হৃদয় সমর্পন,পর্ব-৩,৪
Writer Mou Ahmed
পর্ব-৩
এই অবৈধ সন্তান নষ্ট না করলে তোকে আমার বাড়ি থেকে বের করে দিবো বলেই উদয় অনুর চুল ধরে ঝাঁকুনি দেই।এই বাচ্চা কিছুতেই আমি আমার পরিচয়ে জন্ম দিতে দিবো না।সমাজের কাছে তুই তোর সম্মান বাঁচাতে আমার জীবন টা নষ্ট করলি কেনো?তোকে আমি সাত দিন সময় দিলাম যদি এর মাঝে এই বাচ্চার ব্যবস্থা না করিস তাহলে আমার থেকে খারাপ কেউ আর হবে না।আর শোন ভুলেও মা বাবাকে বলবি না আমি তোকে বাচ্চা নষ্ট করতে বলেছি।তুই বলবি তোর বেখায়ালে কিভাবে নষ্ট হয়েছে আমি জানিনা।
অনু অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে উদয়ের দিকে।অনুর চোখ দিয়ে ঝরে চলেছে অঝর ধারার পানি।উদয় কে সে কিভাবে বুঝাবে।বুঝানোর ভাষা খুজে পাচ্ছে না।সকালে রাগ করে না খেয়ে বেরিয়ে গিয়েছে আর সন্ধ্যায় এসে আবার রাগারাগি করছে।
উদয় আবার ও উত্তেজিত হয়ে বলে এভাবে চুপ আছিস কেনো?চুপ থেকে আমার কথা এড়িয়ে যাচ্ছিস।
আমি কি বলবো উদয়।যে বাবা নিজের সন্তান মেরে ফেলার জন্য বউ এর গায়ে হাত তোলে তাকে বলার মতো কিছুই নেই আমার।
শোন অনু এই বাচ্চা যদি আমার হতো তোকে আজ মাথায় করে রাখতাম আমি।আমার সন্তান কে এই পৃথিবীতে আনার জন্য সব রকম যুদ্ধ আমি করতাম।কিন্তু তিহানের সন্তান কে কেনো আমি আমার সন্তান বলে পরিচয় দিবো।
উদয় আল্লাহর দোহাই লাগে এই তিহান নাম টা বলে অন্তত আমাকে অসম্মান করো না প্লিজ।আমি নিতে পারছি না।তুমি কি ভুলে গিয়েছো সে রাতের কথা।
কোন রাত।
আজ থেকে দুই মাস আগে সেদিন অঝরে বৃষ্টি হচ্ছিলো।বাসায় যেতে না পেরে তোমার বাসায় এসছিলাম।আর তুমি সেদিন মদ্যপান অবস্থায় ছিলে।
সেদিন তুই আমাকে মদ্যপান করতে বাধ্য করেছিলি অনু।এখনো মনে পড়লে বুকের মাঝে চিন চিন ব্যাথা অনুভব হয় আমার।সেই কষ্ট আমি নিতে পারি না।
অনুর মনে প্রশ্ন জাগে উদয় তিহানের কথা কেনো বলে বারবার।তিহানের সাথে আসলে কি?
অনু সেদিন রুমের বাইরে গিয়ে তিহান ফোন করে।
তিহান ভাইয়া একটা কথা আস্ক করতে পারি।
হুম করো।
উদয় আপনাকে আর আমাকে নিয়ে সন্দেহ করে।কেউ কি কিছু বলেছে উদয় কে।আর ও কেনোই বা সন্দেহ করে।
অনু তুমি খুব বোকা।তাই আসল সত্যি টা বুঝতে পারো নি।একটা ছেলে ভাল হলে তার প্রেমিকাকে রেপ করতে পারে।রেপ করে সেই সন্তান অস্বীকার করতে পারে।কেউ ভালবাসলে অন্তত এটা করতে পারবে না জানি।উদয় কে তুমি পাত্তা দিতে না তাই উদয়ের প্লান ছিলো এটা।উদয় তোমাকে রেপ করবে যাতে তুমি বাধ্য হও বিয়ে করতে।তুমি কি কিছুই বুঝ না।শোনো অনু ছেলেরা বিয়ের আগে শরীর পেয়ে গেলে তাদের আর কোনো চাহিদা থাকে না।উদয়ের ও তাই হয়েছে।
এসব কি বলছেন তিহান ভাই!
