? স্বপ্নের প্রেয়সী ?
Part – 43
_____________________________
সকাল 10 টা বাজে , আমরা সবাই ফারহান ভাইয়া দের ড্রয়িং রুমে বসে আছি।
ফাহিম ভাইয়া একটু আগেই এসেছেন, সবার সাথে কুশল বিনিময় করে নিলেন।
ফরহাদ চাচ্চু সহ বড় রা ফাহিম ভাইয়া কে বেশ কিছু প্রশ্ন করে নিলেন।
তারপর সকলে সিদ্ধান্ত নিলেন ফাহিম ভাইয়ার সাথে ই রিমির বিয়ে টা হচ্ছে।
সবাই ফাহিম ভাইয়া কে বেশ পছন্দ করেছেন।
রিমি লজ্জায় আর আনন্দে লাল নীল হচ্ছে ।
ফরহাদ চাচ্চু ফাহিম ভাইয়া কে বললেন
– ফাহিম তোমার সম্পর্কে আমরা সব ই জানি।
আমাদের কোনো আপত্তি নেই, তুমি যথেষ্ট যোগ্য আমার মেয়ের জন্য।
আমার মেয়ের ভালোবাসা সব কিছুর আগে।
কিন্তু আমাদের সকলের সিদ্ধান্ত তুমি আমাদের সাথেই থাকবে।
আর হ্যাঁ অবশ্যই সেটা এই বাড়ির ছেলে হিসেবে , জামাই হিসেবে নয়।
এই বিষয়ে তোমার কোনো দ্বিমত মানছি না আমরা।
ফাহিম ভাইয়া আর কি বলবেন।
তিনি হয়তো এতো ভালোবাসা আশা করেন নি।
চাচ্চু ফাহিম ভাইয়া কে জড়িয়ে বললেন
– আজ থেকে তুই আমার আরেক ছেলে।
কখনো শশুর মনে করবি না, বাবা মনে করবি।
ফারহানদের যেমন আদর , শাসন করি ঠিক তেমনি তোকে ও আদর, শাসন করবো।
সবাই মুগ্ধ ওনার কথাতে , আসলেই এই পরিবারের সবাই এতো ভালো কেন ?
অবশেষে ঠিক হলো আজ থেকেই ফাহিম ভাইয়া এখানেই থাকবেন।
ওনার জব টা ছেড়ে দিয়ে ফারহান ভাইয়াদের সাথে পারিবারিক বিজনেস এ যোগ দিবেন।
সবাই বেশ আনন্দিত হলেন।
তারপর একসাথে সবাই লান্স সেড়ে নিলাম।
______________________
আজকে আমরা ফারহান ভাইয়াদের বাসায় ই থাকছি অবশ্য কাল ও থাকবো।
কারন কালকে সন্ধ্যা তে বিশাল বড়ো করে গেট টুগেদার আয়োজন করা হয়েছে।
ফাহিম ভাইয়া স্পেশাল , বিজনেস এ জয়েন হবেন ওনি
, সব কিছু মিলিয়ে ই এই আয়োজন।
লান্স শেষ করে রুমে এসে শুয়েছিলাম, আর ফোনে স্কল করছিলাম।
হঠাৎ করে রিমি এসে আমার পাশে হাত পা মেলে শুয়ে পড়ল।
রিমির দিকে তাকাতেই দেখলাম রিমির মুখে অজ্রস খুশিরা ঝলমল করছে।
আমি একটু সন্দিহান চোখে তাকিয়ে বললাম
– কি ব্যাপার এতো খুশি খুশি লাগছে কেন ?
রিমি আমাকে এক হাতে জড়িয়ে বলল
– আরে কি বলিস খুশি লাগবে না।
আমি তো নিজেকে বিচ্ছেদের জন্য তৈরি করছিলাম ।
কিন্তু সব টা এতো সুন্দর হবে কখনো ভাবতে ও পারে নি।
আমি রিমি কে জড়িয়ে বললাম
– তো ম্যাডাম জি এই খুশিতে ট্রিট হবে নাকি ?
