আজও_ভালোবাসি_তোমায়❤
Part_2,3
Writer_মাহিয়া_মিতু
Part_2
?
?
ফারহান চৌধুরী, দেশের নাং ওয়ান বিজনেস ম্যানদের মধ্যে একজন চৌধুরী গ্রুপ অব কোম্পানির মালিক ফারহাদ চৌধুরীর একমাত্র ছেলে। বর্তমানে ঢাকা ভার্সিটিতে মাস্টার্স করছে। ভার্সিটির সব টিচার দের প্রিয় স্টুডেন্ট, ভার্সিটি টপার,এন্ড সব মেয়েদের ক্রাস। কারণ সে দেখতে অনেক সুন্দর। তার চেহারা, কথা বলার এটিটিউট ইস! সব মেয়েকে পাগল করার জন্য যতেষ্ঠ।
ছয় ফুট উচ্চতা, হলদে ফর্সা গায়ের রং, ডার্ক গোলাপি ঠোঁট, স্পাইক করা চুল, এক কথায় কোনো হিরোর থেকে কোনো অংশে কম নয় বরং বেশি।
অন্য দিকে মিতু, মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে। দেখতে একদম পরির মতো, গায়ের রং উজ্জ্বল ফর্সা, চোখ দুটো টানা টানা, লম্বা ৫.৪” বাবা আরমান সাহেব একজন সরকারি কর্মকর্তা, আর মা মোহিনী বেগম গৃহিণী। মিতু তার বাবা মায়ের একমাত্র মেয়ে। মধ্যবিত্ত পরিবারের হলেও খুব হ্যাপি তারা।মিতু এবার অনার্স ফাস্ট ইয়ারে ভর্তি হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
আর আজকে ওর ভার্সিটির প্রথম দিন।তাই ও তাড়াতাড়ি ভার্সিটি যাওয়ার জন্য রাস্তায় দাঁড়িয়ে ওর বেস্টু দিনার জন্য ওয়েট করছে। ও দাঁড়ানোর প্রায় আধঘন্টা পর দিনা এলো, মিতু তো রাগে বোম হয়ে আছে। তা দেখে দিনা ভয়ে ভয়ে বললো
—- স সরি দোস্ত, আর কোনো দিন দেরি হপপে না আমার?
—– তোর সরির কাঁথায় আগুন, বান্দরানি, শয়তান, উগান্ডার টিকটিকি কোনহানকার?, তোর জন্য প্রথম দিন ই লেট হয়ে গেছে।
—- সরি বললাম তো আমি, এবার তাড়াতাড়ি চল না, তা নাহলে আরো দেরি হয়ে যাবে।
—- ঠিক আছে চল, আজকে হাতে সময় নাই বলে বাইচা গেলি, নাহলে তোরে আজকে আমি এক মগ পানিতে চুবিয়ে মারতাম?
—- ঠিক আছে, এবার চল মেরি মা।
—— চল?
তারপর ওরা ভার্সিটি চলে যায়, ওদের দেরি হয়ে গেছে বলে ওরা তাড়াতাড়ি কলেজের গেট দিয়ে ঢুকছিলো তখনই পিছনে থেকে কেউ একজন মিতুর ওড়না ধরে টান দেয়, মিতু কে তার ওড়না ধরলো তা দেখার জন্য পিছনে ফিরে দেখে একটা ছেলে ওর ওড়না হাতে ধরে ওর দিকে খুব বাজে ভাবে তাকিয়ে আছে। তা দেখে মিতু বলে
—– ওঠনাটা ছাড়ুন?
—–আরে কিউট বেবি রাগ করছো কেন।
তখন পাশ থেকে দিনা বলে ওঠে
—— রাগ করবে না তো কি করবে না তো কি করবে, আপনি ওর ওড়না ধরে রেখেছেন কেন, ওর ওড়না ছাড়ুন বলছি?
