#হটাৎ_বৃষ্টি|ছোট গল্প
#লেখনীঃ Gazi pingke Hossain
আষাঢ় মাসের শুরুর দিক কিন্তু আকাশের অবস্থা দেখে তা বুঝবার উপায় নেই মনে হচ্ছে যেন ভরা বর্ষা। কিছুক্ষন পর পর চারদিক অন্ধকার করে বৃষ্টি নামছে এই কদিন ঘন ঘন বৃষ্টি হচ্ছে। সন্ধ্যার আগ মুহুর্তে আকাশ কালো অন্ধকারে ঢাকা পড়ল।
কিছুক্ষনের মধ্যেই শুরু হল ঝুম বৃষ্টি সাথে ঝড়ো বাতাস। একেকবার বাতাসের ঝাপ্টা আসে, বাগানের লোহার দোলনা দুলে উঠে, কটকট শব্দ হয়। টিনের চালে বৃষ্টির শব্দ শুনতে বেশ লাগে। তবে শহরের বাড়ি-ঘরে এই ব্যবস্থা নেই ককংক্রিটের ভারী স্তুপের আঢ়ালে ঢাকা পড়ে বৃষ্টির রিনিঝিনি তাই বৃষ্টির শব্দ পাওয়া যায় না।
তবে মিয়া বাড়িতে হালকা বৃষ্টি হলেই রিনিঝিনি শব্দ ওঠে। মিয়া বাড়ি মানে আকাশদের গ্রামের বাড়ি আর মেঘলার নানা বাড়ি। সামনেই বড় ঈদ হওয়ায় সবাই মিলে আগেভাগেই গ্রামে এসেছিল ঈদ পালন করতে। কথা ছিল পিকনিক থেকে শুরু করে সকল প্রকার বিনোদনের ব্যবস্থা করা হবে কিন্তু তা আর হল কই উটকো বৃষ্টি সব আটকে দিয়েছে।
আকাশ নিজের ঘরে দাঁড়িয়ে আছে।
ঘরের সবকটিা জানালা খোলা। বাতাসে জানালার পর্দা উড়ছে। বৃষ্টির ছাট ঘরে ঢুকছে।
আকাশ ফোনের স্ক্রিন অফ করে পকেটে রেখে
শান্ত পায়ে বেলকণিতে গিয়ে দাঁড়াল।
বৃষ্টির পানি গায়ে এসে লাগছে। হিমবাহের কামড়ে গা ঠান্ডা হয়ে আসার যোগাড় কিন্তু আকাশকে দেখে মনেই হচ্ছে না বাইরের প্রকৃতির সঙ্গে তার কোনো যোগ আছে। মনে হচ্ছে বাইরের ঝড়-বৃষ্টির খবরই হয়তো সে জানে না। অথচ গাঁ আধভেজা হয়ে পড়েছে। আকাশ কোন বিষয়ে গভীর মগ্ন। খুব মনযোগ দিয়ে কোন একটা বিষয় নিয়ে ভাবছে।
হটাৎ বাতাসের ঝাঁপটায় হুশ ফিরল আকাশের। মনে হল তার পিছনে দাঁড়িয়ে কেউ গভীর চোখে দেখছে তাকে । কে হতে পারে? কারোরেই এখন তার ঘরে আসার কথা না তবুও সন্দেহ দূর করার জন্য পিছন ঘুরলো।
ঘাড় ঘুরিয়ে তাকাতেই ঘন পাঁপড়িতে ঢাকা শান্ত চোখ দুটিতে চোখ পড়ল। ঠান্ডায় গোলাপি ঠোঁট গুলো বারংবার কেঁপে উঠছে। আকাশ তাড়াতাড়ি চোখ সরিয়ে আবারো সামনের দোলনায় চোখ রাখল।তাতে দমে গেল না মেঘলা। এগিয়ে গিয়ে আকাশের গাঁ ঘেঁষে দাঁড়াল।
আকাশ শক্ত কন্ঠে বলল,
-“ঘরে যা মেঘলা। এখানে দাঁড়ালে ভিজে যাবি
জ্বর আসবে..
-“কফি খাবি? বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে গরম কফি? আমি ভাল এক্সপ্রেসো বানাতে পারি।
-“নাহ,কফি খাব না।
-“কোন এক উপন্যাসে পড়েছিলাম বাইরে ঝুম বৃষ্টি হচ্ছে। নায়িকা গরম এক মগ কফি নিয়ে বৃষ্টিতে ভিজতে-ভিজতে কফি খাচ্ছে। জানিস তো প্রায় বেশির ভাগ মেয়েই উপন্যাস পড়ার সময় নিজেকে নায়িকার স্থানে কল্পনা করে।
-“তুইও করেছিলি..?