রিমি ব্রু কুঁচকে বলল
– তুই দিবি আমায় ট্রিট। আমি কেন দিবো ?
আমি চোখ নাচিয়ে বললাম
– কোন খুশিতে?
রিমি বাঁকা হেসে বলল
– এহহহ আমার ভাইয়ের সাথে যে প্রেম করে বেড়াচ্ছো সেই খুশিতে।
আমি মুখ বাঁকিয়ে বললাম
– তোর ভাই ?
কে তোর ভাই , আমি তো চিনি না তাকে ?
আর কারো সাথে প্রেম করতে আমার বয়েই গেছে।
আর যাই হোক পৃথিবীর অষ্টম আশ্চর্য তোর ঐ ভাই ফারহানের সাথেথথথথথথ
আর কিছু বলতে পারলাম না।
তার কারন ডোরে পিঠ ঠেকিয়ে বুকে হাত গুঁজে দাড়িয়ে খুব মনোযোগ দিয়ে ফারহান ভাইয়া আমার কথা শুনছিলেন।
ওনাকে দেখেই শুকনো ঢোক গিলে নিলাম।
আমার এই বাজে অভ্যাস টা আর কখনো কি যাবে না।
কেন যে আশে পাশে না তাকিয়ে বলা শুরু করি।
উফফফ
রিমি আমাকে রুমে ফেলেই দিলো দৌড়।
আমি রিমির পেছন যেতে নিয়ে ও যেতে পারলাম না কারন ফারহান ভাইয়া আমার হাত ধরে নিয়েছেন।
হেচকা টান মেরে রুমে এসে রুম লক করে দিলেন।
আমি তো ভয়ে শেষ , আজ এই লোকটা আমায় ঠাপ্পর ই লাগিয়ে দিবেন।
ফারহান ভাইয়া আমার দিকে তাকিয়ে বাঁকা হাসলেন।
তারপর এক পা এক পা করে এগোতে লাগলেন।
আমি পিছিয়ে যেতে নিয়ে বেডের সাথে ধাক্কা খেয়ে সোজা বেডের উপরে।
ফারহান ভাইয়া ও বেডের উপরে এসে আমায় আবদ্ধ করে নিলেন।
তারপর বলা শুরু করলেন
– কি যেন বলছিলি আমার সাথে প্রেম করবি না।
আচ্ছা তো এখন কি হবে তোর,
আমি শুকনো ঢোক গিলে বললাম
– দেখুন আমি তো মজা করছিলাম।
ফারহান ভাইয়া বাকা হেসে বললেন
– কিন্তু আমি তো মজা করছি নাহ ।
আমি তো সিরিয়াস হয়ে গেছি।
এখন তো আমার প্রেম প্রেম পাচ্ছে।
কিছু ভুল করে ফেলি ?
ফারহান ভাইয়ার কথায় আমি ঢোক গিললাম।
তারপর বললাম
– দেখুন আমি সত্যি ই মজা করেছি।
ফারহান ভাইয়া আমার দিকে তাকিয়ে বললেন
– এখন তো কিছু করার নেই বাবু।
এখন তো ভুল কিছু হতেই হবেই।
এই বলেই আমার দিকে আগাতে লাগলেন।
আর আমি বাচ্চাদের মতো ফ্যাচ ফ্যাচ করে কেঁদে কেঁদে বলতে লাগলাম
– আমি মজা করেছি। আপনি কেন বিশ্বাস করছেন না।
ফারহান ভাইয়া আমার পাশে বসে হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাচ্ছে।
আমি চোখ মেলে তাকাতেই দেখি ওনার হাসির গতি বেড়েই যাচ্ছে।
আমি মুখ গোমড়া করে বললাম
– হাসছেন কেন ?
ফারহান ভাইয়া আমায় এক হাতে জড়িয়ে বললেন
– তোর এখনো মনে হয় আমি ভুল কিছু করে ফেলতাম।
সেই পিচ্ছি কাল থেকে নিজেকে সামলে রেখেছি আর এখন পারবো না ?
