হৃদয়ের_শুভ্রতা?? পর্ব~১৯,২০

0
397

#হৃদয়ের_শুভ্রতা??
পর্ব~১৯,২০
#ফাবিহা_নওশীন
১৯

??
হৃদ ডিনার করে ছাদে গিয়েছিলো।ছাদ থেকে রুমে এসে দরজা বন্ধ করতেই চোখ গেলো বিছানার দিকে।শুভ্রা বিছানার এক পাশে চাদর গায়ে শুয়ে আছে।মুখ অন্য দিকে ঘুরানো।গতরাতের মতো মাঝে কুশন দেওয়া।
হৃদ দু’হাত ভাজ করে কিছু একটা ভাবলো দেন বাকা হেসে শুভ্রার দিকে এগিয়ে গেলো।আস্তে আস্তে বিছানায় উঠে যাতে শুভ্রার ঘুম না ভাংগে।তারপর কুশনগুলো নিয়ে একপাশে রেখে দিয়ে চাদর টেনেটুনে গায়ে জড়িয়ে শুভ্রাকে জড়িয়ে শুয়ে পরলো।
শুভ্রার ঘুমের মধ্যে মনে হচ্ছে কেউ ওকে ঝাপ্টে ধরে আছে।ঘুমঘুম চোখ খোলে বুঝতে পারলো হৃদ ওকে জড়িয়ে ধরে আছে।

শুভ্রা ঘুরতে চাইলে পারলো না।শুভ্রা তবুও চেষ্টা করছে হৃদের দিকে ঘোরার কিন্তু পারছেনা।শুভ্রার নড়াচড়ার কারণে হৃদের ঘুম ভেঙে গেলো।হৃদ ঘুমঘুম চোখে বললো,
—–এতো নড়ছো কেন?ঘুমাতে দেও।

শুভ্রা কিছুটা জোরে বললো,
—–আমাকে ছাড়ো তারপর ঘুমাও।

হৃদ মাতাল করা কন্ঠে বললো,
—–উমম,,বিয়ে করেছি আর বউকে জড়িয়ে ঘুমাবোনা তা কি হয়?নো বেবি।

—–আমাকে ছাড়ো বলছি,,

হৃদ শুভ্রার কোমড়ে জোরে চাপ দিয়ে বললো,
—–দেখ রাত দুপুরে ঘুমের বারোটা বাজাবি তো আমি তোর বারোটা বাজাবো।এখন তো জাস্ট জড়িয়ে ধরেছি বাড়াবাড়ি করবি তো গতরাতে যেটা হওয়ার ছিলো সেটা এখন হবে।

শুভ্রা আর কোনো কথা বললো না।আর না নড়াচড়া করছে।চুপ করে রইলো।হৃদ মুচকি হেসে শুভ্রার আরেকটু কাছে ঘেষে শুয়ে রইলো।

সকাল বেলায় শুভ্রার ঘুম ভাংতেই শুভ্রা দেখলো হৃদ আর ওকে জড়িয়ে ধরে নেই।আর না শুভ্রা অন্য দিকে মুখ ঘুরানো।ওরা দুজনেই একবালিশে মুখোমুখি হয়ে ঘুমিয়ে আছে।হৃদকে এতটা কাছে দেখে চোখ কপালে।হটাৎ করে হৃদের ঘুম ভেঙে যায়।হৃদ ছোট ছোট করে চোখ মেলে শুভ্রার বড়বড় চোখ দেখে মুচকি হাসলো।

শুভ্রা হৃদের হাসি দেখে সকাল সকাল ক্রাশ খেলো।হৃদ শুভ্রার কাছে থেকে আরো কাছে আসছে।ওর চোখে মুখে অজানা নেশা জড়ো হয়েছে।শুভ্রা হৃদের ঘোরের মধ্যে আটকে গেছে।হৃদের উষ্ণ নিশ্বাস গাঢ়তর হচ্ছে।শুভ্রা আবেশে চোখ বন্ধ করে ফেললো অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু ঘটার আশায়।
অনেকক্ষন কেটে যাওয়ার পরও কোনো কিছুর অস্তিত্ব অনুভব করতে না পেরে চোখ মেললো।
চোখ মেলে ওর চোখ চড়কগাছ।আশেপাশে হৃদ কেন কেউ নেই?
শুভ্রা বোকা বনে গেলো।
—–স্ট্রেঞ্জ।গেলো কই?এভাবে বোকা বানালো?

