গল্পঃ বেস্টফ্রেন্ড_থেকে_স্বামী_স্ত্রী পর্বঃ ৪র্থ শেষ_পর্ব

0
2238

গল্পঃ বেস্টফ্রেন্ড_থেকে_স্বামী_স্ত্রী
পর্বঃ ৪র্থ শেষ_পর্ব
লেখাঃ MD_Sumon_Kobir

যখনই সুমন জানতে পারে ইরিনার বাবাই তার হারিয়ে যাওয়া ছোট চাচা। তখনই সুমন বেড থেকে নেমে দাঁড়ায়।ওকে দেখে মনে হচ্ছে এখনই হাসপাতাল থেকে দৌড়ে পালাবে।কিন্তু এমন কিছুই করলো না।
সুমন আস্তে আস্তে ইরিনার আব্বার কাছে যেতে থাকে।কাছে গিয়ে তাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দেয়। ব্যক্ত করতে থাকে মনে জমে থাকা হাজার শত অভিমান।

সুমনঃ এতো দিন কোথায় ছিলেন।আমাদের ছেড়ে।
ইরিনার বাবা সুমনের কথার উত্তর না দিয়ে সুমনকে জড়িয়ে ধরে কাদতে থাকলেন।সাথে ইরিনাও কাদছে।এটা যে কোনো দুঃখের কান্না নয় এটা চির সুখের কান্না।কান্না থামিয়ে সুমন বলে,,,,,,,
সুমনঃ আর কোনো দিন ছেড়ে যাবেন না তো।
ইরিনার বাবাঃ নারে আর ছেড়ে যাবো না।সুমন তোর মনে আছে একদিন তুই ইরিনার সাথে খেলা করার সময় ইরিনার হাত কেটে দিয়েছিলি।
ইরিনাঃ কি….সুমনের জন্য আমার হাতে এই দাগ হয়ে ছিল।

এই বলেই ইরিনা সুমনকে মারতে লাগলো। বলতে লাগলো,,,,
ইরিনাঃ তুমি খুব খারাপ,আমাকে শুধু কষ্ট দাও।
সুমনঃ আমি কি ইচ্ছা করে কেটে দিয়েছিলাম।
ইরিনাঃ তা কি জানি,,,
সুমনঃ হুম বুঝেছি,,,

বলেই সুমন ইরিনার হাত ধরে টান দেয়। ইরিনা সাথে সাথে সুমনের বুকে এসে পড়ে।ইরিনা লজ্জায় সুমনের বুকের মাঝে মুখ লুকিয়ে নেয়।
ওদের কাহিনী দেখে ইরিনার বাবা বলে,,,,,,,
ইরিনার বাবাঃ দেখেছেন ভাবি, কেমন প্রেম ওদের মধ্যে।
সুমনের মাঃ হ্যা দেখছি তো।

তখনি ইরিনার বুক মাথা উঠিয়ে বলে,,,,
ইরিনাঃ আমি কিন্তু আগেই বলেছি আমরা শুধ মাত্র বেস্টফ্রেন্ড।
সুমনঃ হ্যা সেটাই। আমরা বন্ধু ছিলাম বন্ধু আছি বন্ধু থাকবো।
ইরিনাঃ হ্যা ঠিক বলেছিস।
সুমনঃ হ্যা,কিন্তু তুই এতো দিন তোর হাতের এই দাগটার কথা আমাকে বলিস নাই কেনো?
ইরিনাঃ আমি জানতাম নাকি তুই আমার জানেমান।
সুমনঃ জানিস না বলে কি দেখানো যায় না।
ইরিনার বাবাঃ অনেক ঝগড়া করেছো এবার থামো।
সুমনের মাঃ যা করছে করতে দাও।ওরাই তো করবে।
ইরিনার বাবাঃ হ্যা ভাবি সুমনকে কখন রিলিস করে দেবে।
সুমনের মাঃ কাল সকালে দিতে চেয়েছে।
ইরিনার বাবাঃ তাহলে আমি এখন আসি।কাল এসে আপনাদের নিয়ে যাবো।
সুমনের মাঃ যাও তবে একটা কথা, ইরিনার মাকে এখন কিছু জানিও না।
ইরিনার বাবাঃ জ্বি ভাবি।সুমন ইরিনা আমি আসি তাহলে।

