হ্নদয়ের_ক্যানভাসে_তুমি (পর্বঃ ৩) . লিখাঃ Sifat Arnab Rehan.

0
530

#হ্নদয়ের_ক্যানভাসে_তুমি (পর্বঃ ৩)
.
লিখাঃ Sifat Arnab Rehan.
.
মায়া আমার হাতটা খপ করে ধরে ফেলল! তারপর গম্ভির গলায় বলল,
___যার জন্য চোখের পানি ঝরাচ্ছেন তাকে ভুলে যান! আর যদি ভুলতে নাই পারেন তাহলে এখন থেকে আমাকে পটাতে শুরু করেন, গলে যদি আমার মন তবে পেলেও পেতে পারেন এই রুপসীর মন!
.
এটা বলেই মায়া খিলখিল করে হাসতে লাগল! তার হাসির কারণে নাতাশাকে হারানোর শোকে তৈরি হওয়া কষ্টের মাত্রাটা বেড়ে গেল! তবে এটাও সত্যি যে তার হাসির সৌন্দর্যে মোহবিষ্ট হয়ে বুকের ভেতরে এক ধরণের ভাললাগাও কেন যেন তৈরি হয়ে গেল!
.
রাত অনেক হয়েছে, এবার ঘুমানোর পালা ৷ মায়াকে কোনো প্রতিত্তর না দিয়ে রুম থেকে বেড়িয়ে গেলাম!
বিছানায় শুয়ে চোখ মেলানোর চেষ্টা করছিলাম কিন্তু কিছুতেই চোখ মেলাতে পারছিলাম না ৷ কোনো মূল্যবান কিছু হারিয়ে ফেলেছি এই শোকে ঘুম বহুদূরে পালিয়ে গেছে! মনের মানুষকে হারিয়ে ফেলার কষ্টের চেয়ে পৃথিবীতে আর কোনো কষ্ট থাকতে পারেনা ৷ এটা মনে হলে কষ্টটা আরো বেড়ে যায় যে দীর্ঘ তিন তিনটা বছর ধরে এমন একজনকে ভালবেসে গিয়েছি যে কিনা অভিনয় করে গেছে শুধু! একটা মরীচিকার পিছু ছুটে মিথ্যা ভালবাসার স্বাদ নেবার চেষ্টা করেছিলাম ৷ নাতাশাকে নিয়ে কত স্বপ্ন দেখেছিলাম, সব বিফলে গেল ৷ হায়রে ভালবাসা! নাতাশার জন্য কি করিনি? তার প্রতি সীমাহীন ভালবাসা শুরু থেকেই ছিল ৷ তাকে গার্লফ্রেন্ড হিসেবে পেতে অনেক চেষ্টাও করতে হয়ছিল!
.
.
কিছু সময়ের জন্য হারিয়ে গেলাম তিন বছর পূর্বের স্মৃতিতে!
নাতাশার সাথে প্রথম দেখা হয় হাসপাতালে!
সেদিন ভ্যানে করে একটা জায়গায় যাচ্ছিলাম ৷ হঠাৎ একটা মেয়ের হাতের ইশারায় ভ্যানটা থামায় ভ্যানচালক এবং মেয়েটি উঠে পড়ে ভ্যানে ৷ ভ্যানে ওঠার পর থেকে লক্ষ্য করলাম মেয়েটার ফোনে বারবার কল দিচ্ছে কে যেন? মেয়েটাকে যখন বললাম এতো ফোন কেন আসে? তখন সে বলল তার এক বন্ধুর রক্তের প্রয়োজন ৷ তার রক্তের প্রয়োজনে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছিল এরপর থেকে বারবার শুধু ফোনই আসছে তবে কাজের কাজ তো হচ্ছেনা উল্টা বিরক্ত হতে হচ্ছে মেয়েটাকে ৷ মেয়েটার মুখ থেকে যখন শুনলাম O+ পজেটিভ রক্ত লাগবে তখন আমিই রক্ত দিতে হাসপাতালের উদ্দেশ্যে ছুটে চললাম ৷ রক্তও দিলাম ৷ যাকে রক্ত দিলাম সে একজন মেয়ে ছিল ৷ রুপবতী মেয়ে ৷ রক্ত দেবার কারণে মেয়েটির অপারেশন ঠিক ভাবে হয় ৷ মেয়েটাকে না জানিয়ে চলে এসেছিলাম!
