স্বপ্নচারিণী,পর্ব_১১,১২
সামান্তা সিমি
পর্ব_১১
নীলুফা চৌধুরী মুচকি হেসে বিছানায় বসলেন।নিশানের মাথায় হাত বুলিয়ে বলে উঠলেন,
“—যূথীকে তোর পছন্দ? ”
নিশান কোনো উত্তর না দিয়ে মায়ের কোলে মাথা রাখল।
“—কিরে! কিছু বলছিস না কেনো? যূথীকে তোর পছন্দ?”
নিশানের শীতল কন্ঠ,
“—আমি ওকে চাই মা।মেয়েটাকে আমি ভালোবেসে ফেলেছি।”
“—দেখলি মায়ের চোখ কখনো ভুল হতে পারে না।যূথীর দিকে তোর যখন তখন ওইরকম তাকানো দেখেই আমি এমন কিছু একটা সন্দেহ করেছিলাম।আর আজকে আমার ধারণা সত্যি হয়ে গেল।”
“—বাট মা! যূথী বাড়ির লোকজনদের ভয়ে আমার থেকে দূরে দূরে থাকছে।মেয়েটা খুব কাওয়ার্ড।”
“—একদমই না।যূথী যা করেছে ঠিক করেছে।ওর জায়গায় একবার নিজেকে চিন্তা করে দেখ তাহলেই বুঝতে পারবি।সে এই বাড়ির লোকজনদের কষ্ট দিতে চায় না তাই এমন করছে।কিন্তু তুই যূথীকে বিয়েতে যেতে মানা করছিস কেনো?”
“—ওর অনেক পানিশমেন্ট পাওনা আছে।আজ বাড়ি ফাঁকা থাকবে তাই।”
“—ওর সাথে একদম উল্টাপাল্টা কিছু করবি না।তোর তো রাগ সবসময় নাকের ডগায় থাকে।তুই শুয়ে থাক।আমি যূথীকে এই রুমে পাঠাচ্ছি। বোঝাপড়া করে নে।”
দরজার কাছে গিয়েই তিনি আবার ফিরে এসে বললেন,
“—আরেকটা কথা শোনে রাখ।যূথীকে এই ব্যপারে এখন কিছুই বলার দরকার নেই।শুধু শুধু মেয়েটা একটা মানসিক চাপে থাকবে।আর বাড়ির লোক তোদের সম্পর্কটা এত সহজে মেনে নিবে না।তাই আপাদত ওদেরও আমি কিছু জানাব না।”
কিছুক্ষণ চুপ থেকে নিশান জবাব দিল,
“—ওকে।কিন্তু বাড়ির সবাই মানল কি মানল না এতে আমার কিচ্ছু যায় আসে না।নিশান কারো ধার ধারে না।দরকার পরলে যূথীকে তুলে নিয়ে বিয়ে করে ফেলব।”
নীলুফা চৌধুরী মুচকি হাসলেন।দুইদিন আগেও যে ছেলে বিয়ের নাম শুনলে রেগেমেগে বাড়ি মাথায় তুলত সেই ছেলে কিনা বলছে তুলে নিয়ে বিয়ে করবে।ছেলের এমন পরিবর্তনে তিনি স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেন।
নীলুফা চৌধুরী বেরিয়ে যেতেই নিশানের ঠোঁটের কোনে বাঁকা হাসি ফুটে উঠল। এতদিন পর্যন্ত যূথী যে মেসেজ গুলো পাঠিয়েছে তার সবই সে পড়েছে।ইচ্ছে করেই কোনো রিপ্লাই করেনি।নিশানও চেয়েছে যূথীকে প্রচন্ড অস্থিরতায় রাখতে।ধীরে ধীরে যূথী তাঁর কাছে ধরা দিচ্ছে এটা কি মেয়েটা বুঝতে পারছে?
* যূথী সেজেগুজে মনীষাদের সাথে রুমে বসে আছে।সে কখনো লেহেঙ্গা পরেনি।তিনবোন তাঁকে জোর করে এই অফ হোয়াইট কালারের লেহেঙ্গাটা কিনে দিয়েছে। লেহেঙ্গাটা দেখতে না যত সুন্দর তার থেকেও দ্বিগুণ ভারি।এটা সামলাতে যূথী হিমশিম খেয়ে যাচ্ছে। তার উপর কানে লাগিয়েছে লেহেঙ্গার থেকেও ভারি ওজনের ঝুমকা।সবমিলিয়ে সে ভীষণ নাকানিচুবানি খাচ্ছে।
ড্রেসিং টেবিলের দিকে তাকিয়ে দেখে তিনবোন ইচ্ছামতো সেজেই যাচ্ছে। তবে ওদের রাজকন্যা থেকেও কম লাগছে না।ওরা অবশ্য এমনিতেই একেকটা সেই লেভেলের সুন্দরী।
যূথী এত সাজগোজ পছন্দ করে না।তাঁর ধারণা শ্যাম বর্ণের মেয়েদের হালকা সাজেই ভালো লাগে।
তখনই নীলুফা চৌধুরীকে দরজা দিয়ে ঢুকতে দেখে যূথী মুচকি হাসলো।
এ বাড়িতে যূথীর সবচেয়ে প্রিয় মানুষ তাঁর বড়মা।
নীলুফা চৌধুরী যূথীর চিবুকে হাত রেখে বললেন,
“—বাহ্! দারুণ লাগছে তোকে।”
মুচকি হাসলো যূথী।তখনই পিছন থেকে নীলিমা বলে উঠল,
“—আর আমাদের বুঝি বাজে লাগছে তাই না বড়মা?”
