হৃদমাঝারে #দ্বিতীয়_পর্ব

0
885

#হৃদমাঝারে
#দ্বিতীয়_পর্ব
#দেবারতি_ধাড়া

-এই তো জিয়া! কোথায় ছিলে বলোতো তুমি এতোক্ষণ হ্যাঁ? সেই যে ব্রেকফাস্টের কথা জিজ্ঞেস করতে রিসেপশনে গেলে, তারপর যে কোথায় উধাও হয়ে গেলে, তখন থেকে তো আর তোমার দেখাই পাওয়া যাচ্ছিলো না!
-হ্যাঁ গো সুলেখাদি, আসলে আমি একটু ফটোগ্রাফি করছিলাম! কই গো আমার খাবারটা কোথায়? এবার কিন্তু আমারও খুব খিদে পেয়ে গেছে!
-এই যে তোমার খাবার। সরি গো জিয়া, আমি তোমার থেকেও একটু খেয়ে ফেলেছিলাম খিদের চোটে! প্লিজ কিছু মনে কোরো না!
-এমা ছি ছি! মনে করবো কেন? খিদে পেয়েছে, খাবারও ছিলো, তো খেয়েছো। এতে আবার আমাকে বলারই বা কী আছে আর আমার কিছু মনে করারই বা কী আছে!
-না তাও…
-এই সুলেখাদি তুমি চুপ করো তো! আচ্ছা বাকিরা সব গেলো কোথায়? আবার ঘুমিয়ে পড়লো নাকি?
-না না। এই তো একটু আগে এখানেই এসেছিলো সবাই। তুমি ছিলে না বলে আবার যে যার রুমে চলে গেলো। ওরা বললো তোমার ব্রেকফাস্ট হয়ে গেলে নাকি আবার বেরোনো হবে আশেপাশে কোথায়।
-ওহ আচ্ছা!

ব্রেকফাস্টের পরেই জিয়া আর সব অফিস কলিগরা মিলে বেরিয়ে পড়েছিলো ঘুরতে। যখন ওরা হোটেলে ফিরলো, তখন প্রায় দুপুর হয়ে গেছে। তাই লাঞ্চ করে যে যার রুমে একটু রেস্ট নিচ্ছিলো ওরা। একটু রেস্ট নিয়েই আবার বেরোনোর কথা ছিলো ওদের। কিন্তু দুপুর গড়িয়ে বিকেল হয়ে গেলেও কারোরই আর ঘুম ভাঙতে চাইছিলো না। সবাইকে অনেক করে ডেকে ডেকেও যখন কাউকেই আর ঘুম থেকে তুলতে পারলো না, তখন জিয়া একাই হোটেল থেকে বেরিয়ে পড়লো নিজের ক্যামেরা আর মোবাইলটা সঙ্গে নিয়ে। হোটেল থেকে বেরিয়ে কিছুটা যাওয়ার পর যখন জিয়া প্রকৃতির ছবি তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলো। ঠিক তখনই আবার দেখা হয়ে গেলো আয়ানের সাথে। হঠাৎ করেই জিয়ার ক্যামেরার সামনে আয়ান এসে পড়ায় আয়ানেরও একটা ছবি বন্দী হলো ওর ক্যামেরাতে। সঙ্গে সঙ্গে জিয়া আয়ানকে বলে উঠলো,

-দিলেন তো আমার ছবিটা বিগড়ে! ইস কী দারুণ আসছিলো মোমেন্টটা! ধুর! ভাল্লাগেনা!
-সরি সরি! আমি একদম খেয়াল করিনি আপনি ছবি তুলছিলেন বলে!
-ধুর! এখন আর সরি বলে কী হবে? বাদ দিন! আপনি বড্ড বেরসিক মানুষ! চোখ, কান খোলা রেখে হাঁটেন না নাকি আপনি? আমি ছবি তুলছিলাম সেটা দেখতে পাননি?! কেউ ছবি তুললে এভাবে কেউ সামনে চলে আসে?
-আচ্ছা, বললাম তো সরি! এবার থেকে চোখ, কান সব খোলা রেখেই হাঁটবো! আর সত্যিই আমি বুঝতে পারিনি।
-হুম!

