হৃদয়ও_মাঝারে-১০,১১

0
1158

#হৃদয়ও_মাঝারে-১০,১১
তন্বী ইসলাম
১০

দুপুরে বাসায় ফিরে আবারও চারপাশটায় চোখ বুলালো, সবকিছু ঠিকঠাক করে গুছানো হয়েছে কিনা।
জমিলাসহ বাকিদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে তল্পিতল্পা গুলো টানতে টানতে রাস্তার পাশে এসে দাঁড়ালো। একটা খালি রিক্সা পেয়ে উঠে গেলো হোস্টেলের উদ্দেশ্যে। রিক্সাওয়ালাকে জায়গার ঠিকানা বলে দেওয়ায় রিক্সাওয়ালা নিজমনেই এগুতে লাগলো সেদিকে। হোস্টেলটা খুব ভালো করেই চিনেন উনি। তাই তিথীকে খুব একটা কষ্ট করে এনিয়ে বিনিয়ে ডিটেইলস এ বলতে হলোনা৷
রিক্সায় বসে ভাবতে লাগলো তখনকার কথা, ইনাম নামটা খুব পরিচিত একটা নাম, তাই বলে এই ইনামই সেই ইনাম হবে তেমন তো কথা নেই। তাছাড়া অনামিকা তো বললো ইনাম উনার বিজনেস পার্টনারের ছেলে৷ কিন্তু তিথী তো জানে, ইনামদের কোনো বিজনেস ছিলো না। সেটা ভেবেই তখন চলে এসেছিলো অনামিকার বাসা থেকে।
.
রিক্সার ঝাকিতে ধ্যান ভাংলো তিথীর। ভ্রু কুচকে রিক্সাওয়ালাকে বললো
-কি ব্যাপার? এভাবে ঝাকি দিলেন কেন?
-আপ্নের হোস্টেলে আইয়া পরছি মা।
তিথী চারপাশটায় চোখ বুলালো। রিক্সা থেকে নেমে ভাড়া মিটিয়ে হোস্টেলের গেইটের সামনে যেতেই ফারিনকে দেখতে পেলো সে। ফারিন হাসিমুখে দাঁড়িয়ে আছে। তিথীর হাত থেকে একটা ব্যাগ নিয়ে ভিতরে ঢুকলো দুজনেই।
ভিতরে ঢুকেই লম্বা শাওয়ার নিলো তিথী। ফারিনের বেডের পাশের তিথীর বেড। বেডে এসে শুয়ে পরলো তখনই। ফারিন মুচকি হেসে বললো
-খুব পরিশ্রম করেছো বোধহয় আজ।
-তাতো হয়েছেই। তবে এখন থেকে বোধহয় আর এতোটা চাপ পরবেনা।
-কেন?
-বারে, এখন থেকে তো আমাকে আর রান্নার ঝামেলাটা পোহাতে হবে না।
ফারিন হাসলো তিথীর কথায়। ওর হাসির কারণ জিগ্যেস করায় ফারিন জবাব দিলো
-সবেতো এলে। হোস্টেলের খাবার যে কতোটা স্বাদের খুব শীঘ্রই টের পাবে।
-আচ্ছা! খাবার খারাপ হলেও তেমন কিছু করার নেই৷ একটু সময় পাবো, এটাই অনেক।

সারাটা বিকেল ঘুমিয়ে পার করলো তিথী। সন্ধার আযানের আগে ঘুম ভাংলো তিথীর। ঘুম থেকে উঠেই লাফিয়ে উঠলো সে। পাশের বেডেই ফারিন বসে বই পড়ছিলো, তিথীকে এভাবে লাফাতে দেখে অবাক হয়ে বললো
-কি ব্যাপার তিথী? কি হয়েছে? এমন করছো কেন?
তিথী মন খারাপ করে আনমনেই বললো
-ইশ ইভানার প্রাইভেট টা আজ মিস হয়ে গেলো, আর অনামিকা তো আজ আমাকে আস্ত গিলে খাবে।
তিথীর কথার আগামাথা কিছুই বুঝলো না ফারিন। অবাক হয়ে বললো
-মানে? কি বলছো তুমি?
এইবার তিথীর জ্ঞান ফিরলো। সে সজ্ঞানে ভাবতে লাগলো আজ সে ছুটি নিয়েই এসেছে। ফারিন এখনো জিজ্ঞাসুভাবে তাকিয়েই আছে ওর দিকে। ফারিনকে বললো
-এতো ভেবোনা তো, খারাপ একটা স্বপ্ন দেখেছিলাম, সেটার ঘোরেই ছিলাম এতোক্ষণ।
-ওহ।
সন্ধ্যার পরে টেবিলের সামনে বসে বই এর দিকে তাকিয়ে বিড়বিড় করে পড়তে লাগলো তিথী। বই নিয়ে বসার সুযোগ সে পায় না কখনই। আজ তাই সুযোগটা হাতছাড়া করছেনা। যদিও হোস্টেলে উঠায় পড়ার সুযোগ হয়ে উঠবে কিছুটা। আজ সে পুরোপুরি ফ্রী, তাই পুরোটা সময় সে কাজে লাগাবে।

