মাস্টার মাইন্ড,পর্ব ৩,৪
নিলাঞ্জনা রহমান
পর্ব ৩
পরেরদিন…..
সকালে….
তিতাস অফিসে ঢুকতেই সবাই দাড়িয়ে তাকে সম্মান জানালো।
গুড মর্নিং গাইস।
গুড মর্নিং স্যার!!!
তিতাস একবার তার নজর পুরো অফিসে ঘুরালো।কোথাও তিতিরকে দেখলোনা।
তিতাসঃকি হলো আজ তিতিরকে দেখা যাচ্ছে না কেনো? (মনে মনে)
হঠাৎ নিজের প্রশ্নে নিজেই অবাক
তিতাস তোর কি হয়েছে তুই আজ হঠাৎ ঐ মেয়ের কথা ভাবছস?তুই পাগল হয় যাচ্ছস??
তিতাস বড় একটা শ্বাস নিলো।
হটাৎ তিতাস এর নজর দরজার দিকে গেলো।
সে দেখলো তিতির আসছে তবে তার সাথে শুভ।তিতির শুভর সাথে খুব হেসে হেসে কথাও বলছে।তা দেখে তিতাস এর খুব রাগ হলো।
তিতাসঃতোমরা এতক্ষনে এসেছো? কোথায় ছিলে তোমরা??
তিতিরঃস্যার আসলে আফতাব স্যার আমাদের দুইজনকে একটা কাজে পাঠিয়েছিলো তাই,স্যার।
শুভঃ জি স্যার। আমরা কাজের জন্য গিয়েছিলাম।
তিতাসঃওকে যাও তোমাদের ডেস্কে। আর তিতির তুমি ড্রাগ ডিল কেসের ফাইলটা নিয়ে আমার কেবিনে এসো।
তিতিরঃওকে স্যার।।।
তিতাস কেবিনে চলে গেলো।
তিতাসঃআমি এমন কেনো বিহেভ করলাম?তিতিরকে শুভর সাথে দেখে মাথা গরম হচ্ছিলো কেনো?
তিতিরঃ,আসতে পারি স্যার?
তিতাসঃইয়েস।
তিতিরঃস্যার ফাইলটা
তিতাস ফাইলটা নিয়ে বললো তিতিরকে বসতে।তিতিরও বসলো।
তিতাসঃতিতির তুমি এই ফাইলগুলো নাও আর এখানে বসে সব ফাইলগুলো চেক করো।
তিতিরঃএখানে????
তিতাসঃহুমম এখানে। কোনো প্রবলেম?
তিতিরঃনো স্যার। আমি এখানেই করছি।
তিতাসঃহুমমম।আমি জানি না কেনো তোমাকে এখানে বসতে বললাম কিন্তু আজ প্রথম তোমার সাথে বসতে মন চাইলো।
তিতির ফাইল নিয়ে কাজ করছে।তিতাসও করছে।হটাৎ তিতাস এর নজর তিতির এর উপর গেলো, সাদা শার্ট, লাল লিপস্টিক, টানা টানা চোখে হালকা কাজল, চুল উপর করে ঝুটি করে বাঁধা। কিছু ছোট ছোট চুল কপালে পড়ছে।তিতির তার,মুখে কলমটা নিয়ে কামড়ে ধরে আছে।আর ভাবছে কাজ নিয়ে। তিতাস এর কাছে এই কলম মুখে দেওয়া আজিব লাগে কিন্তু তিতির এর কলম মুখে দেওয়ায় কেনো যেনো খুব ভালো লাগছে।
আজ প্রথম তিতিরকে এতো কাছ থেকে আর ভালো করে দেখছে তিতাস।
তিতিরঃস্যার!!!
তিতির এর ডাকে তিতাস এর ধ্যান ভাঙে।
তিতাসঃহুমম বলো।
তিতিরঃস্যার ফাইল দেখা শেষ আমি কি যেতে পারি?। তিতাসঃহুমমম যেতে পারো।
তিতির চলে গেলো।
তিতাসঃউফফ তুই কি করছিলি এটা।তিতাস তুই এতো ছ্যাচড়া কখন থেকে হলি?তিতাস কনট্রল ইউর সেলফ।বড় একটা শ্বাস নিয়ে তিতাস কাজ করা শুরু করলো।
বিকালে………..