এমন সময় উদয় ফোন টা কেড়ে নিয়ে বলে বাহ!লজ্জা করে না তোর।এক্ষুণি বের হ আমার বাসা থেকে।আজ আমি মা বাবা কে সব টা খুলে বলবো।তোর সব পাপের কাহিনী আজ জানাবো সবাই কে।কি ভেবেছিস কি তুই।উদয় অনুর হাত ধরে টানতে টানতে নিচে নিয়ে গেলো।উদয় এর বাবা উদয়ের গালে জোরে একটা থাপ্পড় মেরে বলে অনেক হয়েছে।মেয়েটাকে এভাবে টানতে টানতে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে।মেয়েটা যে অসুস্থ সে কথা কি ভুলে যাচ্ছো।
বাহ বাবা বাহ!থাপ্পড় টা আমাকেই মারলে।আমি কেনো ওকে পছন্দ করছি না সেটা ওর কাছেই জিজ্ঞেস করো।
অনুর কাছে আমার কিছুই জানার নেই।যা বলার তুই বল।
বাবা ওর পেটের সন্তান আমার না।বিলিভ মি।ওর বাচ্চা তিহানের।ও কেবল ই তিহানের সাথে গল্প করছিলো তাও আবার আমাকে লুকিয়ে চুরিয়ে।তিহানের সন্তান এর দায় ভার আমি কেনো নিবো বলতে পারো বাবা।তোমরা কেনো অনুকে তিহানের বাড়িতে দিয়ে আসছো না।
অনু উদয় এর বাবার দিকে তাকিয়ে অঝরে কাঁদছে।উদয়ের বাবা বুঝতে পারে অনু কোনো ভুল করে নি।উদয়ের বাবা উদয় কে বলেন..
তিহান তো তোমার ই বন্ধু তার সাথে অনু কথা বললেই খারাপ রিলেশন হয়ে গেলো।দিন দিনে এত নিচে নেমেছো ছিঃউদয় ছিঃ।এতটা খারাপ তুমি কবে হলে।আর কিভাবে হতে পারলে বলবে।
বাবা তিহান আমার বন্ধু ওর নয়।ওর কিসের কথা তিহানের সাথে সেটা জিজ্ঞেস করো।
অনু মা তুমি কি কথা বলেছো তিহানের সাথে।
বাবা উদয় আমাকে কেনো সন্দেহ করে সেটা জানতেই ফোন দিয়েছিলাম।তিহান ভাইয় কি এ ব্যাপারে কিছু জানেন।উদয়ের সন্দেহর কারণ জানতেই ফোন দিয়েছিলাম।
উদয়ের বাবা অনুকে বলে তোমাকে আমি এ বাড়িতে এনেছি।কে কি বললো সেটা নিয়ে ভেবো না।আমার বিষয় সম্পত্তি সব আমি তোমার সন্তানের নামে করে দিবো।কারো যদি ভাল না লাগে এ বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে পারে আমার কোনো সমস্যা নেই।কিন্তু আমার নাতি কে আমি চাই অনুমা।
উদয় রাগ দেখিয়ে কোথায় যেনো চলে গেলো।অনু নিজের রুমে গেলো।
উদয়ের ফুফি বলে ভাই তোমার উচিত হয় নি উদয়ের অমতে বিয়েটা দেওয়া।জোর করে সব হলেও ঘর সংসার জিনিস টা হয় না।
উদয়ের বাবা একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে বলেন…..
অনুর পেটে উদয়ের ই বাচ্চা। আর উদয় কোনো কারনে অনুকে ভুল বুঝেছে।এই ভুল বোঝাবুঝি একদিন না একদিন মিটে যাবেই।তাছাড়া উদয় অনুকে ভীষণ ভালবাসে।সেই ছোট বেলা থেকে অনুর পিছনে ঘুরছে উদয়।অনু বলতে পাগল আমার ছেলে।আজ যদি আমি ওদের বিয়ে না দিতাম তাহলে উদয় কোনদিন আর বিয়ে করতো না।অনুর অন্য কোথাও বিয়ে হলে উদয় ভেঙে পড়তো।উপর উপর রাগ হলেও উদয়ের অনুর প্রতি ভালবাসা এক বিন্দু ও কমে নি।উদয়ের জীবনে অনু না থাকলে আমি কখনো পুত্রবধু নাতি নাতনির মুখ দেখতে পাবো না।আমার উদয়ের সুন্দর ভবিষ্যত নষ্ট হয়ে যাবে। আর বাবা হয়ে মাই কখনো সেটা চাইবো না আমার ছেলের এমন ক্ষতি।কিন্তু আমাকে জানতে হবে উদয়ের কিসের এত ঘৃণা।আবার একটা জিনিস বুঝতে পারছি না।অনু তো আগে উদয় কে পছন্দ করতো না।কিন্তু অনু হঠাত এমন নরম হয়ে গেলো ক্যানো।অনু তো অত্যাচার সহ্য করে পড়ে থাকার মেয়ে নয়।ও কেনো চুপচাপ সব সহ্য করছে।এই সহ্যর কারণ কি?অনু হঠাত বদলে গেলো কেনো?