রাতে খাওয়া শেষ করে এসে একটা উপন্যাসের বই নিয়ে বসলো ফারিন। তিথী কিছুক্ষণ সেটার দিকে তাকিয়ে থেকে বললো
-কি মজা পাও এইসব ছাইপাঁশ পড়ে?
-এটা মোটেও ছাইপাঁশ না তিথী। একটা রোমান্টিক উপন্যাস এটা।
-সে যাইহোক, আমার মোটেও পছন্দ না এইসব।
-এইবার পড়েই দেখো, ধারণা পাল্টে যাবে।
-উচিত পড়া পড়ার সময় পাইনা, ওইসব পড়বো কখন। মুখ বাকা করে উল্টোদিকে ফিরে শুয়ে পরলো তিথী। ফারিন তিথীর দিকে তাকিয়ে নিঃশব্দে হাসলো, পরক্ষণেই আবার পড়ায় মন দিলো।
রাতের শেষভাগে ঘুম ভাংলো তিথীর। আজ কোনো স্বপ্ন দেখে ঘুম ভাংগেনি। নতুন জায়গা, নতুন পরিবেশ, সেজন্যেই বোধহয় ঘুম ভেংগে গেলো আজ।
আস্তে করে উঠে বাইরে বেরোলো তিথী। হোস্টেলটা একটা তিন তলা ফ্ল্যাট। আর তিথীর রুমটাও তিন তলাতেই। বেলকনিতে এসে রাস্তার দিকে ফিরে দাঁড়িয়ে আছে তিথী। দৃষ্টি একদম রাস্তা বরাবর। কুকুরগুলো আরামে ঘুমিয়ে আছে। মাঝেমধ্যেই একটা দুইটা গাড়ি কুকুরগুলোকে পাশ কাটিয়ে চলে যাচ্ছে। গাড়ির শব্দে কুকুরগুলোর ঘুমের বেশ ব্যাঘাত ঘটছে। তিথী দৃষ্টি ফিরিয়ে নিলো। ফযরের আযান দিচ্ছে কোথাও কোথাও..
তিথীর কানে ভেসে আসছে আযানের সেই মুল্যবান বাক্যটা.
“ঘুম থেকে নামাজ উত্তম ”
তিথী দেরি করল না। ওয়াশরুম এ গিয়ে ফ্রেশ হয়ে অযু করে ফিরে এলো রুমে। বাকিরা এখানো ঘুমে টুইটুম্বুর। তিথী একনজর সেদিকে তাকিয়ে পরক্ষণেই চোখ সরিয়ে নিলো। ব্যগ থেকে জায়নামাজ টা বের করে বিছিয়ে কিবলা মুখ করে দাঁড়ালো।

শুক্রবার হওয়ায় ইভানাকে পড়ানোর ঝামেলাটা আজ নেই। কিন্তু অনামিকার বাসায় তো যেতেই হবে। হালকা নাস্তা সেড়ে নিজেকে পরিপাটি করে সেখানকার উদ্দেশ্যেই রওনা করলো তিথী। ফারিন বুঝতে পারলোনা, শুক্রবারে কিসের টিউশনি থাকে। তিথীকে জিজ্ঞাসা করলো
-আজ তো তোমার টিউশনি থাকার কথা না, তাহলে যাচ্ছো কোথায়?
-কাজে।
-কিসের কাজ? শুক্রবারে কোনো কর্মস্থল খোলা থাকে নাকি?
-যারা বাসায় মেইডের কাজ করে তাদের শুক্রবার আর শনিবার বলে কিছু নেই ফারিন। স্মিথহাস্যে বললো তিথী।
ফারিন বিস্ময়ে বিস্ফোরিত হয়ে বললো
-মানে? তুমি বুয়ার কাজ করো তিথী? How is it possible?
-কেন পসিবল না ফারিন? তুমিতো জানো, আমার কেউ নেই। তো আমাকে তো কিছু না কিছু করতেই হবে তাইনা? আমি এতিম আর গরিব বলে কেউ তো দুমুঠো ভাত দিয়ে আমাকে সাহায্য করবেনা।
ফারিন এখনো বিস্ময়ের ঘোরে আছে।
তিথী বুঝতে পেরে বললো
-সত্যিই আমি বুয়ার কাজ করি ফারিন। এ কারণে যদি আমাকে তুমি তোমার বন্ধুত্বের যোগ্য বলে মানতে না পারো, আমি কষ্ট পাবোনা৷
ফারিন আচমকায় তিথীকে জরিয়ে ধরলো। তিথী ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলো হঠাৎ। থতমত করে বললো
-কি হয়েছে ফারিন? আর ইউ ওকে?
-তোমার প্রতি শ্রদ্ধাটা আজ বেড়ে গেলো তিথী। কিভাবে পারো তুমি এতো পরিশ্রম করতে, সেই সাথে পড়াটাও সামলাচ্ছো সুন্দরভাবে, I can’t believe this.
-আমার জায়গায় থাকলে তুমিও হয়তো তাই করতে।
-হয়তো তোমার মতো স্ট্রাগল আমি করতে পারতাম না।
-আমি যাই এখন। দেরি হয়ে যাচ্ছে।

