হৃদয় সমর্পণ,পর্ব-১১,১২
writer: Mou Ahmed
পর্ব:১১
অনুকে বুকের সাথে জড়িয়ে গায়ের সাথে লেপ্টে নিয়ে সুয়ে আছে উদয়।উদয়ের লম্বা চুল গুলো উদয়ের চোখে মুখে পড়ে আছে।একদিন যে ছেলেটা খুব বেশী গোছানো ছিলো সে আজ এত টা অগোছালো।
সেদিন উদয় ভুল বুঝে অনেক বাজে ব্যবহার করেছিলো যার জন্য অনুর মনে প্রচন্ড অভিমান দানা বেঁধেছে।অনু মনে মনে ঠিক করে নিয়েছে সে উদয়ের থেকে আলাদা থাকবে কিছুদিন।
খুব ভোরে ব্যাগ পত্র গুছিয়ে অনু বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেই।উদয়ের মা বাবা সালেহা খালা সবাই আটকানোর চেষ্টা করলেও অনু কারো কথাই শোনে না।সে আর উদয়ের সাথে থাকবে না।যদিও উদয়ের মা বাবার খুব বেশী জোর নেই এই মূহুর্তে অনুকে আটকানোর তাও দুই একবার বলেছে।সালেহা খালা উদয় কে এসে ডাকে উদয় বাবা অনু মা বাড়ি ছেড়ে চলে যাচ্ছে।উদয় এর কানে কথাটা যেতেই ঘুম চোখ থেকে পালিয়ে গেলো।উদয় চট করে বাইরে এসে দেখে অনুর হাতে ব্যাগ মোটামুটি অনু রেডি বাইরে যাওয়ার জন্য।উদয় অনুর সামনে মাথা নিচু করে বলে অনু কোথায় চলে যাচ্ছো।
-এই নরক থেকে মুক্তি নিচ্ছি।বেবিটা ডেলিভারি হলেই ডিভোর্স পেপার টা পেয়ে যাবেন ডাক্তার উদয় চৌধুরী।
ডিভোর্স কথাটা শোনার জন্য উদয় এই মুহুর্তে প্রস্তুত ছিলো না মোটেও।উদয়ের বুকের পাজরে এক অস্হিরতা শুরু হলো।বুকে চিন চিন ব্যাথা ও শুরু হলো।
উদয় অনুকে আটকাবে বাট কি বলে আটকাবে সেই অধিকার টাও এতদিনে হারিয়ে ফেলেছে উদয়।কি বা বলবে।কোন অধিকারে বলবে অনু থেকে যাও।শুধুমাত্র অনু বলে এতদিন থেকেছে অন্য কেউ হলে থাকতো না।উদয় নরম কন্ঠে বলে,,
-কোথায় যাবে অনু।
-এখানে থেকে মার খেয়েছি বলে এটা ভাবার কারন নেই যে আমার কোথাও যাবার জায়গা নেই।আমার মা বাবা কি মরে গিয়েছে উদয়।নাকি আমার ভাত কাপড় তারা দিতে পারবে না।আমার মা বাবাকে আমি কখনো বলি নি তোমার এই বাজে ব্যবহার গুলা।বললে উনারা কষ্ট পাবেন তাই বলি নি।
-তোমার কোথাও যাওয়া হবে না অনু।
-তোমার সাথে আমার এমন কোনো রিলেশন নেই যার জন্য এখানে থাকতে হবে।রোজ নেশা করে যে নিজের স্ত্রীর সাথে অসভ্য আচরন করে তার সাথে থাকা সম্ভব নয়।।।আর কিসের স্ত্রী আমি তো চরিত্রহীনা।আমাকে তো স্ত্রী বলে মেনেই নাও নি।আমি নাকি টাকার জন্য বিয়ে করেছি বলেই ২০ লাখ টাকা উদয়ের মুখের উপর ছুড়ে ফেলে দিলো অনু।এই নাও টাকা।মেয়েরা ডিভোর্স চাই টাকার জন্য আর আমি তোমাকে টাকা দিয়ে গেলাম।আমি প্রমাণ করে দিলাম সব মেয়ে টাকার জন্য বিয়ে করে না কিছু মেয়ে ভালবাসার ও পাগল হয়।
