ভালোবাসি_প্রিয়তম,পর্ব_৫,৬

0
1835

ভালোবাসি_প্রিয়তম,পর্ব_৫,৬
তাসনিম_তামান্না
পর্ব_৫

???

ক্লাস শেষে সবাই এক এক করে ক্লাস থেকে বের হলেও কুয়াশাকে বসে থাকতে দেখে। মেঘা বিরক্ত হয়ে বলল

-তুই কি আজ এখানে থাকার প্লান করতেছিস(মেঘা)

কুয়াশা অসহায় ফ্রেস করে বলল

-না… কিন্তু… আসলে (কুয়াশা)

-কি বলতেছিস এগুলা কোনো কিছুর আগা মাথা নাই(মেঘা)

-আরে আমি বলতেছি একটু গিয়ে দেখে আই না ঔ সকালের আপুভাইয়া গুলো আছে কি না যদি থাকে তাহলে আমি যাবো না ঔ আপুভাইয়া গুলো চলে গেলে যাবো(কুয়াশা)

কুয়াশার কথা শুনে মেঘাও কুয়াশার পাশে বসে বলে

-ও হ্যাঁ আমি তো ভুলেই গিয়েছিলাম আমি ও যাবো না কি জোরেই না ধমক দিয়েছে… ভাভাগো…ভাভা…দেখ এখনো ভাবলে কলিজা লাফাছে (মেঘা)

-যা না বসে পড়লি কেনো তুই না বীরমহিলা(কুয়াশা)

-এই কুতি এই একদম পাম্প দিবি না আমাকে(মেঘা)

-আমি পাম্প দিলাম কখন আমি পাম্প দিলে তুই ফেটে যাবি(কুয়াশা)

মেঘা কিছু বলতে যাবে তার আগেই ঈশান এসে বলল

-কিরে তোরা এখনো এখনে বসে আছিস কেনো আমি তো ভাবলাম তোরা আমার পিছনে পিছনে আসছিস তাই তো বকবক করতেছিলাম তোদের কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে পিছনে ফিরে দেখলাম তোরা কেউ নেই আমাকে একা বকবক করতে দেখে কয়েকটা মেয়ে পাগল বলে হাসছে(ঈশান)

বলতে বলতে বসে পরলো ব্রেন্সে মুখগোমরা করে বসলো। ঈশানের কথা শুনে ওরা হাসতে হাসতে শেষ। ওরাদের হাসতে দেখে চেতে ওঠে ঈশান রেগে মেঘার আর কুয়াশার চুল টান দেই।ওরা দু’জন ব্যথায় আর্তনাদ করে মাথা হাত বুলাতে লাগলো।

-তোদের দুজনের জন্য আমার মান সম্মান প্লাস্টিক হয়ে গেলো(ঈশান)

কথাটা শেষ হতে না হতেই ঈশানের পিঠে দুম দুম করে কয়েকটা কিল পরলো।ঈশান ব্যাথ্যায় চোখ মুখ কুচকে ফেললো।

-তোর আবার মান সম্মান আছে না কি(মেঘা)

-বিয়াদ্দপ আমাকে এতো জোরে মারতে পারলি(ঈশান)

-তুই জোরে চুল টানছিস আমরাও জোরে মারছি কাটাকাটি(কুয়াশা)

-দূর চল তোদের সাথে আমি জীবনেও কথায় পারবো না(ঈশান)

-আমি যাবো না(কুয়াশা)

-আমিও যাবো না(মেঘা)

ঈশান বিরক্ত হয়ে বলল

-থাক তাহলে আমি যায়(ঈশান)

-না না শোন না ভাই(কুয়াশা)

ঈশান উত্তর দিলো না আড়চোখে তাকিয়ে উঠে গেলো।কুয়াশা আর মেঘা ঈশান কে গিয়ে আটকালো।ঈশান রাগ দেখিয়ে বলল

-সামনে থেকে সর আমি যাবো তোরা বসে বসে ঢং কর(ঈশান)

