বউ_হবে_আমার??,পর্ব_০২

0
2706

বউ_হবে_আমার??,পর্ব_০২
writter_সোহানুর_রহমান_সোহান

—ভাইয়া এতো মানুষের ভিতরে কিভাবে জামাকাপড় খুলবো?(মাথা নিচু করে)
—কিহ জামাকাপড় খুলতে যাবেন কেন?(সোহান)
—আপনি তো নিজেই বললেন তাদের সবকিছু খুলে দেখাতে হবে।
চারুর কথা শুনে সোহান কিছুক্ষন চারুর দিকে তাকিয়ে থাকার পর খুব জোরে হাসতে শুরু করলো।পাশ থেকে জলের বোতলটা তার দিকে এগিয়ে দিলো।চারু জলটুকু মুখে দিতেই,,
—চারু তোমাকে আমি ওইরকম খারাপ কিছু বলিনি।আমি জানতে চাইছি তোমার সাথে এমন কি ঘটেছে যেটার জন্য তুমি দেহ বিক্রি করবে?
চারু সোহানের কথাই খমকে দাড়ালো।হটাৎ এমন একটা প্রশ্ন শুনে তার ভিতরটা কেমন যেন একটা অস্থিরতার কাজ করছিলো।
—তেমন কিছুনা।আমার এটি পছন্দ হয়ে তাই।
—তোমার পছন্দ হলে তো হবে না।আচ্ছা এটা বলো তুমি কয়জনের সাথে রাত কাটিয়েছো?
—অনেকের সাথে(চোখ ভরা জল নিয়ে)
—কতজন তোমাকে টাকার বিনিময়ে ভোগ করেছে?
—শতশত লোক(হাতদুটো শক্ত করে চেপে রেখে)
—তোমার সাথে কি কখনো একসাথে একধিক কেউ মিলন করেছে?
এবারের কথাটা শুনে চারু আর কান্নাটা চেপে রাখতে পারলো না।চুপিচুপি কান্নাটা তার বেড়ে গেলো।ভাবতেও পারেনি তাকে এভাবে এতোটা নিচু হতে হবে।নিজের চোখদুটো মুছে নিজেকে ঠিক করে নিলো চারু।

—দেখুন আপনি আমাকে এভাবে অপমান করতে পারেন না।আমি যার সাথে থাকি না কেন তাতে আপনার কি?(ফুফিয়ে ফুফিয়ে)
—তাহলে মিথ্যা বলছেন কেন?সত্যিটা বলুন?
—আপনার কাজ আমাকে ট্রেনিং দেওয়া এর বেশী কিছু কেন জানতে চাইবেন?
—এটা আমাকে জানতেই হবে।আমি কখনো কাউকে বিনা কারনে তার পবিত্রতা নষ্ট করাতে পারিনা।
—আমি ট্রেনিং নিতে রাজি তবুও কিছু বলতে পারবো না।
সোহান হতাশ হয়ে অন্যদিকে মুখ ফিরিয়ে নিলো।এতোকিছু বলার পরেও কেন মেয়েটি তার মিথ্যা কথাগুলো সীকার করছিলো না?এবার তাকে একটু বেশি খারাপ হতে হবে।
—চারু ধরো তোমাকে আমি কারো সাথে পাঠালাম তখন হটাৎ তার সাথে যাবার পর তোমার কিছু হয়ে গেলো তখন আমার কি হবে?
কথাটা শুনে চারু কিছু বলছে না।তাকে আর কতো অপমান সহ্য করতে হবে?এই ছেলেটা তাকে কেন এতো প্রশ্ন করছে?চেয়ার থেকে উঠে গিয়ে একটা নিরব গাছের নিচে চলে গেলো।চোখটা বন্ধ করে গাছের সাথে হেলান দিয়ে বসে রইলো।সোহান চারুর পাশে গিয়ে তার মায়াবী মুখটা দেখতে লাগলো।মেয়েটা কেন এতো মায়াবী?চুপ করে সে ওর পাশে বসে পড়লো।
—আপনি জানতে চান না আমি কেন এমন?তাহলে শুনুন ঘটনাটা,,
,
আমি চারু।এবার অনার্সে পড়াশোনা করছি।পিতাবিহিন একটা ছোট্ট পরিবারে আমার জন্ম।

মা এ হলো আমার সব।টিউশনির টাকা দিয়ে আমাদের কষ্টের সংসারটা খুব সুন্দরভাবেই কেটে যেতো।কিন্তু কথাই আছেনা গরীবের ঘরে নুন আনতে পান্তা ফুরাই।ঠিক তেমনি একটা অসহ্য রোগ আমাকে বাচিয়ে রাখতে চাইনা।আমার মাথাই প্রচন্ড ব্যথা করে যেটা কখনো সাড়াতে পারিনি।টাকা পয়সা নেই বলে কোনদিন হসপিতালে যেতে পারিনি।কোনরকম বাচার জন্য বাড়ির পাশের একটা দোকান থেকে 2 টাকার ব্যথার বড়ি কিনে খেতাম।কিন্তু সেই দোকানদার খুব খারাপ ছিলো।সবসময় আমাকে খারাপ নজরে দেখতো।হটাৎ
.
কথাগুলো বলতেই থেমে গেলো সে।সোহান চারুর থেমে যাওয়াতে খেয়াল করলো মেয়েটি তার বুক ভিজিয়ে দিয়েছে।হাতদুটো সে নিজেই ধরে রেখেছে।তার মনে হচ্ছিলো মেয়েটি যেন তার কাছে অভিমান করছিলো।রুমাল বের করে চারুর চোখদুটো মুছে দিয়ে আবারো তার বুকে রেখে দিলো।
—তারপর কি হয়েছিলো?
—হটাৎ একদিন সন্ধাই আমার মাথাটা প্রচন্ড ব্যথাই কাতর হয়ে যাই।অনিচ্ছা সত্তেও আমি ওই দোকানে চলে যাই।খুব ভয় করছিলো কিন্তু আমি তখন নিরুপাই ছিলাম।ধীরে ধীরে দোকানে গিয়ে দেখি দোকানটা একদম ফাকা।দোকানদার আমাকে দেখেই চোখ বড় বড় কযে তাকাচ্ছিলো কিন্তু পরক্ষনেই বললো তার কাছে নাকি ঔষুধ নেই।আমার তখন মাথাই কাজ করছিলো না।আমি তখন যেকোন ব্যথা কমানোর ওষুধ

