“তৃ-তনয়া” পর্ব- ২৮

0
2771

“তৃ-তনয়া”
পর্ব- ২৮
(নূর নাফিসা)
.
.
এদিকে আসরের সময়ে মেহেদীরা দ্বিপ থেকে ফিরে এসেছে। রিসোর্টে এসে নাহিদাকে পেল না। ভাবলো সমুদ্র তীরেই ঘুরাঘুরি করছে হয়তো! দুপুরে কি খেয়েছে কিছু! মেহেদী ফাস্টফুডের প্যাকেটটা ধরে দেখলো বিস্কুট, কেক যা অবশিষ্ট ছিলো সবই আছে। আর চিপস তো রাতেই খেতে দেখেছিলো। তার কাছে তো টাকাও ছিলো না। নিশ্চয়ই সেই ব্যাগ থেকে নেওয়ার সাহস দেখাবে না। তার মানে খায়নি কিছুই। মেহেদী নিজে গোসল সেড়ে ফ্রেশ হয়ে বাকিদের সাথে নিচে নেমে এলো। রেস্টুরেন্টে লাঞ্চ করতে যাবে তখন ভাবলো, শাস্তি অনেক দেওয়া হয়েছে। সকালে কিছু খায়নি, দুপুরেও কিছু খায়নি এবার পার্স ফিরিয়ে দেওয়া যায়। মেহেদী তাদের বসিয়ে রেখে সমুদ্র তীরে এলো, আশেপাশে তাকে খুজলো কিন্তু দৃষ্টিতে পড়ছে না! বাকিরা রেস্টুরেন্টে এসে বসে আছে। নাহিদার খাবার অর্ডার করবে কি করবে না এই ভেবে তারা অর্ডার করেনি। মেহেদী এলেই অর্ডার করবে। মেহেদী এদিক সেদিক খুজে নাহিদাকে না পেয়ে ভাবলো সে হয়তো রিসোর্টে ফিরে এসেছে। সে আবার রুমের কাছে গেলো। কিন্তু রুম লক করা! তারপর রিসিপশনের কাছে এসে রুম নম্বর বলে তার খোজ করলে জানতে পারলো দুপুরের আগে চাবি দিয়ে গেছে আর দেখা হয়নি। কথাটা শুনার পরপরই মেহেদীর মনে ভয় ঢুকে গেছে! সে রেস্টুরেন্টে এসে বললো,
– নাহিদাকে খুজে পাচ্ছি না!
সবাই একসাথে বলে উঠলো, “হোয়াট!”
– হুম। রিসোর্টে দেখলাম, সমুদ্রের তীরেও দেখলাম। কিন্তু তাকে দেখছি না তো!
রায়ান বললো,
– কল দে।
– ওর নম্বর আমার কাছে নেই। তাছাড়া, ওর ফোন পার্স সবই আমার কাছে ছিলো। তার কাছে কিছুই ছিলো না। সবসময় একটা না একটা ভেজাল সৃষ্টি করেই রাখে মেয়েটা! আয়তো একটু আমার সাথে কেউ।
মেহেদী বলার পর তারা তিনজনই উঠে চলে এলো। চারজনই সমুদ্রের তীরে লোকজনের মাঝে খুজতে লাগলো। কিন্তু কারো চোখেই পড়ছে না নাহিদাকে! দুতিনবার করে তারা রিসোর্ট ঘুরে দেখছে, সমুদ্রের তীর দেখছে, আশেপাশের রেস্টুরেন্টগুলো দেখছে কিন্তু কোনো সন্ধ্যান নেই! এমনকি রিসোর্টের সিসি ক্যামেরা ফুটেজও চেক করেছে কিন্তু তেমন কোনো তথ্য পেলো না! কোথায় গেলো, কোথায় আছে কিছুই বুঝতে পারছে না! মেহেদীর মনে ভয় কাজ করছে! কেন জানি তার হাত পা কাপছে! পাশের জনেরাও বুঝতে পারছে তার অবস্থা! একেক জনের একেক ধারণা!
কোন অজানা পথে হারিয়ে যায়নি তো!
কিডন্যাপড হয়নি তো!
