“তৃ-তনয়া” পর্ব- ১১১

0
2905

“তৃ-তনয়া”
পর্ব- ১১১
(নূর নাফিসা)
.
.
পরদিন,
দিনের যতক্ষণ ঘরে ছিলো আজ সারাদিনও নাহিদাকে বই নিয়ে বসতে দেখলো না মেহেদী। এমনকি রাতেও দেখছে না। ডিনার করে মেহেদীর পাশাপাশি সে-ও আজ তাজের সাথেই টাইম পাস করছে। মেহেদী বললো,
– পড়তে বসো না?
– না।
– রিভিশন শেষ?
– উহুম।
– তাহলে?
– এক্সাম দিবো না।
– কেন?
– তুমিই তো চাও না।
– এখন ঢং! চারটা দিয়ে এখন আমি চাই না! বই নাও!
নাহিদা চুপচাপ শুয়েই আছে। মেহেদী পায়ের আঙুল দ্বারা চিমটি কাটলো নাহিদার পায়ে, এবং বললো,
– তোমার কি প্রব্লেম হয় যাতায়াতে?
– উহুম।
– তো ওঠো, বই নাও হাতে। আর কয়েকটা আছেই বাকি। যাও…
মেহেদীর স্বাভাবিক দৃষ্টিভঙ্গি দেখে নাহিদা এবার উঠে বসলো পড়ার জন্য।
.
রাতে খাওয়াদাওয়ার পর ঘরে এসে নাফিসা ফোন হাতে নিয়ে বসেছে। খাবার বেশি খেয়ে ফেলেছে বোধহয়! নড়াচড়া করলেই বদহজম হওয়ার সম্ভাবনা আছে! খাওয়ার পর সাথে সাথে শুয়ে পড়লেও গ্যাস্ট্রিকের ঝামেলা হতে পারে। তাই একটু সময় কাটাতে অনলাইনে প্রবেশ করলো। ইমরান বললো,
– ভালোই তো! ঘুমানোর জন্য প্রস্তুত, মশারী টানাবে কে?
– আলসে লোক কোথাকার! একদিন টানালে কি হয়?
– একদিন? গত চারদিন ধরে একটানা আমি টানিয়ে যাচ্ছি আর তুমি এখনো একদিন বলো? সপ্তাহের সাতদিন শেষ হয়ে গেলেও তো তোমার একদিন শেষ হয় না!
বলতে বলতে ইমরান মশারী টানিয়ে নিচ্ছে। নাফিসা খিলখিল করে হেসে বললো,
– এমন করে না জানু। সত্যি খারাপ লাগছে। দেখোনা, তাই চুপচাপ এসে বসে গেছি!
– এটা কি খুব কষ্টকর কাজ?
– সেটাই তো! তাহলে তুমি টানিয়ে দিলে কি হয়!
– আমি টানিয়ে দিলে বউ আলসে হয়।
নাফিসা আবারও হেসে উঠলো। অনলাইনে এসে ভালো লাগছে না বিধায় আবার বেরিয়ে গেলো। অত:পর গ্যালারিতে প্রবেশ করলো। ইমরান বিছানায় তার হাত থেকে ফোন টেনে বললো,
– তোমার না খারাপ লাগছে, তো ফোনে কি?
– এই দাঁড়াও দাঁড়াও! খেয়ে এসেছি মাত্র এখনই শুয়ে পড়বো! বরং ছবি দেখে টাইম পাস করি।
– না, ছবি দেখতে হবে না।
– দাও না। তাজ’র ছবিগুলো দেখে রেখে দিবো।
ইমরান তার হাতে ফোন দিলো। নাফিসা একের পর এক ছবি দেখছে আর ইমরানকে জিজ্ঞেস করছে, “এটা বেশি সুন্দর না? তাজ কি ভাইয়ার মতো দেখতে না? ঠোঁট আর গাল মনে হয় আপুর মতো, তাই না? চোখ দুটো পুরোই ভাইয়ার মতো! হাসিটা খুব সুন্দর না?”
