স্পাইসি_লাভ #পর্ব_০৩

0
251

#স্পাইসি_লাভ
#পর্ব_০৩
#অধির_রায়

হাত পা বেঁধে রুমে আটকিয়ে রাখা হয়েছে ত্রিশটি মেয়ে৷ সকলের চোখে ভয় হানা দিয়েছে৷ তারা সুযোগ খুঁজে বেড়াচ্ছে কিভাবে এখান থেকে পালাবে? সৃষ্টি কর্তার কাছে মন থেকে ভেভিল কুইন এর জন্য প্রার্থনা করছে৷ বর্তমানে তাদের একমাত্র ভরসা ডেভিল কুইন। একমাত্র অন্ধকার জগতের সবচেয়ে ভয়ানক নারী ছাড়া কেউ তাদের সাথে মোকাবেলা করতে পারবে না৷ মেয়েগুলোর চোখ থেকে অনবরত রক্তের অশ্রু গড়িয়ে যাচ্ছে৷
.
অভ্র আর নিরব চা খেতে খেতে এক সাথে হেঁসে বলে উঠে,
“ডেভিল কুইন কই তুই? আমিও দেখি তুই কিভাবে মেয়েগুলো বাঁচিয়ে নিতে পারিস? আজ রাতেই মেয়েগুলোকে বিদেশে প্রচার করে দিবো৷”
.
অভ্র চায়ের কাপে চুমু দিয়ে বলে উঠে,
“ডেভিল কুইন যখন জানতে পারবে আমরা গরিব ত্রিশ জন মেয়েকে বিদেশে প্রচার করে দিচ্ছি তখন সে বেঁচে থেকেও মারা যাবে৷ সে নিজে এসে আমাদের কাছে ধরা দিবে৷ আমাদের পা ধরে ক্ষমা প্রার্থনা করবে।”
.
নিরব এক ধ্যানে চায়ের ধোঁয়ার দিকে তাকিয়ে আছে৷ অভ্র কথাগুলো ঠিকমতো নিরবের কান অব্ধি পৌঁছালো না৷ নিরবের ভাবনা শুধু ডেভিল কুইনকে কিভাবে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দিবে? নিরবের একমাত্র শত্রু হলো ডেভিল কুইন৷ তার জন্য নিরবের সমস্ত ব্যবসা বন্ধ হয়ে এসেছে৷ তার জন্য নিরবের তিল তিল করে গড়ে তোলা রাজ্য এক নিমিষেই শেষ হয়ে গেছে৷
.
অভ্র কিছুটা ধাক্কা দিয়ে,
“স্যার কি ভাবছেন? ডেভিল কুইনের কথা ভাবছেন৷ আমি তাকে কিছুতেই ছাড়বো না৷ আমাদের গোডাউনে বোমা মা”রা’র মতো দুঃসাহস দেখিয়েছে৷ তাকে সামনে পেলে আমি তিল তিল করে মা’র’তা’ম৷ প্রথমে হাত কে’টে ফেলতাম৷ তারপর পা ভেঙে দিতাম৷ তাকে সুযোগ দিতাম দৌড়ে পালানোর। পালাতে পারলে তাকে আমরা ছেড়ে দিবো৷”
.
নিরব চোখ পাকিয়ে বলে উঠে,
“আমি তাকে এর থেকেও ভয়ানক শাস্তি দিবো৷ এমন শাস্তি দিবো যে সারা দুনিয়া শাস্তির কথা মনে রাখবে৷ তার শাস্তির কথা মনে করতেই সকলের গা শিহরণ দিয়ে উঠবে৷ আর কোন ডেভিল কুইনের জন্ম দিতেও প্রতিটি বাবার পুরুষা”ঙ্গ কেঁপে উঠবে৷”
.
অভ্র চোখ মুখ শক্ত করে বলে উঠে,
“একদম ঠিক বলেছেন৷ এমন শাস্তি দিবো যে সারা পৃথিবীর মানুষ শাস্তির কথা স্বরণ করেই শিহরিত হয়ে যাবে।”
.
.
