লেডি_ডন সিজনঃ২ পার্টঃ৯,১০

1
1538

লেডি_ডন
সিজনঃ২
পার্টঃ৯,১০
লেখিকাঃ Snigda Hossain Mona
পার্টঃ৯

জয় লিজাকে বিশ্বাস করে রুহিকে লিজার কাছে রেখে বাইরে গেল।

জয়ঃ যে করেই হোক আদির খুনিদের খোঁজে বের করতে হবে রুহির স্মৃতি ফিরিয়ে আনতে সবচেয়ে বেশি কাজ করতে পাড়ে আদির খুনিরাই কারন রুহির জ্ঞান হারানোর ঠিক আগের মুহুর্তে তাদেরকেই দেখেছিল।

এদিকে লিজা আর জয়ের মা মিলে রুহির উপড় অত্যাচার করা শুরু করে দিয়েছে।

লিজাঃ মা এই আপদ টাকে আজই বের করতে হবে। আজ না পাড়লে আর কোনদিন পাড়ব না। যতই জয়ের সামনে থাকবে জয় ওর উপড় দুর্বল হয়ে পড়বে।

জয়ের মাঃতা ঠিল কিন্তু লিজা রুহিকে বের করে দিলে জয় কি এটা মেনে নিবে?

লিজাঃ আরে নিবে নিবে মা। জয় আমার কথার উপড়ে কথা বলে নাকি?

জয়ের মাঃ না লিজা তুমি ভুল বুঝতেছো।
অন্য সব বিষয় আর রুহির বিষয় জয়ের কাছে আলাদা। রুহির জন্য জয় পৃথিবীর সবার সাথে খারাপ কিছু করতে পাড়ে জয় এটা কখনওই মেনে নিবে না।

লিজাঃ সেটা না হয় পড়ে দেখা যাবে আগে তো বের করে দেই।জয় এসে একটু না হয় বকাই দিবে কিন্তু আপদ তো বিদায় হবে।জয় পড়ে রুহিকে আর পাবে কোথায় ?বকা খেলে খাব। তবু সমস্যার সমাধান তো হবে।

জয়ের মাঃ না লিজা আমি তা পাড়ব না,হাজার হোক রুহি আমার মেয়ের মত ওকে আমি রাস্তায় বের করে দিতে পাড়ব না।তাও আবার এই অবস্থায়। ওকে কোন মেন্টাল হাসপাতালে দিয়ে আসব।

লিজাঃ এই বুড়িতো এখনি মত পাল্টে গেল আর যখন শুনবে রুহি মা হতে চলেছে তখন তো আরও নরম হয়ে যাবে।
না না এভাবে সবাই আমার হাত ছাড়া হয়ে যাবে। যা করার আমাকে এখুনি করতে হবে তা নাহলে জয় আমার হাত ছাড়া হয়ে যাবে।
রুহিকে হাসপাতালে দিলে রুহি সুস্থ হয়ে যাবে।আর রুহি, জয় একবার মিলে গেলে কেউ ওদের সামনে দাড়াঁনোর সাহস পাবে না।

যা করার বুদ্ধি কাটিয়ে করতে হবে।রুহিকে সবার শত্রু বানিয়ে বাড়ি থেকে বের করতে হবে।
তারপর
সারাদিন ধরে লিজা রুহিকে ঘরের সব কাজ করিয়ে নিল।রুহি যদিও করতে চায় নি,লিজা ভয় দেখিয়ে করাল।
,
,
,
,
,
রাতে জয় বাসায় ফিরল।
সবাই খাবার টেবিলে বসল।

জয়ঃ লিজা, রুহিকে ডাকো…

লিজাঃ ওর তো শরীর খারাপ ও না হয় ঘরেই খাবে।

জয়ঃ না লিজা রুহি আমার সামনে খাবে।

লিজাঃ আচ্ছা, আমি ওকে নিয়ে আসছি বলে উপড়ে গেল।

লিজা রুহিকে ফিসফিস করে বলে দিল খাবারের ঝালের ব্যাপারে যেন কিছু বল্লে খবর আছে।

রুহি সারাদিন কাজ করে ক্লান্ত সে কারো দিকে না থাকিয়ে চুপচাপ নিচের দিকে তাকিয়ে খেতে লাগল।