ইরিনার বাবা চলে গেলো।ইরিনা সুমন আর সুমনের মা আরো কিছু ক্ষন গল্প করলো।রাতের খাবার আনার জন্য সুমনের মা চলে গেলো।ইরিনা আর সুমন একসাথে বসে খুনশুটি করছে। তখনি ডাক্তার এসে বলেন,,,,,,,,, কি ব্যাপার তোমাদের।
সুমনঃ হ্যা আজ আমি আমার চাচাকে খুজে পেয়েছি।
ডাক্তারঃ ohh good.আচ্ছা দেখি তোমার কি অবস্থা।
ডাক্তার কিছুখন দেখে
হুম তুমি তো দেখি এখন পুরো সুস্থ।
সুমনঃ হ্যা সব এই পাগলির জন্য।
ইরিনাঃ সত্যি ডাক্তার সুমন ভালো হয়ে গেছে।
ডাক্তারঃ হ্যা সুমন এখন পুরো সুস্থ।চাইলে কালই নিয়ে যেতে পারো।
ইরিনাঃ ধন্যবাদ ডাক্তার আঙ্কেল।
ডাক্তারঃ ধন্যবাদ তোমাদেরকেও।

ডাক্তার চলে গেছে।এরি মধ্যে সুমনের মা রাতের খাবার নিয়ে হাজির।রাতের খাবার খেয়ে সুমন আর ইরিনা আরো কিছুখন দুষ্টুমি করে সুয়ে পড়লো।সকালে ঘুম থেকে উঠে। নাস্তা করে ইরিনা বাইরে এসে দেখে ইরিনার বাবা ডাক্তারের সাথে কথা বলছে।ইরিনা তাঁর কাছে গিয়ে বলে,,,,,,,আব্বু কখন এসেছেন?
ইরিনার বাবাঃ এই তো এসেই ডাক্তারের সাথে কথা বলছিলাম। আমরা এখনি চলে যাবো।ডাক্তার রিলিজ করে দিয়েছেন।
ইরিনাঃ সত্যি আমরা আজ বাড়ি যাবো।
ইরিনার বাবাঃ হ্যা এখন না গেলে তোমার আম্মু আবার এখানে চলে আসবে।
সুমনের মাঃ আসাদ তুমি এতো সকালে।
ইরিনার বাবাঃ সকাল কোথায় পাচ্ছেন। এখন ১০ টার বেশি বেজে গেছে।আপনি তাড়াতাড়ি গুছিয়ে নেন।আমরা এখনি চলে যাবো।
সুমনের মাঃ ঠিক আছে। আমি এখনি গুছিয়ে নিচ্ছি।
ইরিনার বাবাঃ মা ইরিনা তুমি তোমার বড় মাকে একটু সাহায্য করো।

সুমন ইরিনা এক সাথে গুছিয়ে বেরিয়ে পড়লো।ইরিনার বাবা হাসপাতালের বিল পরিশোধ করে দিয়েছে। ইরিনা সুমন সুমনের মা ইরিনার বাবা সবাই একসাথে গাড়িতে করে সোজা ইরিনাদের বাড়িতে চলে আসলো।গাড়ি থেকে নেমে ইরিনা আর সুমন আগে ভিতরে চলে গেলো।পরে সুমনের মা আর ইরিনার বাবা ভিতরে গেলো।ইরিনার মা কিছু বুঝে উঠার আগেই ইরিনার বাবা সুমনের মাকে আড়াল করে ফেললো।তার পর ইরিনার মাকে ডাক দিয়ে বলে,,,,,,,তোমার জন্য আজ একটা সারপ্রাইজ আছে।
ইরিনার মাঃ কি সারপ্রাইজ দেবে তা আমি ভালো করেই জানি।সুমন আর ইরিনা এসেছে তাই তো।

