স্যার_I_Love_You #শারমিন_আক্তার_বর্ষা (লেখিকা) #অন্তিম_পর্ব

1
665

#স্যার_I_Love_You
#শারমিন_আক্তার_বর্ষা (লেখিকা)
#অন্তিম_পর্ব
_______________
কিছুক্ষণ পর কল কেটে দিয়ে মিম ও মুন্নী রাগী গলায় বলল, ‘ তোর স্যার তো খুব চালাক রে। ’
আমি- কেন কি হইছে?
মুন্নী- আমরা কথা বলছি শুনে ফোন অন্য ছেলেদের কাছে দিয়ে দিছে আর জানিস কত ফাজিল ছেলে গুলো।
ওদের কথা শুনে হেসে দিলাম।
আব্রু- ফাইনালি।
রুবেল, নাঈম এক সাথে বলে উঠল, “ কি? ”
আব্রু- কি আবার ওর বিয়েটা ওর স্যারের সাথেই হচ্ছে।
আমি- হুম।
মিম- তুই খুশি তো?
আমি- হ্যাঁ অনেক।
মুন্নী- খুশি তো হবেই রে কষ্ট না করেই যে এত বড় বাচ্চার মা হয়ে গেছে।
মুন্নীর টিটকারি মারা কথা শুনে সব গুলো শব্দ করে হেসে দিলাম। ‘হাহাহা’
সবাই হলুদ দেওয়া বাদ দিয়ে আমাদের হাসি দেখছে।

পরেরদিন বর আসে সাথে বর যাত্রী আসে কাজী আসে আর সম্পূর্ণ বিয়ে হয়ে যায় সাথে বিদায় ও ফ্রিতে হয়।
বাসর ঘরে বসে আছি সাথে আমার মেয়ে ইতি
মা ইতি মেয়েও ইতি বাব্বাহ ভাবা যায়।

রাত সাড়ে ১০টা বাজে ইতি আমার পাশেই বসে আছে।
কিছুক্ষণ পর আমার শাশুড়ী মা ইতিকে নিতে আসে কিন্তু ইতি যাবে না বলে দেয় রাতে আমার সাথেই থাকবে জিদ ধরে।
শাশুড়ী মা- লক্ষী দিদি ভাই আজ চলো দিদার সাথে কাল থেকে থেকো তুমি তোমার আম্মুর সাথে।
ইতি- আজ থেকে থাকলে কি হবে?

এখন এই পিচ্চি মেয়ের প্রশ্নের উত্তর কে দেবে?
আমি- থাক না মা সমস্যা নেই। বলেই ইতিকে আমার কোলে শুয়ালাম ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিতেই ও ঘুমিয়ে যায়।
ইতি ঘুমানোর পর ওকে নিয়ে কেউ নদীতে ফেলে দিলেও ও টের পাবে না এমন ঘুম ওর। ঘুমাতেই শাশুড়ী মা ইতিকে কোলে করে নিয়ে যান।
আমি এখন রুমে একা কোনো কিছু নেই সময় পাস করার মতো তাই বসে বসে খাট কত গুলো ফুল আর কয়টা গোলাপ দিয়ে সাজানো আছে গুনতে লাগলাম। কোনো কিছু না করার থেকে এইটা করা অনেক বেটার।