-” হুম, ঠিক করেছিলাম— কোনো একদিন যদি ঝুম বৃষ্টি নামে, তাহলে বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে কফি খাব।
-“কিন্তু তুই নায়িকা নোস আর এই বৃষ্টিও উপন্যাসের বৃষ্টির মত শুভ্র নয়। গায়ে পড়লে গাঁ শিওরে উঠবে।ঠাণ্ডা লাগবে।
মেঘলা নির্বিকার ভঙ্গিতে বলল,
-“লাগুক না তাতে ক্ষতি কী..? নাহয় ২ টা নাপা এক্সাট্রা খেলাম কি আর হবে এমন?
-“তোর ঠান্ডার সমস্যা আছে
-“আমার সমস্যা আমি ভাবব তোকে ভাবতে কে বলেছে..?
-“তাহলে আর কী যা ভিজ…
-“রাত নাহলে একাই ভিজতে পারতাম কিন্তু এখন ভয় লাগছে। একা যাব কী করে?
মেঘলার কথা শেষ হওয়ার আগেই চারদিক অন্ধকার হয়ে ইলেকট্রিসিটি চলে গেল। গ্রামে এমনিতেই লোডসেডিং হয় তারউপড় বৃষ্টি হলে তো কথাই নেই। চারদিক অন্ধকারে ছেয়ে গেল মেঘলার মায়াবী মুখ টা অস্পষ্ট হয়ে উঠল। চোখ মুখের হতাশা ভীড় জমাল । মেয়েটার হয়তো মন খারাপ হয়েছে।
আকাশ মুখে কোন শব্দ উচ্চারন করল না শীতে কাঁপতে কাঁপতে মেঘলার হিম শীতল হাতটা শক্ত করে চেপে ধরে বেশ আগ্রহ নিয়ে বলল,
-“কোথায় ভিজবি ছাদে নাকি বাগানে?
মেঘলা খিলখিল করে হেসে উঠল। অন্ধকার বৃষ্টির রাতে সেই হাসি চমৎকার শোনাল।
-“তোর যেখানে ইচ্ছা।
তাহলে বাগানে চল। দোলনায় বসে দোল খেতে খেতে ভিজবো।
-” একটু দাঁড়া প্লিজ আমি কফি নিয়ে আসি..
আকাশ আপত্তি জানাল না। মেঘলা দৌড়ে গিয়ে কফির মগ নিয়ে বৃষ্টিতে নেমে গেল।
বৃষ্টি ভালোই নেমেছে। কফির মগে বৃষ্টির ফোঁটা পড়ছে। আকাশ কফির মগে ঠোঁট ডোবাচ্ছে কিন্তু কিছু বলছে না।
এদিকে মেঘলার শরীরে কাঁপন ধরেছে। ঠোঁটগুলো নীলাভ হয়ে আসছে তবুও মেঘলা গভীর চোখে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে। আজ যেকরেই হোক আকাশকে জানাতে হবে সে তাকে ভালবাসে কিন্তু কী করে বলবে? আকাশ যে তাকে পাত্তাই দিচ্ছেনা। ভিতরের হাজার জমানো কথাগুলো মনের মাঝে উঁকি দিলেও মুখ দিয়ে একটা শব্দও বের হচ্ছে না। কথাগুলো যেন সব একসাথে হয়ে গলার কাছে এসে দলা পাঁকিয়ে আটকে যাচ্ছে। এই ছেলেটা এমন কেন? সে কী বুঝে না মেঘলা তাকে কত ভালবাসে?
আকাশ বাগানের মধ্যমণি কাঠগোলাপ গাছটার উপড় চোখ রেখে বলল
-” মেঘলা তুই কী কিছু বলবি?
মেঘলা যেন কিছুটা সাহস পেল। এই সুযোগ কিছুতেই হাতছাড়া করা যাবে না। কাঁপা কাঁপা গলায় বলল,
-” তুই কী বুঝিস না আমি কী বলতে চাই..?
-” তোর ভুলে গেলে চলবে না, সম্পর্কে আমারা ভাইবোন। তুই আমার ফুফাত বোন আর আমি তোর বড় ভাই। তাছাড়া এটাও মনে রাখতে হবে তোর বাবাকে ভালবাসার অপরাধে ফুফিকে সারাজীবনের জন্য এই বাড়ি ছাড়তে হয়েছে। তুই এত বছর পর দেশে ফিরায় দাদু তোকে আমাদের সাথে থাকার অনুমতি দিয়েছে আপত্তি জানায় নি তাইবলে তোর যা খুশি তাই করবি।
-“কিন্তু ভাইয়া….
মেঘলার কথার মাঝখানে থামিয়ে দিয়ে আকাশ বলে উঠল,
-” তারচেয়েও বড় কথা তোর মত অপরিপক্ক মেয়ে আমার পছন্দ না।
-“তাহলে কী নিলা আপুর মত পরিপক্ক মেয়ে পছন্দ..?
-“তার কইফত তোকে দিব কেন..?
