গল্প :মি.ক্ষেত,পর্ব-৫ শেষ পর্ব

0
3686

গল্প :মি.ক্ষেত,পর্ব-৫ শেষ পর্ব
লেখক:Sojib Sen

পরীর কথা মতো চুলে জেল,কালো প্যান্ট, নীল র্শাট,কালো ঘড়ি,আর কালো সানগ্লাস পরে! আর পরী একটা নীল ড্রেস পরে ,আমরা দুজনে একসাথে কলেজে রওনা দিলাম! কলেজের গেটে ঢুকতেই সবাই আমাদের দিকে হা করে তাকিয়ে আছে ! কলেজের সবাই মনে করে আমরা নতুন কাপল আজ প্রথম কলেজে এসেছি কলেজের মধ্যে ঢুকে পরী বললো,,,,

–কোথাও দাড়াবি না সোজা ক্লাসরুমে চল!(পরী)
–হুম !তারপরে আমি আর পরী ক্লাসে চলে গেলাম,,এইদিকে ক্লাস রুমের সকল ছাএী আমাকে দিকে হা হয়ে আছে !
পরীর এটা দেখে ভিশন রাগ হচ্ছে!মনে মনে বলছে,,,

–আমার বরের দিকে সবাইকে তাকিয়ে থাকতে হবে কেন?(পরী)
তারপর ক্লাস শেষ করে আমি আর পরী বাইরে চলে আসলাম। তারপর একটা ফাকা জায়গায় বসে আছি কিছুক্ষন পরে আমাদের কাছে কিছু ছেলে আর মেয়ে আসলো..

–সরি সজীব আমরা আসলে না বুঝে তোমার সাথে অনেক ভুল করে ফেলেছি !(সবাই একসাথে)
–আরে বেপার না! তারপরে সবাই ওইখানে বসে আড্ডা দিতে লাগলাম !মেয়েগুলো আমার সাথে হেসে হেসে কথা বলছে। পরী এগুলো দেখে রাগে লাল হয়ে বসে আছে ! আমি সেটা ভালো ভাবেই বুজতে পারছি ! আর বুঝতেই পারবো না কেন আমি তো জানিই পরী আমাকে অনেক ভালোবাসে ! আর আমি ওহ চাই যে পরীই আমাকে ভালোবাসার কথা বলুক!
পরী রাগ করে ওইখানে থেকে ওঠে আসলো। আমিও ওর পিছে পিছে গেলাম….

–ওই পরী তুমি কই যাচ্ছো!(সজীব)
–পরী কিছু না বলে হেটেই যাচ্ছে!
–আরে বাবা দাড়াও তো! আমি ওর সামনে গিয়ে দাড়ালাম ! কি হয়েছে তোমার?(সজীব)
–কিছু না!আমি বাসাই যাবো!(পরী)
–পরীর চোখে জল সেটা আমি ভালোই বুঝতে পারলাম।
কি বেপার পরী তুমি কান্না করছো কেনো?(সজীব)
–কোও না তো!(পরী লুকিয়ে চোখ মুছলো)
–আচ্ছা চলো আমি তোমার বাসাই নামিয়ে দিয়ে আসি!(সজীব)
–না তোমাকে যাওয়া লাগবে না আমি একাই যেতে পারবো..(পরী)

বলেই পরী চলে গেলো বুঝলাম পাগলিটা অনেক রাগ করেছে !না আমিই তাকে প্রোপজ করে দিবো তাহলে পরী অনেক খুশি হবে!এইসব ভাবতে ভাবতে বাইক নিয়ে গেটের সামনে চলে আসলাম! হঠাৎ পিছন থেকে কে যেন ডাক দিলো!পিছনে তাকিয়ে দেখলাম অন্তরা ডাকছে…
–আমার তোমার সাথে কিছু কথা ছিল!(অন্তরা)
–হুম বলেন!(সজীব)
–আমরা তো সহপাঠী তাহলে আমাকে আপনি কেন বলছো?(অন্তরা)
–এইসব বাদ দেন!আর কেন ডেকেছেন সেটা বলেন?(সজীব)
–বুঝতে পেরেছি তুমি আমার ওপরে অনেক রাগ করে আছো তাই এমন কথা বলছো!(অন্তরা)
–এইসব কথা বাদ দিয়ে,কি বলবেন সেটা বলেন?(সজীব)
–আসলে সেই দিনের ওমন ব্যবহার করার জন্য সরি,, তখন বুঝে ছিলাম না!না বুঝে তোমাকে অনেক অপমান করেছি!(অন্তরা)
–আপনার কি কথা বলা শেষ হয়েছে! হলে আমি যেতে পারি!(সজীব)
–প্লিজ এমন করো না, কিছু তো বলো?(অন্তরা)
–কি বলবো?(সজীব)
–আমি তোমাকে ভালোবাসি।
সত্যি সজীব!(অন্তরা)
–তাই,,কোথায় ছিল এই ভালোবাসা?(সজীব)
–মানে?(অন্তরা)
–মানে!আমি বলতে চাচ্ছি যে এই ভালোবাসাটা কখন থেকে শুরু হলো?(সজীব)
–অন্তরা চুপ করে আছে,,কি হলো বলতে পারবে না তাই তো?আচ্ছা আমিই বলছি আজ থেকে আমাকে ভালোবাসতে ইচ্ছা করছে কারন আজ আমি র্স্মাট হয়ে কলেজে এসেছি তাই এই কথাটা বলছো আর তুমি কেন এই কথাটা সবাই আমাকে বলবে!(সজীব)
–আগের ব্যবহারের জন্য তো সরিই বললাম!(অন্তরা)
–প্লিজ আমি আর এইসব নিয়ে কথা বলতে চাই না!(সজীব)
–বিশ্বাস করো আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি?(অন্তরা)
–কিন্তু আমি যে অন্য কাওকে ভালোবাসি!(সজীব)
–কাকে ?(অন্তরা অবাক হয়ে বললো)
–পরী কে !আর সে কেমন মেয়ে যানো ?(সজীব)
–কেমন?(অন্তরা)
–সে প্রথম থেকেই আমাকে ভালোবেসেছে !আর ওহ আমাকে এমন র্স্মাট বানিয়েছে ক্ষ্যাত থেকে!(সজীব)

