জঠর
পর্বঃ২৭ শেষ
লেখনীতেঃ তাজরিয়ান খান তানভি
শরতের স্নিগ্ধ সকাল। মিষ্টি, শীতল মলয়ে আবিষ্ট দিবসের প্রথম প্রহর। নরম রোদের ঝিলিক দেওয়া হাসিতে আকণ্ঠ ডুবে আছে মেদিনী।
গোলাপী রঙের একটা ছোট্ট তুলতুলে নরম শরীর হাত- পা ছড়িয়ে খেলছে। ছোট্ট দেহটির খেলায় মত্ত হাত- পায়ের ছোড়াছুড়িতে পুলকিত পিউলী। হৃষ্ট তার অন্তরিন্দ্রিয়। অবিন্যস্ত হাসিতে আন্দোলন হচ্ছে বহমান সমীরণে। পিউলীকে থামিয়ে দেয় হৃতি। মিঠে গলায় বলল—
” এমন করে না পিউ। বাবু ব্যাথা পাবে।”
“আমি বাবু কোলে নেবো।”
হৃতির ছোট্ট হাওয়াই মিঠাইটিকে কোলে নেবার তীব্র আকাঙ্ক্ষায় দিবস কাটে পিউলীর। কিন্তু এত ছোটো শরীর পিউলী সামলাতে পারবে না বলে হৃতি বিরোধ করে। আজও তার ব্যতিক্রম হলো না। ঘণ্টাখানেক বসে থেকে নিজের ইচ্ছেকে দমাতে পারল না পিউলী। মুখ ফুটে বলেই ফেলল। হৃতি চোখে হাসল। আদুরে গলায় প্রশ্ন করল—
“বাবু নেবে?”
পিউলী ঝড়ের বেগে মাথা ঝাঁকিয়ে বলল—
“হু, হু।”
হৃতি তার ছোট্ট পরীটাকে ক্রোড়ে নিয়ে অতলান্ত মায়ায় চুমু খেলো। নিজের পাতলা অধরের স্পর্শ এঁকে দিলো তার ছোট্ট পরীটার চিবুকে। গহন হাসল বাচ্চাটি। তাকে অতি সাবধানে আসন করে বসা পিউলীর কোলে দিলো। পিউলী আপ্লুত। ঝড় শেষে সোনালী রোদ্দুরের এক চিলতে খুশির তোড় উপচে পড়ছে তার চোখে। বাচ্চাটিকে আকড়ে ধরল পিউলী। হৃতি সহাস্য অধরে বলল—
“বাবু ভালো লাগে পিউ?”
“হা।”
“তোমার বাবু চাই?”
“হা।”
হৃতির মাথায় দুষ্টমি খেলে গেল। নিম্ন স্বরে বলল—
“তোমার পাপাকে বলবে তোমার জন্য একটা বাবু নিয়ে আসতে। সুহাস আঙ্কল যেমন নিয়ে এসেছে।”
পিউলী চোখের পাল্লা বিস্তৃত করে খুশিতে আত্মহারা হয়ে বলল—
“সত্যিই?”
“হুম।”
“তুমি বাবুকে নাও। আমি পাপার কাছে যাব।”
হৃতি চটজলদি মেয়েকে নিয়ে নেয়। পিউলীর বাচ্চা মন তূরন্ত, বেসামাল, বেপরোয়া। তার গন্তব্যস্থল এখন নায়েল।
,
,
,
“ব্যাথা বেড়েছে মা?”
সায়েরা ব্যাথামিশ্রিত গলায় বললেন—
“হ্যাঁ, দুইদিন ধরে কেমন কনকন করছে পা’টা।”
সুহাস মায়ের পায়ের কাছে বসে আছে। সায়েরার বাতজনিত ব্যাথা ভীষণরকম বেড়েছে। অর্হিতা আশ্বাসিত গলায় বলল—
“তোমাকে চিন্তা করতে হবে না। আমি নায়েলকে বলেছি। সে কাল ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাবে।”
সুহাস মৃদু আপত্তি করে বলল—
“তার দরকার নেই। কাল আমার সাপ্তাহিক ছুটি। আপনি সিরিয়াল দিয়ে রাখবেন। আমি নিয়ে যাব মাকে।”
গলা খাঁকরি দিলেন নওশাদ সাহেব। রসালো গলায় বললেন—
“সায়েরা, দুই ছেলের আর তাদের বউদের সেবায় আজকাল বোধহয় তুমি একটু বেশিই অসুস্থ হয়ে যাচ্ছ!”