চাইতেই সে বললো একটা ওষুধ আছে।আমি চাইতেই সে গ্লাসে মিশিয়ে দিলো।কিন্তু সেটি খাবার পর হটাৎ করেই আমি মাটিতে পড়ে বেহুশ হয়ে গেলাম।
সোহান চারুর কথাগুলো শুনার পাশাপাশি তার চুলগুলো ঠিক করে রাখছিলো।সে চারুর শরীরের কাপুনিটা টের পাচ্ছিলো।এই শীতেও চারুর শরীরের প্রচন্ড জ্বর এর আভাস পাচ্ছিলো।ফোলা ফোলা লাল চোখদুটোর দিকে তাকিয়ে আবারো সে চারুর কথাই মনোযোগ দিলো।
—বেহুশ হবার পরে আমি বুঝতে পারিনি কি হয়েছিলো আমার সাথে।আমি যখন ঘুম থেকে উঠলাম তখন নিজেকে আবিষ্কার করলাম একটা ঘরে।কিন্তু পরক্ষনেই নিজের দিকে তাকিয়ে নিজেকে বিষ্ষাষ করতে পারছিলাম না।নিজের শরীর শুধু একটা চাদর দিয়ে ঢাকা ছিলো।তখন নিজেকে শেষ করার অনেক চেষ্টা করেছি কিন্তু পারিনি।যখন নিজের ইজ্জতটুকু রাখতে পারলাম না তখন ভালো সেজে লাভ কি?
.
চারুর মুখ দিয়ে আর কিছু বেরোলো না।এদিকে শেষ কথাগুলো শুনে সোহান নিজের চোখের কোনার পানিটুকু মুছে নিলো।সে বোঝেনা কি করে মানুষ এতো খারাপ হতে পারে?একটা মেয়েকে কিভাবে ভোগের পাত্র বানিয়ে নেই।চারুর ব্যথাগুলো সে বুঝতে পেরেছে।কিছুক্ষন দুজনেই চুব করে রইলো।
চারুকে বুক থেকে সরিয়ে দাড়িয়ে পড়লো।তার মনে হলো চারুর এখন একটা মানুষের ভালোবাসা প্রয়োজন।

তবে চারুকে তার আসল পরিচয় বুঝতে দেওয়া যাবেনা।
—চারু তুমি অবশ্যই পারবে শুধু তুমি নিজের উপর বিষ্ষাশ রাখে।
—আচ্ছা ভাইয়া তাহলে কি আমাকে নিবেন?(চোখমুখ মুছতে মুছতে)
—হ্যা তুমি এখন আমার সাথে একটু ঘুরে আসবা।
—কোথাই যাবো?
—তোমাকে কিছু পরিবেশের মেয়েদের দেখাবো তারপর তোমাকে আমার বাসাই নিয়ে যাবো।
—কিন্তু…..
—কোনো কিন্তু না তবে এখানে এভাবে একলা একটা ঘুরবে ন।তাহলে বিপদ হতে পারে।এই নাও আমার হাতে হাত রাখো।
হাতটা ধরবো কি না?কথাটা ভাবতেই চারুর মনে পড়ে গেলো তাকে সবাই ছুতে পারবে তাহলে হাতটি ধরলে কি এমন হবে?কাপাকাপা হাত দুটো অনিচ্ছা সত্তেও সোহানের হাতে রেখে সামনে এগোতে শুরু করলো।হাতদুটো সোহান চেপে ধরতেই চারু কেমন যেন একটা শিহরন অনুভব করলো।সোহানের চোখদুটো তার মনে একটা আশার আলো খুজে দিয়েছে।পথে হাটছে অথচো তাদের দুজনেরই মনে হচ্ছে না তারা এভাবে একসাথে অপরিচিত হয়েও চলছে।চারুর হাতের আঙুলগুলো সোহান ইচ্ছে করেই তার আঙুরের মাঝে ঢুকিয়ে নিলো।মুচকি হাসি দিয়ে সে চারুর দিকে তাকাতেই চারু লজ্জাই মাথা নিচু করে নিলো।
দুজনেই খুশি মনে সামনে এগোতেই রইলো।সোহান একটু দুষ্টামি করে চারুর হাতগুলো বারবার একবার এদিক আবার ওদিক করছে।
কিছুক্ষন হাটার পর চারুর কথাই সোহান বাস্তবে ফিরে আসে।
—ভাইয়া দেখুন ওই খানে কি হচ্ছে?
—কি হচ্ছে?
—দেখুন মেয়েটার চারপাশে দাড়িয়ে ছেলেরা ডিস্টার্ব করছে।ওরাতো মেয়েটার ওড়নাটা.,,..
.
চলবে,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here