-এমনে বলিস কেনো? বিপদে রেখে চলে যাচ্ছিস(মেঘা)

-বিপদ!! কিসের বিদপ(ঈশান)

-ঔ সকালের আপু ভাইয়া গুলো যদি থাকে(মেঘা)

-থাকলে থাকবে চল আমি আছি(ঈশান)

-অনু আর রাহুল কই?(কুয়াশা)

-প্রেম করতে গেছে চল(ঈশান)

ঈশানের কথা শুনে ওরা একটু সাহস পেয়ে ক্লাসের বাইরে আসলো।ক্লাস দোতালায় হওয়ায় ওপর থেকে নিচে স্কেন করে নিলো।কেউ নেই দেখে তিড়িং বিড়িং করে লাফাতে লাফাতে বাসার দিকে দৌড় দিলো।

★★★

তুষাররা কেন্টিনে বসে আড্ডা দিচ্ছে।

-রিদ তুই ফোনের ভিতরে কি করছিস আমরা এতো কথা বলছি আর তুই হুম হুম করছিস কেনো বার বার কি করছিস ফোনে দেখি(হাসান)

মুন পিৎজা খেতে খেতে বলল

-দেখ আবার কোন মেয়েকে পটানোর চেষ্টা চালাছে(মুন)

হাসান রিদের কাছ থেকে ফোন কেড়ে নিয়ে দেখে চোখ বড়বড় হয়ে গেলো।তাদেখে রিদ মেকি হাসি দিলো।সবাই হাসানের এক্সপ্রেস দেখে কিছু বুঝতে পারলো না কি হইছে।

-কি হইছে এভাবে এক্সপ্রেস দিচ্ছিস কেনো(রুকাইয়া)

হাসান অবাকের রেস কাটিয়ে উঠে বলল

-কুয়াশা আর মেঘার এফবি আইডি খুঁজে পেয়েছে(হাসান)

সবাই একসাথে বলল

-কিহহ!!

-কই দেখি(তন্নি)

সবাই মিলে দেখতে লাগলো

-দূর দুইটার প্রোফাইলই লক করা ফেন্ড না হলে দেখা যাবে না(রিদ)

-বাট কভার পিকে দুইটা বাবুর পিক দেওয়া এরা কারা দেখতে অনেক কিউট টুইন মনে হচ্ছে (রুকাইয়া)

-ওদের বাচ্চা (বলে চোখ বড়বড় করে বলল) ওরা মেরিড হাই হাই আমার কি হবে আমি প্রেম করার আগে ছেঁকা খেলাম এ দুক্কু আমি কই রাখবো(রিদ)

-হোপপ গুগল থেকে মনে হয় ডাউনলোড করে কভার পিক দিছে এমন পিক কত দেখছি(সাদাফ)

-হুম হতেও পারে(হাসান)

তুষার বসে বসে কোক খাচ্ছে আর আড়চোখে ফোনের স্কিননে তাকাছে। প্রফাইলে কুয়াশার একটা ছবি দেওয়া সাদা একটা টপস পড়া চুলগুলো দু’পাশে ঝুটি করে বাঁধা। মুখে কিউট একটা হাসি। মেঘার লাল টপস পড়া চুলগুলো ছাড়া।

-ওমাই আল্লাহ এই মেয়ে এতো কিউট কেমনে হয় দোস্ত দেখ পুরাই বাচ্চা দের মতো একটা পিক দেওয়া আমি তো ক্রাস খাইলাম(মুন)

-আমি তো পিকেই কুয়াশাকে হাসতে দেখলাম সামনে তো সবসময় কেমন ভীতু হয়ে থাকে(রুকাইয়া)

-হ্যাঁ ঠিকই বলছিস মেয়েটার হাসিটাও সুন্দর(তন্নি)

-মেয়ে হয়ে মেয়ের ওপরে ক্রাস খেতে লজ্জা করে না তোদের(সাদাফ)

-আরে ক্রাসিত হলে কি করবো(মুন)