তখনও জিয়া ক্যামেরা নিয়ে ছবি তুলতেই ব্যস্ত। ক্যামেরার লেন্সের দিকে তাকিয়েই কথা বলছিলো ও। ওকে এভাবে ক্যামেরা নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করতে দেখে আয়ান বললো,

-আচ্ছা আপনি কী ফটোগ্রাফার নাকি? সকালেও দেখলাম ছবি তুলতে ব্যস্ত ছিলেন, আর এখনও তাই।
-না না ঠিক ফটোগ্রাফার নই, তবে ছবি তুলতে ভীষণ ভালোবাসি! চোখের সামনে যা দেখি, যেটাই আমার ভালোলাগে, সেটাই আমি আমার এই ক্যামেরার মধ্যে বন্দী করে রাখি। পরে সেগুলো আমার দেখতে খুব ভালোলাগে!
-বাহ্ খুব ভালো!
-হুম সে তো জানি ভালো! তারপর বলুন, আপনারা কতোদিন আছেন এখানে?
-পাঁচ দিন। সকালে আপনি বললেন আপনারাও নাকি শিলিগুড়ি থেকে এসেছেন?
-আপনারাও মানে? তারমানে..
-হ্যাঁ, আমরাও শিলিগুড়ি থেকেই এসেছি। আপনারা হোটেল স্নো হোয়াইটে আছেন তো?
-হ্যাঁ, কিন্তু আপনি কী করে জানলেন?
-ওই যে সকালে আপনাকে ওদিকেই যেতে দেখলাম..
-ওহ! দেখেছেন তাহলে?
-হ্যাঁ! তা আপনি এখন একা? সকালেও দেখলাম একা, এখনও দেখছি একা! বাট আপনি যে বললেন আপনারা অফিস ট্যুরে এসেছেন, তাহলে বাকিরা সব গেলো কোথায়?
-আর বলবেন না! সেই সকালেই যা ব্রেকফাস্টের পর একটু বেরোনো হয়েছিলো। তারপর হোটেলে ফিরে লাঞ্চ করে সবাই নাক ডাকিয়ে ঘুমাচ্ছে! কতো করে ডাকলাম সবাইকে, তবুও কেউ উঠলো না! আচ্ছা আপনিই বলুন তো, ঘুরতে এসেছে ঘুরবে। তা নয় পড়ে পড়ে ঘুমাচ্ছে সব! তাই আমি একাই বেরিয়ে পড়লাম! কিন্তু আপনি একা কেন? আপনার সব স্টুডেন্টরা গেলো কোথায়? আর আপনার কলিগরাই বা কোথায়?
-অন্য সব প্রফেসররা স্টুডেন্টদের নিয়ে একটু বেরিয়েছে। আমি আর একা হোটেলে বসে কী করবো? তাই একটু বেরিয়ে পড়লাম একা একাই।
-তা আপনি গেলেন না কেন?
-ওই যে! আমি গেলে হয়তো স্টুডেন্টরা মন খুলে ঠিকমতো ঘুরতে পারবে না। ভয়ে ভয়ে থাকবে সবাই। আমি কিছু না বললেও হয়তো ওরা নিজেদের মধ্যে হইহুল্লোড় করতে পারবে না। সেই জন্য আমি আর ওদের সাথে গেলাম না! যদিও কয়েকটা স্টুডেন্ট খুব জোর করছিলো। তাও গেলাম না ওদের জন্যই। তবে আমি না যাওয়াতে বরং ওরা মনে মনে বেশ খুশিই হয়েছে!

