রুমে ঢুকলো। দেখেই বোঝা যাচ্ছে রেগে আছে। আপু কিছু না বলে আমার পাশে বসে পড়লো।
“ক..কি হয়ছে আপু?”
“তুই এই বাড়িতে আসছিস কেন?”
“আ..আপু মেঘলা….
” জানি সব। তোর কি একটুও মায়া হয় না নিজের প্রতি? কেন ভালোবাসিস এতো?”
আমি কিছু না বলে মাথা নিচু করে একটু হাসলাম। যেমন তেমন হাসি না তাচ্ছিল্যের হাসি।
“তোর মনে হয় না অনুভব ভাইয়ার শাস্তি পাওয়া দরকার?”
“জানি না।”
“স্নিগ্ধু ভাইয়ার কাছে না ফিরলেও তো পারতি!”
“বাদ দেও না!”
“কি বাদ দিবো? স্নিগ্ধু তোর কি আত্মসম্মান নেই?”
“থাকবে না কেন? অবশ্যই আছে। তবে ইগো নেই। ইগো হার্ট হলে কখনোই অনুভবকে ক্ষমা করতাম না। তবে সেই আত্মসম্মান দিয়ে কি করবো যা আমার ভালোবাসার মানুষ থেকে দুরে সরিয়ে দেবে। আমি তো জানতাম ভালোবাসলে ক্ষমা করা যায়। তবে হ্যাঁ অনুভবের কাছে শুধু একটাই সুযোগ আছে। এই সুযোগেও সে ওইরকম বিহেভ করলে আর ক্ষমা করতে পারবো না।”
“তোর সাথে কথায় পারা যাবে না। অনুভব ভাইয়া কই?”
“হসপিটালে গেছে।”
“তুই ভার্সিটি যাসনি কেন?”
“এমনি। ভালো লাগছিলো না তাই।”
“মেঘলা তোকে অনেকবার কল দিছে তুই নাকি তুলিস নি তাই আমাকে পাঠিয়ে দিলো।”
“ফোন যে কই কে জানে?”
দুজন আরো অনেকক্ষণ গল্প করলাম। তারপর আপু চলে গেলো।

সন্ধ্যা বেলা বারান্দায় বসে আছি। অনুভব এখনো আসে নি। বাইরে বৃষ্টি নেমেছে। বৃষ্টি আমার অনেক ভালো লাগে কিন্তু ২ আগে জ্বর থেকে উঠছি এখন আবার বৃষ্টিতে ভিজলে খবর হয়ে যাবে। বৃষ্টি দেখে অনুভব ফোন করে বলে দিয়েছে যেন বৃষ্টিতে না ভিজি নয়তো আমাকে ছাদ থেকে ফেলে দেবে😐 ভয়েই আরো যায়নি। বারান্দা থেকে মুখ হালকা বাহিরে বের করে দিতেই ফোটা ফোটা বৃষ্টির ফোয়ারা ছুঁয়ে দিয়ে যাচ্ছে। অনেকক্ষণ হলো বৃষ্টি হচ্ছে কিন্তু থামার তো নামই নেই। অনুভব এই বৃষ্টির মধ্যে বাড়ি আসবে কিভাবে? কত ঝামেলা।
বাইরে তাকাতেই দেখলাম অনুভব ভিজতে ভিজতে বাড়িতে আসছে। গাড়ি কই উনার? আজব লোক তো। এই বৃষ্টিতে কেউ ভিজে? উনাকে আসতে দেখে তাড়াতাড়ি দরজার কাছে গেলাম। ঠান্ডায় রীতিমতো কাঁপতেছে। কোনো রকম ওয়াশরুম থেকে চেঞ্জ করে এসেই শুয়ে পড়লো। তাও টি-শার্ট পড়েনি শুধু টাউজার পড়েই কাথা মুড়িয়ে শুয়ে পড়লো। উনার গায়ের কাঁপুনি দেখে জ্বর আসছে মনে হচ্ছিলো। এগিয়ে গিয়ে উনার পাশে বসে কাঁপা কাঁপা হাতে কপালে হাত দিতেই দেখি জ্বরে পুড়ে যাচ্ছে শরীর। গায়ের তাপমাত্রা প্রচন্ড বেশি। জ্বরের ঘোরে কি সব বলছে তাও বুঝতে পারছি না। অনুভবকে রেখে তাড়াতাড়ি কিচেনে গিয়ে বাটিতে করে পানি আর একটা কাাপড় নিয়ে আসলাম। জলপট্টি দিতে গিয়ে দেখি উনি উপুড় হয়ে শুয়ে আছে। এটা আবার কি ধরনের শোয়া এই লোকের। মাত্রই তো ঠিক করে শুয়িয়ে রেখে গেলাম। বাটি টা সেন্টার টেবিলে রেখে উনাকে ঠিক মতো শুইয়ে দিতে গিয়ে চোখ উনার পিঠের দিকে পড়তেই আতকে উঠি। কয়েক ধাপ পিছনে সরে যায়। পিঠে অনেক গভীর ভাবে আঘাত করা। একেকটা জায়গা পুরো কেটে যাওয়ার মতো হয়ে আছে। আমি এত মাইর খাওয়ার পরও কখনো এমন দাগ হয়নি। উনার পিঠে এমন দাগ কিভাবে হলো? কেউ কি উনাকে মেরেছে? সব চিন্তা রেখে আগে উনার কাছে গিয়ে ডাকতে লাগলাম।
“অ..অনুভব!”
“………….
” শুনছেন। উঠুন না! সোজা হন।”
অনেকক্ষণ ধাক্কা দিয়ে ডেকে তুলে সোজা করিয়ে দিলাম। টি- জ্বরের ওষুধ খাইয়ে দিয়ে জলপট্টি দিতে লাগলাম। এখন একটু জ্বর কমেছে। উনি আবারও জ্বরের ঘোরে কি সব বলছে। কানটা উনার মুখের কাছে নিতেই উনি জাপটে ধরলেন। অনুভবের এহেন কাজে তো আমি হা হয়ে গেছি। অনুভব খুব শক্ত করে জড়িয়ে নিয়ে আছে। আর বিড়বিড় করে কিছু বলছে। এর ভেতর থেকে নিজেকে ছাড়ানো বড্ড কঠিন। যেভাবে ধরে আছে বাবাগো!

