বুকের ভিতর রাখবো তোকে?,Part:09,10

0
2102

বুকের ভিতর রাখবো তোকে?,Part:09,10
Writer: Doraemon(Ayesha)
Part:09

পাখি ফোনটা কেটে দেওয়াতে অরণ্যের মনটা খারাপ হয়ে যায়। অফিসের মিটিংয়ে গেলেও অরণ্যের মন পাখির কাছেই পড়ে থাকে। পাখিকে একটু না দেখলে যেন অরণ্যের মনে শান্তি হয় না। অরণ্য মনে মনে বলল
–পাখি তুমি আরেকটুও তো আমার সাথে কথা বলতে পারতে। আমার সাথে কেন তুমি এমন করো! আমি যে তোমাকে কতটা ভালোবাসি কেন তুমি বুঝেও না বুঝার ভান ধরে থাকো। না আমাকে এই মিটিং জলদি শেষ করে আমার পাখির কাছে যেতে হবে।
অরণ্যের কথায় পাখি বেশ কিছুদিন হিজাব পড়ে। হিজাব পড়তে পাখির ভালো লাগে না কিন্তুু অরণ্যের থাপ্পড় থেকে হিজাব ভালো ভেবে পাখি এই কয়দিন হিজাব পড়ে। কিন্তুু আজ অরণ্য গাড়ি করে পাখিকে কলেজে পৌঁছে দিতে আসবে না দেখে পাখি এই সুযোগটা কাজে লাগায়। অন্যান্য সাধারণ দিনের মতো গায়ে ওড়নাটাও পাখি পড়ে নি। বিনা ওড়নায় এবং অত্যন্ত টাইট হাত কাটা নীল রংয়ের থ্রি পিজ পড়ে, অনেক সেজে গুজে পাখি অরণ্যের পাঠানো গাড়ি করে কলেজ যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হলো। গাড়ির পেছনে বসতে যাওয়ার আগে পাখি লক্ষ্য করল গাড়ির ড্রাইভার তার দিকে হা করে তাকিয়ে আছে। পাখি এটা দেখে অসহ্য লাগলেও কিছু করার নেই। অরণ্যের কাছ থেকে রেহাই পেতে পাখি এর থেকে ভালো উপায় পায় নি। পাখি অবশেষে আধ ঘন্টা পর কলেজ পৌঁছাল। কলেজে ঢুকার পর পাখি দেখল কলেজের ছেলেরা পাখির দিকে বাজে দৃষ্টিতে তাকাচ্ছে। মেয়েরা পাখিকে এভাবে দেখে একে অপরের সাথে কানাকানি করছে। পাখির দিকে শিক্ষকরাও ঘৃণার দৃষ্টিতে তাকাল। যেসব শিক্ষকরা পাখিকে ভালো জানত আজ তারাও পাখিকে ভুল বুঝল৷ এতে পাখির কস্ট হলেও তার কিছু করার নেই। খুব কস্ট করে কলেজের ক্লাসগুলো করে পাখি ক্লাস থেকে বের হলো। মাঠ দিয়ে যেতে গেলে পাখির সাথে কয়েকটা ছেলে আগ বাড়িয়ে কথা বলতে আসে। পাখি প্রথমে ওদের ইগনোর করতে যেয়েও যখন দেখল অরণ্য এসেছে তাকে নিতে তখন পাখি ঐ ছেলেগুলোর সাথে হেঁসে হেঁসে কথা বলতে লাগল। ছেলেগুলোর মধ্যে একটি ছেলে পাখিকে বলল
–পাখি আজকে তোমাকে তো পুরোই হট লাগছে। আমিতো তোমার রূপ দেখে পুরোই ফিদা হয়ে গেছি।
পাখির এসব কথাগুলো শুনতে খারাপ লাগলেও অরণ্য দূর থেকে পাখিকে দেখছে এটা দেখতে পেয়ে পাখি ছেলেটাকে বলল
–আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
ঐদিকে অরণ্যের মাথায় রক্ত উঠে গিয়েছে। পাখিকে এভাবে বিনা ওড়নায় এমন টাইট জামাকাপড় আবার ছেলেদের সাথে হেঁসে হেঁসে কথা বলতে দেখে অরণ্যের বুকে চিনচিন ব্যথা অনুভব হচ্ছে। রাগে অরণ্যের চোখ দুটো লাল হয়ে গেছে সাথে চোখের কোনে পানি স্পষ্ট। পাখির এমন অবস্থা দেখে অরণ্য মনে মনে বলল
–পাখি আজকে তুই বেশী বাড় বেড়েছিস তাই না! আমি যেই না তোকে কলেজ দিতে আসতে পারলাম না ওমনি তুই এমন করলি৷ আমার বারণ তুই শুনলি না। তাহলে দেখ আজকে আমি তোর কি হাল করি। তুই আমার ভালোবাসাকে এভাবে অপমান করলি৷ এর শাস্তি তোকে পেতেই হবে৷
