স্টুডেন্ট_The_One_Villain,পর্ব_৮,৯
লেখক_সুর্য_হুসাইন
পর্ব_৮
পরের দিন কলেজে যেতেই মিলিকে দেখতে পেলাম । মিলিকে আর আগের মতো দেখাচ্ছে না । বরং সুন্দর মতো কলেজের ড্রেস এবং চুপচাপ বসে আছে দূরের বেঞ্চে ।
আমি সেই দৃশ্যটার দিকে সাইলেন্ট অবস্থায় তাকিয়ে আছি,, আর ঠিক সেই মুহূর্তে মারুফ এসে আমার কাধে হাত রেখে বললো,,,
— তৌফিক ভাই তোকে ডাকছেন ।
(মারুফ)
— তৌফিক আবার কে?
(আমি)
— তৌফিক হচ্ছে আমাদের কলেজের বড় ভাই ,,
আর সে নাকি তোকে চিনে ।
(মারুফ)
— ওহহ আচ্ছা,, তা কোথায় তৌফিক ভাই?
(আমি)
তারপর মারুফ আমাকে হাত দিয়ে দেখিয়ে দিলো তৌফিক ভাইকে । আমি দেখতে পেলাম তৌফিক ভায়ের চারপাশেও কয়েকজন ছাত্র আছে বসে । আর তারা আমার দিকেই তাকিয়ে আছে ।
আমি চলে এলাম তৌফিক ভায়ের কাছে,,,
— ভাইয়া,, আমাকে কি আপনি ডাকছেন?
(আমি)
— হ্যা,,
(তৌফিক)
— আমাকে নাকি আপনি চিনেন?
(আমি)
— চিনি না,,, আর চিনতেও চাই না ।
তুই নাকি কলেজের নতুন ?
(তৌফিক)
— হ্যা ভাই,, আমি কলেজের নতুন ।
(আমি)
— ফাস্টবার তো থাপ্পড় টাপ্পড় দিলাম না,।
(তৌফিক)
— কিসের জন্য মারবেন,,? আর,কিসেরই বা প্রথমবার ।
(আমি)
— বুঝো না বাবু,,,,, ফিটার খাও???
(তৌফিক ভাই এর মধ্যে একজন ছেলে বললে)
আর এ কথায় সবাই হো হো করে হেসে দিলো ।
— শুনো বৎস!! তৌফিক ভাই লিমি ভাবীক পছন্দ করে ,, আর তার দিকে তুমি একটু আগে তাকিয়ে ছিলা ।
(তৌফিক ভাই এর সেই ছেলেটিই)
— মিলি আপুর কি বিয়ে হয়ে গেছে?
(আমি)
আমার কথায় সবাই চবার হো হো করে হেসে দিলো ।
— আরে হয়নি এখনো,, কিন্তু হবে আমার সাথে ,,
(তৌফিক)
— ও,, তাহলে তো খুশির খবর ।
(আমি)
— অবশ্যই,, আর হ্যা মিলি আপু নয়,, ভাবী এখন থেকে বলবি,,
(তৌফিক)
— ঠিক আছে দুলাভাই,,,
(আমি)
— মাইর খাওয়ার শখ জাগছে তাই না ।
(তৌফিক)
— আমি আবার কি করলাম?
(আমি)
— আমি তোর কোন জন্মের দুলাভাই লাগি, হ্যা?
(তৌফিক)
— ভাই আপনিই তো বললেন মিলি আপুকে,, ভাবী ডাকতে,, তাই ভাবলাম আপনাকে ভাই না ডেকে দুলাভাই ডাকতে হবে ।
(আমি)
আমার কথায় আবারো সবাই হেসে দিলো,, তৌফিক ভাইও ।
— সর বাপ,, তুই মিলিকে আপুই ডাকিস,, তারপরও আমায় ভাইই তাকিস,,
যা সর আমার সামনে থেকে ।
(তৌফিক)
তারপর বড় ভায়ের নির্দেশে চলে গেলাম তাদের সামনে থেকে ।
আমি সরে যাওয়ায় মারুফ এসে পড়লো আমার কাছে ।
— কি বললো রে তৌফিক ভাই তোরে,,
(মারুফ)
— কিছু না তেমন!
(আমি)
— একটা ভালো খবর আছে !!
(মারুফ)
— কেমন?
(আমি)
— কিরণ নাকি আজকে কলেজের সবার সামনে তার ভালো লাগা এবং ভালোবাসার মানুষটার নাম ঘোষণা করবে ।
(মারুফ)
— তো এতে খুশি হওয়ার কি আছে?