-ফেন্ড রিকুয়েষ্ট দিচ্ছি একসেপ্ট না করলে কাল কলেজে আসলে বলবো একসেপ্ট করার কথা(রিদ)

-কি পরিমাণ ছেসড়া তুই(তন্নি)

-আরে প্রেম করার জন্য একটু আধটু ছেসড়ামি করতে হয়(রিদ)

তুষারের রিদের কথা শুনে রাগ উঠে গেলো রেগে বলল।

-ঔ মেয়েকে নিয়ে এতো কিসের কথা তোদের?সারাদিন কানের কাছে ঔ মেয়ের কথা শুনতে শুনতে জাস্ট অসহ্য লেগে গেছে।আর একবারও যদি ঔ মেয়ের কথা আমার কানের আসে তোদের আমি খুন করবো(তুষার)

বলে গটগট করে চলে গেলো

-যাত তেরি এর আবার কি হলো (তন্নি)

একটা হাসি দিয়ে রিদ বলল

-জ্বলে বন্ধু জ্বলে (রিদ)

-মানে(মুন)

-কিছু না(রুকাইয়া)

-কি লুকাচ্ছিস তোরা(তন্নি)

-পেটপাতলা(রিদ বিরবির করে বলল )

-আরে কি লুকাবো চল বাড়ি চল(হাসান)

.

তুষার বিকালে বাসায় এসে দেখলো ওর বাবা সোফায় বসে চা খাচ্ছে আর ফাইল চেক করছে।কোনো কথা না বলে উপরে যাওয়ার জন্য পা বাড়াতেই।তুষারের বাবা (তুহিন সাহেব)বলে উঠলো

-তুষার তুমি তো সারাদিন ঘুরাঘুরি করো অফিসে তো একটু বসতে পারো নাকি(তুহিন)

তুষার কথাটা শুনেও না শোনার ভান ধরে নিজের রুমে চলে গেলো। তুহিন সাহেব একটা দীর্ঘ শ্বাস নিলেন।তার ছেলেটা তার সাথে কতদিন হয়ে গেলো ভালো করে কথা বলে না।

তুষার প্রতিদিনের মতোই ফ্রেশ হয়ে। নাস্তা করে ল্যাপটপ নিয়ে বসে মুভি দেখতে দেখতে কিসিং সিন টাই নায়কার জায়গায় বার বার কুয়াশাকে দেখছে আর নায়কের জায়গায় নিজেকে দেখে বিরক্ত হয়ে ল্যাপটপ বন্ধ করে দিলো।মাথা চেপে ধরে কিছুক্ষণ বসে থেকে স্মোক করতে থাকে।রাত হয়ে গেলো খেয়ে ঘুমিয়ে গেলো।

★★★

রাত ২:৩৮ বাজে কুয়াশার ফোন বেজে উঠলো। কয়েক বার বাজতেই কুয়াশা বিরক্ত হয়ে শেষ মেষ ফোন কানে দিলো।

-হ্যালো কে?(কুয়াশা)

-দোস্ত আমি আর বাঁচবো না মরে যাবো আমি বেঁচে থেকে কি করবো বল এর চেয়ে মরে যাওয়াই ভলো(ঈশান)

ঈশানের কথা শুনে কুয়াশার ঘুম কর্পূরের মতো উড়ে গেলো ভয়াত গলায় বলল

-এসব কি বলছিস তুই আমার সাথে মজা করছিস তাই না(কুয়াশা)

-এই রাতের বেলা আমি মজা করবো কেন বল আমারে কেউ ভালোবাসে না দোস্ত আমি হাত কাটছি দোস্ত দেখ হোয়াটঅ্যাপে পিক দিছি ভালো থাকিস দোস্ত আমি আর কিছুক্ষণ আছি বাই(ঈশান)

কথাটা বলে খট করে ফোন কেটে দিলো ঈশান কুয়াশাকে কিছু বলার সুযোগ দিলো না

-এই এই এই কি বলছিস এসব তুই তু তুই ক কিছু করবি না হ্যালো হ্যালো দোস্ত হ্যালো(কুয়াশা)

