হৃদয়ও_মাঝারে-০১

0
2250

#হৃদয়ও_মাঝারে-০১
তন্বী ইসলাম✍️

এতিমখানা থেকে বের হয়ে আশেপাশের রাস্তায় ঘুরাঘুরি করে বেরাচ্ছে তিথী। হাতে একটা বিশালাকার ব্যাগ। যেটা একমতো টেনে নিয়ে বেড়াচ্ছে ও। গন্তব্য কোথায় জানেনা। কিছুক্ষন আগে এতিমখানার কর্তৃপক্ষ এতিমখানা থেকে ওর নামটা বাদ দিয়েছে।
ঢাকার একটি এতিমখানায় বড় হয়েছে তিথী। মা বাবা আত্মীয়স্বজন বলতে তেমন কেউ নেই ওর।
মাত্র নয় বছর বয়সে বাবা মা একটা দুর্ঘটনায় মারা যান একই দিনে। কিছুদিন এক দূরসম্পর্কের চাচার কাছেই থাকে৷ তারপর একদিন মেয়েটাকে এতিমখানায় রেখে যায় ওরা। সেদিন কি গগনবিদারী চিৎকারই না করেছিলো মেয়েটা। কিন্তু ওর ওই চিৎকার সেই দূরসম্পর্কের চাচার কানে গিয়ে পৌছায় নি।
..
যে এতিমখানাটায় বেড়ে উঠেছে তিথী, সেটার একটা প্লাস পয়েন্ট হলো, সেখানকার কর্তৃপক্ষ সেখানকার বাচ্চাদের লেখাপড়া শেখায়। বাচ্চারা ইন্টারমিডিয়েট পর্যন্ত পড়ালেখা করতে পারে সেখানে থেকে। আর সেটার খরচ আসে বিভিন্ন ট্রাস্ট থেকে, বড় বড় কোম্পানিও সাহায্য করে যথেষ্ট।
যখন কোনো এতিম বাচ্চা বড় হয়ে ১৮ পূর্ণ করে তখন তাকে আর এতিমখানায় রাখা হয়না। তখন নিজের টা নিজেকেই ব্যবস্থা করতে হয়।
গতকাল তিথীর ১৮ বছর পার হয়েছে। আর আজ তাই ওকে চলে আসতে হয়েছে সেখান থেকে। যদিও আগে থেকেই কর্তৃপক্ষ কর্তৃক জানানো হয়েছিলো তাকে। কিন্তু নিজের কোনো আত্মীয় না থাকায় থাকার কোনো ব্যবস্থা করতে পারেনি তিথী। সেই চাচার কথা খুব ভালোকরেই মনে আছে ওর৷ কিন্তু সেখানে যাবেনা ও। ওই মানুষরুপী পিশাচটার কথা মনে পড়লেই রাগে শরীর জ্বালা করে ওর।
..
এতিমখানায় বড় হওয়ায় যথেষ্ট সাহসী তিথী। মনের মধ্যে ভয়ভীতি নেই বললেই চলে। এই যে, থাকার কোনো জায়গা নেই, গন্তব্য কোথায় সেটাও জানা নেই তবুও যথেষ্ট সাচ্ছন্দ্যে ব্যাগ টা টেনে নিয়ে বেড়াচ্ছে তিথী। দেখে মনেই হচ্ছেনা ও যে একটা বাস্তুহারা এতিম।
আশেপাশের লোকজন কেমন করে যেনো তাকাচ্ছে ওর দিকে। ওর সেদিকে খেয়াল নেই৷ একটা ফুতপাত ধরে এগুচ্ছে সে।
কিছুদুর এগিয়ে দেখলো একটা বস্তিমতো এলাকা৷ আপাতত থাকার একটা ব্যবস্থা করা যাক।
বস্তিটার ভিতরে ঢুকে নাকে কাপড় চেপে ধরলো তিথী। বেশ দুর্গন্ধ আসছে। পাশের মানুষগুলো কেমন করে যেনো তাকাচ্ছে ওর দিকে।

একটা মোটা করে মহিলা, মাথার খোপাটা উচু করে বাধা, কাপড়টা এমনভাবে পড়েছে যে পিঠ প্রায় সবটায় বেড়িয়ে আছে। মহিলাটি কিছুক্ষন দেখলো তিথীর হাবভাব। কিছুক্ষণ দেখার পর তিথীর সামনে এসে দাড়ালেন উনি। আকস্মিক সামনে এসে দাড়ানোতে কিছুটা হকচকিয়ে গেলো তিথী। পরক্ষনেই নিজেকে সামলে নিয়ে ভ্রু বাকা করে রুক্ষ কন্ঠে মহিলাটিকে জিজ্ঞাসা করলো…
— কি চাই? এইভাবে সামনে দাড়ালেন কেন?
