স্টুডেন্ট_The_One_Villain,পর্ব_৪
লেখক_সুর্য_হুসাইন
টয়ার দিকে তাকাতেই টয়ার মুখে দেখতে পেলাম একটা কালো ছায়ার মতো হয়ে গেছে ।
অনু এসে আমার হাত ধরে টয়ার কাছে নিয়ে গেল,,, এবং বলতে লাগলো,,
— ভাইয়া,,, এ হলো আমার পাশের বাসার ভাবী,,,,,,,
ভাবী ডাকাতেই আমার মনের ভিতরে ব্যাথা হতে লাগলো ।
আর তখনিই টয়া তার হাত বাড়িতে দিয়ে বললো,,
— আমি টয়া,, আপনি?
(টয়া)
— আসসালামু আলাইকুম,, আমি সূর্য হুসাইন,,,
(আমি হাত না বাড়িয়েই)
এর মধ্যেই কাজের মহিলা রোহিমা এসে রাতের খাবারের জন্য ডেকে গেলেন ।
আমি আর অনু খেতে টেবিলে গেলাম ।
আর টয়া দরজা দিয়ে বের হবে এমন অবস্থায় আংকেল দেখে বললেন,,
(ড্রাইনিং টেবিল আর দরজাটা কাছাকাছি থাকায় দেখে ফেলেন আংকেল)
— কই যাচ্ছো মামনি?
(আংকেল টয়ার দিকে ❓ ছুড়ে দিয়ে)
— আংকেল,, আজকে বাসায় একটু কাজ আছে ,, আমি আসি ,,
(টয়া)
— খেয়ে যাও মামনি,,
(আংকেল)
— অন্যদিন খাবো,, আজকে আসি,,
বলেই টয়া রুমের দরজাটা টেনে চলে গেল ।
টয়া চলে গেলে আংকেল বলতে লাগলো,,,
— কি হয়েছে অনু মা টয়ার?
(আংকেল)
— আমি কি জানি,, ভাইয়াকে দেখার পর থেকেই কেমন যেন করতে করতে লাগলো টয়া ভাবী,,,
(অনু)
— সূর্য তোমার সাথে কি কিছু হয়ছে টয়ার,,,
(আংকেল)
— কই না তো,, কি হবে আমার সাথে,, আমি তো আজকে প্রথম দেখলাম তাকে ।
(আমি)
আংকেল আর কথা বাড়ালো না । আর আমিও না । খেয়ে দেয়ে রুমে গিয়ে দেখতে পেলাম আমার নিয়ে আশা চকলেট ও আইসক্রিম অনুকে দেওয়া হয়নি । একদমি ভুলে গেছিলাম দেওয়ার কথা । আর এগুলার জন্য টয়াই দায়ি ।
ওর মুখ দেখেই সব কিছু ভুলে গেছি ।
তাই আমি অনুর রুমে গিয়ে অনুকে চকলেট ও আসক্রিম দিয়ে এলাম ।
অনু আইসক্রিমের পেকেট খুলে দেখতে পেল সব পানির মতো গলে গেছে ।
আমি নিজের দাত কিচিমিচি করতে লাগলি ।
— এটা কি আইসক্রিম?
(অনু পেকেটটা উচু করে)
— হুম,,
(আমি)
— এই নাও,, তুমি তোমার আইক্রিম খাও,, আমি নাহয় চকলেট খাই,,
বলেই আসক্রিমের পানির পেকেটটা আমার হাতে ধরিয়ে দিলো ।
কি আর করার আমি সেটা নিয়ে অনুর রুম থেকে বেড়িয়ে ঝুটা বালতিতে ফেলে দিলাম । এবং রুমে গিয়ে শুয়ে পড়লাম ।
কিন্তু ঘুম আসছে না । টয়া আর আমার আগের দৃশ্যগুলো শুধু চোখের সামনে ভাসছে ।
টয়া আর আমার রিলেশন থাকা অবস্থাতে আমি খুব ভালো ছেলে ছিলাম । আর এখন ভিলেন হয়ে গেছি,,
তাহলে চলুন একটু অতিত সম্পর্কে জেনে আসি,,,,
2 years ago……..
…………………..
