হৃদয় সমর্পন,পর্ব-৫,৬

0
3085

হৃদয় সমর্পন,পর্ব-৫,৬
Writer: Mou Ahmed
পর্ব-৫

নিজের ভালবাসার মানুষের কাছে রেপ হওয়ার মতো লজ্জা অপমান আর কোনো কিছুতে নেই।ভালবাসার মানুষের সেই ফসল মা যায় মুছে ফেলা না যায় কাউকে বলা।মাতৃত্ব প্রতিটি মেয়েকে ভেতর থেকে বাঁধা দেই তার সন্তানের ক্ষতি করতে।

উদয় একদিন সালেহা খালার কাছে একটা সাদা শাড়ি আর কাঠগোলাপের গাজরা পাঠিয়ে বলেছিলো জানি এটা অনু নিবে না তবুও দিও।কোনদিন যদি ভাল লাগে পরবে।সেদিন ছিলো নববর্ষ সেদিন অনু সত্যি শাড়িটা পরেছিলো। শাড়ি পরে বাসার বাইরে বেরোলে উদয় অস্হির নয়নে দেখছিলো অনুকে।অনুকে সাদা শাড়িতে এত টা স্নিগ্ধ লাগে সেটা উদয়ের জানা ছিলো না।অনু উদয়ের সামনে এলে উদয়ের হাত পা কাঁপছিলো।ভেতর থেকে এক ভয়,লজ্জা, কাজ করছিলো উদয় এর।উদয় কিছুই বলতে পেরেছিলো না শুধু বলেছিলো এত সুন্দর তোমাকে কাছ থেকে এই প্রথম বার দেখলাম।একবার উদয়ের ভয়ানক জ্বর হয়েছিলো।যে জ্বরে উদয়ের কোনো হুশ ছিলো না।জ্বরের ঘোরে শুধু অনু অনু করেছিলো।অনু দেখতে এসে উদয়ের কপালে হাত রাখতেই উদয় বলেছিলো আমার এ অসুখ অনন্ত কাল থেকে যাক এ বাহানায় অন্তত তুমি কপালে হাত ছুয়ে দাও।এ অসুখ বারবার হোক আর তুমি বার বার স্পর্শ করো।কোথা থেকে কি হয়ে গেলো ভালবাসা থেকে বিচ্ছেদে পরণত হলো।

বিচ্ছেদ মানেই জীবন থেকে প্রিয় মানুষ টার বিদায়।বিচ্ছেদ এর যন্ত্রণা বড় বেদনাদায়ক।জানালার গ্রিল ধরে দাঁড়িয়ে অঝরে চোখের পানি ফেলছে অনু।সিয়ার বাসার নিচেই দুজন স্বামি স্ত্রী তাদের বেবিকে নিয়ে খেলা করছে। স্বামি তার স্ত্রীর হাত ধরে হাঁটছে। বাচ্চাটা কে পেয়ে ওর মা বাবার চোখে মুখে আনন্দের শেষ নেই।অনু নিজের পেটে হাত দিয়ে বলে সোনা তোর কি সত্যি কপাল এতটা খারাপ।যে বাবার আদর পাবি না।চিন্তা করিস না কত নবজাতকের ই তো জন্মের আগে বাবা থাকে না।তুই ও তাই মনে করবি।

এমন সময় সিয়া এসে বলে অনু তারপর বল কি অবস্থা। অনু সিয়াকে বলে জানিস সিয়া আমার কপাল টা না খুব খারাপ।তবে এতটা খারাপ জানতাম না আমি।দেখ উদয় একটা সময় আমার জন্য আমার পাগল ছিলো আর যখন আমি পাগল হলাম ও বদলে গেলো আমাকে পাগল বানিয়ে।সিয়া বলে মানে।মানে আমি উদয় কে ছেড়ে একেবারে চলে এসেছি।