সমুদ্রে তলিয়ে যায়নি তো!
মেহেদী এখন কি করবে বুঝতে পারছে না! এই প্রথম তার হাতে কারো দায়িত্বের লঙ্ঘন হলো! এমনটা হবে জানলে কখনো সে একা রেখে যেতো না! ভেবেছে নাহিদা গতদিনের মতো এখানেই স্থির ও নিরাপদে থাকবে! একটু চোখের আড়াল হতেই যে এভাবে হারিয়ে ফেলবে সেটা ভাবতে পারেনি! এখন যদি তাকে খুজে না পাওয়া যায় তাহলে বাসায় কি জবাব দিবে! বাবাকে কি জানাবে ব্যাপারটা! বাবা জানতে পারলে তাকে খুন করে ফেলবে! তা নিয়েও তো আফসোস থাকবে না! কিন্তু নাহিদাকে কি খুজে পাওয়া যাবে! পুলিশকে কি জানাবে! পুলিশ জানালে তো মিডিয়া জেনে যাবে! আর বাড়িতেও জেনে সবাই চিন্তিত হয়ে পড়বে!
বিকেল গড়িয়ে গেছে। পরী নাহিদাকে এগিয়ে দিয়ে গেলো। নাহিদা ভাবলো গতদিনের মতো আজও সূর্যাস্ত দেখে নেওয়া যাক! তাই সে রিসোর্টের দিকে না গিয়ে সমুদ্র তীরে এলো। একপাশে দাড়িয়ে সে সূর্যাস্ত দেখে তারপর রিসোর্টের দিকে এলো। প্রকৃতির আলো নিভে পশ্চিমাকাশ লালবর্ণ ধারণ করেছে। ভুবনে নেমে এসেছে আবছা অন্ধকার। নাহিদা রিসোর্টে এসে দেখলো ভবনের সামনে বেঞ্চিতে হিমেলের সাথে মেহেদী মাথা নিচু করে দু’হাতে মাথার চুল আকড়ে ধরে বসে আছে। বাকি দুজন দাড়িয়ে। জিহাদ তাকে ধমকে বলছে,
– বলেছিলাম নিয়ে নে সাথে! শুনেছিলি কিছু! তোর মতো মানুষ আমি জগতে দেখিনি! বিয়ের পর নাকি ছেলেরা বউ পাগলা হয় আর তুই বউ ঘৃণ্য পাত্র! পন্ডিতি করে আবার ফোন পার্স সব রেখে দিয়েছে! একা একটা মেয়েকে, অচেনা জায়গায় একা কিভাবে রেখে গেলি! এখন আবার অস্থিরতা দেখাচ্ছিস!
রায়ান বললো,
– মেহেদী এভাবে বসে থাকিস না। থানায় চল।
নাহিদা তাদের কথোপকথন কিছুই বুঝতে পারছে না। সে ভবনের দিকে না গিয়ে তাদের কাছে এগিয়ে আসতে আসতে বললো,
– কি হয়েছে?
মেহেদী সহ সবাই চমকে তাকালো! দুজন বসা থেকে দাঁড়িয়ে গেলো। রায়ান বললো,
– ভাবি, আপনি কোথায় ছিলেন! আমরা খুজে খুজে হয়রান!
– কেন, আমাকে খুজছেন কেন!
এমন কথায় বাকিরা বিস্মিত হলো এবং মেহেদী রেগে গিয়ে চেচিয়ে বললো,
– কেন তুমি জানো না! আমাদের টেনশনে ফেলে এখন পালটা প্রশ্ন করছো কোন সাহসে! পা লম্বা হয়ে গেছে খুব! কোথায় গেছো, কাকে বলে গেছো! বলো!
মেহেদী কথার সাথে সাথে হাতও তুলে ফেলেছিলো থাপ্পড় দেওয়ার জন্য কিন্তু নিজেই থামিয়ে নিয়েছে। রাগে তার শরীর কাপছে! তার এমন জিদ্দি চেচানো কণ্ঠ শুনে আশেপাশের লোকজন তাদের দিকে তাকিয়ে আছে আর নাহিদা একটু ঘাবড়ে গেছে! নাহিদা তার জবাব না দিয়ে ডানেবামে তাকিয়ে মানুষজনকে দেখছে আর লজ্জা বোধ করছে। জিহাদ দাতে দাত চেপে মেহেদীকে বললো,
– মেহেদী, করছিস কি তুই! দোষ তোরই! তাছাড়া তুই ভালোমন্দ কিছু জিজ্ঞাসা করার বদলে এভাবে রেগে যাচ্ছিস কেন! মানুষ দেখছে!
