রাগী খালাতো ভাই যখন বর পার্ট-২,৩

0
6644

রাগী খালাতো ভাই যখন বর
পার্ট-২,৩
মাহমুদ
পার্ট -২

ওদিকে খালামুনি বকা বকি করছে কলেজ এর দেরি হয়ে যাবে বলো।
তাই তারা তারি রেডি হয়ে খাবার টেবিলে গেলাম।
টেবিলে বসে খাচ্ছি আমার সামনেই বসে আছে শুভ্র ভাইয়া, এই মানুষটাকে যতো দেখি ততো অবাক হয়।
এর মনে কখন কী চলে কেউ জানে না।
আমার তো মনে হয় উনি নিজেও জানে না।
কী সুন্দর দেখতে মানুষটা,
যাকে বলে একদম cute এর ডিব্বা।
ফর্সা চেহারা,হাইট হবে হয় তো ৬ ফুট,খোঁচা খোঁচা দারি,জিম করা বডি আর ঠোঁট এর নিচে একটা ছোট্ট তিল।
মনে হচ্ছে এই তিলটাই তাকে আরো বেশি সুন্দর করে তুলেছে।
এতো সুন্দর কেনো এই মানুষ টা?
ওই এমন ভাবে তাকিয়ে আছিস কেনো?আমাকে যে খাবার দিয়েছে তোকেও একই খাবার দিয়েছে,তো তাকিয়ে আছিস কেনো?আমার পেট খারাপ করাতে চাস নাকী?
উনার কথাই বেশ লজ্জা পেলাম।তাই কথা না বাড়িয়ে খাওয়াতে মনোযোগ দিলাম।
শুভ্র তুই আর শিশির তো একই কলেজে যাস দুজনে এক সাথে যেতে পারিস না?
ওকে সাথে নিয়ে যাবি।
মা লাইক সিরিয়াস?
আমি আর পারিনি ওকে নিয়ে যাবো তুমি ভাবলে কী করে?
বলে চলে যাচ্ছিলো,আবার ভিরে এসে আমার হাতে ওনার বাটন ✆ টা ধরিয়ে দিলো।
আজ থেকে এই ফোনটা সাথে রাখবি ওকে।
আমি শুধু মাথা নারলাম(তাকে হে বুঝালাম)
এই ভাবেই কেটে গেলো ৪ মাস।
আজ শুভ্র ভাইয়াদের বিদায় অনুষ্ঠান।
কলেজের সকলেই শাড়ি পড়বে।
আমরাও আজ শাড়ি পড়েছি।
খালামুনি দেখো তো আমাকে কেমন লাগছে?
ওরে বাপরে বাপ আমার মামুনিটারে এতো সুন্দর লাগছে কেনো?
পিছনে ঘুরে দেখি খালু কথাটা বললো,,,আমি গিয়ে খালুকে জোরিয়ে ধরলাম।
খালু সত্যি সুন্দর লাগছে আমাকে।
আমার মামুনিটা তো এমনি অনেক সুন্দর,,,, আজ শাড়ি পড়েছো আরো সুন্দর লাগছে।
হুম আমাদের মেয়েটাকে অনেক সুন্দর লাগছে।
thx খালামুনি।
মা আমি আসছি,বলেই তারা হুরা করে শুভ্র ভাইয়া বেরিয়ে গেলো।
কাউকে কীছু বলার সুযোগই দিলো না।
মামুনি চলো আজ তোমাকে আমি নিজে কলেজে দিয়ে আসবো।
সত্যি খালু?
হুম সত্যি, পাগলি চলো।
তারপরে খালু আমাকে কলেজ এ দিয়ে গেলো।
ভিতরে গিয়ে দেখি অনেক সুন্দর করে সাজিয়েছে দেখতে দেখতে আমার বেস্টু নিশি আমার কাছে এলো।
কীরে শিশির আজ কাকে ঘায়েল করতে এতো সাজ গোজ করেছিস??ব্যপার কী রে?
আরে চুপ যা হারামি।তবে তোকে অনেক সুন্দর লাগছে নিশি।
হুম thx,তোকেও খুব সুন্দর লাগছে।
চল স্টেজ এর ও দিকে বসি।
পিছনের দিকে বসতে যাচ্ছিলাম এমন সময় একটা রাকিব ভাইয়া এসে বললো আপু তোমাদের জন্য সামনে সিট রাখা আছে তোমরা দুজন ওখানে বসো।
আমরাও আর কথা বাড়ালাম না।সামনে গিয়ে বোসলাম।
সামনে তাকাতেই শুভ্র ভাইয়া কে চোখে পড়লো।
কালো পাঞ্জাবি পড়েছে,কালো জিন্স,কালো সানগ্লাস, যাকে বলে একদম পারফেক্ট বয়।
সারা দিন অনেক মজা করলাম।মাঠের মাঝে আমি নিশি আর আমার বন্ধুরা মিলে গল্প করছিলাম এমন সময়
রাফি ভাইয়া (ফাইনাল ইয়ারের ছাত্র)এসে আমার সামনে একটা ফুল দিয়ে হাটু গেরে বসে বললো।
শিশির কীভাবে বলবো বলো তো?
অনেক কথা বলার আছে তোমাকে।
আচ্ছা শোনো না সকলের মতো বলতে পারবো না i love u।
আমি তোমাকে সত্যি ভালোবেসে ফেলেছি তাই বলবো।
Will you merry me?
Plz accept me.
আমি এমন পরিস্থিতিতে কী বলবো বুজতে পারছিলাম না।চুপচাপ দারিয়ে আছি।
কোথা থেকে শুভ্র ভাইয়া এসে আমার পাশে দারালো আর উনি যা বললো তাতে আমার মাথাই আকাশ ভেঙে পড়লো।

