হৃদয়ের_শুভ্রতা?? পর্ব-৩,০৪

0
606

#হৃদয়ের_শুভ্রতা??
পর্ব-৩,০৪
#ফাবিহা_নওশীন
০৩

??
হৃদের সকাল সকাল ঘুম ভেঙে গেছে।তাই উঠে বারান্দায় দাঁড়িয়ে আড়মোড়া ভাংছে।চোখ আটকে গেলো গার্ডেনে।
শুভ্রা টাওজার,ঢিলেঢালা ফুলহাতা টিশার্ট পড়ে,চুলগুলো উচু করে খোপা করে,সামনে কাপড়ের লেইস লাগিয়ে দৌড়াচ্ছে।
ঘেমে নেয়ে একাকার।শুভ্রা গার্ডেনের এ মাথা থেকে ওমাথা চক্কর দিচ্ছে।শুভ্রার দৌড়ের স্পিড দেখে হৃদের মুখ অটোমেটিক হা হয়ে গেছে।শুভ্রা পাশে থাকা টেবিল থেকে দৌড়ানো অবস্থায় পানি নিয়ে দৌড়াতে দৌড়াতে খেয়ে নিলো।তারপর বোতল নিয়ে দৌড়াচ্ছে।হৃদের এক মুহুর্তের জন্য মনে হচ্ছে শুভ্রা অলিম্পিক গেমসে পার্টিসিপিট করেছে।

শুভ্রা ৮টা নাগাত দৌড়,ব্যায়াম শেষ করে বাড়িতে ঢুকে।ফ্রেশ হতে রুমে যায়।
সবাই মিলে নাস্তা করছে।রোদের নাস্তা শেষে উঠে দাড়িয়ে ফুলকে বললো,
—-আমি গাড়িতে আছি।তুমি তাড়াতাড়ি এসো।(ছেলেমেয়েরা বড় হয়েছে ওদের সামনে তুমি বলার চেষ্টা করে)

ফুল নাস্তা শেষ করে ছেলেমেয়ের উদ্দেশ্য করে বললো,
—-আমরা যাচ্ছি,তোদের হয়ে গেলে চলে আসিস।হৃদ অফিস ঘুরে দেখে যাস।

—-ওকে মাম্মা।

শুভ্রা হাতে ব্যাগ নিয়ে নাস্তার টেবিলে এসে বসলো।ব্যাগ পাশে রেখে বললো,
—-মাম্মা নাস্তা দেও।
হৃদ শুভ্রাকে একবার দেখে নিলো।শুভ্রা কালো জিন্স,সাদা টপস পড়া।চুলগুলো ছাড়া।ফোন টিপছে।

রাহাত শুভ্রার হাত থেকে ফোন নিয়ে বললো,
—-মামনি নাস্তার টেবিলে ফোন না টিপলেই নয়।ভালো করে নাস্তা করো।

—-সরি পাপা,সরি।এখন আমি চুপচাপ নাস্তা করবো লাইক এ গুড গার্ল।

—-ওকে গুড গার্ল।

শাওরিন শুভ্রার জন্য নাস্তা নিয়ে এসেছে।শুভ্রার নাস্তা করা শেষ করে উঠে দাড়াতেই শাওরিন রাহাতের দিকে একবার তাকিয়ে বললো,
—-বাড়িতে তাড়াতাড়ি চলে আসিস।

—-হোয়াই মাম্মা?

রাহাত বললো,
—-মামনি হৃদ এসেছে অনেক দিন পর।ওকে তোমার সময় দেওয়া উচিত।

শুভ্রা কাধে ব্যাগ তুলে বললো,
—-বাড়ির ছেলে বাড়ি ফিরেছে মেহমান নয় যে তাকে সময় দিতে হবে,তার সাথে গল্প করতে হবে,ঘুরিয়ে সব দেখাতে হবে।তার সব চেনাজানা।
আর সেরকম কিছু হলে এবাড়িতে আরো অনেক মানুষ আছে।আমি কেন?
আমার কারো জন্য সময় নেই।আমার লাইফ,আমার স্টাডি,আমার ক্যারিয়ার আমার কাছে সবচেয়ে বেশী ইম্পর্ট্যান্ট।
যাইহোক মাম্মা শোন,আমি ভার্সিটির ক্লাস শেষ করে মাহির ড্রান্স ক্লাবে যাবো।লেইট হবে।ওখানে ড্রান্স শেখায় দেখতে যাবো।রাত হতে পারে।বাই এভ্রিওয়ান।

শুভ্রা ঘুরতেই কিছু একটা পড়ার শব্দ পেলো।কিন্তু পাত্তা না দিয়ে নিজের গন্তব্যে এগিয়ে গেলো।হৃদ এমন অপমান সহ্য করতে না পেরে উঠে দাড়ায় চেয়ার ধাক্কা মেরে ফেলে হনহন করে নিজের রুমে চলে যায়।

রাহাত হতাশ হয়ে বললো,
—-এরা দুজন কি শুরু করেছে?