মেহেদী তাদের উপেক্ষা করে নাহিদার হাতে ধরে টেনে রুমে চলে এলো। দরজা লক করে নাহিদাকে জিজ্ঞেস করলো,
– কোথায় ছিলে এতোক্ষণ? কি হলো, বলো! মুখে কথা ফুটে না কেন!
– পরীদের বাসায় গিয়েছিলাম।
– পরী! পরী কে?
– গতকাল রেস্টুরেন্টে ছোট বাচ্চা দেখেছিলেন না। সে।
– কি হয় তোমার?
– কিছু না। এমনি ঘুরতে ইচ্ছে হলো তাই গিয়েছি।
– এতো সাহস কোথায় পাও তুমি! চেনা নেই জানা নেই, চলে গেছো ডিরেক্টলি তাদের বাড়িতে! আমি এদিকে কতো টেনশনে ছিলাম জানো তুমি! কার কাছে বলে গেছো! বলে গেছো আমার কাছে!
– আস্তে কথা বলুন। আপনার কাছে কেন বলে যেতে হবে! আপনি সেই মর্যাদা রেখেছেন!আপনি নিজের ইচ্ছেমতো এদিকসেদিক ঘুরে বেড়ান, কই আমাকে বলে যান কখনো! যখন যা ইচ্ছে তা-ই করেন, আমি আপনার কাজে বাধা দিয়েছি কখনো! তাহলে আমার বেলায় কেন বলে যেতে হবে আপনাকে!
– কারণ তুমি আমার দায়িত্বে এখানে এসেছো। তাই কখন কি করবে, না করবে সব বলতে হবে।
– দায়িত্ব! কিসের দায়িত্ব নিয়ে এসেছেন শুনি! আপনি পালন করেছেন কোনো দায়িত্ব! এখানে বেড়াতে নিয়ে এসেছেন, বন্ধুদের সাথে মেতে একা একাই সবসময় বেড়াচ্ছেন। আমাকে একা ফেলে আপনি দ্বিপে ঘুরতে চলে গেছেন, এই পালন করছেন দায়িত্ব! আমার বাবা-মা তো আপনার উপর দায়িত্ব দিয়েই বিয়ে দিয়েছেন, গতদিনে কোনো দায়িত্ব কি আপনি ঠিকমতো পালন করেছেন! আপনি তো বিয়েই মানেন না! বউও মানেন না! শুধু আপনার বাবা বললো দেখে দেখে নিয়ে আসতে আর নিয়ে যেতে এতেই আপনার দায়িত্ব পালন হয়ে যাবে! ঘুরাফেরা সহ আমার খাওয়া দাওয়াও বন্ধ করে রেখেছেন, এই আপনার দায়িত্ব! আমি কি এখানে বসে থাকার জন্য এসেছি! আপনি স্বেচ্ছায় ঘুরতে পারলে আমি কেন আমার ইচ্ছা পূরণ করতে পারবো না! মনে হয় না বিয়ের তিনদিনের মধ্যে কোনো মেয়েকে এতো কাদতে হয়েছে স্বামীর আচরণের জন্য, যতটা আমি কেদেছি! কি অন্যায় করেছি সেটাই ভেবে পাই না আমি! বিবাহিত জীবনে পদার্পণ না করতেই এতো অবহেলা সহ্য করছি, নিজেকে এখন মানুষই মনে হয় না!
