অবুঝ_বউ,পর্ব ০৬

0
2146

অবুঝ_বউ,পর্ব ০৬
আশিক

মেয়েটা এত রাতে

কাদতেছে কেন?
তোমায় কে বলল কাদতেছে?
বলতে হবে কেন তিথিই ত কাদতে কাদতে
আমায় ডাকতেছিল, ও নাকি তকে কি
বলতেচাইছিল তুই ওর সাথে খারাপ
ব্যবহার করলি কেন?
বাবা ওর বকর বকর শুনে কি করব বল,
সকালে একটা মিটিং আছে আর এত রাতে
ফোন দিছে তাই রাগে বলছি,(আমি)
তর মিটিং এর গুল্লি মারি, তিথি মা নে তুই
আমার সামনে বল, আর সাউন্ড বারিয়েই
দিলাম একটা গালা গালি যদি করছস তরে
চট্টগ্রামে গিয়েই জুতা দিয়ে বাড়েইমু, বল
মা বল,
(আল্লাহ ইজ্জত বাচাও,আল্লাহ ইজ্জত
বাচাও,)
আপনাকে ছাড়া আমি থাকতে পারবনা
আমি আপনাকে অনেক ভালবাসি রাখি হে
আল্লাহাফেজ।
বাবাআ, বাবাআ, বাবা আপনে কি আছেন?
(আমি)
টুট টুট টুট(লাইনটা কেটে গেল)
আমিও সুন্দর করে ঘুমিয়ে পরলাম,
পরদিন সারাদিন অফিস করে এসে খাওয়া
দাওয়া করে ঘুমাতে যাব তখনই তিথির
ফোন,
হ্যালো জান উম্মা চ্চু চ্চু চ্চু চ্চু চ্চু
তিথি এই গুলা কি?(
আমি)
আমার এক বান্ধবি বলেছে এমন করলে
নাকি আপনি খুশি হবেন

পর্ব-৭
তিথি এই গুলা কি?(আমি)
আমার এক বান্ধবি বলেছে এমন করলে
নাকি আপনি খুশি হবেন, চ্চু চ্চু চ্চু চ্চু চ্চু
আপনি খুশি হন নাই? চ্চু চ্চু চ্চু চ্চু চ্চু
(আল্লাহ তুমি আমারে ধৈর্য্য দাও নয়ত
এই মেয়েরে একটু আমায় বুঝার মত বুদ্ধি
দাও)
কি হল আপনার কি ভাল লাগছে না? চ্চু চ্চু
চ্চু
হ্যা ভাল লাগছেনা, খুব ভাল লাগছে, এখন
বাদ দাও আমাকে আর খুশি করতে হবেনা,
আমি এমনিতেই তোমার উপর অনেক
খুশি,
আচ্ছা ঠিক আছে তাহলে রেখে দেই বলেই
ফোন টা রেখে দিল, এভাবেই দিন যাচ্ছিল,
দেখতে দেখতে রোজা এসে গেল, আমার
এক অফিস কলিগের মাধ্যমে সারা অফিস
ছড়িয়ে গেল আমি বিয়ে করেছি, তাই আর
কি করার সবাই কে নিয়ে ইফতার পার্টির
আয়োজন করলাম আর সিদ্ধান্ত হল
ঈদের পরদিন সবাই আমার বউ দেখতে,
আমার গ্রামের বাড়ি জামালপুর এ যাবে,
ঈদের ছুটিও পরছে অনেক, ১০ দিন, নতুন
বিবাহিত দেখে অফিস থেকে আমাকে
অফিস ছুটির দুইদিন আগেই ছুটি দিল তাই
বাড়িতে না জানিয়েই রওনা দিলাম, মাঝ
পথে বাড়িতে ফোন দিলাম, মা বল্ল তিথি
আজ তাদের বাড়িতে গেছে, তাই আল্লার
কাছে হাজার শুক্রিয়া জানিয়ে মাকে
বল্লাম আমি আসতেছি, যেতে যেতে রাত
আটটার মত বাজল, আমি বাবা মায়ের রুমে
ঢুকে সালাম জানিয়ে আমার রুমে ঢুকতেই
চিৎকার দিয়ে উঠলাম,
মা বাবা দুজনেই দৌড়িয়ে আসল,
কি হয়েছে নিলয়? (বাবা)
এটা কে?