হৃদ ওয়াশরুমে বেসিনের আয়নার সামনে দাড়িয়ে হাসছে।
—–কি ভেবেছিস শুভ্রা আমাকে কষ্ট দিবি?এভয়ড করবি?বাট আমি তোর কোনো কিছুই কেয়ার করবোনা।অপমান অবহেলা কোনো কিছুই গায়ে মাখবোনা।দেখি তুই কতদূর কি করতে পারিস?কতদিন নিজের জেদ বজায় রাখতে পারিস।
তারপর কিছুক্ষণ আগের ঘটনা ভেবে হাসতে লাগলো।

হৃদ ফ্রেশ হয়ে এসে দেখে শুভ্রা চাদর দিয়ে মাথা ঢেকে শুয়ে আছে।হৃদ চাদর টেনে সরিয়ে ফেলে।শুভ্রা অগ্নি দৃষ্টি ছুড়ে দিলো হৃদের দিকে।হৃদ তারপর বললো,
—–বাড়ির বউ এতো বেলা করে ঘুমায় না।উঠে ফ্রেশ হ।

শুভ্রা চাদর টেনে নিয়ে বললো,
—–আমি উঠবো না তোমার সমস্যা?

হৃদ বললো,
—–নো,,আই হেভ নো প্রব্লেম।বাট দেরি করে নিচে গেলে সবাই ভাববে আমি সারারাত তোর উপর রোমান্টিক টর্চার করেছি।বাট আমি মাসুম ছেলে এমন অপবাদ কি করে নেই?

শুভ্রা হৃদের কথায় চোখ বড়বড় করে তাকালো।তারপর চাদর ছুড়ে ফেলে উঠে গেলো।
শুভ্রা ফ্রেশ হয়ে ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে এলো।হৃদ আয়নার সামনে দাড়িয়ে চুল সেট করছে।শুভ্রাকে দেখে বললো,
—–বউ এদিকে এসো।

শুভ্রা হৃদের এমন আদুরে ডাকে ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেলো।হৃদ ওকে ওভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে বললো,
—–কি হলো এসো?পা চলছে না?কোলে করে আনতে হবে?

শুভ্রা হৃদের দিকে তাকিয়ে নাক ফুলিয়ে আলমারির কাছে গেলো।হৃদ শুভ্রার হাত ধরে টেনে আয়নার সামনে দাড় করালো।তারপর হৃদ শুভ্রার হাতে টাই দিয়ে বললো,
—–টাই বাধো।

শুভ্রা ভ্রু কুচকে বললো,হোয়াট??

হৃদ শুভ্রার কোমড় জড়িয়ে ধরলো।তারপর বললো,
—–তুই কানে কম শুনিস?যতক্ষণ টাই বাধা না হবে তুই ছাড়া পাবিনা।এভাবেই থাকতে হবে।
হৃদ শুভ্রাকে নিজের সাথে আরেকটু মিশিয়ে নিলো।

শুভ্রা বিরক্ত হয়ে বললো,
—–এসব করে কি পাবে?জোর করে স্বামী স্ত্রীর সুন্দর সম্পর্ক গড়া যায়না।

হৃদ বললো,
—–দুরর,,সম্পর্ক কে গড়তে চায়?আমি চাই আমার বিয়ে করা বউ আমার সব দায়িত্ব পালন করুক।ইচ্ছে করে না করলে জোর করে করাবো।বিয়ে করেছি কি বউকে শোকেসে সাজিয়ে রাখতে?
নেও এবার টাই বাধো দেরি হয়ে যাচ্ছে।

শুভ্রা অগত্যা হৃদের টাই বেধে দিলো।টাই বাধা শেষ করতেই হৃদ শুভ্রাকে ঠেলে সরিয়ে দিলো।
তারপর অফিসের জিনিসপত্র নিয়ে বেরিয়ে গেলো।
শুভ্রা ভাবছে,
“নিজেই কাছে টেনে নিচ্ছে,নিজেই সরিয়ে দিচ্ছে?আমি অবহেলা করছি না অবহেলিত হচ্ছি?কোনটা?”
শুভ্রা গালে হাত দিয়ে ভাবতে বসে গেলো।

রোজের প্রচন্ড মন খারাপ।অরিত্র আর ওকে ফোন করেনি।সারারাত অপেক্ষা করেছে।কিন্তু কোনো ফোন আসেনি।রোজ অনেকবার ট্রাই করেছে কিন্তু অফ পাচ্ছে।রোজ চুপচাপ বসে নাস্তা করছে।শুভ্রা অনেকক্ষণ যাবত রোজকে দেখছে কিন্তু কিছু জিজ্ঞেস করতে পারছেনা।রোজ চুপচাপ নাস্তা করে উঠে গেলো।

শুভ্রাও নাস্তা শেষ করে রোজের পেছনে পেছনে যাচ্ছে।মেইনডোরের বাইরে যেতেই শুভ্রা রোজকে ডাকলো।শুভ্রার ডাক শুনে রোজ থেমে গেলো।
—–শুভ্রাপু কিছু বলবে?