বিধি বসে বসে মাথার চুল ছিঁড়ছে৷ কিছুতেই তার মাথা কাজ করতেছে না৷ সব জায়গায় লোক লাগিয়েছে মেয়েগুলোর সন্ধানের জন্য৷ নিধি মেয়েগুলোকে তন্নতন্ন করে খুঁজে যাচ্ছে৷ কোন ক্রো পাওয়া যাচ্ছে না৷ কিভাবে তাদের কাছে পৌঁছাবে? রুমের এক পাশ থেকে অন্য পাশে পায়চারী করছে৷ নিধি চোখে রক্ত গঙ্গা বয়ে যাচ্ছে৷ নিধি ডেভিল কিং কে কিছুতেই ছাড়বে না৷ তার জীবন ঘনিয়ে এসেছে৷ নিধি ডেভিল কিং এর সন্ধান জানার জন্য আবারও নিরবের লোকদের কাছে যায়৷ চোয়াল শক্ত করে বলে উঠে,
“আমার মন একদম ঠিক নেই৷ বল তোদের মাস্টার মাইন কই? ভালোই ভালোই বলে দে.. না হলে তোদের শাস্তি দেখে সারা পৃথিবী কাঁদতে বাধ্য হবে৷”
.
তাদের মাঝ খান থেকে একজন বলে উঠে,
“আমি ইয়াস বেঁচে থাকতে কিছুতেই মুখ খুলবো না৷”
.
ইয়াসের সাথে বাকী তিনজনও একই কথা বলে উঠে৷ তাদের কথা শুনে নিধির রাগ আরও বেড়ে যায়৷ নিধি মাথা ঠিক নেই৷ কিছুতেই সে মেয়েগুলোকে বাহিরের দেশে প্রচার করতে দিবে না৷ একটা নয় দুইটা নয় ত্রিশটি মেয়ে৷ ত্রিশটি পরিবারের মেয়েগুলো ভয়ানক বিপদে পড়েছে৷ তাদের মান সম্মান রক্ষা করতে পারছে না৷ নিধির ইশারায় ইয়াস বাঁধে বাকি তিনজনের মুখে স্কচটেপ লাগিয়ে দিতে বলে। নিধির মাথায় রক্ত চেপে বসেছে৷ নিধি ধীর পায়ে ইয়াসের দিকে এগিয়ে যেতে থাকে৷ ইয়াস অট্টহাসি দিয়ে বলে উঠে,
“তোর মতো অনেক মেয়ের সাথে বিছানা শেয়ার করি৷ আর তুই কিভাবে আমার কাছ থেকে কথা বের করবি? তোরা তো হলি অবলা নারী৷
.
নিধি সমস্ত শক্তি দিয়ে ইয়াসের গালে থাপ্পড় দেয়৷ চেয়ারসহ ইয়াস মাটিতে লুটে পড়ে যায়৷ নিধি রাঙা চোখে ক্ষোভ নিয়ে ইয়াসের পায়ে লাথি দিয়ে ইয়াসকে সোজা করিয়ে বসায়৷ ইয়াস তখনও হেঁসে যাচ্ছে৷ ইয়াসের হাসি নিধি কানে মারাত্মকভাবে লাগছে৷ নিধি এতোটাই ক্ষিপ্ত যে নিজের রাগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারছে না৷ নিধি কাটারি রেখে কাঁচি ✂ দিয়ে ইয়াসের আঙ্গুল কাটতে থাকে৷ ইয়াসের অট্টহাসি মুহুর্তেই কান্নায় পরিণত হয়৷ ইয়াসের চিৎকারে সমস্ত রুম কেঁপে উঠছে৷ নিধি চিৎকার করে বলে উঠে,
“যত পারিস চিৎকার কর। তোর চিৎকার আমার কানে মুধুর স্বরে প্রতিধ্বনিত্ব হচ্ছে৷ এখনও সময় আছে তোদের লিড়ারের সন্ধান দে৷”
.
ইয়াস আবারও মুচকি হেঁসে বলে উঠে,
“কিছুতেই তুই সেখানে পৌঁছাতে পারবি না৷ আমাকে মেরে ফেললেও একটা টু শব্দ করবো না৷”