(ঠাটিয়ে একটা চর দিয়ে) এবার দেখ চিনতে
পারবি,(বাবা)
কিন্তু মা ত বলল!!!
হ্যারে বাবা বলেছিলাম, তুই আসবি এটা তর
ফুফুকে জানাইছিলাম, তিথি কিভাবে যেন
শুনে চলে আসছে, একটা পাগলী ছেলের বউ
পাইছি আমি,
(পিছে পিছে দাদীও চলে আসছে, এসেই)
নাতনী আমার স্বামী পাগল, স্বামী
আসতেছে শুনেই চলে আসছে কত দিন পর
বাড়ি গেল কিন্তু একটা দিনও থাকলনা চলে
আসল স্বামীর টানে, বলেই হাসতেছে
(দাদী)
আপনি এমন কেন?(তিথি)
কেমন? (আমি)
আমাকে না জানিয়েই চলে আসলেন,
আমায় ত একবার বললেই পারতেন, আপনি
জানেন কতদিন থেকে আপনার জন্য
অপেক্ষা করতেছি? মা কথা বলার সময়
শুনছিলাম না হলে ত জানতেই পারতামনা,
আমি শুনেই এসে পরছি,
(আল্লাহ তোমার কাছে হাজার শুক্রিয়া
তুমি আমার কথা শুনছ,)(বাবা মা চলে গেল,
দাদী হাসতেছে)
কেন?
আসবনা? আপনি বাড়িতে আসতেছেন
এতদিন পরে, আমি যদি না থাকি তাহলে
চকলেট গুলা কাকে দিবেন নষ্ট হয়ে
যাবেনা? আর মা বলেছিল আপনি আসার
সময় আমার জন্য অনেক কিছু নিয়ে
আসবেন তাই চলে আসছি। (তিথি)
ওই সতীন স্বামী আসছে এতদিন পর
সালাম কর কেমন আছে জিগ্গেস কর আগে,
তার পর তর জন্য কি আনছে তা ত দিবেই,
মাথায় কি বুদ্ধি হবেনা তর? (দাদী)
ওওওও ভুল হয়ে গেছে, আস্সালামুআলাইকু
ম, কেমন আছেন? চকলেট গুলা দেন
তারাতারি,
(আল্লাহ আবার প্রমান করলে কুত্তার
লেজ কখনও সোজা হয়না,) রাগে দুঃখে
চকলেট গুলা বের করে দিলাম, ও নিয়ে
বিছানায় চলে গেল,
রাতে খেয়ে ঘুমাতে গেলাম, সেও আগের
জায়গায় ঘুমিয়ে পরল, কিছুক্ষণ পরপর
একটা করে চকলেট নিচ্ছে আর খাচ্ছে, মাঝ
রাত্রিতে তিথির ধাক্কা ধাক্কিতে ঘুম
ভেঙ্গে গেল,
ওগো শুনছেন?
তিথি বিরক্ত করনা ত ঘুমাতে দাও,
শুনেন না একটু, (তিথি)
হ্যা বল,
বলছি কি আপনার ব্যাগ এ ত আরও চকলেট
আছে একটু বের করে দিবেন? ওইগুলা শেষ,
শেষ মানে? তুমি কি ঘুমাও নাই? এতক্ষন
কি চকলেটই খেলে?
হ্যা খাবনা? দিনে ত খাওয়া যাবেনা, আর
রেখে দিলে যদি নষ্ট হয়ে যায়?
কে বলল তোমায় চকলেট নষ্ট হয়ে যায়?
কেউ বলেনি, একবার ছোট কাকা বিদেশ
থেকে আমার জন্য অনেক চকলেট
আনছিল, এক বছর পর সেগুলো নষ্ট হয়ে
গেছিল,
তিথি একটা কাজ করতে পারবা?
কি?
আমার মাথাটা খেতে পারবা?
যাহ ওখানে কি চকলেট ভরেছে নাকি যে
খাব?
তার মানে চকলেট পড়লে আমার মাথা
খেতে?