শুভ্রা রোজের কাছে গিয়ে বললো,
—–কি হয়েছে তোর?চোখ মুখ এমন শুকনো কেন?মুখটা মলিন লাগছে কেন?অরিত্রের সাথে কিছু হয়েছে?

রোজ আমতা আমতা করে বললো,
—–না কিছু হয়নি।আসলে অরিত্রের সাথে এখন আগের মতো দেখা হয়না,কথা হয়না তাই একটু মন খারাপ।

শুভ্রা রোজের কাধে হাত দিয়ে বললো,
—–বোকা মেয়ে মন খারাপ করিসনা।পরীক্ষা শেষ তাই হয়তো ফ্যামিলি,ফ্রেন্ডদের সাথে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে।

—–হুম।

?
?

কেটে গেছে আরো এক সপ্তাহ।অরিত্র রোজের সাথে ফোনে টুকটাক কথা বললেও দেখা করে নি।রোজ অনেকবার বলেছে দেখা করার কথা কিন্তু অরিত্র নানা ব্যস্ততা দেখিয়ে বিষয়টি এড়িয়ে গেছে।আগের মতো কথাও বলে না।নিজ থেকে ফোনও করে না।রোজ ফোন করলে দুচার কথা বলে রেখে দেয়।

রোজ ক্যাম্পাসে বসে আছে।তখনই ওর এক ফ্রেন্ড বললো ও অরিত্রকে মাঠে বসে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে দেখে এসেছে।রোজের বিশ্বাসই হচ্ছে না।
রোজ তাই জিজ্ঞেস করলো,
—–তুই ঠিক দেখেছিস তো?

—–আরে হ্যা।একঘন্টা যাবত আড্ডা দিচ্ছে।আমি তো ভাবলাম তুই জানিস।তোর সাথে দেখা করতে এসেছে।

রোজ আমতা আমতা করে বললো,
—–হ্যা আমার সাথে দেখা করতেই এসেছে।আচ্ছা আমি যাই ওর সাথে দেখা করে আসি।

রোজের মনে মনে কষ্ট হচ্ছে।অরিত্র একঘন্টা যাবত ভার্সিটিতে এসেছে।বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিচ্ছে অথচ রোজকে বলে নি আসবে।কিংবা দেখাও করতে আসেনি।

রোজ দূর থেকে অরিত্রকে দেখছে।অরিত্র বন্ধুদের সাথে মাঠে বসে কথা বলছে।রোজ ওদের কাছে যায়নি।কিছুক্ষণ পর অরিত্র ওর বন্ধুদের সাথে উঠে ভার্সিটির গেইটের দিকে যাচ্ছে।রোজ সেটা দেখে পেছনে পেছনে যাচ্ছে।অরিত্র গেইটের বাইরে গিয়ে নিজের গাড়ির দরজা খোলছে।
রোজ অরিত্রের সামনে গিয়ে দাড়ালো।তারপর বললো,
—–অরিত্র!!

অরিত্র রোজের কন্ঠ শুনে থমকে গেলো।অরিত্র এমনভাবে রোজের দিকে তাকালো যেনো রোজকে আশাই করেনি।রোজ অরিত্রের হাত ধরে একপাশে টেনে নিয়ে গেলো কথা বলার জন্য।

রোজ অরিত্রের দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন ছুড়ে দিলো।
—–কি চলছে এসব?

অরিত্র মাথা নিচু করে আছে।রোজের থেকে দৃষ্টি লুকাচ্ছে।
রোজ সেটা দেখে বললো,
—–নো অরিত্র,আমার দিকে তাকাও।তুমি আমাকে এভাবে এভয়ড কেন করছো?তুমি আমার সাথে দেখা করতে চাওনা কেন?আজ তুমি ভার্সিটিতে এসেছো অথচ আমাকে অন্যের কাছ থেকে এই খবর শুনতে হয়।তুমি ঘন্টার পর ঘন্টা বন্ধুদের সাথে কাটাতে পারো আর আমার সাথে ৫মিনিট কথা বলার সময় তোমার নেই।কিসব ব্যস্ততা দেখাচ্ছো।এতো কিসের ব্যস্ততা তোমার?এন্সার মি।

অরিত্র কঠোর গলায় বললো,
——তোমাকে আমার সব কিছুর কৈফিয়ত কেন দিতে হবে?আমি আমার বন্ধুদের সাথে সময় কাটাবো না কার সাথে সময় কাটাবো সেটা আমার ব্যাপার।তুমি তোমার জায়গায় থাকো।

—–আমার জায়গা?আমার জায়গাটা কোথায়?আমি তোমার লাইফের কোথাও আমার জায়গা দেখতে পাচ্ছিনা।

অরিত্র চোখ মুখ শক্ত করে বললো,
—–কজ আমার লাইফে তোমার কোনো জায়গা নেই।তোমার প্রয়োজন আমার ফুড়িয়ে গেছে।

অরিত্রের মুখে এই কথা শুনে রোজের পায়ের নিচের মাটি সরে গেছে।প্রচন্ড ঝড় বইছে বুকের মাঝে।রোজ কাপাকাপা কন্ঠে বললো,
——অরিত্র তুমি এসব কি বলছো?