রোজ বললো,
—-কাকাই এদের কি হবে?ভাইয়া চুপচাপ বসে আছে আর এইদিকে শুভ্রাপু রোজ রোজ আরো ডেঞ্জারাস হয়ে যাচ্ছে।এদের তো প্রেমই হয় নি।বিয়ে হবে কি করে?

রাহাত বললো,সেটাই ভাবছি।

রাহাতের মা বললো,রাহাত বলি কি ওদের বিয়েটা দিয়ে দে।

শাওরিন বললো,আমাদের এ নিয়ে কথা বলা উচিত।একমাত্র মেয়ে আমাদের।ওকে থামানো উচিত।আর হৃদকেও।

রাহাত বললো,ঠিক বলেছো।এ নিয়ে কথা বলতে হবে সবার সাথে।

.
.

রোদ ড্রাইভ করছে।ফুল পাশে বসে আছে।রোদ ফুলকে অফিসে নামিয়ে দিয়ে ভার্সিটিতে যাবে।
ফুল রোদকে বললো,
—–শুভ্রার গ্রাজুয়েশন শেষ হলে ওদের বিয়েটা দিয়ে দেবো।আর মাত্র কয়েকমাস।হৃদ অফিসে জয়েন করতে চায়।ভাবছি ওকে সব দায়িত্ব দিয়ে আমি ঘর সংসার সামলাবো।রোজ তো আছেই টুকিটাকি সাহায্য করার জন্য।কি বলো?

—-হুম।ছেলে বড় হয়েছে।উপযুক্ত হয়েছে।বিয়েতে দিয়েই হবে।আর অফিসে বসার মতো সব যোগ্যতা ওর আছে।ও পারবে সব ম্যানেজ করে নিতে।তাছাড়া আমরা তো আছি।আমিও ভাবছি অবসর নিয়ে নেবো।

ফুল ভ্রু কুচকে বললো,
—-কেন?

—-এমনি।বাকি জীবন বাড়িতে থেকে তোর সাথে প্রেম করে কাটিয়ে দেবো।আহা।

—–তোমাকে থাকাচ্ছি বাড়িতে।অফিসে পাঠিয়ে দেবো।সেখানেই কাজের সাথে প্রেম করো।

—–হাহা।

.
.

হৃদ নিজের রুমে পাইচারি করছে।রাগে ওর গা জ্বলছে,হাতের মুঠো শক্ত হয়ে আসছে।জোরে জোরে নিশ্বাস নিচ্ছে আর রাগ কমানোর জন্য বারবার আংগুল দিয়ে কপাল ঘষছে।
—-শুভ্রা তোর এত বড় সাহস হয়ে গেছে তুই আমাকে এভাবে ইগনোর করছিস,সবার সামনে এভাবে ইনসাল্ট করলি?
এই হৃদও তোকে ছাড়বেনা।আই ডোন্ট স্পেয়ার ইউ।তোর খুব ভাব বেড়েছে না?নিজের লাইফ,ক্যারিয়ার দেখাচ্ছিস?এসব কিভাবে হয়েছে?

শুভ্রা বাইরে থেকে ফিরে নিজের রুমে এসে একটা পার্সেল দেখতে পেলো।শুভ্রা মুচকি হেসে পার্সেলের দিকে হাত বাড়িয়ে দিলো তারপর আবার সরিয়ে নিয়ে বললো,
—-উফফফ,শুভ্রা একটা পার্সেলই তো।আগে ফ্রেশ হয়ে নে দেন দেখিস পার্সেলে কি আছে।
শুভ্রা ফ্রেশ হয়ে পার্সেল খোলতেই মেজাজ খারাপ হয়ে গেলো।শুভ্রা খালামনির ছেলে অয়ন আমেরিকা থেকে ওকে পার্সেল পাঠিয়েছে।সেটা ফোন করে আগেই জানিয়েছে।

শুভ্রা পার্সেল নিয়ে মায়ের রুমে গেলো।
তারপর বেডের উপরে ছুড়ে ফেলে দিয়ে বললো,
—-মাম্মা হোয়াট ইজ দিস?
তোমার বোনের ছেলে আমার জন্য কি পাঠিয়েছে দেখো।

—-কি পাঠিয়েছে?

—-ওয়াস্টার্ণ ড্রেস পাঠিয়েছে।হাটুর উপর অবধি।আর হাতা কাটা।পুরো কাধ বের করা।আমি কি নায়িকা?আমি এই টাইপ ড্রেস পড়ি?আমাকে এই ড্রেস কেন দেবে?

শাওরিন মেয়েকে ঠান্ডা করার জন্য বললো,
—-আরে বোকা মেয়ে ও আমেরিকায় থাকে।ওখানে এই টাইপ ড্রেস…

—-মাম্মা স্টপ।হোয়াট ডু ইউ থিংক?তুমি আমাকে যা বুঝাবে আমি তাই বুঝবো?আমেরিকায় কি এর চেয়ে ভালো ড্রেস নেই।আমার জন্য এমন ফালতু ড্রেস কেন দেবে?