তিতাস অফিস থেকে বের হচ্ছিলো। এমন সময় প্র্যাকটিস রুম থেকে আওয়াজ আসলো তাই তিতাস ঐ দিকে গেলো আর গিয়ে যা দেখলো তাতে তিতাস অবাক…
তিতির বক্সিং প্রেক্টিস করছে।
তিতাস এক পলকে তিতির এর দিকে তাকিয়ে আছে।তিতির এর মুখে জমে থাকা ঘামের ফোটা মুক্তর মতো দেখাচ্ছে। ছোট ছোট চুল গুলো কপালে ঘামের সাথে লেগে আছে।চোখের কাজল লেপ্টে আছে।কি অপূর্ব লাগছে।
তিতির প্রেকটিস শেষ করে দরজার দিকে তাকাতেই তিতাস লুকিয়ে গেলো।
তিতির নিজের কাজে মনোযোগ দিলো।
তিতাসঃকেনো জানি না তবে আজ তোমাকে লুকিয়ে লুকিয়ে দেখতে কেমন এক আনন্দ লাগছে।নিজেই মনে মনে খুশি হলো।
তিতাস বের হয়ে গেলো।
৪দিন পর……………………….
এই চারদিনে টিম6 ডেভিল এর ড্রাগ ডিলিং এর একটা ট্রাককে জব্দ করেছে যদিও ডেভিলকে ধরতে পারেনি।
আর তিতাস! তিতাসও তিতির এর ভাবনায় মগ্ন।এর কারন তিতাস নিজেও জানে না তবে তিতির এর কথা ভাবতে তিতাস এর মনে এক অন্য রকম সুখের দোলা দেয়।
রাতে রুমে বসে তিতাস খাটে শুয়ে শুয়ে ভাবছে
তিতাসঃউফফ তিতাস তুই খালি তিতির এর কথা কেনো ভাবছস? পাগল হয়ে যাচ্ছিস!!!???
এমন সময় তিতাস এর ফোন বেজে উঠলো।
তিতাস হাতে ফোন নিয়ে দেখলো আকাশ ফোন করেছে।
তিতাসঃহ্যালো তিতির বলো?
আকাশঃস্যার আমি আকাশ।।
তিতাসঃউপপস সরি। বলো আকাশ
আকাশঃআসলে স্যার কাল আমরা মিনিস্টার স্যার এর পার্টিতে যাওয়ার,কথা। আর কাল আমাদের অফিসে একটা ফাইলও সাইন করতে হবে তাই ভাবছিলাম কাল আমরা সবাই রেডি হয়ে অফিসে গিয়ে কাজ শেষ করে দেন সবাই একসাথে পার্টিতে যাবো। আপনি কি বলেন স্যার?
তিতাসঃ হুম ঠিক বলেছো।এটাই করবো তাহলে কাল দেখা হচ্ছে।। আকাশঃজি স্যার।গুড নাইট।
তিতাসঃগুড নাইট।
তিতাস ফোন রেখে শুয়ে পড়লো।
পরেরদিন বিকালে……………….………….
আকাশ,নীল,শুভ আর তিতাস অফিসে চলে এসেছে। আজ ওরা সবাই ইনফরমাল ড্রেস পড়েছে। তিতাস ব্লাক কোর্ট,হোয়াইট শার্ট, হাতে কালো ঘড়ি,চুলে জেল দেওয়া।হিরোর থেকে কম লাগছেনা। আকাশ রেড কোর্ট পড়েছে, হাতে সিলভার ঘড়ি, নীল হোয়াইট শার্ট পড়েছে।স্লিভস গুলো একটু উঠিয়ে, হাতে কালো ঘড়ি,চুল সবাইকে করে,আর শুভ পড়েছে নীল রং এর শার্ট।
নীলঃউফফ এই প্রিয়া আর তিতির কোথায় এখনো আসছেনা???এতো টাইম লাগে?.