নিধির রাগ আরও সপ্ত আকাশে পৌঁছায়৷ নিধি হাতুড়ি দিয়ে ইয়াসের পা ভাঙতে থাকে৷ ইয়াসের চিৎকার করতে করতে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে৷ নিধি এবার বাকি তিনজনের দিকে চোখ রাখে৷ ভয়ে কাঁপতে থাকে বাকি তিনজন। নিধি চিৎকার দিয়ে বলে উঠে,

“আমি চাইনা তোদের সাথে এমন ব্যবহার করতে। সময় থাকতে বলে দে। নাহলে তোদেরকে বুঝাবো নরক কাকে বলে?”
.
নিধি কিছু করতে যাবে তার আগেই ফোনের রিংটোন বেজে উঠে৷ নিধি ফোন কানে নিয়েই মুচকি হেঁসে বলে উঠে,
“আমি আসছি। আমার হাত থেকে আর বাঁচতে পারবে না ডেভিল কিং৷ এতোগুলো মেয়ের জীবন নিয়ে খেলা এবার বুঝতে পারবে৷ তার যম তার সামনে দাঁড়াবে৷ তোমরা নজর রাখো যেন কিছুতেই তারা অন্য জায়গায় যেতে না পারে৷”
.
“তোদের ভাগ্য ভালো৷ যার জন্য তোরা সাময়িক সময়ের জন্য বেঁচে গেলি৷ তোদের সাথে আমার অনেক বড় হিসাব আছে৷ আমি রাতে তোদের সাথে সেই হিসাব পূরণ করবো৷”
.
তার লোকদের উদ্দেশ্য করে বলে উঠে,
“এক ফোঁটা জলও দিবে না৷ তাদেরকে আমি কঠিন থেকে কঠিনতম শাস্তি দিবো৷ তাদের বুঝিয়ে দিবো শাস্তি কাকে বলে? কত প্রকার ও কি কি?”

______

নিরবের নির্দেশে সকল মেয়েগুলোর মুখে স্কচটেপ লাগিয়ে দেয়৷ তারা যেন রাস্তায় কোন টু শব্দও করতে না পারে৷ মেয়েগুলোকে পিটিয়ে তোলা হচ্ছে মালবাহী ট্রাকে৷ যেন তারা মানুষ নয়৷ তারা এক একটা বস্তু৷ সবাইকে এক ট্রাকে গাধাগাধি করে তোলা হয়৷ নিরবের নির্দেশে ট্রাক চলতে শুরু করে৷

নিরব রুমে এসে অল্প সময় গিটার বাজিয়ে মনের শান্তি প্রকাশ করে। নিরব অট্টাহাসি দিয়ে বলে উঠে,