—-আচ্ছা না পড়লি রেখে দে।ভালোবেসে দিয়েছে।এতকিছু ভেবে দেয়নি।ও তো আর জানেনা।

—-না জানলে দেবেনা।আমি কি ওকে বলেছি আমার জন্য ড্রেস পাঠাতে?আমার পাপা কি আমাকে ড্রেস কিনে দেয়না?
আমাকে ফোন করে বলে শুভ্রা তোর জন্য পার্সেল দিয়েছি।
আমি জিজ্ঞেস করলাম কি দিয়েছেন।বলে কিনা সারপ্রাইজ।আমি দেখলে নাকি খুশিতে লাফাবো।দেখে তো ইচ্ছে করছে কেটে কুটিকুটি করে ওকে ওর পার্সেল ফেরত পাঠাই।

শুভ্রা রাগে গজগজ করতে করতে রুম থেকে বের হয়ে হৃদকে দেখলো।হৃদকে পাশ কাটিয়ে চলে গেলো।
হৃদ চেচামেচি শুনে ছোটমার ঘরের দিকে এসেছে।
শুভ্রাকে এভাবে ফুসফুস করতে করতে বের হতে দেখে বুঝলো কুচতো হোয়া।
হৃদ ছোটমার ঘরে গিয়ে দেখে সে হতাশ হয়ে কিছু একটা দেখছে।
হৃদ বললো,
—-কি হয়েছে ছোটমা?

শাওরিন ড্রেসটা দেখিয়ে সবকিছু খোলে বললো।হৃদের শাওরিনের কথা শুনে কিছু একটা মনে পড়ে যায় তাই মুচকি হাসলো।

শাওরিন ভ্রু কুচকে বললো,
—-তোর আবার কি হলো? হাসছিস কেন?

হৃদ স্বাভাবিক হয়ে বললো,
—-কিছুনা।এমনি।

শাওরিন হতাশ হয়ে বললো,
—-তোদের নিয়ে আর পারিনা।একজন রেগে আগুন।আরেকজন হাসছিস।দুটোই পাগল।এইবার দুটোই বিয়ে করে আমাদের একটু শান্তি দে তো।

বিয়ের কথা শুনে হৃদের মুখ কালো হয়ে গেলো।দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো,হু।

হৃদ নিজের বিছানায় গা এলিয়ে দিলো।মনে পড়ে গেলো অতীতের কিছু ঘটনা।
হৃদ কফির মগে চুমুক দিতেই শুভ্রা ধাপ করে ওর পাশে এসে বসলো।চুপচাপ কিছু ভাবছে।হৃদের ডাউট হলো।বিপদজনক কিছু একটা বলবেনা তো?
হৃদ শুভ্রার দিকে তাকিয়ে আছে। শুভ্রা আমতা আমতা করে বললো,
—-আমার গুরুত্বপূর্ণ একটা কথা আছে।

হৃদ তাচ্ছিল্য করে বললো,
—-তুই আর গুরুত্বপূর্ণ!!গুরুত্বপূর্ণের সাথে তোর কোনো সম্পর্ক নেই।যা ভাগ।আজাইরা পেচাল আমার শুনতে ইচ্ছে করে না।

শুভ্রা নড়েচড়ে বসে বললো,
—-সত্যি গুরুত্বপূর্ণ কথা।শুনোই না।

—-না বলা পর্যন্ত আমাকে শান্তি দিবিনা।বলে ফেল।

হৃদ মগে আরেকটা চুমুক দিলো।
শুভ্রা বললো,
—-আজকে থেকে তুমি আমার বিএফ।
হৃদের মুখের কফি বের হয়ে ছিটকে পড়ে গেলো।হৃদ পড়ে যাওয়া কফির দিকে চেয়ে আছে।

শুভ্রা বুঝতে পারলো না কি এমন হলো যে কফি পড়ে গেলো।
শুভ্রা বললো,
—-কি হলো কফি কিভাবে পড়ে গেলো?

হৃদ শুভ্রার দিকে তাকিয়ে বললো,
—-তুই একটু আগে কি বলেছিস সেটা বল।

—-কি বলেছিলাম?ওহ হ্যা,শুনো আজ থেকে তুমি আমার বিএফ।

হৃদ জিজ্ঞেস করলো,
—-সেটা কেন?

—-কেন আবার?আমার বান্ধবীর বিএফরা তাদেরকে নিয়ে ঘুরতে যায়,ফুচকা খায়,আইসক্রিম খায়,সেল্ফি তুলে,হাত ধরে হাটে।তুমিও আজ থেকে আমার বিএফ।তুমিও আমাকে নিয়ে ঘুরতে যাবে।আইসক্রিম,ফুচকা খাওয়াবে।সেল্ফি তুলবে।আমার হাত…

—-চুপপ!!আর শুনতে চাইনা।বান্ধবীদের থেকে লুতুপুতু শিখে ফেলেছো বেশ।বাহ ব্রাভো!!

শুভ্রা নখ কামড়ে বললো,
—-এগুলো কে লুতুপুতু?কিন্তু আমি তো শুনেছি চুমু খাওয়া লুতুপুতু।আমি কি তাই চেয়েছি কখনো?