অরণ্য ধীরে ধীরে পাখির কাছে গেল। ছেলেগুলো অরণ্যকে দেখে ভয়ে পালিয়ে গেল। পাখির ভয়ে হাত পা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে। পাখি নিজেও জানে না তার আজকে কি অবস্থা হবে কিন্তুু পাখি এটা জানে আজ অরণ্য তাকে মনে প্রাণে ঘৃণা করে চলে যাবে আর পাখি এই মিথ্যে ভালোবাসার খেলা থেকে মুক্তি পাবে। অরণ্য পাখির খুব কাছে এসেই
— ঠাসসসসসসসসসস। তোর সাহস কি করে হয় হিজাব ছাড়া রাস্তায় ঘুরে বেড়ানোর। তোর বুকে তো ওড়নাটাও নেই। ছেলেদের শরীর দেখাতে তোর খুব ভালো লাগে তাই না?
–আ আ আপনি আমার সাথে এমন করে কথা বলতে পারেন না। আমি আমার মন মতোই চলব। আমার যা ইচ্ছে তাই করব। আপনি বাঁধা দেওয়ার কে?
–ঠাসসসসসস। আমি তোর কে! কেন রে তুই জানস না আমি তোর কে! একমাস পর তুই আমার বউ হবি বলেছিলাম আর তুই জানস না আমি তোর কে হই?
বাসায় চল আমি তোকে বুঝিয়ে দিচ্ছি আমি তোর কে হই।
–আমি আপনার সাথে যাবো না।
–তুই যাবি তোর ঘাড় যাবে।
বলেই চুলের মুঠি ধরে কলেজের সবার সামনে টানতে টানতে অরণ্য পাখিকে নিয়ে যাচ্ছে। সবাই হা করে ওদের দুজনকে দেখছে।
–আমার চুলে ব্যথা লাগছে। আমায় ছাড়ুন প্লিজ।
–কেন রে গায়ে ওড়না দেওয়ার সময় তোর মনে ছিল না? তাহলে তো আর আমাকে এত কস্ট করতে হতো না ।
পাখি কান্না করছে। আকুতি মিনুতি করছে। কিন্তুু অরণ্যের কানে তো কিছুই পৌছাচ্ছে না।
–স্যার প্লিজ আমায় ছেড়ে দিন আমার চুলে ব্যথা লাগছে।
–তোকে আজ আমি এই ভুলের শাস্তি দিব আগে চল তুই।
অরণ্য পাখিকে এবার নিজের আসল বাড়িতে নিয়ে যায়। অরণ্যের মা সোফায় বসে টিভি দেখছিল। অরণ্যের মা অরণ্য আর পাখিকে এভাবে দেখে সোফা থেকে উঠে দাঁড়াল। অরণ্যের মা দেখল পাখির চুল অরণ্য খুব জোরে চেপে ধরে রেখেছে যার কারনে পাখি কাঁদছে। অরণ্যের মা অরণ্যকে উদ্দেশ্য করে বলল
–খোকা এই মেয়েটি কে? আর তুই এভাবে মেয়েটির চুল ধরে রেখেছিস কেন? ওকে ছাড়। দেখছিস না মেয়েটি কাঁদছে।
–মা তুমি জানো না এই মেয়েটা কত বড় অপরাধ করেছে। এর শাস্তি তো ওকে পেতেই হবে। অরণ্যের মাকে আর কিছু বলতে না দিয়ে অরণ্য সোজা পাখিকে টানতে টানতে উপরে নিয়ে নিজের বেডরুমে নিয়ে গিয়ে দরজা লাগিয়ে দিল।
পাখি কান্না করতে করতে অরণ্যকে বলল
–আমাকে যেতে দিন স্যার।
–তোর সাহস কি করে হলো এরকম জামাকাপড় পড়ে কলেজ যাওয়ার !
–স্যার আমাকে ক্ষমা করে দিন। স্যার আমি খুব খারাপ মেয়ে। আমাকে ভালোবাসা বৃথা। দেখেন না আমি বাজে জামাকাপড় পড়ি, বাজে ছেলেদের সাথে কথা বলি। আমাকে আপনি মুক্তি দিয়ে দিন।
–আমার কাছে তুমি মুক্তি চাও তাই না পাখি?
পাখি অরণ্যের এরকম স্বাভাবিক ব্যবহার দেখে অবাক হলো। পাখি ভাবল এবার মনে হয় এই মিথ্যে ভালোবাসা থেকে সে মুক্তি পাবে। তাই পাখি অরণ্যকে বলল
–হ্যা স্যার আমি আপনার কাছে মুক্তি চাই।
–তাহলে তোমার ইচ্ছাই পূরণ হোক পাখি। তুমি আজকে মুক্তি পাবে।
আমি আজকেই তোমাকে মুক্তি দিব।
অরণ্য কাকে যেন কল করল।
অরণ্য কি সত্যি পাখিকে মুক্তি দিবে নাকি অন্য কিছু অপেক্ষা করছে পাখির জীবনে!