-“ভাইয়া খামখেয়ালী করবি না তুই কী সত্যিই আমাকে চাস না?
আকাশ,মেঘলার দিকে তাকিয়ে হাসলো,
তারপর একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে উঠে দাঁড়াল সাথে সাথে মেঘলাও দাঁড়াল।
-“আজ তোকে উত্তর দিতেই হবে..
-“নতুন করে উত্তর দেওয়ার কিছু নেই আগেও বলেছি এখনো বলছি তোকে বোন ছাড়া অন্য কোন চোখে কখনো দেখিনি। দেখতে পারব না। শুধু শুধু বিরক্ত করিস না।
।
।
।
নাহওয়া প্রেমিকের এমন প্রত্যাখ্যানের পর মেঘলার মন খারাপ হওয়ার কথা,ভয়ানক টাইপের মন খারাপ কিন্তু মেঘলার তেমনটা হচ্ছে না। উল্টে রাগে গা রি রি করছে। ইচ্ছে করছে আকাশকে মেরে নাক মুখ ফাটিয়ে দিতে পারলে শান্তি পাওয়া যেত ।কিন্তু এই অসম্ভব স্বপ্নকে বাস্তবে রুপ দেওয়া সম্ভব না। এই বাসার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাক্তি আকাশ তার ব্যাপারে পান থেকে চুন খসলেই সারা বাড়িতে হুলস্থুল পড়ে হয়ে যায়।
মেঘলা রাগে গজ গজ করতে করতে নিজের ঘরে ফিরে আসল। অল্প কিছুক্ষনের মধ্যেই খাবার টেবিলে ডাক পড়ল। খিচুড়ির সাথে হাঁসের ঝোল হয়েছে আজ। বৃষ্টির দিনে খিচুড়ি খাওয়ার মজায় আলাদা। মেঘলা সব ভুলে খাবার টেবিলে ছুটল
টেবিলের সামনে দাঁড়াতে মেজাজ খারাপ হওয়ার জোগাড়। নীলা আকাশের পাশের চেয়ারে বসেছে। আকাশো বেশ হেসে হেসে কথা বলছে তার সাথে। মেঘলার হিংসে হচ্ছে, ইচ্ছে করছে লাথি দিয়ে আকাশকে চেয়ার থেকে ফেলে দিতে। পড়ে গিয়ে মাথা ফেটে যাক দুভাগ হয়ে যাক। অন্য কারো সাথে এত কথা বলতে হবে কেন সে কী জানে না তার মেঘপরী এসব মানতে পারে না?
মুখভার করে টেবিলের অন্য পাশের চেয়ার টেনে বসল মেঘলা।না সে নিজের হাতে খাবে না৷ বয়স ১৭ পেরোলেও গুছিয়ে খাবার খাওয়ার অভ্যাস আজো রপ্ত করতে পারে নি সে ।তাকে একা খেতে দিলে হয় সব ছড়িয়ে একাকার করবে অথবা গলায় হাড় কিংবা মাছের কাঁটা আটকিয়ে বিদকুটে এক কান্ড ঘটাবে তাই অবাঞ্চিত সমস্যা এড়াতে তাকে খায়িয়ে দেওয়া হয়। ছোট মা তাকে খায়িয়ে দিবেন। অবাক হওয়ার কিছু অতি আদরের দুলালিরা সাধারনত এমন হয়, ননীর পুতুল টাইপের। তবে দোষ টা তার নয়,তার মায়ের। ছোট বেলা থেকে মেঘলার মা তাকে ননীর পুতুল করে রেখেছেন। কোনদিন এক গ্লাস পানিও নিজে ঢেলে খেতে দেন নি। ফলস্বরুপ অর্কমার ঢেঁকি তৈরি হয়েছে।
শাহানা বেগম মেঘলার মুখে খাবার তুলে দিচ্ছেন মেঘলাও খুশি মনে খাচ্ছে। খাবার ভাল হয়েছে সুলেমান সাহেব ভাল রান্না করেন। ভদ্রলোক ভাল মানের একজন রাঁধুনী শহর থেকে আনা হয়েছে তাকে এইকদিন এখানেই থাকবেন। সবাই যখন খেতে বসেন তিনি মূর্তিমান দাঁড়িয়ে থাকেন মুখের কঠিন ভাব যেন খাবার খারাপ হলে তার জীবন এই মুহুর্তে ব্যার্থ হবে।
সবাই আপনমনে খাবার খাচ্ছিল হঠাৎ পানির গর্জন ভেসে আসল। আকাশের দাদু আহমেদ সাহেব খাবার থামিয়ে দিলেন চোখে মুখে অস্থিরতা ফুটে উঠল।
-“বাবার কী শরীর খারাপ লাগছে?