-অনু শোনো।।
-ব্যাস উদয় অনেক শুনেছি আমি আর নয়।আমার যদি টাকার ই লোভ হতো তাহলে তিহান কে আমি বিয়ে করতে পারতাম তিহানের কি তোমার থেকে টাকা পয়সা কিছু কম আছে।দুঃখিত তোমাকে আমি ছোট করার জন্য কথাটা বলিনি।আমাকে কি কখনো কোনো টাকাওয়ালা ছেলে প্রপোজ করে নি উদয় যে টাকার জন্য তোমাকে বিয়ে করতে হবে।শুধু মাত্র ভালবাসার জন্য এসেছিলাম তোমার কাছে।একটা মেয়ে হয়ে নির্লজ্জর মতো তোমার বাবাকে বলতে হয়েছে তার ছেলের সন্তান আমার পেটে।কতটা অসহায় ছিলাম আমি সেদিন ভাবতে পারো।একটানা দুইটা মাস আমি তোমার সাথে যোগাযোগ করতে পারি নি।আমি পাগলের মতো হয়ে গেছিলাম।একটা কুমারী মেয়ে আমি সমাজ আমাকে কি উপাধী দিতো উদয়।আমাকে সবাই চরিত্রহীনা বলতো।আমার মা বাবাকে সমাজের মানুষ থু থু দিতো। আমি পারিনি সেদিন আমার ভালবাসার চিহ্ন কে মুছে ফেলতে।শুধু মাত্র তোমার অংশ আমার গর্ভে ধারণ করেছি বলে তোমার কাছ থেকেই বারবার চরিত্রহীনা কথাটা শুনেছি।দিনের পর দিন কি মানসিক যন্ত্রণা আমি সহ্য করেছি সেটা আমি ছাড়া কেউ জানেনা।আমি তো চাইলেই পারতাম এই বাচ্চাকে মেরে ফেলতে।কিন্তু আমি পারিনি তোমার ভালবাসার চিহ্ন কে খুন করতে আর এই একটা মাত্র অপরাধে আমি আজ চরিত্রহীনা।এই কাহিনী অনেক হয়েছে আর নয়। বাই ফরএভার দেখা হবে বাচ্চা সহ কোর্টে।
-অনু যা খুশি বলো কার বাচ্চা কি এগুলা নিয়ে আমি আর ভাবতে চাই না বাট আমাকে ছেড়ে যেও না।।।
-একটা নেশাখোর অসভ্য মাতাল এর সাথে একদিন ও না।
-অনু আমি নেশা করেছি কিন্তু অসভ্য নয়।।।
-তুমি অনেক বড় অসভ্য। আমার সাথে খুব বেশী অসভ্যতা করেছো।
-আমি কোনো অসভ্য তা করিনি।উদয় অপরাধী দের মতো অনুর সামনে দুই হাত জোড় করে বলে আমি কি কি অন্যায় করেছি তার জন্য আলাদা আলাদা ভাবে ক্ষমা চাওয়া সম্ভব নয় আগামি কয়েক জনম ধরে ক্ষমা চাইলে শোধ হবে না।শুধু বলবো ক্ষমা করো আমায় অনু।তুমি তো আমার পরিনিতা তুমি ক্ষমা না করলে আমার যে এই জীবনে আর মানসিক শান্তি আসবে না।
-কাল রাতে কি করেছো ভেবে দেখো।
-কি করেছি।
-কাল তুমি নেশাক্ত অবস্থায় আমার সাথে অসভ্যতা করেছো।
-উদয় রাগান্বিত কন্ঠে বলে অনু চলে যাবে তাই বলে এত বড় অপবাদ দিয়ে যাবে।
-অনু উদয়ের হাত ধরে টানতে টানতে নিজের রুমে নিয়ে যায় দরজা লাগিয়ে ফোনের ভিডিও টা বের করে দেখাই।উদয় অবাক হয়ে যায় দেখে।