(আমি)
— তুই বুঝবি না । কিরণ আমার নামি বলবে,,
(মারুফ)
— আয়ছে,, তোর নাম বলবে,,,
ভালো,,
(আমি)
আমরা কথা বলার এক পর্যায়ে হঠাৎ কিরণ মাঠের সব চেয়ে উচু স্থানে মাইক হাতে বললো সবাইকে তার সামনে আসতে ।
সকলেই কিরণের ডাকে সাড়া দিয়ে ওর সামনের জায়গাটায় চলে গেল,, আমি আর,মারুফও চলে এলাম,,,,,,,
সবাই চলে এলে কিরণ বলতে আরম্ভ করলাে,,,
— হয়তো প্রায় ছাত্র ছাত্রী জানে যে আজকে আমার ভালো লাগা এবং ভালোবাসার মানুষটার নাম বলবো । যাতে আমি প্রথম দেখাতেই ভালোবেসে ফেলেছি ।
তোমরা হয়তো কেউ জানো না ।
কেউ,কি জানো?
(কিরণ)
সবাই বললো,
” না জানি না ,, কে সে?
আমিও একই কথা বললাম। কিন্তু মারুফ কিছু বললো না,, চুপ করে দাড়িয়ে রইলো,, আর মারুফের মুখে হাসি ।
— আচ্ছা তাহলে শুনো,,,
সে হলো আমাদের কলেজেরই নতুন স্টুডেন্ট সূর্য,,
(কিরণ)
কিরণের একথায় আমি অবাক হয়ে,,
— কিহহ,,,, আম?
(আমি)
— হুমম তুমি,,
(কিরণ আমার কাছে এসে, )
ভিরের ভিতরে আমি ছিলাম,, কিন্তু ছাত্র ছাত্রীরা সাইড হয়ে দাড়ালো, এবং কিরণও আমার কাছে এসে আমার হাত ধরে বললো,,,
— আমাকে কি তোমার,জীবনে একটু জায়গা দিবা?
(কিরণ)
আমি মারুফের দিকে তাকিয়ে দেখলাম,, মারুফ অন্য দিক হয়ে তাকিয়ে আছে,,,
তারপর আমি কিরণের থেকে নিজের হাতটা ছাড়িয়ে বললাম,,
— না,,,,,, আমার জীবনে তোমাকে দেওয়ার মতো কোন জায়গা নেই,,,,,,,
চলবে..?.
#স্টুডেন্ট_The_One_Villain
#লেখক_সুর্য_হুসাইন
#পর্ব_৯
— আমাকে কি তোমার,জীবনে একটু জায়গা দিবা?
(কিরণ)
আমি মারুফের দিকে তাকিয়ে দেখলাম,, মারুফ অন্য দিক হয়ে তাকিয়ে আছে,,,
তারপর আমি কিরণের থেকে নিজের হাতটা ছাড়িয়ে বললাম,,
— না,,,,,, আমার জীবনে তোমাকে দেওয়ার মতো কোন জায়গা নেই,,,,,,,
(আমি)
— কিন্তু কেন?
(কিরণ)
আমি চারপাশে তাকিয়ে দেখলাম ।
— শুনো কিরণ,, আমি কি তোমায় কখনো বলেছি আমি তোমাকে ভালোবাসি?
বলিনি তো তাই না ।
কারণ আমি তোমাকে ভালোইবাসি না ।
আর তুমি মারুফের দিকে একবার তাকাও,, ও তোমায় পাগলের চেয়েও বেশি ভালোবাসে ।
ও ভেবেছিলো যে,, তুমি হয়তো তার নাম ঘোষণা করবে । কিন্তু না !!
শুনো যে তোমায় ভালোবাসে তুমিও তাকে ভালোবাসো । আর যে তোমায় নিয়ে এগুলো চিন্তাই করে না । তার হতে চেয়ো না । এর পরিনাম,শুধুই কষ্টই হবে ।
(আমি)
কিরণ কিছু বলতে গেলেই আমি সেখান থেকে সকলের সামনে থেকেই চলে যাই ক্লাস মিলাস বাদ দিয়ে ।
যাওয়ার সময় একবারোও পিছনে তাকাইনি,, তাকালে ভাববে ওর জন্য আমার ফিলিংস আছে,, কিন্তু আসলেই নাই ।
রাস্তা দিয়ে হাটছি আনমনে,,
ওমনি দেখতে পেলাম টয়াকে । টয়াকে দেখতে পেয়ে আমি একটু ধমকে রইলাম ।
টয়াকে দেখি ওর হাসবেন্ডের সাথে রিক্সায় করে কই যেন যাচ্ছে ।
আমি এই দৃশ্যটা দেখছি তখনি কে যেন আমাকে ফোন করলো ,,,
ফোনটা পকেট থেকে বের করে হাতে নিয়ে দেখি মারুফ ।
ভাবতে লাগলাম মারুফ হঠাৎ করে অসময় আমাকে ফোন কেন করলো ।
ভাবতে ভাবতেই ফোনরা রিসিভ করলাম ,,
ফোনটা রিসিভ করার সাথে সাথেই,, মারুফ হাঁপাতে হাঁপাতে বললো,,,
— কই আছোস তুইই?