——হ্যা ঠিকি বলছি।প্লিজ লিভ মাই লাইফ।

রোজের চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি পড়ছে।অবাক চোখে অরিত্রকে দেখছে।অরিত্রের দৃষ্টি শূন্যে।রোজ কান্নামিশ্রিত কন্ঠে বললো,
—–তুমি আমাকে ভালোবাসোনা?

অরিত্র অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়ে বললো,
—–না।

—–তাহলে এতোদিন কি ছিলো?

অরিত্র চট করে বললো,
—–টাইমপাস।

রোজ চোখের পানি মুছে শুকনো হেসে বললো,
—–টাইমপাস ছিলো?তাহলে এত স্বপ্ন কেন দেখিয়েছিলে?

—–আমাকে যেতে হবে।তোমার সাথে ফালতু কথা বলে সময় নষ্ট করতে চাইনা।আর হ্যা আমাকে আর ডিস্টার্ব করবেনা।

রোজ চোখ মুখ শক্ত করে বললো,
—–তুমি কি ভেবেছো এই রোজ তোমার পেছনে পাগলের মতো ঘুরবে?নো।তুমি আমার পেছনে কুকুরের মতো ঘুরেছো,আমি তোমার কাছে যাইনি।আর না আজকের পর যাবো।তুমি এই রোজের যোগ্যই না।হীরা শুধু জহুরি চিনে রাস্তার ছেলে নয়।রাস্তার ছেলেদের মতো চরিত্রের ছেলেরা রাস্তার মেয়েদের যোগ্য রোজের নয়।

অরিত্র রোজের দিকে ঘুরে চেচিয়ে বললো,
—–মুখ সামলে কথা বলো।

—–চিতকার করবেনা।তোমার এই অন্যায়ের শাস্তি আমি তোমাকে দিতে পারতাম।কঠিন শাস্তি দিতে পারতাম কিন্তু আমি তা করবোনা।কারণ তুমি আমার অনেক উপকার করেছো নিজের চরিত্র সামনে এনে।থ্যাংক ইউ সো মাচ।
তোমার মতো ছেলেদের মুখে থু ছিটাতেও রোজ আসবেনা।গুড বাই।