উদয় নেশাক্ত অবস্থায় অনুকে পাগলের চুম্বন করছিলো।অনুর সাথে অনেক বেশী ঘনিষ্ট হওয়ার চেষ্টা করে।নেশাক্ত অবস্থায় অনুকে বলছিলো আমাকে ছেড়ে যেও না।আরো বেশ কিছু অন্তরঙ্গ মুহুর্ত থাকে।উদয় অনুর হাত থেকে ফোন টা নিয়ে ভিডিও টা আরো কয়েক বার দেখে।উদয় আশ্চর্য হয়ে যায় নিজের কাজ নিজেই দেখে। অ অ অনু আমার কিচ্ছু মনে নেই।কিচ্ছু মনে নেই।এগুলা আমার অজান্তে কখন কিভাবে হয়েছে আমার কিছুই মনেই নেই।বিলিভ মি অনু আমার কিছুই খেয়াল নেই।আমি এমন ছেলে না অনু।তুমি তো জানো আমি কেমন।
-তুমি ও তো জানতে আমি কেমন কখনো কি বিলিভ করেছো আমায়।
-অনু নেশার ঘোরে কিছুই মনে নেই আমার।
-অনু বলে তার জন্য দায়ী কে উদয় আমি নাকি অন্য কেউ?তুমি নেশা করবে সেই অবস্থায় যে কাজ গুলা করবে তার দায়ভার তুমি নিবে না বাহ খুব ভাল।আজ আমি চলে যাচ্ছি যেদিন মনে পড়বে সে রাতের কথা সেদিন ফিরে আসবো তার আগে নয়।
-উদয় চেয়েও পারে নি অনুকে আটকাতে।অনু সিঁড়ি দিয়ে নামছিলো এমন সময় উদয়ের কাজিন বছর পাঁচেক বয়স হবে অনুর হাত ধরে বলে ভাবি আসো আজ আবার পড়ে যাওয়া গেম টা খেলি।।
-অনু বলে আজ না সোনা অন্যদিন খেলবো।
-না তোমার মন খারাপ দেখা যাচ্ছে তোমার মন খারাপ হলে যে গেম টা খেললে মন ভাল হয়ে যায় সেটা আজ ও খেলবো।তুমি রাগ করে বাপের বাড়ি চলে যাচ্ছো দাঁড়াও আমি তোমার মন ভাল করে দিচ্ছি।উদয় দাঁড়িয়ে দেখছে। এমন সময় পুচকি টা একতা তেলের বোতল এনে সিঁড়ি তে ছড়িয়ে দিয়ে বলে এখন এর উপর দিয়ে হাটো।অনু অবাক হয়ে যায় পুচকি টার কথা শুনে।অনু বলে এগুলা কি করছো পুচু সোনা।
-ভাবি এটাই তো তোমার পছন্দের খেলা।
-কে বলেছে।
-ইফা আপু বলেছে আমাকে।আগের দিন তো এভাবেই তোমার মন ভাল করে দিলাম আর তুমি পড়ে গেলে।
অনু আর উদয় দুজন ই অবাক হয়ে যায়।তার মানে সেদিন এ সবটা ইফা ই করেছিলো।ইফা অনুর করা অপমানের জন্য বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছে।
এইদিকে ইফা অনুকে বুঝিয়েছিলো তেল টা উদয় ই ফেলেছে।
অনুর তখন ইফাকে নিয়ে ভাবার টাইম ছিলো না।ব্যাগ নিয়ে সোজা বাপের বাড়িতে চলে যায়।
কেটে গেছে এক মাস অনু উদয়ের সাথে কোনো যোগাযোগ করে নি।উদয় চেয়েও পারেনি।অনুর মা বাবা সব টা শুনে তারাও চাইনা তাদের মেয়ে আর উদয়ের সাথে থাকুক।অনুর মা বাবা উদয়ের বাড়িতে বলেই দিয়েছে উদয় যেনো আর যোগাযোগ এর চেষ্টা না করে।
চলবে,,,,,
হৃদয় সমর্পণ
১২
Writer: Mou Ahmed