শুভ্রার কথা শুনে হৃদের কাশি উঠে গেলো।তারপর বললো,
—-তুই ছোবড়া,,তোকে দিয়ে বিশ্বাস নেই।কবে এসে বলবি হৃদ ভাইয়া চুমু খাবো।

—-হুহ!!এখন বলো তুমি আমার বিএফ হবে ফাইনাল।

হৃদ উঠে দাড়িয়ে বলল,
—-নিজের চেহেরা দেখেছিস?তুই জানিস কলেজে কত সুন্দর সুন্দর মেয়ে আমার পিছনে ঘুরে?ওরা কত হট জানিস?

শুভ্রা গালে আংগুল দিয়ে কিছু একটা ভেবে বললো,
—-হট!!ওরা কি হাটু বের করে ড্রেস পড়ে?তাহলে আমিও ছোট ছোট জামা পড়ে হট হবো।কালকেই কিনবো,
আমিও হট হবো।তবুও তুমি আমার বিএফ হবে হবে হবে।

শুভ্রার কথা শুনে হৃদের মাথায় হাত।
হায় আল্লাহ এ মেয়ে বলে কি।ও নাকি হাটু বের করে জামা পড়ে হট হবে।
—-শুভ্রা তোকে ছোট জামা পড়ে হট হতে হবেনা।খবরদার ভুলেও এগুলো করবিনা।

শুভ্রা খুশিতে গদগদ হয়ে বললো,
—-তার মানে তুমি এমনিতেই আমার বিএফ হবে।

হৃদ শুভ্রাকে সিরিয়াস ভংগীতে বললো,
—-আমার কথা মনোযোগ দিয়ে শোন।

—-তোমার সব কথাই আমি মনোযোগ দিয়ে শুনি।

—এটা আরো ভালো করে শোন।তুই এখন অনেক ছোট।মাত্র ১৪বছর।এটা প্রেম,ভালোবাসা কিংবা বিয়ে সংসার করার বয়স না।এটা পড়াশোনা করার বয়স।একটু বড় হ প্লিজ,ভালো করে বুঝ।তোর বয়সী মেয়েরা এমন অবুঝ নয়,তবে তুই এত অবুঝ কেন?এই প্রেম,ভালোবাসাই জীবনের সবকিছু না।জীবনে আরো অনেক কিছু আছে।জীবনে তোকে অনেক কিছু করতে হবে।বড় হতে হবে।আমি ছাড়াও তোর জীবনে অনেক কিছু আছে।

—-আমার জীবনে আর কিছু নেই।আমার পড়াশোনা চাইনা।আমি জীবনে কিছু চাইনা,বড় হতে চাইনা।আমি তোমাকে চাই।চাই চাই চাই।

হৃদ হতাশ হয়ে বললো,
—-তোর চাইয়ের চাটনি বানাবো।তারপর তোকে খাওয়াবো।তোকে বুঝিয়ে কোনো লাভ নেই।তুই আর ওই ফালতু মেয়েদের সাথে মিশবিনা।নষ্ট হয়ে যাচ্ছিস দিন দিন।আর আমার সামনেও আসবিনা।

—-কেন আসবোনা?

—-কেন আসবি প্রেম করতে?হাহ?আবার কি হাটু অবধি জামা পড়ে হট হবে।পিটিয়ে তোর মাথায় থেকে এসব ভূত নামিয়ে দেবো।শুধু পড়াশোনা করবি।আমার জন্য আরেক কাপ কফি বানিয়ে নিয়ে আয়।

—-কিন্তু তুমি তো তোমার সামনে আসতে মানা করলে?তাহলে কফি কিভাবে আনবো?

—-যা আনতে হবেনা।

—-আনবোও না।আমার বিএফ হবেনা আবার কফি খাওয়াবো?হুহ।

শুভ্রা রাগ দেখিয়ে চলে গেলো।
হৃদ মনে মনে বলছে,
—-এই মেয়ে কবে বড় হবে?এর কপালে অনেক দুঃখ আছে।সাথে আমাকে জ্বালাচ্ছে।আমি তার আবদারের ঝুলি।কবে এসে বলবে তুমি আমার স্বামী হয়ে যাও।উফফ।আল্লাহ।

হৃদ অতীতের কথা ভেবে হাসছে।
অবশেষে আমাদের শুভ্রা বড় হয়ে গেছে।সে ছোট জামা পড়তে চায়না এখন।সেই ছোট্ট অবুঝ শুভ্রা নেই।অনেক ম্যাচুরিটি এসেছে ওর মধ্যে।আমাকে অপমান করতে শিখে গেছে।নিজের লাইফ,ক্যারিয়ার নিয়ে ভাবতে শিখে গেছে।শুধু আমাকেই ভুলে গেছে।

চলবে…

#হৃদয়ের_শুভ্রতা??

(পর্ব-৪)

#ফাবিহা_নওশীন❤❤

??
রাতে বাড়িতে বড়দের মিটিং চলছে।গুরুত্বপূর্ণ মিটিং।
ফুল সবাইকে উদ্দেশ্য করে বললো,
—-শুভ্রার পরীক্ষাটা আগে শেষ হোক।কয়েকমাসের ব্যাপার।

রাহাত বললো,
—-তা নাহয় হবে কিন্তু ওদের তো এই ব্যাপারে বলা উচিত।শুভ্রা আর হৃদ..