ঝালে রুহির মুখ জ্বলে যাচ্ছে।তাও কারো দিকে, না তাকিয়ে খেয়ে যাচ্ছে।

হঠাৎ জয় বলে উঠল বাহ… মা, আমাদের খাবারে যখন তখন যে কেউ বিষ মিশিয়ে দিতে পাড়ে তাই না?
সবাই অবাক হয়ে গেল।
জয়ের মাঃ কি বলছিস বিষ আসবে কোথা থেকে?

জয়ঃ আমি তো তাই দেখতে পাচ্ছি মা। তুমি পাচ্ছো না?
কেউ কিছু বলার আগেই জয় রুহির সামনের খাবার একটানে নিয়ে এক চামচ মুখে দিল।

এবার লিজার দিকে তাকাল,

জয়ঃ লিজা,তুমি হয়ত জানই না রুহি কিছু বলার আগেই আমি বোঝি ওর কি সমস্যা হচ্ছে ।আমি তোমায় বিশ্বাস করেছিলাম তাই তোমার হাতে আমি আমার জীবনটা তুলে দিয়েছিলাম দেখলাম তুমি আমায় কতটা ভালবাসো।যদি আমায় ভালবাসতে আমার আমানত রক্ষা করতে। আমি যাকে ভালবাসি তুমিও তাকে ভালবাসতে কিন্তু আফসোস তুমি তা করলে না।

লিজাঃ জয় তুমি যা ভাবছো সেটা ঠিক না আমি জানি না খাবারে কি সমস্যা হয়েছে।
বলে লিজা জয়কে অনুরোধ করতে শুরু করল কিন্তু জয় কিছুই শুনতে রাজি না। এসব নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হচ্ছে।

এদিকে রুহির অবস্থা খারাপ হয়ে যাচ্ছে।তার খালি মনে হচ্ছে সেও এভাবে কারো কাছে অনুরোধ করছিল কিন্তু কেউ তার কথা শুনে নি।
আর এখন জয় শুনছে না তাই রুহি রেগে গিয়ে জয়কে ঠাস করে একটা থাপ্পড় বসিয়ে দিল।

আর সাথে সাথেই রুহি জ্ঞান হারাল।

জয়ঃ বোঝতে পাড়ল না রুহির কি হয়েছে তাড়াতাড়ি ওকে নিয়ে ঘরে গেল কিছুক্ষন পর রুহির জ্ঞান ফিরল।
জ্ঞান ফিরতেই রুহি চিৎকার করে বলে উঠল জয়….
জয় পাশেই দাঁড়িয়ে ছিল রুহির ডাকে তার পাশে বসে বলল কি হয়েছে রুহি।

রুহি জয়কে জড়িয়ে ধরে বলল আদিকে ওরা…..

জয়ঃ হ্যা বল কি করেছে ওরা…. রুহি কি হল বল আদিকে ওরা কি…..

রুহি অস্থির হয়ে বার বার বলতে লাগল ওরা আদিকে….

জয়ঃ ওরা কারা ছিল সেটা শুধু বল রুহি প্লিজ….
রুহি আর কিছু না বলে আবারো জ্ঞান হারাল।

জয় ডাক্তার ডেকে পাটাল।
ডাক্তার এসে রুহিকে দেখে বলল,রুহির আস্তে আস্তে স্মৃতি ফিরে আসছে তবে তার উপড় চাপ দেওয়া যাবে না যতটা মনে হবে নিজে থেকেই হবে।

ডাক্তার রুহিকে ঘুমের ও্ষধ দিয়ে চলে গেল।
রুহি ঘুমোচ্ছে।
জয় রুহির পাশে তার হাত ধরে বসে আছে।

রাত ১২ টা বাজে।
লিজা গিয়ে জয়ের মায়ের কাছে জয়ের নামে নালিশ করল।
লিজা জয়ের মা কে নিয়ে রুহির ঘরে ঢুকল

জয়ের মাঃ জয় তুই এখানে কি করছিস? নিজের রুমে যা।

জয়ঃ আমি আজ এখানেই থাকব মা।

লিজাঃ তারমানে কি…???