সকাল বেলা আবছা আলো মুখে পড়তেই চোখ মুখ কুচকে উঠতে গিয়ে মনে হলো কেউ শক্ত করে ধরে রেখেছে। পিটপিট করে চোখ মেলে মাথা টা উচু করতেই দেখি অনুভব মুচকি মুচকি হাসছে আর আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে আছে। উনাকে দেখে আমি ছাড়িয়ে নিতে যাবো উনি আরো শক্ত করে ধরে বললো,,
“আমি নাকি বিড়ালের বাচ্চার মতো ঘুমায় তো আপনি কি করেন ম্যাম?”
“ওই ছাড়েন। এমনে ধরে রাখছেন কেন? আর আমি ভালো ভাবেই ঘুমায়।”
“এহহহ ভালো ভাবে ঘুমায়। কত ভালো ভাবে ঘুমাস দেখলাম তো।”
“হয়ছে এবার ছাড়েন। আপনি জেগে গিয়েও আমাকে না ছেড়ে এভাবে ধরে আছেন?”
“সো হোয়াট? আমি আমার বউকে ধরছি ওকে অন্যের বউকে না!”
“ধুরু মিয়া ছাড়েন তাড়াতাড়ি। আমার ভার্সিটি আছে।”
“রোমান্সের সময় ভার্সিটির কথা মনে রাখতে হয় না বউ। রোমান্সের সময় শুধু রোমান্স করতে হয়।”
“আপনার মাথা খারাপ হয়ে গেছে ছাড়েন বলছি।”

ছাড়ার কথা বললেই আরো চেপে ধরে। আবার বড় বড় করে রোমান্সের কথা বলছে!সেইমলেস লোক একটা। কি করি এখন?

একটু চুপ থেকে জোড়ে করে একটা চিমটি কাটতেই উনার হাত আলগা হয়ে গেলো। এই ফাকে আমি দৌড়। ওয়াশরুম থেকে ফ্রেশ হয়ে এসে দেখি উনি এখনো বসে আছে। রাতের কথা মনে হতেই উনার সামনে দাঁড়িয়ে বললাম,,
“রাতে ভিজে বাসাই আসলেন কেন? বৃষ্টিতে ভিজলে আপনার জ্বর হয় ভুলে গেছেন নাকি? আর গাড়ি কই আপনার?”
“এক এক করে প্রশ্ন কর। মাঝ রাস্তায় গাড়ি নষ্ট হয়ে গেছিলো পরে বাধ্য হয়ে বৃষ্টিতে ভিজে হেঁটে আসছি।”
“তাই বলে হেঁটে আসবেন?”
“বাদ দে না।”
“আপনার পিঠে মারের দাগ কেন?”
আমার কথা শুনে চমকে আমার মুখের দিকে তাকালো অনুভব। আমতা আমতা করে বললো,,
“আব..কোথায় মারের দাগ? কারো সাহস আছে আহান আবরার অনুভবকে মারার!”
“তাহলে এমন ভাবে লাগলো কি করে? দেখে মনে হচ্ছে কেউ খুব বাজে ভাবে মেরেছে। আমি এত মাইর খেয়েও এরকম বাজে ভাবে দাগ হয়নি। আপনার পিঠের দাগ গুলো দেখে যে কেউ বলবে,,কেউ খুব নির্দয় ভাবে মেরেছে। ”
“তোর মাথা। সর এখান থেকে। আমি ফ্রেশ হবো।”
অনুভব আমাকে কথা বলতে না দিয়ে উঠে চলে গেলো। এড়িয়ে গেলো বিষয়টা তা বুঝলাম। একটা কথা কিছুতেই মাথায় আসছে না এই দাগ গুলো কিভাবে হলো?