উদয়ের বাবা মা সালেহা খালা সবার মনেই এই প্রশ্ন।অনু এমন নিশ্চুপ হয়ে গেলো কেনো?
সেদিন সালেহা খালা অনুকে বলে মা অনু তুমি তোমার বাবার কাছে চলে যাও।এখানে থেকে কেনো এই অত্যাচার সহ্য করছো।তোমার এই কষ্ট সহ্য করতে পারছি না আমি।
অনু কেঁদে দিয়ে বলে আমি উদয় কে ভালবাসি খালা।আমি ভীষণ ভালবাসি উদয় কে।তাই ওর প্রেমের চিহ্ন মুছে ফেলতে পারিনি আমি।সবাই বলেছিলো এই বাচ্চা নষ্ট করে ফেলতে কিন্তু আমি উদয় কে ভীষণ ভালবাসি বলে ওর অস্তিত্ব কে নষ্ট করিনি।আমি হাজার কষ্ট হলেও ওকে জন্ম দিবো।উদয়ের পরিচয়ে ওকে সমাজের সামনে আনবো।আমার যত কষ্ট হয় হোক খালা।
চলবে,,,
হৃদয় সমর্পন
পর্ব-৪
Writer: Mou Ahmed
ডাক্তার বাচ্চাটা আমার স্ত্রীর অবৈধ বাচ্চা প্লিজ বাচ্চাটা নষ্ট করুন।আমি অনেক কষ্ট করে ওকে হসপিটালে এনেছি।আমার স্ত্রী যেনো বুঝতে না পারে।যত টাকা লাগে আমি দিবো তবুও যেকোনো ভাবে এই পাপের চিহ্ন মুছে ফেলুন। ডাক্তার বলেন আপনি কি পাগল কারো অজান্তে তার সন্তান আমরা নষ্ট করতে পারি না।এটা আইনত অপরাধ।ডাক্তার যে জিনিসের কোনো বৈধতা নেই তার কিসের পাপ।উদয় আপনি নিজেও একজন ডাক্তার প্লিজ একটু বোঝার চেষ্টা করুন।তাছাড়া আপনার স্ত্রী কে আমরা সব রকম পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখেছি উনার শারীরিক কন্ডিশন অনেক খারাপ।এই মুহুর্তে এমন কিছু করলে তাকে বাঁচানো যাবে না।আপনি কি চান আপনার স্ত্রী মারা যাক।উদয় খুব নরম কন্ঠে বলে না ডাক্তার অনুর যেনো ১% ও কোনো ক্ষতি হয় না।অনুকে সেফ রেখেই বাচ্চাটা কে মারতে হবে।
দরজার আড়াল থেকে এমন কথা শুনে চমকে যায় অনু।অনু ডাক্তারের রুমে প্রবেশ করে উদয়ের গালে ঠাসস করে থাপ্পড় মেরে বলে ছিঃনিজের সন্তান কে খুন করতে এত অভিনয়।তুমি কি মানুষ থেকে অমানুষ হয়ে গিয়েছো।ডাক্তার কে এক গাদা মিথ্যা বলছো কেনো?তুমি নিজে একজন ডাক্তার হয়ে একটা অনাগত সন্তান কে খুন করার কথা কিভাবে বলো।শোনো উদয় আমি এই সন্তানের জন্ম দিবো তার জন্য আমাকে যত যুদ্ধ করতে হয় হোক তবুও ও পৃথিবীতে আসবে।তোমার সাথে আর আমি থাকবো না।তুমি আমার সন্তানের জন্য রিস্কের এখন।আমি চলে যাচ্ছি তোমার জীবন থেকে।মনে রেখো একদিন না একদিন তোমাকে আফসোস করতে হবে।তোমার সন্তান কে বাঁচাতে তুমি মরিয়া হয়ে উঠবে।সেই দিন অনেক বেশী দেরি হয়ে যাবে।তোমার হাতে কিছুই থাকবে না।
অনু পেটে হাত দিয়ে বলে পুচকু তুই ছেলে না মেয়ে আমি জানিনা।তবে জানি তুই আমার। আমার ভেতরে বেড়ে উঠছিস তুই।তবে তুই কষ্ট পাস না তোর বাবা তোকে ভালবাসে না তাতে কি।তোর মা তোকে ভালবাসে পুচকু কাঁদিস না।