হুমমম
এই বলেই আবার হাসতে লাগলেন।
আমি আহাম্মকের মতো বসে রইলাম, আর মনে মনে নিজেকে গালি দিতে লাগলাম।
আমি এতো বোকা কেনন ?
উফফফ আমায় নিয়েই আমি বিপদে আছি।
আজকাল যখন তখন ফারহান ভাইয়া বোকা বানিয়ে দিচ্ছেন।
ছিইই ফারাবি ছিইই তুই না খুব চালাক ছিলি ?
তাহলে এই হনুমানের সামনে কেন বোকা হয়ে যাস কেন ?
যাহ আর ভালো লাগে না ।
তোর কপালে বহুত মসিবত আছে।
_______________________
সন্ধ্যা বেলায় কিচেনে আমি আর রিমি মিলে চিকেন ললিপপ বানাচ্ছিলাম।
ঠিক তখনি উদয় হলেন ফাহিম ভাইয়া।
রান্না ঘরের সামনে ঘুর ঘুর করছিলেন আর চোখে চোখে দুজন কথা বলছিলেন।
আমার সাথে চোখাচোখি হওয়াতে ই ফাহিম ভাইয়া মেকি হাসি দিলেন।
আমি মুচকি হেসে বললাম
– ভাইয়া আমার সামনে লজ্জা পাওয়ার কি আছে।
আপনি যাকে নিতে এসেছেন, তাকে নিয়ে যেতে পারেন।
ফাহিম ভাইয়া বিশ্ব জয় করা হাসি দিয়ে বললেন
– কিন্তু তোমার বান্ধবী তো আসতে চাইছে না।
আমি রিমির দিকে তাকাতেই রিমি বলল
– এখন তোর সাথে হেল্প করতে হবে, এখন যেতে পারবো না।
আমি রিমির দিকে চোখ রাঙিয়ে বললাম
– আমার ভাইয়া অপেক্ষা করছে আর তুই বেচারা কে পাত্তা দিচ্ছিস না ।
ফারহান ভাইয়ার মতো ভাব নিয়ে বললাম
– দিস ইজ নট ফেয়ার।
আমার কথার ভঙ্গিতে ফাহিম ভাইয়া আর রিমি দুজন ই হেসে উঠলো।
আমি রিমি কে হাত মুছিয়ে দিয়ে বললাম
– তুই যাহহ। আমি পারবো , এই টুকু কাজ ই তো বাকি আছে।
রিমি আমার দিকে চোখ ছোট ছোট করে বলল
– সিউর তো ?
আমি মিষ্টি করে হাসি দিয়ে বললাম
– হুমম 100%।
রিমি আমায় জড়িয়ে ধরে, তারপর ফাহিম ভাইয়ার সাথে চলে গেল।
রোমা আন্টি এসে কয়েকবার হেল্প করতে চাইলো , কিন্তু আমি মানতে নারাজ।
তাই আন্টি চলে গেল।
বিপদ ঘটলো তখন , যখন মিল্ক সেক বানানোর জন্য কিছুতেই তাক থেকে আইসিং সুগার নামাতে পারছিলাম না।
বেশ কিছুক্ষণ চেষ্টা করে ও কাজের কাজ কিচ্ছু হলো না।
হঠাৎ করে ঝড়ের গতিতে এসে ফারহান ভাইয়া আমায় উঁচু করে নিলেন।
আমি ওনার দিকে হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে আছি।
এই মূহুর্তে আমি নিজেকে স্টার জলসার কোনো সিরিয়ালের নাইকা হিসেবে কল্পনা করছি।
যারা হাতের কাছে চেয়ার থাকতে ও ঢং করে লাফাতে থাকে।
আর হিরো এসে সোজা কোলে তুলে উঁচু করে নেয়।
কি ভয়ঙ্কর বিষয় তার মানে কি একটু পর সিরিয়ালের মতো আমি ফারহান ভাইয়ার উপরে পড়ে যাবো।
ওও মাই গড, আমি ওনার উপর পড়তে চাচ্ছি না।
তাই জোড়ে জোড়ে ফারহান ভাইয়া কে আমায় নামিয়ে দেওয়ার জন্য ধাক্কা তে লাগলাম।
ফারহান ভাইয়া বিরক্তি নিয়ে বললেন
– এমন লাফাচ্ছিল কেন?