জয়ঃ বাংলা ভাষায় বল্লাম শুনতে পেলে না?

জয়ের মাঃ কি বলছিস এসব? এটা কিছুতেই সম্ভব না…নিজের ঘরে যা ও একাই থাকতে পাড়বে।

জয়ঃ রুহি একা থাকতে পাড়বে কিনা বিষয় সেটা না। আমি রুহিকে ছাড়া থাকতে পাড়ব না ফেক্ট এটাই।
আর তুমি এত অবাক হচ্ছো কেন মা? আমি আর রুহি কি কখনো এক ঘরে রাত কাটাই নি? আর এমন ভাবে বলছো যেন তুমি তা জানই না?
রুহি যখন অসুস্থ ছিল আমি ওর পাশে বসে রাত জাগি নি?

মাঃ তখনের আর একখনের মধ্যে অনেক পার্থক্য জয় তুই এখন বিয়ে করেছিস।

জয়ঃ তাই নাকি? তা…. মা বিয়ের পরে কি আমার পিঠে পাখা গজাইছে নাকি? কই আমি তো দেখতে পাচ্ছি না (রাগে)

মাঃ যা মন চায় কর বলে চলে গেল।

লিজাও বোঝল কথা বলে লাভ নাই তাই সেও যেতে চাইল,

জয়ঃ দাঁড়াও লিজা,আমি চাইনা আমার আর রুহির সম্পর্ক নিয়ে কেউ আজেবাজে চিন্তা ভাবনা করুক।তাই আজ তুমিও এই ঘরেই থাকবা।আমি তোমাকে যেমন কষ্ট দিতে চাইনা তেমনি রুহিকে অবহেলা করতে চাই না। তুমি রুহির পাশে শুয়ে পড়ো।
লিজাঃআর তুমি….???

জয়ঃ রুহিকে অসুস্থ রেখে আজ অব্দি কোনদিন আমি ঘুমাই নি লিজা আজ কিভাবে ঘুমাব? আমি জেগেই থাকব।

লিজাঃকিন্তু ও তো ঘুমোচ্ছে। তুমি জেগে থেকে কি করবে?আমি তো আছি তুমি নাহয় নিজের ঘরে গিয়ে ঘুমাও।

জয়ঃ তুমি কি আমার কথা শুনতে পাও নি? রুহি একাই ঘুমোতে পাড়বে কিন্তু আমি পাড়ব না ওকে ছেড়ে যেতে।
ইচ্ছা হলে ঘুমাও না হলে জেগে জেগে আমাদের পাহাড়া দিতে পাড়ো।

লিজা বাধ্য হয়ে শুয়ে পড়ল।
শুয়ে শুয়ে লিজা ভাবছে কিভাবে রুহিকে বিদায় করা যায়?রুহিকে বিদায় তো করতেই হবে আর সেটা রুহির জ্ঞান ফিরে আসার আগেই।
জয় বদলে যাচ্ছে এটা কিছুতেই হতে দেওয়া যায় না।জয়কে মাফিয়া হতে দেওয়া যাবে না।
,
,
,
,
চলবে…!!!!

#লেডি_ডন
#সিজন_২
#পার্টঃ১০
#লেখিকাঃ Snigda Hossain Mona

পরদিন সকালে রুহির ঘুম ভাংগল,
রুহি ঘুম থেকে জেগেই জোরে জোরে চিৎকার করতে লাগলো।
জয় রুহির পাশে হাত ধরে বসে বসে ঘুমোচ্ছিল
জয় রুহির চিৎকার শুনে ঘুম থেকে চমকে উঠল।

জয়ঃ রুহি, রুহি…. কি হয়েছে…???