“—সবাইকে খুব সুন্দর লাগছে।আমার আম্মু গুলোর উপর যেন কারো নজর না লাগে।” (নীলুফা চৌধুরী)
“—থ্যাংক ইউ বড়মা।” (নীলিমা)
নীলুফা চৌধুরী যূথীকে উদ্দেশ্য করে বললেন,
“—তুই একটু আয় তো আমার সাথে।কিছু কথা বলব।”
যূথী লেহেঙ্গাটা উঁচু করে ধরে বড়মা’র পিছু পিছু করিডোরের ফাঁকা জায়গাটায় চলে এল।
নীলুফা চৌধুরী যূথীর হাত ধরে বললেন,
“—একটা ঝামেলায় পরে গেছিরে মা।নিশান একটু আগে গায়ে জ্বর নিয়ে বাড়ি ফিরেছে।এদিকে বিয়ের নানা কাজ পরে আছে।আমি কোনটা ফেলে কোনটা সামলাব বলতো।তাই বলছি তুই বিয়েতে না গেলে হয় না?আমার সাথে সাথে একটু কাজ করবি।”
নিশানের ফিরে আসার খবর শুনেই যূথীর চোখমুখে খুশির ঝিলিক ফুটে উঠল। অবশেষে লোকটার দেখা পাওয়া যাবে।এতদিন দূরে থেকেও বড্ড কষ্ট দিয়েছে যূথীকে।
যূথী আনন্দের সহিত বলল,
“—কোনে সমস্যা নেই বড়মা।আমি না হয় বিয়েতে না গেলাম।”
“—আচ্ছা তাহলে এই টেবলেটা ধর।এটা নিশানকে খাইয়ে দিয়ে আসবি কেমন? আমি মনীষাদের কাছে যাচ্ছি। তুই যাবি না শুনলে অযথা চেঁচামেচি করবে।ওদেরকে কিছু একটা বলে মানিয়ে আসতে হবে।”
* কোনোরকম নক ছাড়াই নিশানের রুমে ঢুকে পরল যূথী।কত ঠান্ডা করে রেখেছে রুমটাকে।বিছানার দিকে নজর পরতেই দেখল নিশান গায়ে কাঁথা পেঁচিয়ে মাথার উপর এক হাত রেখে শুয়ে আছে।
যূথীর বুক দুরুদুরু করছে।লোকটা কি ঘুমিয়ে নাকি জেগে আছে বুঝা যাচ্ছে না।
কি দিয়ে কথা শুরু করবে যূথী?
“—নিশান ভাইয়া? জেগে আছেন? ওষুধ নিয়ে এসেছি আমি।”
মাথার উপর থেকে হাত সরিয়ে যূথীর দিকে কিছুটা চোখ পাকিয়ে তাকাল নিশান।তৎক্ষনাৎ তাঁর হার্টবিট যেন স্লো হয়ে আসতে চাইছে।এই মেয়েটা কি তাঁকে মারার প্ল্যান করছে নাকি।এমনিতেই ওকে দেখলে একটা মারাত্মক নেশা কাজ করে।আর আজ তো লেহেঙ্গা পরে সামনে দাঁড়িয়ে আছে।আর কতভাবে ঘায়েল করবে তাঁকে?
নিশান অন্যদিকে তাকিয়ে জোরে জোরে কয়েকবার নিঃশ্বাস নিল।কিন্তু পরক্ষণেই যূথীর ঠোঁটের দিকে নজর দিতে তাঁর চোখ মুখ কুচকে গেল।যূথীর ঠোঁটে লিপস্টিক দেওয়াটা তাঁর একদমই পছন্দ হচ্ছে না।কেমন একটা নিষিদ্ধ ইচ্ছা জেগে উঠছে।
নিশানের এমন চাউনি দেখে যূথীর শরীরে কাপুনি ধরে গেল।এখনো কি নিশান ভাইয়া তাঁর উপর রেগে আছে?
“—পারমিশন ছাড়া আমার রুমে কেনো এসেছো তুমি?”