হোয়াট কেনো।তুই কি জানিস না উদয় তোকে কতটা ভালবাসে

ভালবাসতো সিয়া।এখন আর বাসে না।ও চাইনা আমি ওর সাথে থাকি।ও সব সময় বলে আমি যেনো ওর জিবন থেকে চলে যায়।এ বাচ্চা উদয় চাই না সিয়া।তাই আমি চলে এসছি।

দেখ অনু রিলেশন এ রাগারাগি আছে।তাই বলে ক বিচ্ছেদ করতে আছে।উদয় ঠিক ই তোকে নিতে আসবে দেখে নিস।

ও কখনোই আসবে না। কারণ ও বেঁচে গিয়েছে।ও আমাকে ঝামেলা মনে করে।

এমন সময় বাইরে দরজায় কেউ কড়া নাড়ছিপো।

সয়া দরজা খুলেই অবাক হয়ে যায় উদয় কে দেখে।

একি উদয় তুমি।

অনু কে ডাকো সিয়া।আমি ওকে নিতে এসছি।

অনু!

আমি জানি ও এখানেই আছে।আমি ওর লোকেশন দেখেই এসছি।

তুমি বসো তোমার সাথে কথা আছে।

না সিয়া আমি বসবো না।

উদয় একটা কথা বলি,আমি তো সব ই জানি তোমাদের।অনুকে প্লিজ কষ্ট দিও না।অনু তোমাকে খুব ভালবাসে।

সিয়া তোমার কাছ থেকে মাই অন্তত মিথ্যা ডিজার্ব করি না।অনু আমাকে কোনদিন ভালবাসে নি।বা বলেও নি।

বলার আগেই তো তুমি দূরত্ব শুরু করলে।

অনুকে কষ্ট দিও না ও এমনি অনেক কষ্টে আছে।

সিয়া অনু আমাকে পুড়িয়ে পুড়িয়ে শেষ করে ফেলেছে।অনুর দেওয়া আঘাত আমি ভুলবো না।আমার ভেতরের আমি টাকে কেউ কোনদিন দেখে নি আর দেখতে পাবেও না।

প্লিজ উদয় কিছু মনের মাঝে না রেখে সব টা ক্লিয়ার করো।ঝামেলার কারণ টা খুজে বের করো।দেখবে সব অশান্তি মিটে যাবে।

সিয়া সব কিছু কি মেটার মতো।প্লিজ বাদ দাও।

এমন সময় অনু এসে বলে,,

কেনো এসছো?

বাড়ি চলো অনু।

কেনো আমাকে মেরে ফেলতে।নাকি রাস্তায় নিয়ে আমাকে গাড়ি থেকে ফেলে দিয়ে মারতে চাও।

অনু!তুমি ভাবলে কিকরে আমি তোমার ক্ষতি করবো।

জানোয়ারের মতো বাসর ঘরে যে গায়ে হাত তুলতে পারে সে আর কি না পারে।প্লিজ চলে যাও এখনা থেকে।আমাকে শান্তি দাও।

সরি তোমার গায়ে হাত তোলা টা ঠিক হয় নি।আর কখনো এমন হবে না।প্লিজ চলো।বাবা অনেক চিন্তা করছেন।

ওহ বাবা চিন্তা করছেন তাই?শুধুমাত্র বাবার জন্য।তুমি ফিরে যাও উদয়।এই চরিত্রহীনের মুখ আর তোমার দেখতে হবে না।

উদয় কোনো কথা না বলে অনুর হাত ধরে টানতে টানতে গাড়ির কাছে নিয়ে যায়।অনু ছোটা ছুটি করার চেষ্টা করলে উদয় কোলে করে গাড়ির ভিতরে উঠাই অনুকে তারপর গাড়ির দরজা লক করে দেই।

উদয় গাড়ি স্টার্ট দিয়ে গান চালিয়ে দেই…

ও মেঘ ও মেঘরে তুই যা না উড়ে
আমার বন্ধু থাকে যে শহরে
ও মেঘ ও মেঘ রে তুই বলিস বন্ধুরে আমি আজ ও ভালবাসি যে তারে

মেঘের সাথে মেঘের খেলা
বন্ধু করলো অবহেলা
বন্ধু আমার রইলা কোন দূরে
আমি আজ ও ভালবাসি যে তারে