অন্তরা মাথা নিচু করে আছে
আর ওই পরীই আমাকে শিখিয়েছে যে ভালোবাসতে ক্ষ্যাত বা র্স্মাট হওয়া লাগে না একটা মনের মতো মানুষ পেলেই হয়(সজীব)
–ওহ !(অন্তরা)
–হুম !আর সামনের মাসেই আমরা বিয়ে করবো! আমাদের জন্য আর্শিবাদ করবেন!আসি!বলেই আমি চলে আসলাম।
আর অন্তরা ভাবতে লাগলো

–আসলেই তো আমি কি তার ভালোবাসার পাওয়ার যোগ্য!যদি ভালোইবাসতাম তাহলে ভালোবাসার মানুষকে এভাবে অপমান করতে পারতাম না!(অন্তরা)

আসলে ভালোবাসা একটা পবিএ জিনিস!কিন্তু বর্তমান আমার এইটাকে নষ্টামী মানেই চিনি! আরে ভাইয়া,আরে আপু তোমরা,আমরা কেন এই ভালোবাসার দোয়াই দিয়ে অন্য কারো জীবন নষ্ট করছি!তোমার আমার কাছে তাদের দাম না থাকতে পারে!কিন্তু প্রতিটা বাবা মার কাছে!তাদের ছেলেমেয়ে রাজপুএ আর রাজকন্যা !আর এতো আদরের ছেলেমেয়ে কি করে বেরাচ্ছে !মানুষকে ঠকাচ্ছে ধোকা দিচ্ছে আবার দিন শেষে !আমরা অন্যের জন্য মরেও যাচ্ছি !আচ্ছা ভাইয়া,আপু আমরা কি যার জন্য মরে যাচ্ছে সে কি তোমার আমার জন্য মরবে?নে সেটা কখনোও করবে না !তোমাকে কখন মনেই পরবে না !তোমার আমার মরার কথা শুনে কে কষ্ট পাবে জানো ?তোমার বাবা মা আর তারা কিছু দিনের জন্য না সারা জিবন কষ্ট পেয়েই যাবে!আমি এইসব কথা বলছি বলে আমাকে মনে করেন না যে আমি ভালোবাসার বিরুদ্ধে!না ভাইয়া আমি ভালোবাসার পক্ষেই আছি কিন্তু পবিএ ভালোবাসার পক্ষের কথা বলছি যেই ভালোবাসাই কোনো সার্থ থাকবে না!আচ্ছা যাই হোক এইবার গল্পে ফিরি,,,
অন্তরার সাথে কথা শেষ করে আমি সোজা বাসাই চলে গেলাম ! আর এইদিকে পরী রাগ করে বাসাই এসে! সোজা রুমে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দিলো!

–সালা লুচ্চা কোথাকার !এখন র্স্মাট হয়ে গেছে বলে, মেয়েদের সাথে হেসে হেসে কথা বলতে হবে । কই আমার সাথে তো কখনো হেসে ভালো ভাবে কথা বলে নাই!(পরী)

–এই সব কথা মনে মনে বললো পরী! আমি রাতে খাওয়া দাওয়া করে পরীকে ফোন দিলাম !কিন্তু পরী ফোন ধরছে না ! আমি বুঝতে পারলাম পাগলীটা অনেক রেগে আছে তাই বাইকটা নিয়ে সোজা পরীর বাসাই চলে গেলাম !রাত তখন 12 টা …এইদিকে আমি পরীদের বাসার সামনে চলে এসেছি!এখন কি করবো ভাবতে লাগলাম আমি দেখতে পেলাম পাইপ দেওয়া আছে পরীর রুমের সোজা তাই আমি পাইপ দিয়ে ওঠতে লাগলাম পরীর রুমে ঢুকতে হঠাৎ কে যেন চোর চোর বলে চিৎকার দিতে লাগলো ! আমি তো ভয়েই শেষ তাই পিছনে না তাকিয়ে সোজা পরীর রুমের মধ্যে ধপাসসস করে পরে গেলাম। আমার পরে যাওয়া শব্দ শুনে পরীর ঘুম ভেঙ্গে গেলো…..!

