তুমিময়_প্রেম♥ PART_16,17

0
1434

তুমিময়_প্রেম♥
PART_16,17
FABIYAH_MOMO?

?
হাতের স্পর্শ পেয়ে আমার চোখ আটকে স্থির হয়ে গেছে! আমার চুমুক বসানো পানির কাপটা থরথর করে কাপতে লাগল! তার স্পর্শ থামছেনা! আঙ্গুলের ছোঁয়া আমার শরীরে বসিয়ে ধীরেধীরে কোমরের দিকে যাচ্ছে! আমার সমস্ত ইন্দ্রিয় তখন ভয়ের কারনে কাবু হয়ে শিরশির করছিলো! তবুও নিজেকে শক্ত রাখার কঠিন ব্রত পালন করছিলাম! কি হচ্ছে আমার সাথে!

কাপা হাতে পানির গ্লাসটা টেবিলের উপর আস্তে করে রাখলাম। হাতের স্পর্শটা শাড়ির উপর কোমরের কাছে চলে গেছে। আমি ঠোট কুচকে সজোরে পিছনের দিকে কনুই মেরে দেই! ‘আউউ..’ শব্দযোগে কেউ চিৎকার করে উঠলো! আমি সাথেসাথে পেছন ফিরে সরে দাড়াই! তার দিকে তাকাতেই দেখি খারাপ স্পর্শওয়ালা ব্যক্তি আর কেউ না তন্ময়! আমার কনুই মারার আঘাত ডিরেক্ট পেটে যেয়ে লেগেছে তা তন্ময়ের পেট চেপে মুখের গোঙানিতেই বুঝা যাচ্ছে। হাটু ভাজ করে ফ্লোরের দিকে ঝুকে গোঙাচ্ছে খুব! আমি চটজলদি কাধের পেছন থেকে শাড়ির আচল টেনে বাইরে দৌড়ে যেতেই হঠাৎ কারোর আগমনী ধাক্কায় চোখমুখ খিচে উল্টে পড়ে যাই। ফ্লোরে পড়তেই মনে হলো কোমর বুঝি ভেঙ্গে চুরমার হলো! সমস্ত শরীরে ব্যথার ঝাকুনি অনুভূত হলো! এই বুঝি শেষ! মরে গেলাম! কয়েক সেকেন্ড না পেরুতেই একজোড়া হাত এসে শূন্যে তুলে নিলো! আমি হঠাৎ ধাক্কায় শক্ত টাইলস বসানো ফ্লোরে পড়ে ব্যথায় চোখ বন্ধ করে আছি। শরীরের সমস্ত ভর ছেড়ে দিয়েছি, মাথা সহ পুরো শরীরে তন্দ্রা মতো ঘোর লাগছে। চোখটা খুলে যে দেখবো সেই মিনিমাম শক্তিটুকু পাচ্ছিলাম না। আমি ধীরেধীরে জ্ঞান হারাই…

চোখটা খুলতে ইচ্ছে করছেনা কিন্তু মুখের উপর উজ্জ্বলবর্ণের সূর্যালো পড়ছে। মাথাটায় কেউ ঠান্ডাজাতীয় কিছু চেপে ধরেছে। আমি কোথায় আছি কিছুই বুঝতে পারছিনা। একবার মনে হয় কোনো নরমস্থলে মাথা পেতে শুয়ে আছি। আরেকবার মনে হয় কোনো ভিন্ন জগতে চলে গেছি। আচ্ছা আমি কি মরে গেলাম নাকি? আকষ্মিক মৃত্যুতে ঢলে পড়লাম? মরে গেলে এরকম অনূভুত হয়?? কিন্তু আমার যে কষ্ট হচ্ছেনা!! বরন্ঞ্চ আরামদায়ক অনুভব হচ্ছে। যেখানে আছি সেখানে এভাবেই যেন যুগ যুগ পার করতে ইচ্ছে করছে। কি অদ্ভুত শান্তি! এই শান্তি আম্মুর কোলে ঘুমালে ভীষণভাবে অনুভব করা যায়! শান্তির ঘুম! চোখের উপর কড়া করে আলো পড়তেই চোখদুটো আপনাআপনি খুলে গেলো। আমি ছোট ছোট চোখ করে তাকালাম। সবুজে ঘেরা বৃক্ষ সমারোহে আছি। মাটির বদলে সবুজ দূর্বাঘাস, খুব সুন্দর মিষ্টি সুভাষী ফুল, কিছুদূরে ঠান্ডা স্নিগ্ধ পরশ জাগানো পাখির সুর। আমি মাথা ধরে আলতো করে উঠাতেই কেউ মাথাটা আবার আগের জায়গায় চেপে ধরলো। আমি ভ্রুকুটি করলাম। কে আমায় ধরলো?? মাথায় ঠান্ডাজাতীয় কিছু আরো কঠিন করে চেপে ধরে নরম কন্ঠে বলে উঠলো,