মেঘ শুধু দুঃখে পেলেই কাঁদে
রংধনু হয়ে আবার হাসে
আমার দুঃখ নিয়ে আমায়
বৃষ্টি ঝরে অবেলা বন্ধু করলো অবহেলা
বন্ধু আমার রইলা কোন দূরে
আমি আজ ও ভালবাসি যে তারে

গান টা শুনতে শুনতে কোথায় যেনো হারিয়ে গিয়েছে উদয় অনু দুজনে।গান টা এউ মুহুর্তে দুজন ক এটাই বোঝাচ্ছে কারো প্রতি কারো ভালবাসা বিন্দুমাত্র কমে নি।উদয় অনু দুজন দুজনের দিকে তাকিয়ে আছে অপলক দৃষ্টিতে। যেনো কতদিন হয়ে গিয়েছে দুজ৷ দুজন কে দেখে না।উদয়ের চাওনির মাঝে এটা স্পষ্ট অনুর জন্য উদয়ের কষ্ট হচ্ছে।কিন্তু উদয়ের মনে চাপা কষ্ট লুকিয়ে আছে যার জন্য উদয় তার ভালবাসা প্রকাশ করতে পারছে না।গাড়ির মাঝেই অনু ঢলে পড়ে উদয়ের কাধে।উদয় অনুকে বলছে সোজা হয়ে বসো অনু।এভাবে কাঁধের উপর থাকলে আমার অসুবিধা হচ্ছে গাড়ি চালাতে।উদয় অনুর মাথা সোজা করে দিলো কিন্তু অনু আবার ঢলে পড়লো।উদয় খেয়াল করলো অনু চোখ বন্ধ করে আছে।উদয় প্রথমে ভেবেছে অনু ঘুমিয়ে পড়েছে কিন্তু ডাকাডাকির পরেও যখন অনুর জ্ঞান ফেরে নি তখন উদয় ভয় পেয়ে যায়।

উদয় সাথে সাথে গাড়ি থামিয়ে অনুর মুখ ধরে ডাকাডাকি করে কিন্তু অনুর কোনো হুঁশ নেই।উদয় দেখলো অনু সেন্সলেস হয়ে আছে।উদয় মাথায় হাত দিয়ে চুল উজিয়ে দিতে দিতে বলে ওহ মাই গড।অনু সেন্সলেস হয়ে গিয়েছে।অনুর যদি কিছু হয় তার জন্য এক মাত্র দায়ী আমি থাকবো।

উদয় অনুকে ডাকাডাকি করে, মুখে পানির ছেটা দেই কিন্তু কোনো কাজ হয় না।উদয় ভয় পেয়ে যায়।এই ভয় অনুকে হারানোর ভয়।উদয় অনুর দুই গালে দুই হাত দিয়ে বলে অনু আমি,আর কখনো এমন আচরণ করবো না।আমি নিজেকে কন্ট্রোল করতে না পেরে এমন করেছি।কিন্তু আমি খেয়াল করুনি এতে তোমার ক্ষতি হতে পারে।তোমার পেটের বাচ্চার বাবা যেই হোক মা তো তুমি ই।তোমার খুশির জন্য আমি এটা মেনে নিবো প্লিজ সুস্থ হয়ে যাও।

চলবে,,,

হৃদয় সমর্পন
পর্ব-৬
Writer: Mou Ahmed

সেন্সলেস অনু পড়ে আছে উদয়ের কাঁধে মাথা দিয়ে।উদয়ের কথা অনুর কানে পৌছালেও তার উত্তর দেওয়ার শক্তি হয়তো অনুর ছিলো না।ভালবাসা কি অদ্ভুত তাইনা।যাকে ভালবাসা হয় হাজার টা রাগ অভিমান হলেও তার কিছু হলে মন টা বিচলিত হয়ে পড়ে।অনু যদি দেখতো উদয়ের চোখে মুখে তার জন্য এত দুঃচিন্তা তাহলে হয়তো অনু সাথে সাথে সেন্স ফিরে পেতো।উদয় নিজেও একজন ডাক্তার অনুর পালস ধরে বুঝতে পারে খুব ই নরমাল।অনুর শরীর প্রচন্ড দূর্বল।গাড়িতে থাকা পানির বোতল থেকে চোখে মুখে পানি ছেটা দিলেও সেন্স আসে না অনুর।