অর্হিতা চোরা হাসল। সুহাস চোখে হেসে নতজানু হলো। তার কাঁধে হাত রাখল অর্হিতা। মখমলে গলায় বলল—
“মা তো দুইজন। শুধু একজনের খেয়াল রাখলে হবে? ”
অপ্রগলভা হাসিতে বিস্তৃত হয় সুহাসের ঠোঁট। তার চোখ ভারী হয় নোনা জলে।
একটা সাদা রঙের বেবি স্যুট পরিয়ে তোয়ালে পেঁচিয়ে মেয়েকে কোলে তুলে নিল হৃতি। সুহাস কক্ষে প্রবেশ করেই ব্যস্ত হয়ে বলল—
“ওকে আমার কোলে দাও।”
হৃতি প্রতিবাদ করে বলল—
“না, তুমি সিগারেট খেয়ে এসেছ।”
ভ্রু কুঁচকায় সুহাস। নিজির গায়ের গন্ধ শুঁকে বলল—
“তোর নাকে সমস্যা? নাকের ডাক্তার দেখা।”
“সরো এখান থেকে।”
মসৃণ চোয়াল দৃঢ় করে সুহাস। বলল—
“তুই দেখেছিস! সিগারেট খাওয়া ছেড়ে দিয়েছি আমি।”
ভেঙচি কাটে হৃতি। চটপটে গলায় বলল—
“মিথ্যে বলছ তুমি?”
“মিথ্যে নয়। বাবুর জন্মের পর থেকে সিগারেট খাওয়া ছেড়ে দিয়েছি আমি। দে ওকে আমার কাছে।”
তুলোর পেঁজাটাকে নিজের বুকের সাথে জড়িয়ে নিল সুহাস। গোলাপি রঙের নরম হাওয়াই মিঠাই। বাচ্চাটি নির্বিঘ্নে ঘুমোচ্ছ। তার দেড় সে.মি-এর লাল ঠোঁটের মাঝে জিভের ঢগা বের করে চুকচুক করছে। তাতে কোনো শব্দ না হলে সুহাসের কানে বেজে উঠল কিছু একটা। হৃতি অনিমিখ চেয়ে রইল। মেয়েকে পেয়ে যেন জান্নাত পেল সুহাস। মেয়ের একটু কান্না তার বুকে রক্তক্ষরণ ঘটায়। কালও অতন্দ্রি রাত কাটিয়েছে সে। সারারাত মেয়েকে নিয়ে পায়চারী করেছে।
,
,
,
উদ্ভ্রান্তের মতো কিছু একটা খুঁজে চলছে নায়েল। সে ক্লান্ত, বিরক্ত, বিতৃষ্ণ। ঘণ্টাভরে খুঁজেও কাঙ্ক্ষিত বস্তুটির দেখা মিলল না। ছুটে এসে বাবার পেছনেই দাঁড়ায় পিউলী। ঝলঝমে গলায় বলল—
“পাপা, বাবু নেবো।”
নায়েল এধার ওধার হাতড়িয়ে যাচ্ছে। বেখেয়ালে বলল—
“হৃতি আনটিকে গিয়ে বলো।”
“না, আমাদের বাবুকে নেবো।”
“আমাদের বাবু কোথায় পাবো?”
“ডাক্তারের কাছ থেকে আনবে। সুহাস আঙ্কল তো ডাক্তারের কাছ থেকে বাবু এনেছে।”
“পিউসোনা,ডাক্তার আঙ্কল বাবু দেয় না। মামুনিকে গিয়ে বলো।”
“এসব কী বলছেন?”