আয়ানের কথা শুনে হো হো করে হেসে ফেললো জিয়া। তারপর বললো,

-হ্যাঁ সে আপনি ঠিকই করেছেন! বাচ্চারা ঘুরতে এসেছে, একটু মজা করবে না? আপনি না গিয়ে ভালোই করেছেন! এই আপনি চা খাবেন? গরম গরম দুধ চা! ওইদিকে একটা চায়ের দোকান আছে! সকালে দেখেছিলাম।
-আমি চা খাই না! আর খেলেও খুব কম, তাও দুধ চা নয়, শুধু লিকার চা খাই..
-হোয়াট! আপনি দুধ চা খান না? এই আপনি বাঙালী তো নাকি?
-হঠাৎ বাঙ্গালী কিনা জিজ্ঞেস করছেন যে?
-না মানে, আপনি বাঙালী হয়েও দুধ চা খান না! এটা শুনেই তো আমার মনে হলো আপনি সত্যিই বাঙালী নাকি বাঙালী নন! আরে একবার খেয়েই দেখুন না! মাটির ভাঁড়ে গরম গরম গরম দুধ চায়ে যে চুমুক দেয়, সে একেবারে স্বর্গ সুখ পায় বুঝলেন? আর যে চুমুক দেয়নি, সে যে কতো কিছু মিস করে গেছে তা সে জানে না!
-ওহ তাই নাকি? তাহলে তো জীবিত অবস্থায় স্বর্গ সুখ উপভোগ করার জন্য একবার ওই মাটির ভাঁড়ে গরম গরম দুধ চা তো খেয়েই দেখতে হয়। কী বলেন?
-হ্যাঁ একদম! চলুন তাহলে যাওয়া যাক!
-হ্যাঁ চলুন..

কিছুটা গিয়েই চায়ের দোকানের সামনে দাঁড়ালো জিয়া আর আয়ান। গিয়েই চায়ের দোকানের মালিকটিকে জিয়া বললো,

-দাদা! দু’কাপ কড়া করে আদা, এলাচ দিয়ে চা বানান তো! এমনভাবেই বানান, যাতে এই বদরাগী প্রফেসরের একবার দুধ চা খেয়েই চায়ের নেশা ধরে যায়! তারপর উনি বারে বারে চা খেতে চান।
-হ্যাঁ দিদি, আপনারা একটু বসুন। আমি এক্ষুণি কড়া করে দুধ চা বানাচ্ছি।
-হ্যাঁ হ্যাঁ, আমরা বসছি। আপনি সময় নিয়ে বানান, কিন্তু একটু ঝাক্কাস করে বানান! আর কাপে নয়, মাটির ভাঁড়ে চা দেবেন কিন্তু!
-আচ্ছা আচ্ছা!

জিয়ার কথা শুনে আয়ান, দোকানদার, আর চায়ের দোকানে থাকা আরও দুজন লোক উচ্চস্বরে হেসে উঠলেন। ওনাদের হাসির মাঝেই চায়ের দোকানের একজন লোককে উদ্দেশ্য করেই জিয়া বলে উঠলো,

-আচ্ছা দাদা, আপনিই বলুন তো, বাঙালী হয়ে চা খায় না, তাও আবার দুধ চা খায় না এরকম কেউ আছে?!
-না দিদি, এরকম কেউ তো নেই বললেই চলে! যারা আছে, তাদের বাঙালী বললে ভুল করা হয়..
-হ্যাঁ, এই তো আপনি একদম আমার মতোই ঠিক কথা বলেছেন দাদা!

ওদের সামান্য কথোপকথনের মাঝেই দোকানদার একটা ট্রে-তে করে দুটো চায়ের ভাঁড় এগিয়ে দিয়ে বললেন,

-এই নিন দিদি, আপনাদের চা! বড়ো ভাঁড়টাই দিলাম কিন্তু…
-হ্যাঁ হ্যাঁ নিচ্ছি! এই যে প্রফেসর বাবু! আপনিও নিন। খেয়ে দেখুন মাটির ভাঁড়ে গরম গরম দুধ চা কেমন খেতে লাগে!

