হোম টিউটর,পর্বঃ চার

0
1090

#গল্পঃ হোম টিউটর,পর্বঃ চার
লেখকঃ শাফি ইসলাম

ওইখানে গেলে তোদের আরও বেশি ভালো লাগবে।

সবাই রিতার কথা মত খাওয়া দাওয়া শেষ করে ঘুমালো। “সকাল বেলা আমরা খাওয়া দাওয়া শেষ করে ব্যাগ লাঠি আরও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে রউনা হলাম কেওক্রাডং এর উদ্দেশ্যে”। আমাদের সাথে আমাদের গাইড ম্যানও রউনা হলো। প্রায় চার ঘন্টা ট্র‍্যাকিং করে পৌঁছে গেলাম সপ্নের কেওক্রাডং।

সবাইকে বললাম আমরা এখানে একরাত থাকবো। সারাদিন ঘুরে ফিরে পরিকল্পনা করলাম রাতে বারবিকিউ পার্টি করবো। “তমা বললো ঠিক আছে”। সাথে সবাই বলে উঠলো হ্যাঁ অনেক মজা হবে। রাত দশটার দিকে আমরা বারবিকিউ পার্টি শুরু করলাম। বারটার মধ্যে প্রোগ্রাম শেষ করে যে যার রুমে চলে গেলাম। পরের দিন সকালে আমাদের আবার ব্যাক করতে হবে।

কেওক্রাডং ঘুরে সবার মন আনন্দে উচ্ছাসিত হয়ে গেল। সবাই সবার মন্তব্য করতে শুরু করলো। “এভাবে তারা চট্টগ্রামে পৌঁছে গেল”। রাতেই আবার ট্রেন। রাত এগারো টায় তূর্ণা এক্সপ্রেসে ঢাকার উদ্দেশ্যে রউনা হলাম। ঢাকা পৌঁছে সবাই যার যার মত বাসায় ফিরে গেলাম।

বাসায় ফিরে “তমা রিতাকে ফোন করে বললো অনেক অনেক ধন্যবাদ তোকে”। ফোনটা রেখে ভ্রমণের দিনগুলোর কথা মনে করতে লাগলো তমা। ভাবতে ভাবতে হঠাৎ করে তমার মনে পড়ে গেল নোংরা অতীতের কথাগুলো। কয়েকটা দিন ভালোই ছিলাম।

পরিক্ষা চলাকালীন সময় থেকে বেশকিছু দিন বিরক্ত করা বন্ধ করলেও ঘুরে আসার কিছুদিন পর থেকে আবার নতুন করে সব শুরু করেছেন তিনি। এবার নতুন ফাঁদ তৈরী করেছেন। “হারামি লোকটা নাকি আমাদের বাসায় বিয়ের প্রস্তাব পাঠাবেন”।

আমার টেনশন হতাশা আরও বেরে গেল। এবার রাহাতকে আমি কি বলবো কিছুই ভেবে পাচ্ছি না। রাহাত হলো আমার বয়ফ্রেন্ড।

এরমাঝে গতকাল আমাদের পরিক্ষার রেজাল্ট দিয়েছে। আশানুরূপ ফলাফল তেমন ভালো হয়নি। কোনরকম ভাবে পাশ করেছি। আমার এমন খারাপ রেজাল্ট হয়েছে শুনে আমাকে অনেক বকাবকি করে শেষে বলে বিয়ে দিয়ে দেবে। আম্মু বলে স্যার নাকি তাকে ফোন দিয়ে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছেন। “এখন তোর স্যারের সাথেই আমি তোকে বিয়ে দেব ঠিক করেছি”।

“আম্মুর এমন সিদ্ধান্ত শুনে আমি অবাক হয়ে যাই। মাথায় শুধু চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে”। মনে হচ্ছে মানুষিক ভাবে ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছি আমি। আম্মুকে অনেক বুঝানোর পরেও আম্মু কোন কথা শুনলেন না আমার। এমন ঘটনা ঘটেছে শুনে রাহাতও আমাকে ঘৃণা করতে শুরু করে দেয়। আমার সাথে ঠিকমতো কথা বলে না। ফোন দিলে ফোন ধরে না। দশটা ম্যাসেজ করলে একটা ম্যাসেজের রিপ্লাই দেয়।

কোন কিছুই ভালো লাগছিল না আমার। কি করবো না করবো এরকম সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগতে থাকি আমি। “এমন সময় পূর্বে ঘটে যাওয়া একটা ঘটনার কথা মনে পড়ে যায় তমার”। বেশ কয়েক বছর আগের কথা।