বেশ কয়েকদিন পর হঠাৎ একটি অচেনা নাম্বার থেকে ফোন আসে ৷ কেমন সব অদ্ভুত টাইপের কথা বলতো সে ৷ ভাবতাম কোন পাগল হবে হয়তো! বেশ কয়দিন পর সে প্রোপজ করে বসলো ৷ রাগে সিমটা বন্ধ করে ফেললাম! কিন্তু এর তিনমাস পর এক বন্ধুর বিয়ে বাড়িতে সেই মেয়েটির সাথে দেখা হয় যাকে রক্ত দিয়েছিলাম ৷ তার সাথে অনেক কথা হলো ৷ হ্যাঁ, তার নাম নাতাশা ৷ অনেক সময় ধরে কথা বলার পর দুজনে কন্টাক্ট নম্বর বিনিময় করলাম ৷ বাসায় ফিরে কথা বলা শুরু হলো ৷ এভাবে ছয়মাস কথা বলে উপলদ্ধি করতে পারলাম তাকে আমি ভালবেসে ফেলেছি ৷ কিন্তু তাকে প্রোপজ করলে আমাকে সোজা প্রত্যাখান করে ৷ এবং সে বলে আমার সাথে তার আগে থেকে রং নম্বরে কথা হতো ৷ তিথি নামের একটা মেয়ের সাথে কথা বলেছিলাম সেই মেয়েটা অন্য কেউ ছিল সে নাতাশায় ছিল ৷ সে আমাকে প্রোপজ করেছিল আর আমি রাজি না হয়ে ফোনের সিম বন্ধ করে দিয়েছিলাম, এই রাগ নাতাশার মনে এখনো জমে আছে ৷ যেদিন নাতাশা কে প্রোপজ করেছিলাম সেদিন সে এটা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলল, “কখনো তুমি আমার ভালবাসা পাবেনা উল্টা কষ্ট পাবে!”
নাতাশার কথাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছিলাম ৷ এবং দীর্ঘ ৪ মাস ধরে তার পিছু নিয়ে তার মন জয় করতে সক্ষমও হই! এবং দীর্ঘ তিন বছর ধরে সম্পর্ক চলে ৷ আর আজ সে অন্য একজনের হয়ে গেছে ৷ নাতাশার সেই কথাটা মনে করে ভাবি যে সে কি তার পুরোনো মন্তব্যকে বাস্তবে রুপান্তর করলো? অন্যথায় তার তো ছেড়ে যাবার কথা নয়! এতো ভালবাসা দিলাম যাকে সে কেমনে এভাবে আমাকে ছেড়ে চলে যেতে পারে?
.
ভাবছিলাম এসব!
হঠাৎই মায়ার চিৎকার শুনতে পেলাম! চিৎকার শুনে তার রুমে গেলাম! গিয়ে দেখি সে অনবরত বমি করছে! বুঝতে পারলাম না তার এভাবে বমি করার কারণ কি? পরোটা খেয়ে এমন হলো? নাকি পেটে বাচ্চা? ধুরো, অবিবাহিতা মেয়ের পেটে বাচ্চা আসবে কেমনে?
আসতেও পারে এযুগের মেয়ে, কখন কি ভুল করে ফেলে কে জানে?
নানি আসলো রুমে ৷ এসে মায়াকে বলল,
__কিসের জন্য বমি করছো বইন? পেট খারাপ করছে?
.