মহিলাটি পান চিবুচ্ছিলো। পানের পিকটা একপাশে ফেলে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকালেন উনি তিথীর দিকে। মোটা গলায় কর্কশ কন্ঠে বললেন…
— আমার মহাল্লায় আইয়া আমারেই জিগাও মাইয়া কি চাই। কইত্তে আইছো? মতলব কি?
— আপনার মহল্লা মানে?
— এই মহাল্লার সর্দারনি আমি।
তিথী একটু দম নিলো। মহিলাটির দিকে তাকিয়ে পা থেকে মাথা পর্যন্ত পরখ করলো তিথী৷ তারপর বললো…
— আপনাদের এই মহাল্লায় একটা রুম হবে?
— কি করবা? পান চিবুতে চিবুতে বললেন মহিলাটি।
— রুম দিয়ে মানুষ কি করে? থাকার জন্যই বলছি।
— আর কেডায় থাকবো?
— আমি একাই।
— মা বাপ নাই?
— নাহ।
— বিয়া সাদী হয় নাই?
এইবার বেশ বিরক্তই হলো তিথী। তবুও নিজেকে সামলে নিয়ে মেজাজ ঠান্ডা করে বললো…
— কেউ নেই আমার। একাই থাকবো আমি।
— টিকবার পারবা এইহানে একলা?
— কেন? কপাল কুচকে বললো তিথী।
— যুবতী সুমত্তা মাইয়া, আজকালকার পুলাপাইন তো বুঝোই৷ একলা থাকো জানলে জ্বালাইবো তোমারে।
তিথী কিছুক্ষণ কি যেন ভাবলো। তারপর বললো..
— সে চিন্তা আপনাকে করতে হবেনা। আমার নিজের প্রটেকশন আমি নিজেই নিতে পারবো। ঘর আছে কিনা সেইটা বলেন।
— আছে একটা ঘর। ২০০০ টেকা ভাড়া। কিন্তু অগ্রিম ৫০০ টেকা দেওন লাগবো। বাকিটা পরে দিলেও হইবো। দিবার পারবা নি? দিবার পারলেই ঘর পাইবা।
তিথী এতিমখানায় থাকাকালীন নিজের হাতখরচের জন্য আশেপাশের কয়েকটা বাচ্চাকে প্রাইভেট পড়াতো৷ যাদেরকে পড়াতো তারা যথেষ্ট বড়লোক ছিলো। তাই টিউশনির বেতন বাবদ ভালোই ইনকাম হতো ওর।
এতিমখানা থেকে চলে আসতে হবে ভেবেই কিছু টাকা জমিয়েছিলো তিথী। বিপদে যেনো কাজে লাগাতে পারে। এই মুহুর্তে অনেকগুলো টাকাই আছে ওর কাছে। যা দিয়ে প্রায় ২ মাস কেটে যাবে ওর নির্বিঘ্নে।
মহিলাটি জোরে ধমকিয়ে বললো..
— কি গো মাইয়া। চুপ মাইরা রইছো কেন? টেকা থাকলে কও, ঘর দেই৷ নাইলে আগে বাড়ো। ফাও প্যাচাল পারবার পারুম না।
তিথী বললো..
— টাকা আছে আমার কাছে। আপনি ঘর দেন আগে।
— আহো আমার লগে।
তিথী মহিলাটির পিছন পিছন গেলো। মহিলাটি একটা ঘরের সামনে গিয়ে দরজাটা খোলে তিথীকে নিয়ে ঘরে গেল।
ঘরটার অবস্থা খুবই খারাপ। চারিদিকে নোংরা।
তিথীকে ঘরটা দেখিয়ে মহিলা বললো…
— থাকবার পারবা তো এইহানে?