বিছানা থেকে নেমে রুমের বড় আয়নার সামনে দাড়িয়ে দেখছি। কতই না ইচ্ছে ছিলো বউ সাজবো আর আজ আমার ইচ্ছা পূরণ হলো।
ভাবতে ভাবতে দরজা আটকানোর শব্দ পেলাম।
পেছনে ঘুরে তাকালাম।
স্যার- কি দেখছো আমার মিষ্টি বউ?
আমি- বউ আবার মিষ্টি হয় না কি?
স্যার- হয় তো, দেখাবো নাকি? (দুষ্ট হাসি দিয়ে বলল)
আমি- এই না আমি দেখতে চাই না।
দেখাবো বলেই শেরওয়ানি খুলতে লাগলো।
স্যার- আজই তো সঠিক দিন দেখানোর জন্য না বললে কি চলে?
আমি- হ্যাঁ হ্যাঁ চলে। আমাকে কষ্ট দিয়েছেন না বলে চলে গিয়েছিলেন তার জন্য শাস্তি পেতে হবে। ছয় বছর আপনার জন্য অপেক্ষা করেছি সো আপনি আমার জন্য ছয় মাস অপেক্ষা করবেন। ছয় মাস না হওয়া পর্যন্ত স্পর্শ করবেন না আমাকে।
স্যার- আচ্ছা অপেক্ষা তুমি একাই করেছো কষ্ট তুমি একাই পেয়েছো আমি পাইনি?
কথা বলছে আর এক পা দু পা করে আমার দিকে এগিয়ে আসছে আমিও পিছিয়ে যাচ্ছি।
আমি- এত কিছু জানি না ছোঁবেন না মানে ছোঁবেন না। বলেই অন্য দিকে দৌঁড় দিতে নিলে স্যার আমার হাত ধরে উনার দিকে টান মারে। আর আমিও গিয়ে পরি উনার উপরে। অসভ্য লোক খালি গায়ে দাঁড়িয়ে আছে লজ্জা ও করে না। একটা সেন্টু গেঞ্জি পরলে কি হতো।
লজ্জা লাগছে সোজা গিয়ে উনার লোমহীন বুকের মধ্যখানে আমার ঠোঁট জোড়া গিয়ে স্পর্শ করল।
মনে হলো আমি কিস করছি আর উনি ও তো তাই ভাববে। কিন্তু সত্যি বলছি আমি কিস করি নাই উনি যেভাবে টান দিছে ওভাবে পরা স্বাভাবিক।

স্যার- এই না তুমি বললে। ছয় মাস দূরে থাকতে আর নিজেই এসে আগে সোজা আমার বুকে কিস করলে। নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারোনি বুঝি?
কথা গুলো বলে একটা শয়তানি হাসি দিলো।
আমি- ইচ্ছা করছে আপনাকে?
স্যার- কি কিস করতে? এই তুমি এত লুচ্চি কেন?
আমি- আমি লুচ্চি না।
বলতে বলতে স্যার আমার সামনে এসে আমার কোমড়ে হাত দিলেন আর উনার লোমহীন বুকের সাথে জরিয়ে ধরেন। আমি নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করছি। স্যার আরও শক্ত করে জড়িয়ে ধরে মলিনকন্ঠে বললেন, “ অনেক কষ্ট পেয়েছি তোমার থেকে দূরে থেকে এই ছয় বছরে। আর এক মুহুর্ত ও তোমার থেকে দূরে থাকতে পারবো না। ”
বলেই উনার ঠোঁট জোড়া আমার ঠোঁট জোড়ার সাথে মিশিয়ে দিলেন।
আমাকে কিছু বলার সুযোগই দিলো না।

পরেরদিন সকাল ১১টা!
আমি আমার মেয়েকে গোসল করিয়ে রুমে নিয়ে আসি। আর ওকে ড্রেস পরাচ্ছি সাথে মা ও আছেন।
হঠাৎ স্যার রুমে এসে বললেন।
স্যার- ইতি শোনো!

আমি- জি স্যার?
আমাদের মেয়ে- জি আব্বু?
শাশুড়ি মা বললেন:- কোন ইতিকে ডাকছিস বাবা? (বলেই তিনি শব্দ করে হেসে দিলেন)

আমি আর আমার মেয়ে দু’জনেই দু’জনের মুখের দিকে তাকিয়ে আছি।
আমি- স্যার কাকে ডাকছেন?
স্যার- কাউকে না। বলেই অন্য দিকে মুখ ঘুরিয়ে নিলো।
মা- এখনো কি স্যারই বলবে বউমা?
আমি- হুম বলবো আরও বলবো স্যার I Love You