আকাশঃআরে মেয়েদের রেডি হতে অনেক সময় লাগে। তুমি বুঝবেনা।
তিতাসঃআপনার মনে হয় অনেক এক্সপেরিএন্স আছে মনে হচ্ছে।
শুভঃআরে থাকবেনা কেনো?আকাশ ভাই তো বিবাহিত উনার ওয়াইফ এমন করে তাই জানে।
আকাশঃহুমমম ভাই। ম্যাডাম এখন বাপের বাড়িতে তাই আজ আসতে পারলাম।নইলে রেডি হতে হতে পার্টি শেষ।
সবাই হেসে দিলো?????
প্রিয়াঃকি হলো আপনারা হাসছেন কেনো?
সবাই দরজার দিকে তাকালো প্রিয়া চলে এসেছে।
প্রিয়া সাদা রং এর একটা শাড়ি পড়েছে। ঠোটে গোলাপি লিপস্টিক, চোখে কাজল, কানে সাদা পাথরের দুল, চুল খোলা। অনেক সুন্দর লাগছে ওকে দেখতে।
নীল তো প্রিয়াকে দেখেই ফিদা।ওহহহ আপনাদের বলাই হয়নি নীল প্রিয়ার উপর বিগ সাইজ ক্রাশ।যদিও ওকে বলতে পারেনি কারন একটা ভয়। ও ভাবে যদি প্রিয়া ওকে ভুল বুঝে তাই বলতে পারে না।
নীল এখনো প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে আছে।
?????
প্রিয়াঃআপনারা সবাই কি নিয়ে কথা বলছিলেন?
শুভঃ তেমন কিছুনা।তোমাকে আজ অনেক সুন্দর লাগছে প্রিয়া।।
প্রিয়াঃধন্যবাদ স্যার।,??
নীলঃহুমমম,?????
আকাশঃপ্রিয়া, তুমি তো আছো তিতির কোথায়?
প্রিয়াঃও তো….
ঐ যে চলে এসেছে।
সবাই দরজার দিকে তাকালো
তিতাস দরজার দিকে তাকাতেই শেষ!????
তিতির আজ হালকা গোলাপি রং এর একটা শাড়ি পড়েছে। ঠোটে গেলাপি লিপস্টিক, চোখে গাঢ় কাজল, কানে ছোট ছোট দুল, চুল খোপা করা,তাতে বেলি ফুলের মালা।
তিতিরকে এই রূপে দেখে তিতাস মুগ্ধ। কারন এতোদিন তিতিরকে ফর্মাল লুকে দেখেছে। আজ প্রথম শাড়িতে দেখে তিতাস অবাক!
তিতাসঃউফফ এই মেয়েকে আজ এতো সাজতে কে বলেছে? সবাই তো ওকেই দেখবে। পুরো গোলাপ ফুলের মতো লাগছে।
তিতির ওদের কাছে এগিয়ে এলো।
তিতিরঃকেমন আছেন সবাই?
আকাশঃআমরা ভালো।
শুভঃতিতির তোমাকে তো আজ পরীর মতো লাগছে।কাকে ঘায়েল করবা?
তিতিরঃশুভ!!!!
শুভঃ???
তিতাস এর কেমন যেনো লাগছে।আসলে জলছে।আপনারা তো বুঝতেই পারছেন???
আকাশঃওকে চলো কাজ শেষ করে যায় লেট হয়ে যাচ্ছে।
নীলঃহুমমমমম।
সবাই ফাইলে সাইন করে গাড়িতে বসে পড়লো।
তিতাস এর পাশে বসেছে আকাশ।
পিছনে তিতির আর প্রিয়া আর আর তার পিছনে নীল আর শুভ।
কিছু সময় পর ওরা পার্টিতে পৌছে গেলো।
ওরা পার্টিতে ঢুকতেই মিনিস্টার ওদের স্বাগতম জানালো।
মিনিস্টার ঃওয়েলকাম ওয়েলকাম। আপনাদের জন্য ওয়েট করছিলাম।
তিতাসঃহ্যালো স্যার।
সবাই কুশল বিনিময় করলো।।
মিনিস্টার ঃইনি হলো আমার ওয়াইফ।
মি.ওয়াইফঃআসসালামু আলাইকুম।ভালো আছেন?