অনু রাগ করে হসপিটাল থেকে বেরিয়ে এলো।উদয় কেনো এতটা বদলে গেলো।কি এমন হয়েছিলো যার জন্য সেই অনু পাগল উদয়ের আজ এত ঘৃণা।তাহলে কি তিহান ই ঠিক ছেলেরা মেয়েদের শরীর ভোগ করার পর আর চাহিদা পাই না।উদয় ও কি তাই?কিন্তু উদয় বারবার কেনো তিহানের বাচ্চা তিহানের বাচ্চা করছে।এই সত্যতা যাচাই করতেই হবে।
গতকাল রাতে উদয় এসে হঠাত অনুর সাথে ভালো ব্যবহার করছিলো।অনু সুয়ে ছিলো।উদয় এসে মাথায় হাত দিয়ে বলে তোমার শরীর ঠিক লাগছে না। কাল আমার সাথে একবার হসপিটাল এ যাবে প্লিজ। অনু হঠাত উদয়ের কথা শুনে খুশিতে পাগল হয়ে যায়।অনু ভাবতেই পারে নি উদয় তাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে আসবে।কিন্তু উদয়ের মনে এমন কিছু ছিলো অনু ভাবতেই পারে নি।
অনু সেদিন রাগ করে ওর বান্ধবীর বাসায় চলে যায়।ফোন টাও সুইচ অফ করে রাখে।অনুর বান্ধবী সিয়া অনুকে দেখেই চমকে যায়।
কিরে অনু তুই।হোয়াট এ সারপ্রাইজ।
অনু ভেতরে প্রবেশ করে বলে এইতো এলাম অনেক দিন দেখিনা তোকে তাই।।।
খুব ভাল করেছিস।উদয় কই।যাক শেষ মেষ উদয়ের ভালবাসা টা বুঝেছিস।উদয় তো পৃথিবীর সব থেকে সুখি মানুষ এখন।কারণ সে তার অনুকে পেয়েছে।
অনু সিয়ার দিকে তাকিয়ে বলে উদয় আর উদয় নেই সিয়া।অনুর দু’চোখ অশ্রুসিক্ত হয়ে আছে।একটা সাহায্যের জন্য এসছি।তুই ছাড়া আমার কাছের কেউ নেই।
এভাবে বলছিস কেনো কি হয়েছে সেটা বল আগে।
তিহানের ব্যাপারে কিছু জানিস সিয়া।
কোন ব্যাপার।
উদয় আমাকে তিহান কে নিয়ে সন্দেহ করছে।
অনু তিহান আর উদয় এর একটা ব্যাক্তিগত ঝামেলা ছিলো হয়তো সেটার রেশ ধরেই উদয় সন্দেহ করছে।
কি ঝামেলা সিয়া
তিহান আর উদয় দুজন ই তোকে পছন্দ করতো।এটা নিয়ে ওদের মাঝে ঝামেলা হয়।একটা সময় তিহান উদয় কে বলে আমরা আর নিজেদের মাঝে আর ঝামেলা না করি।দুজন দুজনের মতো অনু কে ভালবাসার কথা প্রকাশ করবো।কিন্তু কেউ অনুকে দুজনের ব্যাপারে কিছুই বলবো না।আমি এতটুক জানি তোকে নিয়ে এতটুক ঝামেলা হয়েছিলো দুজনের মাঝে।
অনু অবাক হয়ে গিয়ে সিয়া কে বলে তিহান তো আমাকে বোনের মতো দেখে।এখনো বোন ডাকে।আমিও তাকে ভাই ডাকি।তিহান তো কখনো আমাকে প্রস্তাব দেই নি।
বলিস কি তিহান তো ভীষণ পাগল ছিলো তোর জন্য।এটা কিভাবে সম্ভব তিহান তোকে কখনো প্রপোজ ই করে নি।
না সিয়া।আমি আজ ই প্রথম জানলাম।