তখনি সুমন বলে উঠে,,,, ,,,,

সুমনঃ না ছোট আম্মু।
ইরিনার মাঃ কে তোমার ছোট আম্মু?
সুমনঃ আপনি।
ইরিনার মাঃ আমি তো কিছুই বুঝতে পারছিনা।

তখনি সুমনের মা বেরিয়ে আসে।
ইরিনার মা সুমনের মাকে দেখেই থমকে দাঁড়িয়ে গেলো। যেন কথা বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছে। কিছু সময় নিরব থাকার পর ইরিনার বাবা ইরিনার মাকে ডাক দেয়। তখনি ইরিনার মা বাস্তবে ফেরে।সাথে সাথে ইরিনার আম্মু সুমনের আম্মুকে জড়িয়ে ধরে বলে,,,,,,,,,বড় আপা আপনি। এতো দিন কোথায় ছিলেন।
সুমনের মাঃ ছিলাম এই শহরেই। তা ছোট কেমন আছিস।
ইরিনার মাঃ ভালো কি ভাবে থাকি বলেন আপা।আপনি ছিলেন আমাদের মাথার ছাদ।আর সেই আপনি ছিলেন আমাদের থেকে দুরে।এই তুমি বড় আপাকে কোথায় পেয়েছো। (ইরিনার বাবার কাছে গিয়ে)

কথা বলতে বলতে সুমনের দিকে ইরিনার মায়ের চোখ পড়ে। সাথে সাথে ইরিনার মা সুমনের কাছে যায় এবং সুমনকে কাছে নিয়ে বলে,,,,,,,,,আই বাবা বুকে আই। কত দিন তোকে আদর করি নি।

ইরিনার মা সুমনকে জড়িয়ে ধরে কাদছে।
কিছুখন কান্না কাটি করে সবায় গল্পে মেতে উঠেছে। ইরিনা আর সুমন তো সারাখন দুষ্টুমিতে মেতে থাকে। যেমন দুষ্টমি করতো ছোট বেলায়। নতুন করে যেন তারা আবার বড় থেকে ছোট হয়েছে।এদিকে দুপুর গড়িয়ে বিকেল হয়ে গেছে।বিকেলে সবাই একসাথে ঘুরতে বের হয়েছে।সুমন আর ইরিনার দুষ্টুমি দেখে মনে হচ্ছে ওদের বয়স ৬ বা ৭ হবে।

ওদের দুষ্টুমি দেখে সুমনের মা বলে,,,,,,,,সুমন ইরিনা তোমরা কিন্তু এখন আর সেই আগের দিনের মতো ছোট নও।এখন তোমরা ক্লাস নাইন এ পড়।লোকে দেখলে খারাপ ভাববে।
ইরিনাঃ বড় আম্মু বন্ধুত্ব কখনো বড় হয় না।আর সুমন তো আমার ভাই। লোকে কি বললো তা নিয়ে আমরা ভাবি না।তাই না সুমন।
সুমনঃ হ্যা ঠিক বলেছিস।তবে মায়ের কথাটাও কিন্তু ফেলে দেওয়া যায় না।
ইরিনার মাঃ বড় আপা আপনি কেন ওদের বকাঝকা করছেন।সুমন ইরিনা যদি বন্ধু না হতো তাহলে আপনাদের খোজ পাওয়া যেতো কি না তা ছিল অনিশ্চিত।সুমন ইরিনা ছোট থেকে বলতো তারা দুজন বন্ধু।আর বন্ধু হয়েই থাকবে।
সুমনের মাঃ হ্যা রে ছোট আমি তো ভুলেই গেছি। সুমন ইরিনা দুজন দুজনের বন্ধু।
ইরিনার বাবাঃ আর বন্ধুরা তো একটু দুষ্টুমি করবেই।আর শুধু বন্ধু হলেও কথা ছিল।কিন্তু ওরা দুজন দুজনের চিরদিনের বন্ধু।
ইরিনাঃ সুমন আমার brather and best friend..so আমরা একসাথে ছিলাম আছি আর সারাজীবন একসাথেই থাকবো। তাইনা সুমন।
সুমনঃ হ্যা ঠিক বলেছিস।