তিতাসঃজি
…আপনারা ভিতরে আসুন।
ওরা ভিতরে ঢুকলো।
মিনিস্টার ঃ আশা করি আপনারা পার্টি ইনজয় করছেন?
তিতিরঃজি স্যার আমরা ঠিক আছি।
শুভঃ তিতির চলো একটু নাচি।
তিতিরঃনা আমি নাচবো না।
শুভঃ আরে চলো তো।
তিতিরকে টেনে নিয়ে গেলো।
তিতাস এর তা মোটেও ভালো লাগলো না।খুব রাগ লাগছিলো।
নীলঃপ্রিয়া কিছু মনে না করলে চলো আমরা একটু ডান্স করতে পারি?
প্রিয়াঃসিউর স্যার।
নীল আর প্রিয়া ওদিকে নাচছে আর শুভ এবং তিতিরও নাচছে।
তিতাস দেখছে আর ফুলছে।
নাচতে নাচতে শুভর একটা কল আসে তাই শুভ চলে যায়। তিতির ডান্স ফ্লোরে একা একা নাচছিল। তিতাস তিতির এর কাছে এলো।
তিতাসঃমেই আই?(হাত তিতির এর দিকে বাড়িয়ে)
তিতির হেসে হাত বাড়ালো।
ডান্স ফ্লোরে গান বাজতে লাগলো।
” kese kahoo ishq meh tere kitna hoo betaab meh.
Akho se akho meh leke churao tere waste…..
…………..
.……………
Vaja tum hoo
Oooooooo
Vaja tum hooooo”
হটাৎ তিতাস দেখলো তিতির খুব আনকমফারটেবল ফিল করছে।
তিতাসঃআর ইউ অলরাইট তিতির?
তিতিরঃআসলে স্যার আমার. …আমার শা..শাড়ির পিন খুলে গেছে।
তিতাসঃওয়াট!!!!
তিতিরঃস্যার প্লিজ কিছু করেন।
তিতাসঃ আচ্ছা দাড়াও।।
তিতাস মিনিস্টার এর ওয়াইফ এর কাছে গেলো তিতাসঃম্যাম
…জি??
…আসলে…তিতাস সব কথা ওনাকে বললো।
….আরে সমস্যা নাই তিতির তুমি আসো আমার সাথে আমার রুমে চলো।
তিতিরঃওকে ম্যাম।
তিতির চলে গেলো ওনার সাথে।
মি.ওয়াইফ ঃএটা আমার রুম তুমি এখানে ঠিক করে নাও কেউ আসবেনা।
তিতিরঃওকে ম্যাম।
কিছুটা সময় পর তিতির শাড়ি ঠিক করে পার্টিতে চলে এলো।
মিনিস্টার ঃআসুন আপনারা চলুন আজ আপনাদের সাথে ডিনার করবো আর কথা বলবো।
সবাই ডাইনিং টেবিলে গেলো।
মিনিস্টার ঃতো অফিসার্স আপনাদের কথা আজ শুনি। আপনাদের কার কি ইচ্ছা আছে?
অফিসার তিতির আপনি শুরু করুন।
তিতিরঃআমার ইচ্ছা আমার দেশের সেবা করা।দেশের দুশমনদের দমন করা আর এই লক্ষে আমি সিবিআই এ এসেছি।
এরপর সবাই সবার ইচ্ছা প্রকাশ করলো।
সবার শেষে তিতিরকে প্রশ্ন করা হলো।
তিতিরঃআমার ইচ্ছা? আসলে ঢাকার উত্তরায় একটা জায়গা নিয়েছি সেখানে একটা আলিশান ঘর বানাবো আর বাবা মাকে উপহার দিবো। টাকা জমাচ্ছি তার জন্য?