—– যদি না ছাড়ি তো কি করবে
এবার মিতু বলে ওঠে
—- সেটা দেখার আগে আবার ও ভালো ভাবে বলছি আমার ওড়না ছাড়ুন।
—– আমি ও বলছি সোনা ছাড়বো না, এরকম একটা মাল হাতে পেয়ে কি কেউ ছেড়ে দেয় বলে ও আর ওর সাথী রা হাসতে শুরু করলো।
তখনই ঠাসসসসস করে একটা চড় পড়লো ওই ছেলেটার গালে, ছেলেটা গালে হাত দিয়ে সামনে অগ্নি দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে মিতুর দিকে।
হ্যা, চড়টা মিতুই মেরেছে।
মিতুর চড় মারা দেখে আশেপাশে সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে, কারণ এই ছেলেটা টনি, একে সবাই খুব ভালো মতো চেনে, খুব বাজে একটা ছেলে, ভার্সিটির সব মেয়েরা ওর জন্য অতিষ্ঠ, কিন্তু কেউ কিছু বলতে পারে না কারণ টনি একটা বড় মাফিয়া গ্যাং এর সাথে জড়িত। একমাত্র ফারহান ছাড়া ওকে কেউ কিছু বলে ও না।
মিতুর চড় খেয়ে টনি তো খুব রেগে যায় আর বলে
—- তোর এত বড় সাহস, তুই আমার গায়ে হাত তুলেছিস, টনির গায়ে?, আমার ক্ষমতা সম্পর্কে তোর কোন ধারণা আছে, আজ দেখ আমি তোর কি অবস্থা করি বলে যেই না ওর ওড়না ধরে সম্পূর্ণ টান দিবে তখনই ফারহান এসে টনির নাক বরাবর একটা ঘুসি মারলো, আর টনি ছিটকে যেয়ে নিচে পড়লো।
একটু আগে এদিকের অবস্থা দেখে ফারহানের একজন বন্ধু ফারহান কে যেয়ে খবর দেয় যে টনি একটা মেয়েকে আবার টিস করছে, এটা শুনে ফারহান খুব রেগে যায় কারণ টনিকে এতোবার বারণ করার পরও টনি আবার এসব শুরু করেছে।
তারপর ফারহান ওখানে যায় আর ওকে মারতে শুরু করে।
টনিকে মারতে মারতে ও প্রায় আধমারা করে ফেলে, টনির অবস্থা খুব খারাপ দেখে সবাই ওকে ফারহানের কাছ থেকে জোর করে ছাড়িয়ে নেই।
টনি তো ছাড়া পেয়েই ছুট, সাথে ওর চেলা গুলো ও।
ফারহান টনি চলে যাওয়ার পর নিজের রাগ কনট্রোল করে মিতুর সামনে গিয়ে দাঁড়ায়, মিতু ওকে দেখে বলে
—– অনেক ধন্যবাদ আপনাকে, আজ আপনি না থাকলে কি যে হতো।
—– ইট’স ওকে। এট’স মাই ডিউটি?
তারপর ফারহানের সাথে কথা শেষ করে মিতু আর দিনা ক্লাসের দিকে যায়।
আর ফারহান সেতো অপলক তাকিয়ে আছে মিতুর যাওয়ার দিকে, মুহূর্তেই যেন ওর চোখ দুটো আটকে গেছে মিতুর সৌন্দর্যে। ওর চোখে মিতুকে পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দরী এবং মায়াবতী মেয়ে বলে মনে হচ্ছে। ওতো এখন মিতুর সৌন্দর্যে বিভোর হয়ে গেছে, ওর আশেপাশে কি হচ্ছে সেদিকে ওর কোন খেয়াল নেই।
এদিকে ওর বন্ধু রা সমানে ওকে ডাকছে
—– দোস্ত, ওদিকে কি দেখছো, এমন করে?