এভাবেই কেটে যেতে লাগলো সুমন ইরিনারদের জীবন।সুমন আর ইরিনা একই কলেজ থেকে ইন্টার পাশ করে।এবং একি ভার্সিটিতে পড়ার সুযোগ পায়।ভার্সিটিতে ভর্তি হওয়ার প্রায় প্রথম দিকে।এমন সময় ইরিনা মা সুমনের মাকে প্রস্তাব দেয় সুমন আর ইরিনার বিয়ের।

সুমনের মা বলে সুমন আর ইরিনা যদি রাজী থাকে তাহলে আমার আপত্তি নেই।সুমন ইরিনা বাড়ি আসলে সুমন আর ইরিনাকে সামনে নিয়ে সুমনের মা আর ইরিনার মা একসাথে সুমন ইরিনাকে তাদের বিয়ের কথা বলে।উত্তরে সুমন ইরিনা একি কথা বলে।

সুমনঃ মা ছোট আম্মু আমরা আগেও বলেছি এখনো বলছি আমরা বন্ধু, বন্ধু হয়েই থাকবো।
ইরিনাঃ আমি জানতাম আপনারা আমাদের বন্ধু হয়ে একসাথে থাকতে দেবেন না।
(এই বলে সুমন ইরিনা রাগ করে চলে গেলো।)

ইরিনার বাবাঃ আমি বাইরে থেকে সব শুনলাম। তবে ওদের এই ভাবে বলা ঠিক হয় নি।ওদের বোঝাতে হবে।
ইরিনার মাঃ হ্যা তুমি ওদের একটু বোঝাও।
ইরিনার বাবাঃ ঠিক আছে রাতে ওদের সাথে কথা বলো।

এদিকে রাগ করে ইরিনা সুমন দুপুরের খাবার খাইনি।সুমনকে তো বাড়ি পাওয়া যাচ্ছে না।ইরিনা ঘরের দরজা দিয়ে রেখেছে খোলার নাম নেই।ওদের এমন পাগলামি দেখে বাড়ির সবাই টেনশনে পড়ে গেছে। প্রায় সন্ধার দিকে ইরিনা ঘরের দরজা খুলে সুমনকে ডাকতে থাকে।কিন্তু ডাকের উত্তর পাই না।সুমনের ঘরে গিয়ে দেখে সুমন ঘরে নেই।ভাবে নিচে আছে।কিন্তু নিচেও নেই।সুমনকে দেখতে না পেয়ে ইরিনার সে কি কান্ড।একদম পাগলের মতো করছে। উপায় না পেয়ে ইরিনার বাবা সুমনকে খুজতে বের হয়।কিন্তু কোথাও পায় না।হতাস হয়ে রাস্তার পাশে বসে পড়ে আঃ আসাদ সাহেব। মাথা নিচু করে কান্না করছে।এমন সময় কাধে কারোর হাতের স্পর্শ পেয়ে মাথা উচু করে।দেখে সুমন দাড়িয়ে আছে। সুমনকে দেখা মাত্রই হাত ধরে টানতে টানতে বাড়ি নিয়ে আসে। বাড়ির অবস্থা দেখে কিছু বলার সাহস পাচ্ছে না। ইরিনার বাবা বলে,,,,,এই সব ইরিনা করেছে তোকে দেখতে না পেয়ে।
সুমনঃ কোথায় ও।
সুমনের মাঃ তা জেনে তোমার কি লাভ।
ইরিনার বাবাঃ ভাবি ওকে কেনো বকা দিচ্ছেন।ওর তো কোনো দোষ নেয়। সুমন তুই যা ও ওর রুমে আছে।
সুমন দৌড়ে গেলো ইরিনার কাছে। দরজা খুলে ভেতরে ঢুকতে দেরি কিন্তু সুমনকে জড়িয়ে ধরতে দেরি হয়নি।