মিনিস্টার ঃখুবই ভালো।
অনেক সময় থাকার পর ওরা সবাই চলে আসলো গাড়ির পাশে এসে
নীল ঃতোমরা যাও আমি একটু পরে আসবো।একটা কাজ আছে।
তিতিরঃওকে।
প্রিয়াঃতিতির তুই যা আমি আজ আপুর বাসায় যাবো।
তিতিরঃহটাৎ?.
প্রিয়াঃএমনি যেতে মন চাইলো।
তিতিরঃওহহহহ।
আকাশঃআমিও যেতে পারবোনা ম্যাডাম তার বাসায় যেতে বলেছে।
তিতাসঃতুমিও??
আকাশঃহুমমৃ
ওরা সবাই চলে গেলো।
তিতিরঃশুভ এবার তুইও কি যাবি?
শুভঃ আসলে আমাকেও যেতে হবে হটাৎ আমার এক বন্ধু ফোন করেছে।একটা জরুরী কাজ আছে। তাই আমিও যাচ্ছি। বাই।
শুভ চলে গেলো।
কি আর করা তিতির আর তিতাস গাড়িতে উঠে পড়লো।
তিতাস গাড়ি চালাচ্ছে।
তিতিরঃধন্যবাদ স্যার।
তিতাসঃকেনো?
তিতিরঃআজ পার্টিতে আপনি যদি…
তিতাসঃআরে কি বলো আমি শুধু আমার দায়িত্ব পালন করেছি।তেমন কিছু না।
তিতির হালকা হাসলো।
তিতির প্রকৃতি দেখতে ব্যসত হয়ে গেলো।আর তিতাস তিতিরকে দেখতে লাগলো।
তিতাসঃ আচ্ছা তিতির তুমি কখনো কারোর প্রেমে পড়েছো?বা কাউকে ভালেবেসেছো?
তিতির অবাক হয়ে তিতাস এর দিকে তাকালো?
তিতাসঃনা এমনিই বললাম। বলো
তিতির ঃ(হালকা হেসে) জি স্যার আমি প্রেমে করেছি ভালোও বেসেছি।
তিতির এর কথা শুনে তিতাস এর মনে ব্যাথা লাগলো।
চলবে………
#মাস্টার মাইন্ড
৪ র্থ পর্ব
নিলাঞ্জনা রহমান
তিতাস গাড়ি চালাচ্ছে কিন্তু কেমন জানি ব্যাথা লাগছে।
তিতাসঃকা..কাকে ভ..ভালোবাসো?(কাপা কাপা কণ্ঠে)
তিতিরঃস্যার আসলে না ওর নাম বলতে লজ্জা লাগছে????।তিতাসঃতবুও বলো। আমিও শুনে দেখি।(অনেক কষ্টে কথা বলছে)
তিতিরঃবলতাম?
তিতাসঃহুমমম
তিতিরঃঠিক আছে। তার নাম হলো..
তিতাসঃহুমম??
তিতিরঃতার নাম হলো ভূতত!!????
তিতাসঃমানে???(অবাক হয়ে)
তিতির হেসেই যাচ্ছে। ??
তিতাস বুঝতে পারলো তিতির মজা করছে।।তিতাসঃতিতির!!!!
তিতিরঃসরি,সরি স্যার কি করবো বলেন আপনি এমন প্রশ্ন করলেন যে তাই। আসলে স্যার আমার দ্বারা প্রেম ট্রেম হবে না।আপনি তো বলেন আমি বাচাল পাগলি মেয়ে আমাকে ভালোবাসবে এমন কেউ নেই।আর আমিও এসব ভাবি না।
তিতাসঃতোমার মতো বাচাল,পাগলি মেয়েকে নিয়ে আর কেউ না ভাবলেও আমি ভাবি৷ কেনো ভাবি তা জানি না তবে ভাবি।(মনে মনে)
তিতাস গাড়ি চালাচ্ছে। আর তিতির বাইরে তাকিয়ে আছে৷ আর ভাবছে
তিতিরঃআমার এমন কেনো মনে হচ্ছে প্রিয়া মিথ্যা বলেছে।ও অন্য কোথাও গেছে মনে হচ্ছে। নাকি আমি বেশি বেশি ভাবছি।
তিতাসঃতিতির!! তিতির!!!!!