অচেতন অবস্থায় কিছু একটা বলছে অনু।উদয়ের শার্টের কলার হাত দিয়ে শক্ত করে ধরে রেখেছে অনু।অনু কিছু একটা বলছে উদয় শোনার জন্য অনুর মুখের কাছে কান নিয়ে ঝুঁকে যায়।

“উদয় আমাকে ছেড়ে যেওন।আমি কি ভুল করেছি উদয়।কেনো আমাকে তুমি কষ্ট দাও।তুমি কি সত্যি বদলে গিয়েছো।তোমার অনু কি এতটা খারাপ যাকে আর ভালবাসা যায় না।উদয় আমি কখনো মিথ্যা বলি নি জীবনে।আমাকে একটা বার বিশ্বাস করো এই বাচ্চা তোমার।তোমার অনু কোনো পাপের চিহ্ন বহন করতে পারে না উদয়।তোমার অনু কোনো ভুল করে নি উদয়।তোমার বাচ্চাকে মেরো না উদয়।ও তোমার সন্তান।ও ওর বাবাই কে খুব ভালবাসে। আমার পেটে কান পেতে শোনো ও তোমাকে ডাকছে”

উদয় অনুর মুখের দিকে তাকিয়ে দেখে চোখ বুজে পড়ে আছে অনু নিজের অজান্তে কি বকবক করে চলেছে।উদয়ের চোখে পানি জমেছে।সে অনুকে কখনো এভাবে দেখতে চাই নি।অনুর মুখ টা নিশপাপ লাগছে দেখতে।উদয় অনুর মুখের দিকে তাকিয়ে ভাবছে এই ইনোসেন্ট মুখ টা কিভাবে কোনো ভুল করতে পারে।তাছাড়া একটা অচেতন মেয়ে কিভাবে মিথ্যা বলতে পারে।অনু যে এখন নিজের কন্ট্রোলে নেই সেটা বুঝতে পারছে উদয়।অচেতন ভাবে কেউ কখনো মিথ্যা বলতে পারে না।

উদয় অনুর পেটে কান দিয়ে শুনতে পাই তার বাচ্চার রেসপন্স।পেটের ভেতরে যে আছে তার উপস্হিতি স্পষ্ট বুঝতে পারছে উদয়।কেমন যেনো উদয়ের কানে এমন একটা সাউন্ড এলো “বাবাই মাম্মাকে আর কষ্ট দিও না।মাম্মা তো আমার জন্যই কষ্ট সহ্য করছে।বাবাই আমি কি ভুল করেছি আমাকে তুমি একটুও ভালবাস না।আমার সাথে যাদের জন্ম হবে তাদের বাবাই রা তাদের মাম্মাদের খুব যত্ন করে যাতে তারা পৃথিবীতে আসতে পারে সুস্থ ভাবে।বাবাই সব দোষ হয়তো আমার তাই আমাকে তুমি ভালবাসো না।আমাকে মেরে ফেলো তবুও মাম্মাকে ভালবাসো”

হঠাত যেনো উদয় অন্য জগতে চলে গিয়েছিলো।এগুলা কি শুনলো সে।এই কথা গুলো যেনো উদয় কে আরো বেশী যন্ত্রণা দিচ্ছে।হয়তো উদয়ের কল্পনা তাকে এই কথা গুলো বলেছে।

উদয় অনুকে গাড়ি চালিয়ে বাড়িতে নিয়ে যায়।সেখান থেকে কোলে তুলে নিজের রুমে নিয়ে যায়।উদয়ের মা বাবা এমন দৃশ্য দেখে খুশিতে আত্মহারা তারা এটাই চাচ্ছিলো তাদের ছেলে যেনো আগের মতো আবার স্বাভাবিক হয়ে যায়।