জিয়া নিজে একটা চায়ের ভাঁড় তুলে নিয়ে ট্রে-টা এগিয়ে দিলো আয়ানের দিকে। আয়ান তুলে নিলো ট্রেতে থাকা ওই চায়ের ভাঁড়টা। জিয়া ভাঁড়টা হাতে নিয়েই গরম চায়ে চুমুক দিলো। চুমুক দেওয়ার সাথে সাথেই জিয়া বলে উঠলো,

-উফ্! স্বর্গ স্বর্গ! চা-টা কিন্তু দারুণ হয়েছে দাদা! দারুণ! কী প্রফেসর বাবু? আপনার কেমন লাগলো বলুন?
-হুম, সত্যিই খুব সুন্দর খেতে হয়েছে চা-টা। আপনি ঠিকই বলেছেন, এ যেন স্বর্গ সুখ।
-সত্যি আপনার ভালো লেগেছে? নাকি জাস্ট কথার কথা বললেন?
-না না, কথার কথা কেন বলবো? সত্যিই ভালো লাগছে।
-বলতেই পারেন! অবশ্য আমাকে আপে তুলেই বা আপনার কী লাভ হবে তাই না? নিন নিন, তাড়াতাড়ি চা-টা শেষ করুন! সন্ধ্যে তো প্রায় নেমেই এলো! এবার আমাকে হোটেলে ফিরতে হবে।

চা-টা তাড়াতাড়ি শেষ করেই জিন্সের পকেট থেকে একটা একশো টাকার নোট বের করে দোকানদারের দিকে এগিয়ে দিলো জিয়া। জিয়াকে টাকা দিতে দেখেই আয়ান বললো,

-আরে আপনি টাকা দিচ্ছেন কেন? আরে টাকা-টা তো আমি দিচ্ছিলামই..
-আপনি কেন দেবেন? আমিই তো আপনাকে চা খাওয়াতে নিয়ে এলাম। তাই টাকা-টা তো আমারই দেওয়ার কথা, তাই না?
-কিন্তু…
-আরে এতো হেজিটেট করার কী আছে? আবার যখন আমাদের দেখা হবে, অথবা আপনার যখন চায়ের নেশা হয়ে যাবে, তখনই নাহয় আপনি আমাকে চা খাওয়াবেন!
-তাহলে কী আমাকে চায়ের নেশা ধরতেই হবে বলতে চাইছেন?
-হ্যাঁ ওইরকমই বলতে পারেন! আপনার চা শেষ হলো? নাকি এখনও শেষ হয়নি?
-হ্যাঁ এই তো শেষ…

আয়ান ভাঁড়টা মুখের মধ্যে উল্টে ভাঁড় থেকে শেষ টুকু চা মুখে ঢেলে নিয়েই ভাঁড়টা ছুঁড়ে ফেলে দিলো চায়ের দোকানের পাশে রাখা ডাস্টবিনটার মধ্যে। তারপর এগিয়ে গেলো জিয়ার সাথে। গল্প করতে করতে কিছুটা রাস্তা গিয়েই জিয়ার ফোনটা বেজে উঠলো। জিয়া পকেট থেকে ফোনটা বের করে রিসিভ করে কানে দিয়ে বললো,

-হ্যাঁ সুলেখাদি বলো!
-আরে জিয়া তুমি কোথায়? তুমি এরকম হঠাৎ হঠাৎ করে উধাও হয়ে যাচ্ছো বলোতো! এখানে এসে কী হলো গো তোমার? আমরা ভাবলাম এবার একটু বেরোবো সবাই মিলে। কিন্তু তুমিই তো দেখছি হোটেলে নেই! কোথায় আছো তুমি? তাড়াতাড়ি এসো…
-তোমরা ঘুম থেকে উঠলে না বলেই তো আমি একাই একটু বেরিয়ে পড়লাম। আমি তো এখন হোটেলের থেকে একটু দূরে আছি। আচ্ছা তোমরা একটু ওয়েট করো, আমি এক্ষুণি আসছি। আর যদি তোমাদের মনে হয়, তাহলে তোমরা চলেও যেতে পারো! আমি নাহয় হোটেলেই থাকবো..
-এই না না, তোমাকে ছেড়ে আমরা কী করে যাবো? তুমি এসো, আমরা ওয়েট করছি তোমার জন্য!
-ওকে ওকে! আমি আসছি!