তাছাড়া তিহান ভাই খুব ভাল ভাবেই জানেন আমি উদয় কে ভালবাসতাম।আমি একটা সময় উদয়ের প্রেমে পড়ে গিয়েছিলাম।সেই প্রেম টা খুব ভয়ানক ছিলো।আমার সব কিছুর সাথেই উদয় মিশে গেছিলো।আর সব কিছুর সাক্ষী তিহান ভাই ছিলো।আমার প্রেম আমার ভালবাসা সব কিছু তিহান ভাই কে বলেছিলাম।তিহান ভাই এর সাথে আমার বরাবর ই ভালো রিলেশন। সেটা প্রেমের নয় বন্ধুত্ত্বের।
অনু,সিয়া,উদয়,তিহান সবাই স্কুলে এক সাথেই পড়তো।তবে অনু উদয়ের একটু জুনিয়র ছিলো।এক পাড়ায় বাড়ি হওয়াতে ছোট বেলা থেকে রাগ অভিমান, খুনসুটি সব নিয়েই বড় হচ্ছিলো ওরা।কিন্তু ভীষণ পাগলামো করতো অনুর জন্য।প্রথম অবস্থায় অনুর প্রেম ভালবাসার অনূভুতি ছিলো না উদয়ের প্রতি।কিন্তু পরবর্তিতে অনুর মনেও ফিলিংস জাগে উদয় এর প্রতি।অনুর ভালবাসে উদয় কে।কিন্তু সেই ভালবাসা প্রকাশ করার আগেই উদয় অনুর থেকে দূরে সরে যায়।
সেদিন মুশল ধারে বৃষ্টি হচ্ছিলো।উদয় ফোন দিয়ে অনুকে বলেছিলো অনু কোনদিন কি আমার হবি না।ভিডিও কলে অনু দেখেছিলো উদয়ের কষ্টে ভরা মুখ টা।উদয়ের দু’চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি পড়ছিলো।উদয় পাগলামি করছিলো।ভীষণ পাগলামি।যে পাগলামি দেখে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিলো উদয়ের ভিতরের কষ্ট।অনু বার বার প্রশ্ন করছিলো উদয় প্লিজ এভাবে কেঁদো না আমাকে বলো তোমার কি হয়েছে।উদয় সেদিন কাঁন্না ভেজা কন্ঠে বলেছিলো অনু আমি তোমাকে খুব ভালবাসি।আমি জানি তোমাকে আমি কোনদিন পাবো না।আমি তোমার ভালবাসার যোগ্য না।এই পাগল টাকে একবার ভালবেসে দেখতে অনু।আমার যদি দুইটা হৃদয় থাকতো দুইটাই তোমাকে দিয়ে দিতাম।জানি সম্ভব না তবুও বলবো একবার আসবে আমার জীবনে।একটা দিন আমাকে ভালবাসবে।তাহলে ওই ভালবাসা টুকু নিয়ে আমি সারাজীবন বেঁচে থাকতে পারবো।কেনো তুমি অন্যকে ভালবাসলে অনু।এই উদয় কে কাঁচের মতো টুকরো টুকরো করে ফেললে।অনু উদয় কে বলেছিলো আমি আসছি উদয়।আজ তুমি জানবে এই অনু কাকে ভালবাসে।অনু ফোন টা কেটে সেদিন আগে তিহানের সাথে দেখা করতে যায়।তিহান কে অনু জানিয়েছিলো সে উদয় কে তার মনের কথা জানাতে চাই।অনু তিহান কে একটা চিরকুট দিয়েছিলো উদয় কে দিতে।অনু সরাসরি উদয় কে ভালবাসার কথা বলতে লজ্জা পাচ্ছিলো।তিহানের কাছে থেকে সোজা উদয় দের বাসায় যায়।কারণ কাল বৈশাখি ঝড় শুরু হয়।সেই ঝড়ে অনুর বাসায় পৌছানোর কোনো উপায় ছিলো না।উদয়ের বাড়িটায় কাছাকাছি ছিলো।অনু উদয়ের বাসায় যাওয়ার পরেই ঘটে সেই অঘটন।
সেদিনের পর থেকে উদয়ের পরিবর্তন।উদয় বার বার অনুর বাচ্চাকে তিহানের বাচ্চা বলে দাবি করছে।এর একচুয়াল কোনো কারণ অনুর জানা নেই।
চলবে,,