উদয়ের বাবা মা খুশি হলেও কিছুটা চিন্তিত অনুকে কোলে তুলে নেওয়ার কারণ ই বা কি।অনু কি তাহলে অসুস্থ। এমন সময় উদয় একজন গাইনি ডাক্তার কে তার বাড়িতে আসতে বলে।উদয়ের ফোনে ডাক্তার ও চলে আসে।ডাক্তার আসতে দেখে উদয়ের মা বাবা সিওর অনুর কিছু হয়েছে।তখন তারাও উদয়ের রুমে যায়।অনুকে এভাবে পড়ে থাকতে দেখে বলে বাবা উদয় অনু মায়ের কি হয়েছে।উদয় বিষন্ন মন নিয়ে বলে মা বাবা দেখো অনুর সেন্স আসছে না।ও এভাবে পড়ে আছে কেনো।অনেক টাইম তো হয়ে গিয়েছে।ডাক্তার বাবু অনুকে চেক করে বলেন উদয় তুমি নিজেও একজন ডাক্তার।তোমার সিনিয়র ডাক্তার হিসাবে পরামর্শ দিবো তোমার ওয়াইফ কে একটু কেয়ারফুলি রেখো।ওর শরীর কিন্তু অনেক খারাপ।মানসিক চাপে আছে সে।আপনি ওর হাজবেন্ড ও কি নিয়ে মানসিক চিন্তায় আছে খুজে বের করুন।উনাকে এখন হাসি খুশি রাখুন।উনার মাঝে যেনো ডিপ্রেশন জিনিস টা না থাকে।তাহলে মা বাচ্চা উভয়ের জন্য ক্ষতির কারণ হবে।এমন সময় অনুর সেন্স ফিরে আসে।ডাক্তার অনুকে বলে মিসেস উদয় কিসের এত দুঃচিন্তা।যার উদয়ের মতো হাজবেন্ড আছে তার এত চিন্তা থাকার কথা নয়।উদয় সব প্রেসেন্ট দের মানসিক সাপোর্ট যেভাবে দেই রুগিরা ওসুধ না খেলেও উদয়ের সাথে কথা বলে সুস্থ হয়ে যায় আর সেখানে আপনি এতটা চিন্তিত কেনো?এখন থেকে রেস্ট এ থেকো।কোনো চিন্তা নেই।

ডাক্তার বেরিয়ে গেলে উদয়ের বাবা বলে উদয় তুমি নিশ্চয়ই মেয়েটার গায়ে হাত তুলেছো না হলে এমন টা হবার কথা নয়।তোমার জন্য মেয়েটার এখন লাইফ রিস্ক।ছি এইজন্য ডাক্তারি পড়িয়েছিলাম তোমাকেসারা দুনিয়ার মানুষ কে সুস্থ রাখো আর নিজের একমাত্র স্ত্রী কে মানসিক প্রেসার দাও।বলো কি করেছো অনুর সাথে।উদয় কি বলবে বুঝতে পারছে না।উদয় জানে সে অনুকে কি মারাত্মক প্রেসার টাই না দিয়েছে।কিন্তু বাবাকে সেটা কিভাবে বলবে। উদয় তাকিয়ে আছে অনুর দিকে।অনুকে বলে তুমি বলো অনু আমি কি করেছি বলেই মাথা নিচু করে থাকে উদয়।