—— বিউটি( ঘোর লাগা কন্টে)
—– কোথায় বিউটি বন্ধু, আমরা তো কেউ দেখতে পাচ্ছি না, সপ্ন দেখছো বুঝি, তাই না?
বলে সবাই একসাথে হেসে উঠলো। এবার ফারহানের ঘোর কাটলো যে ও এতক্ষন কি করছিলো।
তারপর আবার ওর বন্ধু নয়ন বললো
—- কি ব্যাপার বন্ধু প্রেমে পড়লে নাকি?
নয়নের কথা শুনে ফারহান বললো
—- এরকম একটা মায়াবতী কে দেখলে যে কেউ প্রেমে পড়ে যাবে রে।
ফারহানের কথা শুনে ওর বন্ধু রোহান মাথা ঘুরে পড়ে যেতে নিলে রাকিব ওকে ধরে নেই আর বলে
—– আরে কি হলো তোর
—— আবার জিগায়, আরে এটা শুনে এটা শোন যে আমি ফারহানের কথা শুনার পরোও এহোনো বাইচা আছি কি কইরা, তুই শুনলি না ফারহান কি বললো ও নাকি প্রেমে পড়ছে, এটাও সম্ভব, ।
ওর কথা শুনে ফারহান তো রেগে ওকে মারতে শুরু করে
—– শয়তান কি বললি তুই, প্রেম কি শুধু তুই একা করতে পারিস নাকি
—– দোস্ত বিশ্বাস কর, আমি তা বলিনি, মানে তুই তো কোনো মেয়ের দিকে তাকাস ই না, আর হঠাৎ এই মেয়ের প্রেমে পড়ে গেলি হের লাইগা বলছিলাম।
——??????
—– আচ্ছা, বাদ দে তুই যে এতো দিনে কাউকে পছন্দ করেছিস এতে আমরা হগগোলেই খুব খুশি, এখন তুই শুধু বল তোর কি হেল্প লাগবো, ভাবি কে পটাতে, আমরা জান দিয়ে দেব তোর প্রেমের লাইগা?, কি বল সবাই।
—– একদম?
—–?????
তারপর ওরা ও ওদের কাজে চলে যায়।
এদিকে
মিতু ও ক্লাস শেষ করে বাড়ি চলে আসে।তারপর রাতে খেয়েদেয়ে ঘরে গিয়ে শুয়ে পড়ে, কিন্তু কিছু তেই ঘুম আসছে না। ওর ও বার বার ফারহানের কথায় মনে পড়ছে।
কি মায়বি চেহারা, কথা বলার এটিটিউট, তাকানোর ইস্টাইল ইস সবকিছু যেন একদম মন কেড়ে নেওয়ার মতো।
ও কিছুতেই পর কথা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলতে পারছে না, প্রথম দেখাতেই ফারহান যেন মিতুর মনটা কেড়ে নিয়েছে।
এসব ভাবতে ভাবতে ও একসময় ঘুমিয়ে পড়ে। তারপর সকালে উঠে আবার রেডি হয়ে নাস্তা করে ভার্সিটি চলে যায়।
.
.
চলবে……..
#আজও_ভালোবাসি_তোমায়❤
#Writer_মাহিয়া_মিতু
#Part_3
?
?
মিতু ভার্সিটি পৌঁছে দিনার জন্য ওয়েট করতে থাকে। কিছুক্ষণ পর দিনা আসলে আবারও কালকের মতো ওকে আগে একটু ইচ্ছা মতো ঝেড়ে নেয়,আর বেচারি দিনা চুপচাপ সব হজম করে নেয়?
—– কুত্তা, বিলাই, ডাইনির মা তোকে তো পিচ পিচ করে কেটে তেলাপোকার খাবার বানাতে ইচ্ছা করছে?
—–????
—— শয়তানি, আজকেও তুই দেরি কইরা আসলি কেন, জানিস কতক্ষণ ধরে এখানে একা একা বসে ওয়েট করছি আমি?
