হৃদয়ও_মাঝারে-২০ অন্তিম পর্ব

0
1234

#হৃদয়ও_মাঝারে-২০ অন্তিম পর্ব
তন্বী ইসলাম

ইনাম ফারিনকে আর কিছু না বলে তিথীর দিকে তাকালো। বললো
“তোমার বন্ধুকে নিয়ে আমার সাথে এসো তিথী। আমরা আজই রেজিস্ট্রি করে বিয়ে করবো।
ইনামের কথায় আবারও চমকালো ফারিন। তিথী বিস্ময়ে বললো
“আপনি কি সত্যিই ওকে বিয়ে করতে চান?
ইনাম ভারী গলায় বললো
“এই মুহূর্তে নিশ্চয়ই আমি মজার ছলে আছি না।।
তিথী বুঝতে পারলো ইনাম সিরিয়াল। সে ফারিনের দিকে তাকিয়ে বললো
“তোমার কি কোনো আপত্তি আছে?
ফারিন অসহায় চোখে একবার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা ভাই আর বাড়ির অন্যদের দিকে তাকালো। এরা দাঁড়িয়ে আছে ফারিনকে নিয়ে গিয়ে বুড়োটার সাথে বিয়ে দেওয়ার জন্য। ফারিন হঠাৎ কাঁদতে লাগলো। তিথী একহাতে জড়িয়ে ধরলো তাকে। ফারিন কান্নাবিজড়িত গলায় বললো
“আমি ঐ দুটো বিয়ে করা আংকেলকে বিয়ে করবোনা…

এতকিছুর মাঝেও এই কথাটা শুনে তিথীর হাসিই পেলো, তবুও সে হাসিটাকে দমিয়ে ইনামের দিকে তাকিয়ে মৃদুস্বরে বললো
“আমার মনে হচ্ছে ওর কোনো আপত্তি নেই৷ কিন্তু আজ তো অলরেডি সন্ধ্যে হয়ে গেছে। রেজিস্ট্রি কি করে করবেন?
ইনাম কিছুক্ষণ কি যেন ভেবে বললো
“বিয়েটা তো করা যাবে এটলিস্ট। পরে সুযোগ বুঝে রেজিস্ট্রি করে নিবো। আপতত তোমরা দুজন আমার সাথে এসো।
ওদেরকে নিয়ে এগিয়ে যাবার পথে ইনাম খেয়াল করলো ফারিনের বাড়ির লোকেরা এখনো দাঁড়িয়ে আছে। ইনাম তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে ওদের দিকে তাকিয়ে রাগীস্বরে বললো
“এরপরও যদি তোমাদের মধ্যে কেউ এসে আবারও ঝামেলা করো তাহলে শুনে রাখো, আমার চেয়ে খারাপ কিন্তু আর কেউ হবেনা।

_______

বাস্তবে ফিরে এলো তিথী। রিয়ানার চোখে পানি ঝরছে এখনো। রবিন তিথীর পাশে এসে দাঁড়ালো। ফারিনের হাতটা ইনাম আগের চেয়েও শক্ত করে ধরলো এবার। রিয়ানার দিকে তাকিয়ে মৃদু গলায় বললো
“সেদিনই আমরা বিয়ে করেছি, যেদিন তুমি আমাকে ফিরিয়ে দিয়েছিলে। এরপর যদিও অনেকগুলো দিন সে হোস্টেলেই থেকেছে। এই বিয়েটার জন্য আমরা কেউই প্রস্তুত ছিলাম না, তাই নিজেদের একটু সময় দিচ্ছিলাম। ধীরে ধীরে আমাদের সম্পর্কটা আর দশটা কাপলের মতই স্বাভাবিক হয়ে উঠলো, আমিও নিয়ে আসলাম তাকে আমার কাছে। কাউকে জানাই নি, নিজেদের মতো থাকছি। খুব সুখেই আছি আমরা।
রিয়ানা আরেকবার ফারিনের মুখের দিকে তাকালো। স্মিথ হেসে বললো
“ইউ আর সো লাকি গার্ল। ইনামের মতো একজন ছেলেকে স্বামী হিসেবে পাওয়া ভাগ্যের ব্যপার। যাইহোক, তোমাদের বাকি জীবন সুখের হোক।
রিয়ানা এবার রবিনের দিকে ফিরে তাকালো। রিয়ানাকে নিজের দিকে ফিরতে দেখে রবিন চোখ সরিয়ে নিলো। রিয়ানা আবারও নিঃশব্দে হাসলো। তিথীর কাছে এগিয়ে গিয়ে কাঁপা কাঁপা গলায় বললো
“তোমাকে আমার অনেক ভালো লাগে বিশ্বাস করো। এতকিছুর পরেও তোমার প্রতি আমার একটুও রাগ জন্মায় নি, এটাই বুঝি তোমার স্বার্থকতা। আমি জানতাম না রবিনের জীবনে এমন কেউ আছে যাকে সে জীবনের চেয়েও বেশি ভালোবাসে। ইনাম ভাইয়া সেদিন বলেছিলো অবশ্য, কিন্তু আমি ভেবেছিলাম সে আমাকে পাওয়ার জন্য রবিনের নামে আমার কাছে উল্টাপাল্টা বলছে। হয়তো আমিও একটু স্বার্থপর হয়ে গেছিলাম, তাই রবিনের সাথে অন্যকাউকে কল্পনাও করতে পারছিলাম না। যাইহোক, যা হয়েছে ভালোর জন্যই বোধহয় হয়েছে।

