রাগী জেদী মেয়েটি ?,পার্ট-০১

0
1365

রাগী জেদী মেয়েটি ?,পার্ট-০১
-Tahir Ahmed Dip

-ঠাসসসসসস……
.
-তোর সাহস কিভাবে হয় আমাকে প্রোপজ করার?তুই কি করে ভাবলি আমার মতো এতো সুন্দরী আর হাইক্লাস ফ্যামিলির মেয়ে তোর মতো একটা আবুলকে ভালোবাসবে বলেই হাসতে শুরু করে আদ্রিতা….
.
-এসব কি বলছো?তুমি তো আমাকে ভালোবাসো।তুমি মজা করছো তাই না….??(ছলছল চোখে)
.
-হাহাহা এই আদ্রিতা ভালোবাসবে,তাও তোর মতো একটা ছোটলোক কে!!শোন ওটা শুধু টাইম পাস ছিলো।অনেক অ্যাটিটিউড ছিলো তোর তাই না?ভালো স্টুডেন্ট বলে কাওকে পাত্তা দিতি না।তোর অহংকার ভাঙার জন্যই তোর সাথে ভালোবাসার অভিনয়টা করেছি বলেই আদ্রিতা হাসতে শুরু করে অন্যদিকে দ্বীপ ছলছল চোখে তাকিয়ে থাকে ওর দিকে।ওর কিছুতেই বিশ্বাস হচ্ছে না আদ্রিতার কথাগুলো…..
.
-প্লিজ এভাবে ইয়ার্কি করো না। আমার সত্তিই অনেক কষ্ট হচ্ছে… (দ্বীপ)
.
-হু….তোর মতো ছোটলোকের সাথে কথা বলাই বেকার।এখনো দাড়িয়ে আছিস কেন?সামাব্য লজ্জাও নেই নাকি তোর?যা এখান থেকে…..(আদ্রিতা)
.
-দ্বীপ চুপচাপ ক্লাস থেকে বেড়িয়ে যায়। পুরো ক্লাসের সবাই ওর দিকে তাকিয়ে আছে। কারো চোখে ওর প্রতি সমবেদনা কারো চোখে তাচ্ছিল্যের হাসি।
.
-ক্লাস থেকে বেড়িয়ে আসার পর বড্ড কষ্ট হতে থাকে ওর।আদ্রিতা ক্লাসের সবার সামনে এভাবে ওকে অপমান করলো কিন্ত কিছুদিন আগেও এই মেয়েটা ওকে বারবার ভালোবাসি বলে বলে পাগল করে দিতো।চলুন ফিরে যাই ১ মাস আগে….
.
-বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান দ্বীপ।পুরো নান তাহির আহম্মেদ দ্বীপ।ওর মা গৃহিণী আর বাবার পরিচয় পরে জানতে পারবেন।যাইহোক একমাত্র সন্তান হওয়াতে বাবা-মায়ের বেশ আদরের ছেলে ও। পড়াশোনাতেও যথেষ্ট ভালো।ক্লাসের ফার্স্ট বয়। প্রতিটা এক্সামেই দ্বীপ ফার্স্ট হয়। প্রতিদিনের মতো আজকেও ও ব্রেকফাস্ট করে কলেজে যাবার জন্য তৈরি হচ্ছে….এমন সময়…
.
-আম্মু আম্মু…..(দ্বীপ)
.
-কি হলো বাবা আমাকে ডাকছিস কেন??(দ্বীপ)
.
-আম্মু আমার চশমাটা কোথায়?আমার চশমাটা তো দেখছি না….. (দ্বীপ)
.
-আরে ওই দেখ টেবিলের উপর রাখা আছে৷.. (দ্বীপের মা)
.
-ওহ থ্যাংকস আম্মু……আচ্ছা আমি চলি…(দ্বীপ)
.
-শোন তোর বাবাকে বলি ড্রপ করে দিতে….(দ্বীপ)
.
-না আম্মু আমি হেটে হেটেই যেতে পারবো।আর ভার্সিটি তো মাত্র ১০ মিনিটের দুরত্বে।(দ্বীপ)
.
-আচ্ছা বাবা যা….সাবধানে যাস।(দ্বীপের মা)
.
-ওকে আম্মু বায়….(দ্বীপ)
.
-দ্বীপ হেটে হেটে ভার্সিটিতে চলে যায়।ক্যাম্পাসে সবাই বসে বসে আড্ডা দিচ্ছে।দ্বীপ চুপচাপ ক্লাসে চলে যায় কিন্ত ক্লাসে যেতেই ও পুরো চমকে ওঠে….
.
-জিন্স আর শার্ট পড়া একটা মেয়ে ওর সীটে বসে আছে।দ্বীপ এই সীটে বসতেই কমফোর্ট ফীল করে কারণ এখান থেকে স্যারদের কথা বেশ ভালোভাবে বোঝা যায়।তাই দ্বীপ ওর কাছে গিয়ে……
.
-এক্সকিউজ মি!এটা আমার সীট। আপনি দয়া করে অন্য একটা সীটে বসুন…..(দ্বীপ)
.
-ওহ তাই নাকি আপনার সীট…কোথায় আমি তো কোথাও আপনার নাম দেখতে পারছি না….(আদ্রিতা)
..
-আমার নাম লেখা নেই কিন্ত আমি অল টাইম এখানে বসি সো এটা আমার চেয়ার।আপনি প্লিজ অন্য কোথাও বসুন…..(দ্বীপ)
.
-সবসময় বসলেই কি চেয়ারটা আপনার নাকি হু?আমি এখান থেকে উঠছি না।গট ইট??(চোখের দিকে তাকিয়ে)