—— সরি বান্ধুপি, আর হপপে না।
ঠাসসসসস করে একটা চড় পড়লো দিনার গালে, আর দিনা গালে হাত দিয়ে অসহায় চোখে মিতুর দিকে তাকিয়ে আছে।
—– প্রতিদিন এই এক কথা বলিস, আর যদি কোনোদিন এই একই কথা বলিস না, সেদিন বুঝবি?
—- তাই বলে তুই আমারে মারলি?
—— হ,মারলাম। এবার চুপচাপ আমার সাথে চল নাহলে আবার মার খাবি।
একথা শুনে দিনা আর কোনো কথা না বলে মিতুর পিছনে পিছনে যেতে থাকে, কারণ ওর আর মার খাওয়ার কোনো ইচ্ছা নেই।
ওরা ক্লাসের দিকে যাচ্ছিলো, তার পাশেই ফারহান আর তার বন্ধু রা বসে ছিলো, ওর বন্ধু রোহান মিতুকে দেখতে পেলো।
আর ফারহান কে বললো
—- দোস্ত
—– ভাবি আসতেছে
—— কোথায়?
—— সামনে তাকা
রোহানের কথা শুনে ফারহান সামনে তাকালো আর মিতুকে দেখে আবার চোখ দুটো মিতুতে আটকে গেল, ও যেন আজ নতুন করে আবার মিতুর প্রেমে পড়ে গেলো।
ফারহান ভেবে পাচ্ছে না যে এই মেয়ের মধ্যে এমন কি আছে, ও যতবারই ওর সামনে আসছে মনে হচ্ছে আবার নতুন কোনো রুপে ওকে দেখছে, যতই দেখছে ততই যেন ওর মনের তৃষ্ণা আরোও বেড়ে যাচ্ছে।
মিতু আজকে সাদা আর হালকা গোলাপি মিক্সি একটা ত্রিপিচ পড়েছে, যাতে ওকে আরো বেশি সুন্দর লাগছে।
ফারহানকে ওভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে ওর বন্ধু রা বললো
—– দোস্ত, শুধু কি এভাবে তাকিয়েই থাকবে না তাকে মনের কথাটা বলবে, পরে দেখা গেল তুমি ওকে শুধু এভাবে দেখতেই থাকলে আর অন্য কেউ এসে তোমার পাখিকে নিয়ে উড়াল দেবে?
—– ওই, চুপ কর তোরা। ও শুধু আমার। আর কেউ যদি ওর দিকে হাত বাড়ানোর চেষ্টা করে তার এমন অবস্থা করবো না ?
ওদের কথার মাঝেই মিতু আর দিনা ক্লাসে ঢুকে গেলো
—– এই যাহহ, চলে গেল।
—— হুহহহ, বেশি বিভোর থাকলে এভাবেই চলে যাবে, তাই তো বলছি সময় থাকতে সব বলে দাও।
—— বলবো তো অবশ্যই?
তারপর ফারহান ওয়েট করতে থাকে কখন মিতুর ক্লাস শেষ হবে আর ও কখন বের হবে।
তারপর মিতু আর দিনা ও সবগুলো ক্লাস শেষ করে বেরিয়ে আসে, তখনই ফারহান এসে ওদের সামনে দাঁড়ায়।
—– হাই
—– আরে আপনি ? কেমন আছেন
—- ওয়েল, তা আপনি কেমন আছেন ?
—– আমি ও ভালো☺
—— তা মিস…, আহহ, এই দেখুন আপনার নামটাই তো শোনা হলো না।
—– হা হা, আমি মিতু, আর আপনার নাম
—– মিতু, ওয়াও নাইচ নেইম, এনিওয়ে আমি ফারহান। তো আপনারা কি বাসায় যাচ্ছেন।
—– জি
—– ওওও, তাহলে আমার সাথে যেতে পারেন আমি ড্রপ করে দিচ্ছি ?
—– নো থাংকস, আমরা যেতে পারবো, আসছি বাই?