রিয়ানার চোখে পানি টলমল করছে। ইভানার মা এসে রিয়ানাকে ধরলো। চিন্তিত হয়ে বললো
“তুই ঠিক আছিস রিয়ানা?
কান্নার মাঝেও রিয়ানা জোরপূর্বক হাসলো। বোনের দিকে তাকিয়ে মৃদু গলায় বললো
“এই আসরে আজ দুটো বিয়ের আয়োজন করো আপু, আমি আজ দু’দুটো বিয়ের আনন্দ উপভোগ করতে চাই। বোনের এমন অবস্থা দেখে ইভানার মায়ের মনটাও খারাপ হয়ে গেলো। তবুও তিনি নিজেকে সামলে নিলেন, রিয়ানাকে একপাশ থেকে ধরে বললেন
“আল্লাহ তোর কপালে যতটুকু লিখেছেন, তুই ঠিক ততটুকুই পাবি। এর চেয়ে বেশিও না, কমও না। আজ যা হচ্ছে, সব আল্লাহর ইচ্ছেতেই হচ্ছে। সবচেয়ে বড় কথা, তুই এ যুগের মেয়ে। তাই সবকিছুকে সহজ ভাবেই নিবি আশা করছি।
রিয়ানা ইভানার মায়ের দিকে তাকায়। চাহনিতে অসহায়ত্বের ছাপ। রিয়ানা মৃদু হেসে নরম গলায় বোনকে বললো
“আমাকে নিয়ে চিন্তা করো না তো আপু, দু’টো বিয়ে, সেগুলো সামাল দিতে হবে তো নাকি। চলো, আমরা ব্যবস্থা করি।
ইভানার মা কিছু বলার আগে আকরাম চৌধুরী বললেন
“দুটো’ বিয়ে কার?
“বারে, ইনাম ভাইয়া আর রবিন ভাইয়ার।
রিয়ানা রবিন আর ইনাম দুজনের দিকেই নজর ফেরালো। ইনাম চট করে বললো
” কিন্তু আমাদের তো বিয়ে অনেক আগেই হয়েছে।
“লুকিয়ে একা একা করেছিলেন, এবারে আমাদের সকলের সামনে করবেন। আজ নাহয় আমি আমার সহ্যশক্তি আর ধৈর্যশক্তি… দুটোরই পরীক্ষা দিলাম।
রিয়ানা আবারও হাসলো। ওর হাসির পেছনে যে অগণিত দুঃখ লুকিয়ে আছে সেটা সেখানে উপস্থিত সকলেরই অবগত।