— খুব পারবো৷ ঘরটা মনোযোগ সহকারে দেখতে দেখতে বললো তিথী।
— কেমনে থাকবা? তোমার লগে ওই ব্যাগডা ছাড়া দি কিচ্ছুই নাই। কেমনে কি করবা।
তিথী মহিলার কথাকে পাত্তা না দিয়ে ব্যাগ থেকে ২০০০ টাকা বের করলো। পুরোটাই মহিলার হাতে দিয়ে বললো৷
— পুরো এক মাসের ভাড়া অগ্রিম দিয়ে দিলাম। এই নেন, ধরেন।
মহিলার তিথীর দিকে পলকহীন ভাবে তাকিয়ে থেকেই টাকাটা ওর হাত থেকে নিলো। নরম গলায় তিথীকে বললো.
— কইত্তে আইসো মাইয়া তুমি?
— এতিমখানা থেকে।
— কেন? তোমার বাড়িঘর নাই? এতিমখানায় ছিলা কেন?
— এতিমখানায় মানুষ কেন থাকে খালা?
মহিলাটি আর কিছু বললো না। মেয়েটার জন্য দরদ হতে লাগলো মহিলাটির।
কিছুক্ষণ অপলকভাবে তাকিয়ে দেখলো সে তিথীকে। উচ্চতা প্রায় ৫’৩” হবে। দেহের গড়ন যথেষ্ট ছিপছিপে । উজ্জল শ্যামলা বর্ণের মেয়েটি, চোখদুটো বড় টানাটানা। চেহারায় মায়া মায়া একটা ভাব আছে৷
মহিলাটিকে একদৃষ্টিতে নিজের দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে তিথী বললো..
— কি দেখেন খালা?
— কই কিছুনা তো৷ নিজের চোখদুটো অন্যদিকে ফিরিয়ে নিলো মহিলাটি। তারপর বললো…
— ওই যে সামনে ঘরটা দেখতাছো, ওইটা আমার ঘর। কিছু লাগলে আমারে ডাক দিও মাইয়া। আর কেউ কিচ্ছু কইলে বা পুলাপাইনে যদি বিরক্ত করে তাইলে শুধু আমারে একবার ডাকবা। আমার নাম জমিলা। দেখবা এই জমিলা ওগোরে এমন হাল করুম যে বাপের জন্মে ভুলবার পারবোনা৷
তিথী কিছু বললো না।
মহিলাটি চলে যেতে লাগলো। কি যেনো মনে করে আবারও পিছনে ঘুরে বললো….
— কি গো মাইয়া, নাম কি তোমার।
— তিথী।
ঘরটা দেখতে দেখতেই জবাব দিলো তিথী।
….
বিকেল পেরিয়ে প্রায় সন্ধ্যা নামতে শুরু করেছে। সারাদিন কিছু খাওয়া হয়নি। পেটের খিদেয় প্রাণ যায় যায় অবস্থা।
তিথী দ্রুত বাইরে বেরোলো। বাজারে গিয়ে একটা বালতি, মগ, জগ, কয়েকটা হাড়ি পাতিল, বটি বাটি, একটা মাদুর, কিছু হাটবাজার আর কিছু অত্যাবশকীয় জিনিস কিনল সে। হোটেলে গিয়ে দুটো রুটি আর একটু ডাল ভাজি কিনে নিয়ে রুমে ফেরত এলো সে।
রুটি দুটো খেয়ে বালতি ভরে পানি এসে রুমটাকে ভালো করে পরিষ্কার করে ঝকঝকে করে ফেললো।
মাদুর টা ফ্লোরে বিছিয়ে ব্যাগথেকে একটা মোটা কাথা আর একটা চাদর বের করে এর উপর বিছিয়ে নিলো। সাথে একটা বালিশ ও আর একটা পাতলা কাথা একপাশে রাখলো গায়ে দেওয়ার জন্য। ব্যস হয়ে গেলো ওর থাকার জায়গা।
রাতের খাবার জন্য টুকটাক তরিতরকারি কিনে এনে নতুন হাড়িতে চাপিয়ে চুলায় বসিয়ে দিলো।