ইরিনাকে নিজ থেকে আলাদা করে বলে,,,,,,,, এই পাগলি আমি একেবারে হারিয়ে গেছি নাকি।আমি তো পড়াতে গিয়েছিলাম। কি করেছিস এসব।
ইরিনাঃ যা করেছি ভালোই করেছি।তুই জানিস না তোকে না দেখে আমি থাকতে পারি না।
সুমনঃ জানি তো কিন্তু পড়াতে তো যেতে হবে তাই না।
ইরিনাঃ আমাকে বলে গেলে কি হতো।
সুমনঃ আমি কি জানি নাকি যে আমার পাগলিটা এমন করবে।

তখনি ইরিনার বাবা এসে বলে,,,,,,দুপুরের খাবার তো দুজনের একজনও খাও নাই।চলো খেতে হবে।
সুমনঃ হ্যা চলেন।
সুমন ইরিনাকে নিয়ে খাবার টেবিলে গেলো।
ইরিনার মা খাবার বেড়ে দিয়েছে।কিন্তু দুজনের একজনও খাচ্ছে না।
এই দেখে সুমনের মা বলে,,,,,তোরা খাচ্ছিস না কেনো?
ইরিনাঃ সুমনকে খাইয়ে দিতে বলেন।
সুমনের মাঃ সুমন ইরিনাকে খাইয়ে দে।
সুমনঃ পারবো না।
ইরিনাঃ তাহলে আমি খাবো না।

এই বলে ইরিনা উঠে চলে যাবে।আর তখনি সুমন ইরিনার হাত ধরে বলে,,,,,,,,আরে আমি তো মজা করে বলেছি। চলে যাচ্ছিস কেনো।
ইরিনাঃ নে তাহলে খাইয়ে দে।
সুমনঃ হ্যা হা কর,,,

সুমন ইরিনাকে আর ইরিনা সুমনকে খাইয়ে দিলো।এর মধ্যে বাকিরা খেয়ে নিলো।
খাওয়া শেষে সুমন ইরিনা ওদের রুমে চলে গেলো। সুমনের মা আর ইরিনার বাবা-মা নিচে বসে গল্প করছে।কথায় কথায় সুমন আর ইরিনার বিয়ের প্রসঙ্গ উঠে।কিন্তু কেউ বুঝতে পারছে না। কিভাবে ওদের রাজি করাবে।

সুমনের মা বলে,,,,,,,,আসাদ তুমি একটু ওদের সাথে কথা বলো।দেখো তুমি রাজি করাতে পারো কিনা।
ইরিনার মাঃ হ্যা তুমি বললে হয় তো রাজি হবে।কিন্তু আজ বলা হয় তো ঠিক হবে না।আজ মেয়েটা যা করলো। মাত্র দুই তিন ঘন্টার ব্যবধান।
ইরিনার বাবাঃ এই তোমার মাথায় তো ভালো বুদ্ধি আছে।
ইরিনার মাঃ মানে, কি বলতে চাও তুমি।
ইরিনার বাবাঃ তোমরা বসো আমি আসছি।

এইবলে ইরিনার রুমে চলে ফেলো আঃ আসাদ সাহেব।
ইরিনার বাবাঃ মা ইরিনা রুমে আছিস।
ইরিনাঃ হ্যা বাবা কিছু বলবেন।
ইরিনার বাবা সুমনের রুমে আই তো একটু।
ইরিনাঃ হ্যা আসছি।
ইরিনার বাবার আগে ইরিনা সুমনের রুমে গেলো।
কিন্তু রুমের দরজা বন্ধ। ইরিনা সুমনে ডাক দিলো।
সুমন রুমের দরজা খুলে দিলো। আর বললো ডাকছিস কেন।
ইরিনাঃ বাবা কিছু বলবে মনে হয়।
সুমনঃ ছোট বাবা কি বলবে।
ইরিনাঃ জানি না। বাবা আসলে বোঝা যাবে।
সুমনঃ হ্যা কিন্তু ছোট বাবা কয়।
ইরিনার বাবাঃ এই তো আসছি। তোমরা বসো।