ফোনটা রেখেই জিয়া বললো,

-এই যে মিস্টার প্রফেসর! আমি এখন আসছি কেমন? হোটেলে সবাই আমার জন্য ওয়েট করছে। ওদের এতোক্ষণে ঘুম ভেঙেছে, তাই একটু বেরোবে বলছে।
-আরে আমিও তো ওইদিকেই যাবো। আপনাদের হোটেল ফেলেই তো আমাদের হোটেল পড়বে। আপনি আগে আগে চলে যাচ্ছেন কেন? দাঁড়ান আমিও তো আসছি!
-আরে আপনার সাথে গল্প করতে করতে হোটেলে ফিরতে গেলে আমার আর আজ হোটেলে ফেরা হবে না! এমনিতেই আমি কথা বলতে খুব ভালোবাসি! একবার কারোর সাথে কথা বলতে শুরু করলে আমি আর থামি না! আপনি যেতে চাইলে তাড়াতাড়ি চলুন প্লিজ! বাট মুখ বন্ধ করে যেতে হবে কিন্তু! নাহলে আমিও আবার বকতে শুরু করবো!
-আচ্ছা আচ্ছা আমি মুখ বন্ধ করেই যাবো…

কিছুক্ষণ নীরবতার পর জিয়া নিজেই বললো,

-কাল কী প্ল্যান আপনাদের?

কিন্তু আয়ান কোনো উত্তর দিলো না। কোনো উত্তর না পেয়ে জিয়া আবার বললো,

-কী হলো আপনি উত্তর দিচ্ছেন না যে? এই আপনি কানেও কম শোনেন নাকি?
-সকাল থেকে এতোবার আমার সাথে কথা বলার পর এখন আপনার মনে হলো আমি কানে কম শুনি?
-সেটাই তো মনে হচ্ছে! সেজন্যই তো উত্তর দিলেন না!
-এই মাত্র আপনিই তো বললেন যেন আমি আর কোনো কথা না বলে মুখ বন্ধ করে থাকি। তাই জন্যই আমি কোনো উত্তর দিইনি।
-তাই বলে আমি একটা কথা জিজ্ঞেস করা সত্ত্বেও আপনি উত্তর দেবেন না?! হুঁহ! আপনি খুব বাজে লোক তো মশাই! ঠিক আছে, আমি আর একটাও কথা বলবো না আপনার সাথে! নেহাত আমি কথা না বলে চুপ করে থাকতে পারি না তাই!

কথা গুলো বলেই ঠোঁট বেঁকিয়ে মুখটা অন্য দিকে ঘুরিয়ে নিলো জিয়া। তখনই আয়ান বললো,

-এই আপনি সত্যি সত্যি রাগ করলেন নাকি? আমি তো মজা করছিলাম জাস্ট! সরি সরি!

জিয়ার কাছে কোনো উত্তর না পেয়ে আবার আয়ান বললো,

-এই আপনি কোনো কথা বলছেন না যে? সত্যিই কথা বলবেন না নাকি?
-আপনিও মজা করতে পারেন? আপনাকে দেখলে তো বোঝাই যায় না, যে আপনার পেটে পেটে এতো! সবসময় তো রাম গরুরের ছানার মতো গম্ভীর মুখ করে থাকেন। এখন আবার মজা?
-আপনার থেকেই শিখে নিলাম। আপনি তো এরকম মানুষই পছন্দ করেন, তাই না?

জিয়া কোনো উত্তর না দিয়ে শুধু একবার তাকিয়ে দেখলো আয়ানের দিকে। হঠাৎ জিয়াকে এভাবে ওর মুখের দিকে তাকাতে দেখে আয়ান বললো,

-কী হলো বললেন না যে? কী ভাবছেন?
-কিছু না! আমার হোটেল এসেগেছে! বাই!
-কাল আমাদের সকাল থেকে বেরোনোর প্ল্যান আছে। টাইগার হিল দেখতে যাওয়া হবে। আপনাদের কী প্ল্যান? কাল বিকেলেও ওই চায়ের দোকানটাতেই চা খেতে যাবো, আপনি চাইলে আসতে পারেন! বিকেল পাঁচটায়…

জিয়া তখন আর কোনো উত্তর না দিয়ে হোটেলের ভিতরে ঢুকে গেলো। কিছুটা এগিয়ে গিয়ে মুখ ফিরিয়ে বললো,

-কাল ভোরে আমরাও টাইগার হিলের সূর্যোদয় দেখতে যাবো!

ক্রমশ…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here