থেমে থেমে একের পর এক প্রশ্ন করে যাচ্ছে। কিন্তু উত্তরের আশায় থাকছে না। উত্তর যেন সে নিজেই ভাবছে। ইমরান তাজের ছবির সাথে সাথে নাফিসার আনন্দ দেখছে। অত:পর নাফিসার দিকে প্রশ্ন ছুড়লো,
– বলোতো তোমাদের তৃ-তনয়া’র মধ্যে কে বেশি সুখী?
এমন প্রশ্নে নাফিসা ফোন থেকে দৃষ্টি সরিয়ে ইমরানের দিকে এক পলক তাকিয়ে আবার ফোনে দৃষ্টি স্থির করলো। ইমরান আবার বললো,
– বলো?
– কি বলবো?
– তোমাদের মধ্যে কে বেশি সুখী?
– জানি না।
এমন উত্তরে ইমরান কিছুটা বিরক্ত হয়ে বললো,
– কি জানো তবে? ঘোড়ার ডিম?
– হু।
– হা হা হা… আচ্ছা, বলো তোমাদের মাঝে কে সবচেয়ে বেশি অসুখী।
নাফিসা ব্রু কুচকে বললো,
– আমাকে চোখে পড়ে না তোমার?
ইমরান তার মুখের হাসি ভাবটা বিলীন করে বললো,
– সত্যিই কি তুমি অসুখী?
নাফিসা তার চেহারায় তাকিয়ে এখন নিজেই অপরাধ বোধ করছে! এতোক্ষণ মজার সাথে নিলেও এবার বুঝতে পেরেছে ইমরান সিরিয়াসলি জিজ্ঞাসা করেছে তাকে! তাকে চুপ থাকতে দেখে ইমরান বললো,
– কি হলো? বলো? তুমি আমার কাছে সুখে নেই?
– হুম।
– তাহলে বললে যে!
– এমনিই বলেছি। মজা করেছি।
– আচ্ছা! তাহলে এবার সিরিয়াসলি বলো, সবচেয়ে বেশি অসুখী কে?
– নাজিয়া আপু।
– আমার মতে, প্রশ্নই আসে না! আরাফ ভাইয়ার মতো মানুষের কাছে ভাবি অসুখী থাকবে, এটা ভাবতে পারো তুমি!
– ভাবা আর না ভাবার কি আছে! তুমি দেখছো না? ভাইয়া ভালো হলেই কি, সংসারে আর কেউ নেই?
– আছে, তবে মেয়েদের সাংসারিক জীবনে সুখের মূল উৎস হলো হাসব্যান্ড। এটা জানো তুমি?
নাফিসা তার দিকে স্বাভাবিক দৃষ্টিভঙ্গিতে তাকালে সে আবার বলতে লাগলো,
– দেখো, আমার পুরো পরিবার যদি তোমার বিপরীতে থাকে বা তোমাকে মেন্টালি টর্চার করে তবুও তুমি সংসারে টিকে থাকবে। যদি আমি তোমাকে সাপোর্ট করি, তোমার সঙ্গ দেই এবং খুব ভালো রাখার চেষ্টা করি। আর যদি এমন হয়, আমার পরিবার তোমার যথেষ্ট কেয়ার করে কিন্তু আমি ভালো না, আমার চরিত্র ভালো না, আমার স্বভাব ভালো না, মাদক সেবন করি, তোমাকে শারীরিক বা মানসিক ভাবে টর্চার করা শুরু করি। তাহলে যতই সাপোর্ট থাকুক, তুমি দুদিনও টিকবে না আমার সংসারে। হয় বাবার বাড়ি গিয়ে চুপচাপ বসে থাকবে নতুবা থানায় মামলা করবে। কিন্তু এই সংসার আর জোড়া লাগবে না। তাহলে বলো, ভাবি কি সুখে নেই?