চলবে…?

গল্প-রাগী খালাতো ভাই যখন বর
মাহমুদ
পার্ট-৩

কোথা থেকে শুভ্র ভাইয়া আমার পাশে এসে দারিয়ে খুব শান্ত গলাই বললো।
আরে রাফি,সব জেনে শুনে আসবি তো।
না জেনে ভুল যায়গাতে এসে পরলি।
মানে?
তুই কী বলতে চাস।
মানে তুই যাকে প্রেম নিবেদন করলি সে অলরেডি অন্য কারো।
রাফি একবার শুভ্রর দিকে তাকাই তো এক বার শিশিরের দিকে তাকাই।
কী বলতে চাস ডাইরেক্ট বল।
মানে শিশিরে বিয়ে ঠিক হয়ে আছে,,,,ওর পড়া শেষ হলেই ওর বিয়।
শিশির এতক্ষণ চুপচাপ এদের কথা শুনছিলো,,,,,
আর এখন তো রীতিমত শকট খেলে শুভ্রর কথাই।
ওর বিয়ে ঠিক হয়েছে আর ও নিজেই জানে না?
রাফির মতো শিশির এর চোখ ও বড় বড় হয়ে গেলো।
কিন্তু ভাইয়া আমার বিয়ে””””'(আর বলতে পারলো না)
শিশির আমি এ নিয়ে পড়ে কথা বলবো তোর সাথে,তুই আর এক মুহূর্ত এখানে থাকবি না।
সোজা বাড়ি চলে যাবি যা।
আমি ও আর কথা বাড়ালাম না, মনের মধ্যে হাজার টা প্রশ্ন নিয়ে বাড়িতে চলে আসলাম।
এভাবেই দিন যাচ্ছিলো।
শুভ্র ভাইয়া ও এখন বেশির ভাগ সময় বাড়িতেই থাকে, সব সময় বই এর মধ্যে মুখ গুজে থাকে।
একদিন সকলে নাস্তা করছিলাম,শুভ্র ভাইয়া আর খালুও আমার পাশেই বসে খাচ্ছিলো।
হঠাৎ খালু বললো,
দেখ মা আমরা ছোট বেলা থেকেই তোকে নিজের মেয়ের মতো মানুষ করেছি,
কোনো বাবা মা চাই না তার কলিজার টুকরোকে অন্য কারো হাতে তুলে দিতে।
কিন্তু মা নিয়তি বড় নিষ্ঠুর, নিজের কলিজার টুকরো মেয়েকেও অন্য কারো হাতে তুলে দিতে হয়।
আমাদের ও তাই করতে হবে।
।শুভ্রর বন্ধু রাফির বাবা কাল আমার অফিসে এসেছিলো।
রাফি নাকী তোকে খুব ভালো বাসে,
পরিক্ষা শেষ ও ওর বাবার বিজনেস টাতে জয়েন করবে,
আমরা তোকে জোর করবো না,,
তুই যেটা বলবি সেটাই হবে।
কথাটা শুনে কেনো জানি না আমার চোখ দুটো শুভ্র ভাইয়ার দিকে গেলো।
উনি খুব ভালোভাবে মনোযোগ সহকারে খাচ্ছে,
মনে হচ্ছে উনি খাওয়া ছারা আর কীছুই বুঝে না।
খুব কষ্ট হচ্ছে।কীন্তু কেনো কষ্ট হচ্ছে আমার?
কীরে মা কীছু বল?
খালু ছোট বেলা থেকে তোমরাই আমার বাবা মা তোমরা যেটা ভালো বোঝো সেটাই করো।
বলেই চলে আসলাম।
কেনো জানি না ওখানে থাকতে ইচ্ছে করছে না।খুব কান্না পাচ্ছে।
নিজের ঘরে এসে,কান্না করে দিলাম।
নিজেই নিজেকে প্রশ্ন করলাম।
আমার কষ্টের কারণ টা কী?
আর আমি কেনোই বা আশা করছিলাম শুভ্র ভাইয়া খালুকে মানা করে দেবে,
যে না শিশির এর এখন বিয়ের দরকার নেই?