মায়া বমির ভাব নিয়ে থেমে থেমে নিচু আওয়াজে বলছিল,
___ঐ যে দেখুন বেশ কয়েকটা তেলাপোকা! এই তেলাপোকার গন্ধে আমার বমি আসছে ৷ এটা দেখলেই এমন হয় ৷ আগে যদি জানতাম রুমে তেলাপোকা আছে ভুলেও এই রুমে ঘুমাতাম না ৷ কি বিশ্রী দূর্গন্ধ! নানি, আমাকে এই পঁচা রুম থেকে নিয়ে যান!
.
দূঃখের মধ্যেও আমার হাসি আসছিল ৷ “হাসি এমন একটি বিষয় যার মধ্যে এটার পদচারণা বেশি থাকবে সে জীবনকে উপভোগ করতে পারবে ৷ দূঃখের মধ্যে হাসির উদয় হওয়া মানে ভাল থাকার রাস্তা তৈরি হওয়া!”
তেলাপোকা দেখে মেয়েরা ভয় পায়, কিন্তু মায়া শুধু ভয় নয় সাথে বমিও করে দিয়েছে! “নারী মানেই তেলাপোকাকে ভয় পেতে হবে ৷ এটা ছাড়া কোন মেয়ে নারী হিসেবে অপূর্ণ সত্তা! যেসব নারী বলবে আমি তেলাপোকা দেখে ভয় পাইনা বুঝতে হবে সে মিথ্যা বলছে!”
.
মায়াকে আমার রুমে নিয়ে গেল নানি ৷ আর আমি তার রুমে শুয়ে পড়লাম ৷ রাত তখন ১টা বাজে! আমি আবারো ঘুমানোর চেষ্টা করছিলাম ৷ একটু পর দেখি মায়া আমার রুমে এসে হাজির! এসে বাচ্চা মেয়েদের মত করে বলছে,
___আমার আজ আর ঘুম হবেনা ৷ আপনার জন্য ঘুম শেষ ৷ আপনি উঠে বসুন ৷ রাতটা গল্প করে কাটিয়ে দেব ৷ পারলে বাইরে চলুন!
.
মায়ার কথা শুনে হকচকিয়ে উঠলাম ৷ কপালে ভাঁজ ফেলে ভ্রু কুঁচকে বললাম,
___তুমি কি বলছো একবার ভেবে দেখেছো? এত রাতে দুটা প্রাপ্তবয়স্ক ছেলে মেয়ে একই রুমে পাশাপাশি বসে আড্ডা দিব,নানি দেখলে কি হবে ভেবেছো?
___কি আর হবে? তিনি দেখতে পাবেন যে তার নাত-বউয়ের সাথে রোমান্স করছেন আপনি! আর হ্যাঁ, আমরা তো রুমে নয় বাইরে গিয়ে গল্প করব ৷ চলুন!
.
এটা বলেই মায়া আমার হাতটা ধরে টানতে লাগল ৷ নাছোরবান্দী মেয়ের খপ্পরে পড়েছি ৷ এর থেকে নিস্তার নাই ৷ রুম থেকে বের হতেই হলো ৷ “নারীদের মায়াভরা কন্ঠের আবদার আর হাতের পরশ দুটো শক্তিকে উপেক্ষা করার মত শক্তি কারো নাই!” সেই শক্তি হয়তো সৃষ্টিকর্তা আমাকেও দেননি তাই মায়ার আবদার ফেরাতে পারলাম না!”
.
তখন ছিল ঘণ কালো অন্ধকার রাত ৷ বাড়ির উঠানের দোলনাতে বসে পড়লাম দুজন! অন্ধকারে টের পেলাম মায়া আমার দিকে তাকিয়ে আছে! অন্ধকারেই বুঝতে পারলাম তার তাকানোর ভঙ্গিমা ৷ রাতের সেই জোনাকির দলগুলো নেই ৷ অথচ যেবারই নানি বাড়িতে এসেছি সেবারই অন্ধকারে জোনাকির দলকে দেখতে পেয়েছি! আজ কই যে হারিয়ে গেল? যদি জোনাকির দল থাকতো তবে মায়ার চোখের চাহনীর মাপকাঠি জোনাকির আলোতে স্পষ্ট বোঝা যেত! নিস্তব্দ রাতে আমরা দুজন মানব-মানবী দোলনাতে বসে নিশিরাতের প্রতিটাক্ষণ গণনা করছি ৷ “একটা ছেলে আর একটা মেয়ে নির্জনে বসে থাকার অর্থ একে অপরের হ্নদস্পন্দন বাড়তে থাকা আর একে অপরকে নিয়ে যাচ্ছেতাই কল্পনাবিলাস করা, এটা মানুষের প্রকৃতিগত স্বভাব; বদলানো কখনো সম্ভব নয়!”