–সজীব তুই আমার রুমে আর এতো রাতে কেনো?(পরী)
–কি করবো তুই তো আমার ফোন ধরছিলে না তাই চলে আসলাম!(সজীব)
–তাই বলে এতো রাতে কেও দেখে ফেলি নাই তো?(পরী)
–হুম কে একজন দেখে আমাকে চোর চোর করছিল আমি তার দিকে তাকাই নি!(সজীব)
–তাহলে কি হবে এখন?(পরী)
–কিছুই হবে না তুই এত চিন্তা করিস না তো!(সজীব)
–হুম!(পরী)
–আচ্ছা এইবার বলো তুমি আমার ফোন ধরছিলে না কেন?(সজীব)
–এমনি!(পরী)
–এমনি মানে?সত্যি করে বলো তো আর সেই কলেজে যখন মেয়েদের সাথে বসে আড্ডা দিচ্ছিলাম তখন থেকেই তুমি এমন করছো কেন করছো এমন হ্যা?(সজীব)
–কেনো করছি তুমি জানো না?(পরী)
–না বললে কিভাবে জানবো!(সজীব)
–থাক জানতেও হবে না!(পরী)
–আচ্ছা শোনো কাল একটু তারাতারি কলেজে আসবে ওকে !আর নীল ড্রেসটা পেরে যাবে!(সজীব)
–কেন?(অবাক হয়ে পরী)
–সেটা কাল কলেজে গেলেই বুঝবে! এই কথা বলেই আমি চলে আসলাম পরী ডাকলেও না শুনে চলে আসলাম। পরী এই কথা ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে গেলো পরেরদিন সকালে পরী ঘুম থেকে ওঠে আমার কথা মতো নীল ড্রেস পরে কলেজে রওনা দিলো! কলেজে গিয়ে দেখলো আমি এখনো আসি নাই,দেখে আরো রেগে গেলো।আমাকে ফোন দিলো….

–এই কোথায় তুই আমাকে তাড়াতাড়ি আসতে বলে তোর কোনো খবর নেই?(পরী)
–সরি সরি এইতো চলে এসেছি একটু বস!(সজীব)
–আচ্ছা আসো>(পরী)

বলে পরী ফোন কেটে দিলো! আর এইদিকে আমি মার্কেটে
এসেছি রিং কিনার জন্য !পরীকে আজ সবার সামনে প্রোপজ করবো তাই!
আমি রিং কিনে কলেজে চলে গেলাম !কলেজে গিয়ে দেখলাম পরী বসে আছে !তার কাছে গিয়ে তার হাতটা ধরে কলেজের মধ্যে নিয়ে গেলাম…..!

–আরে কি করছো সজীব?সবাই দেখছে তো!(পরী)
–চুপ কোনো কথা বলবে না তুমি?(সজীব)
–হুম চুপ!(পরী)

তারপরে আমি এক হাটু ভাজ করে ফিল্ম স্টাইলের মতো করে বললাম,,,,,জানি না অন্যরা কিভাবে প্রোপজ করে! কিন্তু তোমার সাথে চলতে চলতে তোমার ওই শাসন,তোমার ওই মায়াবী চোখ,তোমার ওই কেশো কালো চুলের প্রেমে পরে গিয়েছি!তুমি কি আমার বাচ্চার মা হয়ে তাদের দেখা শুনা করবে তার সাথে আমাকেও আদর করার ভাগ দিবে? i love u pori ! well u marry me ?
কলেজের সবাই হা করে তাকিয়ে আছে!আর পরী তো মনে করছে সে স্বপ্ন দেখছে….
–কি হল কিছু বলবে না এইভাবেই বসে থাকতে হবে আমাকে?(সজীব)
–Yes,,yes,,yes,, (পরী)

পরী তো ভাবতেই পারিনি যে আমি তাকে এমন ভাবে ভালোবাসার কথা বলবো
আমি কলেজের সবার সামনে পরীকে জরিয়ে ধরলাম!পরী তো অবাক..

–এমন একটা ছেলের এতো সাহস হলো কিভাবে !যাই হোক আমার তো ভালো আমার বরই তো আমাকে জরিয়ে ধরেছে! এইখানেই শেষ করে দিলাম।

……….সমাপ্ত……………

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here