– সেভাবে দেখতে গেলে তো সবাই বেশি বেশি সুখী!
– তুমি তোমাদের সম্পর্কে জানোই না।
– তুমি জেনে জেনে উল্টাইছো।
– তোমার চেয়ে বেশিই জানি মনে হয়!
– আচ্ছা! তো বলো কে সবচেয়ে বেশি অসুখী?
– না, তোমার মুখ পাতলা!
– অই, আমি কার কাছে গিয়ে কি বলছি! খবরদার এখন এসব বলে বলে কথা ঘুরানোর চেষ্টা করেছো তো!
ইমরান হেসে বললো,
– আচ্ছা, ঘুরাচ্ছি না!
– তো বলো?
– নাহিদা আপু তুলনামূলক বেশি অসুখী।
– মোটেও না।
– মোটেও। টাকার মাঝেই কি সব সুখ দেখো? আমি গরীব, তবুও তুমি আমার আমার কাছে যতটা সুখে আছো, আমি মনে করি নাহিদা আপু তার অর্ধেকও নেই।
– জ্বি না। টাকার মধ্যে কোনো সুখ দেখছি না আমি। কিন্তু মেহেদী ভাইয়ার ফ্যামিলির মতো ফ্যামিলি খুঁজে পাওয়া দুষ্কর!
– হয়তোবা এমন ফ্যামিলি পাওয়া দুষ্কর কিন্তু এমন মেহেদী ভাইয়ার অভাব নেই।
– কি বলতে চাইছো তুমি? ভাইয়া খারাপ?
– না। ভাইয়াকে খারাপ বলছি না। তবে আমার মনে হয়েছে আপুর সাথে ভাইয়ার আন্ডারস্ট্যান্ডিং ভালো না। আমি এখন পর্যন্ত দেখলাম না তারা দুজন কখনো হেসে ফ্রী মাইন্ডে কথা বলেছে!
– তুমি তো তাদের বাসায় গিয়ে পড়ে থাকো, তাই না?
– এমন বোকার মতো কথা বলো কেন? যুক্তি চাইলে যুক্তি দেখাতে পারি। এমন রেগে যাওয়ার কি আছে?
– আমি রেগে যাচ্ছি না। তবে তোমার কথায় কোনো যুক্তিও খুঁজে পাচ্ছি না। ক্লিয়ার করো…
– তুমি ভাইয়াদের সাথে বা পরিচিত কারো সাথে কথা বললে কি আমি তা নিয়ে রাগারাগি করেছি কখনো?
– না।
– প্রয়োজনে বা কুশলাদি বিনিময়ে কথা বলতেই পারে যেটা আমি স্বাভাবিক মনে করি। কিন্তু ভাইয়া। আমার সামনেই পরোক্ষভাবে রাগারাগি করেছে আপুর সাথে। ওইযে, আমাদের বিয়ের পর ভার্সিটিতে প্রথমবার আশিক গেলো যে সাথে, আর আপুও গিয়েছিলো সেদিন। দেখা হওয়ার পর কথা বলেছিলো আপু আমাদের সাথে। ভাইয়াও কোনো প্রয়োজনে গিয়েছিলো বোধহয়। আমাদের সাথে কথা বলতে দেখে সেখানে তার মুডটা যেন কেমন ছিলো! খোচা মেরে কথা বলা যাকে বলে! আপুও খুব লজ্জিত বোধ করেছিলো সেদিন! তারউপর আমাদের বাসায় দাওয়াত করলাম, ভাইয়া এলো না! আপু তার কাজের ব্যস্ততা দেখালো, অথচ তুর্য বললো বাইরে দেখে এসেছে! বেবি হওয়ার পর হসপিটাল গেলাম তখনও কেমন বিষন্নতায় দেখলাম! গত সপ্তাহে যে তাদের বাড়িতে গেলাম বেবিকে দেখতে, তখনও কারো সাথে কাউকে কথা বলতে দেখলাম না একবারও! কেমন যেন ইগনোর ভাব চলছিলো তাদের মাঝে। অন্যের ব্যাপারে এতোটা লক্ষ্য করা অনুচিত কিন্তু চোখের সামনে পড়ে গেছে বিষয়গুলো! সেই ধারণা থেকে বলতে পারি তোমাদের দুই বোনের তুলনায় নাহিদা আপু বেশি অসুখী।
– একটা সত্যি কথা বলবো? গত সপ্তাহে তাদের বাসায় আমিও লক্ষ্য করেছিলাম বিষয়টা! হসপিটালেও একবার এমন কিছু চোখে পড়েছিলো। কিন্তু তার আগে আর এমন কিছু মনে হয়নি। সবসময় ভাইয়াকে ফ্রী মুডে দেখেছি। পরে বোধহয় কিছু হয়েছে!