শুরু হলো ওর নতুন দিন, নতুন যাত্রা।

সারাদিন অনেক ধকল গেছে ওর উপর দিয়ে। বিছানায় গা এলিয়ে দিতেই ঘুম বাবাজি এসে ওর চোখদুটো দখল করে দিলো।
মাঝরাতে হটাৎ করেই ধরফরিয়ে উঠে তিথী। আবারো সেই স্বপ্নটা দেখেছে ও। যেটা প্রায় প্রতিরাতেই দেখে থাকে সে। মোবাইল টা বের করে দেখে প্রায় ৩ টা বাজে। টিউশনের টাকা দিয়ে একটা বাটন সেট কিনেছিলো তিথী। সেটাই বের করলো ও।
আবারও শুয়ে পরলো তিথী। ঘুম আসছেনা। চোখদুটো বন্ধ করে নিয়েছে যেনো ঘুম আসে। কিন্তু নাহ, চোখে শুধু সেই আসছে, যে ছিলো তার ছোটবেলার খেলার সাথী। চোখটা বন্ধ করলেই এখনো ওর মুখটা চোখে ভাসে স্পষ্ট। তিথী জানেনা সে এখন কোথায় আছে। জানেনা কি রকম দেখতে হয়েছে। তিথী এও জানেনা, সেই বন্ধুটি তাকে মনে রেখেছে কিনা, তিথী শুধুই জানে, এই বন্ধুটিকে সে প্রাণের চাইতেও বেশি মিস করে।
..
শত কাকের কর্কশ ডাক, বস্তিবাসীর অকথ্য কুকথা আর হট্রগোলের শব্দে ঘুম ভাঙ্গে তিথীর। চোখদুটো ডলতে ডলতে বাইরে বেরোয় সে। ওকে বের হতে দেখে জমিলা এগিয়ে এলো ওর দিকে। বললো…
— ঘুম কেমন হইলো মাইয়া?
— জ্বী খালা। ভালোই হইছে।
— রাইতে কোনো সমস্যা হয় নাই তো?
— নাহ। কোনো সমস্যা হয় নাই।
ওদেরকে কথা বলতে দেখে বস্তির আরো কয়েকজন মহিলা এগিয়ে এলো ওদের দিকে। জমিলাকে লক্ষ করে বললো….
— মাইয়াডা কেডা জমিলাবু। আগে তো কোনোদিন দেহি নাই। নয়া নাকি?
— হু, কাইলকাই উঠছে ওই ঘরে। তিথীর রুমের দিকে ইশারা করে বললেন জমিলা।
===

বেলা ১০ টার দিকে ঘরের দরজা লাগিয়ে একটা ফাইল আর সাইড ব্যাগটা হাতে নিয়ে বেরিয়ে গেলো তিথী। ফাইলের ভিতর তার এস.এস.সি আর এইচ.এস.সি এর সার্টিফিকেট৷ আরো কতগুলো দরকারী কাগজ। এগুলো নিয়েই বেরিয়ে গেলো তিথী। উদ্দেশ্য চাকরি খোজা।
সারাদিন এদিক ওদিক ঘুরাঘুরি করেও তেমন কোনো লাভ হলোনা তিথীর। কোথাও কোনো কাজ নেই। যে কয়েকটা কাজের সন্ধ্যান পেয়েছে ও সেখানেই গিয়েছে। কিন্তু লাভ হয়নি। ওর যে শিক্ষাগত যোগ্যতা, সেটা যায় না কাজের সাথে। স্নাতক, সম্মান পাশ ছাড়া কোনো জব নেই আজকাল। ইন্টার পাশে চাকরি খোজা আর মরীচিকার পিছনে ঘুরা প্রায় একই রকম মনে হচ্ছে তিথীর কাছে। তবুও হাল ছাড়বেনা তিথী। যেভাবেই হোক একটা কাজ ওকে যোগাড় করতেই হবে। না হলে চলবে কিভাবে।