—– ওকে,বাই?
তারপর মিতু আর দিনা যে যার বাসায় চলে গেলো।
এভাবে কিছুদিন পার হয়ে গেল আর এর মধ্যে ফারহানের সাথে মিতুর সম্পর্কটা আগের থেকে অনেকটা এগিয়ে গেছে।
আর মিতুর আর ফারহানের এমন মেলামেশা দেখে একজন জলে পুড়ে ভোম হয়ে যাচ্ছে, সে হলো টিনা। বড়োলোক বাবার মেয়ে টিনা, খুব জেদি আর অহংকারি,মিতুর সাথে সেইম ইয়ারে পড়ে, স্টুডেন্ট হিসেবে খুব একটা ভালো না, কিন্তু বাবার টাকার জোরে কোনোরকমে ক্লাসে ওঠে।
ওহো ফারহানকে ভালোবাসে, অবশ্য সেটা ওর ভালোবাসা নাকি মোহ, সেটা ওই ভালো জানে।
কিন্তু ও কিছু তেই মেনে নিতে পারছে না যে, ফারহান ওর সামনে মিতুর সাথে এভাবে মিশবে, কারণ ও ফারহান কে প্রোপজ ও করেছিলো কিন্তু ফারহান ওকে রিজেক্ট করেছিলো, এজন্য ওর জেদ টা আরো বেশি।
তাই ও কিছু তেই ফারহানের সাথে মিতুর সম্পর্ক ঠিক থাকতে দেবে না, তাই ও খুব চেষ্টা করছে ওদেরকে আলাদা করার।
সেদিন মিতুর ক্লাস শেষ করে বেরিয়ে আসে তখন ফারহানের সাথে দেখা হয়, আর ওদের কথা বলতে দেখে টিনা দূর থেকে রাগে ফুসতে থাকে।
ফারহান চলে যাওয়ার টিনা মিতুর সামনে আসে আর ওকে অনেক আজেবাজে কথা শুনায়।
—– এই যে, যতসব মিডিল ক্লাস ফ্যামেলির মেয়ে,বড়োলোকের ছেলে দেখলে লোভে চোখ চিকচিক করে ওঠে, তাই না।
—— মানে! কি বলতে চায়ছো তুমি।
—— হা হা হা, বুঝতে পারছো না, তাই না। এই যে তুমি ফারহান কে পটিয়ে ওকে বিয়ে করে ভিখারি থেকে রাজরানী হওয়ার সপ্ন দেখছো, আমরা বুঝি না ভেবেছো?
—— মুখ সামলে কথা বলো, ফারহানের সাথে আমার এমন কোন সম্পর্ক নেই যে, যারজন্য তুমি এসব বলবে।
—– নেই! তাহলে ওর সাথে এতো কিসের মেলামেশা তোমার।
—— সেটা নিশ্চয়ই তোমার কাছে কৈফিয়ত দিতে যাবো না।
—— হ্যা, তা যাবে কেন। কি জানি বাবা, হয়তো আরো না জানি কি কি করেছো, তোমাদের মতো লো ক্লাস ফ্যামেলির মেয়েরা তো এসবের জন্য নিজের শরীর টাকেও বিলিয়ে দিতে পিছপা হয় না।
টিনার কথা শুনে মিতু নিজের চোখের পানি ধরে রাখতে পারলো না, ও যেন কথা বলার শক্তি পাচ্ছি না, শুধু চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি পড়ছে।
দিনা এতক্ষণ চুপ করে থাকলেও এবার আর পারলো না
—— কি যাতা বলছো তোমরা, মিতু ওরকম মেয়ে নয়, বরং তোমরা যে কথা টা বললে না, এটা তোমাদের দ্বারা সম্ভব মিতুর নয়।
——??????