নিশানের বলা ক্রুদ্ধ স্বরের কথাটা শুনে থেমে গেল যূথী।কিভাবে ক্ষমা চাইবে সে? সে তো লোকটার চোখের দিকেই তাকাতে পারছে না।একটা ঢোক গিলে বলল,
“—আমি জানি আপনি আমার উপর অনেক রেগে আছেন।ওইদিন খুব খারাপভাবে কিছু বলে ফেলেছিলাম আপনাকে।তাঁর জন্য…মানে…আমি…. ”
যূথীর সব কথা গলায় আটকে আসল।রুম এত ঠান্ডা হওয়ার পরও তাঁর কপালে ঘামের চিহ্ন দেখা যাচ্ছে।
নিশান ধমকে উঠে বলল,
“—হোয়্যাট? মানে আমি এগুলো কি?”
“—মানে আমি সত্যিই খুব দুঃখিত নিশান ভাইয়া।মাফ করে দিন আমায়।”
কাঁথা সরিয়ে বিছানা থেকে নেমে আসলো নিশান।এবার যূথীর শরীরের কাপুনি আরো বেড়ে গেল।নিশানকে উদোম গায়ে দেখে তাঁর দম বন্ধ হয়ে আসছে।লোকটার কি একটুও লজ্জা নেই? একটা মেয়ের সামনে এভাবে খালি গায়ে বডি দেখিয়ে যাচ্ছে! কোনো উপায় না পেয়ে যূথী নিচের দিকে তাকিয়ে রইল।
যূথীর থেকে কয়েক ফুট দূরে দাঁড়িয়ে নিশান শান্ত গলায় বলল,
“—লুক অ্যাট মি!”
যূথী দাঁত খিঁচে সম্পূর্ণ অনিচ্ছায় নিশানের চোখে চোখ রাখল।
“—মাফ করব না তোমায়।তুমি যে কত বড় অপরাধ করেছো এটা নিজেও জানো না।”
মুহূর্তেই যূথীর মেজাজ তুঙ্গে উঠে গেল।এই লোকটা একটা পাক্কা শয়তান।মানুষের ফিলিংসের কোনো মূল্য দিতে জানে না।সে এত সুন্দর করে ক্ষমা চাইল অথচ উনি কিনা আরো দু চারটা ফালতু কথা শুনিয়ে দিচ্ছে। বড়মা নিশ্চিত লোকটার জন্মের পর ভুল করে মুখে মধুর বদলে চিরতার রস খাইয়ে দিয়েছে।
শুধুমাত্র উনার জন্যই তাঁর বিয়েতে যাওয়া মিস হয়ে গেল।তাঁর একূলও গেল ওকূলও গেল।
যূথীকে চুপ থাকতে দেখে নিশান আবার বলল,
“—এখন বেরিয়ে যাও এখান থেকে।রেস্ট নিতে চাই আমি।”
যূথীর চোখে পানি টলমল করছে।এত অপমানিত সে কোনোদিনও হয় নি।দোষ তাঁরই।সে-ই যেচে এসেছে অপমান গিলতে।তাঁর আগেই বুঝা উচিত ছিল লোকটা আর পাঁচটা মানুষের মত স্বাভাবিক না।স্বাভাবিক মানুষেরা কখনো এভাবে কারো মনে কষ্ট দিতে পারে না।
পেছনে ফিরে হাতের উল্টো পিঠ দিয়ে চোখের জলটা মুছে নিল যূথী।
দরজার কাছে যেতেই নিশান বাঁধ সাধল।
“—এক মিনিট! তোমার শাস্তি তো বাকি আছে এখনো।কাম হেয়ার।”
নিশানের কথা পাত্তা না দিয়ে যূথী ঠায় দাঁড়িয়ে রইল।সে চায় না তাঁর চোখের জল লোকটা দেখুক।চোখের জল অন্যদের দেখানো মানেই নিজের দুর্বলতা প্রকাশ করা।
নিশান এগিয়ে গিয়ে যূথীকে নিজের দিকে ফিরিয়ে নিল।যূথীর মুখ উপরে তুলে বলল,
“— এসব কি লাগিয়েছো ঠোঁটে? আর যেন কখনো না দেখি।”
হাতের বুড়ো আঙুল দিয়ে যূথীর ঠোঁটের লিপস্টিকটা মুছে দিল নিশান।আচমকা এমন হওয়ায় যূথীর শিরদাঁড়া দিয়ে একটা ঠান্ডা স্রোত বয়ে গেল।মাথাটা ঝিমঝিম করছে।লোকটা কখন কি করে বসে তা কল্পনার বাইরে।এখানে আর এক মুহূর্তও থাকা যাবে না।এক্ষুনি পালাতে হবে।
নিশান যূথীর গাল বেয়ে গড়িয়ে পরা চোখের জল মুছিয়ে দিয়ে বলল,
“—এই চোখজোড়ায় জল মানায় না।”
যূথী পলকহীন চোখে দেখছে নিশানকে।এমন কেনো নিশান ভাইয়া? কখনো কিছু তিক্ত কথা দ্বারা মনে আঘাত দেয় আবার কখনো কিছু মিষ্টি কথা দ্বারা কাছে টেনে নেয়।
“—আমি এখন যাচ্ছি নিশান ভাইয়া।ওষুধটা খেয়ে নিবেন।আর আপনার না জ্বর।কিন্তু দেখে তো মনে হচ্ছে না।”
“—তাহলে কাছে এসে স্পর্শ করে দেখো।”
যূথী হতভম্ব হয়ে গেল।এসব কি কথাবার্তা বলছে নিশান ভাইয়া।মাঝে মাঝে এমন কিছু বলে বসে যে যূথী খুবই অপ্রস্তুত হয়ে পরে।কই অন্য কারো সাথে তো এমন করতে দেখে না!