অনামিকার বাসায় গিয়ে ঘটলো আরেক বিপত্তি। গতকাল সন্ধ্যায় তিথী না আসায় অনামিকা নিজেই খাবার টেবিলে এনে সার্ভ করেছিলো। রাতে খাবারগুলো গরম করে সেলফে রাখতে গিয়ে হঠাৎ কিছু একটার সাথে ধাক্কা খেয়ে মেঝেতে পড়ে গিয়ে কোমড়ে ব্যথা পায় মহিলা। অনেক কষ্টে মেঝে থেকে উঠে কোনোমতে বিছানায় গিয়ে শুয়ে পরেন তিনি। ডক্টরকে ফোন করে আনিয়ে ট্রিটমেন্ট নিয়েছে যদিও। ব্যাথাটা কমেনি তবুও। তখন থেকেই বিছানা ছেড়ে উঠতে পারছেনা৷
সেই কারণে তিথীকে রান্নাবান্না, ঘর গুছানোর পাশাপাশি নেহাত অনামিকার সেবাও করতে হচ্ছে।
-এই মেয়ে, আমাকে এক বাটি স্যুপ করে দাও তো।
-আনছি ম্যম। রান্নাঘর থেকে জবাব দিলো তিথী।
-তারাতাড়ি আনো প্লিজ। আমাকে আবার মেডিসিন নিতে হবে।

অনামিকার এই কথায় তিথী কোনো জবাব দিলো না। যেকোনো কাজে তারাহুরো করা উনার যেনো জন্মগত অভ্যাস।
তিথী স্যুপের বাটিটা একটা ট্রেতে নিয়ে অনামিকার রুমে গেলো। অনামিকা তখন ম্যাগাজিন নিয়ে ব্যস্ত। তিথী পাশের টি টেবিলে বাটিটা রাখতে রাখতে বলল
-ম্যাম, আপনার স্যুপ রেডি।
অনামিকা আঁড়চোখে তাকালো একবার তিথীর দিকে। ভ্রু নাচিয়ে সামান্য খিটখিটে মেজাজ দেখিয়ে বললো
-ওখানে রাখলে কেন?
-তাহলে কোথায় রাখবো ম্যাম?
-খাইয়ে দাও আমাকে। ম্যাগাজিনে চোখ বুলাতে বুলাতে বললো অনামিকা।
তিথী বেশ অবাক হয়ে বললো
-আমি আপনাকে খাইয়ে দিবো ম্যাম?
-তো, এখানে কি আর কেউ আছে নাকি? তোমাকেই বলেছি। খানিকটা কর্কশ গলায় বললো অনামিকা।
-দিচ্ছি। একটা লম্বা শ্বাস টেনে বলল তিথী।

অনামিকাকে খাওয়ানোর এক ফাঁকে বাসার কলিং বেল বেজে উঠলো। দরজা টা খোলার জন্য তিথীকে বলতেই হাতে থাকা স্যুপের বাটিটা টেবিলের উপর রেখে সে চলে গেলো দরজার কাছে। ওড়নাটা ঠিক করে দরজাটা খুলে দিতেই গতকালের ইনাম নামে আসা ছেলেটাকে দরজার সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেলো, যে কিনা অনামিকার বিজনেস পার্টনারের ছেলে। ইনাম কে দেখে তিথী এক পাশ গিয়ে দাঁড়ালো। ধীরপায়ে ইনাম রুমের ভেতরে প্রবেশ করেও তিথীর দিকে একদৃষ্টিতে কিছুটা সময় তাকিয়ে রইলো। তিথী সংকুচিত হলো, ইনাম সেটা খেয়াল করে চলে গেলো অনামিকার রুম বরাবর। সে চলে যাবার পরপরই চটজলদি করে দরজাটা লাগিয়ে আবারও অনামিকার রুমের পা বাড়ালো তিথী। দরজার কাছাকাছি গিয়েও সে দাড়িয়ে পরলো। ভেতরে যাওয়া কি ঠিক হবে?
অনামিকার উল্লাসিত কন্ঠস্বর শুনতে পেলো তিথী। তিনি ইনাম কে উদ্দেশ্য করে বলছেন
-আরে ইনাম বাবা! হঠাৎ কোনো খবর না দিয়েই যে চলে এলে।
-অসুবিধায় ফেলেছি কি? বসতে বসতে বললো ইনাম।
অনামিকা হাস্যোজ্জ্বল মুখে বললো
-কি যে বলো না, আমি বেশ খুশি হয়েছি তুমি আসাতে। অবাকও হয়েছি কিছুটা। হঠাৎ না জানিয়ে এভাবে হুট করে আসার ছেলে তো তুমি নও।
ইনাম হাসলো। ভারী গলায় বললো
-আপনার এক্সিডেন্টের খবর পেয়ে আসলাম। বাবাকে বোধহয় আপনিই জানিয়েছিলেন। বাবার কাছ থেকেই শোনলাম। উনিই পাঠালেন আমাকে।