ফোন কান থেকে সরিয়ে দেখলো ফোন কেটে দিয়েছে কুয়াশা কয়েক বার ফোন দিলো কিন্তু ঈশান রিসিভ করলো না।কুয়াশার ভয়ে হাত পা ঠান্ডা হয়ে যেতে লাগলো।কাঁপা কাঁপা হাতে নেট ওন করে হোয়াটঅ্যাপে গিয়ে দেখলো সত্যি হাতের শিরা কেটেছে গলগল করে রক্ত বের হচ্ছে। পিকটা দেখে কুয়াশা হাউমাউ করে কেঁদে উঠলো।

মেঘ কাজ শেষ করে ঘুমানোর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলো পানি খাওয়ার জন্য পানি খেতে গিয়ে দেখলো পানি নাই।পানি আনতে নিচে যাওয়ার সময় কুয়াশার রুম থেকে কান্নার আওয়াজ পেয়ে হন্তদন্ত হয়ে কুয়াশার রুমে গিয়ে দেখলো কুয়াশা কান্না করছে। কুয়াশা রুমের দরজা লক করে না বিধায় সহজে রুমে ডুকতে পারলো।

-কি হয়েছে এভাবে কান্না করছিস কেনো ভয় পেয়েছিস(মেঘ)

-ভাইয়া(বলে আবার কান্না শুরু করলো কুয়াশা)

-আরে কি হইছে সেটা বলবি তো(মেঘ)

কুয়াশা ঈশানের সব কথা বলল

-দেখি পিক দেখা(মেঘ)

কুয়াশা পিক দেখালো মেঘকে। মেঘ পিক দেখে কুয়াশার মাথায় চাটি মারলো।

-গাধী পিকটা ভালো করে দেখ ফালতু কাঁদে (মেঘ)

কুয়াশা পিকটা ভালো করে দেখলো এটা সকাল বেলা ঘাসের ওপরে তোলা পিক কিন্তু এখন তো রাত।এটা দেখে রাগে ফোঁস ফোঁস করতে লাগলো কুয়াশা মনে হচ্ছে ঈশানকে সামনে পেলে এক্ষুনি ভংসো করে দিবে।

-থাক ঘুমা কাল ওর ব্যাবস্থা করিস অযথা কান্না করতে পারিস ভালোই(মেঘ)

কথাটা বলতে বলতে চলে গেলো মেঘ।

কুয়াশা রাগে ফোঁস ফোঁস করতে করতে ঘুমিয়ে গেলো কুয়াশা।

.

সকাল থেকে কুয়াশা রেগে বোম হয়ে আছে।মেঘ সবাইকে কাল রাতের কথা বলেছে সেটা শুনে বাসার সবাই পচিয়েছে।তাতে কুয়াশা আরো রেগে আছে।কুয়াশা আর মেঘা কলেজে এসে দেখলো। অনু,রাহুল আর ঈশান দাড়িয়ে গল্প করছে।ঈশান কুয়াশাকে দেখে শুকনো ঢোক গিলে ভোঁ দৌড় দিলো। কুয়াশাও ঈশানের পিছনে দৌড় দিলো।

এতক্ষণ তুষার আর তুষারের ফেন্ডরা গল্প করছিলো আর রিদ কুয়াশা আর মেঘার জন্য ওয়েট করে গেটের দিকে তাকিয়ে ছিলো।কিন্তু কুয়াশাকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে ও রেগে আছে সেটা দেখে ও অবাক+সাহস করে আর কুয়াশার দিকে যায় নি।কিন্তু ঈশান আর কুয়াশাকে এভাবে দৌড়াতে দেখে সবার দৃষ্টি ওদের দিকে যায়।অনেকই অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।

#চলবে
#tasnim_tamanna

[ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।গঠনমূলক কমেট করবে]

#তাসনিম_তামান্না
#ভালোবাসি_প্রিয়তম
#পর্ব_৬

???