মেঘলার মুখে খাবার দিতে দিতে প্রশ্ন করলেন শাহানা বেগম। আহমেদ সাহেব যখন বিপদের আবাস পান সবার আগে তার মাথায় যে নামটা আসে সেটা হল আকাশ।যেন আকাশ সব মুশকিলের আসান। আহমেদ সাহেব শক্ত কন্ঠে বললেন,
-“আকাশ বাইরে গিয়ে দেখে এসো তো পরিবেশ কেমন…মনে হচ্ছে রুপসী তার তান্ডব শুরু করেছে।
-“অযথাই চিন্তা করছো দাদু রুপসী আমাদের বাড়ি থেকে কয়েক গজ দূরে আর এত বড় নদী উপচে উঠা সম্ভব না।
-“নদীর বাঁধ খুলে গেলে বান আসতে সময় লাগে না।
আকাশ আর তার দাদুর কথা শেষ হওয়ার আগেই ঘরে হুড়মুড় করে পানি ঢুকতে শুরু করলো। চিরচিরে পানি নয় চোখের পলকে বাড়ছে পানির স্রোত।
আহমেদ সাহেব লাটিতে ভর দিয়ে দাঁড়ালেন,
-“সবাই জলদি ছাদে যাও নদীতে বান আসছে।
বান সম্পর্কে সবার কিঞ্চিত ধারনা থাকলেও মেঘলার এই ব্যাপারে কোন রকমের জ্ঞান নেই। ছোট থেকে বিদেশে বড় হওয়ায় এমন পরিস্থিতির সাক্ষী হতে হয়নি কখনো ফলে সবাই ভয় পেলেও মেঘলাই একমাত্র ব্যাক্তি যার চোখ মুখে উচ্ছ্বাস ফুটে উঠছে। সে বিষয়টা খুব উপভোগ করছে। চেয়ারে বসে পা ভিজাচ্ছে এমন একটা ভাব যেন বান নয়, নব প্রেমিক তার প্রেয়সীর সাথে প্রথমবারের মত দেখা করতে এসেছে। আর প্রেয়সী তার প্রেমিককে সাদরে গ্রহন করে নিচ্ছে।
আকাশের ইচ্ছে করছে মেঘলার গালে, ঠাটিয়ে একটা চড় লাগাতে কিন্তু এখন এসবের সময় না। দুর্যোগের সময় মাথা রাখতে হয় ঠান্ডা। তাহলে যেকোন বিপদ ঘটতে পারে।
সবাই তাড়াতাড়ি করে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র গুছিয়ে নিতে ব্যাস্ত হয়ে পড়ল চারদিকে ছুটাছুটি হুলস্থুল কান্ড। কিন্তু এসব কিছুই মেঘলার আকর্ষন কাড়তে পারল না। সে জলের সাথে প্রেমআলাপনে ব্যাস্ত। একটা মেয়ে কী করে এতটা খামখেয়ালি হতে পারে আকাশের মাথায় ঢুকছে না। কিন্তু আপাতত ওর সাথে তর্ক করার সময় নেই। আকাশ নিজের প্রয়োজনীয় কাগজপাতি আর টাকা পয়সা গুছাচ্ছে সাথে সাথে বার বার ব্যাস্ত চোখে মেঘলার দিকে তাকাচ্ছে আসলে সে মেঘলাকে চোখে চোখে রাখছে কারন একটু চোখের আড়াল করলেই এই মেয়ে নিশ্চিত পানিতে নেমে ছুট লাগাবে।।
দ্রুত বেগে পানি বাড়তে শুরু করেছে সবাই ছুটল ছাদের দিকে। মেঘলার বোধহয় পানির সাথে প্রেমআলাপ এখনো শেষ হয় নি, তাই সে যাচ্ছে না। এই মেয়ে আগের জন্মে নিশ্চিত জলকন্যা ছিল তাই পানির প্রতি তার এই তীব্র আসক্তি। এর আগে দু দুবার পানিতে ডুবতে ডুবতে বেঁচেছে তাও শিক্ষা হয় নি। সাঁতার জানুক আর নাই জানুক পানি দেখলে তাকে নামতেই হবে। চুম্বক যেভাবে লোহাকে আকর্ষন করে পানি তেমনি মেঘলাকে।
আকাশ এবার তীব্র বিরক্তি নিয়ে মেঘলার সামনে গিয়ে দাঁড়াল তবে মেঘলা তাকে কোন রকম পাত্তা না দিয়ে নিজের কাজে মনোনিবেশ করল
-“যাচ্ছিস না কেন..? সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে পানি বাড়ছে দেখতে পাচ্ছিস না?
-“কেবল তো হাঁটু পানি।
-“ডুব পানির অপেক্ষায় আছিস মনে হচ্ছে..
-“ব্যাপারটা তা নয় আমার এই অদ্ভুত দৃশ্য টা ভাল লাগছে তোর খারাপ লাগলে তুই উপড়ে যা।
-“আর তুই..?