আরো কিছুটা সময় ওদের কথোপকথন চললো। এক ফাঁকে অনামিকা বললো
-তা কি খাবে বাবা?
ইনাম স্মিথ হেসে বললো
-আপাতত কফিই হোক।
অনামিকা কিছুটা জোরে চেচিয়ে তিথীকে ডেকে বলে উঠলো
-তিথী, এই তিথী..
অনামিকার ডাকের সাথে সাথেই তিথী চলে এলো সেখানে। অনামিকা কিছুটা রাগত্ব স্বরে বলল
-এতবার ডাকা লাগে কেন, সাথে সাথে আসতে কি পায়ে ব্যাথা লাগে?
তিথী একবার ইনামের দিকে তাকালো, ইনামও কিছুটা বিস্ময় নিয়ে তাকিয়ে আছে তিথীর দিকে। পরক্ষণে দৃষ্টি অনামিকার দিকে নিক্ষেপ করে তিথী বললো
-সাথে সাথেই তো এলাম। দেরি করি নি তো।
অনামিকা কিছুটা ক্ষেপে গিয়ে বললো
-আবার মুখে মুখে কথা.. যাও, কফি করে নিয়ে এসো তারাতাড়ি।
তিথী আর কথা বাড়ালো না। আরেকবার ইনামের দিকে তাকিয়ে সে চলে গেলো কফি বানিয়ে আনতে।

তিথী সেখান থেকে চলে যাবার সাথে সাথেই ইনাম কিছুটা বিস্ময়ে অনামিকা কে প্রশ্ন করলো
-একে গতকালকেও দেখেছিলাম, আবার আজও। যদিও গতকাল দেখেই বুঝে গেছিলাম সে আপনার মেইড, তবে কেন যেনো এই মেয়েটাকে আমার কাছে মেইডের মতো লাগে না। মেয়েটা কে? আপনার পরিচিত?
অনামিকা মুখ বাকালো, কটুবাক্যে বলল
-এই লেভেবের মানুষ কোনোভাবেই আমার পরিচিত হতে পারে না। ও স্রেফ আমার বাসার কাজের বুয়া। কাজ করে, তার বিনিময়ে টাকা দেই।
ইনাম দরজার দিকে আবারও তাকালো। অনামিকা সেটা খেয়াল করে বললো
-ওদিকে কি দেখো?
ইনাম একটা দীর্ঘ নিশ্বাস ছেড়ে বললো
-ওর নাম টা যেনো আপনি কি বলেছিলেন?
-তিথী।
-আমার খুব পরিচিত একটা মানুষের নামও তিথী। যদিও ওর সাথে আমার দেখা সাক্ষাৎ নেই, তবে আজ এতবছর পর নামটা শুনে তার কথা খুব মনে পরে গেলো।

আপনমনে নিচের দিকে তাকিয়ে রাস্তা দিয়ে হেঁটে হোস্টেলের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে তিথী। অনামিকার বাসা থেকে হোস্টেল বেশ কিছুটা দূরে, হেঁটে গেলে অনেক সময়ের ব্যাপার। তবে ঐ যে, হেঁটে গেলে কিছু টাকা হলেও বেঁচে যাবে। সামনের গলি পেরিয়ে যখন অন্য গলিতে গিয়ে পা রাখলো ঠিক তখনই আবারও কিছু একটার সাথে ধাক্কা খেলো তিথী। তিথী সামনে তাকিয়ে দেখলো সেই গুন্ডামার্কা বাইকটা, আর বাইকের উপর আরামে ঘুমিয়ে আছে সেই রবিন নামের গুন্ডাটা। তিথী মুখ ফুলিয়ে নিজ মনে বলে উঠলো
-এই গুন্ডা কি পুরো শহরটাকে নিজের বেডরুম মনে করে নাকি কে জানে। যেখানে যাই, সেখানেই তার ঘুম।

তিথী পাশ কাটিয়ে চলে যেতে লাগলো আবারও। পেছন থেকে এবার রবিন বলে উঠলো
-যে উঠতে বসতে, যেতে আসতে আন্ধার মতো হোচট খায়, তার মাথায় এরচেয়ে ভালো চিন্তা আর আসবে না। যাইহোক, এটাই আমার বেডরুম। বাই দ্যা ওয়ে, আমার বেডরুমে তুমি কি করছো?