রোদ বললো,রাহাত ঘটনা কি?কিছু হয়েছে?

রাহাত হতাশ হয়ে বললো,
—-ভাই,,তুমি হয়তো খেয়াল করোনি হৃদ আসার পর থেকেই শুভ্রা ভায়োলেন্ট হয়ে গেছে।শুভ্রা সুযোগ পেলেই হৃদকে কথা শুনায়।

—-হ্যা,শুধু তাই নয় শুভ্রা আর হৃদ এখনো একে অপরের সাথে কথা বলে নি।আমি খেয়ালে রেখেছি ব্যাপারটা।
শাওরিন কনফিডেন্সের সাথে বললো।

রোদ বললো,
—-ফুল!!

ফুল রোদের দিকে চেয়ে বললো,
—-আমারও তাই মনে হয়েছিলো।সেই কফির ঘটনাকে নিছক মজা ভেবেছিলাম কিন্তু তা নয় শুভ্রা নিজের ক্ষোভ ঢেলেছিলো কফিতে।হৃদের ব্যাপার বাদ দেও শুভ্রার সাথে কথা বলে সব ঠিক করতে হবে।

রাহাত জিজ্ঞাসুক দৃষ্টিতে চেয়ে রইলো ফুলের দিকে।তারপর বললো,
—-হৃদ কি কিছু বলেছে।

ফুল মৃদু হেসে বললো,
—-এমন ভাব করছিস যেনো কিছুই জানিস না।হৃদকে এখন বললে হৃদ এখুনি বিয়ে করতে রাজি কিন্তু শুভ্রা….

রোদ ফুলের কথা কেড়ে নিয়ে বললো,
—-সেটাই কি স্বাভাবিক না।শুভ্রার মনে অভিমান,রাগ,ক্ষোভ জন্মেছে।তবে ভালোবাসাটা হারিয়ে যায়নি,ঢাকা পড়ে গেছে।তাই শুভ্রা দেখতে পাচ্ছেনা।

ফুল মুখ বাকিয়ে বললো,
—–বাপ ছেলে দুটোই এক হয়েছে।কি দরকার ছিলো অবুঝ মনে আঘাত দেওয়ার?

রোদ বললো,
—–বাড়ে এখন আমার দোষ??আমি কি করেছি?যা করার হৃদ করেছে।

—–তোমার থেকে শিখেছে।তুমি ওর আইডল না?

রাহাত বললো,
—–তাহলে আর কি বাপকা ব্যাটা পাপার মতোই শুভ্রাকে বিয়ে করে নিবে।নো চিন্তা ডো ফুর্তি।

ফুল বললো,
—-আহা,,,আমাকে পেয়েছিস?শুভ্রা.. এটা শুভ্রা।এরকম কিছু করলে ঠাটিয়ে চড় মেরে দিবে।

রোদ বললো,আমার ছেলে কম কিসে?চড় মারলে আমার ছেলে কি ওর হাত ধরে আটকাতে পারবেনা?একদম শিকল পড়িয়ে দিবে।

রাহাত তাল মিলিয়ে বললো,
—–ঠিক ঠিক।

শাওরিন আর ফুল একে অপরের দিকে চাওয়াচাওয়ি করছে।ফুল রাহাতকে বললো,
—–রাহাত তুই মেয়েকে রেখে মেয়ে জামাইয়ের সাপোর্ট দিচ্ছিস।দিস ইস নট ফেয়ার।

—–তো??

শুভ্রা লিভিং রুমে সবাইকে দেখে এগিয়ে এলো।
—–এখানে সবাই?কি হচ্ছে?বড়দের মিটিং?তাহলে সরি আমি ভুল করে এসে পড়েছি।
শুভ্রা ঘুরে যেতেই ফুল ডাকলো।
—-শুভ্রা!!

শুভ্রা ঘুরে বললো,হ্যা মামনি।কিছু বলবে?

ফুল শুভ্রার হাত ধরে বললো,
—-বস।কথা আছে।

শুভ্রা ফুলের সাথে বসলো।
ফুল নরম কন্ঠে বললো,
—–একটা কথা বলবো রাখবি?

—-অবশ্যই কেন নয়?তোমার একটা কথা কেন হাজারটা কথা রাখতে রাজি ইউ নো মামনি।

—-শুভ্রা আমরা এখানে তোর আর হৃদের ব্যাপারে কথা বলছি।হৃদ আসার পর তুই আগের মতো কথা বলিস নি।শুধু তুই না হৃদও।তোরা একে অপরের থেকে দূরে কেন?কেন আগের মতো নরমাল হতে পারছিস না?সমস্যা থাকলে কথা বলে মিটিয়ে নে।রাগ,অভিমান থাকলে ঝেড়ে নে।তবুও এভাবে থাকিস না।ভালো লাগে না।

শুভ্রা চুপ করে আছে।নিজের মা-বাবার সাথে চিতকার চেচামেচি করতে পারলেও মামনি(ফুল)আর বাবাইয়ের(রোদ)সাথে সব সময় নিচু গলায় কথা বলেছে।মুখের উপর কিছু বলার স্পর্ধা দেখায়নি।