না লাফিয়ে তাক থেকে বয়াম টা নামিয়ে নিলেই তো হয়?
তাহলে ই তো আমি তোকে নামিয়ে দিবো।
ফারহান ভাইয়ার কথা তে জ্ঞান আসলো।
আসলেই তো সিরিয়ালের কথা ভাবতে ভাবতে নিজেই তো সিরিয়াল করে ফেলছিলাম।
তাড়াতাড়ি বয়াম টা নামিয়ে নিলাম ।
ফারহান ভাইয়া আমাকে নামাতেই যেন আমি হাঁফ ছেড়ে বাচলাম।
বড় বড় কয়েকটা শ্বাস ও নিলাম।
ফারহান ভাইয়া আমার এমন অবস্থা দেখে ব্রু কুঁচকে তাকালেন।
আমি ওনার দিকে তাকিয়ে একটা ভ্যাবলা হাসি দিয়ে বললাম
– চলুন সব রেডি , এখন যাওয়া যাক ?
ফারহান ভাইয়া কোনো উত্তর না দিয়ে আমার কাছে আসতে লাগলেন।
ফারহান ভাইয়া যতো এগোচ্ছেন আমি ততো ভয় পেয়ে পিছিয়ে যাচ্ছি।
আমি জানি ওনি কিছুই করবেন না , কিন্তু অভ্যাস টা যে রয়েই গেছে।
তাই তো ওনাকে জমের মতোই ভয় পাই, তা ও অকারনেই।
ফারহান ভাইয়া আমার একদম কাছে এসে পড়েছেন।
কিন্তু আমাকে ছাপিয়ে
ফারহান ভাইয়া পেছন থেকে কোক এর বোতল নিয়ে নিলেন ।
আমি ঐ খানে ই ঠায় দাঁড়িয়ে রইলাম।এটা কি হলো ?
কতোটুকু ঠিক এটা , ওনি কি এটা ইচ্ছে করে করলেন, নাকি আমি ই ভুল বুঝলাম ।
ফারহান ভাইয়া আমাকে ভাবলীলাস হীন দেখে মুখের সামনে আঙুল দিয়ে তুরি বাজালেন।
আমি চমকে গিয়ে বললাম
– হুমম ।
ফারহান ভাইয়া মুচকি হেসে বললেন
– ম্যাডাম আপনার মাথার বদ চিন্তা গুলো হয়ে গেলে , এবার যাওয়া যাক ?
আমি ব্রু কুচকালেই ফারহান ভাইয়া বললেন
– আরে মজা করছিলাম , এবার চল।
সম্মতি জানিয়ে ফারহান ভাইয়ার পেছন পেছন যেতে লাগলাম ।
ছাদে যেতেই দেখলাম এরা সবাই সব কিছু কমপ্লিট করে ফেলেছেন।
আজকে আড্ডা হবে, জামান ভাইয়ারা ও আছেন।
একে একে সবাই পজিশন নিয়ে বসলাম।
সবাই বেশ ফুরফুরে মুডেই আছেন।
পরিবেশ টা ও বেশ সুন্দর, সবাই হালকা খাওয়া দাওয়া করলাম।
তারপর ই শুরু হল নানান রকমের গেইম।
ছেলে v মেয়ে
আমরা গেইম হারতে কিছুতেই রাজি নই।
অবশেষে আমাদের কাছে ফারহান ভাইয়া রা হার মেনে নিলেন।