-“আপাতত এখানেই থাকব পানি হাঁটুর উপড়ে উঠলে চলে যাব। প্রকৃতির তার অযাচিত রুপ দেখার সুযোগ বারবার দেয় না তাই বিরক্ত করিস না।
-“ইচ্ছে করছে থাপ্পড় দিয়ে সবকটা দাঁত ফেলে দেই।
-“এমন অদ্ভুত ইচ্ছে তোর প্রায়েই হয় তাই এই ইচ্ছেটাকে গুরুত্ব দেওয়ার প্রয়োজন মনে করছি না।
-“তুই কী যাবি..?
-“তোর কি এখন আমাকে বৃষ্টির পানিতে ভিজিয়ে নিউমোনিয়া বানিয়ে খুন করার ইচ্ছে হচ্ছে নাকি.?
সত্যিই তো আকাশ এটা ভেবে দেখেনি এই বাড়ি দোতলা নয় কেবল ছাদ দেওয়া। খোলা ছাদে সবাই থাকবে কী করে? ধরনী কাঁপিয়ে রাত দিন অন্ধকার করা বৃষ্টি ঝড়ছে। নাহ এখন এখানে দাঁড়িয়ে পাগলের সাথে তর্ক করার সময় নয় এখনী মাথা গোঁজার ব্যবস্থা করতে হবে। আকাশ মেঘলাকে ছেড়ে এ ঘর ও ঘর খুঁজে মাথা ঢাকার মত জিনিসপত্র খুঁজতে লাগল ততক্ষনে পানি হাঁটু ছাড়িয়ে কোমড় সমান হয়ে এসেছে।
মেঘলা এখনো আপন মনে ভিজে চলেছে আকাশ এবার মেঘলাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে টানতে টানতে ছাদের দিকে যেতে লাগল।
-“ভাইয়া তোর কী কোন রকম ফিল হচ্ছে..?
-“মানে…??
-“এই ধর টাইটানিক টাইটানিক ফিল.. জ্যাক রোজের হাত ধরে কোমড় পানিতে হাঁটছে। বাঁচা মরার সন্ধিক্ষনে দাঁড়িয়ে জ্যাক নিজের কথা না ভেবে রোজের কথা ভাবছে..
আকাশ থমকে দাঁড়াল মেঘলার চোখে চোখ রেখে লম্বা নিঃশ্বাস নিয়ে রাগ কন্ট্রোলের চেষ্টা চালিয়ে বলে উঠল,
-“আমি মুভির হিরো নই তুইও হিরোইন নোস। আর আমরা কোন উপন্যাসের চরিত্রও নই তাই এসব অবাস্তব কল্পনা বাদ দিয়ে বাস্তবে ফির। তোকে ভালবাসি তাই তোকে নিয়ে চিন্তা করছি ব্যাপারটা একেবারেই তা নয়। তুই এখানে মারা গেলে ফুফি আমাদের দায়ী করবেন বলবেন সবাই বেঁচে থাকতে শুধু তার মেয়েটাই মরল কী করে? তিনি নিশ্চুই বিশ্বাস করবেন না তার মেয়ের মাথায় গন্ডগোল ছিল।
-“যত যাই বল তুই যে আমায় ভালবাসিস সেটা আমি জানি। কিরে ভালবাসিস না আমায়?
-“এক কথা বারবার বলতে বিরক্ত লাগে। তোকে নিতে আসাটাই আমার ভুল হয়েছে যতসব যা খুশি কর আমি যাচ্ছি।মরলি কী বাঁচলি তাতে আমাদের কিছু যায় আসে না।
বলেই আকাশ মেঘলার হাত টা ছেড়ে দিয়ে তরতর করে উপড়ে উঠে গেল।মেঘলার এখন আর ছেলেমানুষী করতে ইচ্ছে করছে না । সে এতক্ষন ইচ্ছে করেই এমন করছিল আকাশ তাকে নিয়ে কতটা ভাবে সেটা জানার জন্য। এবার তার মন খারাপ হচ্ছে ভয়াবহ রকমের মন খারাপ। চারদিকে মানুষের আহাজারিতে বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে পানির স্রোত ক্রমেই বেড়ে চলেছে প্রকৃতি এমন নির্দয় কেন? কেন মানুষকে অকারনে শাস্তি দেয়?