ফুল আবারো বলা শুরু করলো।
—-তুই তো জানিস আমাদের সবার ইচ্ছের কথা।তোর আর হৃদের বিয়ের কথা।তোরা এখন বড় হয়েছিস তাই আমরা সবাই তোদের বিয়ের কথা ভাবছি।

বিয়ের কথা শুনে শুভ্রার মাথায় বাজ ভেঙে পড়লো।তবুও মামনির সামনে নিজেকে স্বাভাবিক রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করছে।

ফুল শুভ্রাকে চুপ দেখে বললো,
—-শুভ্রা,,কি ভাবছিস?যা ভাবছিস আমাদের বল।

শুভ্রা জোরপূর্বক হেসে বললো,
—–না মামনি কিছুনা।আমি আসছি।গুড নাইট।

শুভ্রা যেতেই রোদ বললো,
—-যাক ওকে বলা তো হয়েছে এখন দেখা যাক কি রিয়েক্ট করে।

রাহাত বললো,
—-রিয়েক্ট!!সেটা তো আমার উপর করবে তোমাদের উপর না।

রোদ বললো,
—-ভাইয়ের ছেলেকে জামাই বানাতে আর ভাইকে বিয়ান বানাতে হলে এটুকু রিয়েক্ট তো হজম করতেই হবে।

রোদের কথা শুনে সবাই হেসে দিলো।

.
.

শুভ্রা পাপা-মাম্মার রুমের দিকে যাচ্ছে।শাওরিন শুভ্রাকে রুমে কাছে থেকে টেনে ওর রুমে নিয়ে যায়।

শুভ্রার হাত ছাড়তেই শুভ্রা বললো,
—-মাম্মা হোয়াট আর ইউ ডুয়িং?

শাওরিন বললো,
—-ফার্স্ট টেল মি হোয়াট আর ইউ ডুয়িং?

শুভ্রা কোনো ভনিতা না করে বললো,
—-আমি তোমাদের পছন্দের হৃদকে বিয়ে করছিনা।

শাওরিন শুভ্রার হাত চেপে ধরে বললো,
—-পাগল হয়েছিস তুই?তুই এটা তোর পাপাকে বলতে যাচ্ছিলি?

—-ইয়েস।

—-শুভ্রা!!কেন এমন করছিস?তুই বুঝতে পারছিস তুই কি করছিস?তোর আর হৃদের বিয়ে ছোট থেকেই ঠিক।এটা তুই ভালো করেই জানিস।তোর বাবাই,মামনি,তোর পাপা,আমার,তোর বড় দাদা,দিদা,ছোট দাদা,দিদা,তোর ছোট কাকাই,এমনকি রোজ সবার স্বপ্ন তোদের বিয়ে নিয়ে তুই সব ভেঙে দিচ্ছিস?তোর পাপাইয়ের কথা ভাব।যখন হৃদ তোর মামনির পেটে এসেছে তখন থেকেই তার শখ আমাদের একটা মেয়ে হবে তার সাথে হৃদের বিয়ে দেবে। আর আল্লাহ তাই করেছে৷তোর পাপার এই স্বপ্নটা ভেঙে দেওয়ার আগে ভেবে দেখিস।তুই সব নষ্ট করে দিতে চাইছিস অভিমানের কারণে।আর তুই তো ছোট থেকেই হৃদকে ভালোবাসিস।ওর জন্য পাগল ছিলি।

—–মাম্মা সেটাই ছোটবেলায়,,এখন নয়।এই সাত বছরে কখনো আমি হৃদ হৃদ বলে পাগলামি করেছি?করিনি।কারণ সেটা আমার ছোটবেলার পাগলামি ছিলো।আমি এখন হৃদকে ভালোবাসি না।ভালোবাসা তো দূরের কথা পছন্দ করিনা।

—-শুভ্রা সেটা তোর মনের ভুল।তুই হৃদের উপর রাগ থেকে এমন বলছিস।আমিও অভিমানের বশে তোর পাপাকে রেখে অন্য একজনকে বিয়ে করতে যাচ্ছিলাম কিন্তু ভালোবাসার টানে পারিনি।অভিমানের দেয়াল সরিয়ে একবার দেখ বুঝে যাবি।যা বলার একটু ভেবে বল।

শাওরিন নিজের রুমে চলে গেলো।

শুভ্রা সারারাত ঘুমাতে পারেনি।বাবাই,মামনিকে সামনাসামনি বলতে পারবেনা,পাপা কষ্ট পাবে,মাম্মা তো কথাই শুনতে চায়না।তাহলে কাকে বলবো?ছোট দাদাকে বলবো।হ্যা তাই করবো।নয়তো অন্য ব্যবস্থা।

টেবিলে নাস্তা করছে সবাই।শুভ্রা ঠিকমতো খেতে পারছেনা।ছোট দাদা(ফুলের বাবাই)বললো,
—-কি ব্যাপার বড় বউ(শুভ্রা)তুমি নাকি বুড়ো বর রেখে আমার ইয়াং নানাভাইকে(হৃদ)বিয়ে করছো?তাড়াতাড়ি বিয়ে করো।কবে মরে যাই।

শুভ্রা ছোটদাদার কথা শুনে থমকে গেলো।ওর ইচ্ছে করছে হাত-পা ছড়িয়ে কাদতে।সবাই কি পেয়েছে।হৃদের চুল ছিড়তে ইচ্ছে করছে শুভ্রার।হৃদ শুভ্রার দিকে একবার তাকিয়ে ওর ফেসটা দেখে মনে মনে মজা নিচ্ছে।
আর মনে মনে বলছে,
—–এই বুঝি বোম ফাটলো।ঠাস!!!