#চলবে?

#বুকের ভিতর রাখবো তোকে?
#Part:10
#Writer: Doraemon(Ayesha)

অরণ্য ফোন করে ফোনের অপর পাশের লোকটাকে উদ্দেশ্য করে বলল
–হ্যালো কাজী সাহেব আপনাকে আমি মেসেজে আমার বাড়ির ঠিকানা পাঠিয়ে দিয়েছি। তাড়াতাড়ি আমাদের বাড়িতে চলে আসুন। আর কি কারণে আপনি আসবেন তা নিশ্চই আপনাকে বলে দিতে হবে না। ঠিক আছে চলে আসুন।
বলেই অরণ্য ফোনটা কেটে দিল। পাখি অবাক হয়ে অরণ্যের দিকে তাকিয়ে আছে। পাখি অরণ্যকে উদ্দেশ্য করে বলল
–স্যার আপনার বাসায় কাজী সাহেব কেন আসবে?
–কাজী আর কি করতে আসবে! বিয়ে পড়াতে আসবে।
পাখি আকাশ থেকে পড়ল। পাখি ভয়ে ভয়ে অরণ্যকে জিজ্ঞেস করল
–কা কা কার বিয়ে স্যার?
অরণ্য মুচকি হেসে পাখিকে বলল
–কার আবার! তোমার আর আমার বিয়ে। একমাস তো পূর্ণ হলো। আমি চেয়েছিলাম এই একমাসের মধ্যে তুমি আমাকে মন থেকে মেনে নাও। কিন্তুু তুমি তো আমাকে মেনে নিলে না। শুধু শুধুই একমাস অপেক্ষা করলাম। এবার তো তোমার আর আমার বিয়ের পালা পাখি।
পাখির এবার মনে পড়ল অরণ্যের আগের বলা কথাগুলো! অরণ্য বলেছিল একমাস পর পাখিকে অরণ্য বিয়ে করবে। আর আজকেই সেই একমাস হওয়ার শেষ দিন। পাখি চিতকার করে অরণ্যকে বলল
–না, এটা হতে পারে না। আমি আপনাকে বিয়ে করতে পারব না।আপনি ঠকবাজ। আমি আপনাকে বিয়ে করব না। আমার আপুও আপনার মতো একজন বড়লোক ঘরের ছেলেকে ভালোবেসে বিয়ে করেছিল কিন্তুু আপুর কপালে দুঃখ কস্ট ছাড়া কিছুই জোটে নি। আপুর স্বামী আপুকে ঘর থেকে বের করে দিয়ে আরেকটা বিয়ে করেছিল। এই কস্ট সহ্য করতে না পেরে আমার তমা আপু সুইসাইড করেছিল৷ আমি চাই না আমার পরিণতি আপুর মতো হোক। আমি বাঁচতে চাই স্যার। আমাকে আপনি ছেড়ে দিন প্লিজ। আমি আপুর মতো কস্ট সহ্য করতে পারব না।
পাখি কান্না করতে করতে কথাগুলো বলছিল৷ অরণ্য এখন বুঝতে পারল পাখি কেন ছেলেদের এত ভয় পায়, বিশেষ করে বড়লোকদের কেন এত ভয় পায় পাখি। অরণ্য পাখির কাছে আসতে থাকল এটা দেখে পাখি অরণ্যকে ভয়ে ভয়ে বলল
–না স্যার আমার কাছে আপনি আসবেন না। আমার থেকে দূরে যান৷ অরণ্য পাখির কোনো কথা শুনছে না।
পাখি রেগে গিয়ে অরণ্যকে ধাক্কা দিয়ে দরজা খুলতে যেতে নিল কিন্তুু পারল না। তার আগেই অরণ্য পাখিকে টেনে নিজের কাছে নিয়ে এসে পাখিকে শক্ত করে চেপে ধরে পাখির ঠোঁটের সাথে অরণ্য নিজের ঠোঁট ডুবিয়ে দেয়।
পাখি ভাবতেও পারেনি অরণ্য আবার পাখির সাথে এমনটা করবে। পাখি অরণ্যের কাছ থেকে নিজেকে ছাড়ার বৃথা চেষ্টা করতে লাগল। কিন্তুু অরণ্যের কাছ থেকে পাখি ছুটতে পারল না।
বেশ অনেক্ষণ হয়ে গেছে কিন্তুু এখনও অরণ্য পাখির ঠোঁট ছাড়ে নি৷ একসময় দরজায় ধাক্কার শব্দে অরণ্যের হুঁশ ফিরল৷ অরণ্য পাখির ঠোঁটজোড়া ছেড়ে দিল। পাখি ঘন ঘন নিস্বাস নিচ্ছে। আর ঐদিকে অরণ্য দরজা খুলে দেখল অরণ্যের মা সামনে দাড়িয়ে আছে। অরণ্যের মা অরণ্যকে উদ্দেশ্য করে বলল