— খারাপ লাগছে?? তোমাকে হসপিটালে নিবো?? খুব খারাপ লাগছে?

আমি কন্ঠটা শুনে ঝট করে মাথা উঠিয়ে ফেলি। মাথায় তৎক্ষণাৎ ব্যথা করে উঠলো! আমি মাথা ধরে একচোখ কুচকে মুগ্ধের দিকে তাকাতেই মুগ্ধ আমার হাতটেনে ওর কোলে শুয়িয়ে ছাড়লো! আমি বাধ্য মেয়ের মতো ওর কোলে মাথা দিয়ে শুয়ে থাকি। মুগ্ধ আমার মাথায় বরফভর্তি আইসপ্যাক চেপে ধরেছে।

— তোমাকে আমি না করলে তুমি ত্যাড়ামি করবেই! তোমার স্বভাব এটা ! আমি যা বলবো তার খেলাফ করবেই! বেয়াদবি করলে কিন্তু রেহাই নাই পাকনি! সাবধান করে দিচ্ছি!
আমি আশেপাশে তাকিয়ে দেখতে ব্যস্ত আসলে আমি কোথায় আছি! এক কানে মুগ্ধের পেচাল শুনলেও কোনো ভাবাবেগ নেই আমার! মুগ্ধ আমার কপালের উপর থেকে চুল সরিয়ে কানের কাছে গুজে দিতে বলে উঠলো,

— এটাই ভাবছো কোথায় তুমি?
আমি মুগ্ধের দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে আছি। এই বেটা মনের কথা বুঝলো কি করে?? মন বিশ্লেষণের স্পেশাল ট্রেনিং নিয়েছে নাকি?? মুগ্ধের দিকে তাকিয়ে নানা উল্টাপাল্টা চিন্তা করতে থাকলে মুগ্ধ আমার মাথা থেকে আইসপ্যাকটা সরিয়ে পাশের ছোট টেবিলে রাখলো। ছোট করে ঢোক গিলে ঠোটটা ভিজিয়ে বলে উঠলো,

— আমি সরি পাকনি! তোমাকে না জানিয়ে একটু দূরে নিয়ে এনেছি। আসলে আমার কিচ্ছু করার নেই বিশ্বাস করো!!

উনি পান্জাবীর পকেট থেকে একটা রুমাল বের করে বরফ বসানো জায়গায় আইসপ্যাকের বারতি পানি মুছে দিতে লাগলো। নরমভাবে বলে উঠলো,

— তোমাকে ভালোবাসি বুঝছো! সোজা ভাষা তো বুঝোনা! না বুঝে ভং ধরে থাকো খালি! ভাব্ এমন..ভাজা মাছটা উল্টানো দূর, মাছ যে উল্টাতে হয় তাও জানো না। কি একটা অভিনয় মাই গড!
— ফালতু কথা বাদ দাও মুগ্ধ! তুমি আমায় কোথায় এনেছো জলদি বলো নাহলে আমি চিৎকার করবো!
— এটা সাজেক।

সাজেক শব্দ শুনে “অল্প শোকে কাতর, অধিক শোকে পাথর” প্রবাদের বাজনা বাজছে আমার! যেই বড়ো ছ্যাকাখোর লাগছে নিজেকে আল্লাহহহহ!!! মুগ্ধের প্রোপোজাল পেয়ে যে ছ্যাকা খেয়েছি, তার চেয়ে বড়ো ছ্যাকা ‘সাজেক’ আছি শুনে ফিল করছি! মুগ্ধ একদম বাজিমাত করে দিলো খোদা! আমার উপর ডাবল খেলে দিলো! আমি ভ্যাবাচেকা খেয়ে কোলে মাথা রেখে তাকিয়ে থাকলে মুগ্ধ বলে উঠে,