মেডিসিন খেয়ে নিশান স্বাভাবিক ভাবে বিছানায় উঠে বসল যেন কিছুই হয়নি।
“—আমার মাথা খুব ব্যথা করছে।তোমার কাজ হচ্ছে আমার মাথার কাছে বসে চুল টেনে দেওয়া।ঘুমাব আমি। গট ইট?”
যূথীর চোখ বড় বড় হয়ে গেল।এরজন্যই কি সে বিয়েতে যাওয়াটা ক্যান্সেল করল?নিশান ভাইয়া এখন তাঁকে কাজের মেয়ে বানিয়ে দিল।যূথী বিড়বিড় করে বলল,
“—একেই বলে পোড়া কপাল।”
নিশান ভ্রু কুঁচকে বলে উঠল,
“—জল্পনা কল্পনা শেষ হলে এখানে আসো।”
“—পারব না আমি।আপনি কি আমাকে কাজের মেয়ে রেখেছেন?”
নিশানের শক্ত গলায় উত্তর,
“—কাজের মেয়েরা কখনো চুল টেনে দেয়?গবেট কোথাকার।”
রাগে যূথীর শরীর জ্বলে উঠল।আজকে সে প্রতিশোধ নিয়েই ছাড়বে।বারবার তাঁকে এভাবে অপমান করবে আর সে চুপচাপ মেনে নেবে কেনো?চুল টানানোর খুব শখ না?ঠিক আছে।আজকে এই বদ লোকটার মাথার সব চুল টেনে ছিড়ে ফেলবে সে।
ধুপধাপ পা ফেলে এগিয়ে আসলো যূথী।ততক্ষণে নিশান গায়ে কাঁথা মুড়ে শুয়ে পরেছে।
শিয়রের পাশে বসে নিশানের চুলে হাত রাখল যূথী।মুহূর্তেই তাঁর সমস্ত রাগ কোথায় যেন উধাও হয়ে গেল।কাঁপা কাঁপা হাতে সে চুল স্পর্শ করতে লাগল।নিশানের কপাল গরম হয়ে আছে।এতক্ষণ কি বুঝা গেছে যে লোকটার গায়ে এত জ্বর?দিব্যি সুস্থ মানুষের মত তাঁকে হেনস্তা করে গেছে।
যূথী খুব তীক্ষ্ণ ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে নিশানকে।এত সুন্দর কেনো লোকটা?ভ্রু, চোখ, নাক,ঠোঁট সব যেন তুলি দিয়ে আঁকা।গায়ের ফর্সা রঙটাও নজরকাড়া! খোঁচা খোঁচা দাঁড়িগুলো ফর্সা গালের সাথে মানিয়েছে খুব।
সিগারেট খাওয়ার কারণে ঠোঁটগুলো কিছুটা কালচে হয়ে আছে।কেনো যে এত সিগারেট খায়!
যেকোনো মেয়ের স্বপ্নের পুরুষ হওয়ার যোগ্যতা রাখে নিশান ভাইয়া।কিন্তু সাইকো লোকটা তো কাউকে বিয়েই করবে না।
এই যে এখন ঘুমিয়ে আছে দেখলে কেউ বলবে যে লোকটার এত রাগ?সবসময় এমন ভাবে চলাফেরা করে যেন কাউকে তোয়াক্কা করে না।ভারি অদ্ভুত নিশান ভাইয়া।
কিছুক্ষণের মধ্যেই নিশানের শ্বাস ফেলার ভারি আওয়াজ শুনতে পেল যূথী।তাঁর মানে ঘুমিয়ে পরেছে।যাক বাঁচা গেল।এখন তাড়াতাড়ি রুমে গিয়ে তাঁকে লেহেঙ্গাটা খুলে ফেলতে হবে।
হঠাৎ কি হলো যূথীর সে হাত দিয়ে নিশানের গালে আলতো করে ছুঁয়ে দিল।কেনো জানি এই কাজটা করতে তাঁর খুব ইচ্ছে করছিল।ঘুমের মধ্যে লোকটাকে এত কিউট লাগছিল যে এখানে অন্য কেউ থাকলে হয়তোবা এটাই করে বসত।
হাত সরিয়ে নিবে এমন সময় নিশান যূথীর হাত টেনে ধরল।
ভড়কে গেল যূথী।নিশান ভাইয়া কি জেগে গেছে নাকি?কোনো আওয়াজ না আসায় বুঝতে পারল ঘুমের ঘোরেই এমন করছে।যূথী হাত ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করতেই নিশান আরো চেপে ধরে বিড়বিড় করে বলে উঠল,
“—প্লিজ আমার সাথে থাকো সানফ্লাওয়ার!”