না শুধু চকলেট টা খেতাম জানেন না অপচয়
কারি শয়তানের ভাই? তাই কোন জিনিস
পড়ে গেলে আমি সেটা নষ্ট হতে দিই না।
আচ্ছা মেয়েরাও কি শয়তানের ভাই হয়?
তুমি কি ঘুমাবে না থাপ্পর খাবে?
চকলেট খাব দিন না এনে,
অবশেষে এনে দিতে হল,
(পরদিন সকালে পুকুর পারে বসে আছি)
আপনার কি মন খারাপ?(তিথি)
একটু,
ওওও আচ্ছা দাড়ান আপনার মন ভাল করে
দেই, চ্চু চ্চু চ্চু চ্চু চ্চু চ্চু,(তিথি)
বাহ সুন্দর, শব্দ হচ্ছে না আর একটু
জোরে শব্দ কর,(আমি)
সে আর জোরে মুখে চ্চুচ্চুচ্চুচ্চু শব্দ
করতে লাগল, আমি আর ঠিক থাকতে
পারলাম না, ওর পাগলামী দেখে হেসে
দিলাম, হইছে থাক আর লাগবেনা, এবার
চ্চুচ্চুচ্চুচ্চুচ্চু করা বন্ধ কর,
সেও বিশ্ব জয়ী এক হাসি দিল,
ইফতারের সময় আমি ওর পাশে বসলাম না
খাইয়ে দেওয়ার ভয়ে, টেবিলের ঠিক উল্টা
দিকে বসলাম, খাবার মাঝে ওর দিকে
তাকাতেই মুচকি মুচকি হাসতেছে, তাই
সুযোগ বুঝে একবার দিলাম চোখ মেরে,
ওয়াও ওনেক সুন্দর হইছে কেমনে করলেন
আবার একটু করেন ত,(তিথি)
কি রে মা? (বাবা)
বাবা বাবা ওনি না খুব সুন্দর করে চোখ
কেমনে জানি বন্ধ করছে, এই যে এরকম
ভাবে( দুই চোখ বন্ধ করে বাবাকে
দেখাচ্ছে) না না হয়নাই আমি পারি না, ওনি
একটা দিয়ে করছে, একটু দেখান না বাবাও
দেখুক,
আমি আর কারও দিকে না তাকিয়ে মাথা
নিচ করে খেতে লাগলাম, তার পরদিন থেকে
ইফতারি আমার ঘরেই পাঠিয়ে দিয়েছে মা,
দেখতে দেখতে ঈদ এসে গেল , ঈদের পরদিন
আমার অফিস কলিগরা আসল, তিথি হলুদ
রঙ্গের একটা শাড়ী পড়েছে, দেখতে
অনেকটা পুতুলের মত লাগছে, সবার সামনে
ওকে নিয়ে গেলাম পরিচয় করিয়ে দিতে,
কিন্তু পুরোটা সময় শুধু মাত্র এক ভাবী
ছাড়া আর কারও সাথেই কোন ধরনের
কথা বলল না, রাগে আমার মাথা দিয়ে
আগুন বের হচ্ছে শুধু তাই ওরা চলে যাওয়ার
পরেই ঠাস করে গালে একটা চর মারলাম,
দিন দিন কি বেয়াদপ হয়ে যাচ্ছ? ওরা এত
কিছু জিগ্গেস করল আর তুমি কিছুই
বল্লেনা কেন?(আমি)
(কাদতে কাদতে) আপনি না বলছেন কোন
ছেলের সাথে যেন কথা না বলি, তাই বলিনি,
(তিথি)
নিজের মাঝে কিছুটা অনুতপ্ত বোধ কাজ
করল, এই মেয়েকে দিয়ে আমি কি করে
সংসার করব? এর ত বুদ্ধি বলে কিছুই নাই।
মন খারাপ করে শুয়ে আছি বিছানায়, তিথি
এসে আমার বুকে শুয়ে পরল, আমি তাকে
তুলে দিলাম বলা্লাম আর যেন কখনই এ
ভাবে না ঘুমায়, সে রাগ করে চলে গেল,
কিছুক্ষন পর বাবাকে ডেকে নিয়ে এসে
বিচার দিচ্ছে,
বাবা বাবা ওনি আমাকে ঘুমাতে দিচ্ছে না,
(তিথি)
কিরে নিলয় ঘুমাতে দিচ্ছিস না কেন?