রুহিঃ আরে জয় দেখ না আমার পেটে কি জানি নাড়া চাড়া করছে।

রুহির কথা শুনে জয়ের মন খুশিতে ভরে গেল,
আর ভাবতে লাগল রুহি আমাকে তুই করে বলছে মানে রুহির সব মনে পড়ে গেছে?আবার চিন্তা করল,মনে যদি পড়েই থাকে তাহলে এত খুশি কি করে? আদির কথা মনে করে তো অস্থির হওয়ার কথা।

জয়ের ভাবনার ছেদ ঘটিয়ে রুহি জয়ের হাত ধরে বলল কি রে দেখ না।
জয় কিছু বোঝার আগেই রুহি জয়ের হাত টেনে নিয়ে নিজের পেটের উপড় রাখল।

জয়ঃ আরে রুহি শোন, শোন কি করছিস?

জয় অপ্রস্তুত ভাবে রুহির পেটে হাত রাখলেও সে অনুভব করল রুহির বাচ্চা পেটের ভিতর নড়াচড়া করছে।বাচ্চার স্পর্শ পেয়ে জয়ের মধ্যে এক অন্যরকম ভাল লাগা কাজ করছে বাচ্চাটার নাড়া চাড়া তার মনকেও নাড়িয়ে দিচ্ছে।জয় এক অজানা ঘোরের মত ঢুকে গেল তার মনে হচ্ছে বাচ্চাটা যেন তার খুব আপন কেউ। আর আপজনের প্রথম স্পন্দন অনুভব করছে।

রুহিঃ আমার কি মনে হয় জানিস জয়, পেটের মধ্যে ব্যাং ঢুকেছে?

রুহির কথায় জয় বাস্তবে ফিরল,
জয়ের হাসি যেন আর থামছে না। একমনে হেসে যাচ্ছে।২ বছর ধরে জমিয়ে রাখা হাসি যেন একবারে হেসে ফেলছে।
হাসতে হাসতে জয় বলতে লাগল রুহি কি বল্লি আবার বল প্লিজ…

রুহি রেগে গিয়ে বলল তুই থামবি….আমি ব্যাথায় মরে যাচ্ছি আর তুই হাসছিস।
আহ মাগো কি জোরে জোরে নড়ছে, এটা নড়ছে নাকি লাথি মারছে কে জানে।কিছু একটা কর।

জয় এবার নিজের ইচ্ছায় রুহির পেটে আলতো করে হাত বুলিয়ে দিয়ে বলল এখানে আমার একটা আমানত রেখেছি।তোকে সবচেয়ে বেশি ভরসা করি তাই তোর কাছে রেখেছি।

রুহিঃ আমানত রেখেছিস তাও পেটের ভিতর সেটা আবার লাথিও মারে?
কি আজব ব্যাপার, তুই কি যে বলতেছিস কে জানে

জয়ঃ আমার জন্য পাড়বি না এইটুকু সহ্য করতে?

রুহিঃ তোর জন্য তো সব করতে পাড়ি।কিন্তু এটা খুব হারামি খালি লাথি মারে।তোর চেয়েও বেশি হারামি।

জয়ঃ আচ্ছা এবার থেকে যতবার কিক করবে তুই গুনে রাখিস,তুই আমাকেও ততবার মেরে দিস।

রুহিঃ এটা কোন শর্ত হল নাকি তোকে মেরে আমার কি লাভ হবে?তার চেয়ে বল যতগুলি কিক করবে ততগুলি গিফট দিবি।

জয়ঃ আচ্ছা দিব।
রুহিঃ সাথে আদরো করতে হবে।
জয়ঃ তাও করবো।

লিজা দরজার পাশে দাঁড়িয়ে এসব দেখছে আর রাগে ফুসছে।
লিজা রাগে গজ গজ করতে করতে মনে মনে বলতে লাগল, নিজের বাচ্চার নামে খবর নাই আর অন্যের বাচ্চার জন্য দরদ উতলে উঠছে।
বাচ্চা হয়নি এখনো তাও যে আদর এই বাচ্চা জন্ম নিলে কি হবে কে জানে।

রুহিঃ এখনি অনেকবার কিক করেছে তার বদলে আদর কর।

জয় রুহির মাথায় তার বুলিয়ে দিয়ে রুহিকে জড়িয়ে ধরে বলল আমি আজ খুব খুশি রুহি।

রুহিঃ আহ…. কি করছিস জয়?