মেঘলা উপড়ে উঠে আসল লক্ষ্য করল এখানকার কেউই তাঁকে নিয়ে চিন্তিত না। সে উঠেছে কী উঠেনি কেউ খেয়াল করছে না। সবাই যে যার নিজেকে নিয়ে ব্যাস্ত। কেউ ছাতা কেউ বা পলিথিন দিয়ে বৃষ্টি আড়ালের চেষ্টা চালাচ্ছে। মিয়াবাড়ির আশে পাশের কাঁচা ঘর থেকে অনেকেই এসে ছাদে আশ্রয় নিয়েছে। মেঘলার কাছে পলিথিন কিংবা ছাতা নেই সে এসব কিছুই জোগাড় করেনি এমনকি নিজের প্রয়োজনীয় কাগজগুলোও সরিয়ে আনে নি। নিজের আইডি আর পাসপোর্টের কথা মনে পড়তেই টনক নড়ল তার। পাসপোর্ট ছাড়া দেশে ফিরবে কী করে। তারচেয়েও বড় কথা মেঘলা আজ অনেক্ষন বৃষ্টিতে ভিজেছে এখনো সারা শরীর ভেজা তার শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। প্রথমবার পানিতে ডুবার পর থেকেই সে এই রোগে আক্রান্ত। সবসময় হাতের কাছে ইনহেলার রাখতে হয়। শ্বাসকষ্ট শুরু হলে ইনহেলারের উচ্চচাপের ওষুধ নিতে হয়।
মেঘলা দ্রুত পায়ে নিচে নেমে আসল কিন্তু কোমড় পানি এখন গলা পানিতে রুপ নিয়েছে মেঘলার পক্ষে এই পানি অতিক্রম করা সম্ভব নয় কয়েক হাত দূরের ঘরে পৌঁছানো টা দুসাধ্য মনে হচ্ছে। মেঘলা আসলে পানি পছন্দ করে না বরং ভয় পায়, ভীষণ মাপের ভয়। দুবার যে পানিতে ডুবেছে সে জানে পানি কতটা ভয়াবহ রুপ ধারন করতে পারে।
-“আচ্ছা ফিরে গিয়ে ভাইয়াকে বললে সে কী এনে দিবে ..? হ্যা সেটাই করা উচিত পানির স্রোতে নেমে বিপদ ডেকে আনার চেয়ে এটা সহজতর উপায়।
মেঘলা ফিরে গিয়ে নাবিল আর আকাশের পাশে দাঁড়াল তারা দুজনেই দাঁড় কাকের মত ভিজজে। ঘুটঘুটে অন্ধার চারদিকে। ইচ্ছে ছিল আকাশকে অনুরোধ করার কিন্তু মেঘলাকে দেখেই আকাশ মুখ ঘুরিয়ে নিল। নাবিল প্রশ্ন করল,
-“কিছু বলবি মেঘলা..?
-“ভাইয়া আমার পাসপোর্ট নিচে রয়ে গিয়েছে একটু এনে দিতে পারবি..? পানি বেড়ে গিয়েছে আমি যেতে পারছি না।
নাবিল উত্তর দেওয়ার আগে আকাশ উত্তর দিল,
-“নাহ পারবে না যখন সময় ছিল তখন কোথায় ছিলেন আপনি? এখন আপনার জন্য কেউ নিজের জীবন বাজি রাখতে পারবে না। চুপচাপ এখান থেকে বিদায় হ কোন রকম ঝামেলা করবি না।
মেঘলা মাথা নিচু করে ফিরে আসল, তার শ্বাসকষ্ট হচ্ছে এটা কী কাউকে জানানো উচিত..? কী লাভ জানিয়ে? এতক্ষনে ইনহেলার পানির নিচে তলিয়ে গেছে। তাই সাহায্য চাইলেও কেউ তাকে সাহায্য করতে পারবে না শুধু শুধু দুচিন্তা বাড়বে। আজ নিজেই নিজেকে গালি দিতে ইচ্ছে করছে এই ছেলেমানুষী টা করা একদম উচিত হয় নি। ভালবাসার প্রমাণ নিতে নিজের জীবন উৎসর্গ করতে হবে কে জানত? আচ্ছা কিছুক্ষনের মধ্যেই তো উদ্ধারকর্মী চলে আসবে আর আশ্রয় কেন্দ্রে নিশ্চুই জরুরী ওষুধের ব্যবস্থা থাকবে এতটুকু সময় সহ্য করে নিলেই তো হয় ভেবে মেঘলা নিজেকে শান্ত করার চেষ্টা করল। ভয় পেলে নাকি শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায় তাই নিজেকে শান্ত রাখার চেষ্টা করছে সে।
নাবিল একটি নৌকার সাথে যোগাযোগ করেছে কিছুক্ষনের মধ্যেই নৌকা এসে হাজির হল সবাই হুড়োহুড়ি করে নৌকায় উঠতে শুরু করল।