কুয়াশা আর মেঘা কলেজে এসে দেখলো ঈশান,অনু,রাহুল মাঠে দাড়িয়ে গল্প করছে।ঈশান কুয়াশাকে দেখে শুকনো ঢোক গিলে ভোঁ দৌড় দিলো কুয়াশা ও ঈশানের পিছনে দৌড় দিলো।

কলেজের প্রায় সবাই সে দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। রিদ কুয়াশার জন্য ওয়েট করতেছিলো রিদের ফেন্ড রিকুয়েষ্ট আকসেপ্ট না করার জন্য। কুয়াশাকে রেগে কলেজে ডুকতে দেখে ও আর ওদিকে যায় নি।তুষার আর তুষারে ফেন্ডরা তো অবাকের শীর্ষে পৌঁছে গেছে। যে মেয়েটা কাল ওদের সামনে ভয়ে কথায় বলতে পারছিলো না সে কি না আজ একটা ছেলের পিছনে দৌড়াছে আবার ছেলেটাও ভয়ে দৌড়াছে।

ঈশান দৌড়ে কলেজের বাইরে চলে গেলো পিছনে পিছনে কুয়াশাও গেলো। কেউ কিছুই বুঝতে পারলো না যে যার কাজ করতে লাগলো, কেউ কেউ বোঝার চেষ্টা করছে কি হলো।মেঘা,অনু আর রাহুল হাসতে হাসতে ঘাসে বসে পড়লো।

কুয়াশা আর ঈশান কলেজের বাইরে যেতেই তুষারের ফেন্ডরা একে ওপরের দিকে তাকাতাকি করতে লাগলো কারণ ওরা কেউই কিছু বুঝে পারছে না কি হলো এটা।

-এটা কি ওর বফ তাহলে আমার কি হবে(রিদ)

-হতে পারে এতো কিউট মেয়ের এইযুগে বফ থাকবে না তা কি কখনো হয়(মুন)

-এযুগে শুধু আমি-ই সিংগেল রয়ে গেলাম কি ফাটা কপাল আমার(রিদ)

তুষারে হঠাৎ নিজেকে কেমন মনে হচ্ছে ওর কষ্ট হচ্ছে নাকি হারিয়ে ফেলার ভয়।ওদের কথা শুনে কেমন অস্থির লাগছে। ওর গলাটা বার বার শুকিয়ে যাচ্ছে।

-ঔ তো ওখানে ওর বোন আছে চল ওর কাছে গিয়ে শুনি কি হইছে (তন্নি)

-চল যদি এটা সিংগেল থাকে তাহলে ওটারেই পটামু(রিদ)

সবাই মেঘাদের সামনে গিয়ে দাড়ালো তুষারের পা কাঁপছে কোনো অজানা কারণেই ওর রাগ,দুঃখ, অজানা কারণে ভয় পাচ্ছে।মেঘারা হাসি থামিয়ে ওদের দিকে পিটপিট করে তাকালো। কিছুক্ষণ ওদের দিকে তাকিয়ে থেকে ওরাও উঠে দাড়ালো মেঘা একটা মেকি হাসি দিয়ে বলল -কিছু বলবেন আপুভাইয়ারা(মেঘা)

-আব…হ্যাঁ(রিদ)

-জী বলুন কি বলবেন(মেঘা)

রিদ রুকাইয়ার বাহুতে একটু ধাক্কা দিলো রুকাইয়া ও বুঝলো রিদ ওকে কথা বলতে বলছে।

-আসলে কুয়াশা ওভাবে দৌড়ালো কিছু বুঝালম না তাই শুনতে আসলাম কোনো সমস্যা হইছে কি না(রুকাইয়া)

-না আপু কোনো সমস্যা না এটা ফান ছিলো(মেঘা)

-মানে কিছু বুঝলাম না(হাসান)

-আসলে কাল(কালকের ঘটনাটা বলল মেঘা)

-বাহ তাহলে তোমরা কয়জন ফেন্ড (সাদাফ)

-হ্যা ৫ জন(মেঘা)

-মজা লাগছে(রিদ)

.