– তুমি আবার এসব নিয়ে কিছু বলতে যেও না। যদি কিছু হয়েও থাকে, তাদের বুঝ তাদের দ্বারাই মিটিয়ে নিতে দাও। হাসব্যান্ড ওয়াইফের মাঝে তৃতীয় কোনো ব্যক্তি সুপারিশ করলে সমস্যা বেড়ে যায়। যদি তোমাকে জানায় বা হেল্প চায়, সেটা ভিন্ন ব্যাপার। এখন বাদ দাও এসব৷ অনেক সময় নিয়ে জিড়িয়েছো। ঘুমাও এবার।
– তো এটা বললে না, কে বেশি সুখী?
– তোমার মতে যদি নাজিয়া আপু আরাফ ভাইয়া বাদে তার পরিবারের দিক থেকে অসুখী হয়ে থাকে তো কে সুখী তুমিই বলো?
– হু, বুঝিই তো! সেই ঠেলে ধাক্কিয়ে নিজের ক্রেডিটটাই তুলে ধরবে।
– না, আমি তুলে ধরছি না কিছু। তুমিই বলো কে সুখী? সিরিয়াসলি বলবে, আমি এতে কোনো রাগ বা মন খারাপ করবো না। তুমি কি আমার দ্বারা কোনো দিক থেকে অসুখী?
– উহু।
– জেরিনের সেই ইস্যু বাদে আমার ফ্যামিলি দ্বারা?
– উহুম। তবে বড়মা’র মতো আম্মা একটু ফ্রি মাইন্ডের হলে ভালো হতো। কেমন যেন গম্ভীর হয়ে থাকেন। একদমই মিশুক না।
– মা এভাবে থেকে অভ্যস্ত! হয়তোবা বংশের দোষ! নানিও এমনই ছিলেন! ওসব বাদ। তুমি কোনো দিক থেকে নির্যাতিত কি-না সেটা বলো?
– উহু।
ইমরান মুচকি হেসে বললো,
– ঘুমাও।
সে লাইট অফ করে শুয়ে পড়লে নাফিসা তার বুকের একপাশে মাথা রেখে শুয়ে বললো,
– শুনো…
– হুম?
– আমি সবার চেয়ে বেশি সুখী।
– আমার ক্রেডিট প্রয়োজন নেই।
– তবুও আমি দিবো তোমাকে ক্রেডিট।
দুজনেই প্রশান্তির হাসি হেসে ঘুমের জন্য প্রস্তুত!
.
প্রেগন্যান্সির সাড়ে ছয় মাস শ্বশুর বাড়ি কাটিয়ে নাজিয়া তার বাবার বাড়ি এসেছে। তারপর থেকে মাঝে মাঝে আরাফ এখানে এসে থাকে। নাজিয়া চলে আসার পর থেকেই আয়েশা বেগমের রাগারাগি! সে কি কম করেছে ছেলের বউকে? তাহলে নাতি/নাতনির যত্নের জন্য বাপের বাড়ি কেন গেলো!