যূথীর হাতটা মুখের সামনে নিয়ে একটা চুমো খেয়ে নিল।মাথা ভনভন করে উঠল যূথীর।চোখ খিঁচে বন্ধ করে নিয়েছে।মন শুধু একটাই কথা বলছে এই লোকটা খুব ভয়ংকর। এনার মধ্যে এমন কিছু আছে যেটা কাছে আসলেই যূথীকে জ্বালিয়ে ছারখার করে দিতে পারে।দূরে থাকতে হবে তাঁকে। অনেক দূরে।হ্যাঁচকা টান মেরে নিজের হাত ছাড়িয়ে দরজা খুলে বেরিয়ে গেল যূথী।
চলবে……….
স্বপ্নচারিণী
সামান্তা সিমি
পর্ব_১২
বাড়ির মেইন ডোরের সামনে সবাই সারি বেঁধে মাহির এবং কারিমার জন্য অপেক্ষা করছে। যূথী দাঁড়িয়ে আছে বড়মা’র পাশে।তাঁর চোখ ঘুমে ঢুলুমুলু করছে।তখন নিশানের রুম থেকে বেরিয়ে গিয়েই বিছানায় শুয়ে পরেছিল।দশমিনিট মাত্র ঘুমাতে পেরেছে।এরপরই বড়মা তাঁকে ডেকে এখানে নিয়ে এসেছে।
কিছুক্ষণের মধ্যেই ফুলে সজ্জিত গাড়িটা দেখা গেল।মাহির প্রথমে নেমে কারিমাকে হাত ধরে নিয়ে আসছে।ওদের দুইজনকে একসাথে দেখে যূথীর চোখ ধাঁধিয়ে গেল।দু’জন যেন একদম মেইড ফর ইচ আদার।
নীলুফা চৌধুরী তাঁর ছেলের বউকে বরণ করে নিলেন।
ভীড়ের মধ্য থেকে হঠাৎই মনীষা নীলিমা বেরিয়ে এসে যূথীর হাত ধরে টেনে সিড়ির দিকে নিয়ে গেল।
এতক্ষণ যূথী ঘুমের কারণে চোখে অন্ধকার দেখলেও এখন চারপাশের গঞ্জনায় মাথা ধরে যাচ্ছে।
যূথী চেঁচিয়ে বলল,
“—এভাবে টেনে নিয়ে যাচ্ছো কেনো তোমরা?”
নীলিমা ফিসফিসিয়ে বলে উঠল,
“—মাহির ভাইয়ার রুমের দরজার সামনে দাঁড়াতে হবে।ওর থেকে আরো কিছু টাকা হাতিয়ে নেওয়ার সময় চলে এসেছে।চলো চলো।”
যূথী হাসবে না কাঁদবে বুঝতে পারছে না।এই তিনবোন তো আসলেই কূটনীতিবাজ।আজ বেচারা মাহির ভাইয়ার কি হাল হয় কে জানে।ওরা এত সহজে ভাইয়াকে ছাড়বে বলে মনে হয় না।
কিছুক্ষণ পর কয়েকজন মহিলা কারিমাকে মাহিরের রুমে বসিয়ে দিয়ে গেল।রুম আগে থেকেই ফুল মোমবাতি দিয়ে সাজানো।
মেয়েদের গ্রুপটা পাহারাদারের মত রুমের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। যূথী বারবার বলছে,
—“তোমরা যে কি করছো! আগে আমরা নতুন বউয়ের সাথে কথা বলে আসি চলো।পরে না হয় এসব করা যাবে।”
“—নো নো যূথী।আগে টাকা তারপর সব।আর ভাবীর সাথে আমরা অনেক কথা বলেছি।তুমি না হয় কাল পরিচিত হবে।আমরা তো প্ল্যান করে ফেলেছি মাহির ভাইয়া থেকে এখন যে টাকাটা আদায় করব সেটা দিয়ে সব বোনেরা মিলে একটা পার্টি অ্যারেঞ্জ করা যাবে।”(মনীষা)
তখনই বিদীষাকে দেখা গেল দৌড়ে সিড়ি দিয়ে উপরে আসছে।।হাঁপাতে হাঁপাতে বলল,
“—গাইজ! সাবধান হও।মাহির ভাইয়া ইজ কামিং।”