তিতাস এর ডাকে তিতির এর ধ্যান ভাঙে।
তিতিরঃজি স্যার।
তিতাসঃতোমার বাসায় চলে এসেছি।
তিতিরঃওহহহ সরি খেয়াল করিনি । ওকে স্যার ধন্যবাদ স্যার। বাই।
তিতাসঃহুমম বাই।
তিতির চলে গেলো।তিতাস তিতির এর যাওয়ার পানে তাকিয়ে আছে।
তিতির খুব গভীর চিন্তায় মগ্ন যদি একবার পিছনে তাকাতো তাহলে দেখতো একজন তার পিছনে তাকানোর অপেক্ষায় আছে।
তিতির ঢুকে গেলো। তিতাসও চলে গেলো।
পরেরদিন……………………………
তিতির অফিসে ঢুকলো। সবাই যে যার মতো কাজ করছে। তিতির আকাশ এর কাছে গেলো।
আকাশ ভাই কেমন আছেন?
আকাশঃঐ তো ভালো। আজকে ম্যাডাম গাজরের হালুয়া বানিয়েছে তোমার তো প্রিয়। তাই তোমার জন্যও দিয়েছে
তিতিরঃকি বলেন!!!আসলে ভাবি আমাকে অনেক আদর করে।???
আকাশঃ☺☺☺
তিতির ঃতার ডেস্কে গেলো।।তিতির আর প্রিয়ার ডেস্ক পাশাপাশি ।
তিতিরঃপ্রিয়া। কিরে কেমন আছিস।
প্রিয়াঃঐ তো আছি
তিতিরঃকাল আপুর বাসায় কেমন লাগলো।
প্রিয়াঃআ…. আপুর ব..বাসায়? কি আর হবে ভালো লেগেছে।কথা বললাম, ম..মজা করলাম আর কি???।
তিতিরঃহুমমম।আমার কেনো মনে হচ্ছে প্রিয়া,মিথ্যা বলছে।
তিতির তার কাজে মনোযোগ দিলো।
বিকালে…….
তিতির আর শুভ ফাইল নিয়ে কাজ করছে।
তিতিরঃকি হলো আজ নীল কেনো আসলো না?
শুভঃ ও কে ফোন করে ছিলাম। বললো হটাৎ শরীর খারাপ লাগছে তাই আসছে না।
তিতিরঃকিছু সিরিয়াস?
শুভঃবললো তো তেমন কিছু না। হালকা মাথা ব্যাথা। তবুও আমি পারলে দেখে আসবো।
তিতিরঃহুমমম।
আবার কাজে মনোযোগ দিলো।
২দিন পর…………………
আফতাব পিয়নকে ফোন করলো
আফতাবঃহ্যালো।টিম 6 কে ১০ মিনিট এর মধ্যে কনফারেন্স রুমে আসতে বলো।
১০মিনিট পর……………..
সবাই রুমে উপস্থিত।
আফতাবঃহ্যালো গাইস।(রুমে ঢুকতে ঢুকতে)
সবাই ঃহ্যালো স্যার।
আফতাব প্রজেকটর এ একটা ছবি দেখালো।
আফতাবঃএটা হলো আমাদের দেশের কিছু প্রত্নতাত্ত্বিক সম্পদ। যা এতোদিন জাদুঘরে ছিলো।কিন্ত জাদুঘর এর কিছু নির্মান কাজ চলছে যার কারনে এসব জিনিস অন্য এক জায়গায় শিফট করা হচ্ছে। আর এ শিফট করার সময় আমাদের টিম এগুলোকে নিরাপত্তা দিবে। এখানে প্রায় ৫০ কোটি টাকার জিনিস আছে। আর আমি ভুল না হলে ডেভিল এর টিম এসব জিনিস চুরি করতে আসতে পারে তাই আমি চাই যাতে তোমরা নিরাপদে এর ট্রাকটি নির্দিষ্ট স্থানে পৌছাতে কাজ করো। এই ট্রাকটি যাতে ঠিক জায়গায় পৌছে তা তোমাদের দায়িত্ব।
ইয়েস স্যার।!!!