৬ মাসের গর্ভবতী অনু।উদয়ের সাথে দু’মাসে কোনো যোগাযোগ করে নি।কতদিন হয়ে গিয়েছে অনু উদয়ের দেখা হয় না কথা হয় না।উদয় আজ ১০০ বারের বেশী কল দিয়েছে অনু ধরেনি।অনু চাই উদয়ের সব মনে পড়ুক তবেই সে ফিরে যাবে।হালকা হালকা শীত পড়েছে।ফ্যানের বাতাসে বেশ ঠান্ডা লাগছে।অনু ফ্যান টা বন্ধ করে আলমারি খুলে বাইরের কিছু শাড়ি তুলে রাখতে যেতেই কাপড়ের ভাজ ভেঙে বেশ কত গুলো শাড়ি নিচে পড়ে গেলো।শাড়ি গুলোর মাঝে বেশ কয়েক টা শাড়ি উদয়ের।উদয় বিয়ের আগে সালেহা খালা কে দিয়ে পাঠাতো।শাড়ি গুলো তুলে বিছানায় নিয়ে অনু হাত বোলাচ্ছে।এই শাড়ি গুলোর সাথেই জড়িয়ে আছে তার কত স্মৃতি। এমন সময়ে অনুর মা রুমে প্রবেশ করে বলে যে মানুষ টার শাড়ি কে এত টা যত্ন করিস মানুষ টাকে কেনো ফিরিয়ে দিচ্ছিস মা।একটা কথা বলি মা অনু আমার কি মনে হয় জানিস উদয় নিজে খুব অনুতপ্ত।কাল দেখলাম অনেক শুকিয়ে গিয়েছে ছেলেটা।আমার হাত ধরে খুব কাঁদছিলো।একটা ছেলে তো সহজে কাঁদে না।উদয়ের সমস্যা টা আমি বুঝতে পারছি একদিকে তোকে ভীষণ ভালবাসে অন্য দিকে তোর পেটে অন্যর বাচ্চা ভেবে অসস্তিতে আছে।তোর থেকে উদয়ের যন্ত্রনা বেশী।একটা কথা তো আর অস্বীকার করা যায় না মা উদয় সারাটাজীবন তোকে পাওয়ার জন্য একটা জনম কাটিয়ে দিয়েছে।সেই উদয় তোকে অবিশ্বাস করেছে নিশ্চয়ই এমন কিছু হয়েছিলো যেটা উদয় কে অনেক কষ্ট দিয়েছিলো।তোর খুজে বের করা উচিত এমন কি হয়েছিলো কি জন্য ও তোকে সন্দেহ করে।
-মা ও তিহান কে নিয়ে সন্দেহ করে।
-একটা ছেলে কি একেবারে খালিখালি সন্দেহ করে অনু।যেহেতু বারবার তিহানের নাম বলছে নিশ্চয়ই তিহান উদয় কে এমন কিছু বলেছে বা করেছে যার জন্য উদয় ভুল বুঝতে বাধ্য হয়েছিলো।এতদিনে তোর খুজে বের করা উচিত ছিলো তিহান আসলে কি করেছে।
-মা আমি আমার আর উদয়ের ব্যাপারের সব টা তিহান ভাইয়া কে বলতাম।আমাকে উনি সব সময় সাহায্য করেছে সাপোর্ট করেছে।তিহান ভাইয়া আমাকে যেভাবে বুঝাইছে তাই বুঝেছি।আমি সিয়ার থেকে সব টা জেনেছি তিহান কে বিশ্বাস করাটা আমার ভুল হয়েছে কিন্তু উদয়ের কি উচিত ছিলো না একটা বার আমাকে বিশ্বাস করা।ও আমাকে এতটাই ভালবাসতো যদি তাহলে অন্তত একটা বার উচিত ছিলো আমাকে সব টা খুলে বলা।
-অনুর মা অনুকে বলে মা অনু তোর জীবন তুই ভেবে দেখ আরেক বার।আমরা তোকে কোনো কিছু নিয়ে জোর করবো না।
এমন সময় সিয়া ফোন দেই অনুকে।অনু ফোন রিসিভ করতেই সিয়া বলে উদয় এক্সিডেন্ট করেছে।অনু একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছেড়ে বলে….তুই একটু দেখে এসে আমাকে বলবি প্লিজ উদয় কেমন আছে।
-কেনো তুই যাবিনা অনু।
-না যাবোনা।
-কেনো অনু?