তিথীকে আর ফারিনকে সুন্দর করে সাজানো হয়েছে। ইনাম আর রবিন দুজনেই শেরওয়ানিতে নিজেদের সাজিয়ে নিয়েছে। কিছুক্ষণ আগ নাগাদও রবিনের মুখে ছিলোনা কোনো খুশির ছাপ.. তবে এই মুহূর্তে পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ হিসেবে রবিন নিজেকেই দাবী করছে। ইনামের মনেও আজ প্রফুল্লতা। বিয়েটা আগে হলেও সেটা সকলেরই অজানা ছিলো। আজ সবাই জানে সেটা, নিজের কাছে নিজেকে বেশ হালকা লাগছে। তিথী আর ফারিনকে একসঙ্গে স্টেজে আনা হলো। ওদেরকে স্টেজে আনতেই রবিন আর ইনাম দুজন একসঙ্গে ফিরে তাকালো তাদের দিকে। মুগ্ধ নয়নে তিথীর দিকে তাকিয়ে রইলো রবিন। তিথী নিচের দিকে তাকিয়ে বসে আছে, তবে চোখমুখে স্পষ্ট লাজুকতার ছাপ। রবিনের মুখে মৃদু হাসি। রবিন চোখ ফেরালো, মনে মনে ভাবলো, ‘এতদিন কেন তিথীর পরিচয়টা সে জানতে পারলো না। তাহলে তো আরো আগেই প্রিয় মানুষটাকে নিজের করে পেতো। অন্যদিকে ফারিনের দিক থেকেও চোখ ফেরানো দায় হয়ে গেছে ইনামের। মেয়েটাকে আজ এতটা মিষ্টি লাগছে তা বলার বাইরে।

সন্ধ্যের আগ নাগাদ দুজনের বিয়ের কাজই সম্পন্ন হলো। যেহেতু ইনাম ওদের রিলেটিভ তাই তাদেরকেও এ বাসাতেই রাখা হলো। রাতে থাকার জন্য দুটি বিবাহিত কাপলের জন্য পাশাপাশি রুম চুজ করা হয়েছে। তবে সেই রুমে এখনো তাদের কাউকেই ঢুকতে দেওয়া হয় নি। ফারিন আর তিথী’কে নিয়ে বসানো হয়েছে রিয়ানার রুমে। অন্যদিকে ইনাম আর রবিন ছন্নছাড়ার মতো করে এদিক ওদিক ঘুরাঘুরি করছে। তাদেরকে না দেওয়া হচ্ছে নিজেদের রুমে যেতে, আর না দেওয়া হচ্ছে বউদের সাথে দেখা করতে। উফ, কি ঝামেলাটাই না করছে ওরা। তিথী ঘোমটা টেনে নিঃশব্দে বসে আছে, অন্যদিকে ফারিন মুচকি মুচকি হাসছে। ওর হাসি দেখে অবাক হলো তিথী। খুবই আস্তে করে বললো
“হাসছো কেন?
“বিয়ে করেছি সেই হবে, সংসারও হয়ে গেছে। কিছুদিন পর বাচ্চাকাচ্চা হবে,, আর এখন কিনা বাসরের জন্য বসে অপেক্ষা করছি। ভাবতেই হাসি পাচ্ছে আমার। ফারিনের কথা শুনে তিথীও নিঃশব্দে হাসলো। এমন সময় ইভানা এসে প্রবেশ করলো এই রুমে। তিথীর পাশে বসে কিছুটা সময় চুপটি করে বসে রইলো সে। একসময় বলল
“এখন থেকে তাহলে সপ্তাহে সাতদিনই আমাকে পড়াবে তাইনা! যাক ভালোই হলো, পড়ালেখা করতে আমার বেশ লাগে।

রাত এগারোটা নাগাদ ইনাম আর রবিনের কাছে এগিয়ে গেলো রিয়ানা। ধীরপায়ে সে গেলো তাদের কাছে৷ রবিন আর ইনাম তখনও বারান্দাতেই ছিলো। রিয়ানার আসার শব্দ পেয়ে দুজনেই ফিরে তাকালো। রিয়ানার চোখেমুখে না পাওয়ার বেদনা স্পষ্ট। তবুও সেটার রেশকে যথাসম্ভব দূরে সরিয়ে হাসিমুখে বলল
“দুজনার বাসর সাজানো কমপ্লিট.. এবার কি আমি আমার বকশিস পাবো না?
রিয়ানা তার হাতটা বাড়িয়ে দিলো তাদের দুজনেরই সামনে। রবিন আর ইনাম একবার দুজনার মুখের দিকে চাওয়া চাওয়ি করলো। এরপর হাসিমুখে রিয়ানার হাতে একটা টাকার বান্ডেল দিয়ে বললো
“পুষিয়ে দিলাম।।
রিয়ানা হাসলো। নিরব কন্ঠে বললো
“ক্ষতটাও যদি পুষাতে পারতে!