—— আর কখনো যেচে পড়ে আমাদের সাথে এসব বলতে আসলে না, সেদিন বুঝতে পারবে আমরা কি জিনিস?, চল মিতু।
বলে মিতুর হাত ধরে টেনে দিনা ওখান থেকে চলে আসে।
মিতু বাড়ি এসে কাউকে কিছু না বলে নিজের ঘরে যেয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়, আর বিছানায় শুয়ে কাঁদতে থাকে।
ও কিছু তেই মানতে পারছে না যে ওকে এসব কথা শুনতে হলো, আজ অবধি ওকে কেউ এরকম বাজে কথা বলেনি।
ও রাগে দুঃখে মনে মনে ঠিক করে নেয় যে ও আর কোনোদিন ফারহানের সাথে কথা বলবে না।
তারপর দু-তিন দিন কেটে যায়, মিতু একয় দিন কলেজে যায় নি।আর ওদিকে ফারহান মিতুকে না দেখতে পেয়ে পাগল প্রায় অবস্থা।
চারদিনের দিন মিতু দিনার সাথে ভার্সিটি যায়, মিতুকে দেখে ফারহান যেন তার দেহে প্রাণ ফিরে পায়।
ও ছুটে এসে মিতুর সামনে দাঁড়ায়। মিতু ফারহানের দিকে একবার তাকিয়ে আবার চোখ ফিরিয়ে নেই তারপর দিনার সাথে সামনের দিকে পা বাড়ায়।
কিন্তু তার আগেই ফারহান মিতুর হাত ধরে টান দিয়ে ওর সামনে এনে দাড় করাই আর বলে
—– কি হলো, আমার সাথে কথা না বলে কোথায় যাচ্ছো, আর এই তিন দিন কোথায় ছিলে,যানো তেমাকে না দেখে আমার কি অবস্থা হয়েছিল, আর আজ তুমি এসেও আমার সাথে কথা না বলে আমাকে ইগনোর করে চলে যাচ্ছো, ওয়াই ডেমেট।?
—— কেন, আপনি কে হোন আপনার যে আপনার সাথে কথা না বলে যাওয়া যাবে না, সবকিছু আপনাকে কেন বলতে যাবো আমি ?
——- মানে! মিতু কি হয়েছে তোমার। তুমি এভাবে কেন কথা বলছো আমার সাথে ?
—— তো কিভাবে কথা বলবো, দেখুন আমার হাত ছাড়ুন আর আমাকে যেতে দিন, প্লিজ ডোন্ট ডিসর্টাব মি।
—– কি! আমি তোমাকে ডিসর্টাব করছি!!!!
—— হ্যা, করছেন, এবার আমার পথ ছাড়ুন।
——- ওকে, ফাইন। আজকের পর থেকে আর কেউ তোমাকে ডিসর্টাব করবে না, এতোদিন ভাবতাম তুমি ও হয়তো আমার ফিলিংস গুলো বোঝো বাট আই ওয়াজ রং, সরি এতোদিন তোমাকে ডিসর্টাব করার জন্য। ডোন্ট ওয়ারি, আজ থেকে আর করবো না, বাই।
এই বলে ফারহান ওখান থেকে চলে আসে আর মিতুও ও কাঁদতে কাঁদতে ওখান থেকে চলে যায়, কারণ ফারহান কে কষ্ট দিয়ে ওর ও যে খুব কষ্ট হচ্ছে, কিন্তু ওর ও যে কিছু করার নেই।
ফারহান রাগে কলেজ থেকে বেরিয়ে গাড়ি নিয়ে জোরে ড্রাইভ করতে থাকে, পিছনে থেকে ওর বন্ধুরা এতো ডাকে কিন্তু ও কারো কথা শোনে না।
মিতুও বাড়ি চলে আসে, কারণ ওর পক্ষে আজ চর ক্লাস করা সম্ভব নয়।
আর এদিকে এসব দূর থেকে দেখে টিনা তো খুব খুশি হয়, ওর মুখে ভেসে ওঠে শয়তানি হাসি।
.
.
.
.
চলবে…..