রোজ দৌড়ে সেখান থেকে চলে গেলো।অরিত্র রোজের যাওয়ার দিকে চেয়ে আছে।তারপর গাড়িতে উঠে গাড়ি স্টার্ট দিলো।ফুলস্পিডে গাড়ি চালাচ্ছে।

~~~

শুভ্রা গাল ফুলিয়ে বেডে বসে আছে।হৃদ ল্যাপটপে অফিসের কাজ করছে।শুভ্রার সব প্ল্যান উল্টো হয়ে গেছে।
যেখানে শুভ্রা চেয়েছিলো হৃদকে শাস্তি দিবে সেখানে নিজেই শাস্তি পাচ্ছে।শুভ্রা হৃদকে অপমান অবহেলা করার সুযোগই পায়না।হৃদ সে সুযোগ দেয়না।শুভ্রা কিছু একটা করতে চাইলে হৃদ সব ভেস্তে দেয়।হুট করে কাছে টেনে নেয় আবার হুট করেই দূরে সরিয়ে দেয়।নিজের প্রয়োজনীয় কাজগুলো করিয়ে নিচ্ছে।শুভ্রা করতে না চাইলে বাধ্য করে করায়।শুভ্রার মনে হচ্ছে হৃদকে নাকানিচুবানি খাওয়াতে গিয়ে নিজেই নাকানিচুবানি খাচ্ছে।
হৃদ ল্যাপটপ থেকে চোখ সরিয়ে বললো,
—–সমস্যা কি তোমার?কাজ কি করতে দিবে না?

শুভ্রা অবাক হয়ে বললো,
—–আমি কি করলাম?

—–হ্যান্ডসাম,কিউট,হট ছেলেটাকে চোখ দিয়ে গিলে খাচ্ছো আবার বলছো কি করেছো?

শুভ্রা চোখ বড়বড় করে বললো,
—–কিহ!! হুহ আমার বয়েই গেছে।

—–বয়ে না গেলে যাও এক কাপ কফি বানিয়ে নিয়ে এসো।

—–পারবোনা।

হৃদ ল্যাপটপ রেখে উঠে দাড়িয়ে বললো,
——তাহলে আর কি বউকে দিয়ে তৃষ্ণা মেটাই।
হৃদ এক পা দু পা করে শুভ্রার দিকে আগাতেই শুভ্রা উঠে দাড়িয়ে বললো,
—–যাচ্ছি।

শুভ্রা কফি বানাচ্ছে আর বলছে দাড়া আজ তোকে এমন কফি খাওয়াবো যে বারবার খেতে চাইবি।শুভ্রার স্পেশাল “ঝাল কফি”।আহা!!

চলবে…..

#হৃদয়ের_শুভ্রতা??

পর্ব~২০

#ফাবিহা_নওশীন

??
শুভ্রা কফির মগ হাতে হৃদের সামনে দাড়িয়ে আছে।হৃদ শুভ্রার হাত থেকে কফির মগটা নিলো।শুভ্রা মনে মনে শুধু বলছে,
খাও চান্দু তারপর বুঝবে ঠেলা।

হৃদ কফির মগটা মুখের সামনে নিয়ে সরু চোখে শুভ্রার দিকে তাকালো।তারপর আবার মগটা নামিয়ে নিলো।শুভ্রার সামনে ধরে বললো,
—–নেও তুমি খাও।

শুভ্রা ঢুক গিলে অবাক হয়ে বললো,
—–আমি কেন খাবো?আমি খাবোনা।

হৃদের সন্দেহ শুভ্রা কিছু একটা গড়বড় করেছে।তাই বললো,
—–তোমাকে তো খেতেই হবে বেবি।নেও কুইক।

শুভ্রা দ্রুত বললো,
—–আমি খাবোনা।কেন খাবো?তুমি খেতে চেয়েছো এনেছি।এখন ইচ্ছে না হলে ফেলে দেও।

—–ফেলার জন্য তো আনতে বলিনি।খাওয়ার জন্য এনেছি।তুমি একটু টেস্ট করে দেও।বলা তো যায় না যদি বিষ টিষ দেও?

শুভ্রা ভ্রু কুচকে বললো,
—-বিষ!!! বিষই দেওয়া উচিত ছিলো।

—–যদি আপোশে খাও তো ভালো নয়তো কিভাবে খাওয়াতে হয় আমার জানা আছে।
হৃদ শুভ্রাকে আলমারির সাথে চেপে ধরে।তারপর মুখের সামনে কফির মগ নিতেই শুভ্রা বললো,
—-ওকে খাচ্ছি।
শুভ্রা কিছুটা বাধ্য হয়েই হৃদের হাত থেকে কফিটা নিয়ে এক চুমুক দিলো।
তারপর ঢুক গিলে হৃদের হাতে কফির মগ দিলো।

ঝালে শুভ্রার জিহবা,মুখ,গলা জ্বলে যাচ্ছে কিন্তু মুখে প্রকাশ করছেনা।শুভ্রা মুখ শক্ত করে থমকে দাঁড়িয়ে আছে।কোনো কথা বলছেনা।ইচ্ছে করছে ছুটে গিয়ে পানি খেতে।মনে মনে বলছে আমাকে যখন খাইয়েছো তোমাকেও খেতে হবে।
হৃদ শুভ্রাকে পর্যবেক্ষণ করে শুভ্রার বরাবর দাঁড়িয়ে কফিতে চুমুক দিলো।কফিতে চুমুক দিয়েই হৃদ স্ট্যাচু হয়ে গেলো।
শুভ্রা বিজয়ের হাসি দিলো।তারপর দৌড়ে পালানোর জন্য পা বাড়ালেই হৃদ ওর হাত চেপে ধরে।কফির মগ রেখে শুভ্রাকে বললো,
—–ঝাল খাইয়েছিস মিষ্টি খাওয়াবি না?

শুভ্রার বুক ধক করে উঠলো।হাতের দিকে অসহায় চাহুনি দিলো।
হৃদ শুভ্রার হাত ধরে টান মেরে বুকের সাথে মিশিয়ে নিলো।একহাতে কোমড় জড়িয়ে ধরলো অন্য হাত শুভ্রার চুলে ডুবিয়ে ঠোঁটে ঠোঁট মিলিয়ে দিলো।

হৃদ শুভ্রাকে ছেড়ে দিতেই শুভ্রা হৃদকে মারতে লাগলো।