কিন্তু ফাটেনি??

নাহ হবেনা।কাজ হবেনা।আমার এখন হৃদের সাথেই কথা বলতে হবে।ব্যাটাকে এমন ধোলাই দেবো।আচ্ছা হৃদ চুপ কেন?কিছু বলছেনা কেন?
না বলুক।আমার বলতে হবে।
শুভ্রা ভয়ে ভয়ে পা টিপে টিপে হৃদের রুমে গেলো।কিন্তু রুম পুরো ফাকা।কেউ নেই।
শুভ্রা আজ ৭বছর পর হৃদের রুমে এলো।পুরো রুমে চোখ বুলালো।সবকিছুই আগের মতো আছে।এই রুমকে ঘিরে কত স্মৃতি সব ভেসে আসছে।শুভ্রা নিজের মাথায় থাপ্পড় মেরে বললো,
—–তুই কি স্মৃতিচারণ করতে এসেছিস?তুই যে কাজে এসেছিস সে কাজে ফোকাস কর।শুভ্রা বেবি ফোকাস!!

শুভ্রা হৃদের বেডসাইড টেবিলে একটা কার্ড দেখতে পেলো।শুভ্রার কার্ডটা পরিচিত লাগছে।শুভ্রা টেবিলের কাছে এগিয়ে গেলো।
কার্ডটা তুলে নিয়ে খোলে দেখে অবাক।এই কার্ডটা তো আমি বানিয়েছিলাম হৃদ ভাইয়ার জন্মদিন উপলক্ষে।কিন্তু উনি তো এটা ছিড়ে ফেলেছিলেন।

শুভ্রা সবেমাত্র দশম শ্রেনীতে উঠেছে।হৃদের জন্মদিন কি দিবে ভেবে পাচ্ছিলো না।তারপর সারারাত জেগে ইউটিউব দেখে বার্থডে কার্ড বানিয়েছিলো।তারপর হৃদের রুমে এসেছিলো।
হৃদ ওকে দেখেই ক্ষেপে যায়।তেরে এসে বলে,
—-তুই এত নির্লজ্জ কেন?তোকে দুদিন আগেই নিষেধ করেছি আমার রুমে আসতে।কেন এসেছিস?স্টে এওয়ে ফ্রম মি এন্ড মাই রুম।ডু ইউ গট ইট?

শুভ্রা হৃদের কথা শুনে মন খারাপ করে।দুদিন আগে শুভ্রা ভয়ংকর আবদার নিয়ে হৃদের কাছে এসেছিলো তাই হৃদ রেগে আছে আর শুভ্রাকে বলেছিলো ওর রুমে যেনো আর না আসে।আর না ওর কাছে।এর আগেও অনেক বার বলেছে তবে এবারের বলার ধরণ অন্য রকম ছিলো।

শুভ্রা আমতা আমতা করে বললো,
—-তোমার বার্থডে উপলক্ষে একটা কার্ড বানিয়েছি সেটাই দিতে এসেছি।

হৃদ শুভ্রার হাত থেকে কার্ডটা নিয়ে একটানে দুভাগ করে ফেলে যা দেখে শুভ্রা অনেক কষ্ট পায়।

সেই কার্ডটা এখানে কি করে এলো।তাও আঠা আর টেপ লাগানো।শুভ্রা কার্ডটি রেখে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো।ওখানে বেশিক্ষণ থাকা সম্ভব না।যে অতীত থেকে বেরিয়ে এসেছে সে অতীত আবার উঁকি দিচ্ছে।

হৃদ ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে পুরো রুমে চোখ বুলালো।মনে হচ্ছে কেউ এসেছিলো।হৃদের চোখ যায় কার্ডের দিকে।কার্ডটি তো এভাবে রাখেনি তবে এভাবে কেন?হৃদ কার্ডটি হাতে তুলে নিলো।তারপর একা একাই বলছে,
—-শুভ্রা তুই এসেছিলি?কার্ডটি দেখে অবাক হয়েছিস?না এটাও ভুলে গিয়েছিস কার্ডটি তুই দিয়েছিলি আর আমি ছিড়ে ফেলেছিলাম।আর কেন রাগ করেছিলাম তাও ভুলে গেছিস?কি ভয়ংকর ঘটনা ঘটিয়েছিলি ভুলে গেছিস?

হৃদ মুচকি হাসলো।কেননা সেই ঘটনা বারবার মাথায় উঁকি দিচ্ছে।যে কারণে হাসি থামছেনা।

—হৃদ ভাইয়া!!