.
হঠাৎ মায়া আমার হাতটা ধরে নরম কন্ঠে বলল,
___রাতটা যদি চন্দ্রিমার হতো, তাঁরায় তাঁরায় ভরে যেত আর আমি পাশে না থাকতাম তবে আপনার নিকট রাতটা কি খুব ভাললাগাময় হতো?
.
মায়ার কথা শুনে ভরকে গেলাম ৷ তার এমন টাইপের কথার কিছুই বুঝলাম না ৷ তাকে শান্তা গলাতেই বললাম,
___কি বলছো এটা? তুমি আমার পাশে থাকলে বা না থাকলে রাতের ভাললাগার উপস্থিতি অনুপস্থিতি নির্ভর করবে কেন?
___হুহ, আপনার ব্যাপারটা বুঝলাম! কথাটা যদি আপুকে নিয়ে বলতাম তবে হয়তো সেটা বুঝতেন!
___তোমার বোনের নাম উচ্চারণ করবা না! সে আমার নিকট মৃত!
____এজন্যই তো আমার নামটা নিলাম ৷ এবার বলুন তো, এই তিমিরে ঘেরা নিকষ কালো মঝ্য-রজনীতে ঝিঁঝিঁ পোকার ছন্দের জাদুতে আমার চাহনীর মায়াতে হাতের পরশের আবেশে জরানো শিহরণে রাতটা উপভোগ করতে আপনার কেমন লাগছে?
.
এবার মায়াকে তীর্যক কন্ঠে বললাম,
___চুপ থাকো তো! এভাবে কথা বলবা না! তুমি তো নিজেকে ইসলামিক ধ্যান ধারণার মেয়ে হিসেবে দাবি করো, তবে এমন কথা বলো কেন?
.
মায়া শব্দ করে হেসে বলল,
____আপনাকে দেখে মনেতে প্রেমের জোয়ার শুরু হয়েছে ৷ তাই এমন করছি! আপনি আমার জীবনসঙ্গি হলে নিজেকে অনেক বেশি ভাগ্যবতী মনে করতাম!
___চুপ থাকবে, নাকি চলে যাব?
___চুপ রইবো! কিন্তু একটা শর্তে!
___আমি কোনো শর্ত মানতে রাজি না!
___তবে কথা বলাও বন্ধ হবেনা!
___ওকে বলো কি শর্ত?
___গান গায়তে হবে!
___পাগল তুমি? এই রাতে গাইবো গান? তাও আমি়?
___গায়তেই হবে, নইলে কথাও থামবেনা আমার!
___ওকে দাঁড়াও গাইছি!
হাসবা না!
.
গাইতে লাগলাম প্রিয় রবিন্দ্রসংগিতের একটি গান, “আমার পরাণ যাহা চাই, তুমি তাই তাই গো!’
এই গানটা শেষ করে নতুন আরেকটি গান গাওয়া শুরু করলাম, সেটা পুরোপুরি গাইতে না গাইতেই মায়া ঘুমিয়ে গেল! তাকে বাহুতে জড়িয়ে নিয়ে তার রুমে রেখে আসলাম ৷ মায়া তো ঘুমিয়ে গেল কিন্তু আমার ঘুম কই? বাধ্য হয়ে ঘুমের ট্যাবলেট খেতে হলো!