জয়ঃ কি করলাম।

রুহিঃ ব্যাথা পেলাম মনে হল।

জয়ঃ কোথায়?

রুহি এবার নিজেকে ভাল করে খেয়াল করল।
তারপর বলল জয় আমার শরিরে এত ব্যাথা কেন? আর এই কাটা ছিড়ার দাগ গুলিই বা কোথা থেকে আসল? কার এত সাহস হল যে রুহির গাঁয়ে হাত তুলল? কখনি বা মারল কিছু মনে পড়ছে না কেন? রুহি আবার অস্থির হয়ে পড়ল।মাথায় হাত দিয়ে বলল মাথা যন্ত্রনা করছে।

জয় বোঝে গেল তারমানে রুহির সবকিছু মনে পড়ে নি(মনে মনে)
রুহি থাম থাম….কেউ মারে নি আমরা প্রেকটিস করতেছিলাম তুই আমার সাথে পাড়িস নি তাই মার খেয়েছিস।

রুহিঃ কি বললি আমি পাড়ি না? দাঁড়া এবার তোকে দেখাচ্ছি আমি পাড়ি কিনা।বলে জয়কে ধরতে গেল।

জয়ঃ ধরতে পারলে তো মারবি বলেই দৌড়।

রুহিও পিছন পিছন ছুটছে,
রুহিঃ একবার হাতের কাছে পাই দেখিস তোর কি অবস্থা করি।
জয় হাসছে আর সারা বাড়ি ঘুরছে।জয়ের হাসিতে পুরু বাড়ি মুখরিত হয়ে উঠল জয়ের হাসিতে যেন মুক্ত ঝরছে।
বাড়ির সব কাজের লোকেরা মুগ্ধ হয়ে জয় আর রুহির দিকে তাকিয়ে আছে।কারন জয় এতদিন মন মরা হয়ে থাকত।
জয়ের মা এই দৃশ্য দেখে খুশিতে কেঁদেই দিলেন।
আর মনে মনে বলতে লাগলেন রুহি আমার বাড়ির আপদ না, ও আমার ঘরের লক্ষি বাড়িতে পা রাখতে, না রাখতেই বাড়িটা যেন প্রান ফিরে পেয়েছে।
কতদিন জয়কে হাসতে দেখি নি।লাস্ট কবে জয়কে হাসতে দেখেছি ভুলেই গেছি,ভেবেছিলাম জয় মনে হয় হাসতে ভুলে গেছে আর এখন দেখি ছেলের মুখের হাসি থামছেই না।

জয়ের মা মনে মনে দোয়া করলেন খোদা তুমি রুহিকে হাজার বছর বাঁচিয়ে রেখো।

এদিকে রুহি হঠাৎ করে থেমে গেল।
অগ্নিমুর্তি হয়ে জয়ের দিকে তাকাল,
জয়ঃ বেবে ডলের আবার কি হল ধরতে না পেড়ে মেজাজ খারাপ হয়ে গেছে নাকি?

রুহিঃ মুটেও না…. তোকে ধরা রুহির কোনো ব্যাপার নাকি শুধু একবার বল্লে নিজেই চলে আসবি সেটার জন্য রাগি নি।

জয় পানি খেতে খেতে বলল তাহলে চেতেছিস কেন?

রুহিঃদেয়ালের দিকে তাকিয়ে বলল এই দেয়ালে তোর আর আমার ছবি ছিল জয়,
সেগুলি কোথায়?

রুহির কথা শুনেই জয়ের হাত থেকে পানির বোতলটা পড়ে গেল।

জয় কি বলবে বোঝতে পাড়ছে না তাই আমতা আমতা করে বলল রররর…রুহি আমার কথা শোন।
রুহি সামনে থাকা ফুলদানি টা হাতে নিয়ে নিজের সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে মাটিতে ছুড়ে মেরে বলল হ্যা বল আমি শুনছি তো।