হৃদ ঘুমঘুম চোখে বললো,
—উমম,,

শুভ্রা হৃদকে ধাক্কাচ্ছে।।
—-হৃদ ভাইয়া উঠো।

হৃদ বিরক্তি নিয়ে চোখ বন্ধ করেই বললো,
—-একটু ঘুমাতে দে না প্লিজ।

শুভ্রা হৃদের কানের কাছে গিয়ে জোরে জোরে বললো,
—-উঠো।।

হৃদ কানে বালিশ চাপা দিয়ে ঘুমিয়ে রইলো।
—-হৃদ ভাইয়া।

—-কি?এই সকাল সকাল আমাকে কেন জ্বালাচ্ছিস?কি চাই তোর?

—-একটা কিস চাই।

হৃদ শুভ্রার কথা শুনে লাফ দিয়ে উঠে বসে।ওর ঘুম গায়েব।তারপর চোখ ডলে বুঝার চেষ্টা করে শুভ্রা কি এখানে আছে না স্বপ্ন দেখছে।শুভ্রাকে দেখে নিজের কানকে অবিশ্বাস করা শুরু করলো।তারপর শুভ্রাকে বললো,
—–তুই কিছু বলেছিস?

শুভ্রা স্বাভাবিক ভাবে বললো,
—-হুম একটা কিস চাই।

হৃদ হা করে শুভ্রার দিকে চেয়ে আছে।তারপর বললো,
—-কিছু খেয়েছিস?না শরীর খারাপ।

—-এভাবে বলছো কেন আমি ঠিক আছি,সুস্থ আছি।

হৃদ চোখমুখ শক্ত করে বললো,
—-নাম,আমার বিছানা থেকে নাম।

শুভ্রা বিছানা থেকে নেমে বললো,
—-বকছো কেন?

হৃদ বিছানা থেকে নেমে বললো,
—-তাহলে কি তোকে,,,
হৃদ চুপ হয়ে গেলো তারপর বললো,
—-যাইহোক কোথায় শিখে এসেছিস ?

—-কি কিস?

হৃদ আমতা আমতা করে বললো,
—-হ্যা ওটাই।তোর ওই বান্দবী থেকে।তোকে না বলেছি ওর সাথে আর মিশবিনা।

—-ওর কাছ থেকে শিখিনি।গল্প পড়ে শিখেছি।গল্পে তোমার মতো এরোগ্যান্ট নায়করা নিজ থেকেই গার্লফ্রেন্ডকে কিস করে।তুমিও তো আমার বিএফ তাই আমার কিস চাই।চাই চাই চাই।
নয়তো আমি সবাইকে বলে দেবো তুমি আমাকে কিস করোনি।

হৃদের মাথায় রক্ত উঠে গেলো।হৃদ শুভ্রাকে ঠাটিয়ে চড় মেরে দিলো।এত জোরে চড় মেরেছে শুভ্রার গাল জ্বলে পুড়ে যাচ্ছে।যেনো আগুন জ্বলছে।
শুভ্রা ফুপিয়ে কেদে দিলো।
—-তুমি আমাকে মারলে?আমার গাল জ্বলে যাচ্ছে।
আমি কি এমন চেয়েছি?

হৃদ চেচিয়ে বললো,
—-কি এমন চেয়েছিস?হাহ?তোর কাছে সামান্য মনে হচ্ছে?তুই কবে বুঝবি শুভ্রা বলতো?তোর লজ্জা নেই?তোর “লজ্জা” নামক বস্তু কবে হবে?

শুভ্রা কেদেই যাচ্ছে।তারপর বললো,
—-আমি বড় হয়েছি বলেই কিস চেয়েছি।আমার কেন লজ্জা করবে?আমি কি অন্য কোনো ছেলের কাছে কিস চেয়েছি?

হৃদ শুভ্রার গাল চেপে ধরে বললো,
—-তুই কারো কাছে চাইবিনা।কারো কাছে না।
শুভ্রা আরো জোরে কেদে দিলো।হৃদ শুভ্রার গাল ছেড়ে দিলো।গাল লাল হয়ে গেছে।হৃদ নরম হয়ে গেলো।হৃদ শুভ্রার গালে হাত বাড়িয়ে দিয়ে আবার সরিয়ে নিলো।
তারপর আবার চোখ মুখ শক্ত করে বললো,
—-আজ থেকে তুই আর আমার রুমে আসবিনা।আর না আমার সামনে।না মানে না।যদি আসিস তাহলে আমি তোকে খুন করে ফাসিতে চড়বো।বুঝেছিস?

শুভ্রা কাদতে চলে গেলো।শুভ্রা যেয়েই হৃদ দরজায় লাথি মারলো।
—-শুভ্রা তুই এত অবুঝ কেন?তোর এই অবুঝতার মাঝে আমাকে বারবার ফাসিয়ে দিচ্ছিস কেন?কেন আমাকে অন্যদিকে টানছিস?তোর এই অবুঝতার মাঝে আমি যদি কোনো ভুল করে ফেলি?আমার বড্ড ভয় হয়।

তার দুদিন পর শুভ্রা কার্ড হাতে হৃদের রুমে হাজির।হৃদ যতই চায়,যতভাবেই শুভ্রাকে দূরে রাখতে চায় না কেন শুভ্রা ঠিকই ওর কাছে এসে পড়ে।

চলবে…..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here