“ডেভিল কুইন তুই কই? তোর নাকের ডাগা দিয়ে আমি মেয়েগুলোকে বাহিরের দেশে প্রচার করে দিলাম৷ এতোগুলো টাকা তুই কোনদিন চোখেই দেখিসনি৷”
.
নিরবের কথার মাঝে তার একজন কর্মী এসে হাঁপাতে হাপাতে বলে উঠে,
“স্যার ট্রাকটা আমাদের লোকেশনে যাচ্ছে না৷ মনে হয় ডেভিল কুইন আমাদের ড্রাইভারকে কিনে নিয়েছে৷
.
নিরব চোখ বড় করে,
“হোয়াট! ট্রাক কোথায় যাচ্ছে? এখনই ট্রাকটা ফলো করো৷ আর হ্যাঁ ড্রাইভারের পরিবারের সকল সদস্যদের আমি চোখের সামনে দেখতে চাই৷ কোথায় পালাবে ড্রাইভার। পরিবারের টানে এখানেই আসবে৷”
.
স্যার আপনি একবার ট্রাকটার লোকেশন দেখেন৷ আমাদের দেওয়া লেকেশনে ট্রাক যাচ্ছে না৷ আমাদের অতি তাড়াতাড়ি বের হতে হবে৷
.
আমাদের হাতে একদম সময় নেই৷ গাড়ি বের করতে বল। এখনই ট্রাকটাকে ফলো করতে হবে৷ ট্রাকটার মাধ্যমে আমরা ডেভিল কুইনের কাছে পৌঁছাবো৷ তার দুঃসাহসিকতার শাস্তি এবার দিবোই৷ আর পিছপা হবো না৷
.
ট্রাক চালাক অন্য কেউ নয়৷ ট্রাক চালক হলো অন্ধকার জগতের ডেভিল কুইন৷ নিধি ট্রাকটাকে জঙ্গলের দিকে নিয়ে এসে থামায়৷ নির্জন পরিবেশে নিধির লোকজন আগে থেকেই সব ব্যবস্থা করে রেখেছে৷ নিধি ট্রাক থামিয়ে তালা ভেঙে মেয়েদের তাড়াতাড়ি অন্য গাড়িতে উঠতে বসে৷ কখন এসে পড়ে বলা যায় না৷
.
মেয়েগুলোর চোখে মুখে আনন্দের হাসি ফুটে ওঠে। সকলেই দৌড়ে এসে নিধিকে জড়িয়ে ধরে৷ তারা সবাই এক সাথে বলে উঠে,
“আজ থেকে আমরা আমাদের জীবন তোমার নামে লিখে দিলাম৷ এখন থেকে আমরাও শয়তান ডেভিল কিং এর সাথে মোকাবেলা করবো৷”
.
নিধি উজ্জ্বল হাসি দিয়ে বলে উঠে,
“সেসব পরে দেখা যাবে৷ আগে তোমরা গাড়িতে বসো৷ এখন থেকে আমাদের অন্য গাড়িতে করে ফিরতে হবে৷ এই গাড়ির লোকেশন ট্যাগ করে এতোক্ষণ প্রায় চলে এসেছে৷”
.
নিধির কথামতো সকলে খুব তাড়াতাড়ি গাড়িতে উঠে বসে৷ পৌঁছে যায় তারা অন্য গন্তব্যে৷ তাদের জীবনের অন্ধকার দূর হয়ে যায়৷ নিধি বলে উঠে,
“অন্ধকার যতই গাঢ় হোক না কেন? দিনের আলোর কাছে হার মানতে বাধ্য। দিনের আলো ফুটতেই অন্ধকার হারিয়ে যায়৷”
.
নিরব ট্রাক ট্যাগ করে পৌঁছে যায় জঙ্গলের মাঝে। এখানে এসে শুধু ট্রাকটাই দেখতে পায়৷ মেয়েগুলো ট্রাক থেকে উধাও৷ আবারও ক্ষতি হয় লক্ষ লক্ষ টাকা৷ নিরবের চোখ রক্তে লাল হয়ে যায়৷ নিরব এক প্রকার বাধ্য হয়ে ডেভিল কুইনের সাথে দেখা করার জন্য প্রস্তাব পাঠায়।
.
ভোরের আলো ফুটতেই নিধি তার গোডাউনে আসে৷ একটু কাজ আছে৷ কাজ শেষ করে ভার্সিটিতে যাবে৷ কিন্তু গোডাউনে গত রাতে হামলা চালায়৷ নিধির লোকদের কোন ক্ষতি হয়নি৷ শুধু ক্ষতি হয়েছে নিরবের লোকদের। কে বা কারা জানি নিরবের চারজন লোককেই মেরে ফেলেছে? সন্দেহের চোখে নিধি তাদের লোকদের দিকে তাকায়৷

চলবে…..

ভুল ত্রুটিগুলো ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন৷

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here