অনু বলে বাবা আজ উদয় কিছুই করে নি।ও আমাকে অসুস্থ দেখে হসপিটালে নিয়ে গেছিলো।সেখান থেকে আমার বান্ধবী সিয়ার বাসায় রেখে এসছিলো।আসলে অনেক দিন সিয়াকে দেখি না তাই।সেখান থেকে দুজনে বাইরে খাওয়া দাওয়া করেই বাড়িতে ফিরছিলাম হঠাত অসুস্হ হয়ে পড়েছি।এখানে উদয়ের কোনো দোষ নেই বাবা।উদয় মুখে যায় বলুক আমার কেয়ার করে।অনুর কথা শুনে অবাক হয়ে যায় উদয়ের মা বাবা।তাদের ছেলেটা এভাবে আবার ভালো হহে গিয়েছে।ছেলেকে বুকে জড়িয়ে নিয়ে উদয়ের বাবা বলে তোকে বুকে নিলে তোর যেমন শান্তি লাগে তেমন তোর সন্তানের ও ভাল লাগবে তুই তাকে বুকে নিলে।জানিস উদয় ছোট বেলা তোর মা বকলে তুই ছুটে এসে আমার কাছে লুকাতি আর আমি তোর মাকে বকে দিতাম।মা বাবা হলো সন্তানের জন্য সব থেকে নিরাপদ আশ্রয়স্হল।

উদয়ের মুখে কোনো কথা নেই কারণ উদয় জানে সে আজ পৃথিবীর সব থেকে নিম্ন কাজ টা করেছে।বাচ্চা যার ই হোক এভাবে তাকে নষ্ট করা উচিত নয়।বাচ্চার মায়ের অনুমতি ছাড়া তার সন্তানের ক্ষতি করার অধিকার কারোর নেই।

উদয় ভাবতেও পারে নি অনু আজ মিথ্যা বলবে। এত টা অত্যাচারের পরেও অনু উদয় কে এতটা সম্মান কিভাবে দেখালো।

রান্নাঘরে সালেহা খালা সব খাবার গুলো ফ্রিজে না রেখে উদয়ের মা বাবার রুমে রেখে দিলো।উদয়ের মা বলে কি ব্যাপার সালেহা খাবার গুলো ফ্রিজে না রেখে আমাদের রুমে রাখছো যে।এগুলো তো নষ্ট হয়ে যাবে।সালেহা খালা বলে আপা শোনেন উদয় বাবা আর অনু মায়ের সম্পর্ক ভাল করতে আমাদের ওদের সাথে গেম খেলতে হবে।ওরা আজ সিওর বাইরে থেকে খেয়ে আসে নি।উদয় বাবা নিশ্চয় রান্না ঘরে খাবার নিতে আসবে আর এসে যখন দেখবে খাবার নেই নিজে রান্না করে খাওয়াবে।

উদয়ের মা বললো অনু যে বললো খেয়ে আসছে।

আরে আপা অনুর কথা রাখেন তো।ও মিথ্যা বলেছে।উদয় কে অনেক ভালবাসে তো তাই অনু চাইনি উদয় কে কষ্ট দিতে।

উদয়ের মা বলে উদয় সত্যি আসবে তো রান্না ঘরে।

সালেহা খালা বলে আসবে আসবে।

উদয় বারান্দায় চেয়ারে বসে একটার পর একটা সিগারেট টেনে যাচ্ছে আর অনুর কথা ভেবে চলেছে।

এমন সময়ে ভেতর থেকে অনুর কাশির আওয়াজ আসে।উদয় সিগারেট হাতে অবস্থায় রুমে প্রবেশ করে দেখে সিগারেট এর ধোয়াতে অনু কাশছে।উদয় দ্রুত সগারেট টা মুঠো করে আগুন নেভানোর চেষ্টা করে।

গম্ভীর মুখ নিয়ে অনুর দিকে তাকিয়ে বলে সমস্যার কথা মুখে বললেই তো সিগারেট টা ফেলে দিতাম।এভাবে কষ্ট পাওয়ার কি আছে শুনি।ধোয়া সামলাতে গিয়ে যে সিগারেট এর আগুনে উদয়ের হাতের তালু পুড়ে গিয়েছে সেদিকে খেয়াল নেই উদয়ের।হঠাত উদয় উহ করে ওঠে।আর হাত থেকে সিগারেট টা পড়ে যায়।

অনু খেয়াল করে দেখে সিগারেট এর আগুন নিভেছে ঠিক ই কিন্তু উদয়ের হাত জ্বলছে।

চলবে,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here