অর্হিতার কর্কশ স্বরে সচল হয় নায়েলের মস্তিষ্ক। সে চট করে ফিরে তাকায়। মনে করার ভঙিতে চোখ পিটপিট করে বলল—
“আমি কী ভুল কিছু বলেছি? আসলে খেয়াল করতে পারিনি। কী বলছিলে পিউ?”
পিউলী অদ্ভুত দৃষ্টিতে বাবার দিকে চাইল। অর্হিতা মিষ্টি করে আদেশ করল—
“পিউ সোনা, দুধ রেখে এসেছি। ফিনিশ করে এসো।”
“ওকে মামুনি।”
অর্হিতা মেকি রাগ দেখিয়ে বলল—
“এসব কী বলছিলেন ওকে?”
ব্রীড়া চাহনিতে মিইয়ে গলায় বলল নায়েল—
“আসলে আমি খেয়াল করিনি। কী এক ছন্দ দিয়েছেন মিলাতেই তো পারছি না।”
“আপনি পারবেনও না। দুটো লাইন মিলাতে পারে না, সে না কি আবার হায়ার ম্যাথে টপ করেছে। এই আপনি টুকলি করে টপ করেননি তো?”
নায়েল চিবুক গুজ করে বলল—
“প্লিজ এবার তো বলুন।”
“বলব না। মাথাভারী গিরগিটি! যতক্ষণ পুরো টাস্ক কমপ্লিট না হচ্ছে ততদিন আমাদের বিছানা আলাদা।”
“আরে এই, এই শুনুন!”
শুনল না অর্হিতা। গুটগুট করে নায়েলের কোনো তোয়াক্কা না করেই চলে গেল। নায়েল বিধ্বস্ত। তাকে একটা টাস্ক দেওয়া হয়েছে। সেইটা কমপ্লিট করতে পারলেই সারপ্রাইজ। কিন্তু বিধিবাম! নায়েল কিছুতেই অর্হিতার দেওয়া কবিতাংশের মানে বের করতে পারছে না।
” একাকিত্বের সঙ্গি, হয়ে যুগলবন্ধি
বর্ষণের সন্ধ্যায়, চায়ে ওড়া ধোঁয়ায়
কালো রঙের ছাপ, হয়ে জীবনের ধাপ
চলতে শেখায় সূদুর পথ, হয়ে সহচর।”
নায়েলের মাথা ঝিম ধরে যায়। একটা মিলাতে পারলে তো আরেকটা মিলে না। সব এলোমেলো করে ফেলেছে ঘরের। হঠাৎ অর্হিতার বইয়ের দিকে নজর পড়ল নায়েলের। তারপর চিরকুটটি আবার পড়ল। হাসি খেলে খেল তার অধরে।
মানুষের একাকিত্বের সঙ্গি বই। বই পড়তে গেলে অবশ্যই তার সাথে কানেক্টেড হওয়ার প্রয়োজন, না হলে আসল স্বাদ আস্বাদন করা যায় না। কালো রঙের সেই শব্দগুলোই জীবনে প্রতিটি বাড়ন্ত ধাপে আমাদের সমাজ, সভ্যতা, সংস্কৃতির সাথে পরিচয় করায়। দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে বই আমাদের এক অপ্রতিরোধ্য সহচর।
নায়েল দৌড়ে গিয়ে অর্হিতার বই হাতাতে থাকে। কিছু একটা তো সে পাবেই। এবং পেয়েও যায়। তিনটি অক্ষর। একে অপরের সাথে অনুস্যূত শব্দটি আরেকবার ধাক্কা লাগাল নায়েলের মস্তিষ্কের নিউরণে। জঠর!