ওর কথায় রবিন আর ইনাম দুজনেরই মুখটা হঠাৎ আঁধারে ছেয়ে গেলো। রিয়ানা পরিস্থিতি বুঝতে পেরে বললো
“তারাতাড়ি নিজেদের রুমে যাও। নববধুরা যে অপেক্ষা করছে।
যাওয়ার আগে ওরা দুজন আবারও রিয়ানার দিকে ফিরে তাকালো। মেয়েটা চাতক পাখির ন্যায় তাকিয়ে আছে তাদের দিকে। ইনাম দীর্ঘনিশ্বাস ছাড়ালো, মেয়েটাকে খুব ভালোবাসতো সে। কিছু সময়ের ব্যবধানে ভালোবাসা টা অন্য কারো জন্য হয়ে গেলো। তবে বর্তমানে তার নেই কোনো পিছুটান। সমস্ত ভালোবাসা এখন শুধু ফারিনকে ঘিরে। রবিনের যদিও এতটা অনুভূতি হচ্ছেনা রিয়ানার জন্য। কারণ সে কখনোই রিয়ানাকে তেমন ভাবে দেখেনি। তার ভালোবাসা সম্পুর্নই ছিলো তার ছোট্রবেলার সাথী তিথীকে ঘিরে। তবে মেয়েটার এমন পরিণতিতে তারও খানিক খারাপ লাগছে।

দরজার ছিটকিনি আঁটকে ভেতরে প্রবেশ করলো রবিন।ওর আসার শব্দে মুখ তুলে তাকালো তিথী। ঠোঁটের কোনে তার স্মিথ হাসি। রবিন খাটের কাছে এগিয়ে যেতেই তিথী বিছানা ছেড়ে নামলো। রবিন ভাবলো তিথী বোধহয় তাকে সালাম করার জন্য নেমেছে। সে আগেবাগেই বলতে যাচ্ছিলো সালাম করার প্রয়োজন নেই, তার আগেই তিথী রবিনকে অবাক করে দিয়ে শক্ত করে দু’হাতে জড়িয়ে ধরলো। খানিক সময়ের জন্য হতভম্ব হয়ে গেলো রবিন। পরক্ষনে ঠোঁটের কোনে হাসি ফুটে উঠলো তার। দুহাতের বাহুতে বেধে নিলো তিথীকে৷ মৃদু গলায় বললো
“বড্ড জ্বালিয়েছো এতদিন।
“আমি জ্বালিয়েছি! বিস্ময়ে বললো তিথী ।
রবিন তিথীকে নিজের বাহুবন্ধনে রেখেই বললো
“তা নয়তো কে? তোমার অনুপস্থিতি আমাকে তিলে তিলে যন্ত্রণা দিয়েছে জানো। যখন জানলাম তুমি তোমার রিলেটিভের সাথে চলে গেছো, বিশ্বাস করো আমি পুরোপুরি ভেঙ্গে পরেছিলাম। তবে বিশ্বাস করিনি তুমি এমনটা করেছো। আমার মন বলছিলো মামা নিশ্চয়ই তোমার সাথে খারাপ কিছু করেছে। ছোট ছিলাম, তাই তেমন কিছু করতে পারিনি৷ যতই বড় হয়েছি, ততই তোমার স্মৃতি গুলো আমাকে আঁকড়ে ধরছিলো। মামার কাছে বার বার যেতাম, প্রশ্ন করতাম তোমার কথা। কিন্তু উনি কখনোই তোমার লোকেশন আমাকে জানায় নি, তুমি কোথায় আছে, কেমন আছো কিছুই জানতে পারিনি আমি। অনেক চেষ্টা করেছি তোমাকে খোঁজার, প্রতিবারই ব্যর্থ আমি।