..
-দ্বীপ আর কথা না বাড়িয়ে চুপচাপ অন্য সীটে গিয়ে বসে পড়ে।মেজাজ টা ভীষণ বিগড়ে আছে তাই ও খাতা বের করে আদ্রিতার একটা ছবি আকেঁ। দুটো বড়বড় শিং আর একটা লেজ দিয়ে। ছবিটা দেখে দ্বীপ নিজেই হাসতে শুরু করে রাগ ও অনেকটা কমে যায়।এরমাঝেই স্যার রুমে প্রবেশ করে.,….স্যারকে দেখেই সবাই দাঁড়িয়ে যায়৷….
.
-গুড মর্নিং স্যার…..(সবাই একসাথে)
.
-হুম গুড মর্নিং স্টুডেন্টস।আশা করি সবাই ভালো আছো।আজকে তোমাদের নতুন একটা ফ্রেন্ডের সাথে পরিচয় করিয়ে দেই।এ হলো আদ্রিতা।পুরো নাম মেহজাবীন রহমান আদ্রিতা।ওর বাবা একজন বিজনেসম্যান এবং ও এই ভার্সিটিতে ট্রান্সফার হয়ে এসেছে……আশা করি তোমরা ওকে হেল্প করবে।ওকে….(স্যার)
.
-ওকে স্যার…..(সবাই একসাথে)
.
-স্যার ক্লাস শেষ করে চলে গেলে সবাই ওর সাথে পরিচিত হতে চলে যায় শুধু দ্বীপ ছাড়া।ও চুপচাপ বসে বই পড়ছিলো।বই পড়তে দ্বীপের বেশ ভালোই লাগে।
.
-এদিকে এইটুকু সময়ের মাঝেই আদ্রিতার অনেক বন্ধু হয়ে গেছে।ও সবার সাথে কথা বললেও আঁড়চোখে তাকিয়ে দেখে দ্বীপ চুপচাপ বসে আছে।আদ্রিতা মনে মনে কিছু একটা ভাবতে লাগলো…..
.
-দ্বীপের আজকে ক্লাস করতে ভালো লাগছে না তাই ও আর ক্লাস না করে চুপচাপ বাসায় চলে আসে।দ্বীপকে দেখতেই ওর মা প্রশ্ন করে….
.
-কিরে বাবা আজকে এতো তাড়াতাড়ি চলে এলি?সব ঠিক আছে তো??(দ্বীপের মা)
.
-হুম। ক্লাস করতে ভালো লাগছিলো না তাই চলে এসেছি…..(দ্বীপ)
.
-আচ্ছা যা ফ্রেশ হয়ে আয়।আমি খাবার দিচ্ছি…..(দ্বীপের মা)
.
-ওকে….. (দ্বীপ)
.
-দ্বীপ গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নেয়।ফ্রেশ হয়ে খাওয়া-দাওয়ার পর একটা ঘুম দিয়ে বিকেলে চলে যায় ছাদে।ছাঁদে হাটতে বেশ ভালোই লাগে।সারাবিকাল এভাবে ছাঁদে কেটে যায়।রাতে খেয়ে শুতেই দ্বীপের মনে পড়ে সকালের কথাগুলো।মেয়েটার উপর আবার মেজাজ গরম হয়ে যায় দ্বীপের।এই প্রথম কেউ ওর জায়গাতে বসেছে।আর ওর জন্যই ফার্স্ট টাইম সব ক্লাস না করেই চলে আসতে হলো।কালকে তাড়াতাড়ি যেতেই হবে…. এটা ভেবে দ্বীপ ঘুমিয়ে যায়….
.
-পরদিন দ্বীপ রেডি হয়ে বেশ তাড়াতাড়ি ভার্সিটিতে চলে যায়।ভার্সিটিতে ক্লাসে তাড়াহুড়ো করে ঢুকতে যাবে এমন সময়েই কারো সাথে জোরে একটা ধাক্কা খায়……ধাক্কা খেয়ে দুজনেই পড়ে যায়….দ্বীপ সামনে তাকিয়ে দেখে এটা তো আদ্রিতা….
.
-ইউ স্টুপিড চশমা পড়েও চোখে দেখো না নাকি সুন্দরী মেয়ে দেখলেই ধাক্কা দিতে ইচ্ছে করে…..(আদ্রিতা)
.
-দ্বীপ উঠে দাঁড়িয়ে একা একা হাসতে শুরু করে।ওর হাসি দেখে আদ্রিতা ভ্রু-কুচকে প্রশ্ন করে….
.
-হাসছো কেন?(আদ্রিতা)
.
-আপনি সুন্দরী এটা শুনে৷………(দ্বীপ)
.
-What do you mean?আমি কি সুন্দরী না…..(আদ্রিতা)
.
-আপনি তো দেখতে আস্তো পেত্নীর মতো। শেওড়া গাছের পেত্নী।আমার মনে হয় আপনি আয়নার সামনে দাড়ালে আয়নাও আপনাকে দেখে ভেঙে চুরমার হয়ে যাবে বলে দ্বীপ হাসতে হাসতে চলে যায়…..
.
-এদিকে রাগে আদ্রিতার ফেইস লাল টমেটোর মতো হতে শুরু করে।ফর্সা ফেইস পুরো লাল টুকটুকে হয়ে গেছে।এই প্রথম কেউ ওকে পেত্নী বলাতে রাগে আদ্রিতা হাতে থাকা দামী ফোনটা একটা আছাড় মারে…..

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here