(মারুফ)
— রাস্তায়,, কিন্তু কি হয়েছে,, এমনভাবে হাঁপাচ্ছিস কেন?
(আমি)
— পুলিশ তোকে খুজছে কলেজে এসে!
(মারুফ)
— পুলিশ আমাকে খুজছে মানে? আমি কি করলাম?
(আমি)
— তুই কিছু করিসনি,, কিন্তু কিরণ করেছে ,, তুই তাকে না করায় সে তার কলম দিয়ে নিজের বুকের ভেতরে ঢুকিয়ে দিছে । আর এখবর পাওয়া মাত্রই কিরণের আব্বু তার বন্ধু এ আর রহমান কমিশনারকে ফোন করে বলে যে,, যার জন্য এগুলা করেছে তার মেয়ে ২ ঘন্টার মধ্যে তার সামনে হাজির হওয়া চায়,,
(মারুফ)
— এতো তাড়াতাড়ি এতো কিছু ঘটে গেলো,?
(আমি)
— হ্যা রে,, কিছু করার নাই ,,
তুই পারলে কয়েকদিনের জন্য পালিয়ে থাক?
(মারুফ)
— আমি কি খুনি নাকি পালিয়ে বেড়াবো!
(আমি)
— তারপরও, সুইসাইড করার তো,,
(মারুফ)
— সে যাই হোক না কেন!! তা কিরণ কই এখন?
(আমি).
— ওকে হসপিটালে আই সি সি তে দেওয়া
হয়েছে ।
(মারুফ)
আমি মারুফের সাথে কথা বলছি,, এর মধ্যেই পুলিশের জিপ এসে আমাকে ঘিরে নিলো
আমি সেই অবস্থাতেই মারুফকে বললাম,,
— আমার এখানে পুলিশ চলে এসেছে । রাখি পরে কথা হবে,,
বলেই ফোনটা কেটে দিয়ে পকেটে রেখে দিই । তারপর দুজন পুলিশ এসে আমার হাতে তাদের হেনকেপ পড়ালেন । এবং আমাকে তুলে নিয়ে গেলেন পুলিশ জিপেই ।
চারপাশের লোকজন তাকিয়ে ছিলো আমার দিকেই
সবাই,
তাকিয়ে ছিলো,,,
পুলিশের জিপটা থানায় না নিয়ে মোড় ঘুড়িয়ে অন্য একটা জায়গায় নিয়ে এলো,,,,
আমাকে জিপ থেকে নামালো দু’জন পুলিশ ,,
আর বাকিরা চারপাশেই তাড়িয়ে আছে ।
আমি চারপাশে তাকাতেই দেখতে পাই পুরনো একটা বাড়ির ভিতটে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশের বাহিনীগুলো ।
বাড়িটার ভেতরে নিয়ে গিয়ে আমাকে দাড় করিয়ে সবাই চারপাশে পজিশন নিয়ে নিলো ।
সবাই ফায়ার করবে এমন পজিশন নিয়ে নিলো ।
আমার সামনে একটা টেবিল ও তার পাশে দুই তিনটা চেয়ার ।
হঠাৎ করেই এ আর রহমান কমিশনার এবং তার সাথে অন্য একটা লোক আসলেন,, মারুফের কথায় মনে পড়লো এটাই তাহলে কিরণের বাবা ।
বুঝতে পারলাম আমাকে মারার জন্য না । হয়তো কিছু এডভায়িজ দেওয়ার জন্য তুলে এনেছে পুলিশ দিয়ে । তাই আমি আর আমার ঘড়ির সিস্টেমে কল করে রাফি ও ছেলেপেলেদের আসতে বললাম না ।
তারা দুজন এসে চেয়ারে বসে পড়লাে,, আর কিরণের বাবা বললো,,
— শোন ছেমরা,, আমার মেয়ের কিছু হলে তোকে আর এখানে শুধু শুধু কষ্ট করে তুলে নিয়ে আসতাম না । ওখানেই শেষ করার ওয়াডার করতাম ।
আমার মেয়ে বেঁচে গেল মানে তুইও বেঁচে গেলি,, এর পরেরবার সাবধানে থাকবি,, আর এর পরে আমার মেয়ের কিছু হলে তুমি আর নেই চান্দু,,
কিরণের বাবা,,
বলেই ঐ ওকে ছেড়ে দিয়ে আয় যেখান থেকে তুলে নিয়ে এসেছিলি,,,,
তারপর আমি বললাম,,,,
— আমাকে রেখে আসার দরকার পরবে না,, আমি একাই যেতে পারবো । আর হ্যা, আপনার মেয়েকে সামলান,, তা নাহলে হয়তো আপনারই সমস্যা হবে,,
বলেই আমি…..
।।।।।।।।।।।।।।।
চলবে..?