তারপর ই শুরু হলো গল্প ফারহান ভাইয়া গল্পের এক পর্যায়ে বললেন
– এখানে একজন ই দেবদাস আছেন।
ফারহান ভাইয়ার কথায় সবাই ব্রু কুঁচকে তাকালাম।
ফারহান ভাইয়া আপসোস এর সুরে বলা শুরু করলেন
– সে নিজে ও দেবদাস হয়ে আছে ।
আর আমাদের কে দেবদাসের সঙ্গি বানাচ্ছে, কি জ্বালা।
হায়রে কপাল
রাফাজ ভাইয়া বুঝতে পেরে বললেন
– দেবদাস করে রেখেছি বলেই না লুকিয়ে লুকিয়ে প্রেমের মজা নিচ্ছিস।
ফারহান ভাইয়া বাঁকা হেসে বললেন
– লুকিয়ে লুকিয়ে প্রেম করে কি লাভ, কোথায় ভাবলাম সবাই কে জ্বালিয়ে প্রেম করবো কিন্তু তুই তো দিচ্ছিস ই না।
ফারহান ভাইয়া দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললেন
– হারামি তুই যদি আরো ও দুটো বছর আগে বিয়ে করতি, তাহলে আমি তখনি চলে আসতে পারতাম।
আর এতো কষ্ট ও করতে হতো না।
আর এখনো কষ্ট করতে হচ্ছে ।
ফারহান ভাইয়ার কথায় রাফাজ ভাইয়া বললেন
– দেখ ভাই তোর মতো এতো ধৈর্য আমার নেই যে, একটা বাচ্চা মেয়ে কে কোলে পিঠে করে মানুষ করবো।
ফারহান ভাইয়া একটু ঢং করে বললেন
– আহা যা বলেছিস ভাই।
এতো বছর তো নিরামিষ হয়েই আছি।
বিয়ে করে ও এই বাচ্চা কে মানুষ করার জন্য কতো দিন উপস থাকতে হয় কে জানে।
ফারহান ভাইয়ার এই কথায় সবাই উচ্চ শব্দে হেসে উঠলেন।
আর আমি আহাম্মক বনে গেলাম, যখন বিষয় টা বুঝতে পারলাম তখন লজ্জায় কুকরে গেলাম।
এতে ও ওনার হলো না ওনি আমায় আর ও লজ্জায় ফেলে দিলেন।
ফারহান ভাইয়া বলা শুরু করলেন
– দেখ সবাই ওনি এই কথাতেই লজ্জা পাচ্ছে।
তাহলে পরবর্তী তে কি হবে ?
কি আজববব এই লোকটার মুখে কি কিছু বাঁধে না।
রাফাজ ভাইয়া হালকা কেশে বললেন
– ভাই তুই থাম। আসলেই তুই নাম্বার ওয়ান বজ্জাত, শুধু শুধু মেয়েটাকে লজ্জা দিচ্ছিস।
ফারহান ভাইয়া কিছু বলতে গিয়ে থেমে গেলেন।
কারন আমি এখন প্রচন্ড অস্বস্তি তে পড়ে গেছি।
ফারহান ভাইয়া বললেন
– আচ্ছা ছাড় এটা।
ভাইয়া বিয়ে টা করসিছ কবে?