ইরিনার বাবা কিছু সময় পরে আসলো।এবং বললো,,,,,,,,আচ্ছা সুমন ইরিনা তোমরা কি কোনো আলোচনা করেছো।
সুমনঃ কিসের আলোচনা।
ইরিনার বাবাঃ তোমাদের বিয়ের।
ইরিনাঃ বাবা আমরা তো বলে দিয়েছি।আমরা বন্ধু, বন্ধু হয়েই থাকবো।

ইরিনার বাবাঃ সে না হয় বন্ধু হয়ে এখন আছো। কিন্তু কিছু দিন পরে কি আর থাকতে পারবে।

ইরিনাঃ মানে, কি বলতে চান আপনি।

ইরিনার বাবাঃ মানে হলো তোমরা যদি দুজন দুজনের বন্ধু হয়ে সারাজীবন থাকতে চাও তাহলে তোমাদের বিয়ে করতে হবে।তাহলে একসাথে থাকতে পারবে।আর যদি বিয়ে না করো তাহলে তোমরা একসাথে থাকতে পারবে না।একদিন দুজন চিরতরে আলাদা হয়ে যাবে।সেদিন ভাবতেও পারবে না এমন কি করে হলো।

ইরিনাঃ কেনো আলাদা হয়ে যাবো। আমরা তো কেউ কাউকে কোনো দিন যেড়ে যাবো না।

ইরিনার বাবাঃ দেখো মা এখন এই কথা বলতে পারছো খুব সহজে।কিন্তু একটু ভেবে দেখো যখন তুমি সুমনকে ছেড়ে অন্যের ঘরে প্রবেশ করবে তখন কি তুমি একা হয়ে যাবে না। তখন তো তোমরা চিরোদিনের জন্য আলাদা হয়ে যাবে। আজ মাত্র তিন ঘন্টার ব্যাবধানে যা করেছো। ভেবে দেখো তো তখন কি করবে। তাই আমি বলি কি, তোমরা দুজন আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নাও কি করবা। চিরোদিনের জন্য একসাথে থাকবে নাকি দুজন দুই প্রান্তে চলে যাবে। আমি আসি এখন।

ইরিনাঃ বাবা আমি কখনো এমন গভির ভাবে ভাবে দেখি নাই।আর সুমনকে যে আমি একদিন হারিয়ে ফেলবো তা ছিল আমার কল্পনার বাইরে। আমি এই বিয়েতে রাজি।সুমন তুই কি বলিস।
সুমনঃ ছোট বাবা ইরিনা যেখানে রাজি সেখানে আমার আর কিই বা বলার থাকে। আমিও রাজি।তবে একটা সর্ত আছে।
ইরিনাঃ আমাদের বিয়ে হচ্ছে এটাই শেষ কথা। কোনো শর্ত মানবো না।
সুমনঃ আচ্ছা মেরি জান ইরু-পাখি কোনো শর্ত দিচ্ছি না।খুশি এবার।

অবশেষে ইরিনা আর সুমনের বিয়ে হয়ে গেলো। তবুও ওরা বৈবাহিক জীবনে বন্ধুর মতো করে একে অন্যের সুখ দুঃখ ভাগাভাগী করে নিচ্ছে।তাদের সংসারে নেই কোনো দুঃখের ছাপ।দেখতে দেখতে ইরিনার কোল জুড়ে এসেছে একজন নব অতিথি।যাকে নিয়ে শুরু হলো সুমন ইরিনার নতুন জীবন।

সমাপ্তি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here