“তমার একটা বন্ধবী ছিল”। দেখতেও অনেক সুন্দর ছিল। তাই স্কুলে যাওয়ার পথে অনেক ছেলেই রেখাকে প্রপোজ করতো। কিন্তু রেখা কাউকে গ্রহণ করতো না।
ওর নাম ছিল রেখা। বংশীয় পরিবারের মেয়ে। ওদের বাসায় এইসব প্রেম ভালোবাসা কখনই মেনে নিবে না বলে রেখাও সাহস করে কাউকে ভালোবাসতে পারেনি।

কিন্তু রেখা একজনকে পছন্দ করতো। “আমি অনেক পরে জানতে পেরেছি”। রেখার জন্য ওই ছেলেটাও প্রতিদিন রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতো শুধুমাত্র একটা বার দেখার জন্য। এভাবে চলতে চলতে একদিন ছেলেটা রেখাকে উদ্দেশ্য করে একটা চিঠি লিখে দেয়। রেখাও সেই সময় সব ভয় জয় করে ছেলেটির থেকে চিঠিটি গ্রহণ করে।

“ওরা চুপি চুপি স্কুল ফাকি দিয়ে এদিক সেদিক ঘুরতে যেত”। রেখা শুধু আমাকে জানাতো, অন্য আর কাউকে জানাতো না। কারন রেখা আমাকে প্রচন্ড বিশ্বাস করতো। আর আমিও ওর এই বিশ্বাস ধরে রাখতাম। এখন ওদের মধ্যে পুরোদমে প্রেম চলছে। কিন্তু কেউ কিচ্ছু জানে না। রেখা কখনো টিফিনের টাকা বাচিঁয়ে ওর বয়ফ্রেন্ড কে এটা সেটা কিনে দিত। ছেলেটাও অনেক সময় অনেক কিছু কিনে দিত।

হঠাৎ করেই ছেলেটার প্রতি রেখার ভালোবাসা বেরে যায়। ছেলেটি যা বলে তাই শোনে। মানে ছেলেটির প্রতি এতটাই দূর্বল ছিল যে রেখা কোন কিছু মানা করতো না। এভাবে চলতে চলতে ছেলেটা একদিন রেখাকে কু প্রস্তাব দিয়ে ফেলে। যা শোনার জন্য রেখা মোটেও প্রস্তুত ছিল না। ছেলেটি রেখাকে বলে তারা শারীরিক সম্পর্ক করতে চায়। রেখার মুখ থেকে কথাটি শুনে আমিও বেশ অবাক হয়ে যাই।

কিন্তু আমি এই বিষয়টি জানতে পারি ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর।

এরপর রেখা আমাকে বলতে লাগলো, আমি ওর কোথায় রাজি হতে চাইনি। ও আমাকে বাধ্য করেছে এইসব কাজ করতে। বলেছে তুমি যদি আমার সাথে শারিরীক সম্পর্ক না কর তাহলে আমি আর তোমার সাথে ভালোবাসার সম্পর্ক রাখবো না। এ কথা শুনে রেখা খুবই মর্মাহত হয়ে যায়। পরিশেষে রেখা বাধ্য হয়ে শারিরীক সম্পর্কে লিপ্ত হয়।

এভাবে বেশ কয়েকবার তাদের শারিরীক সম্পর্ক হয়েছে। কিন্তু ঘটনা এখানেই থেমে যেতে পারতো। এরপর রেখার মুখে আমি যা শুনলাম তা শুনে পুরোই হতাশ আমি। নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না আমি। রেখা বললো আমি প্রেগন্যান্ট। আমি যখন পরবর্তীতে মাসুদকে বলি আমার প্রেগন্যান্সির কথা। তখন থেকে মাসুদ আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করা শুরু করে।

মাসুদ বলে তুমি এই সন্তানকে মেরে ফেল। ডক্টরের কাছে গিয়ে এবর্সন করাও। আমি যখন মাসুদের কথায় না বলে দিলাম তখন মাসুদ আরও রেগে যায়। তারপর আমি বললাম চলো আমরা বিয়ে করি। এ কথা শুনে মাসুদ আমাকে থাপ্পড় দেয়। এবার আমি চিন্তা করছি কি করবো। বাসায় কিভাবে জানাবো। এ কথা যদি বাসায় জানে তাহলে আমাকে মেরেই ফেলবে। শেষ পর্যন্ত রেখা বলে আমি আত্মহত্যা করবো।

রেখার মুখে এমন কথা শুনে তমা বলে চুপ কর। কি বলছিস এইসব। আচ্ছা শোন তুই আমাকে মাসুদের সাথে দেখা করা। রেখা বললো মাসুদের সাথে আমার আর কথা হয় না। কই থাকে তাও জানি না। তমা বললো আচ্ছা ঠিক আছে আমি দেখছি ব্যাপারটা। তুই শুধু একটু ধৈর্য্য ধর।

একদিন হঠাৎ করে,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here