তিতাসঃস্যার আমার একটা প্লান আছে।
আফতাবঃহুমম বলো।
তিতাসঃস্যার আমরা একি রকম দুটি ট্রাক নিবো৷ একটিতে আসল মাল আরেকটি ফাঁকা। আমি যদি ঠিক হই ডেভিল এর লোক আমাদের ট্রাক এর উপর নজর রাখতে পারে।তাই আকাশ,শুভ আর প্রিয়া একটা ট্রাক, যেটিতে কোনো মাল থাকবেনা তা নিয়ে সামনে দিয়ে বের হয়ে চলে যাবে।আর আমি,নীল,তিতির আসল ট্রাক নিয়ে পিছন দিয়ে যাব।এতে আমরা সেফলি যেতে পারবো।কারন ওরা তো নকল ট্রাক এর পিছনে থাকবে। আর আমরা আমাদের কাজ করে ফেলবো।
আফতাবঃগুড আইডিয়া।এটা করা যায়। তাহলে সব আমি মেনেজ করে দিবো।আর কালকেই আমাদের মিশন হবে।আর এই প্লান যাতে আর কেউ না জানে।
ইয়েস স্যার।
আফতাবঃমিটিং ইস ওভার!!
আফতাব চলে গেলো।
বাকিরাও যার যার কাজে চলে গেলো।
পরেরদিন……………..
সবাই মিশন এর জন্য রেডি হচ্ছে। সব ঠিক ঠাক করছে।
তিতির গুলি চেক করে পকেটে রাখলো।
তিতিরঃশুভ???ও কোণায় দাড়িয়ে কি করছে?
মনে হচ্ছে কারো সাথে কথা বলছে।
তিতির শুভর কাছে গেলো।
শুভঃ আমি বুঝেছি। এখন রাখছি।
শুভ ফোন রেখে পিছনে তাকাতেই ভয় পেলো।
শুভঃ তি..তিতির তু…তুমি?
তিতিরঃহুমমম আমি।কার সাথে কথা বলছিলে??
শুভঃআ…আমি??আসলে আসলে এক বন্ধুর সাথে কথা বলছিলাম।
তিতিরঃতা ঠিক আছে কিন্তু কোণায় এসে কেনো কথা বলছো?
শুভঃ আরে ঐ দিকে নেটওয়ার্ক ছিলো না তাই এদিকে এসেছি।আর তুমিও কি শুরু করলা।তদন্ত শেষ করে চলো দেরি হয়ে যাচ্ছে।
শুভ চলে গেলো।
তিতিরঃ কিন্তু ঐ দিকে নেটওয়ার্ক তো ঠিক আছে।কি হচ্ছে এসব??
তিতির আর ভাবলোনা ট্রাকে বসে পড়লো।দুই ট্রাকে সবাই বসে গেলো।
প্রথমে প্রিয়াদের ট্রাক চলে গেলো।আর পিছন দিয়ে তিতাসদের ট্রাক।
তিতাসদের ট্রাক চলছে।তিতির ট্যাব এ কাজ করছে । প্রায় ১ঘন্টা ট্রাক চালানোর পর তিতাস ট্রাক থামালো।
হটাৎ গাড়ি থামানোর কারনে নীল জিজ্ঞাসা করলো স্যার কি হয়েছে?
তিতিাস সামনে তাকাতে বললো।
সবাই সামনে তাকালো দেখলো একজন পুরুষ আর মহিলা রাস্তায় রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে।
তিতিরঃস্যার!!!