-যে সম্পর্ক শেষ হয়ে গিয়েছে সেখানে গিয়ে লাভ কি!
-তোর কি খারাপ লাগছে না অনু।
-আমার ভাল খারাপে কারো কিছু যায় আসে নি কখনো। একটা অনুরোধ প্লিজ আমাকে জানা উদয় কেমন আছে সিরিয়াস কিছু হয় নিতো।
-সিয়া বলে আমি হসপিটালে এসছি অনু।আজ তোকে অনেক ইমপরটেন্ট একটা কথা বলতে চাই। যেটা শুনলে তুই আশ্চর্য হয়ে যাবি।
-কি কথা….
-তুই সেদিন তিহানের কাছে একটা চিঠি দিয়েছিলি যে তুই উদয় কে ভালবাসিস।উদয়ের জন্য পৌর পার্কে অপেক্ষা করবি।কিন্তু তিহান তোকে দিয়ে তিহানের প্রেমিকাকে দেওয়ার জন্য যে চিঠি লিখিয়েছিলো সেটাই তিহান উদয় কে দিয়ে বলেছিলো যে তুই চিঠিটা তিহান কে দিয়েছিস।সেই বৃষ্টির রাতে তুই তিহানের কাছে চিঠি দিতে গিয়েছিলি উদয়ের জন্য।আর তিহান সেটার অপব্যবহার করেছে।তোর ড্রেসের মতো হুবহু সেইম ড্রেস বানিয়ে তিহান ওর গফ কে দিয়েছিলো।আর মেয়েটার সাথে বাজে রিলেশন করেছে।তার ই ভিডিও করে উদয় কে দেখিয়েছে।আর এমন ভাবে এডিট করেছে ওই মেয়েটার ফেস এ তোর ফেস লাগিয়ে দিয়েছে।তিহান এতটাই খারাপ যে তোকে পাওয়ার জন্য অন্য একটা মেয়েকে ইউজ করেছে।উদয় দেখে সেদিন থেকে নেশা করা শুরু করেছে।উদয় নিজের প্রাণের থেকে তোকে বেশী ভালবাসতো অনু।প্রাণের থেকে প্রিয় মানুষ টার এমন বাজে ভিডিও দেখলে কার ভাল লাগে।এমন কি তিহান প্রায় এমন ভিডিও দেখাতো উদয় কে।যেটা দেখে উদয় বিশ্বাস করতে বাধ্য হয়েছিলো।অনু এবার ভেবে দেখ উদয় কতটা কষ্ট পেয়েছিলো তোকে না পাওয়ার যন্ত্রণার।তিহান যখন বার বার উদয় কে বলতো অনু তার।অনুর সব কিছু দিয়েই তিহান কে ভালবাসে।উদয়ের মনের ক্ষত টা দেখ অনু।উদয় যে বেঁচে আছে সেটাই অনেক বড় ব্যাপার।উদয়ের অবস্থা ভাল না অনু। পারলে একবার দেখতে আয় প্লিজ।
-অনু ফোন টা কেটে অনুর মা বাবাকে সাথে নিয়ে হসপিটালে গেলো।উদয়ের কেবিনে ইফা ও উপস্হিত।উদয়ের এক্সিডেন্ট শুনে ইফা এসেছে।কেবিনের বাইরে সবাই বসে আছে।ডাক্তার একজন একজন করে এলাউ করেছে দেখা করার জন্য।অনু গিয়ে দেখে যে ইফা ভেতরে উদয়ের মাথার পাশে টুল নিয়ে বসে আছে।
-ইফা উদয়ের কাছে জানতে চাইলো এভাবে এক্সিডেন্ট টা কি ভাবে হলো।
