গল্প-রাগী খালাতো ভাই যখন বর পর্ব-৫

0
7970

গল্প-রাগী খালাতো ভাই যখন বর
পর্ব-৫
মাহমুদ

শিশির আমরা একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছি আশা করি তুই আমাদের সিদ্ধান্ত মত দিবি।
আমি খালু,খালামুনির দিকে তাকালাম?
আমরা চাই সামনের সপ্তাহে তোর আর রাফির বিয়ে দিতে।
আমরা চাই না শুভ্র তোকে নিয়ে আর একটা কথাও বলুক।
বলেই আমাকে পাটিতে নিয়ে গেলো।
রাফি ভাইয়ার পাশে দার করিয়ে খালু বললো।
তোমাদের সকলের জন্য এটা শুখবর আছে, আমরা আর রাফির বাবা,মা মিলে ঠিক করেছি সামনের সপ্তাহে শুক্রবার রাফি আর শিশিরের বিয়ে,
তোমাদের সকলের দাওয়ার রইলো।
কথাটা শুনেই সকলে একরসাথে হাত দালি দিতে লাগলো।
আমি আর চোখে শুভ্র ভাইয়ার দিকে তাকালাম,,, উনি এক কোনে একা দারিয়ে আছে।
আজ আমার গায়ে হলুদ,আর কাল বিয়ে।
সকলেই এসেছে।সকলের মুখেই হাসি আছে শুধু আমার মুখে নেই।আমি যে শুভ্র ভাইয়া কে বড্ড ভালোবাসে ফেলেছি। পারবো না ওই মানুষ টাকে ছাড়া থাকতে।
কিন্তু মানুষ টা একটুও ভালোবাসে না আমাকে।
ওই দিকে শুভ্র ভাইয়া সব কাজ করছে এমন সময় রাকিব ভাইয়া এসে ওনার কাথে হাত রাখলেন
শুভ্র:ওহ তুই কখন এলি।
রাকিব:এই তো মাত্র। তো কেমন আছিস?
শুভ্র:কেমন আছি মানে আমি তো ভালোই আছি।দেখ বিনদাস বিয়ের কাজ করছি
(রাকিব ভাইয়া আর কীছু না বলেই শুভ্র ভাইয়াকে নিয়ে তার রুমে চলে গেলে)
রাকিব:কেনো করছিস এমন?তুই কী বুজতে পারছিস না তুই জীবনের কী হারাতে বসেছিস।
শুধু মাত্র তোর ভুলের জন্য আজ তোর ভালোবাসা অন্য কারো হচ্ছে।বুজতে পারছিস তুই?
শুভ্র:?
রাকিব:চুপ করে থাকিস না শুভ্র। তুই নিজেও জানিস শিশির তোকে কতো টা ভালোবাসে।
আর আমি নিজেও জানি তুই তোর থেকে বেশি শিশির কে ভালোবাসিস তাহলে কেনো এমন পাগলামি করছিস।
(এবার আর শুভ্র ভাইয়া রাকিব ভাইয়া কে জোরিয়ে ধরে কান্না করে দিলো)
শুভ্র:(কান্না করতে করতে) বিশ্বাস কর রাকিব আমি ওকে ছাড়া থাকতে পারবো না।আমি যে ওকে খুব ভালোবাসি।আমি জানি আমি ওর সাথে খারাপ ব্যবহার করি।কিন্তু বিলিভ মি আমি ওকে নিজের চেয়েও বেশি ভালোবাসি।
আমি যে অন্য সকলের মতো নিজের ভালোবাসা প্রকাশ করতে পারি না।
আমি আজ বড্ড অসহায় নিজেকে আজ খুব ছোট মনে হচ্ছে।
আমি আর নিতে পারছি না রাকিব বিলিভ মি, আমার দম বন্দ হয়ে আসছে,নিশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে মনে হচ্ছে আমার প্রাণ ভোমরাটা কেউ কেরে নিয়ে যাচ্ছে।
রাকিব:দেখ পাগলামি করিস না,ছেলেদের কান্না করতে নেই জানিস না।আর তুই তো স্ট্রগ,তোকে তো আমি কখনও ভেঙে পড়তে দেখিনি।তাহলে আজ এমন করছিস।
আমার কথা শোন তুই এখন গিয়ে শিশির কে সব বলে দে। বলে দে যে তুই ওকে ভালোবাসিস।
শুভ্র:আমি পারবো না। আমি পারবো না ওকে আট কাতে।
রাকিব:ঠিক আছে আমি শিশির কে সব বলছি (ওঠে আসতে নিলেই শুভ্র হাত ধরে আবার বসিয়ে দিলো)
রাকিব:কী হলো হাতটা ছার।
শুভ্র: নারে হতে দে বিয়ে।আমি জানি আমি ওকে খুশি রাখতে পারবো না কারণ আমার রাগের কারণে আমি আমার ভালোবাসা প্রকাশ করতে পারিনি।আমি জানি আমার এই রাগের কারণে আমার সাথে বিয়ে হলে ও সুখি হবে না।
আমি যে আমার রাগ টাকে কন্ট্রোল করতে পারি না। হোক না ও রাফির রাজ্যের রানি।আমি জানি রাফি ওকে খুব ভালোবাসবে।
চল এ বার, বাইরে অনেক কাজ আছে (বলেই চোখ মুছেই বাইরে বেরিয়ে গেলেন।রাকিব ভাইয়াকে কীছু বলার সুযোগ দিলেন না)
আজ আমার বিয়ে।চারে দিকে ফুলের ছরা ছরি।
ছোট্ট বাচ্চারা দৌড়া দৌড়ি করছে।
আমাকে একটু আগে পার্লার এর মেয়ে গুলো সাজিয়ে দিয়ে গেছে।
হঠাৎ একজন চিৎকার করে বলে উঠলো,,,,,,,
হঠাৎ একজন চিৎকার করে বললো বর এসেছে, বর এসেছে।
কথাটা যেনো আমার বুকে তীরের মতো লাগলো।
এই জায়গাটাতে তো আমি আমার শুভ্র ভাইয়া কে চেয়ে ছিলাম যাকে আমি আমার সব টা দিয়ে ভালোবাসতে চেয়েছিলাম।
নিজের অজানতেই চোখ দিয়ে পানি পরলো।
বিয়ের লোক জনদের খাওয়া দাওয়া শেষ।
নিশি:শিশির,রাকিব ভাইয়া ফোন দিয়েছে তোর সাথে দু’মিনিট কথা বলতে চাই।
এই নে কথা বল।
রাকিব:hlw শিশির?
শিশির:হুম ভাইয়া বলেন।
রাকিব:দেখো আমি জানি তুমি শুভ্র কে ভালোবাসো তাহলে রাফি কে কেনো বিয়ে করছো?
শিশির:ভাইয়া এক হাতে তালি বাজে না,আর না এক তরফা ভালোবাসা হয়।আমি ওনাকে ভালোবাসি কিন্তু উনি আমাকে একটুও ভালোবাসে না।(বলেই কান্না করে দিলাম)
রাকিব:কে বলেছে ও তোমাকে ভালোবাসে না।ওর দিকে একবার তাকিয়ে দেখো ঠিক বুজতে পারবে।পাগলটা তোমাকে নিজের চাইতেও বেশি ভালোবাসে শুধু প্রকাশ করতে পারে না।
জানো একটু আগে ও কান্না করছিলো।কারণ ও তোমাকে চিরদিনের জন্য হারিয়ে ফেলছে।
কীন্তু ও তাও কীছুই বলছে না কারণ ও চাই তুমি সুখে থাকো।
দেখো বড় ভাই হিসেবে একটা সাজেশন দি।শুনবে কী না শুনবে এটা তোমার বেপার।
নিজেদের ভালোবাসাটাকে হারিয়ে যেতে দিও না।
বলেই ফোন টা কেটে দিলো।
আমি শুধু কান্না করছি কী করবো কীছুই মাথাই আসছে না।এখন যে আমার হাতে কীছুই নেই।আর একটু পরেই আমি অন্য কারো।
কাজি এসেছে বিয়ে পড়াতে,
আমাকে বার বার বলছে বলো মা কবুল।আমি কীছুই বলতে পারছিনা,সব কথা যেনো গলাতে বেঝে আছে।আজ নিজেকে সব চেয়ে বেশি অসহায় মনে হচ্ছে।
আবার ও কাজি বলে উঠলো বলো মা কবুল।
এবার আমি খুব জোরেই বলে উঠলাম।