হায়
আমি সূর্য,,,
ছোট্ট ভাই, আর বাবা নিয়েই আমাদের পরিবার ।
আর মা আলভীর জন্ম দিয়েই চলে গেছে ঐ দূর আকাশে ।
আমার জীবন বলতে গেলে,, ছোট্ট ভাই আর বাবাই আমার জীবন ।
আম্মু চলে গেলে,, চাচা,, দাদা,,,সবাই আব্বুকে বিয়ের জন্য অনেক আকুতি করে কিন্তু আমার আব্বুর একটাই কথা,,, আমার সন্তানকে নিয়েই বাকিটা জীবন বাচতে চাই,, আমার আর জীবন সঙ্গীনির দরকার নাই ।
এর জন্যই বাবাই আমার জীবন ।
আমরা গরীব ছিলাম তখন ।
তবুও বাবার কাছে যা চেয়েছি,, তাই দেওয়ার আপ্রায়ন চেষ্টা করেছে তিনি । কষ্ট হলেও দিয়েছে ।
আমি বাবাকে খুব ভালোবাসি ।
কিন্তু কখনো জড়িয়ে ধরে বলতে পারিনি । কিন্তু ইচ্ছে আমার একদিন না একদিন বলবোই ।
তখন কলেজে নতুন, ফাস্ট ইয়ারে পড়ি ।
টয়াও একই কলেজের ফাস্ট ডিয়ারেই পড়তো ।
আমি টয়াকে একদিন কলেজের সবার সামনেই প্রপোজ করি । টয়াও রাজি হয়ে গেল ।
আমাদের রিলেশন শুরু হলো ।
টয়াকে নিয়ে ঘুরতাম,, একসাথে বসতাম,, অনেক ভালোবেসেছিলাম,, কলেজে এলে সব সময় সাথে থাকতাম ।
আর বাসায় গেলে ফোনেই পরে থাকতাম ।
আর টয়া মাঝে মধ্যে খাবার নিয়ে আসতো । আমাকেও খাইয়ে দিতো ।
এভাবেই কয়েকমাস হয়ে গেল আমাদের,,,
একদিন টয়া ক্লাস শেষে আমায় বললো,৷
— চলো বিয়ে করে ফেলি,,
(টয়া)
— কিন্তু কেন?
(আমি)
— আমাকে বিয়ে করবে না তুমি?
(টয়া)
— করবো তো,, কিন্তু হঠাৎ করেই বা কেন?
(আমি)
— আব্বু আম্মু বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছে !! বমার কোন কথায় শুনছে না তারা ।
(টয়া)
— আচ্ছা,,,,, কালকে,,
(আমি)
— ঠিক আছে,, তুমি কালকে আমাদের পুকুর ঘাটে চলে এসো ।
(টয়া)
সেদিনের মতো চলে যাই কলেজ থেকে
পরের দিন সেখানে এসে দেখি টয়া নেই ।
ভাবলাম হয়তো একটু দেরী হবে । তাই ওয়েট করতে লাগি । কিন্তু দুই ঘন্টা চলে গেল , তাও টয়া এলো না । কল দিই ধরছে না । বলছে বিজি,, তারপর আমি নিজে গিয়ে ওর বাসায় দেখি, দরজাটায় তালা ঝুলছে ।
আপনাদের আগের ঘটনা বলতে বলতে ঘুমিয়েই পড়লাম আমি । দরজাটায় তালা ঝুলছে এর পরের থেকে নাহয় অন্য একদিন শুনবেন,,
আমি এট মধ্যে একটু ঘুমিয়ে নিই কেমন,,
.
.
.
.
.
বর্তমান
.
সকাল বেলায় ঘুম ভাঙলে দেখতে পাই জানালা দিয়ে রুমে আলো ঢুকছে,, আর তখনি রহিমা মহিলাটি কফি আর নিউজ পেপার দিয়ে চলে গেল ।
আমি উঠে বসে পড়লাম । কফিটা হাতে নিয়ে নিউজ ফেডে চোখ রাখতেই আরাফের নিউজটা নিজের চোখে পড়লো । দেখতে পেলাম আরাফের চোখে আমার সেই কলমটা
রয়েই গেছে…
চলবে..?