“ঘুম এমনই একটা সম্পদ, যার ঘুম হয়না সে এর বিনিময়ে যাবতীয় সম্পত্তি বিলিয়ে দিতে প্রস্তুত!”
ঘুমের ট্যাবলেট খাওয়ার পর ঠিকই ঘুম হলো!
.
সকাল ৮ টার দিকে ঘুম থেকে জেগে মায়ার রুমে গিয়ে দেখি সে নেই ৷পুরো বাড়ি খুঁজেও পেলাম না!
নানীকে বললাম, “মায়া কই গেছে?”
নানি জবাব দিলো, “তার বাবা এসে তাকে নিয়ে গেছে!”
রাগ হলেও নিজের মনকে এই বলে স্বান্তনা দিলাম যে মায়ার সাথে তো সম্পর্ক ছিলনা, সম্পর্ক যার সাথে ছিল সে তো আমার কাছে নাই ৷ তার বদলে অন্য একজনকে ভুল করে তুলে এনেছি! এমন কাজের জন্য পুলিশের হাতে পড়তে হচ্ছেনা এটাই তো ভাগ্যের ব্যাপার! কথাটা ভাবতে ভাবতে দেখি মায়া ভেজা গায়ে আমার সামনে এসে হাজির হলো! নিশ্চয় পুকুরে নেমেছিল সে ৷ নানির দিকে বাকা চোখে তাকিয়ে রইলাম ৷ নানি ভয় জরানো কন্ঠে বলল, “তোকে পরীক্ষা করে দেখলাম যে হবু বউয়ের প্রতি তোর দরদ কিরকম?”

নানির কথা শুনে মুচকি একটা হাসি ফুটে উঠলো আমার মুখে ৷ মায়া ভেজা শরীরে দাঁড়িয়ে থেকে লাজুক ভাব নিয়ে ঠোঁটে কামড় দিয়ে দুলছিল শুধু ৷ সালোয়ার পড়া ভেজা শরীরে মায়াকে আবেদনময়ী লাগছিল বলে বারবার ওর দিকে চোখ যাচ্ছিল ৷ তাকে উচ্চ গলাতে বললাম,
___যাও, কাপড় বদলে আসো!
.
মায়া জবাব দিল,
___আমার তো কোনো কাপড়ই নেই, কি পড়ব?
___ভাল করছো, পুকুরে নামতে গেলে কোন সুখে?
___পুকুরে অনেক বছর আগে গোসল করেছিলাম, এরপর আর গোসল করা হয়নি ৷ আজ পুকুরের পানি দেখে লোভ শামলাতে পারিনি!
___খুব ভাল করছো! নানির শাড়ি আছে, শাড়ি পড়ো গিয়ে!
___আমি শাড়ি পড়তে পারিনা তো!
___নানি পড়িয়ে দিবে!
.
তখন নানি চিল্লিয়ে বলে উঠল,
___ঐ আমার কাজ আছে, আমি গেলাম ৷ আমার রুমে অনেক শাড়ি আছে ৷ ওখান থেকে একটা পছন্দ করে নিতে বলিস ৷ আর তুই তোর হবু-বউকে শাড়ি পড়িয়ে দিবি! থাক তোরা!
.
নানির কথা শুনে আকাশ থেকে ধপাস করে পড়লাম, সেই সাথে অবাকের চূড়ায় উঠলাম ৷ নানিতে চেঁচানো স্বরে বললাম,
___এটা তুমি কি বলছো নানি? আমি ওকে শাড়ি পড়িয়ে দিব?
.
নানি আমার কথাকে ভ্রুক্ষেপ না করে চলে গেল!
মায়া লজ্জাবতীর মত চুপসে গেছে বলে মনে হলো, তার লাজরঙ্গা মুখটার দিকে তাকাতে আমারই শরম করছিল! মায়া আমাকে লাজুক গলায় বলল,
___আপনি যেহেতু পারেন, সেহেতু আপনিই পড়িয়ে দিন!
.