এইটা আবার কী? নায়েল সেই শব্দের অর্থ জানে। কিন্তু এর সাথে সারপ্রাইজের কী সম্পর্ক তা তার বোধগম্য হলো না। জঠর লেখা কাগজটির সাথে আরেকটা ছোট্ট চিরকুট আছে। তাতে লেখা–
“ধন্য কন্যা ধন্য, রূপে লাবণ্য
তোমাতেই পূর্ণ, তুমিবিহীন শূন্য।”
নায়েলের সত্যিই এবার রাগ হলো। এই মেয়েটা তাকে জ্বালিয়ে শেষ করবে। এত টেনশন তো সে তার ভাইবা পরীক্ষার দিনও করেনি। নায়েল বাম হাতের তর্জনী দিয়ে কপাল চুলকাতে থাকে। ভাবতে থাকে, যাই হোক মেয়েলী জিনিস হবে। নায়েল ঘরময় হাঁটতে থাকে। আর ভাবতে থাকে অর্হিতার ব্যবহৃত জিনিসগুলোকে। বিদ্যুৎ চমকাল তার চোখের তারায়। কসমেটিকস!
কোনো মেয়েকে লাবণ্যময়ী করে তোলে বিভিন্ন প্রসাধনীর নিঁখুত ব্যবহার। একজন নারীকে পার্ফেক্ট করে তোলে।
নায়েল কাবার্ড খুলে অর্হিতার প্রসাধনীর ড্রয়ারের চিরুনি তল্লাশি চালায়। মিলে যায় তা সে খুঁজছিল। এখানেও তিনটি অক্ষর। মাতৃত্ব! অধর ছড়িয়ে মুক্ত শ্বাস ফেলে নায়েল। আরও একটা চিরকুট। তাতে গোটা গোটা অক্ষরে লেখা—
” ক্লান্ত শরীর, শ্রান্ত মন
বিষাদ তরী টলমল,
শিয়র ছুঁইয়ে নরম মন
দীর্ঘ রজনী, রঙিন ভোর।”
নায়েলের মাথা চক্কর দিয়ে ওঠল। কপালের কুঞ্চনে এবার বিরক্তি। টনটন করছে শিরা। নায়েল শব্দগুলো আওড়াল। জঠর, মাতৃত্ব!
গর্ভাশয়, মা। আচমকা খুশির হাসিতে ঝনঝনিয়ে উঠল নায়েলের দীর্ঘকায়া। তার দম আটকে আসছে। মাথার উপর দ্বিগুন হারে প্রেশার ফেলছে নায়েল। সে চিরকুটটি আবার দেখল। বারবার আওড়াতে থাকল বাক্যগুলো। আঁধার ফুঁড়ে উঠল রুপোলি চাঁদ। টেনিস বলের মতো ড্রপ খেলে গেল একটা শব্দ। বালিশ!
সারা দিনের ক্লান্ত দেহের একমাত্র প্রশান্তি একটা দীর্ঘ ঘুম। সেই ঘুমের জন্য প্রয়োজন একটা নরম বালিশ। এক ঘুমে রাত কাটিয়ে ভোর।
নায়েলে শশব্যস্ত হয়ে তাদের শিয়রের বালিশগুলো সরিয়ে ফেলে। সেখানে সাদা রঙের একটা খাম। নায়েল দ্রুত হাতে সমুদ্রসম উচ্ছ্বাস নিয়ে খামটি খুলে ফেলে। তাতে প্রেগন্যান্সির কিট রাখা। সে খুশিতে আত্মহারা। তার চোখের মনির সামনে দুটো লাল রঙের দাগ জ্বলজ্বলে। নায়েল অধৈর্য হয়ে নিচে নেমে আসে। অর্হিতাকে খুঁজতে থাকে। নায়েলের মোবাইল বেজে ওঠে। রিসিভ করতেই ওপাশের স্নিগ্ধ, মনোহারী কণ্ঠ–
“আমি ছাদে।”
নায়েল সময় ব্যয় করল না। অর্হিতার নীরব সম্মতি তাকে অদম্য,দুর্দমনীয় করে তুলল। ছাদে এসেই অর্হিতাকে ঝাপটে ধরে সে। অর্হিতা অবাক। নায়েলের পুরো দেহে কম্পন শুরু হয়েছে। অর্হিতা বিচলিত গলায় বলল—
“আপনি ঠিক আছেন নায়েল?”