তিতাসঃজলদি নামো। আমাদের ওদের হেল্প করতে হবে।
ওরা তিনজন নেমে গেলো।
তিতাস পুরুষ এর কাছে আর তিতির মহিলার কাছে গিয়ে তাদের দেখতে লাগলো।
নীল গাড়ির পাশে দাঁড়িয়ে ছিলো।
তিতাস আর তিতির ঐ দুজনকে দেখতে লাগছিলো হটাৎ দুজনেই একসাথে তিতির আর তিতাস এর মুখে কি একটা স্প্রে করে দে।তিতির আর তিতাস বাঁচবার চেষ্টা করলেও পারেনি। আর বেহুশ হয়ে রাস্তায় লুটিয়ে পড়ে।
ঐ দিকে নীল এসব দেখে আসতে লাগলে পিছন থেকে কে যেনো তার মুখেও স্প্রে করে দে আর নীলও বেহুশ হয়ে যায়।
মুখের উপর ঠান্ডা পানি পড়তে তিতাস এর হুশ আসে।আস্তে আস্তে চোখ খুলে।
মাথা খুব ব্যাথা হচ্ছে । তিতাস সামনে তাকিয়ে দেখে নীল আর তিতির এর ও সেম অবস্থা। পাশে তাকিয়ে দেখে প্রিয়া তার পাশে।শুভ আর আকাশও আছে।
তিতাসঃতোমরা এখানে??
প্রিয়াঃস্যার আমরা অনেকক্ষন ধরে আপনাদের সাথে যোগাযোগ করার ট্রাই করছিলাম কিন্তু পারছিলাম না তাই আপানাদের মোবাইল ট্র্যাক করে এখানে এসেছি। আর এখানে এসেই দেখি ট্রাক নেই।শুধু এই চিঠিটা পেয়েছি।
তিতাস প্রিয়ার হাত থেকে চিঠিটা নিলে।
প্রিন্ট করা চিঠি।
তিতাস পড়তে লাগলো…..
“হ্যালো টিম6। কেমন দিলাম।মজা লাগছে তাই না।তোমাদের এতো ভালো একটা প্লান আমি নষ্ট করে দিয়েছি। সো সরি!!কিন্তু কি করবো বলো ৫০কোটি তো কম না। তাই কিভাবে যেতে দি বলো।তাই তোমাদের কষ্ট দিলাম।মাথা ঘুরাচ্ছে তাই না?,যাও লেবুর শরবত খেও ঠিক হয়ে যাবে। বাই!!!
ইউর লাভিং
ডেভিল???
ড্যাম ইট!!!!(চিৎকার দিলো তিতাস)
পরেরদিন সকালে………..
কনফারেন্স রুমে………….
সবাই চুপচাপ বসে আছে। সবার মুখে হতাশা।
তিতির এর মাথা এখনো ব্যাথা করছে।নীল এর মাথায় হাত।আকাশ টেবিলের উপর থাকা গ্লোবটি ঘুরাচ্ছে।প্রিয়া আর শুভ মুখে হাত দিয়ে ভাবছে।আর তিয়াস ঘটে যাওয়া কথা ভাবছে।
আফতাব আসলো।
সবাই দাড়িয়ে গেলো।
আফতাব এর চেহারা দেখেই বোঝা যাচ্ছে তার মাথা খুবই গরম হয়ে আছে।
আফতাব এসেই নিউসপেপারটা টেবিলে ছুড়ে মারলো।
আফতাবঃদেখো কি লিখেছে এই রিপোর্টাররা।আমরা নাকি ঠিক মতো কাজ করতে পারি না। আমরা আমাদের কাজের প্রতি অমনোযোগী। ড্যাট ইট!!!আমাদের এই ফুল প্রুফ প্লানকে শেষ করে দিলো। আমি বুঝতে পারছিনা কি করে সম্ভব? আমি নিতে পারছিনা।
আফতাব চলে গেলো।
সবাই তখনো দাড়িয়ে আছে।
আকাশঃআমি এটা বুঝতে পারছিনা প্লানটা তো শুধু আমরা জানতাম তাহলে ডেভিল কি করে জানলো
তিতিরঃআমিও বুঝতে পারছিনা।
তিতাসঃহয়তো আমাদের মধ্যে কেউ একজন লিক করেছে।
তিতিরঃকি বলছেন এটা আমরা…???
তিতাসঃহুমমমমম।আমাদের মধ্যেই হয়েছে।
সবাই তখনো দাড়ানো অবস্থায়। কনফারেন্স রুমটা শান্ত হয়ে রয়েছে। কারো মুখে কথা নেই।সবাই একে অপরকে দেখছে।
একে অপরের দিকে তাকিয়ে আছে।
চলবে…………