বাবা আমি ওকে কখন ঘুমাতে দিলাম না?
ঘুমাক না আমি কি নিষেধ করছি?
না বাবা আমি ওনার বুকে ঘুমাব, ওনি
আমাকে বার বার তুলে দিচ্ছে,
বাবা একটু সংকোচে পরে গেলেন তার পরও
বল্লেন ওকে ঘুমাতে দে আমরা গেলাম,
বাবা যাবেন না, আমি আগে শুয়ে পরি
তারপর যাবেন, নাহলে আবার তুলে দিবে
(তিথি)
তিথি এসে শুয়ে পরল তার পর বাবা দরজা
আটকিয়ে চলে গেল,
আচ্ছা আপনি সব সময় মন খারাপ করে
থাকেন কেন? আপনার কি কিছু হয়েছে?
(তিথি)
নাহ কিছু হয়নায়,
কিছু ত একটা হয়েছে না হলে সব সময় এমন
থাকেন কেন?
কি করব বল? আমার যৌবন শেষ হয়ে
যাচ্ছে আর আর তুমি ত সেটা বুঝতেই
পারতেছ না
(মুখ ফসকে কথাটা বলে দিলাম)
ওওও ডাক্তার দেখান নাই?
হুম দেখাইছি, বলছে ভাল হয়ে যাবে তুমি
এখন ঘুমাও, আর কথা বলো না,
পরদিন সকালে সবাই খেতে বসছি, মন
খারাপ দেখে বাবা জিগ্গেস করল, নিলয়
কিছু হয়েছে তর? কয়দিন থেকে দেখতেছি
মন খারাপ,
না বাবা কিছু হয়নাই, হয়েছিল ডাক্তানা বাবা কিছু হয়নাই, হয়েছিল ডাক্তানা
বাবা কিছু হয়নাই, হয়েছিল ডাক্তাবাবা কিছু হয়নাই, হয়েছিল ডাক্তার
দেখিয়েছিল, এখন ভাল হয়ে যাচ্ছে।(তিথি)
এই ছেলেটাকে নিয়ে আর পারি না, ছোট
থেকেই একটা সমস্যা অসুখ হলে কাউকে
বলবেনা, কি হয়েছিল রে নিলয়?(বাবা)
বাবা ওনার না….
তিথি একদম চুপ, কোন কথা বলবেনা
(আমি)
এই বলবেনা কেন? তর কি অসুখ সেটা
জানতে হবেনা? পরে যদি বড় সমস্যা হয়ে
যায়? বল মা কি হয়েছিল নিলয়ের আর তুই
কেমনে জানলি?
কাল রাতে যখন আপনারা এসে পরলেন
তখন বলেছে, ওনার নাকি যৌবন শেষ হয়ে
যাচ্ছে, আর আমি সেটা বুঝতে পারিনাই
বলে ওনার মন খারাপ, এখন নাকি ভাল
হেয়ে যাচ্ছে।
আমি এক দৌড়ে ঘরের ভিতর, পরের দুই
দিন বাবা মা কেউ আমার সামনে আসেনি
আমিও না, এ দিকে তিথির ও স্কুল খুলেছে
পরীক্ষার জন্য, তাই দিনে একটু
শান্তিতেই থাকতে পারি,
একদিন বিকেল বেলা এক কাকা এসেছে তার
ছেলেকে নিয়ে চাকরির বিষয়ে কথা বলার
জন্য, বাবা মা আর আমি বসে কথা
বলতেছি, এরই মাঝে তিথির আগমন,
ওগো একটু এদিকে আসেন না,(তিথি)
আসতেছি একটু পরে,
না এখনই আসেন, শূধু একটা চুমু খাব তার
পর চলে যাবেন, আমার ফ্রেন্ড টা না আজ
এটা শিখায়ে দিছে, বলছে কারও সামনে
যাতে না খাই, চুমু খেলে নাকি আপনি
আমাকে অনেক ভালবাসবেন

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here