আমার কথা শুনে স্যার রুমের মধ্যে প্রবেশ করলেন।
আমাকে আমাদের মেয়ে ছোট্ট ইতি আর মা’কে জড়িয়ে ধরলেন। আমরাও জড়িয়ে ধরলাম উনাকে।
স্যার- আমি তোমাদের তিনজনকেই খুব বেশি ভালোবাসি।
ছোট্ট ইতি, শাশুড়ী মা- আমরাও তোমাকে ভালোবাসি।
আমি বললাম, “ আমিও আপনাকে আপনার থেকেও বেশি ভালোবাসি যেমন- স্যার_I_Love_You ”
স্যার মৃদু হেসে বললেন, “ I Love You Too ”

বলেই আমার কপালে একটা চুমু একে দিলেন।
আমাদের সংসার এখন পরিপূর্ণ ছোট্ট ইতি ওর মা পেয়েছে আমি আমার স্যারকে পেয়েছি। স্যার আমাকে পেয়েছে আর মা আমাদের সবাইকে পেয়েছে।
আমাদের সংসার খুব সুন্দর করে চলছে ইতি আমাদের সবার চোখের মনি।

আজ ছোট্ট ইতির জন্মদিন, ইতিকে জিজ্ঞেস করলাম কি গিফট চাও আম্মুর কাছ থেকে?
ছোট্ট ইতি বলল, “ আমি ওই ছোট্ট ভাইটাকে চাই যে তোমার পেটের মধ্যে আছে আমি ওকে অনেক আদর করবো খাইয়ে দেবো গোসল করিয়ে দেবো ঘুম পারাবো। সব আমিই করবো। ”

আমি ওর কথা শুনে হেঁসে দিলাম।
স্যার পেছন থেকে অস্ফুটস্বরে বলে উঠলেন, “ মানে? ”

শাশুড়ী মা শাওনের কাঁধে হাত রেখে বললেন, “ মানে তুমি আবারও বাবা হতে চলেছো আর আমি দিদা, আমাদের পরিবারে নতুন আরও একজন মেহমান আসছে। ”
স্যার অবাক হয় প্রশ্ন ছুঁড়েন- ‘ মা কি বললো ইতি এটা সত্যি? ‘
আমি- হুম সত্যি। লজ্জা পেয়ে মাথা নিচু করে ফেললাম।
স্যার এতটাই খুশি হয়েছেন এতগুলো গেস্টের সামনেই আমাকে জরিয়ে ধরলেন। সাথে আমাদের ছোট্ট মেয়ে টাকেও।
স্যার- মা এদিকে আসো। মা আমি বাবা হবো, মা আমাদের পরিবার সম্পূর্ণ হবে। বলেই ছোট্ট ইতিকে কোলে তুলে নেয়। আর আমাকে জরিয়ে ধরে কপালে চুমু দেয়।
আমিও আমার শাশুড়ী মা আর স্যারকে জরিয়ে ধরি।
“একটা কথা বলবো? ” আমি স্যারের মুখের দিকে তাকিয়ে বললাম।

স্যার- হুম বলো একটা কেনো দশটা বলো।
আমি- একটাই বলবো।
স্যার- আচ্ছা বলো কি বলবে।
আমি লজ্জা মাখা কন্ঠ বললাম, “ স্যার I Love You ”
স্যার কিছু বললেন না আমার দুই গালে হাত রেখে কপালে চুমু দিয়ে নিজের সাথে মিশিয়ে নেয়। শক্ত করে জরিয়ে ধরেন।
স্যারের ডান হাত নিয়ে আমি আমার পেটের উপর রাখি। স্যারের চোখ বেয়ে এক ফোঁটা অশ্রু কণা গড়িয়ে পরে।
স্যারের চোখ বেয়ে গড়িয়ে পরা পানি মুছে দিলাম এবার আমি স্যারকে শক্ত করে জরিয়ে ধরে কানের কাছে ফিসফিস করে বলি, “ কাঁদলে লাগে তোমায় আরও ভালো ” স্যার শব্দ করে হেসে উঠল সাথে আমিও।

______________The End_______________

অবশেষে শেষ করলাম জানি না কেমন হয়েছে? ঘটনা মূলক মন্তব্য করবেন! কেমন হয়েছে জানাতে ভুলবেন না। ধন্যবাদ, আসসালামু আলাইকুম।
”হ্যাপি রিডিং”

1 COMMENT

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here