এই বিয়ে আমি করতে পারবো না।
সকলে যেনো আমার কথাই চমকে উঠলো।
খালু আমার কাছে এসে বললো কী বলছিস তুই এই সব,মাথা ঠিক আছে তোর।
আমি খালুর দিকে একবার তাকিয়ে,শুভ্র ভাইয়ার দিকে হাটা ধরলাম,সকলে অবাক চোখে আমাকে দেখছে।
শুভ্র ভাইয়ার কাছে গিয়ে নিজের সব শক্তি দিয়ে তাকে খুব জোরে একটা থাপ্পর মারলাম।
সকলে যেনো এবার আরো অবাক হলো।
এবার সকলের সামনেই শুভ্র ভাইয়া কে জোরিয়ে ধরে কান্না করতে করতে বললাম।
এতোই যখন ভালোবাসো তাহলে অন্য কারো হাতে তুলে দিচ্ছেন কেনো?আমি কী খুব পঁচা যে আমাকে এই বুকটাতে আগলে রাখতে পারছেন না।
শুভ্র ভাইয়া ও কীছু বুজতে পারছে,হঠাৎ এমন হওয়ায় উনিও কীছু বলতে পারছে না।
আমি আবার ও বলতে শুরু করলাম।
ভাইয়া তুমি আমাকে ছাড়া থাকতে পারলেও আমি যে থাকতে পারবো না।তিলে তিলে শেষ হয়ে যাবো। তার থেকে তুমি নিজেই আমাকে শেষ করে দাও।
এখানে এই সব কী হচ্ছে(রাফি ভাইয়ার বাবা)আমরা কী এখানে সিনেমা দেখতে এসেছি।
রাফি ভাইয়া কীছু না বলে, আমাদের কাছে এসে শুভ্র ভাইয়া কে বললো?
শুভ্র তুই কী শিশির কী ভালোবাসিস?
শুভ্র ভাইয়া কীছুই বললো না,শুধু মাথাটা নিচু করে রইলো।
বাসর ঘরে বসে আছি আমি।এই রাতটা নিয়ে অনেকর নাকী অনেক স্বপ্ন থাকে।আমার ও আছে।জানি না পুরণ হবে কী না?

চলবে………..??

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here