চলবে…..

#হৃদয়ও_মাঝারে-১১
তন্বী ইসলাম

তিথী পাশ কাটিয়ে চলে যেতে লাগলো আবারও। পেছন থেকে এবার রবিন বলে উঠলো
-যে উঠতে বসতে, যেতে আসতে আন্ধার মতো হোচট খায়, তার মাথায় এরচেয়ে ভালো চিন্তা আর আসবে না। যাইহোক, এটাই আমার বেডরুম। বাই দ্যা ওয়ে, আমার বেডরুমে তুমি কি করছো?
তিথী রাগান্বিত চোখে তাকালো রবিনের দিকে। ওর এমন তাকানোতে রবিনের বেশ হাসিই পেলো। মুখ টিপে হাসছে সে। তিথী ঝাঝালো গলায় বললো
-আপনার বেডরুমটা যেহেতু পাব্লিক প্লেসে, তাই পাব্লিক এখানে আসবেই। দয়া করে কোনো প্রাইভেট প্লেসে বেডরুম করুন, তাহলে কেউ আপনার ধারেকাছেও আসবে না।

তিথী আর কোনো কথা বাড়ানো না। দ্রুত গতিতে এগিয়ে চললো নিজের গন্তব্যের দিকে। হোস্টেলে ফিরেই সে নিজের বেডে গিয়ে লম্বালম্বিভাবে শুয়ে পরলো। রবিনের কথা মনে হলে এখনো তার রাগ পাচ্ছে। পাশের বেডে বসে ফারিন উপন্যাসের বইয়ে মুখ গুজেছিলো। তিথীর এমন ভারী মুখ দেখে সে আন্দাজ করতে পারলো কিছু একটা হয়েছে। সে বেডসাইডের টেবিলের উপর হাতে থাকা উপন্যাসের বইটা রেখে তিথীর বেডে এসে বসলো। তিথীর মুখের দিকে তাকিয়ে বুঝার চেষ্টা করতে লাগলো ঠিক কি হয়েছে ওর। তিথী ফারিনকে এভাবে দেখে উঠে বসলো। স্বাভাবিক গলায় বললো
-কি দেখো এভাবে?
-তোমায়।
তিথী মুচকি হেসে বললো
-হঠাৎ আমাকে দেখার কারণ?
-বুঝার চেষ্টা করছি কিছু হয়েছে কিনা। মুখ দেখে বুঝতে পারছি কিছু একটা হয়েছে।
তিথী আবারও হেসে বললো
-একটা গুন্ডা ছেলে খুব জ্বালাচ্ছে। রাস্তাঘাটে প্রায়ই সামনে এসে পরছে, তার সাথে ত্যাড়াবাকা কথা তো আছেই। আজ আসার পথেও বেশ কিছু কথা বললো, মাথাটাই গরম হয়ে গেছে জানো তো।
ফারিন আঁড়চোখে তাকালো তিথীর দিকে। কিছু বুঝার চেষ্টায় সে। তিথী ওকে এমন ভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে বললো
-আবার কি দেখো?
-প্রেম প্রেম আভাস পাচ্ছি। তোমাদের মধ্যে সামথিং সামথিং কিছু একটা হবে।

তিথীর মুখের হাসিটা মুহূর্তেই উধাও হয়ে গেলো। ফারিন মুখ কালো করে বললো
-এমা, মুখের অবস্থা এমন করলে কেন? আমি তো খারাপ কিছু বলি নি।
-তুমি যেটা আন্দাজ করছো সেটা কখনো সম্ভব না ফারিন।
-কেন? বিস্ময়ে প্রশ্ন করলো ফারিন। তিথী বেড থেকে উঠে জানলার কাছে গেলো। বাইরে কিছুটা সময় অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে বললো
-এ মনটা অনেক আগেই কাউকে দিয়ে রেখেছিলাম। সে আমার হাতের নাগালের বাইরে, দৃষ্টির অগোচরে। তবে আজো তাকে খুজে ফিরি আমি। মনে মনে প্রার্থনা করি তাকে ফিরে পাবার। আমার মন জুরে আজো সে বসত করছে। জানি না তাকে এ জীবনে ফিরে পাবো কিনা। যদি পাই, তবে আল্লাহর কাছে লাখ লাখ শুকরিয়া, আর যদি না পাই…
তিথী থামলো এবার। ফারিন অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে তার দিকে। এ তিথীর মনে যে কেউ আছে তা ফারিনের কাছে সম্পুর্ন অবিশ্বাস্য। সে বিশ্বাসই করতে পারছে না তার কথা। তিথীকে দেখে কোনোভাবেই ঠাহর করা সম্ভব না যে তার মনেও কেউ বাসা বেধে আছে।