— দেখো আই লাভ ইউ! আমি আর কিচ্ছু চাইনা! তোমাকে চাই! হেই ড্যামিট তাকাও আমার দিকে! আই লাভ ইউ! আই সেইড আই লাভ ইউ! হকিস্টিকের বারি খেয়ে বলতে পারো আমি প্রেমময় হয়ে গেছি! #তুমিময়_প্রেম নামক পাগলামি শুরু করেছি! আমার কোনো সকাল নেই দুপুর নেই, খাওয়া নেই দাওয়া নেই! খালি বিছানায় শুয়ে শুয়ে তোমার কারনামা ভাবি! কি সাংঘাতিক ব্যাপার! উফ ! আমি ভালোবাসি ভালোবাসি ভালোবাসি! শেষষষ! আই জাস্ট লাভ ইউ!

আমি বোকার মতো মুগ্ধের দিকে তাকিয়ে আছি। এই বান্দা কেমন পাগলামো করছে!!! মুগ্ধ মৃদ্যু নিশ্বাস ছেড়ে আমার মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বলে উঠলো,

— পাকনি মাথার বাম সাইড তো ফুলে গেছে!! তোমাকে হসপিটালে নেবো কি?? ইশশ কি যে পেইন হচ্ছে তোমার! কি যে করি!! আইসপ্যাকে তো কাজ হলো না!! ফোলা যে কমছেনা!! শালার তন্ময় রে যদি জবাই না করছি আমার নামও রাদিফ মুগ্ধ না! শালার সাহস কত্ত তোমাকে টাচ করছে! ওরে বারবার এলার্ট করার পরেও তোমাকে টাচ করার কলিজা কিভাবে আসলো! আই সয়ার পাকনি তন্ময়কে আমি ছাড়বো না! নো ম্যাটার হোয়াট, আই ওন্ট লিভ হিম !

-চলবে?

-Fabiyah_Momo

#তুমিময়_প্রেম♥
#PART_17
#FABIYAH_MOMO?

?
মুগ্ধ চিন্তিত মুখ করে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। কোনো বলা নেই, কওয়া নেই হুট করে মুখের উপর এত্তোগুলা কথা বলে উঠলো আমি কোনো প্রতিক্রিয়া দিতে পারছিলাম না। সম্পূর্ণ হতভম্ব হয়ে কোলে মাথা রেখে ওর দিকে তাকিয়ে আছি, মুগ্ধ অস্থিরচিত্তের মতো ছটফট করছে! একটুপর আমার হুশ ফিরলে আমি ঝট করে কোল থেকে মাথা উঠিয়ে দাড়িয়ে পড়ি। সাথেসাথেই মাথায় হালকা চক্কর দিয়ে উঠে। আমি পড়ে যেতে নেই। মুগ্ধ দৌড়ে ধরতে আসলে আমি মাথা ধরে নিজেকে সামলে নেই। ওর দিকে তর্জনী উঠিয়ে ওখানেই স্টপ হতে বলি। ও হাত বাড়িয়ে দিলেও সেই হাত অসহায় ভঙ্গিতে থামিয়ে দেয় মুগ্ধ। আমি মাথায় ফোলা সাইডটায় আলতো আলতো করে বুলিয়ে দেখছি। অনেকখানি ফুলে গেছে। হলরুম থেকে বেরুনোর সময় হঠাৎ মুগ্ধের সাথে ধাক্কা খেয়ে ডিরেক্ট ফ্লোরে মাথা গেথে পড়ি, তাতেই ডানসাইডটা ফুলে বোম হয়ে আছে। এই বোম ফুটলেই আমি ব্রেনলেস হয়ে মারা যাবো!! মুগ্ধ কাতর গলায় বলে উঠলো,

— প্লিজ পাকনামি করো না! মাথায় ভীষন ফুলে উঠেছে! এ অবস্থায় তুমি পড়ে যাবে! বিশ্বাস করো! আমাকে ধরতে দাও!! আমি প্রমিস করছি তোমার হাত ছাড়া আর কোথাও টাচ করবো না!! প্লিজ! তুমি পড়ে যাবে! কথা শুনো..
আমি সব শ্রবন করে কোনো ভ্রুক্ষেপ না করে শক্ত গলায় বলে উঠি,
— পানির বোতল থাকলে পানি দাও! একটা বাড়তি কথা বলবা না! আমার কাছ থেকে দূরে থাকো! দূরে থাকো বলছি!
— দিচ্ছি !! আমি দিচ্ছি!!