?
তার মানে কী আমি মনে মনে শুভ্র ভাইয়া কে ভালোবেসে ফেলেছি।
কীন্তু শুভ্র ভাইয়া তো আমাকে দেখতেই পারে না,
তাহলে কী আমি তার অবহেলার ভালোবাসাতেই পরে গেলা।
শিশির কীরে মা দরজা বন্দ করে কী করছিস,কলেজ যাবি না?
খালামুনি আমি আজ কলেজ যাবো না।
তুমি যাও,আমাকে ডাকবা না আমি একটু একা থাকতে চাই।
দুপুরে খেতেও যাইনি।
শুভ্র তুই কী শিশির কে কীছু বলেছিস?
মেয়েটা সেই সকাল থেকে একা একা বসে আছে,কলেজ ও গেলো না,খাওয়া দাওয়াও করছে না।
মা ওর কীছু হলেই তোমরা আমাকে বলো কেনো?আজ সারা দিন তো ওর সাথে আমার দেখাই হয়নি।
শিশির মা দরজা টা খোল কী হয়েছে আমাকে বল।
কেউ কীছু বলেছে?
আচ্ছা বিয়ের কথা শুনে রাগ করেছিস?
মা দরজাটা খোল।
(দরজাটা খুলে খালামুনিকে ভিতরে আসতে দিলাম)
আমি বসে আছি খালামুনিও আমার পাশেই বসে আছে?
কীরে মা কী হয়েছে(মাথাই হাত দিয়ে)।
নিজেকে আর সামলাতে পারলাম না,
খালামুনিকে জোরিয়ে ধরে কান্না করে দিলাম।
এই পাগলি কী হয়ছে এভাবে কান্না করছিস কেনো।
আচ্ছা আমাকে বল। শুভ্র কীছু বলেছে,বলল.
(কান্না করতে করতেই বললাম)খালামুনি আমার মনে হয় আমি তোমার ছেলেকে ভালোবেসে ফেলেছি।
(দরজার কাছ থেকে খালু বলে উঠলো)
তা আমার মামুনিটা যে শুভ্র কে ভালোবাসে এটা কী শুভ্র জানে?
(আমি মাথা নারলাম)যার মানে না।
তাহলে তাকে তো জানাতে হবে।
কীন্তু খালু তোমার ছেলে তো আমাকে দুচোখে দেখতে পারে না।
হঠাৎ খালামুনি বলে উঠলো আমার কাছে একটা আইডিয়া আছে?
আমি আর খালু খালামুনির দিকে তাকালাম?
আজ শুক্রবার রাফি ভাইয়ার পরিবার থেকে সকলেই আমাকে দেখতে আসছে।?
খালামুনি অনেক রান্না করছে আজ,
আমাকে আমার বান্ধবী নিশি একটা নীল শাড়ি পড়িয়ে দিয়েছে।
একটু পরেই তারা বাড়িতে এলো.
এখন আমি তাদের সামনে বসে আছি।
এখানে সকলেই আছে।
খালু,খালামুনি,শুভ্র ভাইয়া সকলেই আছে
(রাফি ভাইয়ার মা)
তা মা তোমার নাম কী?
নৌশিন আহমেদ শিশির।
রান্না বান্না করতে পারো?
আমি কীছু বলতে যাবো তার আগেই শুভ্র ভাইয়া বললো।
কেনো আন্টি ওকে দিয়ে কী শুধুই রান্না করাবেন নাকী?
শুভ্র ভাইয়ার কথাই ওনারা চুপ মেরে গেলো।
তার পরে আবার প্রশ্ন করলেন।
আচ্ছা মা বলতো,স্বামী আগে না পরিবার আগে?
এবার ও আমি কীছু বলার আগেই শুভ্র ভাইয়া বললো,
কেনো আন্টি বিয়ের পরের দিনই কী ওদের আলাদা করার চিন্তা করছেন নাকী?
ওনার কথাই খালু বললো।

চলবে…….??

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here