সারাদিন বাইরে ঘুরাঘুরি করে কাজের জন্য এদিক ওদিক ছুটাছুটি করে সন্ধ্যায় ক্লান্ত শরীর নিয়ে ঘরে ফিরেছে তিথী। শরীরটা বেশ দুর্বল লাগছে ওর। রান্না করতে ইচ্ছা করছেনা । বেশ খিদেও পেয়েছে। পেটের খিদে পেটে নিয়েই বিছানায় গা এলিয়ে দিলো তিথী। ঘুমের রাজ্যে পাড়ি জমালো কিছুক্ষণের মধ্যেই। এশার আযান এর কিছুক্ষণ পরই ঘুম ভেঙ্গে গেলো তিথীর। আড়মোড়া দিয়ে উঠে বসলো ও। চারিদিকটায় কিছুক্ষণ চোখ বুলিয়ে বাইরে গিয়ে দাড়ালো তিথী। ওর ঘর থেকে কিছুটা দুরেই একটা জটলা বাধা। কি হচ্ছে বুঝতে চেষ্টা করলো ও। কিছু বুঝার আগেই সেই জটলা টা থেকে একটা বিধঘুটে কন্ঠ ভেসে আসলো।
— ওই দেখ, কি সুন্দর মাইয়া। নয়া মাল মনে হইতাছেনা? আয় তো দেহি, মালডা কেডা।
আরো কয়েকজন একই কথার তালে তাল মিলালো৷ তিথী দাড়িয়ে আছে এখনো।
কয়েকজন ছেলে এগিয়ে এলো তিথীর কাছে। দেখেই বুঝা যাচ্ছে মা বাবার অবাধ্য হয়ে উচ্ছন্যে যাওয়া বখাটে ছেলে ওরা। তাসের আড্ডা দিচ্ছিলো। জোয়া খেলছিলো হয়তো।
ওদেরকে আসতে দেখে তিথী নিজের ঘরের দিকে পা বাড়ালো। সাথে সাথেই একটা ছেলে বলে উঠল
— ওই মাইয়া, দাড়া। যাস কই? আমরা আইতাছি দেখোস নাই।
তিথী দাড়িয়ে গেলো। পিছনে ফিরে ওদেরকে দেখলো কিছুক্ষণ। ছেলেগুলো এতোক্ষণে ওর সামনে এসে দাড়িয়েছে। তিথী বললো…
— আমাকে দিয়ে আপনাদের কি দরকার?
— দরকার মেলা। নাম কি তোর? নতুন আমদানি নাকি?
— ভদ্রভাবে কথা বলুন। শক্ত গলায় বললো তিথী।
ছেলেগুলো হু হু করে হেসে দিলো। হাসতে হাসতে একজন আরেকজনের গায়ে ঢলে পরতে পরতে বললো..
— হুনছোসনি তোরা, মালডা আমগোরে ভদ্রতা শিখাইতে আইছে। হাহাহা, করেই আবারো বিধঘুটে হাসি হাসতে লাগলো।
তিথীর গা জ্বালা করছে। এখানে দাড়িয়ে থেকে লাভ নেই। রান্না করতে হবে ওকে। তিথী চলে যেতে নিলে খপ করে একজন ওর হাতটা ধরে ফেললো। তিথী রক্তচক্ষু নিয়ে হাতটার দিকে তাকালো একবার। লোকটি বললো..
— তোর হাত দেহি মেলা নরম। এতো নরম হাত তো জীবনেও দেহি নাই। ওই তোরাও ধইরা দেখ একবার। ধইরা শান্তি পাইবি। অন্যদের কে ইঙ্গিত করে বলল ছেলেটা। বাকিরা যখন আসলো তিথীর হাত টা ধরতে, মাথাটাই বিগড়ে গেল ওর। এক ঝটকায় হাতটা ওদের কাছ থেকে ছাড়িয়ে দৌড়ে নিজের রুমে চলে গেলো। বিশালাকৃতির বটিটা নিয়ে আবারো ঘর থেকে বাইরে এসে দাড়িয়ে হুংকার দিয়ে বলতে লাগলো…
— আয় এইবার কে আসবি। আমার হাত ধরার খুব শখ, তাইনা? আমার হাত খুব নরম? একে অপরকে দাওয়াত দিতেছিস আমার হাত ধরার জন্য?
আয় তোগো কত সাহস। আজ এই নরম হাত দিয়া তোগোরে কাইটা যদি কুত্তারে না খাওয়াইছি তই আমার নাম তিথী না।

To be Continue….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here