আকাশ আর নাবিল তাদের পরিবারের সবাইকে নৌকায় তুলতে ব্যাস্ত এতজনের জায়গা হবে না তাই এত তাড়া। আশ্চর্যের বিষয় মেঘলা নৌকায় উঠতে চাইছে কিন্তু কেউ তাকে সুযোগ দিচ্ছে না। আকাশ কিংবা নাবিল কেউ হাত বাড়িয়ে বলছে না মেঘলা উঠ। যাইহোক এখন এসব ভেবে কান্নায় বুক ভাসানোর সময় নেই যেকরেই হোক নৌকায় উঠতে হবে পরের বারের জন্য অপেক্ষা করার মত সময় নেই মেঘলার হাতে।তাই একপ্রকার যুদ্ধ করে নৌকায় জায়গা করে নিল।
কিন্তু বিপত্তি হল আকাশ আর নাবিলের জায়গা হচ্ছে না নৌকায়। নৌকায় তিল জায়গা খালি নেই কিন্তু তাদের একজনকে এই নৌকায় যেতেই হবে কারন এটি উদ্ধারকর্মীদের নৌকা না সাধারন একটি নৌকা যেকোন সময় বিপদ ঘটতে পারে। পরিবারের সবাইকে অনিশ্চিত ভবিষ্যতে ভাসিয়ে দেওয়া যায় না। একজন ছেলে সাথে থাকলে অন্তত সংকট মুহূর্তে সঠিক সিধান্ত নিতে পারবে। বিপদ কখন কোন দিকে আসে বলা যায় না।
কিন্তু সবাই উঠে বসেছে কাকে নামতে বলবে মাথায় ঢুকছে না নাবিলের। এমন সংকটে কাউকে বলা যায় না আপনি নেমে যান। এমন অন্যায় সেক্রিফাইসের অনুরোধ করা কোনভাবেই উচিত হবে না। নাবিল যখন সমস্যার সমাধান খুঁজছে তখন
হটাৎ আকাশ বলে বসল,
-“মেঘলা নেমে আয়। দাদু বয়স্ক মানুষ তাছাড়া নেহা মিলি নীলাদের এই রাতে একা ছাড়া যাবে না। নাবিল ওদের সাথে যাক তুই পরের বার যাস।
মেঘলা কি বলবে বুঝতে পারছে না তার কী বলা উচিত যে তার যাওয়াটা জরুরী…??
-‘কিরে তোকে নামতে বললাম তো…
-“আ আ আমি মানে..বলছিলাম কী ভাইয়া
-“আমি তোকে নামতে বলেছি আমতা আমতা করতে বলিনি.. (ধমক দিয়ে)
আকাশের ধমকে প্রায় সবাই কেঁপে উঠেছে। আকাশ আবারো কর্কশ কন্ঠে বলল,
-“নৌকা টা তুই ভাড়া করিস নি। তাই যেটা বলছি সেটা কর..
মেঘলা কোন উপায় না দেখে নেমে আসল। কেউ একটিবারের জন্যেও মেঘলার পক্ষ নিয়ে কিছু বলল না। কথায় আছে আপনি বাঁচলে বাপের নাম। দেখতে দেখতে নৌকা দৃষ্টি সীমার বাইরে চলে গেল।
মেঘলা ফিরে এসে ছাদের এককোণে বসল। আকাশ অন্যপাশে দাঁড়িয়ে পানির গভীরতা বিশ্লেষন করছে। চারদিকে শাঁ শা শব্দ মেঘলার বেশ ভয় লাগছে একদিকে পানির স্রোত বাড়ছে অন্যদিকে নিশ্বাস ভারী হয়ে আসছে। আজ তার মৃত্যু অনিবার্য এখন আকাশ চাইলেও তাকে বাঁচাতে পারবে না যদিও আকাশ তাকে বাঁচাতে চাইবে না সেটা মেঘলা জানে। চোখ ফেঁটে কান্না পাচ্ছে। মা বাবার অমতে এখানে এসে কতবড় ভুল করেছে হাড়ে হাড়ে বুঝতে পারছে আকাশ নেহা মিলি নীলাদের কথা কত ভাবে কিন্তু তার বেলায়…?
শ্বাসকষ্ট টা মাথাচাড়া দিচ্ছে আস্তে আস্তে নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে। নাহ যাই হয়ে যাক আকাশের কাছে সে সাহায্যে চাইবে না সে। চেয়েও লাভ নেই তাই নিজেকে ছোট করার প্রশ্নই আসে না।
মেঘলা অসহ্য যন্ত্রনায় চোখ বন্ধ করে নিল কয়েক সেকেন্ড পরেই তার ঠোঁট যুগলের মাঝখানে শক্ত কিছুর উপস্থিতি টের পেল কিছু বুঝে উঠার আগেই ফোস করে শব্দ হল। মেঘলা চোখ খুলে বুঝতে পারল আকাশ তার মুখে ইনহেলার পুশ করেছে। রাগে শরীর কেঁপে উঠল মেঘলা ইনহেলার টা ছুড়ে ফেলে দিল। আকাশ নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারল না ঠাস করে থাপ্পড় বসিয়ে দিল মেঘলার গালে। ধমকে বলল,
-‘নিজেকে কী ভাবিস..? ইনহেলার ২ বার পুশ করতে হয় জানিস না ফেলে দিলি কোন সাহসে..?