তিথী আবারও বললো
-যদি না পাই তবে ধরে নিবো সে আমার কপালে নেই। তবুও আমার মনে সেই রয়ে যাবে সারাজীবন। এ জীবনে তাকে ছাড়া আমি আর কাউকে ঠাঁই দিতে পারবো না। তবে আমার দৃঢ় বিশ্বাস, আমি তাকে পাবোই।
ফারিন এবার তিথীর কাছে এগিয়ে এলো। ওর পিঠে হাত রাখতেই তিথী ফিরে তাকালো ফারিনের দিকে। ফারিন খেয়াল করলো তিথীর চোখের কোনে বিন্দু বিন্দু পানি। ফারিন স্মিথ হেসে ওর ওড়নার মাথা দিয়ে তিথীর চোখের পানি মুছে দিতে দিতে বললো
-বিশ্বাস করো তিথী, তোমার মতো মেয়ের চোখে পানি একেবারেই মানায় না।
তিথী নিজেকে সামলে নিয়ে মুচকি হাসলো। বললো
-আগামীকাল ভার্সিটি যাচ্ছো তো?
-আমি তো প্রতিদিনই যাই। তুমি যাবে কিনা সেটা বলো।
-হুম যাবো, অপেক্ষা করো আমার জন্য। অনামিকা মেডামের বাসার কাজগুলো ঝটপট করেই চলে আসবো।
-ওহ রিয়েলি? উচ্ছ্বসিত গলায় বললো ফারিন।
-হুম।
-আচ্ছা, আমি তোমার জন্য অপেক্ষায় থাকবো।
তিথী মাথা নাড়ালো।

রাতের খাওয়া শেষে দুজনে বসে গল্পগুজব করতে লাগলো আবারও। এ রুমে আরো কয়েকজন মেয়ে আছে, তাদের সাথেও মুটামুটি সখ্যতা তৈরি হলো তিথীর। তিথী বেশ খুশিই আছে এখানে এসে। এতদিনের একাকিত্ব জীবনের চেয়ে এখানকার হোস্টেল লাইফটাই বেশি সুন্দর। কত কত সমবয়সী মেয়েরা, একসাথে বসে গল্পগুজব করতে ভালোই লাগে। অনেক রাত অব্দি ওরা জেগে ছিলো। একটা নির্দিষ্ট সময় পর হোস্টেল সুপার এসে কড়া করে নির্দেশ দিয়ে গেলো ঘুমানোর জন্য। হোস্টেল সুপার মহিলাটি বেশ স্বাস্থ্যবতী। তবে চোখেমুখে, চেহারায় কেমন যেনো কঠোরতার ভরপুর। মুখে হাসি নেই বললেই চলে। হোস্টেলের প্রায় সব মেয়েরাই উনাকে বেশ ভয় পায়। অগত্যা সবাইকে শুয়ে পরতে হলো।
তিথীর যখন ঘুম ভাঙ্গে তখন ভোর ৫ টার কাছাকাছি। তিথী হুড়মুড় করে উঠে বসে। ফারিন সহ বাকি মেয়েরা এখনো গভীর ঘুমে। তিথী বেড থেকে নেমে ওয়াশরুমে গিয়ে ঢুকে। প্রায় মিনিট পাঁচেক পর সে তারাহুরো করে বেরিয়ে আসে বাইরে। কোনোমতে রেডি হয়ে বেরিয়ে যায় ইভানাদের বাসার উদ্দেশ্যে।