হৃদ শুভ্রার দুহাত ধরে চোখ মেরে বললো,
—–এমন মাসালা কফি আমি রোজ খেতে রাজী।
সাথে বউয়ের সুইট ফ্রি।

শুভ্রা হৃদকে সরিয়ে দিয়ে গালাগাল করতে করতে ঘরের বাইরে পা দিলো।

শুভ্রা রুম থেকে বের হতেই রোজকে ঝড়ের গতিতে রুমে ঢুকতে দেখলো।
রোজ এত তাড়াতাড়ি বাসায়?আর এভাবে কেন রুমে ঢুকলো?কিছু কি হয়েছে?
শুভ্রা রোজের পেছনে পেছনে রুমে গেলো।রোজ ব্যাগ রেখে টেবিলে শরীরের ভর ছেড়ে দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
চোখ বেয়ে পানি পড়ছে।

শুভ্রা রোজকে কাদতে দেখে ভয় পেয়ে গেলো।আতংকিত চোখে বললো,
—–রোজ!!

রোজ শুভ্রাকে দেখে থমকে গেলো।কিন্তু কান্না থামাতে পারছেনা।শুভ্রা রোজের কাছে যেতেই রোজ শুভ্রাকে জড়িয়ে ধরে শব্দ করে কেদে দিলো।শুভ্রা রোজের কান্না নিতে পারছেনা।শুভ্রা স্তব্ধ হয়ে রোজের পিঠে হাত বুলাচ্ছে।নানা প্রশ্ন মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে।
শুভ্রা রোজকে শান্ত করে বিছানায় নিয়ে বসালো।চোখের পানি মুছে দিয়ে পানি খেতে দিলো।রোজ পানি খেয়ে গলা ভিজিয়ে নিলো।মনে হচ্ছে গলা শুকিয়ে গেছে।
শুভ্রা রোজের গালে হাত রেখে বললো,
—–বল কি হয়েছে?

রোজ না চাইতেই ওর চোখে আবারো পানি চলে এলো।চোখের পানি মুছে সবকিছু বললো।সবটা শুনে শুভ্রা নির্বাক।শুভ্রা রোজকে আবারো জড়িয়ে ধরলো।
শুভ্রা ভাবতে পারেনি রোজের জীবনে এমন কিছু ঘটবে।শুভ্রা ভাবছে,
“অরিত্রকে দেখে খারাপ মনে হয়নি।ভালো ছেলে মনে করেছিলাম।কথা বলে যথেষ্ট ভদ্র ছেলে মনে হয়েছিলো।রোজের কাছেও অনেক প্রসংশা শুনেছি।তাহলে রোজকে কেন কষ্ট দিলো?ওরা এমন কেন?”
শুভ্রা নিজেও কাদছে।চোখের পানি থামাতে পারছেনা।

কিন্তু না শুভ্রার মনে হচ্ছে,
“আমাকে দূর্বল হলে চলবেনা।রোজকে সামলাতে হবে।এমন ঘটনার সম্মুখীন আমিও হয়েছি।কষ্ট কাকে বলে আমি বাচ্চা বয়সেই অনুভব করেছি।রোজকে একা ছাড়া যাবেনা।ওকে সাপোর্ট দিতে হবে,শক্তি যোগাতে হবে।ওকে ভেঙে পড়তে দেওয়া যাবেনা।”

শুভ্রা চোখ মুছে রোজকে সোজা করে বসালো তারপর ওর চোখের পানি মুছে দিলো।
—–রোজ কাদিস না।আমি তোর সাথে আছি।তোর ভাইয়া আছে।তোর পুরো পরিবার তোর পাশে আছে।তুই কোনো অন্যায় করিস নি তুই কেন কষ্ট পাবি?বি স্ট্রং।অরিত্র ওর কৃতকর্মের ফল পাবে।ওকে পস্তাতে হবে।তুই কাদবিনা।একদম না।এমন একটা মানুষের জন্য চোখের পানি ফেলবি না।

হৃদ শুভ্রার খোজে রুম থেকে বেরিয়েছে।রোজের রুমের দরজা খোলা দেখে ওর রুমের কাছে আসে।দরজার সামনে এসে ওদের এভাবে দেখে শকড হয়ে যায়।রোজের প্রতি হৃদ অনেক সেন্সেটিভ।বোনকে অনেক ভালোবাসে।রোজের চোখের পানি ওর বুকে বিধছে।
হৃদ হন্তদন্ত হয়ে রোজের রুমে ঢুকে।রোজ শুভ্রা দুজনেই হৃদকে দেখে হকচকিয়ে যায়।রোজ তাড়াতাড়ি চোখের পানি মুছে নেয়।
হৃদ রোজের দিকে প্রশ্ন ছুড়ে দেয়,
—–কি হয়েছে?তুই কাদছিস কেন?

রোজ কোনো জবাব দিচ্ছেনা।হৃদ শুভ্রার দিকে তাকালো।।
—–শুভ্রা রোজের কি হয়েছে?

শুভ্রা রোজের দিকে একবার চেয়ে বললো,
—–রুমে যাও এসে বলছি।

হৃদ কিছু বলতে গিয়েও থেমে গেলো।তারপর শুভ্রাকে বললো,
—–তাড়াতাড়ি এসো।রাইট নাও।

হৃদ যেতেই রোজ শুভ্রার হাত ধরে ভয়ে ভয়ে বললো,
—–আপি কি হবে এখন?ভাইয়ার যে রাগ ভাইয়া জানলে অনেক ঝামেলা বেধে যাবে?রক্তারক্তি হয়ে যাবে।

শুভ্রাও বুঝতে পারছে হৃদের কানে এ কথা যাওয়া মানে খুনাখুনি হয়ে যাওয়া।হৃদ কিছুতেই অরিত্রকে ছাড়বেনা।হৃদকে থামানোও সম্ভব না।কিন্তু হৃদকে না জানিয়েও উপায় নেই।
রোজকে বললো,
—-কিন্তু কিছু করার নেই হৃদকে জানাতে হবেই।একদিন না একদিন জানবেই।আমি চেষ্টা করবো যাতে হৃদ কোনো গন্ডগোল না করে।