রবিনের চোখে পানি। তিথী মাথা তুলে নিজের হাতের উল্টোপিঠে রবিনের চোখ মুছে দিলো। বললো
“এতো ভালোবাসতেন, তাহলে এতোটা কাছে থাকার পরেও কেন চিনলেন না আমায়।
“তুমিও তো আমায় ভালোবাসতে, তুমি কেন চিনো নি?
তিথী হাসলো। বললো
“শেষ পর্যন্ত আমিই কিন্তু খুঁজে বের করেছি আপনাকে।
রবিন আবারও শক্ত করে আঁকড়ে ধরলো তিথীকে। বললো
“আমি তোমাকে চিনি নি ঠিক, তবে তোমার নাম শোনার পর থেকেই কেমন একটা টান অনুভব করতাম। যেদিন তোমায় প্রথম দেখলাম, সেদিন মনে হয়েছিলো হারানো কিছু আমি ফিরে পেয়েছি। যতবার তোমাকে দেখেছি, ততবারই টানটা দৃঢ়ভাবে অনুভব করেছি।
“পাওয়ার পর কেমন অনুভূতি হয়েছে?
রবিন তিথীর মুখপানে তাকালো। কপালে আলতো করে ঠোঁট ছুইয়ে বললো
“তোমার হাতে পুতুলটা দেখার পর আমার কলিজায় ধক করে উঠেছিলো জানো? এক মুহূর্তের জন্য মনে হচ্ছিলো আমি আমার ভালোবাসা টা পেতে চলেছি। সত্যিই তাই হলো। আল্লাহর অশেষ রহমতে আমি তোমায় পেয়েছি।
“এবার আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করবেন না?

রবিন তিথীকে বিছানার প্রান্তে বসালো। ওয়ারড্রবের কাছে গিয়ে চাবিটা হাতে নিলো। ওয়ারড্রব খুলে সেখান থেকে সর্বপ্রথম একটা পুতুল হাতে নিলো। পুতুলটার দিকে দু’দন্ড তাকিয়ে থেকে তিথীর দিকে নজর ফেরালো। তিথী বিস্ময়ে তাকিয়ে আছে পুতুলটার দিকে। সে এগিয়ে গেলো রবিনের কাছে। ওর হাত থেকে পুতুলটা নিয়ে সেটাতে খানিক হাত বুলালো। চোখে পানি চলে এলো তার। বিস্ময়ে সে রবিনকে বললো
“আমি ভাবতেও পারিনি, আপনি আমার স্মৃতি টা এভাবে আগলে রাখবেন।
“তুমি কি ভেবেছিলে তোমাকে তোমার চাইতেও কম ভালোবাসি?
তিথী হেসে বললো
“মোটেও না।
রবিন তিথীর হাত থেকে পুতুলটা নিয়ে সেটা আবারও ওয়ারড্রবের ভেতর রেখে দিলো। সেখান থেকে আরেকটা প্যাকেট বের করে তিথীর হাতে দিলো সে। তিথী বিস্ময়ে বললো
“এটাতে কি আছে?
“খুলেই দেখো।

তিথী প্যাকেটটা খুলে দেখতে পেলো সুন্দর কারুকাজ করা দু’টো জায়নামাজ আছে সেখানে। তিথীর ঠোঁটে হাসি ফুটলো। রবিনের দিকে তাকিয়ে বললো
“কখন আনালেন?
“আগেই আনিয়ে রেখেছিলাম। নিয়ত করেছিলাম যদি তোমাকে ফিরে পাই তাহলে তোমাকে সাথে নিয়েই এই জায়নামাজে সর্বপ্রথম নামাজ আদায় করবো।
“আর না পেলে?
“কোনো এতিমখানা কিংবা মসজিদে দিয়ে দিতাম।
তিথী হাসলো। রবিন বললো
“তাহলে চলো আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করি। আল্লাহর নাম নিয়ে, আল্লাহর প্রতি মনে প্রাণে শুকরিয়া আদায় করে আমাদের নতুন জীবন শুরু করি!
তিথী আবারও রবিনকে জড়িয়ে ধরলো। মিষ্টি গলায় বললো
“হুম চলুন।

__________{সমাপ্ত}__________

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here