অনেক ভোর থাকার আর তারাহুরো করে যাওয়ায় প্রায় বিশ মিনিটের মাথায় পৌছে যায় ইভানাদের বাড়িতে। এতে টিউশন টাইমের ১০ মিনিট পেরিয়ে যায়। তিথী দরজার কলিং বাজাতে যাবে ঠিক তখনই দরজাটা কেউ খুলে দেয়। অবাক হয় তিথী, বিস্ময়ে সে সামনে তাকায়। দরজার দুপাশে দু’হাত ঠেকিয়ে সামনে দাঁড়িয়ে আছে রবিন। তিথী আতংকিত গলায় প্রশ্ন করে
-আ আ আপনি?
-হ্যাঁ আমি। কেন, কোনো সমস্যা?
-আপনি এখানে কি করছেন? সামান্য রাগান্বিত হয়ে বলে তিথী।
রবিন মৃদু হেসে বললো
-আমি এখানে যাই করি না কেন, এতো সকালে তুমি এখানে কেন এসেছো সেটা আগে বলো। আমি যতদুর জানি তুমি তো বিকেলে পড়াতে আসো। সকালে আসো এটা তো জানা ছিলো না।
তিথী রাগী স্বরে বলে
-কথা ঘুরাবেন না। এখানে কি করছেন আপনি সেটা বলেন? আমিতো জানতাম আপনি ধনী, এরপরেও এতো ভোরে অন্য লোকের বাড়িতে কি করছেন? চুরি করার মতলবে আসেন নি তো?
তিথীর কপালে ভাজ। রবিন কিছুটা সময় বিস্ময়ে তাকালো তিথীর দিকে। এরপর আচমকা হুহু করে হেসে উঠলো। তিথী রাগী গলায় বললো
-হাসছেন কেন?
-হাসবো না? তুমিইই তো বললে আমি ধনী, তো আমি যদি ধনীই হই তাহলে চুরি কেন করবো?
-গুন্ডারা তো কত ধরণের নেশাই করে থাকে, হয়তো নেশাপানির জন্য বাসা থেকে কোনো টাকা পাচ্ছেন না রাইট? সেজন্যই এ বাসায় চুরি করতে আসছেন? দাঁড়ান আমি মজা দেখাচ্ছি।

তিথী জোরে জোরে চিৎকার করে ইভানার মাকে ডাকতে শুরু করলো
-ভাবী… ভাবী.. ও ভাবী। ইভানা.. কোথায় তোমরা।
রবিন দরজার সামনে দাঁড়িয়ে হাসছে। ততক্ষণে ইভানার মা চোখ কচলাতে কচলাতে দরজার সামনে চলে এসেছে। তিথীকে দাড়িয়ে থাকতে দেখে তিনি বললেন
-ওহ তিথী! তুমি চলে এসেছো? তা বাইরে দাঁড়িয়ে আছো কেন, ভেতরে আসো। আমি ইভানাকে ডেকে দিচ্ছি।
তিথী অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে ইভানার মায়ের দিকে। ওকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে ইভানার মা বললেন
-কি হলো, আসছো না কেন?
-আপনি উনাকে কিছু বলবেন না? বিস্ময়ে রবিনকে দেখিয়ে বললো তিথী।
-একে কি বলবো আমি?
-উনি তো চুরি করতে এসেছে আপনাদের বাড়িতে। আর আপনার কিছু বলার নেই?
ইভানার মা আরেকনজর রবিনের দিকে তাকালো। এরপর তিথীর দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বললো
-ও তো এ বাড়িরই ছেলে, আমার দেবর। খামোকা চুরি কেন করতে যাবে।
তিথী বিস্ফোরিত হলো। রবিন বললো
-খামোকাই চেচিয়ে শরীরের এনার্জি লস করলে। বাই দ্যা ওয়ে, আমি বেরোচ্ছি ভাবি।

তিথীকে পাশ কাটিয়ে রবিন বাইকের চাবিটা আঙ্গুলে পেচিয়ে বেরিয়ে গেলো বাসা থেকে। তিথী এখানো অবাক, ওর বিশ্বাসই হচ্ছেনা এ ছেলের বাড়িতেই সে টিউশনি করে৷

ইভানাকে পড়িয়ে ঠিক সময় মতো অনামিকার বাসায় গিয়ে পৌছায় তিথী। আজ অনামিকাও তেমন কোনো ঝামেলা করেনি, কটু কথাও শোনায় নি। যে কারণে ঠিক সময়মত ঘরের কাজকর্ম সেড়ে সে বেড়িয়ে আসতে পারে। অনামিকার বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসা মাত্রই ওর ফোনে কল আসে। ফারিন কল করেছে। ফোন রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে ফারিন বলে উঠলো
-তুমি আসছো তিথী?
-হুম, বেরিয়েছি। কিছুক্ষণের মধ্যেই চলে আসবো।
-আচ্ছা তারাতাড়ি চলে আসো। আমি রেডি আছি। হোস্টেলের গেইটের সামনেই দাঁড়িয়ে আছি তোমার জন্য।
-হুম।

ভার্সিটিতে বেশ ভালোই সময় কাটলো আজ। তিথীর মনটা আজ বেশ ফুরফুরে। আজ সারাদিন সবকিছু ভালোই হচ্ছে। অনামিকাও আজ কিছু বলেনি, টাইমলি সেখান থেকে বেরিয়েও আসতে পেরেছে। ভার্সিটিতেও আসতে পেরেছে৷ সব মিলিয়ে বেশ খুশি তিথী। দুপুর দু’টোর দিকে ভার্সিটি থেকে বেরিয়ে পরে তিথী। ফারিনও বেরিয়ে পরে ওর সাথে। বাসায় আসতে আসতে আড়াইটার মতো বেজে যায়। তিথী ব্যাগটা বেড সাইডের টেবিলের উপর রেখে চটপট করে বাথরুমে ঢুকে পরে। গোসল সেড়ে নিয়ে দুপুরের খাওয়া খেয়ে আবারও ইভানাদের বাসার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয় তিথী। যাওয়ায় সময় ফারিন ওকে বলে
-তোমার স্ট্রাগল দেখে আমার নিজেরই ক্লান্তি লাগে তিথী। তুমি ক্লান্ত হও না?
-শারীরিক, মানসিক.. দুদিক থেকেই আমি বড্ড ক্লান্ত ফারিন। কিন্তু কি করবো বলো, আমার মতো মানুষদের যে ক্লান্তি দেখাতে নেই।