ব্রেকফাস্ট শেষ করে লিভিং রুমে বসে আছি। কলিংবেলের শব্দে দরজা খুলতেই দেখি মেঘলা, আন্টি, আঙ্কেল দাঁড়িয়ে আছে।
“আঙ্কেল-আন্টি আসসালামু আলাইকুম।”
“ওয়ালাইকুম আসসালাম।”
“কেমন আছেন আপনারা?”
“আলহামদুলিল্লাহ..তুমি কেমন আছো?
” আলহামদুলিল্লাহ। তা কি মনে করে এই মেয়ের বাড়ি আসা। কখনো তো আসেন না!”
মুখ ফুলিয়ে বলায় আঙ্কেল-আন্টি হেঁসে দিয়েছে। পেছন থেকে মেঘলা বললো,,
“শুধু তো আঙ্কেল-আন্টি এসেছে আর কেউ তো আসে নি! কাউকে তো আর চোখে পড়ে না?”
“ওলে বাবালে আরেকজন আবার রাগ করছে হুহ।”
“আম্মু দেখছো স্নিগ্ধু ভেতরেও যেতে বলছে না চলো আমরা যায় গা।”
“ওই ছেরি ওই কত বড় সাহস তোর। ভেতরে আয় তাড়াতাড়ি। ”
৩ জনকে বসিয়ে অনুভবকে ডাক লাগালাম।
“উনি ভেতরেই আছে। চলে আসবে। আপনারা বসুন।”
নাস্তা নিয়ে গিয়ে আন্টিদের সাথে বসলাম। এতক্ষণে অনুভবও চলে এসেছে। আঙ্কেল আন্টি চা খেতে খেতে বললো,,
“যাক দুজন খুশিতে আছো এই অনেক। তো যে জন্য আসা।”
আঙ্কেল একটা কার্ড আমাদের দিকে এগিয়ে দিলো। কার্ড খুলে দেখি বিয়ের কার্ড। মেঘলার দিকে তাকিয়ে দেখি লজ্জা পাচ্ছে ওর এরকম অবস্থা দেখে শব্দ করেই হেঁসে দিয়েছি। অনুভব আমার দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে আছে। আমি ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বললাম,,
“আর লজ্জা পাইস না মেরি মা। এখনো বিয়েই হয়নি আর লজ্জায় লাল, নীল হচ্ছিস।”
“ওই চুপ ডাইনী। যা রেডি হয়ে আয়। আজ সবাই এক সাথে ঘুরবো। অনুভব ভাইয়া আপনার কোনো সমস্যা নাই তো?”
অনুভব এক গাল হেঁসে বললো,,
“আমার কোনো সমস্যা নেই শালিক পাখি তোমরা যাও। আমারও আজ হসপিটালে অনেক কাজ তুমি ওকে একটু বাড়িতে ড্রপ করে দিয়ো প্লিজ।”
“ঠিক আছে।”

আঙ্কেল-আন্টি চলে গেলেন। অনুভব হসপিটালে গেলো। আমি আর মেঘলা ভার্সিটির দিকে গেলাম। সেখান থেকে তন্নি তামিম ফাহিম ভাইয়া সবাই মিলে ঘুরতে বের হলাম। সারাদিন অনেক ইনজয় করলাম। অনুভব ফোন দিয়ে বলে দিয়েছে যেন পাকনামি না করে মেঘলার গাড়িতেই বাড়ি যায়। অগত্যা তাই করছি। তন্নি আর তামিমও আছে। ৩ জনেই আড্ডা দিতে দিতে যাচ্ছি। মেঘলা আর ফাহিম ভাইয়া নিজেদের মতো করে টাইম স্পেন্ড করছে। আর তো মাত্র কয়েকটা দিন। ৩ জন আড্ডাতেই মেতে ছিলাম হঠাৎ করেই চোখ বাইরে যেতেই আমার পিলে চমকে যায়।

চলবে…

(ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন ❤️ প্রথমত গল্প সকালে দিতে না পারার জন্য দুঃখিত। এখন থেকে বিকালে দিবো🙂।
কয়েকজন বললেন স্নিগ্ধার উচিত অনুভবকে শাস্তি দেওয়া! স্নিগ্ধার আত্মসম্মান নেই! স্নিগ্ধা হ্যাংলা! আরো অনেক কিছু। তো আপনারা চাচ্ছেন স্নিগ্ধা আর অনুভবের মাঝে দূরত্ব দেয় তাহলে অনুভবের শাস্তি হবে তাই তো? স্নিগ্ধা অনুভবকে ভালোবাসে তাই ক্ষমা করে সুযোগ ও দিয়েছে বাট এই ক্ষমাটা যে হ্যাংলামো তা জানতাম না। আমিও জানতাম ভালোবাসার মানুষকে অবশ্যই ক্ষমা করে সুযোগ দেওয়া যায়। সেই সুযোগটা যদি সে কাজে না লাগায় তাহলে তখন দুরত্ব দেওয়া যায়। আপনাদের কাছে গল্প ভালো না লাগলে আমি কি করে গল্প ভালো লাগাবো?😊🙂 যায় হোক এত কিছু না বলি এখন আপনারা কি চাচ্ছেন বলেন? আপনাদের মতো করে লিখে ওদের আলাদা করে দেবো?)
হ্যাপি রিডিং😊

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here