নায়েল কোনো কথা বলল না। সূর্য রশ্মিও যেন লজ্জা পাচ্ছে তার খুশিতে। সূর্যের আলো নিষ্প্রভ হয়েছে। বেশ কিছুসময় স্থির থেকে সোজা হয় নায়েল। দিনের ম্লান আলোতেও তার চোখের জলকণা চিকচিক করছে। অর্হিতা মুচকি হেসে বলল—
‘এত ইমোশনাল হচ্ছেন কেন?”
নায়েল ঝপ করেই আবার জড়িয়ে ধরে অর্হিতাকে। দূরের পাখিরা কিচিরমিচির শুরু করেছে। আকাশের ভাঁজে লুকিয়ে থাকা মেঘরাশি চুপি চুপি কথা বলছে। তারা শরিক হচ্ছে নায়েলের খুশিতে। আচমকা আকাশে অসিত জলদের আনাগোনা শুরু হলো। প্রভঞ্জনে শুরু হলো উত্তেজনা। কিন্তু তাকে হার মানিয়ে দিলো নায়েলে হৃৎপ্রকোষ্ঠের প্রমত্তা খুশি। বাবা হওয়ার খুশি!
” ধন্যবাদ,ধন্যবাদ মিসেস অর্হিতা।”
আকাশ ছেয়ে গেল কালো মেঘে। উত্তাল হলো সমীরণ। তাতে শীতলতার সাথে পাগলামি। সেই ঝড়ো হাওয়ায় স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে রইল দুই মানব-মানবী। একে অন্যকে পূর্ণ করার প্রাণাবেগ যেন শেষ হওয়ার নয়। ঝড়ো বাতাসে অর্হিতার চুল উড়ে তার মুখ ঢেকে ফেলল। সেই চুল আলতো হাতে সরিয়ে দিলো নায়েল। আকাশের বুকে ব্যবচ্ছেদ ঘটিয়ে শুরু হলো হিমশীতল বর্ষণ। ভেজা শরীরে একে অন্যের মোহে আটকে গেছে নায়েল-অর্হিতা। নিজেদের দূরত্ব ঘুচিয়ে নেয় নায়েল। অর্হিতার ভেজা ওষ্ঠাধরে গাঢ় স্পর্শ আঁকে। বৃষ্টির ফোটায় নয়, স্বামীর আদুরে স্পর্শে কেঁপে উঠে অর্হিতার দেহ। কাতর চোখ জলসিক্ত। নায়েল বর্ষন বিদীর্ণ করে তার ভরাট পুরুষালী গলায় বলল—
“ধন্যবাদ, আমার পিউলীকে আপন করে নেওয়ার জন্য। ধন্যবাদ, আমার পিউর মা হওয়ার জন্য। ধন্যবাদ, নিজ জঠরে জন্ম না নেওয়া সত্ত্বেও পিউকে তার মাতৃস্নেহে সিক্ত করার জন্য। ধন্যবাদ আমার পরিবারকে ছায়া দেওয়ার জন্য। ধন্যবাদ, আমার প্রতিটি নীরাশ আশায় ভরসা হওয়ার জন্য। ধন্যবাদ, শুধু শারীরিক নয় আমাকে মানসিকভাবেও একজন পূর্ণ পুরুষে পরিণত করার জন্য। ধন্যবাদ, এই গিরগিটির সন্তানকে নিজের জঠরে ধারণ করার জন্য।”
অর্হিতা লাজুক হাসে। নায়েলের মাথা গলিয়ে অধর ছুঁইয়ে চিবুক বেয়ে পড়ছে শ্রাবণ ধারা। শরতের শ্রাবণ!
স্বামীর বুকে আস্ত কিল বসায় অর্হিতা। নায়েলের বুকে মুখ গুঁজে বলল—
“ভালোবাসি।”
নায়েল দুই বাহুর বন্ধনে আবদ্ধ করে অর্হিতাকে। অর্হিতার জঠরে বেড়ে উঠা সেই ভ্রুণ মাতৃগর্ভেই বাবা -মায়ের প্রেম দেখছে। এক বৃষ্টিস্নাত শরতের প্রেম!
সমাপ্ত