মুগ্ধ কথামতো পানির বোতল এনে হাজির হয়। আমি ওর হাত থেকে বোতলটা নিয়ে অর্ধেকটা খেয়ে গলা ভিজিয়ে বাকি অর্ধেকটা মাথা মাটির দিকে নুয়ে টনটন করা ডানদিকটায় ঢালি। মুগ্ধ কিছুদূর থেকে আমার অবস্থা চোখ দিয়ে দেখছে, কিন্তু আদেশের কারনে আমার কাছে এসে কিচ্ছু করবে সেই সাহস দেখাচ্ছে না। নিজেকে কিছুটা সুস্থবোধ ফিল হলে পরিবেশটার চারপাশে তাকাই। সুন্দর একটা জায়গা। জায়গাটা বৃক্ষসাজিতে ঘেরা। বিশাল বড়ো বড়ো লম্বা গাছ, প্রশ্বস্ত শাখাওয়ালা ঝাপটানো গাছের বহর। বটগাছটার নিচে বাধানো ইট সিমেন্টের কৃত্রিম সোফামতো জায়গায় মুগ্ধ আমাকে কোলে নিয়ে শুয়ে বসেছিলো। আমি যেদিকটায় দাড়িয়ে আছি এখানে ছোট্ট লেক। লেকের চর্তুপাশে ঝার বাতি লাগানো। মাথা এখন ঘুরছেনা, অনেকটাই বেটার ফিল হচ্ছে সতেজ পরিবেশে। মুগ্ধ আর তর সইতে পারলো না জলদি আমার দিকে তেড়ে এসে ঠিক একহাত দূরত্ব রেখে দাড়ালো! ওর নিকটস্থ আসাটা আমাকে চরম ভোগান্তিতে ফেলছে!মুগ্ধ কিছু বলার জন্য ঠোট নড়াবে তার আগেই ঠাস করে এক চড় মুগ্ধের গালে বসিয়ে দেই। চড়ের জোরে সে কিছুটা হেলে দুকদম পিছিয়ে যায়। আমার এখনো রাগ কমেনি! একফুটাও নাহ্! দুহাতে মুঠি চেপে দাতেঁ দাত চিবাচ্ছি! মুগ্ধের কোনো ভাবাবেগ হলো না! সে নির্লজ্জের মতো আবার কাছে এসে মুখ খুলে হনহন করে বলে উঠলো,
— চড় মারলে না? প্লিজ আরো মারো! মারতে থাকো! যতো জিদ আছে সব ঢালো! তবুও প্লিজ আমায় একসেপ্ট করো! আই জাস্ট ওয়ান্ট ইউ! প্লিজ আমি আর পারছি না…

কথা শেষ না হতেই হাত উঠিয়ে একই গালে আরেক দফা চড় দিলাম! চড়ের শব্দ নিস্তব্ধ পরিবেশে বিকট শব্দ করে উঠলো! ফর্সা চামড়ার উপর পাচঁ আঙ্গুলের ছাপ বসে গেছে। কেউ ওর চড় খাওয়া মুখ দেখলে উল্টো আমার উপর বন্দুকের দুটো বুলেট ছুড়তে একটুও দ্বিধাবোধ করবেনা। কেননা, রাদিফ মুগ্ধের জন্য চড়ের ছাপ মানান না! তাও আবার মিডেল ক্লাস মেয়ের হাতের চড় কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য না।