কথাগুলো বলতে বলতে নাহিদার চোখে অশ্রুধারা বইছে। মেহেদী আর কোনো কথা বললো না। পকেট থেকে ফোন আর ওয়ালেট বের করে ঢিল মেরে বিছানায় ফেলে ওয়াশরুমে চলে গেলো। নাহিদা চোখ মুছে নিজেকে শান্ত করতে লাগলো। মেহেদী চোখেমুখে পানি দিয়ে ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে এলো। সে এলে আবার নাহিদা গেলো। মেহেদী নাহিদার পার্স নিয়ে ফোন সুইচ অন করে খাটের উপর সামনেই রেখে দিলো। নাহিদা বাথরুম থেকে বেরিয়ে এসে খাটে যা ছিলো সব সরিয়ে টেবিলে রেখে চাদর টেনে শুয়ে পড়লো। ক্ষুধায় পেট ব্যাথার সাথে মাথাটাও ব্যাথা করছে এখন! গতকাল দুপুরে যে খেয়েছে, আর খাওয়া হয়নি তার! মেহেদী এতোক্ষণ বারান্দায় ছিলো এখন রুমে এসে বললো,
– শুয়ে পড়লে কেন! সারাদিন খেয়েছো কিছু?
নাহিদা কোনো জবাব দিলো না, চোখ বন্ধ করে রেখেছে। মেহেদী তার চোখমুখ দেখেই বুঝে নিয়েছে সে হয়তো ক্ষুদার্ত। হবেই না কেন! গতরাতেও যে খায়নি সেটা মেহেদীর অজানা নয়। নাহিদার জবাব না পেয়ে সে আবার বললো,
– কথা বলছো না কেন? রেস্টুরেন্টে চলো, খেতে যাবো।
এবারও নাহিদার কোনো প্রতিক্রিয়া নেই। মেহেদী তার হাত ধরে টানলো কিন্তু নাহিদা হাত ঝাড়ি দিয়ে ছুটিয়ে নিয়ে বললো,
– খাবো না আমি৷
অন্যসময় হয়তো মেহেদীর খুব বিরক্ত লাগতো তবে এখন সেটা লাগছে না। কোনো না কোনো দিক থেকে নিজেকে অপরাধী মনে হচ্ছে। সে তার মায়ের কাছে কল করে কথা বললো। দিনে ঘুরাঘুরি করছে বলে কথা কাটিয়ে দিয়েছিলো। তাই এখন মাকে দিয়ে নাহিদার অভিমান ভাঙাতে কল করলো। নিজের টুকটাক কথা শেষ করে ফোন নাহিদার কানের উপর রেখে দিলো। মেহেরুনের কণ্ঠ শুনে নাহিদা চোখ খুলে তাকালো এবং ফোন ধরে উঠে বসে সালাম দিয়ে কথা বলতে লাগলো। কথা শেষ হতেই আবার শুয়ে পড়বে এমন সময় মেহেদী বললো,
– এখন নিচে না গেলে আমি আবার কল করে বলবো তুমি কাল থেকে না খেয়ে আছো। আবার আমাকে না জানিয়ে অচেনা জায়গায় বেড়াতে চলে গেছো।
– বলুন, আমিও বলে দিবো আপনি আমাকে রেখে দ্বিপে বেড়াতে গিয়েছেন।
– তখন আমিও বলে দিবো, তুমি স্পিডবোটে উঠতে ভয় পাও তাই আমার কিছু করার ছিলো না।
– কতো বড় মিথ্যুক আপনি! আমি তো কখনো স্পিডবোটে উঠিই নি! আপনি জানলেন কিভাবে!
– না জানলেও জানিয়ে দিবো। কখনো উঠোনি যে, এটাই তার প্রমাণ। এবার তারাতাড়ি চলো।
– যাবো না।
– আমি কিন্তু দুপুর থেকে না খেয়ে আছি তোমাকে খুজতে খুজতে!
– তো খেয়ে নিন। না করেছে কে!
– যাবে নাকি আমি তোমার বাবা মায়ের কাছে কল করে জানাবো তুমি আমার কথা শুনো না!
