হোম টিউটর,পর্বঃ দুই

0
1100

#গল্পের নামঃ হোম টিউটর,পর্বঃ দুই
লেখায়ঃ শাফি ইসলাম

লোকটার রস মাখানো কথা আর আম্মুর আদীক্ষিতা দেখে আমার রাগটা আরও দ্বিগুণ হয়ে গেল।

না পারছি কিছু বলতে আর না পারছি নিরবে সহ্য করে যেতে। স্যার রুমে প্রবেশ করতেই আমি জিজ্ঞাসা করলাম আজকে আপনি এই সময় কেন? আপনার তো বিকেল পাচ টার সময় আসার কথা।

উনি বললেন তোমাকে খুব দেখতে ইচ্ছে করছিল তাই প্ল্যান করে চলে আসলাম।

মনে মনে গালি দিয়ে বললাম ফাউল বজ্জাত লোকটা বলে কি। এর মাঝে আম্মু ডেকে নিয়ে বললো তোর স্যারকে কিছু খেতে দে,সাথে একগ্লাস শরবতও বানিয়ে দিস। আর বলিস দুপুরে যেন খেয়ে যায়। আমি একটু বাজারে যাচ্ছি, ফিরতে সময় লাগবে। আম্মুর ফিরতে দেরি হবে শুনে আমার ভয়টা আরও বেরে গেল।

খাবার নিয়ে এসে স্যারের সামনে রাখলাম।

বাসায় শুধু আমি আর আমার স্যার।

ছোট ভাইটাও বাইরে খেলতে গেছে। এবার আমি স্যারকে বলতে লাগলাম,আচ্ছা স্যার আপনার কি মাথা খারাপ হয়ে গেছে? আপনি এইসব কি উল্টাপাল্টা কাজ শুরু করেছেন।প্রতিদিন রাতে এতগুলো করে ফোন আর বাজে বাজে ম্যাসেজ কেন দেন। আপনাকে তো বলেছি আমার এইসব ভালো লাগে না। আর আমি শুধু আপনাকে স্যার হিসেবে সম্মান করি।

আচ্ছা তমা, কেন ভালো লাগে না তোমার। আমি কি দেখতে খারাপ নাকি আমার কোন যোগ্যতা নেই?

বিশ্বাস কর, পড়ানোর সেই প্রথম দিন থেকেই আমি তোমার প্রেমে পড়ে গেয়েছি। কিন্তু সুযোগ পাইনি বলে কখনো প্রকাশ করা হয় নি। তাই আর সময় নষ্ট না করে তোমাকে মনের কথাটা বলেই দিলাম। কথাগুলো বলতে বলতে বজ্জাত লোকটা আমার দিকে ধীরে ধীরে এগিয়ে আসছে।

উনিও দাড়িয়ে পড়েন। তিনি আমার দিকে এগিয়ে আসতে থাকেন আর আমি পিছান দিকে যাওয়ার চেষ্টা করি।

হঠাৎ খাটের সাথে বেজে আমি বিছানার উপর পরে যাই।

এরপর তিনি আমার উপর শুয়ে পড়েন। জোরপূর্বক আমাকে চুম্বন করতে থাকেন। আমি বাধা দেওয়া সত্ত্বেও তিনি আমার জামা খোলার চেষ্টা করেন। আমি যখন এরপর আরও রাগ দেখাতে শুরু করি তখন সে এমন একটা কথা বলেন যেটা শুনে আমি অবাক হয়ে যাই।

নিজের কানকে যেন,

বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। বার বার শুধু এটাই ভাবছি স্যার এই কথা জানলেন কি করে। তাহলে কি স্যার আমাকে প্রতিদিন অনুসরণ করতেন? এরপর উনি আমাকে ব্ল্যাকমেইল করে নিজের খায়েশ মেটান এবং অপ্রাসঙ্গিক কার্যক্রম শুরু করেন। আমার জামা খুলে আমাকে অর্ধনগ্ন করেন। আমি হয়ে গেলাম অসহায় আর নিরুপায়।

অনেক কিছু করার থাকলেও আমি যেন কিছুই করতে পারছি না।

তিনি আমাকে প্রচন্ডভাবে ফিজিক্যালি টরচার করেন।

হঠাৎ ডোর বেল শুনতে পেয়ে তিনি আমাকে ছেড়ে দেন।
আমি তাড়াহুড়ো করে জামা কাপড় পরিধান করে দরজা খুলে দেখি আম্মু এসেছে। আম্মু বললো এত দেরি হলো কেন দরজা খুলতে? আম্মুকে কোন কিছু বুঝতে না দিয়ে বললাম একটা গুরুত্বপূর্ণ অংক করতে ছিলাম তাই দরজা খুলে দিতে দেরি হলো।

ঠিক আছে যা তাহলে। আম্মু আসার কিছু সময় পরেই কুত্তা লোকটা চলে গেল।

ফাজিল লোকটার সাথে এমন ঘটনা ঘটার পর থেকে আমি নিষন্ন হয়ে পড়ি। কোন কিছুতেই কেন জানি মন বসতে ছিল না। সেদিন রাতেই কুত্তা হারামি লোকটা আবার ফোন দেয়।
ফোনটা না ধরে উপায় ছিল না। একপ্রকার বাধ্য হয়েই ফোনটা ধরতে হলো।

আবার সেই পুরোনো কথাবার্তা, যা আমার একদম অসহ্যকর লাগতো।

আজকে নতুন সুরে বলেন তিনি নাকি আমাকে বিয়ে করতে চান। আমি যদি তাকে বিয়ে না করি তাহলে নাকি তিনি বাসায় সব বলে দিবেন। সেদিন যে কথা বলে উনি আমাকে ব্ল্যাকমেইল করেছিলেন তা হলো, তিনি নাকি দেখেছেন আমি কলেজ বাদ দিয়ে আমার বয়ফ্রেন্ডের সাথে পার্কে বসে থাকি।

রেস্টুরেন্টে যাওয়া আসা করি।

হারামি লোকটার মুখে এমন কথা শুনে, আমার মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পরার মত অবস্থা। এখনা আমি কি করবো কি সিদ্ধান্ত নেব কিছুই বুঝে উঠতে পারছিলাম না। এমন হতাশার মাঝে থেকেও কোনরকম ভাবে পরিক্ষাটা শেষ করলাম।

কিন্তু এতদিন হয়ে গেছে, তবুও আমি নিজের মনটাকে স্থির করতে পারছি না। শুধু বার বার অতীতের সেইসব নোংরা কর্মকাণ্ড গুলো মনে পরছিল। আমি কোনদিনও ভাবিনি আমার সাথে এমনটা ঘটবে।

এসব ভাবতে ভাবতে ফোনটা বেজে উঠলো। ফোনটা হাতে নিয়ে দেখি রিতা ফোন দিয়েছে। রিতা হলো আমার কলেজের ফ্রেন্ড। বলতে গেলে রিতা আমার বেস্ট ফ্রেন্ড।

অপেক্ষা করুন তৃতীয় পর্বের জন্য,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here