— তোকে ওয়ার্ন করার পরেও কানে যেহেতু শুনিস না! আশাকরি চড়ের ভাষা কক্ষনোও ভুলবি না! তুই যেমন ! তোর সাথে তেমন বিহেব করার দরকার ছিলো! মাঝেমাঝে তোর সাথে কি আহামরি ভালো বিহেব করেছি তা দেখেই ভেবেছিস তোর প্রেমের প্রোপ্রোজাল আমি খুশিখুশি মেনে নিবো! হায়রে বেচারা! আরে শুনে রাখ! আমি তোর প্রথমদিনের ব্যবহার যেমন ভুলবো না, তুইও এই ঠাসঠাস চড়ের আঘাত কোনোদিন ভুলতে পারবিনা! আমি তোর বাসায় আর পড়াতে যাবো না! তোর ভাতিজিকে বলে দিস নিউ একটা যোগাড় পেতে! আমি আর আসবো না! বায়!

কঠিন ভাষায় কথাগুলো বলে চলে আসতে নিলে মুগ্ধ আমার পেছন থেকে সামনে এসে পথ আটকায়। চোখ দুটো ছলছল করছে তার। যেকোনো মূহুর্তে অশ্রুবন্যা বইয়ে যেতে পারে। আমি চোখমুখ শক্ত করে কঠিন কিছু বলতে নিবো! মুগ্ধ আরো অসহায় দৃষ্টিতে চোখের বাধ কোনোরকমে আটকে বলে উঠলো,

— আমিই তো দোষ করেছি, আমিই দোষী….ফাইজাকে কষ্ট পেতে দিও না প্লিজ…ওর জন্য তুমি এখন অনেক কিছু…ও তো মাসুম, প্লিজ ওর দিকে তাকিয়ে একবার ভাবো! ওকে পড়ানো বন্ধ করো না পাকনি, তোমাকে দোহাই দিচ্ছি, আমি তোমাকে আর প্রবলেমে ফেলবো না!! আমি প্রমিস করছি!!
— তোর ভাতিজির দোহাই দিয়ে বাচার চেষ্টা করবি না! আই ওয়ার্ন ইউ!
— আই সয়ার! আই সয়ার ওকে আমাদের মাঝে টানবো না! আমি কথা দিচ্ছি!! আমি কথা দিচ্ছি প্লিজ বিশ্বাস করে দেখো!!

আমি অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে চোখ বন্ধ করে জোরে নিশ্বাস ছাড়লাম। নিজেকে কন্ট্রোল করা খুব জরুরী! নয়তো খারাপ কিছু ঘটিয়ে ফেলবো আমি! মুগ্ধ মাটির দিকে তাকিয়ে পান্জাবীর ফোল্ডেড হাতাটা চোখের কাছে ঘষে নিলো। আমি ওর দিকে তীক্ষ্ম দৃষ্টি ছুড়ে সেখান থেকে পা চালিয়ে চলে আসতে লাগলাম। অনেকখানি রাস্তা পেরিয়ে মেইন গেট দিয়ে বের হতে নিলে ওর দিকে একবার পিছু ফিরে তাকাই! মানুষটা একাধারে পান্জাবীর হাতাটা চোখে ডলেই যাচ্ছে। বারবার মুছে চলছে দুচোখের অশ্রান্ত অশ্রুগুলো। কোনো থামা নেই, কোনো বাধা নেই…রাদিফ মুগ্ধ আজ আবেগের কাছে হেরে বসলো। আমি আমার পথপানে চেয়ে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দেই। দেখার ইচ্ছে নেই আমার! এসবে আগ্রহ নেই!

মুগ্ধ হাটুগেড়ে বসে পড়লো মাটিতে। হাতদুটো কানে চেপে নিশব্দে চোখের পানি ফেলতে লাগলো! প্রচুর কষ্ট হচ্ছে তার! গলা ফাটিয়ে চিৎকার দিতে ইচ্ছে করছে! নিজেকে গাড়ির নিচে পিষে ফেলতে ইচ্ছে করছে! সবকিছু লন্ডভন্ড করতে ইচ্ছে করছে! কেনো ছিড়ে যাচ্ছে বুকের মাঝখানটায়? পৃথিবীর সবচেয়ে বড় অসহায় বাক্য তাহলে, “সে তোমাকে ভালোবাসে না”!!

-চলবে

-Fabiyah_Momo

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here