মায়ার কথা শুনে হতভম্ব হয়ে গেলাম ৷ হতবুদ্ধি আমি তার দিকে চোখ গোলগোল করে তাকিয়ে রইলাম ৷ এরপর তীক্ষ্ণ স্বরে বললাম,
___তোমার মাথা কি গেছে? নাকি জ্বীনে ধরেছে?
___কিছুই হয়নি ৷ আপনি চলুন তো নানির রুমে!
.
এটা বলেই মায়া আমাকে নানির রুমে নিয়ে গেল!
নানি তো বাসা থেকে বেড়িয়ে গেছে আগেই, তাকে ডেকে কাজ হবেনা!
.
নানির শাড়ি, ব্লাউজ, পেটকোট বের করা হলো ৷ মায়া কাপড় পাল্টাতে লাগলে আমাকে রুম থেকে বেড়িয়ে যেতে হলো ৷ নির্লজ্জ মায়া আমার সামনেই কাপড় পাল্টাতে যাচ্ছিল ৷ সে যখন ব্লাউজ আর পেটিকোট পড়লো ৷ তখন দরজাটা খুলে দিয়ে বলল, “ভেতরে আসুন!”
ভেতরে গিয়ে দেখি শুধু ব্লাউজ আর পেটকোট পড়ে দাঁড়িয়ে আছে ৷ লজ্জায় মরে যাবার উপক্রম হচ্ছিল আমার ৷ চোখ পিটপিট করছিল ৷ শ্বাস ঘণ হচ্ছিল ৷ হাতের পেশি লাফাচ্ছিল! মায়া শাড়িটী আমার হাতে ধরিয়ে দিয়ে তীক্ষ্ণ কন্ঠে বলল,
___নিন পড়িয়ে দিন ৷ দেখি আপনি কিরকম শাড়ি পড়াতে জানেন!
.
মায়ার পিছে দাঁড়িয়ে শাড়ির একাংশ তার কোমড়ের একপাশে গুঁজে দিলাম ৷ এরপর যেভাবে যেভাবো করা উচিত করতে লাগলাম ৷ সর্বশেষ কুঁচির পুরো অংশটি নিমাংশে ঢুকিয়ে দিতে গেলে আমার হ্নদস্পন্দন বেড়ে যাচ্ছিল ৷ মায়ার কোমল মেদহীন নাভির দিকে নজর দিলে বুঝতে পারলাম সে কাঁপছে ৷ লজ্জায় কৃষ্ণচুড়ার রঙ হয়ে গেছে সে! তার বুক ওঠানামা করছিল! আমার হাতটাও প্রচন্ড ভাবে কাঁপছিল ৷ ভয় করছিল খুব ৷ যখন মায়া উঁচুগলায় বলল,
___কই ঢুকান ভেতরে?
.
তখনই কুঁচিটা নিয়ে অগ্রসর হচ্ছিলাম ৷ যখনই ভেতরে প্রবেশ করাতে যাব ৷ তখনই বাইরে থেকে কে যেন ডাকছিল আমাকে??
মায়া নিজেই কুঁচিটা নিয়ে শাড়ির নিমাংশে ঢুকিয়ে নিলো ৷ রুম থেকে বেড়িয়ে গেলাম!
বের হয়ে যা দেখলাম সেটার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত ছিলাম না ৷ এমনটা হবে কখনো আশা করিনি ৷ ভয়ে হাত পা কাঁপা শুরু করলো ৷ গলা শুকিয়ে আসছিল ৷ ভয়ার্ত চোখে তাকিয়ে রইলাম যারা বাড়িতে প্রবেশ করেছে তাদের দিকে!
মায়া রুম থেকে বেড়িয়ে চেঁচিয়ে উঠে আবেগপ্রবণ কন্ঠে শুধু বলল,
___
.
চলবে….
.
(Next, Nice না লিখে গঠণমূলক মন্তব্য করুন, গল্পটি চালিয়ে যাব আপনাদের ভাললাগলে) শেয়ার করলে উপকৃত হতাম)
.
২নং পর্ব লিংকঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here