একটু তো আমাদের ছাড় দে।
রাফাজ ভাইয়া হেসে বললেন
– তনির রেজাল্ট দিয়ে নিক তারপর ।
ফারহান ভাইয়া হতাশ হয়ে বললেন
– আরে ভাইয়া তোর তনির রেজাল্ট দিয়ে দিবে সে আর যাই হোক ফেল করবে না।বিয়েটা করে নে নাহহহহ।
এক প্রকার সবাই জোড়াজোড়ি শুরু করে দিলেন।
রাফাজ ভাইয়া জাঁতাকলে পড়ে রাজি হয়ে গেলেন।
অবশেষে সবাই হৈ হুল্লর করতে করতে ঘুমাতে চলে গেলাম।
_______________________
সকাল বেলা রিমি আর আমি একে উপর কে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে আছি।
কালকে রাতে বেশ কিছুক্ষণ রুমে এসে গল্প করেছি যার দরুন দু বার ঘড়ির এলাম বাজলে ও ঘুমের এলাম বাজলো না।
হঠাৎ করে আমাদের উপর তরল জাতীয় কিছু পড়াতে হুরমুরিয়ে উঠলাম।
চোখ মেলে তাকাতেই দেখলাম দু জন ব্যক্তি দাড়িয়ে আছেন।
কি আজববব আমার চোখে এতই ঘুম যে আমি তাদের কে চিনতে পারছি না।
তাই কোলবালিশ এ মাথা ঠেকিয়ে বসে বসে আবার ঘুমাতে লাগলাম।
কিছুক্ষণ পর আবার তরল জাতীয় কিছু পড়তে চমকে উঠলাম।
আর এক চিৎকার দিয়ে উঠলাম, বেড থেকে উঠে লাফাতে গিয়ে পরলাম কারো বুকের উপর।
চোখ মেলে তাকাতেই দেখি ফারহান ভাইয়া এক দৃষ্টি তে চেয়ে আছেন।
ওনার দিকে চোখাচোখি হওয়াতে ই চোখ আপনা আপনি দৃষ্টি বদল করে নিল।
ইসসস কি লজ্জা, আশে পাশে তাকিয়ে দেখি রিমি আর ফাহিম ভাইয়া মুখ চেপে হাসছে।
কেমন ডা লাগে,
তাড়াতাড়ি ফারহান ভাইয়ার থেকে দূরে সরে আসলাম।
বেশ লজ্জা পাচ্ছিলাম, ফারহান ভাইয়া বললেন
– ঠাপ্পর না খেলে ঠিক হবি না নাহহ ?
কতো বার ডেকেছি , কিন্তু ওনাদের উঠার নাম ই নেই।
আমি ফারহান ভাইয়ার দিকে ইনোসেন্ট ফেস নিয়ে তাকিয়ে আছি।
পুরো ভিজে গেছি, এই ভাবে কেউ পানি ছুড়ে।
ফাহিম ভাইয়া বললেন
– ভাই আমি এই পেতনি কে নিয়ে যাচ্ছি, তুমি ফারাবি কে নিয়ে তাড়াতাড়ি আসো।
ফারহান ভাইয়া সম্মতি জানিয়ে বললেন
– হুমমম সেটাই ভালো , তোরা যা, আর সমস্ত কিছু রেডি করে রাখ।
আমরা আসছি
ফাহিম ভাইয়া রা চলে গেলে ফারহান ভাইয়া আমার দিকে এগিয়ে আসেন , কোমর জড়িয়ে ধরে বললেন
– যাহহহ তাড়াতাড়ি চেন্সজ করে নেয়।
না হলে ঠান্ডা লেগে যাবে।
আমি কোনো মতে নিজেকে ছাড়িয়ে এক দৌড়ে বাথরুমে চলে গেলাম।
ফ্রেস হয়ে এসে দেখি ফারহান ভাইয়া বেডে বসে ফোনে স্কল করছেন।
আমার দিকে একপলক তাকিয়ে আবার ফোন ঘাটতে ব্যস্ত।
এই লোকটা দিন রাত ভরে ফোন নিয়ে হানাহানি করে।
আর আমি ফোন ধরলেই , পড়তে বস, এতো কিসের ফোন।
আজববব তোর কি একাই ফোনে কাজ থাকবে , আর কারো থাকতে পারে না।
ফারহান ভাইয়া ফোন টা পকেটে এ পুরে বললেন
– এখন কি তুই চাচ্ছিস আমি তোকে রেডি করে দিবো ?
একটা বাঁকা হাসি দিয়ে আবার বললেন
– এতে আমার অবশ্য সমস্যা নেই।
বরং ভালোই হবে।
আমি শুকনা ঢোক গিলে বললাম
– নাহহ না আপনি যান। আমি পাঁচ মিনিটের মধ্যে চলে আসছি।
ফারহান ভাইয়া ব্রু কুঁচকে বললেন
– ঠিক তো ?
আমি মাথা ঝাঁকিয়ে বললাম
– হুমম একদম।
তারপর ফারহান ভাইয়া চলে গেলেন।
আর আমি তাড়াতাড়ি রেডি হতে ব্যস্ত হয়ে পড়লাম।
চলবে
ফাতেমা তুজ