~~~~~

হৃদ রুম জুড়ে পাইচারি করছে।ওর কপালে চিন্তার ছাপ স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।শুভ্রা রুমে যেতেই হৃদ শুভ্রার কাছে এসে বললো,
—–কি হয়েছে রোজের?কোনো সমস্যা? কেউ কিছু বলেছে?

শুভ্রা কিছুক্ষণ হৃদের দিকে চেয়ে রইলো।বলার সাহস পাচ্ছেনা।সাহস জুগিয়ে বললো,
—–অরিত্র রোজের সাথে আজ ব্রেকাপ করে ফেলেছে।

হৃদ যেনো নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছেনা।শুভ্রার দিকে অবিশ্বাসের চোখে চেয়ে আছে।।
শুভ্রা হৃদকে সবটা খোলে বললো।
হৃদ হাতের মুঠো শক্ত করে আছে।কপালের রগগুলো ফুলে উঠছে।মাথায় রক্ত টগবগ করে যেনো ফুটছে।হৃদ শুভ্রার দিকে চেয়ে বললো,
—–ওকে সেদিন শুধু একটু মেরেছিলাম আজ আমি ওকে খুন করবো।ওর এত বড় সাহস ও আমার বোনকে হার্ট করেছে।ওর ইমোশন নিয়ে খেলেছে।ও ভুল জায়গায় হাত দিয়ে ফেলেছে।জানোয়ারটাকে আমি কুকুরের মতো করে মারবো।ব্লাডি বিচ।
হৃদ রুম থেকে বের হতে নিলেই শুভ্রা দরজা বন্ধ করে দিলো।
—–তুই দরজা বন্ধ করলি কেন?

—–কারণ তুমি পাগল হয়ে গেছো।তুমি অরিত্রকে খুন করলে তোমার বোন খুশিতে তোমার গলা জড়িয়ে ধরবে?রোজ তো অরিত্রকে ভালোবাসে,
অরিত্রের ক্ষতি ও মেনে নিতে পারবে?রোজ একটা ট্রমাতে আছে।এখন আমাদের উচিত ওর পাশে দাড়িয়ে ওকে সাপোর্ট দেওয়া,খুনাখুনি না।রোজ অনেক কষ্ট পাচ্ছে।তোমার সাপোর্ট প্রয়োজন।

হৃদ রোজের রুমে গিয়ে রোজের পাশে বসলো।রোজের মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললো,
—–তুই কি চাস?তুই যদি চাস আমি অরিত্রকে তোর পায়ের সামনে এনে ফেলবো।

রোজ শুকনো হেসে বললো,
—–তুমি জানো তোমার বোন এটা কখনো চাইবেনা।ভালোবেসেছি বলে কুড়িয়ে নেবো?না।আমার জন্য চিন্তা করোনা।

হৃদ কিছু বলতে পারছেনা।ভিতরে ভিতরে বোনের অবস্থা দেখে কষ্ট পাচ্ছে।ইচ্ছে করছে অরিত্রকে খুন করতে।কিন্তু রোজের মুখের দিকে চেয়ে সেটা পারছেনা।

শুভ্রা বাড়ির সবাইকে রোজের বিষয়ে জানিয়ে দিয়েছে।রোজের সাথে এমন একটা ঘটনা কেউ মেনে নিতে পারছেনা।রোজের পাপা রোজের সামনে যেতে পারছেনা।তিনি তার প্রিন্সেসের কান্নারত মলিন মুখ দেখতে পারবেনা।যে মেয়ে পুরো বাড়ি মাতিয়ে রাখে সে আজ নিশ্চুপ।এটা তিনি মানতে পারছেননা।অন্যদিকে রোজের মাম্মা মেয়ের অবস্থা দেখে কেদে ভাসিয়ে ফেলছে।

অপরদিকে হৃদ শুভ্রার সাথে রাগারাগি করছে কেন ও বাড়ির সবাইকে সবটা জানালো।।
—–তোকে কে বলেছে আগ বাড়িয়ে নাচতে নাচতে সবাইকে বলতে?