না, গত কয়েক মাস কম যত্ন নেয়নি নাজিয়ার। কাজের লোকের সাথে ঘরের কাজকর্ম সব তিনিই করেছেন। নাজিয়ার খাওয়াদাওয়ার দেখবালও করেছেন। কিন্তু মায়ের মন যে মানে না। রুমানা বেগম তার মেয়েকে নিজের কাছে নিয়ে আসবেনই, সেটা আগে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ করে নিয়েছেন।
আয়েশা বেগম যত্নস্বরূপ কিছুটা শাসনে যেমন রেখেছেন নাজিয়াকে, তেমন ভয়ও দেখিয়েছেন। তার ভাষ্যমতে এটা ভয় না হলেও নাজিয়ার কাছে এটা খুবই ভয়ংকর! তিনি প্রায়ই বলতেন, “খাওয়াদাওয়া ঠিকমতো করো। যা দরকার সব আইনা দিমু। তবুও নাতি নাতনির মুখ দেখাইয়ো। এই সাজসন্ধ্যায় দুয়ার খুইলা রাইখো না! নানান আপদ ঘরে ঢুকে! মাইয়ালোকের, সব দিকে নজর রাইখা ই চলতে হয়। তুমি ভালো থাকবা তো বাচ্চা ভালো থাকবো। বাপের বাড়ি যাইবা, ঠিকঠাক মতো চইলো!”
যদিও তিনি শাসন সরূপ বলতেন কথাগুলো কিন্তু নাজিয়ার মনে এক প্রকার ভয় জন্ম নিতো! সে পারবে তো তাদের প্রত্যাশা পূরণ করতে?
আর আরাফ! আরাফকে নিয়ে ভাবলে সবসময়ই কান্না আসে নাজিয়ার! লোকটা দিনরাত এক করে ফেলে তার যত্ন নিতে! স্কুল, কোচিং কমপ্লিট করে ছুটে আসে বাড়িতে। নাজিয়া কি করেছে, কি করেনি সব রকম জিজ্ঞাসাবাদ চলে। কোনো কিছু ভুল হলে একটু আধটু রাগ দেখায় কেন সে সেদিকে একটু যত্নবান হতে পারলো না। কোনো কাজে হাত লাগালেও তাকে সাবধান করতে রাগ দেখায়, কেন ডাক্তারের নিষেধ সত্ত্বেও সে সেদিকে ধাবিত হয়! আরাফ তার মন ভালো রাখতে চেষ্টা করে সবসময়, ঘটে যাওয়া অঘটনকে ভুলিয়ে দিতে সাহায্য করে, মনে সাহস যোগাতে অবদান রাখে। এতো পরিশ্রমের পরও কত রাত যে তার জন্য সে নির্ঘুম কাটিয়েছে সেই হিসেব নেই! নাজিয়া যেমন শারীরিক ও মানসিক যন্ত্রণায় ভুগেছে, আরাফ তার সঙ্গ দিয়ে গেছে। পা টিপে দেওয়া পর্যন্ত বাদ রাখেনি লোকটা! শুয়ে বসে দিন কাটাতে কাটাতে নাজিয়া নিজেই বিরক্ত হয়ে পড়তো! আরাফ তাকে যথাসম্ভব সাপোর্ট করে, কখনোই সে আলাদাভাবে বাচ্চার প্রতি বেশি গুরুত্ব দেয়নি। তার প্রয়োজন নাজিয়ার সুস্থতা। সে ভালো থাকলে ইনশাআল্লাহ বাচ্চা ভালো থাকবেই। কিন্তু নাজিয়ার ভয় সেখানেই! সবাই তার প্রতি এতো যত্নবান, সে কি সবার মন রক্ষা করতে পারবে? তাদেরকে সুস্থ ও সুন্দর বাচ্চা উপহার দিয়ে ঘর আলোকিত করতে পারবে তো?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here