-উদয় উত্তর দিলো ইচ্ছাকৃত ভাবেই হলো।
-ইচ্ছাকৃত ভাবে মানে।
-আমি নিজেকে শাস্তি দিতেই এমন ভাবে বেখায়াল ভাবে রাস্তা ক্রাশ করছিলাম যাতে আমার এক্সিডেন্ট হয়।
_যদি বড় কিছু হয়ে যেতো।
_বড় কিছু হতেই এমন করেছি।আমি বেঁচে থাকতে চাই নি তাই।
_এসব পাগলামির কারণ কি উদয়।
_অনু।
_মানে।
_এসবের মানে অনু।আমি অনুর জন্য এমন করেছি।
_কি লাভ তাতে উদয়।যে ছেড়ে চলে গিয়েছে তার জন্য এসব পাগলামো করে।
-অনুকে আমি যতটা আঘাত দিয়েছি ততটা নিজে পেতেই নিজেকে ক্ষত করেছি।
উদয় যে তোমাকে ভালবাসে তার দিকে ফিরেও তাকিয়ে দেখলে না।যে প্রতিটা মূহুর্তে তোমাকে চাই।যে তোমাকে ভীষণ ভালবাসতে চাই উদয়।আমার দিকে তাকিয়ে দেখো উদয়।এতদিন আমি বলতে পারিনি তোমাকে।ভেবেছি তুমি একদিন না একদিন ঠিক ই আমাকে বুঝবে।কিন্তু না তুমি আজ ও অনুকে নিয়েই পড়ে আছো।ভেবেছিলাম অনুকে ঘৃনা করো হয়তো আমাকে মেনে নিবে।কিন্তু তোমার মনে বিন্দুমাত্র জায়গা আমার জন্য নেই।।
ইফা আমার ঘৃণাতেও অনু,আমার অবহেলাতেও অনু,আমার ভালবাসাতেও অনু।আমার ভালবাসার প্রথম এবং শেষ শব্দ অনু।এসব কি বাজে কথা বলছো তুমি আমাকে ভালবাসো।প্লিজ ভাল লাগছে না এগুলো শুনতে।
অনু দরজায় দাঁড়িয়ে আছে হঠাত ইফার চোখ পড়লো অনুর দিকে।ইফা উঠে এসে অনুকে বলে তোমার এখানে কি চাই।উদয়ের পাশে এখন আর তোমাকে প্রয়োজন নেই।তুমি চলে গিয়েছিলে এখন কি চাই তোমার।যাও এখন।
অনু ইফাকে বলে তোমার সাথে বোঝাপড়া টা পরে সেরে নিবো।এখন আমার স্বামি অসুস্থ সো লিভ হেয়ার।ইফা অনুকে কিছুতেই ঢুকতে দিবে না।উদয় অনুর কন্ঠ শুনে অনুর নাম ধরে ডাক দেই।অনু ইফা কে একটা ঝটকা মেরে ফেলে দিলে বলে তোমার সাথে অনেক বোঝাপড়া আছে আমার..ভেবো না আমি কিছুই জানিনা।নিজে তেল ফেলে উদয় কে ফাসাতে চেয়েছিলে তুমি বলেই অনু কেবিনের মাঝে প্রবেশ করে।
অনু উদয়ের পাশে টুলে বসে উদয়ের হাত ধরে হু হু করে কেঁদে দিলো।উদয় খুব খারাপ ভাবে ক্ষত বিক্ষত হয়েছে।অনেক রক্ত ঝরেছে।অনু কেঁদেই যাচ্ছে।উদয় অনুকে বলে এভাবে কাঁদছো কেনো?আমার কিছুই হয় নি।তোমার শরীরে যতটা আঘাত আমি করেছি সে তুলনায় এটা কিছুই না।
চলবে,,,