দূর থেকে কূটনী বোনগুলোকে দেখে মাহির যা বুঝার বুঝে নিয়েছে।তাঁর খুব হাসি পাচ্ছে। এই মেয়েগুলো যে কি! বিয়ের শপিংয়ের জন্য অলরেডি তাঁর একটা কার্ড শেষ করে ফেলেছে।এখন আবার টাকা নেওয়ার ধান্দায় ওঁত পেতে আছে।অবশ্য এরাই হৈচৈ করে বাড়িটাকে মাথায় করে রাখে।প্রত্যেকটা অনুষ্ঠানে ওরা নেচে গেয়ে আনন্দ দ্বিগুণ বাড়িয়ে দেয়।
চেহারায় যথাসম্ভব রাগী ভাব এনে মাহির ওদের সামনে গিয়ে দাঁড়াল।
“—কিরে এরকম ভিক্ষুকের মত দাঁড়িয়ে আছিস কেন?দরজা থেকে সরে দাঁড়া।ভিক্ষুকদের জায়গা এটা নয়।রাস্তায় চলে যা।”
মাহিরের কথা শুনে চারজনের চোখ বড় বড় হয়ে গেল।যূথী মনীষাদের থেকে কিছুটা দূরত্ব বজায় রেখে বলল,
“—আমি ভিক্ষুক না মাহির ভাইয়া।দেখো আমি ওদের দলে নেই।”
“—আমি সেটা জানি যূথী।তুমি আমার পেছনে এসে দাঁড়াও।এদের তিনোটাকে আমি দেখছি।”
মনীষা তেড়ে এসে বলল,
“—ভিক্ষুক বলো আর যা-ই বলো।আগে টাকা দাও তারপর এই রুমে ঢুকতে পারবে।”
“—একটা টাকাও দিব না আমি।কি করবি হ্যাঁ?”
মনীষার চেঁচানো কন্ঠ,
—“আমরাও দেখি তুমি কি করে রুমে ঢুকো।”
ছোটখাটো একটা যুদ্ধ লেগে গেল।যূথী এক কোনায় দাঁড়িয়ে ওদের তর্ক শুনে যাচ্ছে। কেউ কারো থেকে কম না।মাহির ভাইয়া একটা বলে তো তিনবোন আরো তিনটা বলে তাঁকে থামিয়ে দেয়।
হঠাৎই,
“—-কি হচ্ছে এখানে?”
ভারী গলার আওয়াজ শুনে সবাই পিছনে তাকাল।ভ্রু কুচকে নিশান দাঁড়িয়ে আছে।চোখগুলো ফোলা ফোলা।দেখেই বুঝা যাচ্ছে ঘুম থেকে উঠে এসেছে।মনীষা,বিদীষা, নীলিমা এতক্ষণ রণচণ্ডী রূপে যুদ্ধ করলেও নিশানকে দেখে একদম ভেজা বেড়াল হয়ে গেল।আর এদিকে মাহিরের মুখে তো অবর্ণনীয় হাসি ঝুলছে।
নীলিমা ভীত গলায় বলল,
“—ভা…ভাইয়া! তুমি এখানে? তোমার না জ্বর?”
নিশান দাঁত কটমট করে ওদের দিকে তাকিয়ে আছে।তাঁর মন চাইছে সবগুলোকে আছাড় মেড়ে সিড়ি থেকে ফেলে দেয়।
“—থাপড়িয়ে দাঁত ফেলে দিব তোদের। এখানে কি নাটক শুরু করেছিস?তোদের চিৎকার শুনে ঘুম থেকে উঠে এখানে আসতে হয়েছে আমার।এক মিনিট সময় দিলাম।এরমধ্যে জায়গাটা ফাঁকা চাই।কুইক!
মনীষা,বিদীষা,নীলিমা কোনোদিকে না তাকিয়ে যূথীকে ফেলেই দৌড়ে চলে গেল।মাহির দাঁত কেলিয়ে বলল,
“—দ্যাটস্ হোয়াই আই লাভ ইউ বিগ ব্রো।কূটনী গুলো আমাকে যেভাবে আক্রমণ করেছিল।তুমি না আসলে আমার দফা রফা হয়ে যেত।গুডনাইট এভরিবডি।”
মাহির দরজা বন্ধ করার পর যূথী আড়চোখে তাকিয়ে দেখে নিশান এগিয়ে আসছে।সটান হয়ে দাঁড়িয়ে গেল সে।
“—রাত কয়টা বাজে দেখেছো?এখনো ঘুরঘুর করছো কেনো?”