কলেজের থেকে কিছু দূর এসে ঈশান হাঁপাতে লাগলো একটা বড় গাছের শিকড়ে বসে বলল

-দোস্ত আর দৌড়াতে পারতেছি না মাফ কর আর জীবনে তোর সাথে এমন মজা করবো না (ঈশান)

-ওমন করলি কেন সেটা আগে বল(কুয়াশা)

-আরে আমার ঘুম আসতে ছিলো না তাই ভাবলাম একটু মজা করি আর তুই একটু গাধা থুক্কু গাধী তো তাই ফান করার জন্য তুই ই বেষ্ট ছিলি(দাঁত কেলিয়ে বলল ঈশান)

কথাটা শেষ হতে না হতেই চড় থাপ্পড় কিল চুল টানা পড়লো ঈশানের অবস্থা খারাপ করে দিসে কুয়াশা।

-আরে আরে আহ ওমাগো আর মারিস না আর এমন করবো না বোইন মাফ কর(ঈশান)

-ওকে মাফ করতে পারি একটা শর্তে(কুয়াশা)

ঈশান চুল ঠিক করতে করতে বলল

-আবার শর্ত ওকে বল শুনি তোর কি শর্ত(ঈশান)

-আইসক্রিম কিনে দিবি(কুয়াশা)

-ও আচ্ছা এই ব্যাপার স্যাপার ওকে চল কিনে দিবো নো প্রোবলেম তুই চাইছিস আর আমি সেটা কখনো দেই নি এমন কখনো হইছে(ঈশান)

কুয়াশা ঈশানের হাতে চিমটি দিয়ে বলল

-একদম মিথ্যা বলবি না বিয়াদ্দপ(কুয়াশা)

হাত ডলতে ডলতে কাঁদো কাঁদো হয়ে বলল

-ওফফ এতো জোরে কেউ চিমটি দেই বাবাগো জ্বলতেছে খুব আর মিথ্যা বলবো না চল রাক্ষসী (ঈশান)

-কি বললি তুই(কুয়াশা)

-কিছু না আফা সত্যি তুই আমার বোন না চল(ঈশান)

.

মেঘারা আর তুষারের ফেন্ডরা গল্প করছে। এটা সেটা প্রশ্ন করছে আর মেঘারা সেটার উত্তর দিচ্ছে। তুষারের সবটাই শুনছে কিন্তু কিছু বলে নি।তুষার বার বার গেটের দিকে তাকাছে ওর অজানতেই দু-চোখ শুধু কুয়াশাকে খুঁজছে। তুষার অধ্যর্য হয়ে বলল

-তোমাদের ঔ দুইটা ফেন্ড এখনো ফিরছে না যে(তুষার)

-হ্যাঁ অনেকক্ষণ হয়ে গেছে এখনো আসছে না কেনো(রুকাইয়া)

-আমি ফোন দিচ্ছি(রাহুল)

-আরে ঔ তো ওরা এসে গেছে(অনু)

সবাই সে দিকে তাকালো দেখলো ঈশান আবুল মার্কা হাসি দিয়ে এগিয়ে আসছে আর কুয়াশাও মেকি হেসে এগিয়ে আসছে।ওরা দুজন এসে সবার দিকে তাকিয়ে একটু হাসলো।তুষার সে হাসি দেখে সুখ অনুভব হলো।

-কুয়াশা তোমার সাথে একটু কথা ছিলো(রিদ)

-জী ভাইয়া বলেন(কুয়াশা)

-ভাইয়া!!( বলে ফিক করে হেসে দিলো তন্নি)

রিদ তন্নির দিকে আড়চোখে তাকালো

-আপু আসলে তোমারকে ফেন্ড রিকুয়েষ্ট দিচ্ছি একসেপ্ট করোনি কেনো(রিদ)

রিদের কথাশুনে মুন যে হাসি চেপে রাখছিলো সেটা রিদের মুখে আপু ডাক শুনে বের হয়ে গেলো।