–খোকা কে এই মেয়ে? তুই ওকে এইভাবে নিয়ে এসে দরজা লাগিয়ে দিয়েছিস কেন?
–মা ওর নাম পাখি৷ তোমার বৌমা। আমি পাখিকে খুব ভালেবাসি মা।আজকেই আমি ওকে বিয়ে করব।
অরণ্যের মা অরণ্যের কথা শুনে অবাক। অরণ্যের মা অরণ্যকে বলল
— এটা কি করে হয় খোকা? তুই কাউকে না জানিয়ে এভাবে বিয়ে করবি! তোর বাবা এসব শুনলে কি বলবে!
–মা তুমি কোনো চিন্তা করো নাতো। বাবাকে বুঝানোর দায়িত্ব আমার। আর পরে নাহয় দুমদাম করে আমাদের বিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন করো। আমি এখন কোনো রিস্ক নিতে চাই না মা। পাখিকে আমি আমার জীবন থেকে কিছুতেই হারাতে দিব না।
— আচ্ছা ঠিক আছে। তোর পছন্দই আমার পছন্দ খোকা। আর মেয়েটা দেখতে ভারি মিস্টি।
এমন সময় পাখি দৌড়ে গিয়ে অরণ্যের মায়ের সামনে এসে অরণ্যের মাকে উদ্দেশ্য করে বলল
–আন্টি আমি এই বিয়েটা করব না৷ যে করেই হোক আপনি এই বিয়েটা আটকান আন্টি প্লিজ।
পাখির কথা শুনে অরণ্যের মা অরণ্যকে জিজ্ঞেস করল
–কিরে খোকা ওতো বিয়েতে রাজি না! তুই ওকে জোর করে কেন বিয়ে করতে চাস?তুই এটা করতে পারিস না। এটা অন্যায় খোকা।
অরণ্য গম্ভীর গলায় অরণ্যের মাকে বলল
–মা তুমি কি চাও তোমার ছেলে বেঁচে থাকুক না মরে যাক?
–খোকা তুই এসব কি বলছিস?
–তোমার ছেলে এই মেয়েটাকে ছাড়া বাঁচবে না। এখন তুমি সিদ্ধান্ত নাও মা তুমি কি করবে।
অরণ্যের কথা শুনে অরণ্যের মা ভয়ে ভয়ে বলল
–না খোকা। তুই যা চাস তাই হবে। এই মেয়েই তোর বউ হবে।
পাখি স্তব্ধ হয়ে আছে৷ এখন পাখি জানে আর কিছুই করার নেই।
অরণ্যের মা চলে গেল। অরণ্যের মা চলে যাওয়ার পর অরণ্য দরজাটা আবারও লাগিয়ে দেয়। পাখি ভয়ে ঢক গিলতে থাকে। দরজাটা লাগিয়ে অরণ্য পাখির কোমর জড়িয়ে ধরে নিজের কাছে নিয়ে এসে পাখিকে উদ্দেশ্য করে অরণ্য বলল
–কি ভেবেছিস তুই? মাকে ভুলিয়ে ভালিয়ে বিয়ে আটকাতে রাজি করিয়ে ফেলবি। এ বাড়িতে সবাই অরণ্য চৌধুরীর কথা অনুযায়ী চলে। তার বিরুদ্ধে কেউ কথা বলার সাহস পায় না৷ আর আমার কাছ থেকে দূরে থাকার চিন্তা তুই বাদ দিয়ে দে পাখি। কারণ অরণ্যের বুক থেকে পাখিকে আলাদা করা সম্ভব তো নয়ই বরং অসম্ভব। এই #বুকের ভিতর রাখবো তোকে। আমিও দেখবো আমার কাছ থেকে তুই কিভাবে মুক্তি পাস পাখি।
পাখি ভয়ে কাঁপছে। অরণ্যের ভয়ংকর রূপ দেখলেই পাখির বুকটা ভয়ে কাঁপাকাঁপি করে বেরিয়ে যায়৷ পাখি এই সময়ে কি বলবে কিছুই বুঝতে পারছে না। তাও পাখি চিতকার করে অরণ্যকে বলল
–আমি আপনাকে বিয়ে করব না, করব না, করব না।



#চলবে?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here