“—যাচ্ছি তো।”
যূথী কিছুটা এগিয়ে গিয়ে আবার পেছনে তাকাল।নিশান একইভাবে তাঁর দিকে তাকিয়ে।ঘাড় ফিরিয়ে নিল যূথী।এমন কঠিন মানব সে আর দুটো দেখেনি।মেয়েগুলো একটু আনন্দ করতে চেয়েছিল সেখানেও এসে গেছে বাগড়া দিতে।নিজে তো বিয়ে করবে না।এখন ওরা তো মাহির ভাইয়ার বিয়েতেই যা মজা করার করবে তাই না! কিন্তু না এই আজব লোকটার সেটাও সহ্য হবে না।মনে মনে কথাগুলো বলে মুখ ভ্যাংচালো যূথী।
________________
মাহির এবং কারিমার রিসিপশন উপলক্ষে বাড়ি সেজে উঠেছে খুব জাঁকজমক ভাবে।সন্ধ্যা হতেই অতিথিদের আগমন শুরু হয়ে গেছে।সাউন্ড বক্সে হালকা আওয়াজে একের পর এক রোমান্টিক গান বেজেই চলেছে যা পরিবেশটাকে আরো মাতিয়ে তুলছে।
ড্রয়িংরুমের একপাশে মনীষাদের সাথে দাঁড়িয়ে গল্প করছে যূথী।ওদের বিপরীত পাশে একটা চেয়ারে বসে নিশান পলকহীন চোখে যূথীকে দেখছে।ব্যপারটা লক্ষ্য করার পর থেকেই যূথীর ছটফটানি যেন বেড়ে গেছে ।তাঁর মন চাইছে নিশানকে গিয়ে কড়া করে দুইটা কথা শুনিয়ে দেয়।এভাবে কেউ কারো দিকে তাকিয়ে থাকার মানে কি?কিন্তু আফসোস সে তো ওই লোকের চোখের দিকেই ভালোভাবে তাকাতে পারে না তাহলে কথা শুনাবে কিভাবে।
মেইন ডোরের দিকে নজর দিতেই যূথীর চোখমুখ খুশিতে উজ্জ্বল হয়ে উঠল।লতিফা চাচী এসেছে।যূথী দৌড়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরল। সেই যে গ্রাম থেকে এসেছে এরপর আর লতিফা চাচীকে দেখেনি সে।
“—চাচী তুমি বিয়েতে কেনো আসলে না?”
লতিফা বেগম যূথীর মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন,
“—তোর চাচাকে একা ফেলে কিভাবে আসি বল?বড় আপা তো রেগে আছে আমার উপর।তারজন্যই আজকে আসা। কাল সকালেই আবার ফিরে যাব।তোর এখানে থাকতে কেমন লাগছে বলতো?”
যূথী তৃপ্তির সহিত উত্তর দিল,
“—অনেক ভালো আছি চাচী।এ বাড়ির মানুষ গুলো এত ভালো! ওদের কাছের কেউ না হয়েও সবাই মেয়ের মত আপন করে নিয়েছে আমাকে।”
স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেন লতিফা বেগম।আজ এখানে আসার আরো একটা উদ্দেশ্য আছে তাঁর।সেটা নিয়েই বড় আপার সাথে কথা বলবেন।
________________
“—যূথীর জন্য একটা ভালো ছেলে পেয়েছি আপা।ঢাকাতেই নাকি থাকে।আমি ঠিকানা নিয়ে এসেছি।”
করিডোর দিয়ে যাওয়ার সময় এমন একটা অপ্রত্যাশিত কথা শুনে থেমে গেল নিশান।অভ্যাসমত রাগটা আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে।
দরজার সামনে যেতেই দেখল তাঁর মা এবং খালামণি সোফায় বসে আছে।একটু আগের কথাটা তাহলে খালামণিই বলেছে।
দুইবোন নিশানকে এখনো খেয়াল করেনি।
“—আপা তুমি ওই ছেলেটার সাথে যূথীর দেখা করার ব্যবস্থা করে দাও।”
নিশানের হাতের মুঠো শক্ত হয়ে আসছে। তাঁর সামনে কেউ যূথীর বিয়ের ব্যপারে কথা বলছে এটা সে কোনোভাবেই মানতে পারছে না।যূথী শুধু তাঁর।এই মেয়েটাই তাঁর বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ।
“—স্টপ খালামণি! ওখানেই থেমে যাও।এই ব্যপারটা নিয়ে যেন আর কোনো কথা না হয়।”
নিশানের এমন গর্জন শুনে চমকে উঠল দুইবোন।নীলুফা চৌধুরীর মুখে ভয়ের ছায়া দেখা যাচ্ছে। তাঁর ছেলে যদি লতিফার বলা কথাগুলো শুনে থাকে তাহলে তো তুফান বইয়ে দেবে।
তিনি ধমকের সুরে বললেন,
“—এটা কেমন ব্যবহার নিশান।কথাবার্তা কি শান্তভাবে বলা যায় না?”