ইভানাদের বাসায় যাওয়ার পথে হঠাৎ ই রাস্তায় জমিলার সাথে দেখা হয়ে যায় তিথীর। জমিলা ওকে না দেখলেও তিথী দেখতে পেয়ে উনাকে ডাকে। তিথীর ডাক শুনে জমিলা দাঁড়ায়। তিথী এগিয়ে গিয়ে সালাম দেয় উনাকে। জমিলা বেশ তারাহুরো করে সালামের উত্তর দেয়। তিথী হাসিমুখে বলে
-কেমন আছেন খালা?
-ভালাই। তা এই বেলা যাও কই?
জমিলার মুখে হাসি নেই, কথা বলার মাঝেও কোনো রশকষ নেই। বুঝা গেলো তিথীর সাথে কথা বলতেও তার মাঝে কোনো উৎসাহ নেই। তিথী বলে
-প্রাইভেট পড়াতে যাচ্ছি। তা আপনি কোথায় যাচ্ছেন খালা?
-যাইতেছি বাজারে। ময়নাগো বাড়ি যামু, কিছু কিনাকাডি কইরা আনি।
-ওহ! তা ময়না কেমন আছে খালা?
-খুব ভালা আছে। মাইয়া আমার খুব সুখী। ভালা ঘরে বিয়া অইছে, তার সুখ আর দেখে কে। যাউক গা, তোমার সাথে অতো কথা কওনের সময় আমার নাই। তুমি তোমার কাজে যাও বাপু। যদি বস্তিতে ঘরের দরকার পরে তাইলে আইয়ো যে, মন ভইরে কথা কমু নে।
জমিলা তিথীকে পাশ কাটিয়ে চলে গেলো। তিথী একটু হাসলো। এই ছোট্রে জীবনটাতে সে অনেক কিছুই দেখেছি। দু’মুখো সাপ দেখেছে, আবার দু’মুখো মানুষও দেখেছে। দু’মুখো সাপ বাস্তবিকই ভয়ংকর, কিন্তু দু’মুখো মানুষ তারচেয়েও বেশি ভয়ংকর। তারা স্বার্থের সময় মিষ্টি, আর স্বার্থ ফুরিয়ে গেলেই অতি তিক্ত।

সাড়ে তিনটা নাগান ইভানাদের বাসার সামনে এসে পৌছে তিথী। গেইট দিয়ে বাসার ভেতর ঢুকতেই যাবে এমন সময় দেখলো ছোট্র একটা মেয়ে গুটিগুটি পায়ে এগিয়ে আসছে এদিকেই। তিথীর বুঝতে অসুবিধা হলো না এটা মিথীলা, যে ইভানার সাথে ওর কাছেই পড়ে। তিথী অপেক্ষা করলো মিথীলার জন্য। মিথীলা তিথীর কাছাকাছি আসতেই সুন্দর করে সালাম দিলো। তিথী সুন্দর করে সালামের উত্তর দিয়ে মিথীলার ছোট্র হাতটাতে ধরে বললো
-আজ একা এলে কেন?
-আমি তো বড় হয়ে গেছি ম্যাম, তাই আজ একাই এসেছি।
-ও তাই? হেসে বললো তিথী।
ইভানাদের বাসায় ভেতরে ঢোকামাত্র একটা বড়সড় শক খেলো তিথী। ওদের ড্রয়িংরুমের সোফায় পায়ের উপর পা তুলে বসে ফোন চাপছে রবিন। আর তার পাশেই বসে আছে ইনাম। ইনামকে এখানে দেখে সংকোচিত হয় তিথী। মনের ভেতর কিছুটা ভয়ও কাজ করে তার। এ ছেলে এখানে কি করছে? অনামিকার বাসায় কাজ করার ব্যাপারে তাদের বলে দিবে না তো আবার? জড়তা নিয়ে সামনে এগুতে থাকে তিথী। এমন সময় ইনামের নজর এলো তিথীর দিকে। সে নিজেও তিথীকে এ বাসায় দেখে অবাক হয়ে যায়। সে অবাক হয়ে বলে উঠে
-আরেহ, তুমি তিথী না? তা এখানে কি করছো? এ বাসাতেও কি কাজ করো নাকি?

চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here