নাহিদা বিরক্তি নিয়ে উঠে পড়লো। মাথার চুল খোপা করে ক্লিপ আটকে মাথা ওড়না দিয়ে ঢেকে নিলো। নাহিদা যাবে বুঝতে পেরে মেহেদীও ফোন ওয়ালেট পকেটে নিয়ে নিলো। রুম লক করে দুজনেই রেস্টুরেন্টে এলো বাকিদেরও ডাকলো মেহেদী। পাচজন এক টেবিলে বসে খেতে লাগলো। নাহিদা তার জন্য একটা আইটেম অর্ডার করলো শুধু। ক্ষুধা বেশি থাকলেও বেশি পরিমাণ খাবার খাওয়ার রুচি নেই। তুলনামূলক আরও কম খেয়ে উঠে পড়লো। এসিটিটি থেকে বাচাতে মেহেদী তার হাতে চাটনি ধরিয়ে দিয়ে বসিয়ে রাখলো। তাদের খাওয়া শেষ হতে হতে যেন সে এটা শেষ করে! চাটনির মধ্যে ভিন্ন স্বাদ পেলো নাহিদা। কি দিয়ে তৈরি করা হয়েছে বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে। শুধু পুদিনা পাতার ঘ্রাণ বুঝতে পারছে বাকি উপাদান অজানা! খাওয়া শেষে সবাই বেরিয়ে এলে মেহেদীর বন্ধুরা আগে পা চালালো আর মেহেদী নাহিদাকে বললো,
– চলো, সন্ধ্যার সৈকতে ঘুরবো।
নাহিদা বেশ বুঝতে পারছে এখন মেহেদীর ঘাড়ে দায়িত্বের ভুত চেপেছে আর একটু পরেই ভুত লাফ দিয়ে নেমে যাবে। সে তার কথায় সাড়া না দিয়ে রুমে চলে যাওয়ার জন্য পা বাড়ালে মেহেদী তার হাত ধরে বললো,
– কথা কানে যায়নি! এখন বলছি এখন যাবে না একটু পরেই আবার বলে বলে কান্না করবে! আর বাড়িতে গিয়ে আব্বু আম্মুকে শুনাবে হানিমুনে এসে আমার কেয়ারস পাওনি!
– যাবো না আমি। আপনিই ঘুরেন বেশি করে। বাড়িতেও কিছু জানাবো না। হানিমুনের শখ মিটে গেছে আমার।
মেহেদী তাকে কাছে টেনে এনে বললো,
– এতো তারাতাড়ি শখ মিটে গেলে চলবে নাকি! আরও বাকি আছে তো! মাত্র তো শুরু হলো! চলো।
মেহেদী হাত না ছাড়ায় নাহিদাকে যেতেই হলো তার সাথে। নাহিদা তার হাত ধরে হাটছে, মাঝে মাঝে দৃষ্টি মেহেদীর দিকে পলক ফেলছে। মন বলছে, সবসময় এমন থাকলে না হতো! বুঝে না কেন লোকটা! সন্ধ্যায় বালিতে গড়ে উঠা ছোট ছোট দোকানগুলো জমেছে বেশ। মেহেদীর বন্ধুরা আগে হাটছে, দুষ্টুমি করছে আর মেহেদী পেছনে শান্ত হয়ে নাহিদার হাত ধরে হাটছে। নাহিদা তাকে বললো,
– পাচশো টাকা আছে আপনার সাথে? ধার দিন, রুমে গিয়ে দিয়ে দিবো।
– কেন?
– কিছু কিনবো।
– কেনো যা কেনার।
নাহিদা যত দেখছে একটু একটু করে ততই অবাক হচ্ছে! সে তার এতো কেয়ারে নেমে গেলো! মানুষ কি এতো তারাতাড়িই শুধরে যায়! বেশি কিছু না ভেবে সে নাফিসার জন্য কিছু কিনে নিলো। সাথে আয়াশ ও আরিশার জন্যও খেলনা নিলো। পাচশোর কথা বলে প্রায় পনেরো শো হয়ে গেছে! কিন্তু এতে মেহেদী কিছু বললো না। নাহিদা কিনলো আর সে টাকা দিয়ে গেলো। আরও কিছুক্ষণ ঘুরেফিরে তারা একসাথে রিসোর্টে ফিরে এসেছে। ঘুমানোর সময়ও বালিশ একটার সাথে একটা লাগিয়ে নাহিদার পাশাপাশি শুয়েছে। নাহিদার মাঝে বিস্ময়ের ধারাবাহিকতা চলছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here