“—যেখানে যূথীর বিয়ে নিয়ে কথা হচ্ছে সেখানে আমি কিভাবে শান্ত থাকব মা? তুমি থাকতেও খালামণি কিভাবে এসব নিয়ে আলোচনা করতে পারে?”
লতিফা বেগম ঘটনার অর্থ কিছুই বুঝতে পারছেন না।নিশান কেনো হঠাৎ এভাবে রেগে উঠল?
“—বড় আপা আমার মাথায় তো কিছুই ঢুকছে না।আর নিশান তুই এরকম চটে গেলি কেনো বাবা?”
নীলুফা চৌধুরী লতিফা বেগমকে শান্ত থাকার ইশারা করে নিশানকে বললেন,
“—তোর খালামণি এখনো পুরো ঘটনা জানেন না।আমি এখনই সব খুলে বলতাম ওকে।তাঁর আগেই তুই এসে এমন হুমকি দেওয়া শুরু করলি।এখন যা এই রুম থেকে।আমি সব সামলে নেব।”
নিশান চলে যেতেই লতিফা বেগম উদগ্রীব হয়ে জিজ্ঞেস করলেন,
“—কিসের ঘটনার কথা বলছিলে আপা?”
“—নিশান যূথীকে ভালোবাসে।বিয়ে করতে চায় ওকে।তার জন্যই তোর কথা শুনে এভাবে রেগে গেছিল। ”
লতিফা বেগম যেন আকাশ থেকে পড়লেন।কথাটা হজম করতে তাঁর বেশ সময় লাগছে।
“—কি বলছো আপা? এটা তো খুবই ভালো খবর! যূথীও কি রাজি আছে?”
মুখ গম্ভীর করে নীলুফা চৌধুরী বললেন,
“—যূথী এখনো এই ব্যপারে অবগত না।আমিও চাইছি না সে এই মুহূর্তে এটা নিয়ে কোনো প্রকার চাপে থাকুক।আর বাড়ির লোকও তো কিছু সমস্যা তৈরি করবে এখানে।বিশেষ করে বিথী।বিয়ে টিয়ের ঝামেলা শেষ হোক তারপর ধীরে সুস্থে জানানো যাবে।”
“—কিন্তু আপা।নিশানের আর যূথীর বয়সের পার্থক্যটা অনেক বেশি। এদিকটা নিয়ে ভেবে দেখেছো?”
নীলুফা চৌধুরী মুচকি হেসে বলে উঠলেন,
“—ভালবাসার কাছে বয়স হার মেনে যায় জানিস তো!যূথীকে বড্ড ভালোবাসে আমার ছেলেটা।নিশানকে তো চিনিস। একরোখা ধরনের স্বভাব।এই মানুষ গুলো যখন কাউকে ভালোবাসে তখন জান দিয়েই ভালোবাসে।চিন্তা করিস না।দেখবি সব ঠিকঠাকই হবে।”
বড় আপার কথায় ভরসা পেলেন লতিফা বেগম। যতই ঝামেলা হোক বড় আপা যেহেতু রাজি আছেন তাহলে আর কোনো চিন্তার কারণ নেই।
* একটা টেবিলে গোল হয়ে বসে আছে যূথী এবং তিনবোন। মোবাইলে সেলফি তুলার ক্লিকের ফটফট আওয়াজে যূথীর কান ঝালাপালা হয়ে যাচ্ছে। ওরা যে কত ছবি তুলতে পারে!সুন্দরী মানুষরা মনে হয় এমনি হয়।নিজেদের সৌন্দর্যটাকে তাঁরা উপভোগ করতে চায় বেশি বেশি।
হঠাৎই সবার মনযোগ আকর্ষণ করল কালো শার্ট পরা গোবেচারা ধরনের একটা ছেলে।যে এই মুহূর্তে ওদের সামনেই দাঁড়িয়ে আছে।
“—আপনারা বুঝি নিশান ভাইয়ার বোন?”
ছেলেটার প্রশ্ন শুনে মুখ চাওয়াচাওয়ি করল ওরা।মনীষা জিজ্ঞেস করল,
“—আপনি কে?”
“—আমি কনে পক্ষেরই একজন।কই উত্তর দিলেন না তো! আপনারা নিশান ভাইয়ার বোন? ”
বিনীত ভঙ্গিতে ছেলেটা প্রশ্ন করল।
মনীষা সন্দেহর চোখে বলল,
“—কনেপক্ষের হলে নিশান ভাইয়াকে কিভাবে চিনেন? ভাইয়া তো বিয়েতে যায় নি!তাহলে আপনার তো এভাবে জিজ্ঞেস করার কথা যে আমরা মাহির ভাইয়ার বোন কিনা!
থতমত খেয়ে গেল ছেলেটা।বোধহয় এরকম কথাটা আশা করেনি।চারজন মেয়ের কৌতূহলপূর্ণ দৃষ্টি যেন তাঁর অস্বস্তি আরো বাড়িয়ে তুলল।
চলবে………