-“চাই না তোর করুনা একদম আমার কাছে আসবি না তোর সাহায্যে নিয়ে বেঁচে থাকার চেয়ে মরে যাওয়া অনেক ভাল..
-“মেঘলা…(ধমক দিয়ে বলে আবারো থাপ্পড় মারতে গিয়ে থেমে গেল আকাশ)
মেঘলা ভয়ে চোখ বন্ধ করে নিয়েছে। আকাশ নিজের জ্যাকেট মেঘলার মাথায় দিয়ে শান্ত গলায় বলল,
-“সবকিছুতে এত জেদ কেন তোর হ্যা.. একদম বাড়াবাড়ি করবি না দেখি হা কর।
বলতে বলতে ইনহেলারটা কুড়িয়ে আনল আকাশ।
-“আমাকে মারতে মারতে মেরে ফেললেও আমি ইনহেলার নিব না যাদের জন্য তোর এত দরদ যাদের জন্য এত ভাবিস যা তাদের কথা ভাব গিয়ে আমার কথা ভাবতে হবে না।
আকাশ এবার কিছু না বলে জড়িয়ে ধরল মেঘলাকে। বুকের সাথে মিশিয়ে নিয়ে কানের কাছে মুখ রেখে বলল,
-“সব দায়িত্ব সবার কাছে দেওয়া যায় না। আমি জানি আমি ছাড়া আমার মেঘপরীকে কেউ সামলাতে পারবে না। হটাৎ যদি তার ইচ্ছে করে পানিতে নেমে যেতে তখন কে আটকাবে তাকে? কিংবা হটাৎ ভয়ংকর টাইপের শ্বাসকষ্ট শুরু হয়ে গেল তখন কে বুঝবে তার কোথায় সমস্যা হচ্ছে? হুট করে যদি নৌকায় ধ্বাক্কা লাগে কাকে আঁখরে ধরবে সে..? আমি যে নৌকা যাব না সেখানে আমার পরীটাকে কিভাবে পাঠাব? নৌকা পৌঁছানোর আগেই তো দুশ্চিন্তায় হার্ট এট্যাক করব। যদি বাঁচি একসাথেই বাঁচব মরলেও একসাথেই মরব।
মেঘলা আকাশের বুক পকেটে নাকের পানি মুছে তাকাল আকাশের দিকে আকাশো শান্ত চোখে তাকিয়ে আছে মেঘলার পানে।
চোখ মুছতে মুছতে বলল,
-“রোজ কিন্তু বেঁচে ছিল মারা গিয়েছিল জ্যাক..
-“জানিস যখন তাহলে ভয় পাচ্ছিলি কেন? আকাশ থাকতে তুই মারা যাবি এমনটা ঘটতে পারে? আমি মারা যাবার আগে তুই বিপদে পড়বি না এইটুকু ভরসা আজো করতে শিখলি না?
-“এখনো বলবি ভালবাসিস না..?
-“ভাল হয়ত বাসি কিন্তু এমন অপরিপক্ক, বুদ্ধিহীন মেয়ে আমার প্রেমিকা হওয়ার যোগ্য না।
মেঘলা গাল ফুলিয়ে বলল,
-“ভাইয়া ভাল হচ্ছে না কিন্তু…
আকাশ হা হা করে হেসে উঠল নিস্তব্ধ রাতে সেই হাসি চমৎকার শুনাল। আহ্লাদ মাখা কন্ঠে বলল,
-“আজ সারারাত আমার মেঘপরীর সাথে প্রেম করব গভীর প্রেম…
বলতে বলতে মেঘলাকে আবার জড়িয়ে নিল আকাশ। মেঘলা আকাশের বুকে মাথা রেখে প্রশ্ন করল,
-“ভাইয়া তোর ভয় করছে না..?
মেঘলার মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে উত্তর দিল,
-” বানের পানি বেশিক্ষন থাকে না কিছুক্ষন পরেই নেমে যাবে ভয় পাওয়ার কিছু নেই তাছাড়া নাবিল তোকে ডুবে মরতে দিবে না যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নৌকা ম্যানেজ করবে। তাই এই চিন্তা বাদ দে তুই ডুবছিস না এই ব্যাপারে নিশ্চিত থাকতে পারিস।
-“ভাইয়া ইনহেলারের সাথে আমার পাসপোর্ট আর আইকার্ড ছিল ওগুলো কি নিয়েছিলি?
আকাশ প্যান্টের পকেটে হাত রেখে কার্ডগুলো অনুভব করল তারপর জবাব দিল
-“নাহ আমি শুধু ইনহেলারটাই নিয়েছি।
-“ঝামেলা হয়ে গেল মাম্মাম জানতে পারলে খুব বকবে…সামনের মাসে আমার ফিরে যাওয়ার কথা।
-“বকবে কেন..? ফুফিকে বলে দিস তুই আর কোথাও ফিরছিস না এখন থেকে এদেশেই থাকবি…
।
।
।
সমাপ্ত