শুভ্রা হৃদের কথার কড়া উত্তর দিলো।
—–তুমি ওর ভাই,আর বাকিরা কি উড়ে এসেছে?ওর অবস্থার কথা ওর বাবা-মায়ের সবার আগে জানা উচিত।
ওর যে অবস্থা তাতে ওর সবার পাশে থাকা প্রয়োজন।আপনজনের ভালোবাসা,সহানুভূতি,সাপোর্ট সব থেকে বেশী প্রয়োজন।নয়তো একা একা গুমরে মরতো।অসহায়ত্ব ও একাকিত্বে ভুগতো,সব বিষাদ লাগতো।কিভাবে বুঝতে পারছি জানো?
কারণ এই ঘটনা আমার সাথেও ঘটেছে।তখন আমার এসবের খুব প্রয়োজন ছিলো কিন্তু পাইনি।তাই আমি চাইনা রোজ আমার মতো ফিল করুক।মরে যেতে চাক।

শুভ্রা কথা শেষ করে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো।শুভ্রার কথা শুনে হৃদের খারাপ লাগছে।যাইহোক, যেকারণেই হোক কোনো একদিন শুভ্রাকেও কষ্ট দিয়েছে।শুভ্রাকেও হৃদয় ভাংগার ব্যথা সহ্য করতে হয়েছে।

রোজের মাম্মা রোজকে যত্ন সহকারে খাইয়ে দিচ্ছে।রোজ খেতে চাইছেনা কিন্তু তিনি মেয়েকে বাচ্চাদের মতো করে খাওয়াচ্ছেন।হৃদ আর হৃদের পাপা দরজার সামনে দাড়িয়ে দেখছে।হৃদ ভিতরে গিয়ে বললো,
—–মাম্মা এটা কিন্তু ঠিক না।মেয়েকে কি সুন্দর খাইয়ে দিচ্ছো আমি কি ভেসে এসেছি?

—–আসছে আমার বুড়ো খোকা মায়ের হাতে খেতে।খাওয়ানোর জন্য বউ আছে বউয়ের হাতে গিয়ে খা।

এভাবে নানান মজা,গল্পে রোজের খাওয়া শেষ হলো।রোজের বাবাও যোগ দিয়েছেন।রোজের অনেকটা ভালো লাগছে।পুরো পরিবার যখন একসাথে থাকে তখন মনে হয় যেনো সমস্ত বিপদ থেকে মুক্ত আছে।আগলে রাখার লোক আছে।
খাওয়ানো শেষ করে রোজের মাম্মা বললো,
—-আজ রোজ আমার সাথে ঘুমাবে।

শুভ্রা চট করে বললো,
—–উহু আজ আমি রোজের সাথে থাকবো।সারারাত গল্প করবো।

রোজের মাম্মা মানা করলেও শুভ্রার জোড়াজুড়িতে রাজি হলো।হৃদ বুঝতে পারলো শুভ্রা ওর সাথে অভিমান করে রোজের সাথে থাকবে।

সবাই চলে যাওয়ার পর রোজের পাপা রোজের কাছে এলেন।তিনি রোজকে অরিত্রের বিষয়ে একটা কথাও বলে নি এতক্ষণ।
রোজের মাথা টেনে তিনি কাধে নিলেন।রোজ পাপার গলা জড়িয়ে ধরলো।তিনি মেয়ের মাথায় বিলি কাটতে কাটতে বললেন,
“মানুষের জীবনে অনেক দূর্ঘটনা ঘটে কারণে অকারণে।প্রতিটি ঘটনা ঘটার পেছনে সূক্ষ্ম কারণ থাকে।এ ঘটনাগুলো আমাদের জীবন বদলে দেয় কিংবা এলোমেলো করে দেয় ঝড়ের মতো।কিন্তু আমাদের শিক্ষা দেয়।পরবর্তীতে জীবনের বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা।মানুষের জীবন অনেকগুলো উপাদান নিয়ে গঠিত।যেমন বাবা-মা,ভাই-বোন, ফ্যামিলি,আত্মীয়স্বজন,বন্ধুবান্ধব,পড়াশোনা,ক্যারিয়ার,ভালোলাগা, ভালোবাসা,সম্মান,স্বপ্ন, বিয়ে,স্বামী সংসার ইত্যাদি।ভালোবাসা জীবন নয় জীবনের একটা উপাদান তবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।এই যে তোমার পরিবার তোমাকে কত ভালোবাসে।পরিবারের চেয়ে কেউ আপন হয়না।জীবন কিছু কেড়ে নিয়েছে হয়তো এর চেয়ে ভালো কিছু তোমাকে উপহার দিবে তাই।তাই বি স্ট্রং।আই নো তুমি পারবে।”

চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here