ফুলদানির হাজার টুকরা হয়ে যাওয়া প্রমান করে দিল রুহি কতটা রেগে গেছে।

জয়ের মুখের কথা আটকে গেছে কি বলবে বোঝতে পাড়ছে না।

জয় কিছু বলার বা বোঝার আগেই,
রুহি হাত মুট করে নিজের পেটে জোরে আঘাত করলো। ব্যাথায় নিজেই মাগো বলে মাটিতে বসে পড়ল।
জয়ঃরুহি…….!!! দৌড়ে এসে রুহিকে ধরে বলল কি করলি এটা।
রুহি মুখ তুলে বলল তোর কাছে যদি আমার আমানতের মুল্য না থাকে তাহলে আমিই বা তোর আমানতকে রক্ষা করি কি করে?

জয়ঃ তাই বলে নিজেকে কষ্ট দিবি?

রুহিঃতোকে সারাদিন পিটালেও তুই এত কষ্ট পেতি না যতটা এখন পেলি(মনে মনে)
জয়ঃ রুহি তুই এখুনি পাগলামি টা ছাড়তে পারলি না?
রুহিঃ কি করব বল রুহি ক্ষমা করতে শিখলেও তোর বানানো লেডি ডন যে ক্ষমা করতে শিখে নি।এমন কি তার জয়কেও সে ক্ষমা করতে পাড়ে না।
ছাড় আমায় বলে রুহি উঠে যেতে চাইল।

এদিকে লিজা রুহির এই অবস্থা দেখে বেশ আনন্দ পেল।
এবার লিজা রুহির সামনে এসে দাঁড়াল,
রুহি লিজাকে দেখে অবাক হয়ে বলল,জয় ইনি কে?
জয় কিছু বলল না।
লিজাঃ আমি জয়ের বউ…..

রুহিঃ বাহ বাহ বেশ ভালতো জয় আমায় না জানিয়ে তুই বিয়েও করে নিলি?
তুই না আমায় বলেছিলি তুই আমার পছন্দে বিয়ে করবি?অনেক বড় হয়ে গেছিস তুই তাই না।
ভাল।
রুহি জয়ের হাত থেকে একটা ব্রেসলেট খুলে নিল তারপর লিজাকে পড়িয়ে দিয়ে বলল তোমাকে খুব চিনা চিনা লাগছে কোথায় যেন আগেও দেখেছি।
যাই হোক প্রথমবার বউ এর মুখ দেখলাম,খালি হাতে কি করে দেখি কিন্তু আমার কাছে এখন আপাদত কিছু নেই তুমি এখন এটা নাও একটু পর বের হয়ে তোমার জন্য গিফট নিয়ে আসব কেমন।রুহি সাভাবিক ভাবে কথা বললেও,
যারা রুহিকে চিনে সবাই বোঝতে পাড়ছে রুহি মন খারাপ করেছে কারন,রুহি যখন কষ্ট পায় তখনি শুধু এভাবে শান্ত গলায় কথা বলে তা না হলে সবসময় হাসতেই থাকে।

রুহি এবার জয়ের দিকে তাকিয়ে বলল আশাকরি তোর কোন আপত্তি নেই কারন ব্রেসলেট টা আমিই তোকে দিয়েছিলাম।
বলে রুহি উপড়ে যেতে লাগল
জয়ঃ রুহি শোন আমার কথাটা একবার শোন প্লিজ….
রুহিঃ তুই এখন আমার পিছন পিছন আসলে আমি নিজের কি অবস্থা করব তুই সেটা ভাল করেই জানিস জয়, তাই এটাই ভাল হবে তুই এখানেই থাক। রাগি লুক নিয়ে বলল।

জয় মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে গেল।

এদিকে লিজার মন আনন্দে ভরে গেল।

লিজাঃ বাহ রুহি তুমি নিজেই নিজের উইক পয়েন্ট বলে দিলে তারমানে জয় তোমাকে কষ্ট দিলে তুমি নিজের ক্ষতি করবে।তাহলে তো আগুনে ঘী ঢালতেই হয়।তোমাকে এখান থেকে বের করতে আমার প্রধান হাতিয়ার হবে জয়।
আমায় আর আটকায় কে।এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা
,
,
,
চলবে…!!!!

1 COMMENT

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here