কুয়াশারা বোকার মতো তাকিয়ে আছে হাসছে কেনো সেটাই বুঝতে পারছে না বেচারাগুলা।

-আপু আপনারা দুজন কি পাগল হয়ে গেলোন এভাবে পাগলের মতো হাসছেন কেনো(ঈশান)

ঈশানের কথা শুনে ওদের হাসি থেমে গেলো।তন্নি রেগে বলল

-এই ছেলে পাগল বলছো কাকে(তন্নি)

-এভাবে কোনো কারণ ছাড়া হাসলে যে কেউই পাগল বলবে(হাসান)

তন্নি আর মুন কিছু বলল না।

-একসেপ্ট করো (রিদ)

-আচ্ছা (কুয়াশা)

-তোমাকেও দিসি একসেপ্ট করো(মেঘাকে উদ্দেশ্য করে বলল রিদ)

-আচ্ছা আমরা যায় আমাদের ক্লাস আছে(মেঘা)

কথাটা বলে ক্লাসের দিকে যেতে লাগলো।

-আমার কিন্তু এদেরকে সুবিধার লাগছে না(রাহুল)

-কাদেরকে(অনু)

-এই যে সিনিয়র দের কারোর সাথে তেমন কথা বললো না কিন্তু আমাদের সাথে নিজেরাই এসে সেধে সেধে কথা বললো ব্যাপারটা কেমন একটা না(রাহুল)

-হুম তা ঠিক(ঈশান)

-কিন্তু ওদের কি উদেশ্য থাকতে পারে তেমন কোনো রিজন দেখছি না তো(অনু)

-ঔ রিমা বলে মেয়েটাকে কিন্তু সেদিনের পর কলেজে আসেনি হতে পারে কুয়াশার আর ঔ ছেলেটার ধাক্কা লাগায় মেয়েটা ব্রেক আপ করে দিছে সেজন্য ওরা রিভেঞ্জ নিতে চাইছে(ঈশান)

-কি!!(কুয়াশা)

-হুম হতেও পারে কিন্তু এই ছোট কারণে ব্রেকআপ?? (রাহুল)

-আচ্ছা এসব বাদ দে সবসময় চোখকান খোলা রাখবি সবাই একসাথে সাবধানে থাকবো আর যা হবে পরে দেখা যাবে(অনু)

-আমার ভয় লাগতেছে(কুয়াশা)

-আমারও(মেঘা)

-ঘোড়ার আন্ডা আমরা আছি তো(ঈশান)

কথা বলতে বলতে ওরা ক্লাসে চলে আসলো।

★★★

বেশকিছু দিন কেটে গেছে এই ক’দিনে তুষার কুয়াশাকে কোনো কারণ ছাড়ায় একা পেলে ধমক দিতো ‘এই মেয়ে’ এইটুকু যেই বলতো কুয়াশা ওখান থেকে হাওয়া পালিয়ে আসতো। আর সবার সামনে রাগী চোখেও তাকাতো।কুয়াশা শুধু ভয়ে ঢোক গিলতো। তুষার কুয়াশাকে ভয় পেতে দেখে মজা পেত আনমনেই হাসতো।

আজ রিমা কলেজে এসেছে। রিমাকে দেখে কুয়াশা ভয় পাচ্ছিল। কিন্তু রিমা তেমন কিছুই বলেনি এমনি কুয়াশার দিকে তাকাইও নি। তাহলে কি রিমা তার অপমানের প্রতিশোধ নিবে না? নাকি কুয়াশার জন্য ভয়ানক কিছু অপেক্ষা করছে? যা কুয়াশার জীবনের মোড় পাল্টে দিবে।

কুয়াশা শিরি দিয়ে নিচে আসছিলো ও সবার লাস্টে থাকায় আর আনমনে হাটায় সিলিপ কেটে পড়ে যেতে নিলেই কেউ ওর কোমড় জড়িয়ে ধরলো…..

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here